#বদ্ধ_হৃদয়ের_অনুভূতি
#পর্বঃ১৫
লিখাঃতাজরিয়ান খান তানভি
সকালের এক পশলা মিষ্টি রোদ এসে হানা দেয় আম্বের এর মুখে।চিকচিক করে উঠে তার ময়ূর এর মতো অক্ষিপল্লব।নিমিঝিমি চোখ নিয়ে উঠে বসে আম্বের।ভালো করে চোখ কঁচলে কিছুক্ষন ধম মেরে বসে থাকে।কাল রাতের কথা মনে পড়তেই একরাশ কষ্ট আর ঘৃণা এসে জমে তার চোখে মুখে।চোখ ফুলে আছে।মাহাদ ঘুমিয়ে যাওয়ার পর বাকি রাত শুধু কেঁদেছে আম্বের।সে ভাবতেও পারেনি মাহাদ তার সাথে এতো জঘন্য একটা কাজ করবে।
ভোরের দিকেই চোখ বুজে এসেছিলো আম্বের এর।চোখ জুড়ে এখনো জল ছলছল করছে।পাশ ফিরে দেখে মাহাদ নেই।নিজের দিকে তাকিয়ে গা ঘিন ঘিন করছে আম্বের এর।শাওয়ার নেওয়া প্রয়োজন।শাড়িটা একটু ভালো করে পেঁচিয়ে মাহাদ এর ঘর থেকে বেরিয়ে আসে।নিজের ঘরের সামনে এসে দেখে তাতে বড় একটা তালা ঝুলছে।বিপাকে পড়ে আম্বের।এমন অবস্থায় কোথাও যেতেও ইচ্ছে করছে না।আলতাফ কে কিচেন থেকে বের হতে দেখে সলজ্জ চোখে মৃদু গলায় জিঙ্গেস করতেই বললেন মাহাদ তালা লাগিয়েছে।সে গার্ডেনে আছে।আম্বের আর কিছু জিঙ্গেস করলো না।তার এখন নিজের প্রতিই ঘৃণা লাগছে।
গার্ডেনে এসে দেখে রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে মাহাদ।ধবধবে ফর্সা শরীরের যে অংশটুকু কাপড়ের বাইরে তা জ্বলজ্বল করছে।আম্বের দাঁড়াতেই মাহাদ ঘুরে দাঁড়ায়।ছোট্ট দম ফেলে ফিকে গলায় বললো—
“গুড মর্নিং মিস সুগন্ধি।”
মাহাদ এর চুল দিয়ে টুপটুপ পানি পড়ছে।চুলগুলো এলোথেলো হয়ে সামনে চোখ আর নাকের উপর এসে পড়েছে।চুলের ফাঁক দিয়েই তার বাদামি মনির গভীর চোখ দুটো আম্বের এর দিকে গাঢ় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
আম্বের শক্ত গলায় বললো—
“আদৌ কী এইটা আমার জন্য গুড মর্নিং!
মাহাদ ঝরা হাসে।স্মিত গলায় বললো—
“আপনার জন্য না হলেও আমার জন্য গুড।”
আম্বের তাচ্ছিল্যের সাথে বললো—
“তাতো হবেই।আপনি যা চেয়েছেন তা আপনি পেয়েছেন।”
“ভুল বললেন প্রজাপতি।আমি যা চাই তার পুরোটা আমি এখনো পাই নি এইটা তার অংশবিশেষ।আর যতদিন না আমি পুরোটা পাই আপনাকে আমার সাথেই থাকতে হবে।”
আম্বের এর রাগে নাক ফুঁলতে থাকে।বড় বড় নিঃশ্বাস ফেলে ক্রোধিত চোখে তাকিয়ে রইলো মাহাদ এর দিকে।এই লোকটার সাথে কথা বলতেও ঘৃণা লাগে।
মাহাদ স্বাভাবিক গলায় বললো—-
“আপনার জামা কাপড় আমার কাভার্ডে রাখা আছে আর চাবি আপনার বালিশের নিচে।আজ থেকে আপনি আমার সাথেই থাকবেন।যা হয়েছে এরপর আর আলাদা থাকার মানে হয় না।”
