#প্রেম_হয়ে_এলি_তুই
#লেখিকা : #ohona_akther
#অন্তিম_পর্ব
🚫 কপি করা সম্পুর্ণ নিষেধ
হাসপাতালে বসে অপেক্ষা করছে সবাই। সকলের চোখে মুখে চিন্তার চাপ। কিছুক্ষণ পর ডক্টর আসায় আরশ ডক্টরের কাছে এগিয়ে গিয়ে বলল-
” কি ব্যাপার ডক্টর? সবকিছু ঠিকঠাক আছে তো? ”
” জ্বী মিস্টার খান। আপাতত ভয়ের কিছু নেই তবে সামনের দিকে একটু সাবধানে রাখবেন আপনার ওয়াইফকে। বুঝতেই তো পারছেন।”
” থ্যাংক ইউ ডক্টর। থ্যাংক ইউ সো মাচ। ওকে কি বাসায় নিয়ে যাবো? ”
” হ্যাঁ শিওর। ”
ডক্টরের কথা শুনে সকলে চিন্তামুক্ত হলো। বিশেষ করে রুপা আর জিসান৷ আজ যদি অবনির বাচ্চার কিছু হয়ে যেতো তাহলে নিজেদের কিভাবে ক্ষমা করতো।
সকলে হসপিটাল থেকে চলে এলো। খান বাড়ির সকলে আলাদা গাড়িতে বসেছে৷ অবনি আর আরশ আলাদা গাড়িতে বসেছে। তবে আরশ অবনির সাথে কোনো কথাই বলছেনা। দেখেই বোঝা যাচ্ছে খুব মুডে আছে। অবনি বারবার কথা বলতে চাইলে আরশ এড়িয়ে যাচ্ছে।
.
বাসায় এসে আরশ কোনো কথা না বলে ল্যাপটপ নিয়ে বসেছে। ঘরের মধ্যে যে অবনিও আছে আরশের যেনো সেদিকে চোখই নেই। অবনি পেটের মধ্যে হাত রেখে বলল-
” দেখলি তো পুচকু সোনা তোকে আর তোর মাম্মাম কে কেউ ভালোবাসে না। তোর তো ক্ষুদা পেয়েছে তাইনা। কি আর করার তোর মাম্মামই তোর জন্য স্যুপ বানিয়ে আনছে। ”
আরশকে শুনিয়ে শুনিয়ে অবনি যেই উঠতে নিবে ওমনি আরশ রাগে কটমট দৃষ্টিতে তাকিয়ে গটগট করে পা ফেলে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।
আরশ যেতেই অবনি ফিক করে হাসি দিলো।
অবনি নিজে নিজেই বলছে-
” বাবাহ! এতো অভিমান। এমন ভাবে গাল ফুলিয়ে রেখেছে যেনো সব দোষ আমার! আমি কি ইচ্ছে করে পড়ে গিয়েছি নাকি? ভারি অদ্ভুত মানুষ উনি৷
রসকষহীন মানুষ। কেমন লাট সাহেবি ভাব হুহ্। শোন পুচকু সোনা তোর বাবার না খুব ভাব বুঝলি৷ তুই কিন্তু একদম তোর বাবার মতো হবি না। তুই তোর মায়ের মতো হবি বুঝেছিস। ”
অবনি আরো কিছু বলতে নিবে তার আগে পেছন থেকে আওয়াজ এলো-
-” সাথে এটাও বলো যে মায়ের মতো হবি যাতে যখন তখন ধুপধাপ উস্টা খেয়ে পড়িস। ”
আরশের কথা শুনে অবনি মুখে ভেংচি কাটলো। আরশ অবনিকে স্যুপ দিয়ে চলে যাচ্ছিল। হঠাৎ হাতে টান পড়ায় পেছনের দিকে ফিরে তাকায়।
-” আবার কি? ”
-” খাইয়ে না দিয়ে চলে যাচ্ছেন কেনো? ”
-” কেনো? খাইয়ে দিতে হবে কেনো? তুমি তো নিজেই সব করতে পারো তাহলে খাওয়ার সময় আরেক জনকে কি প্রয়োজন৷ নিজের খাবার নিজেই খেয়ে নাও। ”
