#প্রেম_তুমি
ফাবিহা নওশীন
পর্ব-১৬
রাতের শহর। মেঘহীন স্বচ্ছ আকাশ। মিটমিট করে জ্বলছে অসংখ্য তারকারাজি। তার মাঝে গোলাকার শুভ্র নির্মল চাঁদটা উঁকি দিয়ে আছে। তার আলো ছড়িয়ে পড়েছে পিচঢালা রাস্তায়। দূর দুরান্ত পর্যন্ত স্বচ্ছ পরিস্কার রাস্তা। এক্সট্রা আলোর প্রয়োজন হচ্ছে না। ঝিরিঝিরি বাতাস বইছে। সে বাতাসে দুলছে দর্শনের কুঁকড়া চুল আর গায়ের শার্ট। কাঁধে ব্যাগ, চোখে চশমা, কানে হেডফোন গুঁজে রাতের শহর ঘুরে বেড়াচ্ছে বাইকে করে। এই সুন্দর নিরিবিলি পরিবেশে গান শুনতে শুনতে বাড়িতে যাচ্ছে। সাথে কেউ হলে মন্দ হত না। কিন্তু সেই কেউটা কে? অর্ষা? হয়তো অর্ষা। অর্ষাকে নিয়ে এই মোহনীয় আলোয় বাইকে করে একটু ঘুরে বেড়ালে মন্দ হত না।
দর্শন মোবাইল বের করে অর্ষাকে কল দেয়। বাইক চালাতে চালাতে কল রিসিভের অপেক্ষায় আছে। অর্ষা কল রিসিভ করল কয়েক সেকেন্ডের মাথায়।
“হ্যালো!”
“দশ মিনিটের জন্য বের হতে পারবে?”
অর্ষা ওর প্রশ্ন শুনে কিছুক্ষণ থম মেরে রইল। তারপর ঘড়ির দিকে তাকাল। সময় রাত ন’টা বেজে এগারো মিনিট। কন্ঠে কৌতূহল নিয়ে প্রশ্ন করল,
“কেন? কী হয়েছে?”
“আরে আসো না। আমি রাস্তায় আছি। তোমার সাথে দেখা করতে ইচ্ছে করছে।”
ওর সাথে দেখা করতে আসছে শুনেই ভালো লাগছে।
“হ্যা, পারব।”
“আচ্ছা আমি দশ মিনিটের মধ্যে আসছি। তুমি নিচে আসো।”
….
প্রায় বারো মিনিট পর দর্শন অর্ষার বাড়ির সামনে এল। অর্ষা আগে থেকেই গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিল। দর্শনের জন্য অপেক্ষা করছিল। দর্শন বাইক থামিয়ে নেমে এল। তারপর অর্ষাকে পর্যবেক্ষণ করল। অর্ষা যেভাবে ছিল সেভাবেই চলে এসেছে। জিন্স আর লেডিস্ শার্ট পরা। চুলগুলো ঝুঁটি করা। পায়ে স্লিপার স্যান্ডেল। মেয়েরা বয়ফ্রেন্ডের সাথে দেখা করতে এলে নিজেকে পরিপাটি করে আসে। চোখে একটু কাজল দেয়, ঠোঁটে লিপস্টিক, কানে দুল, হাতে চুরি অথবা ব্রেসলেট, চুলগুলো গুছিয়ে আসে আর শরীরে সুগন্ধি। কিন্তু অর্ষা এর ব্যতিক্রম। দর্শন দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল। অর্ষাকে অন্যভাবে দেখতে চায়, কত স্বপ্ন ছিল ওর প্রেমিকা কিংবা ভবিষ্যৎ স্ত্রীকে নিয়ে। কিন্তু অর্ষা এর বিপরীত। দর্শন পরক্ষণেই ভাবল, ছিহ! কী ভাবছি? ভালোবাসার মতো স্নিগ্ধ অনুভূতিতে বাহ্যিক সৌন্দর্য নয় সুন্দর মন খুঁজতে হয়। সবচেয়ে বড় কথা ও অর্ষাকে ভালোবাসে।
দর্শন মৃদু হাসল। তারপর বাইকে গিয়ে বসল। বাইকে বসে চাবি হাতে নিয়ে বাইক স্টার্ড করতে করতে বলল,
“উঠে বসো।”
অর্ষা ওর কথা শুনে কিছুটা ভয় পেল।
“এত রাতে কোথায় যাব?”
