#ফেরারি_প্রেম
#পর্ব_৬৫ [অন্তিম পর্ব]
#নিশাত_জাহান_নিশি
রূপলের বিষণ্ন চোখের পানে তাকিয়ে নীহারিকা তার বিমূর্ষ অবস্থা নিয়েও তিন কবুল বলল! তৎক্ষনাৎ সে লুটিয়ে পরল রূপলের বুকে। এতে উপস্থিত সবাই ব্যস্ত হয়ে পরলেও রূপল ব্যস্ত হলোনা! কাজি সাহেবকে বলল বিয়ে পরাতে। এবার পালা এলো রূপলের তিন কবুল বলার। শীঘ্রই রূপল তিন কবুল বলে বিয়ে সম্পন্ন করল।
ধোঁয়াশায় নিমজ্জিত আধো আধো চোখ মেলে নীহারিকা এদিক ওদিক তাকালো। বুঝার চেষ্টা করল কোথায় সে। ক্ষীণ অন্ধকারে ঢাকা রুমটি। খোলা জানালার গ্রীল ভেদ করে অর্ধখণ্ড চাঁদের সূক্ষ্ম আলো গতানুগতিকভাবে প্রবেশ করছে রুমে। সেই আলোক রশ্মিতেই প্রথমে চোখ পরল নীহারিকার। কপাল কুঁচকে এলো তার। মনে প্রশ্ন জাগল। তবে আলোর দিশা খুঁজে পেয়ে একলা ঘরে ভয় পাওয়ার আশঙ্কাও ঈষৎ কমে এলো তার। শরীরটা পূর্বের তুলনায় পরিপুষ্ট হলো। দুর্বলতা কেটে গেল। খাওয়াদাওয়া ও ঘুমের অনিয়মের কারণে তার শরীর হঠাৎ নাজুক হয়ে পরেছিল। এখন কিছুটা সুস্থবোধ করছে।
দখিনা হাওয়ায় বাঁধাহীন ভাবে উড়ছে পর্দার কাপড়। খুবই শীতল পরিবেশ। মৃদু ঠান্ডার অনুভূতি হচ্ছে গাঁয়ে। রীতিমত শরীরে কম্পন তুলে দিচ্ছে এই সর্বনাশা হাওয়া। যদিও নীহারিকা এখনও বুঝতে পারছেনা এখন কোথায় আছে সে! তার নিষ্ক্রিয় মস্তিষ্কে এই রুম এবং এই পরিবেশকে সম্পূর্ণ অপরিচিত মনে হচ্ছে।
অতিরিক্ত কম্পনের কারণে হাত দুটো মুড়িয়ে নিতেই নীহারিকা অনুভব করল কেউ এসে বসল তার পাশে। তাৎক্ষণিক গাঁয়ের লোম দাড়িয়ে গেল তার! বুকের ভেতরটা ভয়ে কেমন দুরুদুরু করতে লাগল। হাত-পা কাঁপতে লাগল। তাকালো না সে ঐদিকে। চোখের জোড়া খিঁচে বন্ধ করে শরীরের সমস্ত শক্তি কাজে লাগিয়ে সে পাশের ব্যক্তিটিকে ধাক্কা মেরে নিচে ফেলে দিলো। আতঙ্কিত হয়ে সঙ্গে সঙ্গে নীহারিকা ও শোয়া থেকে ওঠে বসল। ঘটনার আকস্মিকতায় মেঝেতে উৎ হয়ে পরল রূপল! নাকের হাড্ডি গুড্ডি বোধ হয়ে ভেঙেই গেল তার। দু-একটা ফোঁটা রক্তও গড়িয়ে পরল নাক থেকে।
উল্টোদিকে ফিরে থাকার দরুন রূপলকে এখনও চিনতে পারলনা নীহারিকা! দূরদৃষ্টিতে পেছন থেকেও কিছু ঠাওর করতে পারলামনা। মুহূর্তেই বসা থেকে ওঠে দাড়িয়ে গেল নীহারিকা। বেশ ঘাবড়ানো গলায় চ্যাচিয়ে বলল,
“কে আপনি?”
তখনি রূপল আক্রোশিত দৃষ্টিতে পিছু ফিরে তাকালো বিচলিত নীহারিকার দিকে। সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ ও চলে এলো। রুমের বাতিগুলো ও সব জ্বলে উঠল। বেকুব বনে গেল নীহারিকা। তাজ্জব দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল হিংস্র রূপলের দিকে। এই রুমটি তাহলে রূপলের ছিল? শিট অন্ধকারের কারণে সে কিছুই সূক্ষ্ম দৃষ্টিতে ঠাওর করতে পারেনি। নিজের অজান্তেই কী একটা অনর্থ ঘটে গেল।
নাক ফুলিয়ে রূপল রক্তাক্ত অবস্থায় তেড়ে এলো নীহারিকার দিকে। ক্ষণিকের মধ্যেই পেছনের দিকে হাত মোচড়ে ধরল নীহারিকার! হতবাক হয়ে গেল নীহারিকা। ভয়ঙ্কর দৃষ্টিতে রূপল তাকালো উজবুক নীহারিকার দিকে। দাঁতে দাঁত চেপে প্রশ্ন ছুড়ল,
“মাথা খারাপ হয়ে গেছে তোমার? আমার উপস্থিতি টের পাওনি তুমি?”
