#প্রেম_তুমি
ফাবিহা নওশীন
পর্ব-১২
অর্ষা এক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে। ওর হতবিহ্বল দৃষ্টি দর্শনের চোখ এড়ায়নি। অর্ষা এক প্রকার স্তব্ধ হয়ে রয়েছে। ওর হার্টবিট এতই বেড়ে যাচ্ছে যে মনে হচ্ছে হৃদপিণ্ডটা বের হয়ে মাটিতে ছিটকে পড়বে। অর্ষার ইচ্ছে করছে বুকের বা পাশে হাত দিয়ে স্পন্দন মাপতে কিন্তু কিছুই করতে পারছে না। হাত-পা কিছুই নাড়াতে পারছে না। অস্থির অস্থির লাগছে। তাই চুপ করে স্থির হয়ে আছে। ওর অস্থিরতা দূর করতে দর্শন আবারও প্রশ্ন করল,
“এই মেয়ে, অল্প ভালোবাসলে চলবে কি? উত্তর দিচ্ছো না কেন?”
অর্ষা সামান্য কেঁপে উঠল। কাঁপা কাঁপা গলায় বলল,
“হ্যা, মানে,, কি বললে?”
দর্শন মৃদু হাসল। তারপর মোলায়েম কন্ঠে বলল,
“আরে দূর, শুনোনি? আমি বললাম তোমাকে অল্প ভালোবাসলে চলবে? কারণ আমি বেশি ভালোবাসতে পারব না। কেন জানো? আমার প্রথম ভালোবাসা হলো পড়াশোনা। তোমাকে বেশি ভালোবাসতে গিয়ে যদি স্বপ্নটা ভুলে যাই। তাই ভয় হয়।”
অর্ষা চাপা হাসল ওর কথা শুনে। চাপা হাসলেও সে হাসিটা দর্শনের চোখে পড়ল। অর্ষা আড়চোখে তাকাতেই দর্শনের চোখে ওর চোখ পড়তেই চোখ সরিয়ে নেয়। লজ্জায় চোখ মুখ কুঁচকে লাজুক হেসে সামনের দিকে পা বাড়াল। যেন পালাতে পারলেই হলো। যেতে যেতে ভাবছে যার জন্য এতদিন পাগল ছিল, যাকে প্রেমিক হিসেবে পাওয়ার জন্য এতগুলো দিন ধরে স্বপ্ন দেখে এসেছে আজ সে নিজে এসে ধরা দিয়েছে। সব স্বপ্ন মনে হচ্ছে। অথবা রুপকথার কোন গল্প। যেখানে রাজকন্যা তার রাজকুমারকে পেয়ে গেছে। রাজকুমার তার জন্য সাত সাগর তেরো নদী পাড় হয়ে ঘোড়ায় চড়ে প্রেম নিবেদন করতে এসেছে।
অর্ষা মিটিমিটি হাসছে। একবার পেছনে ঘুরে তাকাল। দর্শন দু’হাত ভাজ করে ওর দিকেই চেয়ে আছে।
অর্ষা মিষ্টি হাসল তারপর দর্শনকে উদ্দেশ্য করে বলল,
“হ্যা, চলবে।”
তারপর আবারও মিষ্টি হাসল। দর্শন স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ওর ঠোঁটের কোনেও হাসি।
গভীর রাত। বাড়িতে নীরবতা ছেয়ে গেছে। বাবা হয়তো ঘুমিয়ে পড়েছেন। কিছুক্ষণ আগে এসে ওকে চেক দিয়ে গেছে ঘুমিয়েছে কি না।
অর্ষা চোখ বন্ধ করে ঘুমের ভান ধরে ছিল। এখন শুয়ে শুয়ে ফেসবুক স্ক্রল করছে। দর্শনকে আনব্লক করে ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট দিয়েছে। দর্শনও তখন ফেসবুকে ছিল। নোটিফিকেশন আসতেই চেক দিয়ে দেখল অর্ষা ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট দিয়েছে। দর্শন না চাইতেও হেসে ফেলল। তারপর ওর মাথায় দুষ্ট বুদ্ধি আসল। ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট একসেপ্ট করবে না। ঝুলিয়ে রাখবে ব্লক দেওয়ার শাস্তি হিসেবে। অর্ষা অনেকক্ষণ অপেক্ষা করল একসেপ্ট হবার জন্য। দর্শন হয়তো অনলাইনে নেই তাই ওর টাইমলাইনের পোস্টগুলো দেখছে। মেসেজ অপশন বের করে মেসেজ দেওয়ার জন্য। আঙুল কি-বোর্ডে রাখতে চেয়েও রাখছে না। শুধু শুধু মেসেজটা রিকুয়েষ্ট মেসেজে গিয়ে পড়ে থাকবে বড্ড অবহেলায় আর অবহেলা অর্ষা একদম নিতে পারে না। মোবাইল রেখে দিল। তারপর ভাবতে লাগল সকাল থেকে কলেজ থেকে বের হওয়ার আগ পর্যন্তের ঘটনাগুলো। দর্শন ওর বয়ফ্রেন্ড এটা ভাবতেই শরীরে শিহরণ বয়ে যাচ্ছে। কেমন যেন একটা লাগছে। এ যে আকাশ ছোয়া অনুভূতি। ধরা-ছোয়ার বাইরে। অর্ষা চোখ বন্ধ করে চোখ খুলে শুধু দর্শনকেই দেখছে।
….
