#ফেরারি_প্রেম
#পর্ব_৮
#নিশাত_জাহান_নিশি
“পাশে যে এনজিওটা দেখছেন? কোনোভাবে ওখানে আমাকে একটু ঢুকানোর ব্যবস্থা করে দিতে পারবেন?”
পাশ ফিরে নীহারিকা এনজিওর বিশাল গেইটটির দিকে দৃষ্টিপাত করল। লক্ষ্য করে দেখল গেইটটির সামনে একজন মাঝ বয়সী দারোয়ান দাঁড়িয়ে আছে৷ গেইটটির ভেতরে ঢুকতে হলে অবশ্যই দারোয়ানের পারমিশন নিয়ে তবেই ঢুকতে হবে। ভ্রু যুগল কিঞ্চিৎ কুঁচকে নীহারিকা নির্বোধ দৃষ্টিতে রূপলের দিকে তাকালো। কৌতূহলী গলায় প্রশ্ন ছুড়ল,
“বুঝলাম না গেইটের ভেতর ঢুকতে হলে আমার হেল্প কেন লাগবে? দারোয়ান থেকে পারমিশন নিলেই তো হয়। তাছাড়া আমি আপনাকে কীভাবে হেল্প করতে পারি? এখানে তো আমার হেল্প করার কোনো মাধ্যমই খুঁজে পাচ্ছিনা।”
উত্তেজিত গলায় রূপল বলল,
“আরে দারোয়ান আমাকে গেইটের ভেতরে ঢুকতে দিবেনা! তাই আপনি আমাকে হেল্প করবেন ভেতরে ঢুকার জন্য।”
“কী আশ্চর্য! দারোয়ান আপনাকে ভেতরে ঢুকতে দিবেনা কেন? তাছাড়া আপনি গেইটের ভেতর ঢুকেই বা কী করবেন? কে আছে ওখানে আপনার?”
অতিরিক্ত প্রশ্ন যদিও রূপলের পছন্দ নয় তবুও সে ঠাণ্ডা মেজাজে বলল,
“আগে আপনি আমাকে গেইটের ভেতরে ঢুকার একটা ব্যবস্থা করে দিন। বাকীটা আমি পরে বলছি।”
চরম বিরক্তি নিয়ে নীহারিকা বলল,
“কিন্তু কীভাবে?”
একটানে চা-টা সম্পূর্ণ শেষ করে সিগারেটটিতে শেষবারের মত ফুঁক দিলো রূপল। পা দ্বারা সিগারেটের নিচের অংশটিকে পিষে সে বেশ তৎপর ভঙ্গিতে নীহারিকার মুখোমুখি দাঁড়ালো। মুখ থেকে সিগারেটের দূষিত ধোঁয়া বের করে সে হরদমে বলল,
“কথার জালে ফাঁসিয়ে দারোয়ানটিকে ব্যস্ত রাখতে হবে আপনার! সেই ফাঁকে আমি গেইটের ভেতর ঢুকে যাব, সিম্পল।”
সিগারেটের দূষিত ধোঁয়া নীহারিকার নাকে পৌঁছাতেই নীহারিকা নাকে ওড়না চেপে ধরল। অস্বস্তিকর গলায় বলল,
“ঠিক আছে। কিন্তু বের হবেন কীভাবে?”
“সে ব্যবস্থা আমি করে নিব। কাজ শেষ হওয়ার পর ওখান থেকে ম’রা লা’শ হয়ে বের হলেও আমার কোনো অসুবিধে নেই!”
“কী বলছেন কী এসব? তাহলে ওখানে যাওয়াটা আপনার রি’স্ক হবে? না বাবা! আমি জেনেশুনে আপনাকে এই রি’স্কের মধ্যে ঠেলে দিতে পারব না।”
নিমিষেই কাতর রূপ ধারণ করল রূপল! অসহায় গলায় নীহারিকাকে বলল,
“প্লিজ নীহারিকা। প্লিজ ট্রাই টু আন্ডারস্ট্যান্ড। বিগত ছয় মাস ধরে আমি চেষ্টা করছি একটিবার এই গেইটটির ভেতরে ঢুকার জন্য। কিন্তু এমন কাউকে পাচ্ছিনা যে আমার হেল্প করবে! এই প্রথমবার আপনাকে দেখে আমার খুব ভরসা হচ্ছে! মনে হচ্ছে আমার এই অসাধ্য কাজটি আপনার দ্বারাই সাধন হবে। প্রতিদিন এভাবে ম’রা লা’শের মত বেঁচে থাকার চেয়ে কী ভালো নয় একদিন রি’স্ক নিয়ে বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা পাওয়ার?”
রূপলকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে মা’ম’লা বেশ সিরিয়াস! না হয় এই রাগী লোকটি কখনও এতটা কাতর হতো না। রূপলের দুর্বলতার সুযোগ নিতে চায়নি নীহারিকা। বরং সে গলা খাঁকিয়ে কোমল স্বরে বলল,
“ওকে ডান। আমি আপনার হেল্প করতে রাজি।”
পূর্বের তুলনায় আরও অধিক তৎপর হয়ে উঠল রূপল। অস্থির গলায় বলল,
“আমি আপনার পেছনে পেছনে থাকব। আপনি দারোয়ানকে এমনভাবে কথার জালে ব্যস্ত রাখবেন যেন আমি গেইটের ভেতর ঢুকে গেলেও তিনি কিছু আঁচ না করতে পারেন। বুঝেছেন?”
রূপলের উদগ্রীব চোখের দিকে তাকিয়ে নীহারিকা অনায়াসেই বলে ফেলল,
“ওকে।”
বুকে সাহস সঞ্চার করে নীহারিকা দ্রুত বেগে হেঁটে দারোয়ানের মুখোমুখি দাঁড়ালো। জড়তা না রেখে বরং ব্যস্ত গলায় দারোয়ানকে বলল,
“আচ্ছা আঙ্কেল। আমার একটা হেল্প করতে পারবেন?”
দারোয়ানও বেশ কৌতূহল নিয়ে শুধালো,
“কী হেল্প?”
“আচ্ছা? এদিকে মিজানুর রহমানের বাড়িটা কোথায় আপনি জানেন?”
কিছুটা সময় নিয়ে দারোয়ান বেশ ভেবেচিন্তে বলল,
“কোন মিজানুর রহমান?”
“আরে ঐ যে ভুড়িওয়ালা মিজানুর রহমান! দানবের মত দেখতে লোকটা। দুইটা ছেলে আছে উনার। একটা ছেলে টাকলা আর অন্যটা ফাঁপর বাজ!”
“ভুড়িওয়ালা… না। চিনলাম না তো!”
“দাঁড়ান দাঁড়ান আঙ্কেল। আমি আপনাকে চিনিয়ে দিচ্ছি। একটু এক্সপ্লেইন করে বললেই আপনি ঠিক চিনে যাবেন।”
নীহারিকা বেশ ব্যস্ত হয়ে পড়ল দারোয়ানকে তার কাল্পনিক চরিত্রে থাকা ভুড়িওয়ালা মিজানুর রহমানকে চিনাতে! বেহুদা তর্ক করতে লাগল সে দারোয়ানের সাথে। আদোতেই কোনো ভুঁড়িওয়ালা মিজানুর রহমান এই এলাকায় নেই! রূপলও সেই সুযোগ বুঝে পাশ কাটিয়ে আস্তে করে গেইটের ভেতর ঢুকে গেল! পকেট থেকে কালো একটি মাস্ক বের করে সে মাস্কটি মুখে পড়ে নিলো। তার জানামতে নিচ তলায় যে রুমটিতে সুহাসিনীকে রাখা হয়েছে সেই রুমটির উদ্দেশ্যে রূপল এক প্রকার দৌঁড়াতে লাগল। প্রতিষ্ঠানের ভেতরে থাকা লোকজন যদিও রূপলের দিকে কয়েকবার তাকিয়েছিল তবে এটাই যে রূপল তা তারা বুঝতে পারেনি! সুযোগ বুঝে রূপল এক ছুটে গিয়ে সুহাসিনীর রুমের জানালার পাশ ঘেঁষে দাঁড়ালো। দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে সে চোখ বুজে অনবরত শ্বাস ফেলতে লাগল। অমনি খোলা জানালা দ্বারা সুহাসিনীর রুম থেকে ছোট্টো হৃদি এবং সবিতার গলার আওয়াজ ভেসে এলো। বুঝতে বেশী বেগ পেতে হলোনা সবিতা এবং হৃদি এসেছে সুহাসিনীকে দেখবার জন্য। স্থবিরতা নিয়ে জানালার পর্দা সরিয়ে রূপল রুমের ভেতর তাকাতেই দেখতে পেল সবিতা সুহাসিনীর হাত ধরে অবলীলায় চোখের জল ফেলছে! অন্যদিকে সুহাসিনীর চোখেও জল চিকচিক করছে!