“ভয় পাচ্ছো কেন? আমাকে বিশ্বাস করো না?”
“বিশ্বাস অবিশ্বাস নয়। বাবা খুঁজবে আমায়। যদি জানে তাকে না জানিয়ে….
” দশ মিনিট। দেখেছো কত রোমান্টিক ওয়েদার? তোমাকে নিয়ে দশ মিনিট বাইকে ঘুরব বলে বাড়িতে না গিয়ে তোমার বাসায় এলাম। প্লিজ।”
“দশ মিনিট হলে মেনেজ করে নেব কিন্তু এভাবে?” (অর্ষা নিজের দিকে চেয়ে বলল)
“কিছু হবে না। এত রাতে কে দেখবে? চলে এসো।”
অর্ষা গিয়ে দর্শনের বাইকে উঠল। প্রথম বার ওর বাইকে উঠেছে। অস্বস্তি হচ্ছে কিছুটা। ওকে ধরতেও কেমন ইতস্তত করছে।
দর্শন ওকে নিয়ে ফাঁকা রাস্তায় বাইক চালাচ্ছে। দশ মিনিট বলে নিয়ে এসেছে কিন্তু সারারাত ওকে নিয়ে বাইকে ঘুরতে ইচ্ছে করছে। অর্ষাও সব ভুলে সময়টা অনুভব করছে। প্রেমিকের সঙ্গে প্রথম রাতের শহর ভ্রমণ।
….
অর্পা ওর ক্লাসমেটদের সাথে আলোচনায় বসেছে। রুশান সেটা দেখে দর্শন, রাতুল আর তামিমকে বলছে,
“আচ্ছা বল তো আমি কীসে পার্টিসিপ্যান্ট করতে পারি?”
রাতুল কিছুক্ষণ ভেবে বলল,
“তুই এক কাজ কর, তুই গান দে। ও সখিনা গেছোস কি-না ভুইলা আমারে আমি এহন রিকশা চালাই ঢাকা শহরে কি জানি একটা গান আছে না এটা গাইতে পারিস।”
তামিম সাথে যোগ দিয়ে বলল,
“আরে নাহ, এটা না। তুই গাইবি ও মাইয়ারে মাইয়া তুই অপরাধী রে…..
তারপর সবাই অট্টহাসিতে ফেঁটে পড়ল। রুশান মুখ গম্ভীর করে বসে রইল। অর্পার দিকে আবারও আড়চোখে তাকাল।
দর্শন ওকে লক্ষ্য করে জিজ্ঞেস করল,
” ঘটনা কী বল তো? অর্পার সাথে কিছু হয়েছে?”
“হয়েছে বলেই তো তোরা এমন মজা করছিস। আমারও সুযোগ আসবে, আমিও মজা করব।”
“আচ্ছা, করিস। তা কী হয়েছে তোদের?”
“কাল রাতে একটু ঝগড়া হয়েছে।”
রাতুল খোঁচা দিয়ে বলল,
“কোন মেয়ের সাথে ধরা খেয়েছিস?”
“সর,সব সময় ফাজলামি করিস না। আমি অন্য মেয়েদের সাথে ফাজলামো করি ঠিক তবে অর্পাকে ভালোবাসি খুব। ও আমার সাথে রাগ করে থাকলে ভালো লাগে না।”
অর্ষা পেছনে থেকে বলল,
“আহ! কত প্রেম! এত প্রেম তো ঝগড়া করো কেন?”
“ঝগড়া কী আমি করি? অর্পা করে।”
“তাহলে অর্পা আপুকে কেন রাগাও? তাকেই রাগানো উচিত যার রাগ সহ্য করতে পারবে।”
“হ্যা, এখন তো সব দোষ আমার। সবাই আমাকেই দোষারোপ করবে।”
অর্ষা কিছু বলল না। মৃদু হাসল। তারপর দর্শনকে উদ্দেশ্য করে বলল,
“অর্পা আপুর কাছে যাচ্ছি। প্রোগ্রামের দায়িত্ব নাকি আপুদের উপর।”
দর্শন অর্পার দিকে একবার চেয়ে বলল,
“হ্যা, তুমি কী কিছু দিবে?”
