#প্রেম_তুমি (দ্বিতীয় খণ্ড)
ফাবিহা নওশীন
পর্ব-7
প্রিয়া ড্রাইভ করছে অর্ষা ওর পাশে। অর্ষাকে ড্রাইভ করতে দেয়নি। অর্ষা কাচ খুলে জানালার বাইরে চেয়ে আছে। ওর দৃষ্টি স্থির। মনের ভেতর যে ঝড় বয়ে যাচ্ছে সেটা বুঝতে কোন সমস্যা হচ্ছে না প্রিয়ার। ও ড্রাইভ করতে করতে অর্ষার দিকে তাকাচ্ছে।
প্রিয়া নিরিবিলি জায়গায় গিয়ে গাড়ি থামালো। গাড়ি হঠাৎ ব্রেক কষায় অর্ষা হকচকিয়ে গেল। প্রিয়া গাড়ি থেকে নেমে দোকান থেকে একটা পানির বোতল কিনে আনে। অর্ষার হাতে দিয়ে বলল,
“গলা ভিজিয়ে নে।”
অর্ষা এক ঢোক পানি খেতেই প্রিয়া অনুতাপের সুরে বলল,
“আ’ম সো সরি। আমি জানতাম দর্শন ভাইয়া ইউএসএ। কবে এল কিছুই জানি না। আমি যদি জানতাম ওখানে দর্শন ভাইয়া আছে তাহলে তোকে কখনোই নিতাম না। আ’ম রিয়েলি সরি।”
অর্ষা নিশ্চুপ। ওকে নিশ্চুপ দেখে প্রিয়া আরো বিপত্তিতে পড়ল।
“অর্ষা, কিছু বল। দূর, না জানিয়ে এভাবে দুম করে চলে যাওয়া ঠিক হয়নি। ওরাও হয়তো এমন পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত ছিল না। সবাই কেমন থমথমে ছিল।”
অর্ষা মুখ খুলল দীর্ঘ সময় পর।
“প্রিয়া, গাড়ি স্টার্ট দে। ভালো লাগছে না।”
প্রিয়া ওর কাঁধে হাত রেখে বলল,
“টেক ইট ইজি। এসব ভেবে কষ্ট পাস না। একদিন না একদিন তো দেখা হওয়ারই ছিল। হয়ে গেছে। এটাই ভেবে নে।”
অর্ষা নিরস কন্ঠে বলল,
“তাই বলে এভাবে? এভাবে দেখা হওয়ার ছিল? আমি কতটা অস্বস্তিতে পড়েছি। আমার ভেতরটা কেমন লাগছিল। এখনো কেমন অস্থির লাগছে। মনে হচ্ছে মরে যাব।”
অর্ষা অস্থির অস্থির করতে লাগল।
“অর্পা আপু কখনো বলেনি দর্শন ভাইয়ার কথা। যদি জানতাম তাহলে তোকে এসবে জড়াতাম না। আমি একাই যেতাম। প্লিজ কষ্ট পাস না। আমাকে মাফ করে দে।”
“এখানে তোর দোষ কোথায়? আমি তো নিজে থেকেই গেলাম। ভাগ্য আমাকে টেনে নিয়ে গেছে। নয়তো হঠাৎ করে যাওয়ার জন্য উতলা কেন হব?”
“আমি তো ভেতরে ঢুকেই স্তব্ধ হয়ে গেছি। আমার এতটা অস্থির লেগেছে তোর তো লাগবেই।”
অর্ষা আবারও নীরব। মনে পড়তে সেই দৃশ্য। প্রিয়ার ইশারায় পেছনের দিকে তাকাতেই দর্শনকে দেখে প্রাণপাখিটা বের হয়ে যাচ্ছিল। দর্শনের বিস্মিত চোখ-মুখ। হঠাৎ ওকে দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে যাওয়া। মনে হচ্ছিল দর্শন এই বুঝি ওকে চেপে ধরবে। তারচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছিল এত বছর পরে ওকে দেখে। সেই বাচ্চা বাচ্চা মুখটা আর নেই৷ গম্ভীর ম্যাচুউর একটা মানুষ। আগের মতোই গোছানো, পরিপাটি। এইটুকুর বেশি দেখার সৌভাগ্য হয়নি। এক পলক চেয়েই চোখ সরিয়ে ফেলেছিল। নয়তো দুই চোখ যে ঝলসে যেত!
