প্রেমের পাঁচফোড়ন💖
#পর্ব_৫৬
#Writer_Afnan_Lara
🌸
আহানা চুপ করে থেকে কিছুক্ষন তাকিয়ে রইলো শান্তর দিকে
শান্ত টিভি দেখায় মন দিয়ে আছে তার মানে এখন মিথ্যা বললেও ধরতে পারবে না সে
জিভ দিয়ে ঠোঁটটা ভিজিয়ে আহানা মিথ্যাটা শেষমেষ বলেই দিলো
“ঐ আসলে ময়লা ফেলতে গেসিলাম”
.
শান্ত টিভি থেকে চোখ সরিয়ে আহানার দিকে চেয়ে বললো
“ময়লার বালতি কই তাহলে?”
.
“নিচে রেখে এসেছি”.
কথাটা বলে আহানা তাড়াতাড়ি করে নিজের রুমে গিয়ে খাটের নিচে রিপোর্ট লুকিয়ে ফেললো
শান্ত সোফার রুমে থেকে বললো রেডি হতে অফিস টাইম হয়ে গেসে
আহানা হুম বলে মাথার ঘাম ওড়না দিয়ে মুছে বের হলো
.
বাইকে বসেই শান্তকে শক্ত করে ধরলো
শান্ত হেলমেট পরতে পরতে বললো “কি ব্যাপার ভয় করছে নাকি?নাকি শরীর এখনও ঠিক হয়নি”
.
না ঠিক আছি
.
অফিসে এসে দুজনে কাজে লেগে পড়েছে,আহানা ভুলেই গেসে তার অসুখের কথা তবে মাঝে মাঝে দূর্বল লাগলে মনে পড়ে যায় তখনই শান্তর দিকে তাকায় সে
শান্ত ফোনে নওশাদের সাথে হেসে হেসে কথা বলতেসে
ব্রেক টাইম চলতেসে,আহানার নিজেকে অসহায় মনে হচ্ছে
খুব মন চাচ্ছে শান্তকে একবার জড়িয়ে ধরতে,তাহলে হয়ত অসহায়ত্ব কিছুটা হলেও কমবে
আহানার এই ভাবনায় ছেদ ঘটালো শান্ত,হুট করে এসে ফোনে কথা বলতে বলতেই আহানাকে জড়িয়ে ধরলো সে,এক হাত দিয়ে ওকে বুকে আগলে রেখে নওশাদের কথার উত্তর দিচ্ছে সে
আহানা শান্তর বুকে ঠাঁই পেয়ে যেন সব কষ্ট ভুলে গেলো,আরও শক্ত করে সে শান্তকে জড়িয়ে ধরলো
.
“ওকে নওশাদ বাসায় এসে দেখা হচ্ছে,এখন রাখতেসি!বাই
আহানা?কি হইসে তোমার?”
.
না কিছু না,এমনি
.
চলো কিছু খাবে
.
না
.
শান্ত চোখ ইয়া বড় করে তাকাতেই আহানা বললো “আচ্ছা আচ্ছা খাব চলুন”
শান্ত ওর হাত ধরে ক্যানটিনে নিয়ে গেলো
.
“একটু খাওয়া দাওয়া বাড়িয়ে দাও,শরীর দেখসো তোমার?না খাওয়ার কারণেই আজ অসুস্থ হয়ে গেসিলে,এখন থেকে আমি যা যা খাবো তুমিও সেটাই খাবা”
.
“সিগারেট ও?”
.
“না,সেটা তুমি খাবে না,সেটা তোমাকে স্যুট করে না”
.
আহানা খাবার খেতে খেতে মুগ্ধ চোখে শান্তর দিকে চেয়ে রইলো,জীবনে কখনও এত কেয়ার পাইনি বলে হয়ত আল্লাহ জীবনসাথী হিসেবে এমন একজনকে পাঠিয়েছেন যে কিনা কেয়ার করার একটা বিন্দু ও বাদ রাখে না
আল্লাহ তুমি শুধু আমাকে বলে দাও এই সুখ স্থায়ী হবে তো?স্থায়ী হলে কেন আমার মনে বারবার বিপদের আশংকা লাগে,মনে শান্তি পাই না কেন আমি
.
আহানা?কি এত ভাবো?আর এমন হাসতেসো কেন আমার দিকে তাকিয়ে?প্রেমে টেমে পড়সো নাকি?হুমমমম?
.