“হ্যা,সব সময় যা করি গান আর নাচ।”
দর্শন ক্লাসের ভেতরে যাওয়ার জন্য অর্ষাকে ইশারা করল। দুজনে এক সাথে অর্পার কাছে রুমের ভেতরে গেল।
অর্পার কাছে গিয়ে জানতে পারল অর্পার শুধু গানের দায়িত্ব পড়েছে। নাচ করতে চাইলে আলিশা আর রাবেয়ার কাছে যেতে হবে। অর্পা দর্শনের দিকে তাকাল। ওর চোখে মুখে বিরক্ত। অর্ষাও কেমন করছে ওর কাছে যেতে।
অর্পা ওদের মনোভাব দেখে বলল,
“আচ্ছা, সমস্যা নেই আমি নাম লিখিয়ে দিয়ে আসি। কিন্তু নাচে নাম দেওয়ার পর প্রত্যেক প্রসেসে আলিশাকে সহ্য করতে হবে।”
অর্ষা দর্শনের দিকে তাকাল। তারপর হাসিমুখে বলল,
“আমার কোন সমস্যা নেই। ওর সাথে তো আর আমার লড়াই যুদ্ধ চলছে না।”
দর্শন অর্ষার কথা শুনে বলল,
“আর ইউ শিওর?”
“ইয়েস। হান্ড্রেড পার্সেন্ট।”
“তুমি যদি পারো সমস্যা নাই। অর্পা তুই ওর নাম লিখিয়ে আয়।”
অর্পা গিয়ে অর্ষার নাম লিখিয়ে এল। রাবেয়া অর্ষার নাম লিখছে। আলিশা আড়চোখে অর্ষা আর দর্শনকে দেখছে। ওরা দু’জন এক সাথে দাঁড়িয়ে আছে। আলিশা অর্ষার দিকে চেয়ে দাঁতে দাঁত লাগাচ্ছে আর চোখ ছোট ছোট করছে।
…
অর্ষা আর প্রিয়া আলিশার ব্যাপারে কথা বলছে। অর্ষাকে প্রিয়া বারবার সাবধান করছে।
“দেখ অর্ষা বি কেয়ার ফুল। তোকে কিন্তু ও জ্বালানোর অনেক চেষ্টা করবে, ঝামেলায়ও ফেলবে। ও কয়েকবার অপমানিত হয়েছে কিন্তু চুপচাপ ছিল। নীরবতা বড়সড় ঝড়ের লক্ষণ। তাই ওর থেকে সাবধানে থাকবি। ওকে একদম ক্ষেপানোর চেষ্টা করবি না।”
অর্ষা এ-সব একদমই পাত্তা দিচ্ছে না। আর না আমলে নিচ্ছে।
“আরে দূর! ও কিছু করতে এলে আমি ছেড়ে দেব? ওকে থিতলে ফেলব। আর দর্শনের দিকে যদি আবারও চোখ দেয় আমি ওর চোখ গালিয়ে ফেলব চিনে না আমায়।”
প্রিয়া বিরক্ত নিয়ে বলল,
“উফফ! তুই চিনিস না ওকে? ও চাইলে কি করতে পারে? এক তাল পাকিয়ে তোকে কলেজ থেকে বের করে দিলে?”
“এত সহজ?”
“ওর জন্য সহজ। ও চাইলেই পারবে। আর ও যে হাত গুটিয়ে বসে নেই সে আমি জানি। শুধু তুই বুঝতে চাস না।”
“আমার বুঝে কাজ নেই। তুই বুঝ। আমি ওর ফালতু কার্যকলাপ একদম সহ্য করব না। তাতে যা হোক।”
অর্ষা রাগ দেখিয়ে চলে গেল। প্রিয়া হতাশ হলো। ওকে কেন বোঝাতে পারে না।
অর্ষা ক্যান্টিনের দিকে যেতে গিয়ে বাগানের কাছে থেমে গেল। অর্পা চিৎকার চেঁচামেচি করছে। ওর বরাবর রুশান দাঁড়িয়ে। রুশানও কি যেন বলছে কিন্তু অর্পার মুখের এক্সপ্রেশন দেখে মনে হচ্ছে সিরিয়াস কিছু। সিরিয়াস কিছু না হলে এভাবে চিৎকার করত না। রুশান ওর হাত ধরে কিছু একটা বুঝানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু অর্পা ঝারা মেরে হাত সরিয়ে নিচ্ছে আর আঙুল তুলে রাগী মুখ করে কিছু বলছে। অর্ষা ব্যাপারটা বোঝার জন্য আরেকটু এগিয়ে গেল।
এগিয়ে যাওয়ার পর শুনতে পেল অর্পা বলছে,
“তুই কখনো ঠিক হবি না। তোর তো একটা দিয়ে মন ভরে না। যা দশটা নিয়ে মেতে থাক আর আমার থেকে দূরে থাক।”
“অর্পা, তুমি বেশি রিয়েক্ট করছো। আমি বললাম তো….