দর্শন ঘর জুড়ে পাইচারি করছে। মাঝেমধ্যে বিছানায় বসছে। আবারও দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। দু’হাতে মাথা চেপে ধরছে আবারও পাইচারি করছে। ভেতরে থেকে দরজা বন্ধ তাই বাইরের কেউ ওর অবস্থা বুঝতে পারছে না। দদর্শনের প্রচণ্ড অস্থির লাগছে। মাথার ভেতরে একটাই শব্দ ঘুরছে। অর্ষা! অর্ষা! অর্ষা!
এতবছর পর! সাড়ে সাত বছর! অনেকটা অপেক্ষা করেছিল তারপর হাল ছেড়ে দিয়েছিল। ভেবেছিল আর কখনো দেখা হবে না। এক সময় এটাও ভেবেছিল আর না হোক দেখা। কেটে যাক জীবন এভাবেই। কিন্তু দেখা হয়ে গেল। আজ এত কাছে চলে এসেছিল। তবুও ধরতে পারেনি, বলতে পারেনি একটা শব্দ। কী অদ্ভুত! আজ অর্ষা আর ও কয়েক হাত দূরত্বে ছিল। তবে সাড়ে সাত বছর কোথায় ছিল? ওর ধরাছোঁয়ার ভেতরে? ওর আশেপাশে? দর্শন আর কিছুই ভাবতে পারছে না। হাতের ঘড়িটা খুলে ড্রেসিং টেবিলের উপরে রাখল। হাতে ব্যান্ডেজ করা। দর্শন হাতের দিকে তাকাল। মনে পড়ল অন্য এক অর্ষাকে। কত বদলে গেছে। ওকে দেখে স্থির হয়ে ছিল তারপর চলে গেল। আবারও চলে গেল। সেই লম্বা, পাতলা মেয়েটা হঠাৎ দরজা দিয়ে ভেতরে ঢুকল। ওর চোখে মুখে লাজুক একটা আভা ছিল। মুহুর্তেই ওর দিকে চোখজোড়া নিবদ্ধ হয়ে গিয়েছিল। সেই অর্ষা শুধু ড্রেস আপ, মেক আপ অন্য রকম ছিল।
চুলগুলো আগের চেয়ে বড় হয়েছে। নিজেকে পরিপাটি রাখতে শিখে গেছে। দর্শন নতুন করে মুগ্ধ হচ্ছিল। মুগ্ধ হয়ে চেয়ে ছিল ওর দিকে। মনে হচ্ছিল স্বপ্ন কিংবা ওর কল্পনা। তারপর ভাবল স্বপ্ন কিংবা কল্পনা এত সুন্দর হতে পারে? ভুল ভাঙল যখন অর্পা ওকে জড়িয়ে ধরল। অর্ষা ওর চোখে চোখ রাখল। সেই চোখ! দর্শনের বুকে তীব্র যন্ত্রণা হচ্ছে।
চোখে ভাসছে সেই সোনালী রোদ্দুরের দিনগুলো যখন অর্ষা ওকে ভালোবেসে কত পাগলামি করত।
__________
কয়েক দিন পর। এক বিকেলে দর্শন মন খারাপ করে বাগানে বসে আছে। চুপচাপ ছেলেটা ইদানীং আরো বেশি চুপচাপ থাকে। পরিবারের সবাই লক্ষ্য করেছে বিষয়টা। কিন্তু দর্শনের কাছ থেকে যুক্তিসঙ্গত কোন কারণ পায়নি। দর্শন এমনিতেও কথা বলে কম। মন খুলে কথা বললে না-হয় সমস্যা, ভালো-মন্দ বোঝা যায়। কিন্তু ও তো কিছুই বলে না। ওর ফুপাতো বোন রাইসা এসে বলল,
“এভাবে বাড়িতে বসে বোরিং সময় না কাটিয়ে রেডি হয়ে নে, আমাদের অফিসে পার্টি আছে।”
“তো আমি কী করব?”
