প্রেম_পাগলামি #নিহীন_রুবাইয়াত #পর্ব:৩৫(অন্তিম পর্ব)

0
656

#প্রেম_পাগলামি
#নিহীন_রুবাইয়াত
#পর্ব:৩৫(অন্তিম পর্ব)

সকাল গড়িয়ে বিকেল হয়ে গেলো,ওনাদের কোন খবর নেই।আদিলকে পাওয়া গেলো কিনা সেটাও জানি না।একবার কি কল করে দেখবো?ওনাকে কল দেবো নাকি ভাইয়াকে।ভাইয়াকেই দিলাম অবশেষে।
–ভাইয়া
–নিহী,সোনা আমরা এখনো খুজছি ওই শয়তানটাকে তুই চিন্তা করিস না।রাখি রে খুব ব্যস্ত আছি।
–ভাইয়..(কথাটা শুনলো না কেটে দিলো)

সন্ধ্যা হয়ে গেছে,সৌরভ ভাইয়ার বাবা মা ওনাদের বাসায় চলে গেছে।আমরাই আছি এখন বাসায়।মাগরিবের নামাজ পড়ে বিছানায় শুয়ে আছি।খুব চিন্তা হচ্ছে ওরা কি খুজে পেলো আদিলকে।আদিল কি পাবে তার যোগ্য শাস্তি??এমন সময়ই কল আসলো আমার মোবাইলে।নাম্বারটা তো ওনার আমি সাথে সাথে রিসিভ করি।
–হ্যালো(আমি খুবি মরিয়া হয়ে হ্যালো বলি)
–চিন্তা করো না নিহীপাখি সব ঠিক হয়ে যাবে??
–আপনি কিভাবে জানলেন আমি…
–আমি তোমার মনের কথা পড়তে পারি নিহীন।তুমি কি কিছু খেয়েছো সন্ধ্যায়??
–না
–দুপুরে খেয়েছিলে তো??
–আ আ আম মানে….
–খাওনি তাই তো?
–হুম আসলে…
–যাও খেয়ে নাও।না খেয়ে থাকতে হয় না নিহীন
–আপনি খেয়েছিলেন তো??
–হ্যা আমি…
(উনি থেমে গেলেন আমি হ্যালো হ্যালো করার পরো কোন কথা নেই)
–হ্যালো..কি হলো কথা বলছেন না কেন??
–এই দাড়া…
ফোন কেটে গেলো।আমি কল দিলাম কিন্তু বন্ধ,আমি বেশ কয়েকবার কল দিলাম কিন্তু বারবার বন্ধ,এদিকে ভাইয়া আর সৌরভ ভাইয়াও কল রিসিভ করছে না।১ ঘন্টা পর আর থাকতে না পেরে আপুর কাছে গেলাম ও কিছু জানে কিনা।আপুর কাছে পৌছাতেই আপুর ফোনে কল আসলো।
–হ্যা শাওন..
–শাওন কল করেছে??দেখি…(আপুর হাত থেকে ফোন কেড়ে নিই)
–হ্যালো শাওন ওনারা…
–তাড়াতাড়ি হসপিটালে আসো নিহীন ভাই…(শাওনের কোন কথা আর আমি শুনিনি হসপিটাল এর কথা শুনেই আমার হাত থেকে ফোন পড়ে যেতে যায় আপু কোনরকমে ধরেছে)
–নিহী কি হয়েছে তোর??

আপুর কথা না শুনেই আমি ছুটলাম।ওড়না টা মাথায় দিয়ে রাস্তায় বের হয়ে গেছি আমার পিছু পিছু বাবা আর আপুও চলে এসেছে।রাস্তায় এসে আমি অটো থামাতে বলছি কিন্তু কোন অটোই থামছে না পরে দেখি বাবা গাড়ি নিয়ে এসেছে।বাবাকে দেখে গাড়িতে উঠে বসলাম।
–বাবা..
–হসপিটালেই যাচ্ছি মা..

২৭ মিনিট পর হসপিটালে পৌছালাম।হসপিটালে পৌছাতেই শাওনকে দেখলাম।আমি দৌড়ে শাওনের কাছে যায়।
–শাওন উ উনি কোথায়??
–ভাই তো উপরে…(আমি আর কোন কথায় শুনলাম ছুটে গেলাম তিন তলায়)

তিন তলায় এসেই ভাইয়াকে দেখতে পাই একটা কেবিনের সামনে।আমি ভাইয়ার সাথে কোন কথা না বলেই কেবিনে ঢুকে যায় দেখি বেডে একজন শুয়ে আছে আর তার সমস্ত শরীর ব্যান্ডেজ করা।আমি ওনার কাছে গিয়ে কেঁদে ফেলি,,
–কি হয়েছে আপনার এটা কিভাবে হলো??কথা বলছেন না কেন??উঠুন প্লিজ কথা বলুন আমার সাথে…
–নিহীন…(পিছনে ফিরেই দেখি উনি দাড়িয়ে কপালে একটু ব্যান্ডেজ।ওনাকে দেখে আমি তো অবাক।উনি তো আমার সামনে দাড়িয়ে তাহলে এটা কে?)
–আপ আপনি?
–হ্যা নিহীন আমি কিন্তু তুমি এভাবে কাঁদছ কেন??
–আপনি এটা হলে শুয়ে আছে কে??
–ওটা আদিল।আর আমার কিছু হয়নি নিহীন
(একবার আদিলের দিকে তাকিয়ে ওনার দিকে তাকালাম।ওনাকে সুস্থ দেখে আমি ছুটে ওনার কাছে গিয়ে জড়িয়ে ধরি।ওনাকে জাড়িয়ে ধরে অনেক কাদি।উনি আমার চোখের পানি মুছে দেই।)