আম্বের কিছু বললো না।রাগে তার মস্তিষ্ক ফেঁটে যাচ্ছে।ইচ্ছে করছে এই অসভ্য লোকটাকে খুন করে ফেলে।
মাহাদ মৃদু ঝংকার তুলে আবার বললো—
“জানালার পাশে শোকেস এর উপরে একটা মোবাইল আছে।ওইটা আপনার জন্য।সাথে রাখবেন।আমি সব সময় মি.রহিম কে কল করতে পারবো না।কোনো সমস্যা হলে আপনি নিজে কল করবেন।যান ফ্রেশ হয়ে নিন।আপনাকে কলেজে যেতে হবে।”
আম্বের কোনো কথা বললো না।লম্বা লম্বা পা ফেলে স্বপ্নমহল এর ভেতরে চলে গেলো।মাহাদ এক দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো—-
“সরি প্রজাপতি।আপনাকে ভাঙার জন্য আর কোনো উপায় ছিলো না আমার কাছে।আপনার চোখের ওই আগুন আমার সাথে সাথে আপনাকেও পুড়িয়ে ফেলবে।কিন্তু আমি তা হতে দিতে পারি না।আমি যে তাকে কথা দিয়েছি।”
,
,
,
সবকিছু স্বাভাবিক ভাবে চলতে লাগলো।আম্বের এখন নিজের পড়ালেখায় ব্যস্ত।মাহাদ এর সাথে তার সম্পর্ক আরেকটু গভীর হয়েছে।যা হয়েছে এরপর আর তার কিছুই করার নেই।মাহাদ কী করতে পারে তার ধারনা আম্বের পেয়ে গেছে।কয়েকদিন আগে দেরি করে ফেরায় মাহাদ আবারো চটে যায় আম্বের এর উপর।মোবাইল নিতে চায় নি আম্বের কিন্তু জোর করে তাকে দেওয়া হয়েছে।
আজ আম্বের এর একটা ক্লাস কম হয়েছে।তাই ক্যান্টিনে বসে আছে সামান্তার সাথে। সামান্তার সাথে এ কয়েকদিনে বেশ ভাব হয়েছে আম্বের এর।সামনে একটা বার্গার নিয়ে বসে আছে আম্বের।সামান্তা দেখলো কেমন উন্মনা হয়ে চেয়ে আছে আম্বরে।গত কয়েকদিন ধরেই আম্বের তেমন কথা বলে না।সবসময় কিছু একটা ভাবে।জিঙ্গেস করলেও বলে না।বলবে কী করে তার সাথে যা হয়েছে বা হচ্ছে তা কাউকে বলার অপেক্ষা রাখে না।আম্বের এর ভাসা ভাসা চোখগুলো কেমন দেবে গেছে।চোখ মুখও ম্লান।ধীর গলায় সামান্তা প্রশ্ন করলো—
“এই কী হয়েছে তোর!কয়েকদিন ধরে কেমন পানসে নাশপাতি হয়ে যাচ্ছিস?
আম্বের এখনো নির্নিমেষ তাকিয়ে আছে ওদের কলেজে দেয়াল ঘেঁষে দাড়ানো সেই রাধাচূড়া গাছটার দিকে।যেনো একদম আকাশ ছুঁয়ে আছে।সবুজ পাতার ফাঁকে কমলা রঙের ফুল উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে।তার উপর দুটো কাক বারবার উড়ে উড়ে যাচ্ছে যেনো ঝগড়া করছে।সামান্তা হালকা ধাক্কা মারে আম্বের কে।সামান্তার ধাক্কায় হুশ ফিরে আম্বের এর।হতচকিত হয়ে বললো–
“কি কি!
“দুরো ছেড়ি।ওইভাবে তাকিয়ে আছিস ক্যান!
আম্বের কিছুক্ষন চুপ থেকে মলিন গলায় বললো—
“কিছু না রে।ভালো লাগছে না।”
“তোমার কিছু হয়েছে?