আ’গু’নে পু’ড়ে সুহাসিনীর কুঁচকে যাওয়া ক্ষত বিক্ষত মুখের দিকে তাকিয়ে রূপল অজান্তেই চোখের জল ফেলে দিলো! আপনা আপনি ভেতর থেকে দীর্ঘশ্বাস বের হতে লাগল। দীর্ঘ ছয়মাস পর সুহাসিনীকে সে একটি ঝলকের জন্য দেখল। তাও আবার এতটা নির্মম রূপে। এতটা ঝলসানো রূপে। আবেগ ধরে রাখতে পারল না রূপল। ছটফট করে সে সুহাসিনীর মুখোমুখি হওয়ার উদ্দেশ্যে পা বাড়াতেই মনে পড়ে গেল সুহাসিনীর দেওয়া সেই কসমের কথা! সঙ্গে সঙ্গেই দাঁড়িয়ে পড়ল রূপল। সুহাসিনীর দেওয়া কসম না রাখতে পারলে যদি সুহাসিনীর আরও বড়ো কোনো ক্ষতি হয়ে যায় সেই ভয়ে সে আপাতত দমে গেল। চোখে টলমল জল নিয়ে সে সবিতাকে কল করল! ফোন বেজে উঠতেই সবিতা স্ক্রীনে রূপলের নাম্বারটি দেখা মাত্রই সুহাসিনীর দিকে একবার ইতস্তত দৃষ্টিতে তাকালো। আচমকা সবিতার আড়ষ্টতা দেখে সুহাসিনী দুর্বল গলায় প্রশ্ন ছুড়ল,
“কে ফোন করেছে আপু?”
সুহাসিনীর প্রশ্নের জবাব না দিয়ে সবিতা বরং ব্যস্ত গলায় বলল,
“দাঁড়া আমি একটু আসছি।”
রুম থেকে বের হয়ে গেল সবিতা। বারান্দায় পা ফেলতেই রূপলের মুখোমুখি পড়ে গেল সে। অমনি সবিতা থতমত খেয়ে রূপলকে বলল,
“তুমি এখানে?”
মৃদু আওয়াজে রূপল সবিতাকে বলল,
“তুমি তোমার বোনকে এক্ষণি বলো কসমটা উঠিয়ে নিতে। আমি জাস্ট একবার তার মুখোমুখি হতে চাই। তার সাথে খোলাখুলিভাবে কথা বলতে চাই। সে আসলে কী চায় আমি জানতে চাই।”
“বি কুল রূপল প্লিজ। আমি এখন এই বিষয় নিয়ে কোনো কথাই সুহাসিনীকে বলতে পারবনা! সে এখন আমার কথা শোনার মত অবস্থাতে নেই। এখন আমি এই বিষয়টা উঠালেই সে উত্তেজিত হয়ে উঠবে। আরও অসুস্থ হয়ে পড়বে। এমনিতেই তার রুমে দুজনের বেশী কেউ এলাউড না। ডক্টর টোটালী বারণ করেছেন। নার্স আমাকেও পর্যন্ত এই রুমে ঢুকতে দিচ্ছিলনা। প্লিজ ট্রাই টু আন্ডারস্ট্যান্ড রূপল।”
“তার শরীরের অবস্থা যেহেতু এতই খারাপ তাহলে তোমরা তাকে হসপিটাল থেকে এখানে এই খুপরির মধ্যে আটকে রেখেছ কেন? কী? টাকার সমস্যা তোমাদের হ্যাঁ? আমার থেকে কোনো হেল্পই নিবেনা তোমরা? কী চলছে তোমাদের মধ্যে? তোমার বোন কী ভেবেছে? আমাকে সবকিছু থেকে দূরে দূরে রাখলেই বুঝি আমি তাকে ভুলে যাব? নতুন কাউকে ভালোবেসে তার অস্তিত্ব ভুলে যাব? তাকে ভুলা কী এতই সহজ? যদি এমন কিছুই ভেবে থাকে তো তাকে বলে দিও তার ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। রূপল তাকে সেদিনই ভুলবে যেদিন রূপলের দেহে প্রাণ থাকবেনা।”
