🌺#বসন্তের_ফুল🌺
#তারিন_জান্নাত
#পার্ট০৪
প্রেমা আশেপাশে তাকিয়ে কাউকে দেখতে পায়নি। আবার হঠাৎ চোখ যায় দরজার দিকে তখনি দেখে তখনকার ছেলেটিকে মানে অভ্রকে। সাথে একটা ছোট ছেলে কাঁধে ব্যাগ। ছেলেটির হাত ধরে ভেতরে নিয়ে আসছে। প্রেমা ভাবছে অভ্রকে তো উপরে যেতে দেখেছিলো কিন্তু বাইরে গেলো কখন??
গিয়েছে হয়তো খেয়াল করেনি। প্রেমা আরো দেখে যে দুজনের চেহারা বেশ মিল। অভ্রের দিকে এবার ভালোভাবে তাকায় প্রেমা।….ফর্সা গাল, সিল্কি চুল,চোখ দুটো বেশ আকর্ষনীয় অভ্রের। পরনে সাদা একটা টি-শার্ট, আর ব্লু-জিন্স,এবং বেশ লম্বা আরিয়ান স্যারের চেয়েও লম্বা অভ্র।
–( ইস ছেলে না হয়ে যদি মেয়ে হতো। আমি তো নির্ঘাত ওকে তুলে এনে বিয়ে করতাম। কিন্তু তার কোনো উপায় নেই,,ও তো ছেলে অবশ্যই আমাকেও ছেলে হওয়া লাগতো…মনেমনে”)”(প্রেমা)
এসব ভাবছিলো তখনি অভ্রের কথায় প্রেমার ঘোর কাটে। এবারতো নিজেই নিজের কাছে লজ্জায় পড়ে যায় প্রেমা,কী ভাবছিলো এতোক্ষন অভ্রকে নিয়ে।
–“মা তোমার ছেলে আজকেও কোচিং এ গিয়ে ঝগড়া বাঁধািয়েছে… প্রতিদিন এভাবে ওর ঝগড়া থামাতে আমি যেতে পারবো না।”(অভ্র)
কথাটা বলেই অভ্র প্রেমার দিকে একপলক তাকিয়ে ধপাধপ পা চালিয়ে উপরে চলে যায়।পেঁছন থেকে ওর মা ডাকলেও থামেনি।প্রেমাও বুঝতে পারে তাঁরা দুজনেই ভাই।
–(“যে ত্যাজ বাবারে বাবা!!)”(প্রেমা)
প্রেমা বেশ বিরক্তিবোধ করছিলো বসে।কারন সবাই গুরুজন এখানে। ওর কথা বলার মতো তেমন কিছু নেই ফোন দেখা ছাড়া। তাই সেটাই করছে এখন…
তখনি অভ্রের ভাই এসে প্রেমার পাশে বসে ফোনটা কেড়ে নেই। প্রেমা মাথা তুলে তাকাতেই দেখে পিচ্চিটা!!
কিছু না বলে তাকিয়ে আছে।
–“আমি অাদ্র।আপনি?”(অভ্রের ভাই)
প্রেমা কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকে ছেলেটির দিকে। তারপর বলে..
–“আমি প্রেমা।কোন ক্লাসে তুমি পিচ্চু??”
–“এক্সকিউজ মি।আম নট পিচ্চি।আই আম আদ্র আহমেদ! সো কলড্ মি আদ্র!!
এবার প্রেমা থমথম খেয়ে যায়।আসলেইতো?? ওতো পিচ্চি নই,,কতো সুন্দর করে ইংলিশ বলল।
–“তুমি তো খুব ভালো ইংলিশ বলতে পারো!! কে শিখিয়েছে…?”(প্রেমা)
–“একটু আগে এখান থেকে একটা খাট্টুশকে উপরে যেতে দেখেছিলেন!!”(আদ্র)
ভাবনায় পরে যায় প্রেমা! খাট্টুশ কে হতে পারে ভেবে। বুঝতে পেরেই চোখ বড় বড় করে প্রেমা আদ্রের দিকে দৃষ্টি ছুঁড়লো।
–” তোমার ভাইয়া?”(প্রেমা)
–“ইয়েস! ওই খাট্টুশটাই আমার ভাই। ওই আমাকে ইংলিশ শিখিয়েছে। আর আমি ক্লাস ফাইভে পড়ি।”(আদ্র)
–” আচ্ছা খুব ভালো, তো আজকে কার সাথে ঝগড়া বাঁধিয়ে এসেছো?? (প্রেমা)
এবার আদ্র সবার দিকে তাকাল। এরপর প্রেমার দিকে তাকাল।তারপর বলে…
–“এখানে না আমার সাথে চলেন তারপর বলবো!”