” কিছু বলার দরকার নাই তোর। আমার চোখের সামনে থেকে দূর হ৷ আমার আশেপাশে যেন তোকে না দেখি।”
অর্ষা ওদের কনভারসন শুনে চিন্তিত হয়ে পড়ল। মনে হচ্ছে সিরিয়াস কিছু হয়েছে। ওদের মধ্যে সাধারণ কিছু হয়নি৷
অর্ষা মোবাইল বের করে দর্শনকে কল দিল। দর্শন মোবাইল সাইলেন্ট করে লাইব্রেরিতে পড়ছে। অর্ষা কি করবে বুঝতে না পেরে নিজেই এগিয়ে গেল। ওকে দেখে রুশান চুপ করে গেল।
অর্ষা রুশানের দিকে চেয়ে দেখে ও মাথা নিচু করে আছে। অর্পা রাগে ফুসফুস করছে। ওর শরীর কাঁপছে। ওর চোখ রক্ত বর্ণ ধারণ করেছে। চোখে শুধু আগুনই না পানিও ছলছল করছে। মনে হচ্ছে এখুনি টপ করে পড়ে যাবে।
অর্ষা ওকে ধরে বলল,
“আপু এমন করছো কেন? কি হয়েছে? ভাইয়া কিছু বলেছে?”
অর্পার চোখ বেয়ে এক ফোঁটা পানি পড়ে গেল। গালের অর্ধেকে গিয়ে আঁটকে আছে। ওর ঠোঁট কাঁপছে।
কাঁদতে কাঁদতে বলল,
“ও আমাকে ভালোই বাসে না। ভালো যদি বাসত তাহলে আমার সামনে অন্য মেয়ের সাথে ফ্লার্ট করত না।”
অর্ষা রুশানের দিকে প্রশ্নাত্মক দৃষ্টি দিল। রুশান চোখ মুখ শক্ত করে দাঁড়িয়ে আছে। অর্ষা ওকে আর কোন প্রশ্ন করল না। অর্পাকে শান্ত হতে বলছে। রুশান অর্পার দিকে একবার চেয়ে স্থান দ্রুত ত্যাগ করল।
….
“আরে আমি কী জানতাম সিচুয়েশন এতটা জটিল হবে? যদি জানতাম কস্মিনকালেও এমন কাজ করতাম। আমি তো মজা করছিলাম।”
রুশান পাইচারি করছে আর কথাগুলো এক নাগাড়ে বলে যাচ্ছে। দর্শন, রাতুল আর তামিম এক সাথে দাঁড়িয়ে আছে। ওরা ঘটনা শুনে ওকেই দোষারোপ করছে। তাই রুশান নিজের পক্ষে কথাগুলো বলল।
রাতুল এগিয়ে গিয়ে বলল,
“শোন যতই জোর গলায় বলিস দোষ তোরই। তুই জানিস অর্পা এগুলো পছন্দ করে না। তবুও তুই মেয়েদের সাথে ফাজলামো করতে যাস। আর আজ ওর সামনে। ও রাগ করবে স্বাভাবিক।”
তামিম চুপচাপ। ও কাকে দোষারোপ করে কথা বলবে জানে না। নিজের লাইফটাই যখন এলোমেলো তখন কাকে কি বলবে।
দর্শন রুশানের কাঁধে হাত রেখে বলল,
“অর্পাকে গিয়ে সরি বল। ভালো ভাবে বুঝিয়ে বল ও বুঝবে।”
“ও তো আমার কথাই শুনছে না। ওর আশেপাশে যেতে নিষেধ করে দিয়েছে।”
দর্শনও কিঞ্চিৎ ক্ষেপে গেল।
“বেশ করেছে। গার্লফ্রেন্ডের সামনে অন্য মেয়ের সাথে ফ্লার্ট করিস কোন সাহসে? তোর অভ্যাস আর ভালো হলো না৷ যা খুশি কর।”
“তোরাও ভুল বুঝছিস। আমি ফ্লার্ট করিনি। অর্পার সাথে ঝগড়া হয়েছে, আমার সাথে কথা বলছে না তাই ওকে জেলাস ফিল করানোর জন্য ওকে দেখিয়ে…..