রূপলের উগ্রতা দেখে ক্ষেপে গেল নীহারিকা! রূপলের মতই চোয়াল উঁচালো সে। তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করল আগ্রাসী রূপলের দিকে। রগচটা গলায় প্রশ্ন ছুড়ল,
“বিয়ে হতে না হতেই টর্চার শুরু করে দিয়েছেন? সুযোগ পেয়েই খোলস থেকে বের হয়ে এসেছেন?”
কদাচিৎ হাসল রূপল! নীহারিকার হাতটি আরও শক্ত হাতে চেপে ধরল। নীহারিকাকে অবাক করে দিয়ে হেয়ো স্বরে বলল,
“ওহ্ রিয়েলি? হাতটা একটু মোচড়ে ধরেছি বলেই টর্চার হয়ে গেল? আর প্রথম রাতেই যে তুমি আমার নাক ফাটিয়ে দিলে?”
“সাধে কী আর নাক ফাটিয়েছি? ভয়ে আমার জান বের হয়ে যাচ্ছিল। অন্ধকার ঘরে কেউ এভাবে হুটহাট করে পাশে এসে বসে? মিনিমাম কমনসেন্স নেই আপনার?”
“না নেই। তোমাকে ভালোবাসার পর সব কমনসেন্স গুলে খেয়েছি! টর্চার কাকে বলে তুমি তো এবার টের পাবা সুন্দরী! আমার নাক ফাটানো তাইনা? রূপলকে হিট করা?”
কথার পিঠে আর কোনো কথা আওড়াতে পারল না নীহারিকা। ইতোমধ্যেই রূপল ধাক্কা মেরে নীহারিকাকে খাটের উপর ফেলে দিলো। শরীরের তাল সামলাতে না পেরে নীহারিকা বিছানার সাথে পুরোপুরি লেপ্টে গেল। নীহারিকার গাঁয়ে থাকা জর্জেটের পাতলা শাড়িটি তখনি পেটের উপর থেকে ঈষৎ সরে গেল। বেসামাল হয়ে পরল রূপল! আচ্ছন্ন দৃষ্টিতে নীহারিকা তাকিয়ে রইল ঘোরে ডুবে যাওয়া রূপলের দিকে। বেপরোয়া রূপলকে আজ কোনোভাবেই সামলানো যাবেনা তা বেশ বুঝতে পেরে গেছে নীহারিকা। রূপলকে পাঞ্জাবি খুলতে দেখে নীহারিকা তড়তড়িয়ে শোয়া থেকে ওঠে বসে গেল! হুট করে লজ্জা পেয়ে বসল তার। বুকের ভেতরটা তুমুল বেগে কাঁপতে লাগল। শ্বাস-প্রশ্বাস ভারি হয়ে এলো। অদ্ভুত এক শিহরণ কাজ করতে লাগল শরীরের প্রতিটি রন্ধ্রে রন্ধ্রে। অপ্রতিরোধ্য অবস্থায় সে বিছানার এক পাশে গুটিশুটি মেরে বসল।
গাঁয়ের পাঞ্জাবিটি খুলে রূপল বিরক্তি নিয়ে নীহারিকার দিকে এগিয়ে এলো। তেড়ে গিয়ে নীহারিকার মুখোমুখি বসল। ফোঁস করে শ্বাস ফেলে রাগী গলায় শুধালো,
“কী হলো?”
জড়তাগ্রস্ত দৃষ্টিতে নীহারিকা রূপলের উন্মুক্ত দেহের দিকে তাকালো। রূপলের ধবধবে ফর্সা বুকে তার দৃষ্টি আটকে গেল! তবে কী তার ভাগ্যে এই সুদর্শন যুবকটির ভালোবাসা লিখা ছিল? তার বৌ হওয়ার যোগ্যতা কী আদো রাখে নীহারিকা? এই ক্ষেত্রে উপর ওয়ালা তাকে আশ্চর্যজনকভাবে জিতিয়ে দিলো! নিঁখাত মনের একজন মানুষকে তার ভাগ্যের সাথে আজন্মের জন্য জুড়ে দিলো। যা তার ভাবনার বাইরে ছিল। উপর ওয়ালা কখন কোন দিক থেকে মানুষের ভাগ্য বদলে দেয় তা ধারণাও করা যায়না। নীহারিকা নিজেও এবার বেসামাল হয়ে গেল। চোখের পলকেই সে ঝুঁকে এসে টুপ করে রূপলের বুকে চুমু খেয়ে দিলো! আষ্টেপৃষ্টে রূপলকে জড়িয়ে ধরে মোহসিক্ত গলায় বলল,
“আমার কেমন যেন হাঁসফাঁস লাগছে রূপল। এই প্রথম আপনাকে দেখে এত লজ্জা লাগছে আমার! আপনার চোখের দিকে তাকানোর সাহস হচ্ছেনা আমার। বুকের ভেতরটা কেঁপে কেঁপে উঠছে। কী করি এখন বলুন তো?”