দর্শনের সোজাসাপ্টা উত্তর।
“তো যাবি আমার সাথে।”
“তোদের অফিসের পার্টিতে আমার কী কাজ? তাছাড়া ওসব পার্টি-সার্টি আমার পছন্দ না।”
“অফিসের পার্টি সেখানে ফ্যামিলি এলাও আছে। সো আমার সাথে গেলে তোকে কেউ কিছু বলবে না। আর পার্টিতে কেন যাবি? মুড অন করতে। সারাদিন বাসায় থাকলে তো মুড অফ থাকবেই। যা রেডি হয়ে নে।”
“দেখ রাইসা, অযথা বিরক্ত করিস না ভালো লাগছে না।”
সেন্টি খেয়ে বলল,
“আমি বিরক্ত করলাম? ভালো ভেবেই তো বলেছি তবুও…. ওকে ফাইন।”
রাইসা গাল ফুলিয়ে বসে রইল।
দর্শনের মনে হলো একটু বেশিই বলে ফেলেছে।
“যা আর ড্রামা করিস না ড্রামা কুইন। আমি যাব তোর সাথে।”
রাইসা খুশি হয়ে গেল ওর কথা শুনে।
অর্ষা অফিসের পার্টিতে একাই গিয়েছে। পুরো অফিসে আকর্ষণীয় লাইটিং করা হয়েছে। চারদিকে জাঁকজমক পরিবেশ বিরাজ করছে। অর্ষা পরেছে কালো রঙের গাউনের সাথে রাতের উপযোগী হালকা মেক আপ। ম্যাচিং স্টোনের এয়ারিং ও গলায় নেকলেস। হাতে সাদা পাথরের ব্রেসলেট, হাই হিল। অর্ষা সবার সাথে টুকটাক কথা বলার পাশাপাশি আশেপাশের সবকিছু তদারকি করছে। অর্ষা চায়না কোন কারণে, কোন ভাবে অফিসের নাম ক্ষুন্ন হয়, অন্য কোম্পানির কাছে ভাবমূর্তি নষ্ট হোক। তাই আশেপাশে নজর রাখছে। অর্ষার গলা খুসখুস করছে। তাই ড্রিংক আনতে গেল। পার্টি এখনো শুরু হয়নি। অফিসের কলিগরা একে অপরের সাথে হাসি-ঠাট্টায় মেতে আছে। রাইসা দর্শনকে নিয়ে অফিসের মেইন হলে প্রবেশ করেছে। দর্শন একটু ইতস্তত বোধ করছে। যখন রাইসা ওর কলিগের সাথে আসা ফ্যামিলি, ফ্রেন্ড অথবা নিজেদের প্রেমিক -প্রেমিকাদের সাথে পরিচয় করায় তখন থেকে একটু ইজি ফিল করছে।
দর্শন আর রাইসা এক সাথে বসল। গ্রোগাম শুরু হয়ে গেছে। দর্শনের সবকিছু বোরিং লাগছে। আশেপাশে কাপল ড্যান্স, হাসি-কৌতুকের মধ্যে নিজেকে বেমানান লাগছে। তাই মোবাইল বের করে ফেসবুকে লগইন করল। ফেসবুকে সময় কাটানোর সিদ্ধান্ত নিল।
তখনই কানে ফেঁসে এল,
“হেই অর্ষা!”
