#ইসলামিক_গল্প #ISLAMIC_STORY
===========================
❝ ফিরে_আসা ❞
———————-
লেখিকা- Umma Hurayra Jahan
পর্ব- ৩৫
অবশেষে কলিংবেল বেজে উঠলো।
হেন্সির বাবা রতন সাহেব দরজা খুলে দিলেন।
রতন – আস সালামু আলাইকুম।অাসুন ভিতরে আসুন।
হিরন সাহেব- ওয়া আলাইকুমুস সালাম।
রতন সাহেব সবাইকে ড্রয়িং রুমে নিয়ে বসালো।যেহেতু হেন্সি এখন পরিপুর্ন পর্দা করে তাই তার মাও চেষ্টা করে পরিপুর্ন পর্দা করার জন্য।তাই মেহমানদের সামনে আসে নি।
রাবেয়া বেগম আড়ালে থেকেই সব রেডি করে দিচ্ছেন আর রতন সাহেব সব পরিবেশন করে দিচ্ছেন।
রতন সাহেব মেহমানদের নাস্তার ব্যবস্থা করে দিলেন।সবাই টুকটাক নাস্তা করে নিলেন আর টুকটাক আলাপ করে নিলেন রতন সাহেবের সাথে।
হিরন সাহেব- এবার পাত্রী দেখানোর ব্যবস্থা করলে ভালো হতো।
রতন সাহেব- জ্বী অবশ্যই।আমি এক্ষুনি ব্যবস্থা করছি।
এই বলে রতন সাহেব রাবেয়া বেগমকে বলতে গেলেন হেন্সিকে দেখানোর জন্য।
রতন সাহেব- কি হলো রাবেয়া হেন্সি কি রেডি হয়েছে?
রাবেয়া- হুম রেডি।
রতন সাহেব- পাত্র ,তার মা আর বোন হেন্সিকে এখন দেখতে চাইছে।
রাবেয়া- ঠিক আছে তুমি উনাদেরকে হেন্সির রুমে নিয়ে এসো।
রতন সাহেব- আচ্ছা ঠিক আছে।
রতন সাহবেব উনাদেরকে হেন্সির রুমে আসার জন্য বললেন।
রতন সাহেব- জ্বী আপনারা আমার সাথে আসুন।
হিরন সাহেব- জান্নাত তুমি ইমন আর হিয়াকে নিয়ে হেন্সিকে দেখে এসো আমি এখানেই বসছি।
জান্নাত- ঠিক আছে।
জান্নাত বেগম ইমন আর উনার বড় মেয়ে হিয়াকে নিয়ে রতন সাহেবের সাথে হেন্সির রুমে গেলেন।
ফাতেমা ফোন দিয়ে হেন্সিকে বলে দিয়েছিলো যাতে হেন্সি হালকা সাজ সাজে।যাতে তার প্রকৃত চেহারার কোন বিকৃতি না হয়।তাহলে তা প্রতারনা হিসেবে গন্য হবে।তাই আজ হেন্সি একদম হালকা সাজ সেজেছে।ফুল হাতা জামা আর একটা হিজাব পড়েছে হেন্সি।এতেই হেন্সিকে পরীর মতো লাগছে।হেন্সি আর ফাতেমা দুজন একি রকম সুন্দরি।
ওরা ঘরে ডুকতেই হেন্সি সালাম দিলো।
হেন্সি – আস সালামু আলাইকুম।
সবাই সালামের জবাব দিলো।
রতন সাহেব- তাহলে আপনারা কথা বলুন আমি আসছি।
এই বলে রতন সাহেব হিরন সাহেবের কাছে চলে গেলেন।
এদিকে হেন্সি খুব নারভাস হয়ে গেছে।ভয়ে মনে হয় হাত পা কাপছে হেন্সির।
ইমন হেন্সির দিকে আড় চোখে একটু তাকালো।সাথে সাথে ইমন মনে মনে বলে উঠলো মাশাআল্লাহ।ইমন এর আগে কোন নারীর দিকে তাকায় নি।হেন্সিকে দেখে ইমনের খুব ভালো লাগলো।
হেন্সিকে নারভাস হতে দেখে জান্নাত বেগম তা বুঝতে পারলেন।
