প্রেম_হয়ে_এলি_তুই #লেখিকা: #ohona_akther #পর্ব : ৯ ( বাকি অংশ )

0
89

#প্রেম_হয়ে_এলি_তুই
#লেখিকা: #ohona_akther
#পর্ব : ৯ ( বাকি অংশ )

🚫 কপি করা সম্পুর্ণ নিষেধ

জাহানারা খান আরশ আর অবনিকে উদ্দেশ্য করে বলল-
” মিষ্টি আর দাদুভাই তোমরা দুজন খাবার খেয়ে জামাকাপড় গুছিয়ে নাও।”

আরশ আশ্চর্য হয়ে বলল-
” কেনো দাদু? জামাকাপড় কেনো গোছাবো! ”

” মিষ্টিদের বাড়িতে বেড়াতে যাবে তাই। ”

” হোয়াট? তুমি জানো না আমার অফিসে কাজ আছে? আমি যেতে পারবোনা দাদু। দরকার পড়লে আমি অবনিকে পৌঁছে দিয়ে আসবো। ”

” অফিসের দিকটা তোমার বাবা আপাতত সামলে নিতে পারবে। দুদিন বেড়াতে গেলে কাজে তেমন কোনো প্রবলেম হবেনা। ”

প্রিয়া খান মাঝখান দিয়ে ফোঁড়ন কেটে বলল-
” শাশুড়ি মা বাবুন যেহেতু যেতে চাইছেনা তাহলে থাকনা। ওই মেয়েটা গিয়ে থাক ওই বাড়িতে আমরা কেউ তো তাতে বাঁধা দিচ্ছি না। ”

” শাট আপ। দাদুভাই যাবে কি যাবেনা সেটা আমি বুঝবো। তোমার মুখটা বন্ধ রাখো। আর ওই মেয়েটা বলছো কেনো? ওর একটা সুন্দর নাম আছে৷ নাম ধরেই ডাকবে। ”

★★★

আরশ আর অবনি লাগেজ নিয়ে নিচে নেমে এলো। দুজন একসাথে জাহানারা খান কে সালাম করে দোয়া চেয়ে নিলো। তারপর আকবর খান কে সালাম করা শেষে অবনি প্রিয়া খান কে সালাম করে বলল-
”আসছি শাশুড়ি মা দোয়া করবেন। ”

অবনির কথা শুনে প্রিয়া খান বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে বলল-
“ দেখেছ মেয়ের কেমন শিক্ষা? শাশুড়ি মাকে যে মা বলে ডাকতে হয় এটা তোমাকে কেউ শেখায়নি? ”

” জন্মের পর থেকে তো মা ছিলনা। তাই শেখানোর মতো কেউ ছিলনা। ভেবেছিলাম বিয়ের পর শাশুড়ি মায়ের কাছ থেকেই সব শিখবো। তাই আপনার কাছ থেকেই তো শিখেছি শাশুড়িকে শাশুড়ি মা বলে ডাকা৷ ”

অবনির কথা শুনে আরশ ঠোঁট চেপে হাসলো। এদিকে অবনির কথা শুনে প্রিয়া খান তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো।

” এই মেয়ে তোমার স্পর্দা দেখে আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি। তুমি আমার মুখে মুখে তর্ক করছো?”

” কেনো শাশুড়ি মা ভুল কিছু তো বলিনি। আমি আপনাকে অবশ্যই মা বলে ডাকবো কিন্তু তার আগে আপনি দাদুকে মা বলে ডাকতে হবে। ”

” তোমার মতো মেয়ের মুখ থেকে আমার মা ডাক শোনার কোনো ইচ্ছে নেই বুঝেছো তুমি? যত্তসব। ”
কথাটা বলে প্রিয়া খান মুখ ভেংচি কেটে হনহনিয়ে সেখান থেকে চলে এলো।

আরশ আর অবনি গাড়ি নিয়ে রওয়ানা হলো। আরশ ড্রাইভ করছে অবনি পাশে বসে বাইরের হাওয়া উপভোগ করছে৷ বাতাসে অবনির চুল গুলো বার বার আরশের মুখের উপর পড়ছে আরশ বার বার হাত দিয়ে চুল সরিয়ে দিচ্ছে। কিছুক্ষণ পর আরশ গাড়ি ব্রেক করলো।
আচমকা গাড়ি ব্রেক করায় অবনি বলল-
” কি ব্যাপার! আপনি গাড়ি থামালেন কেনো?”

” এভাবে চুল গুলো পাগলের মতো ছেড়ে রেখেছো কেনো। তাড়াতাড়ি চুল বাঁধো নাহলে পরপারে যাওয়ার জন্য প্রিপারেশন নাও। ”

” মানে?”