নীহারিকার চুলের ঘ্রাণে মাতাল হয়ে গেল রূপল। চোখ বুজে ঘাঁড়ে মুখ ডুবিয়ে দিলো সে। রূপলের ভালোবাসার উষ্ণতায় তপ্ত শ্বাস ফেলতে লাগল নীহারিকা। উত্তেজিত হয়ে রূপলের পিঠ খামচে ধরল। নেশায় বুদ হয়ে রূপল নীহারিকার কানে নিগূঢ় গলায় ফিসফিসিয়ে বলল,
“তোমার কিছু করতে হবেনা নীহু। আজ রাতটা শুধু আমার! আমি যা চাইব, তাই হবে। কোনো বারণ শুনবনা কিন্তু আমি। অনেক অপেক্ষা করিয়েছ আমায়, তবে আর নয়। যদিও তোমাকে পাওয়ার জন্য আমি জীবনের শেষ নিঃশ্বাস অবধি অপেক্ষা করতে পারি।”
“বাট আপনার নাক?”
“ওসব নিয়ে এখন ভাবতে হবেনা তোমার। আমি ফিট আছি। প্লিজ ডোন্ট ডিস্টার্ব মি।”
মুচকি হেসে রূপলের কাছে নিজেকে সঁপে দিলো নীহারিকা! রূপলের পাগলামিতে গাঁ ভাসালো। ক্রমে ক্রমে রূপল তার ভালোবাসায় সিক্ত করতে লাগল নীহারিকাকে। উন্মাদের মত আচরণ করতে লাগল। মুখে তৃপ্তির হাসি ফুটিয়ে নীহারিকা রূপলের ভালোবাসা নির্দ্বিধায় গ্রহণ করতে লাগল। ভালোবাসা পরিপূর্ণতা পেল তাদের। ক্রমশ দুটি অতৃপ্ত মন মিলেমিশে একাকার হয়ে গেল।
ইতোমধ্যেই আরিয়ান ক্রমাগত কল করে বিরক্ত করতে লাগল রূপলকে! আরিয়ানের কল তোলার পরিস্থিতিতে এখন নেই রূপল। বিরক্ত হয়ে বার বার কলটি কেটে দিচ্ছে সে! তবে নীহারিকা ফিচেল হেসে ফোনের স্ক্রীণের দিকে তাকিয়ে রইল। আরিয়ান না থাকলে ভিনদেশে রূপলের খোঁজ খবর নেওয়ার সৌভাগ্য হতোনা তার! যদিও আরিয়ান নিজ থেকেই প্রথমে নীহারিকার সাথে যোগাযোগ করেছিল। কৌশলে রূপলের কাছ থেকে নীহারিকার ফোন নাম্বার সংগ্রহ করেছিল। নীহারিকাকে ছাড়া যে রূপল কতটা অসহায়, অসুখি ও বিষণ্ন ছিল তা জানানোর জন্যই মূলত নীহারিকার সাথে যোগাযোগ করেছিল আরিয়ান।
______________________________________
চোখেমুখে আচমকা জলের ছিঁটে পরতেই রূপলের তৃপ্তিদায়ক ও শান্তির ঘুমটি নিমিষেই আঁখিপল্লব থেকে উড়ে গেল। চোখ দুটি কচলে সে পিটপিট দৃষ্টিতে পাশ ফিরে তাকালো। কপাল কুঁচকে বিব্রত প্রকাশ করল। পরক্ষণেই অশান্ত চোখ দুটি তার শান্ত হয়ে উঠল। মুগ্ধতা ভর করল চোখেমুখে। এই মুহূর্তে চুল ঝারতে ব্যস্ত নীহারিকা! কালো ও নীল রঙের একটি কটন শাড়ি পরেছে সে। টানা টানা চোখ দুটিতে কাজল লেপ্টে আছে। চুল থেকে টপটপ করে পানি গড়িয়ে পরছে। ভীষণ স্নিগ্ধ দেখাচ্ছে তাকে। চোখ জুড়িয়ে শিথিল হয়ে এলো রূপলের। মুগ্ধতায় আলতো হাসল। পাশ ফিরে শুয়ে সে নিষ্পলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল উদাসীন নীহারিকার দিকে।
মুহূর্ত কয়েক নীহারিকার দিকে নিষ্প্রভ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে রূপল নীহারিকার দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করল। বিগলিত হয়ে শাড়ির আঁচল টেনে ধরল নীহারিকার! হকচকিয়ে ওঠে নীহারিকা কপাল কুঁচকে পাশ ফিরে তাকালো। আচমকা চোখ টিপে রূপল ক্রুর হেসে বলল,
“খুব চালাক, না? ইচ্ছে করে আমার ঘুমটা ভাঙিয়েছ রোমান্স করার জন্য? রাতে মন ভরেনি? উফ এর আগে আমার ঘুমটা ভাঙালে না কেন?”