জান্নাত- আরে মা নারভাস হয়ো না।আমি তো তোমার মায়ের মতই।তুমি স্বাভাবিক হও।
মুচকি হেসে মায়া ভরা কন্ঠ নিয়ে বললেন জান্নাত বেগম।
জান্নাত বেগমের এমন মিষ্টি ব্যবহার হেন্সির খুব ভালো লাগলো।
এখনো হেন্সি ইমনকে চেয়ে দেখে নি।
হেন্সিও ইমনকে একটু আড় চোখে চেয়ে দেখলো।হেন্সিও মনে মনে মাশাআল্লাহ বলে উঠলো।
ইমন সুন্নত লেবাসী ,আবার মাথায় টুপি মুখে দাঁড়ি,টাকনুর উপর পাজামা পড়া,মায়াবি চেহারা ইমনের।এমন একজন জীবন সঙ্গির জন্যই তো হেন্সি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতো।ইমনকেও হেন্সির খুব পছন্দ হলো।
জান্নাত বেগম কয়েকটা প্রশ্ন করলো হেন্সিকে।আর হেন্সিও সব গুলোর ঠিকঠাক জবাব দিলো।
জান্নাত- আলহামদুলিল্লাহ ।আমার আর কোন প্রশ্ন নেই।কিরে ইমন তুই কি কিছু বলবি??
ইমন- জ্বী না মা ।আমার কিছু বলার নেই।
ইমনের এমন কথা শুনে খুব টেনশনে পড়ে গেলো হেন্সি।
হেন্সি মনে মনে বলছে “হে আল্লাহ উনার কি আমাকে পছন্দই হয়েছে না হয়নি কিছুই তো বুঝতে পারছি না।কিন্তু আমার তো উনাকে খুব পছন্দ হয়েছে।হে আল্লাহ আমি জানি তুমি যা ভালো বুঝবে তাই করবে”
জান্নাত- আচ্ছা মা তুমি থাকো আমরা তাহলে আসছি।
হেন্সি- জ্বী।আস সালামু আলাইকুম।
ঘর থেকে বের হওয়ার সময় ইমন পিছনে ফিরে হেন্সির দিকে তাকিয়ে এক গালে একটা মুচকি হাসি দিলো।হেন্সি হাসি দেখে লজ্জা পেয়ে গেল।
জান্নাত বেগম সবার সামনে গিয়ে বললেন যে হেন্সিকে উনাদের খুব পছন্দ হয়েছে।
জান্নাত- আলহামদুলিল্লাহ হেন্সিকে আমাদের খুব পছন্দ হয়েছে।এবার আপনারা যদি রাজি থাকেন তাহলে আমরা বিয়ের কথা করতে পারি।
রতন সাহেব- আলহামদুলিল্লাহ।আমাদেরও ইমনকে খুব পছন্দ হয়েছে।
আড়ালে থেকে রাবেয়া বেগম আর রিয়া উনাদের কথা শুনছিলেন।
সাথে সাথে রিয়া আর রাবেয়া বেগমও আলহামদুলিল্লাহ বলে উঠলেন।
হিরন সাহেব- যেহেতু দুই পক্ষই দুই পক্ষকে পছন্দ হয়েছে তাহলে বিয়ের কথাতে আগানো যাক।
রতন সাহেব- জ্বী আলহামদুলিল্লাহ।
হিরন সাহেব- যেহেতু বিয়ে শাদীর ব্যাপারে দেরি করতে নেই তাহলে আগামি সপ্তাহের শুক্রবার বিয়েটা সেরে ফেলা যাক।কারন শুক্রবারে বিয়ে করা সুন্নত।
রতন সাহেব- জ্বী অবশ্যই।আচ্ছা আপনাদের চাওয়া পাওয়া যা আছে বলে দিন।হেন্সি আমার একমাত্র মেয়ে।আমার যা কিছু আছে সব তো ওর।তাই আপনারা যা চাইবেন আমি তাই দিবো।
হিরন সাহেব- এটা আপনি কি বলছেন??আমাদের চাওয়া পাওয়া মানে??আপনি কি যৌতুকের কথা বলছেন??