-” বললাম তো সরি। আমি আর কখনো একা চলাফেরা করবো না। এরকম বেখেয়ালি চলাফেরা করবোনা প্রমিজ।”
-” তোমার সরি তোমার কাছেই রাখো। এরকম হাজার সরি তুমি নিত্যদিন বলো। কিন্তু ঘুরেফিরে একই কাজ বারবার রিপিট করো। ”
-” এবারই লাস্ট সরি। এখন থেকে আমি সত্যি সাবধানে চলাফেরা করবো।”
-” আগে নিজেকে শুধরে দেখাও। ”
-” তারমানে আপনি আমাকে খাইয়ে দিবেন না তাইতো? ”
-” নাহ। দিবো না৷ ”
-” দেখেছিস পুচকু সোনা তোর বাবা তোর মাম্মামকে একটুও ভালোবাসে না। এখন তো তোর মাম্মাম পুরোনো হয়ে গেছে। তাই ভালোবাসা টাও কমে গেছে। ”
-” শাট আপ। একে তো অন্যায় করেছো আবার বড় বড় কথা বলছো? বার বার তোমাকে আমি বলে দিয়েছিলাম একা একা চলাফেরা করবেনা। কিন্তু তুমি কি করলে? আমার কথাকে গুরুত্ব না দিয়ে নিজে নিজে হাঁটাচলা করছিলে। তুমি দোষ করবে আর আমি কি তোমাকে মাথায় তুলে নাচবো? ”
-” শুনুন আমি আপনার সাথে তর্ক করতে পারবোনা। আমার খিদে পেয়েছে আমাকে খাইয়ে দিন ব্যাস। ”
-” নিজের হাতে খেলে খাও না খেলে থাক। ”
-” সত্যি তো? ঠিক আছে আমি আর খাবোই না। আপনি খাইয়ে দিতে আসলেও খাবো না। ”
কথাটা বলেই অবনি আরেক দিকে মুখ ফিরিয়ে নিলো।
আরশ একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বিরবির করে বলল-
-” হয় কপাল! এই মেয়ে নাকি দুদিন পর বাচ্চার মা হবে? এতো নিজেই এখনো বাচ্চাদের মতো ছেলেমানুষী করে। আরশরে তোর কপাল তো এবার একেবারেই পুড়লো৷ কয়দিন পর বাচ্চা একদিকে জেদ ধরে বসে থাকবে বাচ্চার মা আরেক দিকে মুখ ফিরিয়ে বসে থাকবে। তুই কাকে ছেড়ে কার অভিমান ভাঙাবি? ”
আরশ বিছানায় গিয়ে অবনির মুখের সামনে স্যুপ এগিয়ে দিতেই অবনি কাঠকাঠ গলায় বলল –
-” এখন কেনো এসেছেন ঢং করতে। এতোক্ষণ তো বলেছিলেন আপনি পারবেন না। যান গিয়ে নিজের কাজ করুন। আমার জন্য কারো মূল্যবান সময় ন’ষ্ট করার প্রয়োজন নেই৷ ”
আরশ আর কথা না বাড়িয়ে অবনির গাল টিপে ধরে মুখের ভেতর খাবার পুড়ে দিলো।
-” মাথায় ঘিলু যেটুকু আছে সেটুকুও উল্টা পাল্টা ভাবনা দিয়ে ভর্তি করে রেখেছো৷ এসব উল্টো পাল্টা ভাবনা রেখে যদি ব্রেইন টাকে যদি একটু কাজে লাগাতে তাহলে ঠিকই এভাবে গাল না ফুলিয়ে আমার কথার মানে বুঝতে পারতে। ”
অবনি কিছু বলতে যাবে তার আগেই জাহানারা খান আর প্রিয়া খান রুমে প্রবেশ করলো। জাহানারা খান বলল-
-” এখন শরীর কেমন লাগছে মিষ্টি? ”
-” আমি ঠিক আছি দাদু। তেমন কিছুই হয়নি। ”
প্রিয়া খান অবনিকে থামিয়ে বলল-