রূপলের ঠোঁট কাটা কথায় নীহারিকার মেজাজ চওড়া হয়ে গেল। তেড়ে এসে সে রূপলের বুকে ঘুঁষি মারল। রাগে ফোঁস ফোঁস করে বলল,
“কী বললেন আপনি? আমি রোমান্স করার জন্য…
বুকে খানিক ব্যথার অনুভূতি হলো রূপলের। শোয়া থেকে বসে গেল সে। নীহারিকার দিকে অস্থির দৃষ্টি নিক্ষেপ করল। নাকমুখ কুঁচকে বলল,
“কথায় কথায় এত মাইর দাও কেন? মুখের আগে হাত চলে বেশি! নেক্সট টাইম হাত বেঁধে রাখব। ক্ষেপি কোথাকার।”
“বেহায়াপনা করলে এমনই হবে! কী দরকার ছিল আমাকে উস্কানোর? নির্লজ্জ, ঠোঁট কাটা, বেহায়া পুরুষ মানুষ কোথাকার।”
“গাঁয়ের জোরে তুমি আমার সাথে পারবা হুম? যতবার তুমি আমাকে হিট করবা ঠিক ততবার আমি তোমার উপর এভাবে ঝাঁপিয়ে পরব। তখন পারবে আমাকে সামলাতে?”
ক্ষুব্ধ হয়ে রূপল নীহারিকার গাঁয়ের উপর ঝাপিয়ে পরল! জোর করে নীহারিকার চোখেমুখে অসংখ্য চুমু খেতে লাগল। হাসতে হাসতে পেটব্যথা হয়ে যাচ্ছিল নীহারিকার। রূপলকে থামানোর চেষ্টা করছিল। তবে লাভ কিছু হচ্ছিলনা এতে। এত অনায়াসে রূপলের লাভ টর্চার থেকে মুক্তি মিলল না তার।
______________________________________
জেলের বাইরে প্রায় ঘণ্টা খানিক অপেক্ষা করার পর রাতুলের সাথে দেখা মিলল রূপল, নীহারিকা ও হৃদির! অনেক কথা কাটাকাটির পর পরিশেষে তারা তিনজন একসাথে জেলের ভেতর ঢুকার পারমিশন পেল। চুল, দাঁড়ি বড়ো হয়ে একাকার অবস্থা রাতুলের। শরীর স্বাস্থ্য শুকিয়ে নিস্তেজ হয়ে পরেছে সে। তাকানো যাচ্ছেনা তার মুখের দিকে। নির্জীব দেখাচ্ছে তাকে। অপরাধী ভঙ্গিতে মাথা নুইয়ে সেলের ঐ পাশে দাড়িয়ে আছে রাতুল। তার পরিবারের দিকে চোখ তুলে তাকানোর সাহসটি অবধি নেই তার। মিনিট কয়েক রাতুলের দিকে সূক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে অজান্তেই চোখে জল জমে এলো রূপলের! তাৎক্ষণিক মুখটা ঘুরিয়ে নিলো সে। গড়িয়ে পরা চোখের জলগুলো মুছল!
নীহারিকার স্থির দৃষ্টি হৃদির দিকে সীমাবদ্ধ। বাবার প্রতি অদ্ভুত এক টান অনুভব করছে হৃদি। তবে তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছেনা সে। যদিও সে আদোতে জানেনা রাতুল তার বাবা! চোখে ভাসা ভাসা জল নিয়ে হৃদি জিজ্ঞাসু গলায় রূপল ও নীহারিকার দিকে প্রশ্ন ছুড়ল,
“মা, বাবা আমরা এই লোকটির কাছে কেন এসেছি? এই লোকটিই তো আমার সাফোয়ান বাবা ও সুহাসিনী আন্টিকে খুন করেছিল!”