রতন সাহেব – না মানে আজকাল তো যৌতুক ছাড়া বিয়ে হয় না।আর আজকাল তো যৌতুককে মানুষ গিফ্ট বলে চালিয়ে দেয়।তাই বলছিলাম আপনাদের কি কি গিফ্ট লাগবে সেটা বললে ভালো হতো।
হিরন সাহেব মুচকি হাসলেন।
হিরন সাহেব- আপনি ভুল ভাবছেন আমাদেরকে।আমাদের এসব কিচ্ছু চাই না।কারন যৌতুক নেওয়া বা দেওয়া দুটই অপরাধ।আর ইসলামে এটা নিষিদ্ধ।কিন্তু আমাদের সমাজে এমন অনেক লোক আছে যে, যাদের মনোভাব এমন যে তারা তাদের ছেলেদেরকে যৌতুক ছাড়া বিয়ে করানোর কথা ভাবতেই পারে না।তারা একবারো ভাবে না যে, বাবা মা তার প্রিয় মেয়েটাকে অন্যের ছেলের হাতে তুলে দেয়।একটা মেয়ে সন্তানকে শত আদর যত্নে বড় করে অন্যের বাড়িতে পাঠায় বিয়ের পর। তবুও কিছু বিবেকহীন দ্বীনের জ্ঞান হীন মানুষ সেই মেয়েটার বাবার কাছ থেকে দামি দামি জিনিস ,ফার্নিচার আরো অনেক কিছু আদায় করে।
কিন্তু তারা এটা জানে না যে যৌতুক ইসলামে সম্পুর্ন নিষিদ্ধ।
রতন সাহেব- আমি আপনাদেরকে ভুল বুঝি নি।না মানে …বর্তমান সমাজ ব্যবস্থাটাই তো এরকম।
হিরন সাহেব- আপনি আপনার একমাত্র কলিজার টুকরা মেয়েটাকে আমাদেরকে দিচ্ছেন এটা তো আমাদের জন্য যথেষ্ট।আর তো কিছু চাই না আমাদের।আমিও একটি মেয়ের বাবা।আমিও আমার বড় মেয়েটাকে বিয়ে দিয়েছি।আমি কোন প্রকার যৌতুক দেই নি।আর আমি যতটুকু পারি নবীজির সুন্নত অনুযায়ি চলার চেষ্টা করি আর আমার পরিবারের বাকি সদস্যদেরও সুন্নত অনুযায়ি জীবন যাপন করানোর চেষ্টা করি।
রতম সাহেব- জীবনে মনে হয় অনেক পূন্য করেছিলাম তাই তো আপনাদের পরিবারের মতো একটা পরিবারের সন্ধান আল্লাহ আমার মেয়েটার জন্য মিলিয়ে দিলেন।আজ কাল এমন পরিবার খুব কমি দেখা যায় আমাদের এই বর্বর সমাজে।
হিরন সাহেব- আচ্ছা তাহলে দেনমোহরটাও সুন্নত অনুযায়ি দেওয়া হবে।আর বিয়েটা আমরা নবীজির সুন্নত অনুযায়ি করাতে চাচ্ছি।আপনার কি মত??
রতন সাহেব- অবশ্যই ।বিয়েটা সুন্নত অনুযায়ি হবে ইনশাআল্লাহ।
হিরন সাহেব- আলহামদুলিল্লাহ।তাহলে আগামী সপ্তাহের শুক্রবার বিয়ের দিন ধার্য করা হলো।
রতন সাহেব- জ্বী।তাহলে এ কথাই রইলো।
রিয়া আড়াল থেকে সব কথা শুনে তাড়াতাড়ি গিয়ে হেন্সিকে বললো।
রিয়া – হেন্সি হেন্সি হেন্সি হেন্সি…….
