প্রেম_তুমি পর্ব ২

#প্রেম_তুমি
ফাবিহা নওশীন
পর্ব-২

সাদা রঙের ট্রের উপর চারটে কফি মগ সাজিয়ে ব্লাক কফি ঢালছে দর্শনের মা। কফির মগ থেকে ধোঁয়া উড়ছে। পুরো পরিবার ব্লাক কফিতে আসক্ত। দর্শনের বাবা পত্রিকা খুলে ডাইনিং এর চেয়ারে বসে আছেন। তার গায়ে হাসপাতালের পোশাক। তিনি নাস্তা করে হাসপাতালে যাবেন। দর্শন ব্যাগ কাঁধে, হাতে চশমা নিয়ে রুম থেকে বের হলো। ওকে দেখে ওর মা দেয়ালের বড় ঘড়ির দিকে তাকাল। তিনি এখন দর্শনের রুমে কফি নিয়ে যাচ্ছিলেন কিন্তু তার আগেই দর্শন রুম থেকে বের হলো। দর্শন টাইম টেবিল মেইনটেইন করে চলে। কলেজে যেতে দশ মিনিট লাগে। সাড়ে ন’টায় ক্লাস। দর্শন সময় দেখে ন’টায় ঘর থেকে বের হয়ে নাস্তা করে ন’টা দশ মিনিটে বের হবে। ঠিক দশ মিনিট পূর্বে কলেজে প্রবেশ করবে৷ অন্য ছাত্রছাত্রীদের মতো আগে গিয়ে আড্ডা গল্প করার অভ্যাস ওর নেই। আজ আটটা পঞ্চাশে বের হতে দেখে বেশ অবাক হয়।

ওর মা ওর দিকে এগিয়ে এসে বলল,
“কিরে বাবা, আজ তাড়াতাড়ি বের হলি যে?”

দর্শন তাড়া দেখিয়ে বলল,
“মা, আমাকে তাড়াতাড়ি বের হতে হবে। ক্লাসের আগে কিছু টপিকের নোটস কালেক্ট করতে হবে। আমি আজ নাস্তা করব না। কফিটা দেও আর ড্রাইভারকে বলো গাড়ি রেডি করতে।”

দর্শনের বাবা পত্রিকা থেকে চোখ সরিয়ে দর্শনের দিকে তাকাল। ছেলেকে অস্থির লাগছে। তাড়াহুড়োর মধ্যে আছে তাই হয়তো।
“তাই বলে নাস্তা করবে না? দুপুর দুইটা পর্যন্ত না খেয়ে থাকতে পারবে?”

দর্শন মৃদু হেসে বলল,
“বাবা, তোমার মতো বড় ডাক্তার হতে হলে পরিশ্রমের পাশাপাশি সেক্রিফাইজ করতেই হবে।”

দর্শনের বাবা ছেলের কথায় খুব খুশি হলেন। মৃদু হেসে সায় দিলেন। ছেলে ডাক্তার হওয়ার জন্য এতটা পরিশ্রম করছে ভেবেই পুলকিত হয়ে যান। গর্বও হয় ছেলের জন্য। তার বিশ্বাস ছেলে একদিন তাকে ছাড়িয়ে বড় ডাক্তার হবে, অনেক নাম করবে। দর্শন কফিটা তাড়াতাড়ি শেষ করে বের হয়ে গেল।

অর্ষার মন খারাপ। আনমনে হাঁটছে লাইব্রেরীর দিকে। দুরন্ত স্বভাবের মেয়েটা কেমন শান্ত হয়ে গেছে। একা একাই হাঁটছে। গতকাল লাইব্রেরীতে এসে কত খুঁজেছে ডায়েরিটা। কিন্তু পায়নি। কেউ হয়তো নিয়ে গেছে। কিন্তু এই ডায়েরি নিয়ে কার কী লাভ হবে। লিখে রেখেছিল তো কিছু আবল তাবল অনুভূতি। ডায়েরিতে নিজের নামটাও লিখেনি। কিন্তু ভীষণ প্রিয় ছিল ডায়েরিটা। জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটা অংশ। বন্ধুরা সবাই মিলে খুঁজেছে সেটা। সবাই জানে ডায়েরিতে গুরুত্বপূর্ণ নোট ছিল। শুধুমাত্র প্রিয়া জানে ডায়েরির গোপন বিষয়টা।