আজ অর্ষা একটু পরিপাটি হয়ে এসেছে। পরিপাটি বলতে কলেজ ড্রেসটা সুন্দর করে রেখেছে একটুও ঘোচাতে দেয়নি। চুলগুলো সুন্দর করে ঝুঁটি করেছে। এলোমেলো হতে দিচ্ছে না। মুখে একটু ফেস পাওডার মেখেছে। যথাসম্ভব ভদ্র মেয়ের মতো সুন্দর করে হেঁটে কলেজে ঢুকছে। কলেজ গেটটা পাড় করে ভেতরে আসার পরই ওর দুচোখ দর্শনকে খুঁজছে। কেমন লজ্জা লজ্জা লাগছে। দর্শনের সামনে পড়লে কি বলবে? কিভাবে তাকাবে ওর দিকে? আচ্ছা এমন নয় তো যে দর্শন গতকালের কথা ভুলে গেছে?
এসব নানান ভাবনায় বিভোর অর্ষা। তখনই কাঁধে ধাক্কা লাগায় হুশ হলো। পাশেই অর্পা। দাঁড়িয়ে ভ্রু নাচিয়ে মিটমিট করে হাসছে।
অর্ষা ওকে এভাবে হাসতে দেখে ভরকে গেল।
“অর্পা আপু কী হয়েছে?”
অর্পা ওর হাত ধরে বলল,
“কিছু হয়নি তবে হবে।”
অর্ষা নিজের হাতের দিকে চেয়ে ঘাবড়ে যায়। ঘাবড়ে আমতা আমতা করে বলল,
“কী হবে?”
অর্পা হেসে বলল,
“প্রমাণ হবে বেবি, প্রমাণ।”
“কীসের প্রমাণ?”
“তা তো বলা যাবে না। চলো আমার সাথে।”
অর্ষা বুঝতে পারছে না কি হচ্ছে। ওকে ধরে কি দর্শনের কাছে নিয়ে যাবে? ধরে নিয়ে যাওয়ার কি আছে। দর্শন চাইলে নিজে এসে কথা বলতে পারে। মনে হচ্ছে অন্য কেস।
অর্পা যখন ওকে নিয়ে যাচ্ছে তখন দর্শন বন্ধুদের দ্বারা ঘেরাও অবস্থা। সবাই ওকে চেপে ধরেছে। হাসি-ঠাট্টা করছে। দর্শন অনেক কিছুই বলার চেষ্টা করছে কিন্তু কেউ ওর কথা পাত্তা দিচ্ছে না। অর্ষা দর্শনকে দেখে থমকে গেল। দর্শনেরও ওর চোখে চোখ পড়ল। সবাই যখন অর্ষাকে দেখল তখন হাসি-ঠাট্টা থামিয়ে দিল। সবার তখন সিরিয়াস দৃষ্টি ওর দিকে। অর্ষা ওদের সবাইকে এভাবে চেয়ে থাকতে দেখে অবাক হচ্ছে। ওর মন বলছে কিছু একটা হয়েছে।
অর্পাও ওকে চেপে ধরে বলল,
“তোমাদের মধ্যে কী চলছে?”
অর্ষা একবার দর্শনের দিকে তাকাল। তারপর না জানার ভান ধরে বলল,
“কী চলবে?”
অর্পা ভ্রু কুঁচকে বলল,
“কী চলবে? না বোঝার ভান করছো? এতদিন পরে কলেজে এলে তাও দর্শনের সাথে। আমরা কিছু জানি না বুঝেছ? আমরা সবাই সবটা জানি। এখন নাটক করে লাভ হবে না।”
“তোমরা যদি সবটা জানতে তবে আমাকে জিজ্ঞেস করতে না। জানো না বলেই জিজ্ঞেস করছো।”
ওর কথা শুনে সবাই দমে গেল। দর্শন ঠোঁট চেপে মৃদু হাসল। তারপর অপেক্ষায় রইল পরের ঘটনা দেখার।
অর্পা ক্ষেপে গেল। ওদের দুজনের ভাব-ভঙ্গিমা নিতে পারছে না। ওরা সরাসরি কিছু কেন বলছে না। ওর যে আর ধৈর্যে কুলাচ্ছে না।
“অর্ষা!! দেখ আমার কিন্তু প্রচণ্ড রাগ হচ্ছে। তাড়াতাড়ি বল। নয়তো এখন মার খাবি।”
অর্ষা এমন কথা শুনে ভরকে গেল। এতগুলো মানুষের সামনে ওকে মারার কথা বলছে। কি লজ্জা, কি লজ্জা!