তড়াক করে রাতুল মাথা তুলে তাকালো ছোট্টো হৃদির দিকে। নিষ্ক্রিয় দৃষ্টি তার। মেয়েকে চিনতে খুব বেশি একটা বেগ পেতে হলোনা তার। তীব্র অপরাধবোধ কাজ করতে লাগল তার। ভেতর থেকে রুদ্ধশ্বাস বের হতে লাগল। লজ্জায় মাথা ঝুকে এলো। চোখে জল নেমে এলো। জায়গা থেকে প্রস্থান নিলো সে! যেতে যেতে থমথমে গলায় রূপলকে উদ্দেশ্য করে বলল,
“আর কখনও তোরা আমাকে দেখতে আসবিনা রূপল। ভেবে নিবি এই নিকৃষ্ট মানুষটি মরে গেছে! আমি চাইবনা তোদের ঐ মিষ্টি মেয়েটা কখনও আমার সম্পর্কে কিছু জানুক! তোরা সবসময় তাকে আগলে রাখবি। কখনও তার কোনো অযত্ন, অবহেলা করবিনা। আমরণ তাকে যত্নে,আদরে ভালোবাসায় মুড়িয়ে রাখবি। আশা করি তুই আমার এ-ই শেষ আবদারটি রাখবি।”
আবেগঘন গলায় রূপল পেছন থেকে রাতুলকে ডাকল। বলল,
“ভাইয়া প্লিজ শোনো। আমরা তোমার সাথে কথা বলতে এসেছি। খাবার নিয়ে এসেছি তোমার জন্য। মা-বাবা তোমার জন্য খাবার পাঠিয়েছেন।”
“কিছু লাগবেনা আমার। সব নিয়ে যা তোরা। মা-বাবাকে আমার সালাম দিস। আর হ্যাঁ, মেয়েটাকে আগলে রাখিস। বাবা-মায়ের কমতি অনুভব হতে দিবিনা তাকে।”
হতাশ হলো রূপল। বাধ্য হলো নীহারিকা ও হৃদিকে নিয়ে জেলহাজুত থেকে প্রস্থান নিতে। আট বছরের হৃদিকে কোলে তুলে নিলো রূপল। হাঁটতে হাঁটতে তারা রাস্তায় ওঠে এলো। হৃদি হঠাৎ জিজ্ঞাসু গলায় রূপলকে বলল,
“বাবা বাবা। ঐ লোকটি কী আমার কিছু হয়? তাকে দেখার পর থেকেই আমার কেমন যেন কষ্ট হচ্ছে! তাকে একবার ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছে হচ্ছে!”
নিরুত্তর রূপল। চোখে জল নিয়ে সে মাথাটা অন্যপাশে ঘুরিয়ে নিলো। এই প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই তার কাছে। পরিস্থিতির কাছে নিরুপায় সে। জোরপূর্বক হাসল নীহারিকা। হৃদির মাথায় হাত বুলিয়ে ধীর সুরে বলল,
“হ্যাঁ মা। লোকটি তো তোমার বড়ো বাবা হয়! তোমার রূপল বাবার বড়ো ভাই তো তিনি। তাইতো তার জন্য তোমার এত কষ্ট হচ্ছে।”
“কিন্তু আমার কষ্ট হচ্ছে কেন বলো তো মা? লোকটা তো খুনি! আমার কাছের মানুষদের খুন করেছে সে। তার জন্য কষ্ট পাওয়ার কী আছে?”
হৃদির কথায় নীহারিকা প্রথমে থতমত খেয়ে গেলেও পরক্ষণে নিজেকে সামলে নিলো। এই পরিস্থিতিতে ঘাবড়ে গেলে চলবেনা তার। যে করেই হোক হৃদির কৌতূহলকে অবসান করতে হবে। মনে সন্দেহ ঢুকানো যাবেনা। দীর্ঘশ্বাস ফেলে নীহারিকা বলল,
“দেখো হৃদি মা। তুমি তো খুব নরম মনের মানুষ তাই সব মানুষদের জন্য তোমার কষ্ট হয়! এসব কোনো ব্যাপার না বুঝেছ? এই বিষয়টা তুমি বরং মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে দাও। আর এখন থেকে বিশ্বাস করো, তোমার রূপল বাবা ও আমিই হলাম তোমার আসল বাবা-মা! পৃথিবীর সব সত্যির মধ্যে এটিও একটি চিরন্তন সত্যি। যা তোমাকে মানতে হবে। কখনও জানতে চাইবেনা তোমার আসল বাবা-মা কে! কারণ, এর উত্তরে তুমি আমাদেরকেই মা-বাবা হিসেবে পাবে!”