দর্শন বুক শেলফে কি যেন খুঁজছে মনোযোগ দিয়ে। পুরো লাইব্রেরী ফাঁকা। একদম জনমানবশূন্য। এত সকালে কোন বিদ্যাসাগর আসবে লাইব্রেরীতে। দর্শনের নেহাত প্রয়োজন তাই এসেছে। দর্শনের কপালে বিরক্তি আর ক্লান্তি কাজ করছে। ও খুঁজে পাচ্ছে না কাঙ্ক্ষিত বইটা। কি যে বিরক্ত লাগছে। হঠাৎ করে কারো পায়ের শব্দে দৃষ্টি পাল্টালো। চোখ গেল সামনের দিকে। একটা মেয়ে আসছে। হাঁটছে অগোছালো ভাবে। মনে হচ্ছে কোনো ঘোরে ঘোরতরভাবে হারিয়ে গেছে। দর্শন মেয়েটাকে ভালো করে দেখল। লম্বা, পাতলা, ফর্সা গায়ের রঙ মেয়েটার। পাতলা বলতে খুবই রোগা। পিঠ পর্যন্ত সিল্কি ছোট চুলগুলো ঝুঁটি করা। কলেজের ড্রেসের সাথে পায়ে কলেজের সাদা সু। হাতে একটা ঘড়ি। কাঁধে ব্যাগ আর হাতে কিছু বই। চোখের ডার্ক সার্কেল বিমর্ষ চেহারাটাকে আরো বিমর্ষ করে তুলেছে। মনে হচ্ছে কিছু নিয়ে খুব চিন্তিত। রাতে ঠিকমতো ঘুমায় না। হয়তো রাত জেগে পড়াশোনা করে। মেয়েটা নিজের দুনিয়ায় বিচরণ করছে। আশেপাশে কিছু খেয়াল নেই। মাঝেমধ্যে নিজের অজান্তেই দীর্ঘশ্বাস ফেলছে। মেয়েটা টেবিলের উপরে ব্যাগ রেখে ধপ করে বসে পড়ল। দু’হাতে কপাল চেপে ধরে মাথা নিচু করে চোখ বন্ধ করে রাখল। দর্শন বেশ অবাক হলো। লাইব্রেরিতে এসে চোখ বন্ধ করে রেখেছে। নিশ্চয়ই কিছু হয়েছে। দর্শনের ইচ্ছে করছে গিয়ে জিজ্ঞেস করতে,
“এই মেয়ে, তোমার কী হয়েছে? মন খারাপ? পরীক্ষায় নাম্বার কম পেয়েছো? না-কি পড়া মাথায় ঢুকছে না?”
পরক্ষণেই ভাবল এ-সব কি ভাবছে। অচেনা একটা মেয়ের সাথে সেধে গিয়ে কথা বলবে? মেয়েটা নিশ্চিত ছ্যাচড়া ভাববে কিন্তু ও তো ছ্যাচড়া না। তাই সিদ্ধান্ত নিল ওকে কিছু জিজ্ঞেস করবে না।
অর্ষা কপাল থেকে হাত সরিয়ে চোখ মেলল। মাথা নাড়ায় ধীরে ধীরে। তাতে ওর চুলের ঝুঁটি মৃদু দুলে ওঠে। হাত দিয়ে ঠোঁট আর নাকের উপর হালকা ঘামগুলো মুছে নিল। এক আঙুল দিয়ে গাল চুলকে বাম পাশে থেকে ডান পাশে তাকাল। ডান পাশে চেয়ে ভূত দেখার মতো চমকে উঠে। একজোড়া মায়াবী চোখ ওর দিকে চেয়ে আছে। চোখাচোখি হতেই চোখজোড়া দৃষ্টি সরিয়ে নিল। অর্ষা গভীর অনুভূতিতে তলিয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ আবিষ্কার করল গভীর অনুভূতির কারণ। এই চোখজোড়া সেই মানুষটার যাকে প্রাণ দিয়ে চায় ও।