আ’হ’ত মন নিয়ে রূপল পিছু ঘুরল। ক্ষোভে বুদ হয়ে সবিতাকে বলল,
“আর একটা কথা। তোমার হাজবেন্ডের কোনো মুক্তি নেই আমার হাত থেকে! শুধু হৃদির দিকে তাকিয়ে আমি সব সহ্য করে নিচ্ছি। কারণ, হৃদি আমার সুহাসিনীর খুব আদরের! হৃদি না থাকলে হয়ত সুহাসিনীকে আমার কখনও পাওয়া হতো না। হৃদির মাধ্যমেই আমার সুহাসিনীকে পাওয়া। আজ যদিও আমি চলে যাচ্ছি। তবে একদিন না একদিন আমি সুহাসিনীর মুখোমুখি হবই হবো। সেদিন তার দিক থেকে কোনো বাঁধা আমাকে আটকে রাখতে পারবেনা।”
রুমের ভেতর থেকে সুহাসিনী সব শুনছিল! রূপলের কণ্ঠস্বর তার কর্ণতলে বেজে উঠতেই সে ছোট্টো হৃদির হাত দুটো চেপে ধরে চোখের জল ফেলতে লাগল। গলায় দম এনে কিছুটা উচ্চস্বরেই বলল,
“তুমি এখান থেকে চলে যাও রূপল। যদি আমার ভালো চাও তো এখান থেকে চলে যাও। তোমার কণ্ঠস্বর শুনেই আমার শরীর জ্বালা পোড়া শুরু করেছে রূপল! দোহাই লাগাই তুমি আমার ভালো চাও তো এখান থেকে চলে যাও।”
অশ্রুসিক্ত সুহাসিনীর দিকে আড়চোখে একবার তাকিয়ে রূপল দ্রুত পায়ে হেঁটে জায়গা ত্যাগ করল। দারোয়ানকে ধাক্কা মেরে সে গেইট থেকে বের হয়ে গেল। রাস্তার অপর প্রান্তে রূপলের বাইকের উপর বসে কিছুটা অধৈর্য্য হয়েই রূপলের জন্য অপেক্ষা করছিল নীহারিকা। উদ্ভ্রান্ত রূপলকে দেখামাত্রই নীহারিকা বাইক থেকে নেমে দাঁড়াল। রাস্তা পাড় হয়ে এসে রূপল সোজা বাইকে ওঠে গেল। বেশ আগ্রহী হয়ে নীহারিকা রূপলের দিকে প্রশ্ন ছুড়ল,
“কাজ হয়েছে?”
হাতের কনুই দ্বারা চোখের জলগুলো মুছে রূপল ভগ্ন গলায় বলল,
“হুম হয়েছে।”
“কার সাথে দেখা করতে গিয়েছিলেন?”
“এই মুহূর্তে আমি আপনার সাথে কথা বাড়াতে চাইছিনা নীহারিকা। প্লিজ বাইকে উঠুন। আপনাকে বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসছি।”
তবুও নীহারিকা ঘাড়ত্যাড়ামো করে বলল,
“সুহাসিনীর সাথে দেখা করতে গিয়েছিলেন তাইনা? তাকে আপনি ভালোবাসেন?”
সহ্য ধৈর্য্য নিয়ে রূপল বলল,
“হুম।”
“তিনি কী এই এনজিওতেই চাকরী করেন?”