না😒
খাওয়া শেষে দুজনে আবার কেবিনে ফিরে আসলো,শান্ত এক হাতে অফিসের কাজ করতেসে আরেক হাত দিয়ে ফোন কানে ধরে নওশাদের বকবক শুনতেসে,নওশাদ তার বিয়ে নিয়ে অনেক এক্সাইটেড
সন্ধ্যা ৬টা ৩০এর দিকে অফিস ছুটি হয়ে গেলো,আহানা বাইকে উঠে শান্তর কাঁধে হাত রেখে বললো “আজ সেই লেকে যাবেন?”
.
কেন বলোতো?
.
এমনি,সময় না থাকলে থাক
.
না যাবো না সেই লেকে
.
আহানা মুখটা ফ্যাকাসে করে বাইরের রোড দেখায় মন দিলো,সন্ধ্যার ঢাকা দেখতেসে সে
জ্যাম ধরছে চাদরের মতো
আহানা বহুতল দালান দেখতেসে আর তলা গুনতেসে,ডান পাশের দালানটা ১৩তলা,আর বাম পাশের দালানটা ১৭তলা
তবে এই রোড দিয়ে তো আমাদের বাসায় যাওয়া য়ায় না,তাহলে এটা দিয়ে কোথায় যাচ্ছেন?
.
লেকে যাবো না ঠিক তবে তোমাকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে যাবো,বেশ ভালো একটা নামকরা রেস্টুরেন্টে যাবো,ক্যান্ডেল লাইট ডিনার
.
না
.
কি না?
.
আমার ওসব ভালো লাগে না,আপনি বরং আমাকে এমন কোথাও নিন যেখানে বসে শান্তিতে ফুচকা আর ঝালমুড়ি খাওয়া যাবে
.
সিরিয়াসলি তুমি বড় রেস্টুরেন্টের খাবার ডিকলাইন করে কিনা স্ট্রিট ফুড খাবে বলতেসো?
.
হ্যাঁ,কেন কি হয়েছে,যেটা খেলে পেট মন দুটোই ভরবে সেটা খেতে ক্ষতি কোথায়?আর বড় বড় রেস্টুরেন্টে খেলে সেটা হয় লোক দেখানো আর কিছু নয়,ওসব খাবারের চেয়েও আমার কাছে ফুচকা, চটপটি আর ঝালমুড়ি,সাথে এক কাপ দুধ চা বেশ লাগে,এতেই আমি খুশি
.
শান্ত হেসে দিয়ে আহানাকে নিয়ে আবার সেই লেকে আসলো,তারপর ওকে বসিয়ে রেখে ফুচকা আনতে গেলো
আহানা নিজে নিজে পানিতে পা চুবিয়ে বসলো,একা একা ভয় করে দেখে আবার পা উঠিয়ে ফেললো
আগে লেকের ওপাশে সব ল্যাম্পপোস্ট এক কাতারে জ্বলে থাকতো এখন ও জ্বলে আছে তবে একটা দুইটা জ্বলতেসে না
.
শান্ত ফুচকা এনে ফোনের ফ্ল্যাশ অন করে বেছে বেছে মরিচ সব ফেলে তারপর মুখে দিলো
আহানা টকে ফুচকা চুবিয়ে মুখে দিচ্ছে,সেটা দেখে শান্ত ও তেমন করলো,টক সমেত গোটা ফুচকা মুখে ঢুকিয়ে দাঁত মুখ খিঁচিয়ে গিললো তারপর বললো আর জীবনে টক দিয়ে ফুচকা খাব না
আহানা শান্তর পাগলামো দেখে হাসতে হাসতে শেষ
ফুচকা খাওয়া শেষে শান্ত উঠলো চা আনার জন্য আহানাও উঠে পড়লো,সেও সাথে যেতে চায়
শান্ত আর মানা করলো না,ওর হাত ধরেই হাঁটা ধরলো
দুজনেই ফাঁকা রোড দিয়ে হাঁটতেসে,লেকের পাশটার রোড এটা তাই মানুষ খুব কম
শান্ত হেসে আহানার দিকে চেয়ে বললো সেদিন চড় মেরে ভালো করেছো
.
কেন?
.
চড়ের কারণে আমি আমার পাতানো বউকে পেলাম আর তুমি তোমার পাতানো বর পেয়ে গেলা
.
আহানা অপরাধীর মত চেয়ে হাঁটতেসে,যে ছেলেটা তাকে এত ভালোবাসে তাকে কিনা কোনো একদিন সে চড় মেরেছিল ভাবতেই নিজেকে এখন মারতে ইচ্ছে করতেসে তার!!