দর্শন ওর মুখের কথা কেড়ে নিয়ে বলল,
” হ্যা, জেলাস ফিল করাতে গিয়ে তুলকালাম কাণ্ড বাঁধিয়ে দিয়েছো। এখন সামলা ঠেলা। আমি অর্পার সাথে কথা বলে দেখি।”
রুশান অসহায় কন্ঠে ওর দিকে ঘুরে বলল,
“দেখ দোস্ত প্লিজ। একটু গিয়ে কথা বল।”
….
দর্শন অর্পার সাথে কথা বলতে গিয়ে অর্ষাকে ওর সাথে দেখতে পেল। অর্ষাকে পেয়ে কাজটা সুবিধার হবে ভাবতেই মুখে হাসি ফুটল। এতক্ষণ নার্ভাস ছিল এখন অনেকটা সাহস সঞ্চারিত হলো।
অর্ষাকে ইশারা করে ডাকল দর্শন। অর্ষা কাছে এসেই বলতে শুরু করল,
“রুশান ভাইয়া কি করেছে জানো?”
“জানি তো। তাই তো এসেছি অর্পার সাথে কথা বলতে। রুশানের এখানে দোষ নেই। ও তো চেয়েছিল অর্পাকে জেলাস ফিল করাতে। বেচারা বুঝতে পারেনি পরিস্থিতি এতটা জটিল হবে।”
“এটা কেমন কথা? ওদের মধ্যে ঝগড়া হয়েছে। নিজেরা মিটিয়ে নেবে। একজন রাগ করে থাকতে অন্যজন মানানোর চেষ্টা করবে তা না করে অন্য মেয়ের সাথে তাকে দেখিয়ে দেখিয়ে ফ্লার্ট করে জেলাস ফিল করাবে? কি লজিক তোমার। এত সুন্দর লজিক কে দেয় তোমাকে?”
দর্শন দেখছে অন্যের সম্পর্ক জোড়া লাগাতে গিয়ে নিজেরটা ভেঙে যাচ্ছে। কি সাংঘাতিক ব্যাপার।
“আমি তো তাই বলি। আমি একা না আমরা সবাই মিলে রুশানকে বকাবকি করেছি। ওকে ওর ভুলটা ধরিয়ে দিয়েছি। ও ভুল বুঝতে পারছে। এখন কি আমাদের উচিত না ওদের ভুল বুঝাবুঝি মিটিয়ে দেওয়া?”
অর্ষা অর্পার দিকে তাকাল। কেমন মুখ কালো করে বসে আছে।
“হ্যা মেটানো দরকার। তবে সময় প্রয়োজন। অর্পা আপুর মন খুব খারাপ। রেগেও আছে খুব। তাই পরিস্থিতি ঠান্ডা হওয়া অবধি অপেক্ষা করো। ততক্ষণে রুশান ভাইয়াকে বুঝাও। অর্পা আপু তো অল্পতে ছেড়ে দিয়েছে, আমি হলে…
দর্শন আগ্রহ নিয়ে প্রশ্ন করল,
“তুমি হলে?”
“আমি হলে মাঠের মাঝখানে দাঁড় করিয়ে হকি স্টিক দিয়ে বেধম পেটাতাম। হাড়গোড় ভেঙ্গে হাসপাতালে এডমিট করে দিতাম। নে এবার হাসপাতালে বসে চিল মার। ভালো না?”
অর্ষা দাঁত কেলিয়ে বলল। দর্শন ঢোক গিলে মাথা নাড়িয়ে সায় দিয়ে বলল, “খুব ভালো।”
আগাম একটা করে বেশি পর্ব পড়তে চাইলে আমাকে এক্ষনি ফ্লো করুন ✊🖐️
চলবে……