প্রেম_হয়ে_এলি_তুই #লেখিকা : #ohona_akther #পর্ব : ২৭

0
87

#প্রেম_হয়ে_এলি_তুই
#লেখিকা : #ohona_akther
#পর্ব : ২৭

🚫 কপি করা সম্পুর্ণ নিষেধ ~

আরশ ওয়াশরুমে থেকে শাওয়ার নিয়ে বেরিয়েছে। চুলের পানি মুছতে মুছতে বিছানায় চোখ যেতেই দেখলো অবনি নেই।
আরশ দেখতে ফেলো অবনি বারান্দায় রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে আছে। আরশ অবনির কাছে গিয়ে বলল-
” কি হলো তুমি এখানে দাঁড়িয়ে আছো কেনো? ”

আরশের কথা শুনে অবনি দ্রুত চোখ থেকে পানি মুছে নিলো। ব্যাপারটা আরশের চোখ এড়ায়নি।
আরশ অবনিকে নিজের দিকে ফিরিয়ে বলল-
” একি তুমি কাঁদছো কেনো? কেউ কি তোমাকে কিছু বলেছে? তোমার কি শরীর খারাপ লাগছে? ডক্টরকে কল দিবো? ”

” শান্ত হোন আপনি। আমার কিছু হয়নি। কেউ আমাকে কিছু বলেনি। ”

” তাহলে? ”

” বাবা মায়ের কথা মনে পড়ছিলো খুব। আমার আগমন বার্তা পেয়ে আমার বাবা মাও তো এরকম খুশি হয়েছিলো তাইনা। কতো তাড়াতাড়ি ওরা আমাকে একা করে চলে গেলো৷
একটা সন্তানের জীবনে তার বাবা মায়ের সাপোর্ট থাকাটা খুব জরুরী। যার শূন্যতা আমি অনুভব করছি। ”

আরশ অবনির গালে দু হাত রেখে বলল-

” একটা সন্তানের যেমন তার বাবা মায়ের সাপোর্ট থাকাটা খুব জরুরী তেমনি একটা নারীর জীবনে তার স্বামীর সাপোর্ট থাকাটাও খুব জরুরী।
তুমি সব কিছুতে আমার থেকে সম্পূর্ণ সাপোর্ট পাবে। সবাইকে একদিন পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হয়, এর জন্য মন খারাপ করতে আছে? বোকা মেয়ে। আমি আছি তো তোমার পাশে তাহলে ভয় কিসের? ”

অবনি ছলছল চোখে আরশের দিকে তাকালো। অবনি আবেগাপ্লুত হয়ে আরশকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।
‘ আমি আছি তো তোমার পাশে ‘ কথাটা সামান্য একটা বাক্য হলেও যেকোনো কঠিন পরিস্থিতিতে মনে সাহস জোগাতে এই সামান্য কথাটাই যথেষ্ট। আর যদি কথাটা প্রিয় মানুষটির মুখ থেকে শোনা যায় তাহলে তো নিঃসন্দেহে সে নারী ভাগ্যবতী।
অবনির আজ নিজেকে সত্যি একজন ভাগ্যবতী নারী মনে হচ্ছে।

__________________

বেঞ্চের উপর বসে আছে রুপা। বসে বসে অপেক্ষার প্রহর গুনছে। কিছুক্ষণ পর পর টাইম চেক করছে। তারপর আবারও দিঘির দিকে তাকিয়ে আছে।
স্নিগ্ধ বাতাস রুপার চুলগুলো এলোমেলো করে দিচ্ছে। রাস্তার পাশে মেহগনি গাছের সারি। অবশেষে অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তির দেখা পেতেই রুপা বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো।

” এতো লেট করলি কেনো হুমম। সেই কখন থেকে বসে আছি আমি। ছেলে মানুষ রেডি হয়ে আসতে এতো সময় লাগে নাকি? ”

” আরে আস্তে। এতো চেঁচাচ্ছিস কেনো? একটু সুন্দর করে রেডি হতে হবেনা নাহলে মেয়েরা পছন্দ করবে নাকি? যাই হোক কেনো এতো জরুরী তলব বল? ”

” সব কিছু নিয়ে ফান করা ভালো লাগেনা জিসান। ”

” আচ্ছা ঠিক আছে। আমি আর মজা করছিনা বল কি বলবি? ”

” জিসান আমার বিয়ের জন্য কথা চলছে। ছেলে পক্ষ শুক্রবার আমাকে দেখতে আসবে। ”