একটা মিষ্টি পুরুষ কন্ঠে তার দিকে অক্ষিযুগল ঘুরায় আম্বের।ওদের সাথে বসে আছে অভি।
অভিরাজ চৌধুরী।আম্বের এর সিনিয়র।সামান্তার বেস্ট ফ্রেন্ড সে হিসেবে আম্বের এরও ফ্রেন্ড।ওদের ডিপার্টমেন্ট এর টপ স্টুডেন্ট অভিরাজ।ছোট্ট করে সবাই অভি বলেই ডাকে।ফর্সা গোলগাল মুখে একটা গোল ফ্রেমের চশমা পড়ে।চশমা পরাতে আরো বেশিই কিউট লাগে অভি কে।তার বাবা এই এলাকার ওয়ার্ড কমিশনার।কিন্তু তাতে বিন্দুমাত্র অহমিকা নেই তার।বরং নিজের ব্যবহার আর যোগ্যতায় সে সবার প্রিয়পাত্র।
অভির দিকে তাকিয়ে দুর্বোধ্য হাসে আম্বের।ফিকে গলায় বললো—
“আরে না।তেমন কিছু না।এমনি।
তোমাদের একটা জিনিস দেখাই।”
আম্বের তার ব্যাগ থেকে মোবাইল বের করে দেখায়।খুশিতে গদগদ হয়ে তা একপ্রকার ছিঁনিয়ে নেয় সামান্তা।ঝুমঝুম করে বললো—
“মোবাইল !
ও মাই গড।এইটাতে লেটেস্ট মডেল।তোকে তারা কিনে দিলো!
আম্বের বেখেয়ালি গলায় বললো—
“তাকে আমি আমার জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান জিনিস দিয়েছি।এইটা তার কাছে কিছুই না।”
সামান্তা হতভম্বের মতো উৎসুক গলায় বললো—
“মানে!
আম্বের স্বাভাবিক হয়ে বললো—
“আরে তেমন কিছু না।আচ্ছা আমি আসি রে।লেট হলে আবার বকা শুনতে হবে।”
সামান্তা ঘড়ি দেখে।বুঝতে পারে ওদের ক্লাস আওয়ার শেষ।আম্বের ক্লাস আওয়ার এর পর আর এক মুহূর্তও দাঁড়ায় না।সামান্তা জানে আম্বের এর বাবা মা নেই।তাই সে তার এক মামার বাসায় থাকে।আর মাঝে মাঝে কোনো পিরিয়ড মিস হলে আম্বের সেই সময়টা সামান্তা আর অভির সাথে কাটায়।
আম্বের চলে গেছে প্রায় দশ মিনিট।অভি ধ্যানের মতো চেয়ে আছে।সামান্তা ওর পেটে গুঁতো মেরে ফিচেল গলায় বললো—
“কিরে বাসর ঘরের স্বপ্ন দেখছিস নাকি!
অভি বিরক্তিকর গলায় বললো–
“ছিঃ!
সামু।এইসব কী বলিস তুই!
“শালা চুপ।দুই বছর লাইন মারলাম চান্স দিলি না।আর আম্বের কে প্রথম দিন দেখেই কেল্লা ফতে।”
অভি দৃঢ় গলায় বললো–
“শব্দ চয়ন ঠিক কর তোর।এইসব কী শব্দ ব্যবহার করিস!
“আচ্ছা বাদ দে।আগে বল কবে বলবি ওকে তোর ভালোবাসার কথা।”
অভি ছোট্ট দম ফেলে।অসহায় গলায় বললো—
“আমার ভয় হয়।যদি ও আমাকে ফিরিয়ে দেয়।”
“ধ্যাত তোকে ফেরাবে কার সাধ্যি রে!ওর তো লাক যে তোর মতো ছেলে ওকে পছন্দ করে।”
“কেনো যেনো ওকে দেখলেই আমার পুরো পৃথিবী থমকে যায়।ওর সামনে কথাই বলতে পারি না।”
সামান্তা খলখলিয়ে হাসে।উপহাসের গলায় বললো—
“তুই এইসব নিয়েই বসে থাক।পরে পাখি ফুড়ুৎ।তখন গাছের নিচে বসে বাপ্পারাজ এর মতো গাইবি,
“আমার ভাগ্য বড় আজব জাদুকর……।”
একরাশ বিরক্তি ছেয়ে যায় অভিরাজ এর ফর্সা স্নিগ্ধ মুখে।সটান করে উঠে দাঁড়িয়ে সামান্তার হাত ধরে টেনে নিয়ে যায়।
কলেজ লাইব্রেরি যাওয়ার পথেই ওদের পথ রোধ করে দাঁড়ায় ইলহাম আর জাসিন।সাথে আছে অভির ছোট ভাই সরাজ।সরাজ কে ইলহাম আর জাসিন এর সাথে দেখেই রাগে অগ্নিশর্মা হয় অভি।তপ্ত গলায় বললো—
“তুই এখানে কেন!কলেজ ছুটি হয়েছে আধা ঘন্টা।তুই ওদের সাথে কী করিস?