রিয়া হেন্সিকে ধরে ঘুড়তে লাগলো
হেন্সি- আরে আরে ছাড় পড়ে যাবো তো।কি হয়েছে বল??
রিয়া – বল তো কেন আমি এতো খুশি??
হেন্সি – আমি কি করে জানবো??
রিয়া- ও আমার টুনটুনি বান্ধবি রে তোর বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে ।আগামি সপ্তাহের শুক্রবার তোর বিয়ে।
হেন্সি এ কথা শুনে লজ্জা পেলো।
লজ্জায় মুখটা গোলাপি হয়ে গেলো।
রিয়া – তাড়াতাড়ি ফাতুকে খবরটা জানাতে হবে।দাড়া ওকে ফোন দিচ্ছি।
রিয়া ফাতেমাকে ফোন দিলো।
ফাতেমা – আস সালামু আলাইকুম ।রিয়া ওখানের খবর কি তাড়াতাড়ি বল। আমার তো খুব চিন্তা হচ্ছে।
রিয়া – ওয়া আলাইকুমুস সালাম।সু সংবাদ আছে।উনারা হেন্সিকে পছন্দ করেছেন আর আগামী সপ্তাহের শুকবার বিয়ে ঠিকও হয়ে গেছে আলহামদুলিল্লাহ।
ফাতেমা – আলহামদুলিল্লাহ।আমি বলেছিলাম না আল্লাহ কাউকে নিরাস করেন না।ধৈর্য ধরে আল্লাহকে ডাকলে আল্লাহ সবার দোয়া কবুল করেন।কারো দোয়া হয়তো তাড়াতাড়ি কবুল হয় আবার কারো দোয়া হয়তো একটু দেড়িতে হয়।
রিয়া- হুম ঠিক বলছিস।এবার আমারটা যে কবে হবে।হিহিহি
ফাতেমা – ওরে বিয়া পাগলি ।তোরও বিয়া করার শখ হয়েছে তাই না??দাড়া আন্টিকে বলছি।
রিয়া- আমাকে নিয়ে তো মজা করবিই।নিজের অর্ধেক দ্বীন তো পরিপুর্ন করে ফেলেছিস আর আরেক জন হেন্সি তারটাও দুদিন পড় পরিপুর্ন হয়ে যাবে।
আমার যে কবে বিয়া হইবো???বাপ মা বুঝে না আমি যে বড় হইছি।হিহিহিহি
ফাতেমা – ওরে দুষ্টু ।চিন্তা করিস না তরটাও হয়ে যাবে তাড়াতাড়ি ইনশাআল্লাহ।
রিয়া- হেন্সির জন্য যেমন পাত্র খুজে দিয়েছিস আমাকেও এমন একজনকে খুজে দিস তো।
ফাতেমা – হুম বুঝতে পেরেছি।আপনার ব্যবস্থাটাও তাড়াতাড়ি করতে হবে।
আচ্ছা হেন্সিকে দে তো ফোনটা।
হেন্সির সাথে কিছুক্ষন কথা বলে ফাতেমা ফোন রেখে দিলো।
এদিকে সব কথা বার্তা ঠিক করে ইমনের বাবা মা ,ইমন আর হিয়া ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিলো।
এদিকে হেন্সির পরিবারের সবাই খুব খুশি।
====
ফাতেমা – মা জানো হেন্সিকে চাচি আর বাকি সবার পছন্দ হয়েছে।উনারা বিয়ের ডেট পর্যন্ত ঠিক করে ফেলেছেন।
মেহেঘ- আলহামদুলিল্লাহ তাহলে তো খুব ভালো হয়েছে।এখন থেকে দুই বান্ধবি জা হয়ে যাবি।দুইজন পাশাপাশি থাকতে পারবি।খুব ভালো হয়েছে ।তোর বাবা মাকে জানিয়েছিস??