চায়ের স্টলের সামনে এসে দাঁড়িয়ে চা নিয়ে আবারও উল্টো পথে হাঁটা ধরলো তারা
শান্ত বললো আহানা ছোট থাকতে শান্তর সাথে থাকলে হাসতো বেশি,এমনিতে হাসতো না
আহানা মিটমিট করে হাসতেসে শান্তর কথা শুনে
শান্ত চায়ে চুমুক দিয়ে আহানার দিকে চেয়ে রইলো,ওর মুখে এই হাসিটা বড্ড মানায়!
আহানা শান্তর মজার মজার কথায় হাসতে হাসতে শান্তর হাত ধরে ফেললো এক সময়
শান্ত এতক্ষণ চুপচাপ জোকস বলতেসিলো হুট করে আহানা তার হাত ধরায় এখন তার নিজেরই চোখেমুখে হাসি ফুটেছে
চা খাওয়া শেষে দুজনে বাড়ি ফিরে আসলো
শান্ত বাইক স্টার্ট দিয়ে চলে যাচ্ছিলো তখনই পিছন থেকে আহানা ডাক দিলো
বাইক থামিয়ে সে আহানার দিকে তাকিয়ে ব্রুটা কুঁচকিয়ে বললো “কি হয়েছে?”
আহানা ওড়না গিট্টু দিতে দিতে বললো “আজ আমার বাসায় থাকবেন?”
.
শান্ত হাত দিয়ে চোখ ডলে নিজের কপাল নিজে চেক করে আকাশে চাঁদের অবস্থান দেখে বললো সব তো ঠিক আছে,তাহলে তুমি এমন অবাস্তব কথা বললা?কেমনে?কে দিলো তোমায় এমন সৎবুদ্ধি??কাগজ হারিয়ে ফেলসো নাকি?
.
আহানা মুখ বাঁকিয়ে বললো হারাইনি,বাসা থেকে বের করে দিই বলে কত কথা শুনান তাই বলসি আমার বাসায় থাকতে আর কোনো কারণ নেই,আর আপনি এক রুমে ঘুমাবেন আমি আরেক রুমে,এটা বলেই আহানা বাসার ভেতর চলো গেলো
.
শান্ত হেলমেট খুলে বাইক সাইড করে রেখে আসলো
আহানা রান্না করতেসে মনোযোগ দিয়ে
শান্ত আহানার তোয়ালে হাতে নিয়ে বললো আমি গোসল করতে যাই,এটা তোমার তেয়ালে তো?
.
আহানা চোখ বড় করে দৌড়ে এসে তোয়ালেটা নিয়ে বললো “খবরদার আমার পার্সোনাল কিছু টাচ করবেন না”
.
আহানা তোয়ালে নিয়ে নিজের আলমারিতে রেখে পিছন ফিরতেই দেখলো শান্ত কোমড়ে হাত দিয়ে তাকিয়ে আছে
আহানা ভয়ে পিছিয়ে যেতেই দুম করে আলমারির ভিতরের তাকের সাথে বাড়ি খেলো একটা
শান্ত ওকে ধরে সেখান থেকে বের করে আনিয়ে খাটে বসালো
.
আহানা মাথা মুছতে মুছতে বললো এরকম করে ভয় দেখান কেন?
.
কই ভয় দেখালাম,তুমি তোমার হাসবেন্ডকে দেখলেই যদি ভয় পাও তো আমার কি করার আছে?
.
আপনি গোসল করার জন্য উঠে পড়ে লাগছেন কেন?গোসল করে কি পরবেন?
.
নওশাদকে বলসি আমার এক স্যুট জামা দিয়ে আসতে😎
.
কাল উনার বিয়ে এত কাজের ভিতরে উনাকে দিয়ে আপনি এসব করান?
.
আরেহহ তোয়ালে তো আনতে বলিনি,আর তুমি তো তোমার তোয়ালে আমাকে ধরতেও দিবা না তাহলে আর কি করার!!!
