ফেরারি প্রেম পর্ব -২০

#ফেরারি_প্রেম
#পর্ব_২০
#নিশাত_জাহান_নিশি

বর্বর রূপ ধারণ করে রাতুল যেইনা নীহারিকার মাথাটাকে দেয়ালের সাথে ধাক্কা মারতে গেল অমনি অপ্রত্যাশিতভাবে রূপলের আবির্ভাব ঘটল ঘটনাস্থলে! আকস্মিকভাবে পেছন থেকে ছুটে এসে রূপল নীহারিকাকে আঁকড়ে ধরল! অগ্নিঝরা দৃষ্টিতে সে রাতুলের দিকে তাকালো।

বেঘোরে চমকে ওঠে রাতুল রূপলের দিকে তাকালো। ভূত দেখার মত প্রকাণ্ড চোখ তার। গাঁ বেয়ে জবজবিয়ে ঘাম গড়াতে শুরু করল। রূপলের আকস্মিক আগমন তার মন ও মস্তিষ্ককে মুহূর্তেই নাড়িয়ে দিলো। তৎক্ষণাৎ মাথা নুইয়ে নিলো সে। ক্রোধে বশবর্তী হয়ে সে বিড়বিড় করে বলল,

“রূপল এখানে কী করছে? আজ তো রূপলের বাড়ি ফেরার কথা ছিলনা! তাহলে কী ঐ নীহারিকা…? ওহ্ শিট।”

মনে মনে ষড়যন্ত্র কষে এক পা দু’পা করে পিছু হটতে লাগল রাতুল। বুঝতে পারল আজই হয়ত তার শেষ দিন! সব খেলা পন্ড তার। অপরদিকে, রূপল এদিকের কিছুই বুঝতে পারলনা। তবে এতটুকু আঁচ করতে পারল তার অনুপস্থিতিতে এখানে ভয়াবহ্ কিছু ঘটতে চলছিল। সে এই মুহূর্তে এখানে উপস্থিত না হলে নীহারিকার মস্ত বড়ো একটা ক্ষতি হয়ে যেত। রাতুলের এই জঘন্য রূপ কিছুতেই যেন মানতে পারছেনা রূপল। চেনা মানুষটাকে আজ বড্ড অচেনা লাগছে। তবে কী মানুষের মন আকাশের রঙ বদলাতে সময় লাগেনা? তাজ্জব দৃষ্টিতে রূপল ভয়ার্ত রাতুলের দিকে তাকিয়ে রইল। রূপলকে দেখে অভয় পেল নীহারিকা। স্বস্তির শ্বাস ফেলল সে। ছলছল দৃষ্টিতে মাথা ঘুরিয়ে রূপলের দিকে তাকালো। গলাটা চুলকাতে চুলকাতে সে শুকনো কেশে বলল,

“থ্যাংকস রূপল। আপনি এখন না আসলে এই খারাপ লোকটা আমাকে আজ জানেই মে/রে দিতো।”

রাতুলের থেকে আকস্মিক দৃষ্টি সরিয়ে রূপল নীহারিকার দিকে তাকালো। নির্বোধ দৃষ্টি তার। কপাল কুঁচকানো। মিহি আওয়াজে সে প্রশ্নবিদ্ধ গলায় বলল,

“মানে কী? কী হচ্ছে এখানে?”

সেই সুযোগ বুঝে রাতুল যেইনা তার ব্যাগপত্র নিয়ে রুম থেকে দৌঁড়ে পালাতে গেল অমনি নীহারিকা গলা ছেড়ে চিৎকার করে উঠল! রূপলকে সতর্ক করে সে উঁচু গলায় বলল,

“ঐ জোচ্চোরটাকে আটকান রূপল। এই আপনার সুহাসিনীর খু/নী!”

খুব বড়ো সড়ো একটা ধাক্কা খেলো রূপল! তৎক্ষনাৎ হকচকিয়ে উঠল সে। উপায়ন্তর খুঁজে না পেয়ে নীহারিকার কথামত দৌড়ে গিয়ে রাতুলকে পেছন থেকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরল। রূপলের থেকে নিজেকে ছাড়ানোর জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করল রাতুল। তবেই কিছুতেই যেন কোনো সুরাহা হচ্ছিলনা। বারংবার ব্যর্থ হয়ে রাতুল অবশেষে ঝাঁজাল গলায় রূপলকে বলল,

“আমাকে ছাড় রূপল। ফ্লাইটের দেরী হয়ে যাচ্ছে আমার।”

শরীরের সমস্ত শক্তি দ্বারা রূপল রাতুলকে এক প্রকার বেঁধে রাখার চেষ্টা করল। রাতুলের ব্যবহার আচরণে সন্দেহ তৈরী হতে লাগল তার। হতবিহ্বল গলায় সে রাতুলকে বলল,

“নীহারিকা এসব কী বলছে ভাইয়া? তুমি সত্যিই আমার সুহাসিনী র….?”