-” থাক। আর বলতে হবে না। শরীরে তো একটুও শক্তি নেই। সেজন্যই যখন তখন হুমড়ি খেয়ে পড়তে হয়। ”
প্রিয়া খান অবনির মুখের সামনে এক গ্লাস দুধ নিয়ে বলল-
” এই নাও। চুপচাপ খেয়ে নাও। ”
গ্লাস ভর্তি দুধ দেখেই অবনি নাক ছিটকে বলল-
-” ইয়াক। মা আপনি তো জানেন আমি…. ”
প্রিয়া খান অবনিকে থামিয়ে বলল-
-” একদম চুপ। আমি কি বোকা? যে গরুর থেকে জিজ্ঞেস করে হাল চাষ করবো? আমি কোনো না শুনতে চাইনা। এখনি পুরো গ্লাস ফাঁকা দেখতে চাই। ”
অবনির অনিচ্ছা স্বত্বেও কোনোমতে খেলেও তা হজম করতে পারলোনা। গরগর করে বমি করে সবটা ফেলে দিলো। অবনি আহত দৃষ্টিতে তাকালো প্রিয়া খানের দিকে।
প্রিয়া খান একটা হতাশার শ্বাস ছেড়ে বলল-
” এই নাতিটা তো দেখছি আমার মেয়েটাকে একটু শান্তিতে খেতেও দিবে না। ”
______________________
জিসান আর রুপার বিয়ের জন্য রিসোর্ট বুক করা হয়েছে। হলুদ, বিয়ে, রিসিপশন সবকিছু রিসোর্টেই হবে।
অবনি মন খারাপ করে বসে আছে। আরশের কড়া নির্দেশ রুপার বিয়েতে যাওয়া যাবে না। সব তো নিজের দোষেই হলো। সেদিন যদি একটু সাবধানে চলাফেরা করতো তাহলে আজ তাকে বন্দি খাঁচার পাখির মতো ঘরবন্দি থাকতে হতো না। কতো শখ ছিলো রুপার বিয়েতে আনন্দ করবে। এই পুচকু এসে সব আশায় জল ঢেলে দিলো। তারমধ্যে যেও একটু চোখের সামনে সবকিছু দেখতে পেতো কিন্তু নিজের দোষে সেটাও হারালো।
-” পুচকুর মা কি আমাদের রুমে প্রবেশ করার অনুমতি দিবেন? ”
হঠাৎ চিরপরিচিত কন্ঠটি শুনে অবনি চমকে দরজার দিকে তাকালো। অবনি ভুত দেখার মতো চমকে রইলো। সে যেনো নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারছেনা। জিসান আর রুপা দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
অবনি সত্যি নাকি ভ্রম তা বোঝার জন্য নিজের হাতে নিজেই চিমটি কাটলো। নাহ এটা সত্যিই জিসান আর রুপা তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
জিসান আর রুপা চোখে মুখে বিরক্তির চাপ নিয়ে বলল-
-” কিরে ভেতরে আসতে দিবিনা নাকি? ”
অবনির হুশ আসতেই বলল-
-” আরে তোরা দাঁড়িয়ে আছিস কেনো? আমার রুমে আসতে আবার অনুমতি লাগে নাকি। বাই দ্যা ওয়ে তোদের তো আজ গায়ে হলুদ তোরা অনুষ্ঠান ছেড়ে এখানে কি করছিস। ”
” কিযে বলিস তুই? পুচকু আর পুচকুর মায়ের হাতের হলুদ না ছোঁয়ালে আমাদের বিয়ে পরিপূর্ণ হবে বলে তোর মনে হয়? নে নে ঝটপট আমাদের দুজনকে হলুদ ছুঁইয়ে দে। ”