দর্শন সামনে এসে উচ্চস্বরে হেসে দিল। তারপর নিজের দিকে সবার মনোযোগ নিয়ে বলল,
“গাইস! প্লিজ এদিকে। তোরা সবাই জানতে চাস অর্ষার সাথে আমার কী চলছে? এটাই তো? না বলতে চাস অর্ষার সাথে আমার প্রেম-ট্রেম চলছে? ওকে তাহলে শোন, ইয়েস! ওই আর ইন এ রিলেশনশিপ। আর সেটা গতকাল থেকে। সবাই হ্যাপি?”
সবাই চোখ বড়বড় করে ওর দিকে তাকাল যেন কি এমন অদ্ভুত আজগুবি কথা বলে ফেলেছে।
“তুমি তলে তলে টেম্পু চালাবা আর আমরা বললেই দোষ?”
রুশান চোখ ছোট ছোট করে বলল।
দর্শন ওর কথা শুনে বলল,
“ছিহ! এসব কী ল্যাংগুয়েজ?”
“ল্যাংগুয়েজ? তোকে তো আজ আমি আমার হাতের সব ল্যাংগুয়েজ বুঝাব। সেই কবে থেকে আমি আর অর্পা চেষ্টা করে যাচ্ছি তোকে বলে যাচ্ছি তখন ক্ষেপে গেলি। আমাদের সাথে সম্পর্ক রাখবি না হেন তেন আর গতকাল নিজে গিয়ে নাচতে নাচতে রিলেশন করে আসতে লজ্জা করল না?”
দর্শন স্বাভাবিকভাবেই বলল,
“না লাগেনি। কেন লাগবে?”
অর্ষা অবাক হয়ে ওর কথা শুনছে, ওকে দেখছে। তাহলে আর থেকে সবাই জানবে ও দর্শনের গার্লফ্রেন্ড। ওদের রিলেশনটা পাবলিকলি চলে এসেছে। অর্ষার কিন্তু ভালো লাগছে বিষয়টা।
“লজ্জা লাগেনি সমস্যা নাই। তবে ট্রিট চাই।”
সবাই ট্রিট ট্রিট বলে হৈচৈ শুরু করে দিল।
….
আলিশা ক্লাসে যাচ্ছে আর তখনই অর্পা ওকে পেছনে থেকে ডাকল।
“আলিশা, শোন।”
আলিশা ওর কথা শুনে দাঁড়াল।
“দর্শন আমাদের আজ ট্রিট দিচ্ছে। তোকেও আসতে বলেছে। ক্লাস শেষে চলে আসিস।”
আলিশা খুশিতে গদগদ হয়ে বলল,
“সত্যি! অবশ্যই আসব।”
আলিশা মনে মনে বেশ খুশি। ওর ভেতরে চাপা উত্তেজনা কাজ করছে। দর্শন ওকেও যেতে বলেছে তার মানে ওকে নিজেদের একজন ভাবছে।
খাবার অর্ডার দেওয়া হয়ে গেছে। সবাই যে যার মত গল্প করছে। নিজেদের মত ব্যস্ত। কিন্তু আলিশার চোখ দর্শনকে খুঁজছে। অর্পা বলেছে কিছুক্ষণের মধ্যেই আসবে। তাই ও রেস্টুরেন্টের প্রবেশ পথে চেয়ে আছে।
কিছুক্ষণ পরে দর্শনকে আসতে দেখল। ওকে আসতে দেখে আলিশার চোখ মুখে খুশির ঝলকানি দেখতে পেল। কিন্তু তারপর ওর পেছনে চোখ যেতেই মুখের রং পালটে যায়। খুশিটাকে বিভৎস লাগছে। অর্ষা আর প্রিয়া ওর সাথে। দর্শন অর্ষার সাথে আসবে সেটা কল্পনার বাইরে। ভেবেছিল কখনো অর্ষার মুখ দেখবে না দর্শন কিন্তু ট্রিটে ওকে বলেছে আর ওরা এক সাথে আসছে। হঠাৎ করে অর্ষার চোখ ওর দিকে গেল। ওকে দেখে অর্ষা ঠোঁটের কোনে রহস্যময় হাসি দিল। হাসিটার মধ্যে তাচ্ছিল্যও ছিল।
দর্শন অর্ষাকে নিয়ে একই টেবিলে বসে সবার উদ্দেশ্যে বলল,
” আমার পক্ষ থেকে ট্রিট দেওয়ার একমাত্র কারণ অর্ষা৷ গতকাল আমি ওকে প্রপোজ করেছি আর ও একসেপ্ট করেছে সো আমরা এখন গার্লফ্রেন্ড বয়ফ্রেন্ড তাই সবাইকে ট্রিট দিচ্ছি। গাইস ইঞ্জয় করো ট্রিটটা।”