পুরো বাক্য সম্পূর্ণ করতে পারলনা রূপল! গলা ভিজে এলো তার। ক্লান্ত, দুর্বল এবং ব্যথাযুক্ত শরীর নিয়ে নীহারিকা কোনো রকমে হেঁটে এলো রূপল এবং রাতুলের মুখোমুখি। অবলীলায় চোখের জল ছেড়ে সে ভয়ে সিঁটিয়ে থাকা রাতুলের মুখের দিকে তাকালো। তেজী গলায় রূপলকে উদ্দেশ্য করে বলল,

“হ্যাঁ মিস্টার রূপল। এই রাতুল-ই আপনার সুহাসিনীর খু/নী।”

বিস্ফোরক রূপলকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে রাতুল নীহারিকাকে ভুল প্রমাণ করার জন্য বলল,

“তুই ওর কথা বিশ্বাস করিস না রূপল! আমি কেন সুহাসিনীকে খু/ন করতে যাব বল? আমি তো তাকে তেমন চিনিই না। তোর মুখ থেকে তার নাম শুনেছি মাত্র! যে জায়গায় আমি মেয়েটাকে পুরোপুরি চিনিই না সেই জায়গায় আমি তাকে খু/ন করতে যাব কেন? আসলে মেয়েটা আমাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে বিবেধ তৈরী করার জন্য এসব বলছে রূপল! জানিনা তার উদ্দেশ্য কী! কী ক্ষতি করেছিলাম আমি তার।”

অমনি রূপল আগ্রাসী দৃষ্টিতে নীহারিকার দিকে তাকালো। দুমনায় ভুগতে লাগল সে। মুহূর্তেই তেঁতে ওঠে সে উঁচু গলায় রূপলকে বলল,

“এসব কী নীহারিকা? আপনি কী সত্যিই আমাদের মধ্যে দ্বন্ধ তৈরী করার জন্য আমার ভাইকে ফাঁসাচ্ছেন?”

রূপলের বিশ্বাস ফিরিয়ে আনার জন্য নীহারিকা মরিয়া হয়ে উঠল। বিচলিত হয়ে সে দ্রুত গলায় বলল,

“বিশ্বাস করুন রূপল, আমি একটা কথাও মিথ্যে বলছিনা। আজ আমি সুহাসিনীর রেখে যাওয়া সেই ডায়েরিটা পড়েছি! যে ডায়েরিতে স্পষ্ট লিখা ছিল সুহাসিনীর জীবনে ঘটে যাওয়া প্রত্যেকটা লোমহর্ষক ঘটনা! যে ঘটনাগুলোর সাথে মিস্টার রাতুল ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছেন!”

পূর্বের তুলনায় ভয়টা আরও বেড়ে গেল রাতুলের! সে পুনরায় চেষ্টা করল রূপলের শক্ত বাঁধন থেকে নিজেকে ছাড়ানোর জন্য। রাতুল যতই চেষ্টা করছিল রূপলের কাছ থেকে নিজেকে ছাড়ানোর জন্য রূপল ততই যেন রাতুলকে শক্ত বাঁধনে বেঁধে নিচ্ছিল! নীহারিকার কথা একটু একটু করে বিশ্বাস করতে লাগল রূপল। নীহারিকাকে অভয় যুগিয়ে সে কঠিন গলায় বলল,

“আপনি বলুন নীহারিকা। ডায়েরিতে কী কী লিখা ছিল?”

রূপলের ভরসা পেয়ে সক্রিয় হয়ে উঠল নীহারিকা। কয়েক দফা দম ফেলে সে অনর্গল বলতে আরম্ভ করল,