সরাজ কাঁচুমাচু করে বললো—
“ভাই….।”
ধমকে উঠে অভি।সরাজ কে শাসিয়ে বললো—
“এখনই বাসায় যা।আর যেনো এদের সাথে না দেখি তোকে।”
সরাজ ভাইয়ের চোখে একবার তাকিয়ে পিছন দিকে হাঁটা দেয়।আর তা দেখেই ভুজ ভুজ করে হেসে উঠে ইলহাম আর জাসিন।
অগ্নি গলায় অভি বললো—
“তোদের কে বলেছি না সরাজ কে তোদের সাথে একদম নিবি না।কথা কানে যায় না তোদের?
ইলহাম বাঁকা হাসে।মৃদু গলায় বললো–
“মি.টপ আজ এতো ফায়ার হয়ে আছেন!শুনেছি নতুন গার্লফ্রেন্ড জুটিয়েছেন।তা ভাবী সাহেবাকে একবার দেখাবেন তো।হাজার হোক তার দেবরদেরও হক বলে কথা আছে।”
অভি ঝাঁঝিয়ে উঠে বললো—
“একদম বাজে কথা বলবি না।আর আম্বের এর আশেপাশে যেনো না দেখি তোদের।”
“ওপস!
ভাবির নাম বুঝি আম্বের।নাম টা তো একদম ইউনিক।দেখতেও নিশ্চয়ই ইউনিক ই হবে।হাজার হোক যেনো তেনো মেয়ে তো আর আমাদের মি.টপ কে ফাসাতে পারে না।”
অভি তেড়ে যেতে গেলেই তাকে আটকায় সামান্তা।গাঢ় গলায় ওদের বললো–
“কুকুরের লেজ কখনো সোজা হয় না।এরা নাকি করবে রাজনীতি!আগে তো মেয়েদের সম্মান করতে শেখো।চল অভি।”
অভি অরুনলোচন চোখে তাকিয়ে আছে।সামান্তা জোর করে তাকে নিয়ে যায়।ব্যঙ্গাত্নকভাবে হাসতে থাকে ইলহাম আর জাসিন।ইলহাম খেয়ালি গলায় জাসিন কে জিঙ্গেস করলো—
“তোর গার্লফ্রেন্ড ওই টপ এর সাথে কী করে রে?
জাসিন মৃদু হেসে আফসোসের গলায় বললো–
“ব্রেকআপ হয়ে গেছে।”
“কেন?
“আরে বলিস না।একমাস না যেতেই বলে কিনা তোকে ছেড়ে দিতে।দুরশালা,গার্লফ্রেন্ড গেলে গার্লফ্রেন্ড পাওয়া যাবে কিন্তু বন্ধু গেলে তোর মতো বন্ধু পাওয়া যাবে না।”
দুই বন্ধু হা হা করে হেসে উঠে।জাসিন শয়তানি গলায় বললো—
“হেব্বি তেজ মামা।অারে সেদিন কইলাম না ওয়াশরুমে সামনে দাঁড়াইয়া ছিলাম দেইখা একটা মেয়ে আমারে সেই ঝাঁড়ছে।এইটা তো সেই মেয়ে।”
“ও আচ্ছা।আইতো বলি আমাদের টপ কী করে ফাঁসলো।তাহলে তো একবার দেখতেই হয়।কী বলিস!
“জরুর জাঁহাপনা।”
দুই বন্ধু ক্রুরভাবে আবার হাসতে থাকে।ইলহাম এই এলাকার নব নির্বাচিত মেয়রের ছেলে।আর জাসিন এই কলেজের সভাপতির।বাবার ক্ষমতার জোরে আর কলেজে ছাত্র রাজনীতির উচ্চ পর্যায়ের সদস্য হিসেবে যা তা করে বেড়ায় কলেজে।কেউ কিছু তেমন বলে না।সম্পর্কে ইলহাম অভির মামাতো ভাই।কিন্তু দুই ভাইয়ের ব্যবহার এ আকাশ পাতাল ব্যবধান।
,
,
,
বাড়ির ভেতরে পা রাখতেই অভি ছুটে যায় তাদের বাড়ির ওয়াচম্যান এর কাছে।কয়েকদিন ধরে ভীষন অসুস্থ হওয়ার পরও ডিউটি করে যাচ্ছে।অভি ভালো করে আজ শাসিয়ে দিয়েছে যেনো সুস্থ হওয়ার আগ পর্যন্ত তাকে আর না দেখে।
বাড়ি ভেতরের ঘরে ঢুকতেই দেখে তার বাবা আশরাফ চৌধুরী কথা বলছেন কিছু মানুষের সাথে।অভি গিয়ে তাদের সালাম জানায়।অভি কে সবাই পছন্দ করে।ওর ব্যবহার,বাচনভঙ্গি,চলাফেরা সবকিছুই মনোমুদ্ধকর।
কথা শেষ হলে আগত মানুষগুলো চলে যায়।অভি তার বাবার কোলে মাথা রাখে।আশরাফ ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে পরম আবেশে বললেন—
“এতো দেরি হলো কেন অভিরাজ?