ফাতেমা – না মা আমার মাকে এখনো জানাইনি।পরে জানিয়ে দিবো।আচ্ছা মা আমি একটু মহিমার রুমে যাচ্ছি।
মেহেঘ- আচ্ছা ঠিক আছে যা।
ও আরেকটা কথা শুন।
ফাতেমা – বলো।
মেহেঘ- তোর শ্বশুড় কালকে তোকে মহিমাদের কলেজে নিয়ে ভর্তি করিয়ে আসবে।কালকে রেডি থাকিস।
ফাতেমা – ঠিক আছে।
ফাতেমা মহিমার রুমের সামনে দাড়িয়ে সালাম দিলো।
ফাতেমা – আস সালামু আলাইকুম।আসবো??
মহিমা – ওয়া আলাইকুমুস সালাম।আরে ভাবি এসো এসো।
ফাতেমা সোফায় বসতে বসতে মহিমাকে জিঙ্গেস করলো “কি করছো???
মহিমা ফাতেমার সাথে বসলো।
মহিমা – এই তো ভাবি ফেসবুকে আমার কয়েকটা ছবি আপলোড দিচ্ছিলাম।দেখো দেখো ২ মিনিটে ২০ টা লাইক আর কতগুলো কমেন্ট এসেছে।
ফাতেমা – হে আল্লাহ…!!!!!
এটা তুমি কি করছো বোন ??তুমি জানো না ফেসবুকে এভাবে নিজের ছবি আপলোড করা গুনাহ???তাড়াতাড়ি ডিলিট করো ডিলিট করো বোন আমার।
মহিমা – কেন ভাবি ডিলিট করবো কেন??আর আমি তো এখনো পরিপুর্ন পর্দা শুরু করি নি।এমনিতে তো পরপুরুষ আমাকে দেখছেই তাহলে ফেসবুকে দিলে সমস্যা কি???
ফাতেমা – সমস্যা আছে বোন সমস্যা আছে।তুমি পরিপুর্ন পর্দা এখনো শুরু করো নি বলে কি ছবি আপলোড দিতে হবে???দাড়াও তোমাকে বুঝিয়ে বলছি।
মহিমা – ঠিক আছে বলো।
ফাতেমা – দেখো তুমি যে মাত্র ছবি আপলোড দিলে সেটা তো তোমার গায়রে মাহরামরা দেখছে মোবাইলে ।কিন্তু পর্দা না করলেও তুমি যদি ছবি গুলো না আপলোড দিতে তাহলে কি ওরা তোমাকে এই মুহুর্তে দেখতে পেতো???
মহিমা – না ।কিভাবে দেখবে আমি তো ঘরের ভিতরে আছি।আমাকে তো দেখতে পারতো না।
ফাতেমা – সেটাই তো ।তুমি পর্দা না করো ।কিন্তু এই মুহুর্তে তো ঘরে আছো।তাই তো তোমাকে পরপুরুষেরা দেখতে পারবে না।আর যা ফলে পাপও হবে না।কিন্তু তুমি যে ছবিটা আপলোড দিলে সেটা তো ওরা দেখতে পাচ্ছে যার ফলে তোমারি গুনাহ হচ্ছে।তুমি যদি ছবিটা আপলোড না দিতে তাহলে তো গুনাহ হতো না এই মুহুর্তে।তুমি যে ছবি আপলোড দিয়েছো সেটা যারা দেখছে তাদের চোখের জিনা হচ্ছে।এটার জন্যও তুমিই দায়ি হবে।আর দ্বিগুন গুনাহর ভাগিদার হবে তুমি।আর আল্লাহ না করুক তুমি যদি কিছুক্ষন পর মারা যাও তোমার এই বেপর্দা ছবি গুলো সোশাল মিডিয়াতেই রয়ে যাবে।আর যার কারনে মৃত্যুর পরও তোমার আমলনামায় গুনাহ লিখা হবে।যতদিন ছবি গুলো থাকবে বা এগুলো পরপুরুষেরা দেখবে ততদিন পর্যন্ত এর জন্য তোমার শাস্তি ভোগ করতে হবে।কঠিন আযাব সহ্য করতে হবে।