অর্ষা নামটা শুনে চমকে উঠে দর্শন। একই নামের অনেক মানুষ থাকে এটা জানা সত্ত্বেও দর্শন ঘাড় ঘুরালো।
“ইউ আর লুকিং সো বিউটিফুল।” অর্ষার এক কলিগ অর্ষাকে বলল। অর্ষা প্রতিউত্তরে মুচকি হাসল।
দর্শন দ্বিতীয় বারের মতো ধাক্কা খেল। অর্ষা! আবারও অর্ষা! দর্শন বসা থেকে দাঁড়িয়ে গেল। মুগ্ধ হয়ে অর্ষাকে দেখছে৷ এ কোন অর্ষা! আকাশ থেকে নেমে আসা কোন অপ্সরী। দর্শন অপলক চেয়ে আছে। অর্ষাকে এখানে দেখবে সেটা কল্পনাতীত। কিছুক্ষণ চেয়ে থাকার পর অর্ষার চোখে পড়ল দর্শন। অর্ষাও বিস্ময় নিয়ে ওর দিকে চেয়ে আছে। বুকের ধুকধুকানি বেড়ে চলেছে। আবারও অনাকাঙ্ক্ষিত দেখা! মনে প্রশ্ন জাগছে দর্শন এখানে কী করছে?
হঠাৎই দর্শনের কাঁধে কারো হাতের ছোয়া পড়ল।
“এভাবে দাঁড়িয়ে আছিস কেন?”
দর্শন ঘুরে রাইসাকে দেখল। অর্ষার দিকে আরো একবার তাকাল। অর্ষা ওর দিকেই চেয়ে আছে।
“এমনি।”
দর্শন দাঁড়ানো থেকে বসে পড়ল। রাইসা ওর মতো কথা বলে যাচ্ছে আর দর্শনের চোখ অর্ষাতে বিভোর। অর্ষার হাঁটাচলা, কথা বলা সব কিছু পর্যবেক্ষণ করছে। ওর স্টাইল বদলেছে ক্ষানিকটা। পরক্ষণেই মনে হলো ক্ষানিকটা নয় অনেকটা। হয়তো এখন মানসিকভাবেও বদলেছে। আগের মতো রাগের বশে বোকামি করে না, কোন কিছু নিয়ে পাগলামি করে না। সবকিছুতেই সিরিয়াস।
অর্ষা ম্যানেজারের সাথে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কথা বলছে। অর্ষাকে দেখে মনে হচ্ছে ও এখানে জব করে। নয়তো এত মানুষের সাথে কীসের কথা। রাইসাকে জিজ্ঞেস করার সিদ্ধান্ত নিল।
রাইসা জিজ্ঞেস করছে,
“খাবি কিছু?”
আর দর্শন অর্ষাকে দেখিয়ে জিজ্ঞেস করল,
“ওই মেয়েটাকে চিনিস?”
রাইসা ওর প্রশ্নে কিছুটা অবাক হলো। তারপর অর্ষার দিকে তাকাল। এতক্ষণ ধরে কত কথা বলছে অথচ দর্শনের খেয়াল নেই। দর্শন তাহলে ওকে দেখছিল।
“হ্যা, চিনি তো। ওর নাম অন্বেষা হাসান।”
“এখানে জব করে?”
“হ্যা, ছ’মাস হলো জয়েন করেছে। তোর মতো বিদেশ থেকে পড়াশোনা করে এসেছে, আর্কিটেক্ট ইঞ্জিনিয়ার।”
দর্শনের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ল। বিস্ময় নিয়ে অর্ষার দিকে তাকাল। যে মেয়ে পড়াশোনাকে এড়িয়ে চলত, মোটে পড়তেই চাইতো না, দর্শনের কথাও শুনত না, পরীক্ষায় পাশ মার্ক তুলে যেত, সে আজ ইঞ্জিনিয়ার। আসলেই মেয়েটা বদলে গেছে।
অর্ষা কাজের ফাঁকে দর্শনের দিকে তাকাল। দর্শন তখন রাইসার সাথে কথায় ব্যস্ত।
রাইসা মুচকি হেসে বলল,
“মনে লেগেছে? তোর সাথে মানাবে ভালো কথা বলে দেখব?”