এটা বলে শান্ত আহানার গায়ের থেকে ওড়না নিয়ে চলে গেলো
আহানা থ হয়ে চেয়ে ওর চলে যাওয়া দেখছে
তারপর পিছন পিছন এসে বাথরুমের দরজা ধাক্কাতে লাগলো কিন্তু কে শোনে কার কথা,শান্ত ঝর্নাও ছেড়ে দিসে ততক্ষণে
উপায় না পেয়ে আহানা আলমারি থেকে আরেকটা ওড়না নিয়ে চলে গেলো রান্নাঘরের দিকে
তারপর কি মনে করে আবারও দৌড়ে আসলো বাথরুমের সামনে
“প্লিস আমার ওড়না ইউজ করবেন না আমি আপনাকে আমার তোয়ালে দিচ্ছি”
.
গুড গার্ল,দাও তাহলে
.
আহানা মুখ বাঁকিয়ে বাধ্য হয়ে তোয়ালে এনে দরজায় টোকা দিলো
শান্ত হাত বের করে তোয়ালে নিয়ে দরজা লাগিয়ে ফেললো আবার
.
আজব তো!আমার ওড়না দেননি কেন?
.
ওমা,ওড়না কেন দিব?
.
কেন দিবেন মানে,ওড়নার বদলে তো তোয়ালে দিলাম তাহলে ওড়না ফেরত দেওয়ার কথা না আপনার?
.
তুমি আমার বডি দেখলে পাগল হয়ে যাবে আর আমি তোমাকে পাগল করতে চাই না কারণ তুমি সিক,তাই তোয়ালে লুঙ্গির মত পরবো আর ওড়না গায়ে পরবো
.
আপনি একটা আস্ত বেয়াদব!!
.
আহানা গালি দিতে দিতে রান্নাঘরে ফিরে আসলো আবার
.
শান্ত বাথরুম থেকে বেরিয়ে ওড়না গলায় পেঁচিয়ে তোয়ালে পরে ড্রয়িং রুমের দিকে গেলো
আহানা ডাইনিং এ প্লেট রেখে ব্রু কুঁচকে একবার তাকিয়ে আবার চলে গেলো
শান্ত একটা ভাব নিয়ে দরজা খুলে দাঁড়িয়ে আছে,নওশাদ কিছুক্ষণ বাদে এসেই হাতে জামার প্যাকেট দিয়ে চলে গেলো তার হাতে সময় নেই,কত কাজ তার!!
.
শান্ত টিশার্ট পরে গায়ের ওড়না নিয়ে আহানার গাছে গিয়ে ওর গায়ে পেঁচিয়ে ওকে কাছে নিয়ে আসলো
.
আহানা ভয় পেয়ে এক চিৎকার করতে যেতেই শান্ত ওর মুখ চেপে বললো “চুপ করো নাহলে অলি তার ১৪গুষ্টি নিয়ে হাজির হয়ে যাবে তো”!!!
.
আপনি আমাকে এরকম ডিস্টার্ব করেন কেন রান্না করার সময়??
.
কেমন বউ তুমি?তোমার ওড়না দিতে আসছি আর কিছু না,ধরো
শান্ত ওড়নাটা আহানার হাতে দিয়ে ব্রু কুঁচকে চলে গেলো
.
নির্ঘাত কিস করতে এসেছিল,আমার রাগ দেখে চলে গেছে
.
আহানা ওড়নাটা রেখে দিলো চেয়ারে এটা ধুয়ে পরবে সে,না জানি কি করছে আমার ওড়না দিয়ে,খবিশ একটা!
.
শান্ত সোফায় এসে বসেছে টিভি অন করে
আহানা খাবার এনে ডাইনিংয়ে রেখে ওকে ডাক দিলো
শান্ত টিভি অন রেখেই ডাইনিংয়ে এসে পড়েছে
খাচ্ছে আর টিভিতে খেলা দেখতেসে
আহানা শান্তর জন্য আলাদা একটা রুম পরিপাটি করে নিলো,তারপর রুম থেকে বেরিয়ে দেখলো শান্ত টিভিতে তার ফোনের কানেকশন দিচ্ছে
.
একি কি করছেন?
.
হরর ফিল্ম দেখবো এখন,লাইট বন্ধ করো
.
কিহ,হরর ফিল্ম?মানে ভূতের ছবি?আমি দেখবো না আপনি দেখেন
.
আহানা রুমে যেতে নুতেই শান্ত ওর হাত খপ করে ধরে বললো “আমার সাথে বসে দেখবা আমি কিছু শুনতে চাই না
আমার অনেক শখ ছিল বিয়ের পর বউকে নিয়ে রাত করে ভূতের ছবি দেখবো,আজ সেটা পূরন হবে”
.