মহিমা – এভাবে তো ভেবে দেখি নি ভাবি।
ফাতেমা- ছেলে হোক বা মেয়ে কারোই উচিত না সোশাল মিডিয়াতে ছবি আপলোড করা।এর জন্য মৃত্যুর পরেও তাকে আযাব ভোগ করতে হবে।কারন ছবি আপলোড দেওয়া নারী পুরুষ দুজনেরই পর্দার খিলাফ এটা।
মহিমা – ধন্যবাদ ভাবি এভাবে বুঝানোর জন্য।আগে তো এমন ভাবে কেউ বুঝায় নি।তাই জানতাম না।দাড়াও আমি আমার সব ছবি ডিলিট করে দিচ্ছি।
ফাতেমা – এই তো আমার ভালো বোন।তুমি আমার কথা বুঝতে পেরেছো।
মহিমা – ভাবি আরেকটা সমস্যা ছিলো।যদি একটু উপায় বলে দাও ভালো হবে।
ফাতেমা – অবশ্যই ।যদি জানি তাহলে নিশ্চই বলবো।বলো কি হয়েছে?
মহিমা – ভাবি আমি যখন নামায পড়ি তখন শুধু আজেবাজে চিন্তা মাথায় আসে।কিছুতেই নামাযে মন দিতে পারি না।এখন আমি কি করি একটু বলো তো।
ফাতেমা – এটা শুধু তোমার একার সমস্যা না।আমারও আগে এই সমস্যাটা হতো।তখন আমার খালামনি আমাকে একটা কথা বলেছিলো।এরপর থেকে আল্লাহর রহমতে আর সমস্যা হয় না।
মহিমা – কি উপায় বলো তো।
ফাতেমা – তুমি যখন নামাযে দাড়াবে তখন মনে মনে চিন্তা করে নি যে,তোমার সামনে আল্লাহ ।পিছনে মৃত্যুর ফেরেশতা আজরাইল আ:।ডানে জান্নাত ,বামে জাহান্নাম আর নিচে পুলসিরাত।আর প্রত্যেকটা দোয়া আর সূরা পড়ার সময় এগুলোর প্রতিটি শব্দের প্রতি খেয়াল রাখবে তুমি কি বলছো।আর যখন মনে হয় নামাযে মন বসছে না তখন একবার চিন্তা করে দেইখো তুমি কার সামনে তাড়াহুড়া করছো।তুমি আল্লাহর সামনে দাড়িয়ে তার ইবাদত করছো।মনে রাখবে আল্লাহ তোমার সামনে আছেন।তাহলেই নামাযে মনযোগ আসবে ইনশাআল্লাহ।
মহিমা – ঠিক আছে ভাবি।
ফাতেমা – আচ্ছা একটু পরে মাগরিবের আযান হয়ে যাবে।যাই নামাযের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।তুমিও নামাযের প্রস্তুতি নিয়ে নাও।
আর আমি যেগুলো বলেছি সেগুলো যেন মনে থাকে।
মহিমা – ঠিক আছে ভাবি।
ফাতেমা নিজের রুমে গেল।মাহিন বাসায় নেই।
ফাতেমা নামাযের জন্য ওযু করে নিলো।আযান দেওয়ার সময় আযানের জবাব দিয়ে আযানের দোয়া পড়ে নিলো।আর মাহিনের হেদায়েত চেয়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করলো।
কারন আযানের সময় দোয়া কবুলের সম্ভাবনা বেশি থাকে।
ফাতেমা মাগরিবের নামায আদায় করে নিলো ।আর নামায শেষ করে কুরআন পাঠ করে নিলো।
ফাতেমা যখন কুরআন পাঠ করে উঠলো এই মুহুর্তে মাহিন ঘরে এলো।
চলবে ইনশাঅাল্লাহ………