” ওয়াও! এটা তো খুশির খবর। এতো বড় একটা খুশির খবর দিতে তুই খালি হাতে ঢেং ঢেং করে চলে এলি? থাক সাথে করে আনিসনি তাতে কি। চল রেস্টুরেন্টে ট্রিট দিবি। এ মাসতো দেখছি একটার পর একটা খুশির সংবাদ পেয়েই চলেছি। ”

রুপা এবার রেগে ঝারি দিয়ে বলল-
” এই তোর সমস্যা কি হ্যাঁ? সবসময় খাই খাই করিস কেনো? আমি কি তোর সাথে মজা করছি? আমাকে কি তোর জোকার মনে হয়? ”

” যাহ বাবা! আমি আবার কখন মজা করলাম। আমি তো সিরিয়াসলি ট্রিট চাইলাম। ”

” আমার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে জিসান৷ তুই এখনো চুপ করে থাকবি? কিছু বলবিনা? ”

” আমি আবার কি বলবো? ”

” কি বলবি মানে? তোর কি কিছুই বলার নেই? ”

জিসান কিছুক্ষণ ভাবুক ভঙ্গিতে থেকে বলল-
” ওহ আচ্ছা। সরি সরি কংগ্রাচুলেশন। ”

কথাটা বলার সাথে সাথে রুপা জিসানের গালে ঠাস করে চড় বসিয়ে বলল-
” আমি বলছি তোকে আমায় কংগ্রাচুলেশন জানাতে? বাচ্চা তুই? কিছু বুঝিসনা তুই? সব কিছু তোকে বলে বোঝাতে হবে? আমি তোকে ভালোবাসি জিসান। আই রিয়েলি লাভ ইউ৷ শুধু আজকে নয়। অনেক আগে থেকেই আমি তোকে ভালোবাসি। সেজন্যই কখনো তোকে কোনো মেয়ের সাথে মিশতে দিইনি। কারন আমি চাইনি তুই আমি ছাড়া অন্য কোনো মেয়ের সাথে কথা বল। ”

জিসান অবনির দিকে আহাম্মকের মতো চেয়ে রইলো। কি বলবে সে ভাষাই খুঁজে পাচ্ছেনা জিসান।
জিসানকে চুপ থাকতে দেখে রুপা বলল-

” কি হলো চুপ করে আছিস কেনো কিছু তো বলবি। ”

” কি বলবো? ”

” কি বলবি মানে? আমি তো তোকে বললামই আমি তোকে ভালোবাসি। উইল ইউ ম্যারি মি? ”

” কি বলছিস এসব? মাথা ঠিক আছে তোর? দু’দিন পর তোকে ছেলেপক্ষ দেখতে আসবে। এই মুহুর্তে কিসব আজে বাজে বকছিস? ”

” মানে? আমার ভালোবাসা, ফিলিংস তোর কাছে আজে বাজে মনে হয়? ”

” রুপা তোর মাথাটা গেছে। আমরা দুজন জাস্ট ফ্রেন্ড । এছাড়া আর কিছুই নই। আমি তোকে নিয়ে কখনো এসব ভাবিইনি। আমি অবনিকে যেরকম বেস্টফ্রেন্ড ভাবি তোকেও ওইরকমই বেস্টফ্রেন্ড ভাবি। এছাড়া আর কিছুই নয়। ”

” মমানে? ততুই আমাকে ভভালোবাসিস না? ”

” বাসি। কিন্তু সেটা শুধুমাত্র বন্ধু হিসেবে। ”

” তোর বন্ধুত্বের ভালোবাসা লাগবেনা আমার। আজকের পর থেকে আর কখনো আমার সাথে কোনোরকম যোগাযোগ করবিনা। তোর সাথে আমার সম্পর্কের ইতি এখানেই টেনে দিলাম। ভালো থাক তুই। গুড বাই। ”

কথাটা বলে রুপা কাঁদতে কাঁদতে সেখান থেকে চলে এলো। জিসান হতভম্ব হয়ে রুপার যাওয়ার পানে তাকিয়ে আছে। রুপার সব কথা জিসানের মাথার উপর দিয়ে গেলো। যতক্ষণে রুপার কথার মানে বুঝলো ততোক্ষণে রুপা সেখান থেকে চলে গেছে।

#চলবে….

( ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন। গঠনমূলক মন্তব্য চাই। 🥹 )
আমার গ্রুপ :
https://facebook.com/groups/834251051795835/

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here