অবনি তো পুরো বিস্মিত হয়ে দুজনের দিকে চেয়ে রইলো। সামান্য হলুদ লাগানোর জন্য দুজন অনুষ্ঠান ছেড়ে তার কাছে চলে এলো। অবনির চোখে পানি চিকচিক করছে। সত্যিই এরকম বন্ধু ক’জনের ভাগ্যে জোটে। আরশের ওতো বেস্টফ্রেন্ড ছিলো সে কি করলো? আরশকে পেছন থেকে ছুরি মেরে দিলো আর জিসান রুপা ওতো অবনির বেস্টফ্রেন্ড অথচ তাদের মাঝে কতোটা ফারাক। কথাগুলো ভাবতেই অবনির চোখে পানি জমে এলো।
-” আরে কিরে কি এমন ভাবছিস? তোর আকাশকুসুম ভাবনা বাদ দিয়ে আমাদের তাড়াতাড়ি হলুদ ছোঁয়া। সকলে অপেক্ষা করছে। প্রথম তোর হাতে হলুদ ছোঁয়াতে চলে এলাম। ”
খান বাড়ির সকলেই তাদের হলুদ ছুঁইয়ে দোয়া করে দিলো। তারপর তারা দুজনে চলে গেলো। আরশ অবনিকে ল্যাপটপে অনুষ্ঠান দেখার ব্যবস্থা করে দিয়েছে।
অবনি ঘরে বসেই জিসান রুপার বিয়ের অনুষ্ঠান দেখেছে।
★★★
দেখতে দেখতে অবনির ডেলিভারির ডে’ট চলে এলো। অবনিকে ওটিতে নিয়ে যাওয়া হলো। এদিকে অতিরিক্ত টেনশনে আরশ সেন্সলেস হয়ে গেছে। আরশের এই অবস্থা দেখে রুপার মুখে চিন্তার ভাজেও হাসি ফুটে উঠলো। এই প্রথম রুপা এরকম দৃশ্য দেখলো। ঐতিহাসিক ঘটনা বউকে ওটিতে নেওয়ায় স্বামী বেহুশ!
আরশের জ্ঞান ফিরে বাচ্চার কান্নার আওয়াজে। বাচ্চা কান্নার আওয়াজ কানে আসতেই আরশ ধড়ফড়িয়ে উঠে বসলো।
আরশ দেখলো একটা বাবু জিসানের কোলে আরেকটা বাবু রুপা কোলে।
তাদের সাথে পুরো খান পরিবারের সকলে রয়েছে। রুপা আর জিসান আরশকে কংগ্রাচুলেশন জানিয়ে বলল-
-” জিজু আমাদের কিন্তু ডাবল মিষ্টি চাই। গিয়ে তাড়াতাড়ি মিষ্টি নিয়ে আসুন। আপনার টুইনস বেবি হয়েছে। একটা মেয়ে বাবু আরেকটা ছেলে বাবু। ”
আরশ একপলক বাচ্চাদের দিকে তাকিয়ে প্রিয়া খানের দিকে প্রশ্ন ছুড়লো-
-” মা অবনি কোথায়? ও ঠিক আছে তো? ওর কিছু হয়নি তো? ওকে কি কেবিনে শিফট করেছে? ”
ছেলের এরকম অস্থিরতা দেখে প্রিয়া খান ঠোঁট ঠোঁট চেপে হেসে বলল-
-” শান্ত হ বাবা। অবনি একদম ঠিক আছে। টেনশনের কিছু নেই৷ ওকে একটু পরই কেবিনে শিফট করবে। ”
অবনি ঠিক আছে শুনে আরশ কিছুটা স্বস্থি ফিরে পেলো।
আরশ কাঁপা কাঁপা হাতে তার টুইনস বেবি কে দুই হাতে একসাথে কোলে নিলো৷ আনন্দে আরশের চোখ দিয়ে অশ্রু গড়িয়ে পরলো। বাচ্চা দুটোকে একই রকম দেখতে। চেহারায় অনেকটা মিল রয়েছে। দুজনেই হাত বাড়িয়ে আরশের গাল স্পর্শ করার চেষ্টা করছে। আর ড্যাব ড্যাব করে আরশের দিকে তাকিয়ে আছে। যেনো দুজনই আরশকে কতোদিন ধরে চেনে।
আরশ দুজনের সারা মুখে আদরে ভরিয়ে দিলো।