রাইসা মিটমিট করে হাসছে। দর্শনের গা জ্বলে যাচ্ছে।
“শাট আপ! পরিচিত লাগছিল তাই জিজ্ঞেস করলাম। আজেবাজে কথা শুরু করে দিয়েছিস আজিব।”
“বারে,, তুমি যেভাবে ড্যাবড্যাব করে চেয়ে আছো।”
“পরিচিত লাগছিল তাই চেয়ে ছিলাম। আর একটা কথা বললে তোর খবর আছে।”
দর্শন আবারও অর্ষার দিকে তাকাল। অর্ষা দর্শনের দিকে চেয়ে ছিল তাই চোখে চোখ পড়ে গেল। দুজনেই চোখ ফিরিয়ে নিয়ে সামনের দিকে তাকাল। প্রোগ্রাম দেখায় ব্যস্ত হয়ে পড়ল।
অর্ষার পার্টি আর ভালো লাগছে না। টায়ার্ড লাগছে। ম্যানেজারকে বলে পার্টি শেষ হওয়ার আগেই চলে যাচ্ছে। অফিসের বাইরে বের হতেই গা ছমছম করে উঠল। সারি সারি গাড়ি রাখা অথচ একটা মানুষ নেই। চারদিকে আলো জ্বললেও গভীর রাত তাই কিছুটা ভয় লাগছে।
অর্ষা সাহস রেখে সামনের দিকে এগিয়ে গেল। ওর গাড়ি পার্কিং লটেই আছে। এক পা আগাতেই কেউ ওর হাত চেপে ধরল। অর্ষার শরীর, মন দুই-ই কেঁপে উঠল অজানা আতংকে। ঘাড় ঘুরিয়ে দেখার সাহস হচ্ছে না। স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে রইল। সে নিজেই ওর হাত ধরে ওকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে ফেলল। সামনের মানুষটাকে দেখে অর্ষা বাকরুদ্ধ। স্থির দৃষ্টিতে চেয়ে আছে। হঠাৎ ওকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে দাঁত খিচিয়ে বলল,
“এত সহজে চলে যাবে? সেদিন যেতে দিয়েছি বলে আজও দেব?”
অর্ষা নিজেকে দর্শনের কাছ থেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করলে দর্শন ওকে আরো শক্ত করে চেপে ধরে।
“ছাড়ো আমাকে?”
“এত বছর ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলে তাই দূরত্ব সহ্য করেছি, এখন এত কাছে থেকে দূরত্ব কেন সহ্য করব?”
“একদম ফালতু কথা বলবে না। আমাকে যেতে দেও। নয়তো চিৎকার করব।”
“করো, আমি তোমাকে চিৎকার করতে নিষেধ করেছি? যত শক্তি আছে খাঁটাও। আজ তোমাকে ছাড়ছি না।”
অর্ষা শান্ত হলো। চিৎকার চেঁচামেচি করে লাভ হবে না। তাই শান্তভাবে প্রশ্ন করল,
“কী চাও তুমি?”
“জবাব চাই। আমার জবাব চাই।”
“আমি কাউকে জবাব দিতে বাধ্য নই।”
দর্শন চিৎকার করে বলল,
“অবশ্যই বাধ্য তুমি। একটা মানুষের জীবনের সাথে এভাবে খেলবে আর জবাব দিবে না? আমার সাথে কেন এমন করলে? কেন ছেড়ে গেলে? কী অপরাধ ছিল আমার? সাড়ে সাত বছর এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছি কিন্তু পাইনি।”
অর্ষা ক্ষোভ নিয়ে চেঁচিয়ে বলল,
“কারণ তুমি কাপুরুষ। কাপুরুষ তুমি।”
দর্শন ওর কথা শুনে স্তব্ধ হয়ে গেল। ওকে ছেড়ে দিল। ছিটকে সরে গেল ওর কাছ থেকে। অর্ষা বলছে ও কাপুরুষ। অর্ষার দিকে তাকাল। অর্ষা কাঁপছে। ওর কাঁপুনিতে রয়েছে রাগ, ক্ষোভ আর ঘৃণা।
দর্শন আর এক মুহুর্ত দাঁড়ালো না। চলে গেল ওকে রেখে। দর্শন যেতেই অর্ষা বসে পড়ল দেয়াল ঘেঁষে। দুচোখ বেয়ে পানি পড়ছে। ডুকরে কেঁদে উঠল।
চলবে…….