অর্ষাও দর্শনের সাথে চোখ সরিয়ে নেয়। তারপর আবারও দর্শনের দিকে তাকায়। দর্শন শেলফ থেকে একটা বই সযত্নে বের করে নিচ্ছে। লাইব্রেরীতে আর কেউ নেই। অর্ষার বুক কাঁপছে। ওর বুকের সাথে ওর শরীরটাও কাঁপছে। এমন কেন হচ্ছে বুঝতে পারছে না। দর্শন এতক্ষণ ধরে ওকে দেখে যাচ্ছিল ভেবেই মন নাড়া দিয়ে ওঠে। দর্শনের দিকে আবারও তাকাল। দর্শন বই নিয়ে লাইব্রেরী থেকে বের হয়ে যাচ্ছে। অর্ষা টেবিলের উপর থেকে কাঁধে ব্যাগ আর হাতে বই তুলে নিয়ে দ্রুত পা চালাল। দর্শনকে ওভারটেক করে নিজেই আগে দরজা দিয়ে বের হয়ে গেল। দর্শন অবাক হয়ে দরজার দিকে চেয়ে রইল। মেয়েটা এভাবে হনহন করে বের হয়ে গেল কেন? তাও ওর আগে? মেয়েটা কি ভয় পেয়েছে? ওকে খারাপ বখাটে ছেলে ভেবেছে? কিন্তু ও তো কিছু করেনি, বলেও নি। শুধু ওর দিকে একবার চেয়েছিল আর কিছু না। ওর দিকে চাওয়ার একটা যৌক্তিক কারণ আছে। এসব ভাবতে ভাবতে দর্শন বাইরে বের হলো। মেয়েটা মাঠ দিয়েও দ্রুত হাঁটছে। ফার্স্ট ইয়ারের ক্লাস যে বিল্ডিংয়ে হয় সেখানে যাচ্ছে। নিশ্চিয় মেয়েটা ফার্স্ট ইয়ার। দর্শন এসব বিষয় নিয়ে মাথা ঘামালো না।

দর্শন ক্লাসে গেল। বন্ধুরা আড্ডা দিচ্ছে। ওদের সাথে যোগ দিল। ওদের আড্ডা হয় পড়াশোনা নিয়েই। মাঝেমধ্যে শুধু টপিক চেঞ্জ হয়ে অন্যদিকে যায়। এগুলো ব্যাপার না। দর্শন ক্লাস শেষ করে ব্যাগ নিয়েই বের হয়ে গেল। ক্যাম্পাসে বসে ডায়েরিটা আবারও খুলে পাতাগুলো নেড়ে দেখছে।
“তুমি আমার বিচ্ছেদহীন ভালোবাসা।”

দর্শন ডায়েরিটা বন্ধ করল। চোখ বন্ধ করে জোরে শ্বাস নিল। তারপর সেটা ব্যাগে রেখে চারদিকে চোখ বুলাল। রুশানকে খুঁজছে। রুশান আড্ডা দিচ্ছে বন্ধুদের সাথে। দর্শন ওর কাঁধে কয়েকবার টাপট মেরে চোখের ইশারায় ওর সাথে আসতে বলল।
“হ্যা, বল।”

দর্শন ঠোঁট কামড়ে কিছু একটা ভেবে মুখে সিরিয়াস ভাব এনে বলল,
“ডায়েরিটা ফেরত দেওতা উচিত। হেল্প মি।”

রুশান দুষ্ট হাসি দিয়ে বলল,
“সারারাত ডায়েরি পড়েও মেয়েটার প্রেমে পড়িস নি? আমি তো প্রেমে পড়ে ডুবে মরে যাচ্ছি। আহা! কেউ যদি আমাকে এভাবে ভালোবাসত আর সেই ডায়েরিটা আমার হাতে এসে পড়ত আমি জ্ঞান হারাতাম।”

দর্শন সিরিয়াস ভঙ্গিতে বলল,
“ফাজলামি রাখ। কাজের কাজ কিছু কর। কেউ প্রেম নিবেদন করলে গা ভাসিয়ে দিতে হবে, জ্ঞান হারাতে হবে, মরে যেতে হবে এমন নয়।”

“যেদিন প্রেমে পড়বে সেদিন বুঝবি শা*লা।”

“দেখা যাবে। এখন কী করা যায় তাই বল। কারো পার্সোনাল ডায়েরি রাখতে ইচ্ছে করছে না। এটা মাথা খারাপের ওষুধ না হোক।”