আহানার ভয়ে গলা শুকিয়ে গেসে,শান্ত ওকে সোফায় বসিয়ে রেখেছে তাও এমনি এমনি না,ওর ওড়না দিয়ে পা হাত বেঁধে রেখে বসিয়ে রেখেছে
আর সে গেছে রান্নাঘরে পপকর্ন বানাতে,দোকান থেকে গিয়ে এক দৌড়ে ভুট্টা আর কোকাকোলাও নিয়ে এসেছে
আহানা গাল ফুলিয়ে মুভিটার ট্রেইলার দেখতেসে
মুভিটার নাম “Black Magic”
ট্রেইলার দেখেই আহানা ১০বার চিৎকার দিসে
শান্ত পপকর্ন নিয়ে এসে হাসতে হাসতে ওর পাশে পা তুলে সোফায় বসলো
.
নাও হাতের বাঁধন খুলে দিলাম,পপকর্ন খাও আর দেখো
.
আমি দেখবো না,সরুন আমি ঘুমাবো
.
তুমি দেখবা,তোমার জামাইও দেখবে,মনোযোগ দাও দেখবা অনেক ভালো লাগবে
.
শান্ত সাউন্ড বাড়িয়ে দিয়ে লাইট অফ করে দিলো
যতবার ভূত আসতেসে আহানা হাত থেকে পপকর্ন ফেলে ততবার চিৎকার করেছে
শান্ত আহানার ভয় দেখে হাসতে হাসতে লুটোপুটি খাচ্ছে
♣
রাত ২টা ৩৩বাজে
আহানা শান্তর টিশার্ট খাঁমছে ধরে ওর বুকে লুকিয়ে আছে আর শান্ত মনোযোগ দিয়ে মুভিটা দেখতেসে
.
মুভি শেষ হয়েছে রাত ২:৪৭এ,,আহানা ঘুমিয়ে পড়েছে ততক্ষণে
শান্ত টিভি অফ করে সরতে যেতে গিয়েও পারলো না,আহানা খুব সুন্দর করে ওকে ধরে ঘুমাচ্ছে,এরকম মিষ্টি ঘুম দেখলে জাগাতেই মন চাইবে না,তাই শান্ত ওকে জাগালো না
এভাবেই বসে থাকলো,সোফায় ঘুমানো তেমন কঠিন ব্যাপার না আর তা যদি হয় নিজের স্ত্রীকে বুকে নিয়ে তাহলে তো কথাই নেই
ভোর ৫টার দিকে একটা ছোট্ট পাখির কিচিরমিচিরে জেগে গেলো আহানা
পাখিটা বারান্দায় এসে ফেলে রাখা গম আর ধান খেতে খেতে মনের সুখে গান গাইছে
আহানা রোজ ওদের জন্য এখানে খাবার দিয়ে রাখে,আর এই পাখিটা ওকে ঘুম থেকে তুলে
আহানা চোখ খুলে দেখলো সে সোফায় শুয়ে আছে,শান্তর কথা মনে আসতেই সোফা থেকে রুমে এসে দেখলো শান্ত বিছানায় হাত পা ছড়িয়ে ঘুমাচ্ছে
.
আমার কেন জানি মনে হচ্ছে কাল আমরা একসাথে ঘুমিয়েছি,আমি উনার বুকে ঘুমিয়েছিলাম
না তা কেন হবে,সেটা হলে তো এখন চোখ খুলে দেখতাম উনাকে
ভাবতে ভাবতে আহানা গিয়ে ওজু করে এসে নামাজটা সেরে নিয়ে কোরআন শরীফ নিয়ে বসলো বারান্দার সামনে,সেখানে ভোরের আলোটা বেশি আসে
.
আহানার কন্ঠে কি মধুর শোনা যাচ্ছে কোরআন পাঠ
শান্ত জেগে গেলো,বিছানা থেকে নেমে সোফার রুমে এসে দাঁড়ালো সে
ভোর সাড়ে ৪টার দিকে সে সোফায় আহানাকে রেখে নিজে রুমে চলে এসেছিল,আহানা যদি চোখ খুলে নিজেকে ওর বুকে দেখতো তাহলে পুরো কলোনি উল্টায় ফেলতো তাই সে তার উঠার আগেই চলে এসেছে,আহানা বুঝি রোজ সকালে এমন করে
কেন জানি না আমার মায়ের সব গুন আহানা পেয়েছে,মা থাকলে খুব খুশি হতেন,বলতেন দেখলি রে শান্ত আমার মনের মত একটা বউ এনেছি তোর জন্য
চলবে♥