অবনিকে কেবিনে শিফট করার পর সর্বপ্রথম আরশ অবনির কাছে গেলো।
আরশ অবনির কাছে হাঁটু গেড়ে বসে অবনির হাত নিজের দুহাতের মুঠোয় পুরে বলল-
-” আল্লাহর কাছে হাজারো শুকরিয়া তিনি তোমাকে আর আমার সন্তানকে সেফ করেছেন। আমি অনেক টেনশনে ছিলাম অবনি। যা তোমাকে বলে বোঝাতে পারবোনা। আমার প্রতি মুহূর্তে মনে হয়েছিলো যদি তোমার কিছু হয়ে যায়? যদি তোমাকে হারিয়ে ফেলি। আমি কি করে বেঁচে থাকবো। আল্লাহ আমাদের দুটো সন্তান দিয়েছে। আমাদের আর সন্তানের প্রয়োজন নেই। আমরা চারজন মিলেই হবে আমাদের হ্যাপি ফ্যামিলি। ”
কথাটা বলে আরশ অবনির কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে দিলো।
অবনির চোখ দিয়ে অশ্রু গড়িয়ে পরলো। তবে এটা কষ্টের নয় আনন্দের।
অবনি কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলল-
-” যখন ওটিতে গিয়েছিলাম তার আগ মুহুর্তে আমারও খুব ভয় হয়েছিলো। আমি তো জানি এই পৃথিবীতে আমার এতো এতো ভালোবাসার মানুষের ভিড়ে একটা সাইকো লাভার আছে যে কিছুতেই আমার শূন্যতা মেনে নিতে পারবেনা। আল্লাহর কাছে বারবার প্রে করছিলাম যেনো আমার সাইকো টার জন্য হলেও আমাকে নতুন জীবন দান করেন। ”
কথাটা বলে অবনি আরশের হাতে ঠোঁট ছুঁইয়ে দিলো।
.
সবাই চিন্তা করছে বাবুর নাম কি রাখা যায় তা নিয়ে। অবশেষে রুপা আর জিসান জানালো ছেলে বাবুর নাম রাখবে আদিল খান আর মেয়ে বাবুর নাম রাখবে আরিশা খান।
সকলেও তাদের সাথে সম্মতি দিলো।
২ বছর পর~
আদিল আরিশা আজ দু বছরে পা রাখলো। গাড়িতে বসে আছে তারা চারজন হ্যাপি ফ্যামিলি। আরশ ড্রাইভ করছে। অবনি বার বার জিজ্ঞেস করছে তারা কোথায় যাচ্ছে। কিন্তু আরশ কোনো জবাব দিচ্ছে না৷ বারবার বলছে গেলেই দেখতে পাবে। অবশেষে অবনি বাধ্য মেয়ের মতো চুপচাপ বসে রইলো। কারন আরশকে বলেও লাভ নেই। তারচেয়ে চুপ থাকাই শ্রেয়।
অবশেষে অপেক্ষার প্রহর পেরিয়ে তারা পৌঁছালো একটা ডুপ্লেক্সের সামনে।
তারা গাড়ি থেকে নেমে সেদিকে পা বাড়ালো। সেখানে বড় বড় অক্ষরে লেখা আছে ❝ আশা বাসভবন ❞ আশা নাম অবনি কিঞ্চিত ভ্রু কুঁচকে বলল-
” আশা বাসভবন? আশা কে? ”
” আমাদের ছেলে মেয়ে। আদিলের নাম থেকে ‘ আ ‘ আর আরিশার নাম থেকে
‘ শা ‘ নিয়ে ডুপ্লেক্সের নাম আশা দিয়েছি। এটা ওদের বার্থডে গিপ্ট। তারপর চারজন একসাথে সামনের দিকে পা বাড়ালো। বাড়িটির দরজা খুলতেই দুই তিনজন মেয়ে তাদের ওয়েলকাম জানালো। পুরো বাড়ি সুন্দর করে ডেকোরেশন করা। সাউন্ড বক্সে গান বাজছে –