“আজ থেকে প্রায় সাত বছর আগে যখন মিস্টার রাতুল বাইরে থেকে দেশে ফিরেছিলেন তখন তার সাথে সুহাসিনীর বেস্ট ফ্রেন্ড রামিশার দেখা হয়! প্রথম দেখাতেই মিস্টার রাতুল রামিশাকে ভালোবেসে ফেলেছিলেন! যদিও আদো এটা ভালোবাসা ছিলনা, শরীরের মোহ ছিল মাত্র। তবে রামিশার কাছে তা ভালোবাসাই মনে হয়েছিল! তখন রামিশার বয়স ছিল মাত্র সতেরো বছর! এই সতেরো বয়সী মেয়েকে তিনি ছলাকলায় প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে তার সাথে ফিজিক্যাল রিলেশানে জড়ান! প্রায় অনেকবার তাদের মধ্যে এভাবে শারীরিক মেলামেশা হয়। সুহাসিনী এই বিষয়ে কিছুই জানত না৷ রামিশা তখন সুহাসিনীকে কিছুই জানায়নি। যখন ভুলবশত রামিশার পেটে বাচ্চা চলে আসে তখনই সুহাসিনী সবটা জানতে পারে! যদিও প্রথমে সুহাসিনী রামিশার সাথে খুব চোটপাট করে। তার সাথে সমস্ত যোগাযোগ করা বন্ধ করে দেয়, তবে পরে রামিশার কান্নাকাটি দেখে সুহাসিনী গলে যায়। তখন রামিশা এবং সুহাসিনী মিলে মিস্টার রাতুলকে অনেক জোর করে যেকোনো উপায়ে বাচ্চাটাকে স্বীকার করে রামিশাকে বিয়ে করার জন্য। কিন্তু তখন থেকেই মিস্টার রাতুল তার আসল রূপ দেখাতে শুরু করেন! বাচ্চাটাকে অস্বীকার করে তিনি রামিশার সাথেও সমস্ত সম্পর্ক ছেদ করেন। রামিশা ছিল অনাদ। এতিমখানায় থেকে মানুষ হয়েছে সে। ডানে বায়ে তাকে সাপোর্ট দেওয়ার জন্য কেউ ছিলনা! সম্পূর্ণ একা হয়ে পড়ে রামিশা। তখন সুহাসিনীই তার পাশে এসে দাড়ায়। এতিমখানা থেকে তাকে এনে এলাকা থেকে অনেক দূরে কমদামী একটি ভাড়া বাড়িতে রাখে। যেন এলাকার কেউ তার পেটের বাচ্চাটার কথা জানতে না পারে। তার সম্বন্ধে খারাপ ধারণা করতে না পারে। তোঁপের মুখে পরে সুহাসিনী অনেক বার রামিশাকে বলেছিল বাচ্চাটাকে নষ্ট করে দিতে! তবে রামিশা কোনোভাবেই সুহাসিনীর এই প্রস্তাবে রাজি হয়নি। একটা পাপ ঢাকতে গিয়ে সে আরেকটা পাপ করতে চায়নি। পরিস্থিতি এড়িয়ে গিয়ে নিজের পাপ কর্মকে ঢাকার জন্য মিস্টার রাতুল তখন আবারও দেশের বাইরে ব্যাক করেন! রামিশা তখন এতটাই বোকা ছিল যে মিস্টার রাতুলের পদ পরিচয়, বাড়ির ঠিকানা এমনকি মিস্টার রাতুলকেও পুরোপুরি না জেনে সে তার সর্বস্ব বিলিয়ে দিয়েছিল। সুহাসিনীও তখন রামিশার হয়ে কিছু করতে পারছিলনা। একটা অপরিচিত ছেলেকে সে একা কীভাবে খুঁজবে? যেখানে রাতুলের সাথে তার মাত্র একবারই দেখে হয়েছিল। বয়সও কম ছিল বুঝার ক্ষমতাও তখন কম ছিল। এই ঘটনার কিছু মাস আগেই সবিতা আপু এবং সাফোয়ান ভাইয়ার বিয়ে হয়৷ বিয়ের তিন মাসের মাথায় সাফোয়ান ভাই দেশের বাইরে চলে যান। তখন সবিতা আপুও প্রেগনেন্ট ছিলেন! রামিশার একমাস আগেই সবিতা আপু প্রেগনেন্ট হোন। আস্তেধীরে দিন, মাস গড়াতে থাকে। এভাবেই মাঝখানে কেটে যায় আটমাস। এই আট মাসে রামিশা অনেকবার চেষ্টা করেছিল নিজেকে হ/ত্যা করার! কিন্তু বারংবার সে থেমে গেছে নিজের পেটের বাচ্চাটার কথা ভেবে। সুহাসিনী নিজে না খেয়ে তার খাবারটা রামিশাকে খাইয়েছে! টিউশনি করে টিউশনির পুরো টাকাটা রামিশার ঔষধ, খাওয়াদাওয়া, ঘর ভাড়া সবকিছুতে যতটুকু সম্ভব ব্যয় করেছ। সবিতা আপুকে বলেছে সে তার টিউশনির টাকা দিয়ে তার প্রাইভেট ফি দিচ্ছে! আসলেই কিন্তু না। সে কখনও কোনো প্রাইভেট পড়েনি। বরং প্রাইভেটের সময়টাতে সে আরও একটি টিউশনি বাড়িয়ে করেছে! রামিশার হয়ে সুহাসিনী অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছে। অথচ এমন স্বার্থহীন বন্ধুত্ব আজকালকার যুগে পাওয়া যায়না!”