“হুমম! এবার উঠুন।”
মনটা খারাপ করে নীহারিকা বাইকের পেছনে ওঠে বসল। রূপলও বেশ জেদ নিয়ে বাইক স্টার্ট করে দিলো। মুখটা ফুলিয়ে নীহারিকা বিড়বিড় করে বলল,
“ধুর যা। দুই বছর পর যা ও কারো উপর ক্রাশ খেলাম তাও আবার দেখি এই ছেলেরও গার্লফ্রেন্ড আছে! আমার কপালটাই খারাপ৷ যা মনে হচ্ছে আজীবন আমার সিঙ্গেলই থাকতে হবে! চেহারার যা ছিরি আমার। তার উপর দেখতেও বেটে!”
__________________________
কিছুদূর যেতে বড়ো একটি রেস্টুরেন্টের সামনে এসে রূপল হঠাৎ বাইক থামিয়ে দিলো! প্রচণ্ড ক্ষোভ নিয়ে সে তাড়াহুড়ো করে বাইক থেকে নামল। উন্মাদের মত রাস্তার এদিক ওদিক তাকিয়ে সে কী যেন একটা খুঁজতে লাগল। রূপলের এহেন মরিয়া ভাব দেখে নীহারিকা বেকুব বনে গেল। অবাক গলায় প্রশ্ন ছুড়ল,
“এই কী হয়েছে আপনার? এভাবে কী খুঁজছেন আপনি?”
নীহারিকার সাথে কোনো কথায় না জড়িয়ে রূপল অনেক খুঁজে রাস্তার পাশ থেকে একটি মোটা দেখতে আলপিন কুড়িয়ে পেল! কোনো দিকে কালক্ষেপণ না করেই সে আলপিনটি নিয়ে সোজা রেস্টুরেন্টের বাইরে পার্ক করে রাখা লাল রঙের বাইকটির সামনে দাঁড়ালো। আলপিনটি দিয়ে বাইকের চাকা পাংচার করে সে দ্রুত পায়ে হেঁটে বাইকে ওঠে গেল। মুহূর্তের মধ্যেই শো শো বেগে বাইকটি ছেড়ে দিলো। আলাভোলা দৃষ্টিতে নীহারিকা পেছন থেকে রূপলের দিকে তাকিয়ে রইল। তব্ধিত গলায় সে রূপলের দিকে প্রশ্ন ছুড়ল,
“ব্যাপারটা কী হলো?”
“কেন? সব তো আপনার চোখের সামনেই হলো।”
“কিন্তু বাইকটা কার ছিল?”
“সাফোয়ানের!”
“ওরেব্বাস। এভাবেই সাফোয়ানের উপর শোধ নিবেন নাকী?”
দাঁতে দাঁত চেপে রূপল বলল,
“হুম। সুযোগ পেলে শুধু তার বাইকের হাওয়াই নয় বরং তার জীবনের হাওয়া ও লিক করে দিতাম!”
রূপলকে উস্কানোর জন্য নীহারিকা বলল,
“সুযোগ না সাহস কোনটা?”
“উঁহু সুযোগ। যে মানুষটার জন্য আমি সাফোয়ানকে জানে মা” র”তে চাই, সেই মানুষটাই আমাকে পেছন থেকে হাত-পা বেঁধে রেখেছে। কিছুতেই শোধ নিতে দিচ্ছেনা।”
___________________________
গ্লাস ভর্তি তাজা ফলের রস হাতে নিয়ে নিহাল চেয়ার টেনে পিয়াসার পাশে বসল। অমনি পিয়াসা মুখটা অন্যদিকে ঘুরিয়ে নিলো! কেন জানিনা নিহালকে মন থেকে মেনে নিতে বড্ড অস্বস্তি হচ্ছে তার। নিজেকে বড্ড অপরাধীও মনে হচ্ছিল। কেবিনে কেউ না থাকায় পিয়াসার অভিমান ভাঙাতে নিহালের বরং সুবিধাই হলো! অভিমানি পিয়াসার দিকে তাকিয়ে নিহাল নরম স্বরে বলল,
“যা হয়েছে সব ভুলে যাও পিয়াসা। আমি যেমন তোমার ফাস্ট মনে রাখতে চাইনা তেমনি আমিও চাইনা তুমিও গতকালের ঘটা কোনো ঘটনা মনে রাখো!”
#চলবে…?