“আমি দেখছি কী করা যায়।”
রুশান ভরসা দিয়ে চলে গেল।

পুরো লাইব্রেরীতে পিনপতন নীরবতা। সবাই মনোযোগ দিয়ে পড়ছে। কেউ কেউ ফিসফিস করে কথা বলছে সেটা শুধু পাশের জনের কান পর্যন্ত পৌছাতে সক্ষম। তাই লাইব্রেরী পড়ার উপযোগীই আছে। সেকেন্ড ইয়ারের একটা মেয়ে লাইব্রেরীতে একটা ডায়েরি হাতে ঢুকল। তারপর স্থির দাঁড়িয়ে গলা খাকারি দিয়ে বলল,
“এটেনশন প্লিজ। ডিস্টার্ব করার জন্য দুঃখীত। কিন্তু সবার এটেনশন চাচ্ছি প্লিজ। গুরুত্বপূর্ণ একটা কথা বলার ছিল।”

সবাই ওর দিকে এটেনশন দিল। মেয়েটা একটা ডায়েরি উঁচু করে বলল,
“ডায়েরিটা লাইব্রেরীতে পাওয়া গেছে কিন্তু ওর মালিককে খুঁজে পাচ্ছি না। কোথাও তার নাম লেখা নেই। সম্ভবত ডায়েরিটা একটা মেয়ের হবে। এটা কার?”

লাইব্রেরী জুড়ে পাখির কিচিরমিচির শুরু হয়ে গেল কিন্তু কেউ বলতে পারল না ডায়েরিটা কার। মেয়েটা হতাশ হয়ে বুক শেলফে ডায়েরিটা রেখে বলল,
“মালিককে পাওয়া গেলে ডায়েরির অবস্থান জানিয়ে দিও। ধন্যবাদ।”

মেয়েটি চলে গেল। মেয়েটা দর্শন আর রুশানের ক্লাসমেট। দর্শন কিংবা রুশান যদি যেত তাহলে ধরা পড়ার ভয়ে, লজ্জায় ডায়েরির মালিক সামনে আসত না সে সংশয়ে ওকে দিয়ে বলিয়েছে। যাতে মেয়েটা ভয় না পেয়ে ডায়েরি নিয়ে যায়। যেহেতু লাইব্রেরীটা কলেজ লেভেলের আর ওরা সেকেন্ড ইয়ার তাই সিনিয়র হিসেবে কিছুটা ক্ষমতার ব্যবহার করেছে।

দর্শন হতাশ হয়ে বন্ধুদের আড্ডায় বসে আছে। ভেবেছিল সেই অপরিচিতার দেখা মিলবে। দেখা মিলবে সেই মানবীর যে তাকে এতটা শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় হৃদয়ে স্থান দিয়েছে। ডায়েরি নিতে কেউ আসেনি শুনেই মন খারাপ হয়ে গেছে। রাতুল দর্শনের মন খারাপ দেখে জিজ্ঞেস করল,
“কিরে দোস্ত, কী হয়েছে? অনেকক্ষণ ধরে দেখছি মুড অফ। রিজন কী?”

রুশান হাস্যরসের মাধ্যমে বলল,
“আরে, ওকে কেউ প্রেমপত্র দিয়েছে। কিন্তু কে দিয়েছে তাকে পাচ্ছে না। ব্যাক করার চেষ্টা করছে কিন্তু কেউ আসছে না৷ মোটকথা সে আর পাত্তা দিচ্ছে না। বেচারা বন্ধু আমার মনে হয় প্রেমে পড়ে গেছে।”
বলেই রুশান হাসতে লাগল। রাতুল সাথে তাল মিলিয়ে বলল,
“দর্শন বন্ধু আমার সত্যি নাকি? তুই প্রেমে পড়েছিস? কাউকে হন্য হয়ে খুঁজছিস?”

দর্শন ওদের মশকরা সহ্য করতে পারছে না৷ ধৈর্য হারিয়ে কর্কশ গলায় বলল,
“সব সময় তোদের এই ফাজলামো পছন্দ হয় না। একজন আমাকে নিয়ে কিছু লিখেছে বলেই কী প্রেমে তলিয়ে গেছি? আমি জাস্ট তার জিনিস তাকে ব্যাক করতে চাইছি। আর প্রেমে তলিয়ে গেলে তোএ সমস্যা কী? আমি কি কারো প্রেমে পড়তে পারি না? আমি কি কখনো বলেছি আমি কখনো কারো প্রেমে পড়ব না? হ্যা, আমি পড়াশোনায় বেশ সিরিয়াস কারণ আমার স্বপ্ন, আমার পরিবারের স্বপ্ন আমার ডাক্তার হওয়ার। তাই পরিশ্রম করি। তার মানে এই নয় আমার পার্সোনাল লাইফ বলে কিছু থাকবে না।”