” আজ আমায় স্বপ্ন দেখাবি আয়
এক নতুন গল্প শুনাবি আয়,
তুই মিশে যাওয়ার কল্পনায়।
তুই মিলে যাওয়ার গল্পটায়। ”
তারা দুজন সিঁড়ির দিকে পা বাড়ালো। সিঁড়ি মধ্যেও সিরিয়ালে কতোগুলো মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে ফুলের ঢালা হাতে নিয়ে। তারা যেতেই ওরা গোলাপ গাঁদা ফুলের মিশ্রিত পাপড়ি তাদের দিকে ছুড়লো।
সাউন্ড বক্সে গান ভেসে আসছে-
” দুজনের এক হওয়া,
আমাদের দেখা হওয়া।
যেন লিখে রাখা ছিল তাই।
দুটো পাখি একই ডালে
হাওয়া দের তালে তালে,
পাশাপাশি উড়ে চলে যায়। ”
তারা ছাদের উপর পা রাখলো। পুরো ছাদও খুব সুন্দর করে ডেকোরেশন করা।
তাদের কানে আবছা গান ভেসে এলো-
“হো..কতো হাসি কতো কথা
বাড়ে মনে মনে,
তোর নাম তোরি ছবি
এঁকেছি গোপনে।
আজকে মন শূন্য তোকে ছাড়া।
ইচ্ছেরা দিচ্ছে সেই ইশারা,
তুই মিশে যা আমার কল্পনায়,
তুই মিলে যা গল্পটায়। ”
আরশ অবনিকে দাঁড় করালো একটা পর্দা দিয়ে ডাকা ছবির সামনে।
আদিল আর আরিশাকে বসিয়ে তারা ছবিটির সামনে দাঁড়ালো।
আরশ অবনিকে পেছন থেকে জড়িয়ে অবনির হাতে হাত রেখে ফিতা টেনে পর্দা সরালো।
অবনি দেখতে ফেলো সেখানে ডিজাইন করে লেখা আছে।
❝ ওয়েলকাম আদিল
আরিশার মাম্মাম ❞
অবনির চোখ ছলছল করে উঠলো। তার মনে পড়ে গেছে সেদিনের কথা যেদিন আরশ ওকে প্রথম ভালোবাসি বলেছিলো।
অবনি পেছন ঘুরে আরশকে জড়িয়ে ধরে বলল-
” আজও একই রকম ভালোবাসেন আমাকে? ”
আরশ মিষ্টি হাসি দিয়ে বলল-
-” আকাশ কি কখনোও পুরোনো হয়, চাঁদ কি কখনোও অপ্রিয় হয়!
তুমি তো আমার কাছে ঐ আকাশ ও
চাঁদের মতোই একজন! ” ❤️🩹🌸
তখনই দুজন সার্ভেন্টস এসে তাদের নিচে যেতে বলল। গেস্টরা নাকি অনেকে চলে এসেছে। সেই সাথে পুরো খান পরিবার। আরশ অবনি আরিশা আর আদিলকে নিয়ে নিচে নেমে এলো।
এভাবেই হাসি আনন্দে মেতে উঠলো পুরো খান পরিবার।
#সমাপ্ত
( গাইস অবশেষে অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে শেষ করলাম #প্রেম_হয়ে_এলি_তুই। জানি না গল্পটি আপনাদের কেমন লেগেছে 🥹 ভালো হোক মন্দ হোক অবশ্য রিভিউ দিয়ে যাবেন। ভুলত্রুটি থাকলে অবশ্যই ধরিয়ে দিবেন। যাতে আমি শুধরে নিতে পারি। 🥲 আপনাদের সকলকে খুব মিস করবো। আপনারাও আমাকে ভুলে যাবেন না। সকলের জন্য অনেক অনেক ভালোবাসা রইলো। 💖 আমার নতুন গল্প #হাত_দুটো_দাও_বাড়িয়ে পড়ার অনুরোধ রইলো। 🥹 )
গল্পটি সম্পর্কে রিভিউ / আলোচনা / সমালোচনা করুন আমার গ্রুপে👇
https://facebook.com/groups/834251051795835/