স্তব্ধ হৃদি। গম্ভীর হাসল সে। চাপা কষ্ট নিয়ে বিড়বিড় করে বলল,
“আমি জানি নীহা মা। তোমরাও আমার আসল বাবা-মা নও! তবে আমি এতটুকু জানি তোমরা কখনও আমাকে দূরে সরিয়ে দিবেনা। কখনও আমাকে অযত্ন, অবহেলা করবেনা। কারণ, তোমরা আমাকে অনেক অনেক অনেক ভালোবাসো। আর আমিও তোমাদের অনেক ভালোবাসি বাবা-মা! আমি তোমাদের নিয়ে অনেক হ্যাপি জানো? তাই তোমাদের কাছে কখনও কোনো প্রশ্ন তুলবনা আমি! জানতে চাইবনা আমার আসল বাবা-মা কে। তোমরা পাশে থাকলে আমার আর কোনো পরিচয় লাগবেনা।”
রিসিপশনের সমস্ত কাজকর্ম ফেলে রেখে রূপল ও নীহারিকা তাদের মেয়ে হৃদিকে নিয়ে ঘুরতে বের হয়ে গেল! হৃদির মন খারাপ বেশ বুঝতে পেরেছিল তারা। তাই হৃদির মন ভালো করার জন্য ছোট্টো এই প্রচেষ্টা। দুপুর থেকে রাত অবধি অনেক ঘুরল তারা। অবশেষে হৃদির মন ভালো হলো। রূপল ও নীহারিকাও স্বস্তি পেল।
পরদিন রিসিপশন বেশ ভালোভাবেই কাটল। নীল রঙের লেহেঙ্গাতে প্রতিবারের মত এবারও রূপলের মন দিল ঘায়েল করে নিলো নীহারিকা! প্রতিবেশী ও আত্নীয়স্বজনরা সবাই রূপল ও নীহারিকার জুটি নিয়ে বেশ আশ্চর্য! কিছুতেই তারা দুজনের মধ্যে তারতম্য খুঁজে পায়না। কোথায় রূপল আর কোথায় নীহারিকা! দুজনের গাঁয়ের রঙের মধ্যে আকাশ পাতাল তফাৎ। অথচ, কী সুন্দর তারা দুজন দুজনকে ভালোবেসে বিয়ে করল। এ যেন তাদের কাছে নজির হয়ে রইল। বিশেষ করে লামিয়া হিংসায় জ্বলে পুড়ে ছাঁই হয়ে যাচ্ছিল! বিয়েতে আমন্ত্রিত না থাকলেও পাড়া প্রতিবেশীদের কাছ থেকে সে ঠিকই রূপল ও নীহারিকার খবরাখবর নিচ্ছিল। যদিও এখন আর কোনো খোঁজ খবর নিয়ে লাভ নেই। তার হাতে এখন আর কিছুই নেই। চাইলেও সে আর রূপল ও নীহারিকার ক্ষতি করতে পারবেনা। পবিত্র বন্ধনে বাঁধা পরেছে তারা। কোনো অশুভ ব্যক্তি তাদের কোনো ক্ষতি করতে পারবেনা। তাদের অফুরন্ত ভালোবাসায় চির ধরাতে পারবেনা।
অনুষ্ঠান শেষে নীহারিকার পরিবার সবার থেকে বিদায় নিয়ে রূপল, নীহারিকা ও হৃদিকে নিয়ে তাদের বাড়িতে চলে এলো। সবার মধ্যেই বেশ উৎসাহ, উদ্দীপনা ও খুশি কাজ করছে। রূপল ও নীহারিকার বিয়ে নিয়ে সবার মধ্যেই বেশ মাতামাতি। হিংসা, বিদ্বেষ ও অহংকার ভুলে পিয়াসা ও এখন নীহারিকার ভালো ভাবি হয়ে উঠল! নীহারিকার বেশ যত্ন আত্তি করতে লাগল। নিহালের সাথে বেশ ভালো মানিয়ে নিলো। পিয়াসার এই পরিবর্তনে নিহাল বেশ খুশি। পিয়াসাকে মন থেকে মেনে নিতে আর কোনো দ্বিধা নেই তার।
রাতের খাবার খেয়ে রূপল ও নীহারিকা তাদের বেডরুমে এলো। হৃদিকে খাইয়ে দাইয়ে পাশের রুমে ঘুম পাড়িয়ে এলো নীহারিকা। রূপল তখন বেলকনিতে দাড়িয়ে। কপালে দুঃশ্চিন্তার ভাজ তার। অকাতরে সিগারেট ফুকছে সে! ড্রিম লাইট জ্বলছে রুমে। বেলকনির গ্রীল ভেদ করে চাঁদের আলো হাঁটু গলিয়ে প্রবেশ করছে বেলকনিতে। চাঁদের আলো ঠিকরে পরছে রূপলের ফর্সা মুখশ্রীতে। নয়ন জোড়া মুগ্ধতা নিয়ে নীহারিকা ধীর পায়ে হেঁটে রূপলের পাশে দাড়ালো। গ্রীলে আনমনে মাথা ঠেকিয়ে আলতো হেসে চিন্তিত রূপলের দিকে তাকালো। প্রশ্ন ছুড়ল,
“কী নিয়ে চিন্তিত আমার বদরাগী বরটা হুম?”