ওর কথা শুনে আলিশা স্তব্ধ হয়ে গেল। ওরা প্রেমের সম্পর্কে চলে গেছে আর সে ট্রিট ও নাচতে নাচতে খেতে চলে এসেছে। না জেনেই কি করে চলে এল। আর ওরা কী করে, কিভাবে? আলিশা রাগে ফেঁটে পড়ছে। অর্ষার দিকে তাকাল। অর্ষা আবারও বিজয়ী হাসি দিল। আলিশা রাগে ফুসফুস করতে করতে বের হয়ে গেল। ও যেতেই দর্শন অর্ষাকে বলল,
“যে তোমাকে অপমান করবে,,কষ্ট দিবে আমি তাকে ঠিক এভাবেই ফিরিয়ে দেব।”
অর্ষা ওর চোখের দিকে মৃদু হেসে ছলছল চোখে চেয়ে রইল।
…..
অর্ষা ফেসবুক স্ক্রল করছে। দর্শনের আইডিতে গিয়ে ওর প্রতিটি পিক দেখছে আর এক ধ্যানে দেখছে। ওর খুব ইচ্ছে করছে দর্শনের সাথে কথা বলতে। অর্ষা ঘড়ির দিকে চেয়ে হতাশ হলো। দর্শন আগেই বলেছে বিকাল চারটা থেকে ছয়টা আর সন্ধ্যা সাতটা থেকে রাত এগারোটা। এই সময় যেন ওকে কল না দেয়। বিকাল চারটা থেকে ছয়টা পর্যন্ত স্যারের কাছে পড়ে আর সাতটা থেকে রাত এগারোটা কলেজ, প্রাইভেটের পড়া শেষ করে। এই সময় যেন ওকে ডিস্টার্ব না করা হয় সে ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা দিয়ে দিয়েছে। কিন্তু অর্ষার খুব ইচ্ছে করছে ওর সাথে কথা বলতে। তাই ওর নাম্বারে কল দিল। কল বেজে কেটে গেল। তারপর আবার দিল। এইবার বিপরীত পাশে থাকা মানুষটি কল কেটে দিল। অর্ষা বুঝতে পারল দর্শন কথা বলতে চায় না।
দর্শন মোবাইলটা বইয়ের নিচে রেখে খাতায় অংক করছে৷ তখনই মেসেজ আসল অর্ষার নাম্বার থেকে। দর্শন না চাইতেও মন আনচান করছে অর্ষা কি লিখেছে জানার জন্য। মেসেজ দেখবে কিন্তু রিপ্লাই করবে না মনে মনে সিদ্ধান্ত নিল। অর্ষা তো আর জানবে না। তাই দর্শন মোবাইল হাতে নিয়ে মেসেজ চেক করল।
“দর্শন, প্লিজ আমার কল রিসিভ করো অথবা তুমি কল দেও। তোমাকে আমার খুব প্রয়োজন। প্লিজ।”
দর্শন মেসেজ দেখে বিচলিত হয়ে গেল। অজানা আশংকায় বুক কেঁপে উঠল। অর্ষার এত রাতে কি এমন হলো? ওর কোনো বিপদ হলো না তো। দর্শন দ্রুত ওর নাম্বারে কল দিল। কল ধরেই অর্ষা বলল,
“আচ্ছা তুমি এত কিউট কেন? একটু বেশিই কিউট। এত কিউট হতে কে বলেছে? নজর পড়ে যাবে তো। এখন থেকে এত কিউট কিউট পিক ফেসবুকে দিবা না। ওকে বায়।”
অর্ষা খট করে কল কেটে দিল। দর্শন কানের কাছে মোবাইল নিয়ে স্তব্ধ হয়ে বসে আছে। চোখের পলকও পড়ছে না। এই কথা বলার জন্য মেসেজ দিল। আর ও কি ভয়টাই না পেয়ে গিয়েছিল। রাগে চোয়াল শক্ত হয়ে আসতেই কি যেন ভেবে হেসে ফেলল। ফোনের স্কিনে চোখ রেখে মিটমিট করে একা একাই হাসছে।
আগাম একটা করে বেশি পর্ব পড়তে চাইলে আমাকে এক্ষনি ফ্লো করুন ✊🖐️
চলবে……