বাবার কথায় প্রসন্ন হেসে অভি বললো—
“সামান্তাকে বাসায় পৌছে দিয়ে তারপর আসি।জানোই তো।”
“যাও এখন ফ্রেশ হয়ে খেয়ে নাও।তোমার মা সে কখন থেকে বসে আছে।”
অভি তৃপ্ত গলায় বললো–
“যাচ্ছি।সরাজ ফিরেছে?
“হুম।”
অভি স্বাভাবিক গলায় বললো—
“আমাদের হসপিটাল টা কবে হবে বাবা?
আশরাফ মৃদু গলায় বললেন–
“আরো কয়েকমাস সময় লাগবে।”
“আচ্ছা।এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কাকে আনবে মনে আছে তো?
আশরাফ ছেলের কথায় প্রশ্রয়ের হাসি হাসলেন।বললেন–
“আছে,আছে।মাহাদ আবইয়াজ কে।”
অভি হালকা মাথা ঝাঁকালো।
আশরাফ হাসি হাসি গলায় বললেন—
“ছেলে আমার ডাইহার্ট ফ্যান ফিল্মস্টার এর আর হবেন তিনি ক্রিকেটার।অদ্ভুত !
অভি গম্ভীর গলায় বললো—
“আমি তার ফ্যান বাবা।সে আমার আদর্শ।কিন্তু ক্রিকেট মাই প্যাশন।ভালোলাগা আর ভালোবাসা এক নয়।ইউ নো দ্যাট।”
“ওকে ওকে মাই বয়।এখন যাও নাহলে মা রাগ করবে।”
নিজের ঘরে গিয়ে কাঁধ থেকে ব্যাগ ছুঁড়ে ফেলে বিছানায় অভি।লম্বা লম্বি হয়ে বিছানায় শুয়ে পড়ে।চোখ দুটো বন্ধ করতেই আম্বের এর সেই দীঘল কালো রেশমি চুল ভেসে উঠে অভির মনোস্পটে।প্রথম দিন অভির ব্যাগের চেইন এর সাথে আম্বের এর লম্বা চুলের বেনুনি আটকে যায়।আর সেই দিনই আম্বের এর ওই এক চাহনিতেই ঘায়েল হয় অভি।
অভির মায়েরও বেশ লম্বা চুল ছিলো।সে ছবিতে দেখেছে।অভির জন্মের কিছুদিন পর তার মা মারা যায়।তার বাবা অভির লালন পালনের জন্য অভির খালা কে বিয়ে করে।সরাজ সেই ঘরেরই সন্তান।কিন্তু অভির খালা দুই সন্তানকেই নিজের সন্তানের মতোই লালন পালন করেছেন।
অভি কল্পনায় বিভোর হয়ে যায়।অস্ফুটভাবে আওড়াতে থাকে,,
“ঘন পল্লবে ভরা তোমার ওই অক্ষিযুগল আমার হৃদয়হারিণী,যার প্রতিটি পলকে আমার হৃদ কম্পন থেমে যায় প্রাণসঞ্চারিণী।
গোলাপের মতো তোমার ওই নরম ঠোঁটের আর্দ্রতায় ভুবন ভুলি আমি, যার স্পর্শ কুঁড়ে খায় আমার তৃষ্ণার্ত হৃদয়ের ভূমি।
কেশবতী প্রাণহারিণী একবার এসে ধরা দাও
আমার হৃদগহীনে।”
চলবে,,,
(বিঃদ্রঃ
অভিরাজ কে কেমন লাগলো😒😒😒)