দুই পরিবারের লোকি হসপিটালে আসে।আদিলকে উনি এতো মেরেছে যে ওর অবস্থা অনেক খারাপ।ওর যখন জ্ঞান ফেরে তখন পুলিশ গ্রেফতার করে নিয়ে যায় ইভটিজিং ও খুন করতে যাওয়ার অপরাধে।রাতে ওনাদের বাসায় যায় আমরা সবাই।ড্রয়িং রুমে বসে আছি।
–বিপদ সব গেলো এবার ভালোই ভালোই সৌরভ আর নিলুফার বিয়েটা দিয়ে দিতে হবে।কি বলেন বেয়ায়??
–জি বেয়ায় আর দেরি করবো না।

সবাই ওদের বিয়ে নিয়ে আলোচনা শুরু করে কিন্তু কেউ আমাদের ব্যাপারে কথাই বললো না।আমাদের যে বিয়ে হয়েছে যেন কারো খেয়ালি নেই।তখন সৌরভ ভাইয়া বলে উঠলো,
–বাবা সৌভিক আর নিহীনের ও তো বিয়ে হয়েছে।।
(সৌরভ ভাইয়ার কথায় সবার যেন মনে পড়লো।কিছুক্ষন চুপ থাকার পর সৌরভ ভাইয়ার বাবা বলে,
–আমরা ভুল করেই বিয়েটা দিয়েছি।সব ভুল যখন মিটে গেছে তখন আর বিয়েটা রেখে কি হবে??
–হোয়াট??নোওও(সৌভিক বলে ওঠে)
(ওনার রিয়াকশনে সবাই ওনার দিকে তাকাই)
–কি হলো সৌভিক?তুমি ওমন করলে কেন??
–বাবা মানে আসলে মানে
–কি মানে মানে ক্লিয়ারলি বলো,
–ভাইয়া তুই বল
–সৌরভ কেন বলবে??তুমি বলো
–বাবা বাদ দাও না আমিই বলি,,বাবা সৌভিক নিহীনকে অনেক ভালোবাসে,আজ থেকে না দুই বছর আগে থেকে।
–কি?
–হ্যা বাবা
–সৌরভ যা বলছে সেটা কি সত্যি সৌভিক?? (উনি কিছুক্ষন চুপ থেকে মাথা নাড়ায় হ্যা সূচক)
–ও না হয় নিহীনকে ভালোবাসে কিন্তু নিহীন কি ওকে ভালোবাসে??(ওনার বাবা আমার দিকে তাকায়)
–তুমি কি সৌভিককে ভালোবাসো নিহীন??(আমার বাবা জিজ্ঞেস করে??
–………..
–কি হলো কথা বলছো না যে??(আমি আবারো চুপ,এবার বাবা ধমক দিয়ে ওঠে)কথা বলো
–হ্যা বাবা বাসি।

সবাই চুপ করে যায়।আমি আর উনি একে অপররের দিকে তাকাই,দুজনেই ভয় পেয়ে আছি,কি হবে এবার??বেশকিছুক্ষন পর বাবা বললো,,
–নিশানের মা দুই মেয়ের বিদায় একসাথে করলে খুব কষ্ট হবে কি??

[–বেয়ান কষ্ট পেলেও কিন্তু আমি আমার ঘরের দুই লক্ষীকে একসাথে আনবো?
–হ্যা বেয়ান(ওনার মা-বাবা বলে ওঠে)]

–না না এ তো আমার মেয়েদের সৌভাগ্য যে এতো ভালো পরিবার পাবে।

সবাই হেসে ওঠে।আমি আর উনিই বোকার মতো দাড়িয়ে থাকি।আমাদের দেখে শাওন বলে,
–তোমরা কি এখনো অন্য জগতে আছো??তোমাদেএ বিয়ে হবে আবার..হাহাহহহহহ..

শাওনের কথা শুনে আমাদের দুজনের মনে যেন লাড্ডু ফুটছে।কথামতো একসপ্তাহ পর আমাদের দুই বোনের বিয়ে হয়ে যায়।শুরু হয় এক নতুন পথ চলা…….
পরবর্তী গল্প পড়তে ভালোবাসার রোমান্টিক গল্প পেইজে লাইক দিয়ে সাথেই থাকুন এবং গল্পের লিংক পেতে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন। গ্রুপের লিংক কমেন্ট বক্সে দেওয়া আছে
(আজকেই গল্পের শেষ পর্ব ছিলো।এতোদিন আমাকে সাপোর্ট করার জন্যে,এতো এতো ভালোবাসা দেয়ার জন্যে সবাইকে ধন্যবাদ।ভালো থাকবেন সবাই।আবার কোন নতুন গল্প নিয়ে হয়তো হাজির হবো।ধন্যবাদ..)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here