” মানে হলো তোমার চুল গুলো যেভাবে বার-বার আমার মুখের উপর এসে পড়ছে আমি ঠিকমতো ড্রাইভ করতে পারছিনা। ”

” তো এটা সুন্দর করে বললেই হতো। এতো ঘুরিয়ে পেচিয়ে বলার কি দরকার ছিল!”

অবনি চুল বাঁধার পর আরশ আবার গাড়ি স্টাট করলো। কিছুক্ষণ নিরবতা শেষে আরশ বলল-
” দাদু তোমাকে জিএম এর চেয়ারে বসতে বললো আর তুমি ঢেং ঢেং করে রাজী হয়ে গেলে কেনো? ”

” তো কি করবো? দাদুকে মুখের উপর না করে দিবো?”

” চুপ করো দাদু তো আর জানেনা তুমি কাজের মধ্যে ঢেড়শ। দাদু তো ভাবছে তার মিষ্টির কতো মিষ্টি মিষ্টি গুন। ”

” এই একদম বাজে কথা বলবেন না। আপনি আমাকে যতোটা অকর্মা ভাবছেন আমি মোটেও ততোটা অকর্মা নই৷ এমন ভাব করছেন যেন আমি আপনার অফিস ছাড়া আর কোথাও জব করিনি। শুনুন আমি হাসান আঙ্কেলের অফিসেও তো জব করেছি কই উনি তো কখনো আমার কোনো ভুল খুঁজে পায়নি। আপনিই একমাত্র চুতিয়া তাই সারাক্ষণ আমার ভুল খুঁজে বেড়ান। মাঝে মাঝে তো আমার মনে হয় আপনি ইচ্ছে করেই আমার পেছনে লেগে থাকেন। ”

” হা হা হা, হাসালে তুমি। সত্যিই তুমি খুব হাসাতে জানো। এমনি এমনি কি আমি তোমাকে ইস্টুপিট বলি! হাসান আঙ্কেল তোমার বাবার প্রান প্রিয় বন্ধু। তিনি কেনো তার বন্ধুর মেয়ের দোষ খুঁজতে যাবে। উনি কিছু বলেনি বলে নিজেকে একেবারে গুণবতী ভাবতে শুরু করে দিয়েছো! আমার অফিসে জয়েন করো তাহলেই বোঝা যাবে কতো গুন তোমার। ”

” আমার কোনো গুনই যে আপনার চোখে পড়বেনা সেটা আমি খুব ভালো করেই জানি৷ সারাক্ষণ তো মুনকিরনাকিরের মতো আমার পাশে দাঁড়িয়ে থাকেন কখন কিভাবে কোন দোষ খুঁজে বের করা যায়। নেহাৎ দাদু বলেছে তাই নাহলে আপনার মতো সয়তান বস যেই অফিসে থাকে ওই অফিসে কাজ করার বিন্দু মাত্র ইচ্ছেও আমার নেই৷ ”

তখনই আরশ গাড়ি ব্রেক করলো। হাত মুষ্টিবদ্ধ করে গাড়িতে একটা বারি দিয়ে বলল-
” শিট! ”
আচমকা গাড়ি থামানোয় অবনি বলল-
” কি ব্যাপার আপনি গাড়ি কেনো থামালেন?”

” আমি থামাইনি গাড়ি নিজেই থেমে গেছে। ”

” ইয়ার্কি হচ্ছে আমার সাথে? গাড়ি নিজে নিজে থামে কিভাবে? নাকি এখন আমাকে শাস্তি দেওয়ার জন্য এই বুদ্ধি বের করেছেন। ”

” শাট আপ! ইডিয়ট। বাইরে তাকিয়ে দেখো রাস্তা কাঁদায় ভরে আছে। আমি ভেবেছিলাম চালিয়ে যেতে পারবো। বাট এখন গাড়ির চাকাটা আটঁকে গেছে। ”

অবনি বলল-
” ছি ছি! আপনার মতো একজন টপ বিজনেসম্যানের গাড়ির চাকা এতো নরমাল যে সামান্য কাঁদায় আঁটকে গেলো? সে তুলনায় তো আমার বাবার গ্যারেজের গাড়ি গুলো যথেষ্ট ভালো চলে একেবারে ভোঁ ভোঁ করে। ”
অবনির কথা শুনে আরশ অবনির দিকে কড়া দৃষ্টিতে তাকাতেই অবনি জোরপূর্বক হাসি দিয়ে বলল-

” কি ব্যাপার আপনি এভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন কেনো?আমি জানি আমি দেখতে যথেষ্ট সুন্দরী। আমার দিকে এভাবে না তাকিয়ে বাসায় কিভাবে পৌঁছাবেন সেটা ভাবুন। আমাকে পরেও দেখতে পারবেন। ”

#চলবে….

( ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন। fb lite থেকে দিচ্ছি তাই ছোট হয়েছে 🥹)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here