তামিম ওদের ধমক দিয়ে বলল,
“সব সময় দর্শনকে নিয়ে মজা কেন করিস? ও কী রোবট? প্রেম ভালোবাসা কী ওর জীবনে আসতে পারে না? ও কী কখনো বিয়ে করবে না? ওর জীবনে প্রেম আসবে না? সব হবে তবে ও সঠিক সময়ের অপেক্ষা করছে। আর তোরা মজা করিস।”

রাতুল আর রুশানের মুখ কালো হয়ে গেল। রুশান বলল,
“এমন ক্ষেপে গেলি কেন? সব দেখি সিরিয়াসলি নিচ্ছিস। আমরা তো মজা করছিলাম যা আর কখনো মজা করব না।”
রুশান রাগ করে উঠে চলে গেল। দর্শন বসেই রইল। ওর মনটা অশান্ত তার উপর বন্ধুদের সাথে মনোমালিন্য ধূর, এখন ওর বিরক্ত লাগছে।

তুলি দৌড়ে এল। হাঁফাতে হাঁফাতে বলল,
“অর্ষা, তোর ডায়েরি পাওয়া গেছে। একটা মেয়ে নাকি লাইব্রেরীতে এসে একটা ডায়েরি হাতে মালিককে খুঁজছিল। না পেয়ে সেটা লাইব্রেরীতে রেখে চলে গেছে।”
অর্ষা বসা থেকে দাঁড়িয়ে গেল। ওর চোখ মুখ ঝলমল করছে। খুশি যেন উপচে পড়ছে।
“প্রিয়ু পেয়ে গেছি আমার প্রাণ পাখিটাকে। এই তুলি যা না ডায়েরিটা নিয়ে আয়।”

প্রিয়া থামিয়ে দিয়ে বলল,
“থাক! আমি যাচ্ছি। আমি গিয়ে নিয়ে আসি। তুলিকে যেতে হবে না।”
প্রিয়া অর্ষার দিকে একবার চেয়ে ডায়েরি আনতে চলে গেল। প্রিয়া চায়না ডায়েরি নিয়ে নতুন করে ঝামেলা হোক। তুলি যদি ডায়েরির ভেতরের কোজ কথা পড়ে ফেলে তারপর অর্ষার সামনে এসে সব গরগর করে বলবে আর অর্ষা ক্ষেপে যাবে উল্টো পালটা একটা ঘটনা ঘটে যাবে। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতেই ও নিজে যাচ্ছে।

প্রিয়া ডায়েরি হাতে নির্দ্বিধায় লাইব্রেরী থেকে বের হচ্ছে। দর্শন পেছনে থেকে ওকে দেখল। একটা মেয়ের হাতে ডায়েরি দেখে ওর ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটল। কৌতূহল হয়ে ওর পেছন নিল। অবশেষে পাওয়া গেল তাকে। যাকে খুঁজছে এতক্ষণ ধরে। পুরো দিন শেষে তাকে পাওয়া গেল। দর্শনের বুক ধুকপুক করছে। প্রিয়ার পিছু নিল প্রিয়ার অজান্তে। কিন্তু কিছু দূর যাওয়ার যা দেখল তাতে বিস্ময়ে ওর চোখ কপালে। ডায়েরি নিয়ে অন্য একটা মেয়ের হাতে দিল। তার হাতে ডায়েরি দিতেই ওকে জড়িয়ে ধরল। মেয়েটার চেহারা দেখা যাচ্ছে না। দর্শন ওর চেহারা দেখার জন্য আকুপাকু করছে। আরেকটু সামনে গিয়ে দেখল ওই মেয়েটাকে।

আগাম একটা করে বেশি পর্ব পড়তে চাইলে আমাকে ফ্লো করুন ✊🖐️

চলবে……

(প্লিজ সবাই রেসপন্স করুন। গঠনমূলক কমেন্ট করুন। পেজের রিচ একদম ডাউন। অনেক পাঠকের নাগালে যাচ্ছে না গল্পটা।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here