একদফা দম নিয়ে নীহারিকা আবারও বলতে আরম্ভ করল,

“কাকতালীয়ভাবে একই দিনে সবিতা আপু এবং রামিশার ডেলিভারি ডেইট পড়ে! সুহাসিনী কোনদিকে যাবে বুঝতে পারছিলনা তখন। মহা চিন্তায় পড়ে গিয়েছিল সে। তাও আবার দুজনেরই নরমাল ডেলিভারি! সন্ধ্যায় যখন রামিশার ব্যথা ওঠে তখন সুহাসিনী রামিশাকে নিয়ে এনজিওতে তার ভরসার মানুষ মিস চারুলতা সেনের কাছে চলে যায়! সুহাসিনী তখন চারুলতা সেনের বোনজিকে পড়াত। সেই থেকে দুজনের মধ্যে বেশ সখ্যতা তৈরী হয়। ফ্রেন্ডলি সে রামিশার ব্যাপারে সব শেয়ার করে। চারুলতা সেনও তখন সুহাসিনীকে ভরসা দেন। বিতর্কিতভাবে তিনি সুহাসিনী এবং রামিশার পাশে এসে দাড়ান। তবে এরমধ্যেই ঘটে গেল বিপর্যয়! ব্যথা সহ্য করতে না পেরে বাচ্চা ডেলিভারি হওয়ার পর পরই রামিশা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে! মৃত্যুর আগে বাচ্চাটিকে সে সুহাসিনীর হাওলায় রেখে যায়। এর পর পরই সবিতা আপুর ব্যথা ওঠে। কোনোমতে কল করে সে সুহাসিনীকে তাড়াতাড়ি বাসায় আসতে বলে। সদ্য ডেলিভারি হওয়া ফুটফুটে কোলের বাচ্চাটিকে নিয়ে সুহাসিনী এনজিও থেকে বের হতে পারছিলনা। তার প্রাণপ্রিয় বান্ধবী রামিশার মরদেহ তার চোখের সামনে পরে আছে! এক প্রকার হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়ে সে। তাই তার পরিবর্তে মিস চারুলতা সেন সবিতা আপুর কাছে যান। অপ্রত্যাশিতভাবে সবিতা আপু তখন মরা বাচ্চা জন্ম দেন! খবরটা সাফোয়ান ভাই জানতে পারলে সবিতা আপু এবং সুহাসিনীকে জানে মে/রে ফেলতেন। তাই সুহাসিনী রিস্ক নিয়ে রামিশার বাচ্চাটাকে সবিতা আপুর বাচ্চা বলে চালিয়ে দেয়! এই কাজে মিস চারুলতা সেন সুহাসিনীকে সাহায্য করেন।”

থামল নীহারিকা। ভরাট দৃষ্টিতে রূপলের দিকে একবার তাকালো। হতভম্ব হয়ে রূপল ভীতসন্ত্রস্ত রাতুলের দিকে তাকিয়ে রইল। হটকারিকা ভুলে সে শক্ত গলায় রাতুলকে বলল,

“ছিঃ ভাইয়া। তুমি এত জঘন্য? এতটা নিচ? একটা অসহায় মেয়েকে তুমি এভাবে ঠকালে? তার দুর্বলতার সুযোগ নিলে?”

রাতুল তবুও নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করল! রূপলের সহানুভূতি নেওয়ার চেষ্টা করল। শুকনো ঢোঁক গিলে সে কাঠ কাঠ গলায় রূপলকে বলল,

“বিশ্বাস কর রূপল। আমি এসবের কিছুই জানিনা এবং করিও নি। মেয়েটা বানিয়ে বানিয়ে সব মিথ্যে বলছে! তুইতো আমার ভাই। আমার চেয়ে তোর কাছে কী ঐ মেয়েটার বানোয়াট কথাগুলো বেশী বিশ্বাসযোগ্য মনে হচ্ছে?”

গর্জে উঠল নীহারিকা। রাতুলের দিকে এগিয়ে এসে সে ফোঁস করে শ্বাস ছাড়ল। আকস্মিকভাবে রাতুলের গলার টুটি চেপে ধরল! দাঁতে দাঁত চেপে বলল,

“আমি মিথ্যা বলছি না? আমি মিথ্যা বলছি? সেদিন আমি তোকে আবছা আলোয় সুহাসিনীর রুম থেকে বের হতে দেখেছি! তোর মাথার ক্যাপটাও আমি তখনি দেখেছি। তবে ক্লিয়ারলি সব দেখিনি। ঝাপসাভাবে দেখেছি! সেই সাত বছর আগেই তো রামিশা ও সুহাসিনী মিলে তোকে বাঁচিয়ে দিয়েছিল তাইনা? তাহলে কেন তুই সুহাসিনীকে হ/ত্যা করলি?”

#চলবে…?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here