নীহারিকার উপস্থিতি টের পেয়ে রূপল ঝট করে হাত থেকে সিগারেটটি ফেলে দিলো। মুখ থেকে সিগারেটের দূষিত হাওয়া বের করে পাশ ফিরে নিস্তব্ধ নীহারিকার দিকে তাকালো। হকচকানো দৃষ্টি তার। বেলকনিতে নীহারিকার হঠাৎ উপস্থিতি কাম্য ছিলনা তার। নতুবা সিগারেটটি জ্বালাত না সে। রূপলের ঘাবড়ানো অবস্থা বুঝে নীহারিকা ফিচেল হাসল। আগের অবস্থাতে দাড়িয়েই রূপলের বুকের বাঁ পাশে হাত রাখল। নরম সুরে বলল,
“বি কুল রূপল। নেক্সট টাইম বাড়িতে এসব ছাইপাঁশ গিলবেন না ওকে?”
স্বস্তির শ্বাস ফেলল রূপল। ঠোঁটের কোণে আলতো হাসি ফুটিয়ে তুলল। নীহারিকাকে অনুকরণ করল সে। বুকের উপর দু-হাত গুজে গ্রীলে মাথা ঠেকিয়ে নির্লিপ্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল নীহারিকার দিকে। বাইরে চাঁদের আলো মাখোমাখো। সেই মায়াবি চাঁদের আলোয় নীহারিকাকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে বেশ ভালো লাগছে তার। নীহারিকার ঘন পাপড়িতে ঢাকা কাজল কালো চোখ ও ঠোঁটের মুচকি হাসি বেশ টানে তাকে। এই দুই জিনিসের মায়ায় পড়েই তো সে নীহারিকার ভালোবাসার আগুনে জ্বলে পুড়ে ছাঁই হয়েছে! পরিশেষে এই মায়াবতীকে সে তার অর্ধাঙ্গিনী হিসেবে পেয়েছে। মৌনতা ভাঙল রূপল। নীহারিকার ঠোঁটে হাত রেখে বলল,
“তুমি আকাশের চাঁদ হলেও পারতে নীহু। দূর থেকে তোমাকে দেখতাম। কাছে এসে তো আমার ভয় বাড়িয়ে দিচ্ছ। পেয়ে না হারিয়ে বসি সেই ভয়!”
“আগলে রাখতে জানলে মানুষ হারিয়ে যায়না রূপল। চাঁদের সাথে তুলনা আমার সাজে না! বরং আমি মনে করি আমার জীবনে আপনি আস্ত এক চাঁদ! সবসময় মেয়েদেরই কেন চাঁদের সাথে তুলনা করা হবে বলুন? অতিরঞ্জিত ও সুন্দর কিছু বলতেই তো আমরা তাকে চাঁদের সাথে তুলনা করি। সুন্দর তো পুরুষ মানুষও হয় তাইনা? আপনি চাঁদের আলো হয়ে আমার জীবনে এসেছেন রূপল। আমার নিকষ কালো অন্ধকার জীবনে আপনি এক ফালি চাঁদ। চাঁদের মতই সুন্দর আপনি। সেই চাঁদকে আমি আজীবন আগলে রাখব রূপল। আমার আকাশ থেকে কোথাও হারাতে দিবনা।”
মৃদু হেসে নীহারিকাকে জড়িয়ে ধরল রূপল। বুকের সাথে মিশিয়ে নিলো তাকে। রুদ্ধশ্বাস ফেলে বলল,
“আমিই বা কোথায় হারাতে দিব তোমায়? সবসময় আমার আত্মার সাথে আমার রুহের সাথে তোমাকে আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে রাখব। তুমি আমার অন্তরে বাস করা এক জীবন্ত প্রাণ নীহু। যাকে আমি প্রতিদিন, প্রতিটি মুহূর্তে আবিষ্কার করি। তবে আমার ভয় হৃদিকে নিয়ে! হৃদি যদি কখনও জানতে পারে যে তার বাবা একজন খুনি। তাহলে কী অবস্থা হবে বলো তো?”
“আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন তো। হৃদি কখনও এইসব বিষয়ে জানতে পারবেনা। আমরা কখনও তাকে এই সব বিষয়ে কিছু জানতেই দিবনা। আমরা তাকে এতটাই ভালোবাসব, এতটাই যত্নে আদরে আগলে রাখব যে, সে কখনও কিছু বুঝতেই পারবেনা। তাছাড়া আমিতো ভেবেই রেখেছি, আমরা কখনও বাচ্চা নিবনা! এতে যদি হৃদির অযত্ন হয় তো।”
অবাক হলো রূপল। বিস্ফোরিত গলায় শুধালো,
“আর ইউ ক্রেজি নীহু? তুমি যা বলছ ভেবেচিন্তে বলছ তো?”
“হ্যা বলছি! ভেবেচিন্তেই বলছি। হৃদির কোনো অযত্ন, অনাদর হোক আমি চাইনা।”
নীহারিকাকে বুক থেকে টেনে উঠালো রূপল। তেজস্ক্রিয় দৃষ্টি নিক্ষেপ করল একরোখা নীহারিকার দিকে। উত্তেজিত গলায় বলল,
“আমরা বাচ্চা নিলে হৃদির অযত্ন হবে কেন? তোমার কথার আগা গোঁড়া তো আমি কিছুই বুঝতে পারছিনা।”
“এতে না বুঝার কী আছে রূপল? আমাদের যখন বাচ্চা আসবে তখন স্বাভাবিকভাবে সবাই আমাদের বাচ্চা নিয়েই মেতে থাকবে। তখন যদি হৃদির উপর এর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়ে তো?”
“হৃদি যথেষ্ট বড়ো হয়েছে নীহু। অন্য সব বাচ্চাদের চেয়ে তার ভেতরে ম্যাচিউরিটি বেশি। আমরা বাচ্চা নিলে কেন তার উপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলো? বরং সে তার ভাই-বোনকে সাদরে গ্রহণ করবে। এতটুকু বিশ্বাস তার প্রতি আমার আছে।”
“আমি আপনার মুখ থেকে ঠিক এই কথাটিই শুনতে চেয়েছিলাম রূপল! আমি ভেবেছিলাম আপনিই হয়ত বাচ্চা নিতে বাঁধা দিবেন! আপনার মনের ভাব জানার জন্যই মূলত কথাগুলো বলা। আপনার জবাবে আমি বেশ খুশি হয়েছি রূপল। থ্যাংকস অ্যা লট।”
প্রফুল্ল হেসে রূপলকে জড়িয়ে ধরল নীহারিকা। রূপলও হেসে হেসে আলিঙ্গন করল নীহারিকাকে। হৃদিকে নিয়ে পুরোপুরি নিশ্চিন্ত তারা। এবার বিবাহিত জীবনকে নিশিন্তে উপভোগ করার পালা তাদের। উত্তেজিত হয়ে নীহারিকাকে কোলে তুলে নিলো রূপল৷ বিছানায় শুইয়ে দিলো নীহারিকাকে। প্রেমে সিক্ত হয়ে নীহারিকার বুকে মাথা রেখে নিবিষ্ট স্বরে বলল,
“ভালোবাসি নীহু। তোমাকে পেয়ে আমি ষোল আনায় পূর্ণ। আমাদের এই ভালোবাসা যুগ যুগ ধরে বেঁচে থাকুক। উপর ওয়ালার কাছে একটাই চাওয়া, তোমার মাঝেই যেন আমার জীবনের সমাপ্তি ঘটে।”
চোখের কোণে সুখের জল চিকচিক করে উঠল নীহারিকার। এত সুখ কী আদো তার প্রাপ্য ছিল? রূপল যে তাকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ হিসেবে তুলে ধরল। জীবনের সমস্ত বাঁধা বিপত্তি পার হয়ে তারা এক হলো। এ যেন বিধাতার দেওয়া স্বর্গ সুখ। নীহারিকাকে আপন করার নেশায় রূপল পাগল প্রায় হয়ে গেল। ভালোবাসা স্বার্থক হলো দুজনের। নতুন জীবনে ভীষণ সুখি তারা। তাদের এই সুখে কখনও কারো কোনো নজর না লাগুক।
#সমাপ্ত
[অবশেষে শেষ হলো গল্পটি। যারা ধৈর্য্য নিয়ে গল্পটি পড়েছেন এবং শেষ অবধি গল্পটির পাশে থেকেছেন তাদের অসংখ্য ধন্যবাদ। আমি চেষ্টা করেছি আমার মনের মত করে ইন্ডিং দেওয়ার। জানিনা পাঠকদের কেমন লেগেছে। তবে গল্পটি সম্পর্কে আপনাদের মতামত জানাবেন কমেন্ট বক্সে। আপনাদের অনুভূতি জানার অপেক্ষায় রইলাম। আর আমার আম্মু এখন মোটামুটি সুস্থ। গত দশ থেকে বারো দিন ধরে বিশ্রাম নেই আমার। হসপিটাল ও বাড়ি দৌড়োদৌড়ি করতে করতে হাঁপিয়ে গেছি আমি। সবাই আমার আম্মুর জন্য দোয়া করবেন। অতি দ্রুত যেন তিনি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠেন। সবাই ভালো থাকবেন। আল্লাহ্ হাফেজ।]