প্রেমা তো একপায়ে রাজি হয়ে যায়। এতক্ষন একটা সুযোগ খুঁজছিলো এখান থেকে যাওয়ার।
আদ্র প্রেমার হাত ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে আর প্রেমাও চুপচাপ যাচ্ছে। একটা রুমের পাশে মাঝারি সাইজের গলি দিয়ে বের হয় তারা। যেতেই প্রেমা অবাক হয়ে যায়, খুব সুন্দর একটা সুইমিংপুল….
চারপাশে লাইটিং সুইমিংপুলের ডানপাশেই খুব সুন্দর একটি বাগান। প্রেমা তো হা করে তাঁকিয়ে থাকে
আদ্র প্রেমাকে টেনে সুইমিংপুলের পাশে বসিয়ে দেয়।তারপর নিজেও বসে পরো।
–” হ্যাঁ তো আমরা কোথায় ছিলাম??”(আদ্র)
–“কোথায় ছিলাম?”(প্রেমা)
–” মনে পরেছে..ওয়েট বলছি…আমি কারো সাথে ঝগড়া বাঁধাইনি,,আমার গার্লফ্রেন্ড সাইরার পাশে ওই পাগল ইয়াস বসেছিলো,,আমি তো ফুল্লি জেলাস তাই ইয়াসকে একটা তাপ্পর মারলাম। আর ওই আমাকে মারতে গেলে সাইরা মাঝখানে চলে আসে। আমি আরেকটা তাপ্পর দিতে যাবো তার আগেই আমার ওই খাট্টুশ ভাই এসে আমাকে,সাইরাকো,ইয়াসকে তিনজনকেই তাপ্পর লাগিয়ে দিয়েছে।
প্রেমা এবার বেহুস হওয়ার পালা। ছেলে বলে কী? গার্লফ্রেন্ড? তাও এই বয়সে? যেখানে খেলাধুলার বয়স সেখানেই গার্লফ্রেন্ড।
–“একটা কথা জিজ্ঞেস করি সত্যি বলবেন তো??” (আদ্র)
–“হ্যাঁ,,বলো??”
–আচ্ছা আমি বেশি হ্যান্ডসাম নাকি আমার ওই খাট্টুশ ভাইয়াটা হ্যান্ডসাম? সত্যি বলবেন কিন্তু??(বাঁকা চোখে প্রেমার দিকে তাকিয়ে)”
আর নিজেকে সামলাতে না পেরে ধমফাটানো একটা হাসি দেয় প্রেমা,,কিছুক্ষন পর হাসি থামিয়ে বলে…
–“আচ্ছা সত্যি বলবো নাকি মিথ্যে”??”(প্রেমা)
–“অবশ্যই সত্যি বলবেন।আমি মিথ্যা পছন্দ করি না”
–” আসলে কী ভাবে বলি তোমার চেয়ে তোমার ভাইয়া বেশি হ্যান্ডসাম,, অনেক কিউট!!”(প্রেমা)
প্রেমা মনে করেছিলো প্রেমার কথায় আদ্র রাগ করবে,কিন্তু তার ভাবনায় পানি ঢেলে দেয় আদ্র…
–” হ্যাঁ বেশি হ্যান্ডসাম বলেই কোনো গার্লফ্রেন্ড নেই ওই খাট্টুশটার…”
–“আদ্র”….(ধমকের স্বরে আদ্রকে ডাক দেয় অভ্র)
অভ্রের কথা শুনে প্রেমা ও আদ্র পেঁছনে তাঁকাল দেখে অভ্র হাতে কলম নিয়ে দাড়িয়ে আছে আদ্রের দিকে তাঁকিয়ে।
–” তোর না কাল ক্লাস টেস্ট আছে??” তোর মিস কখন থেকে বসে তোর জন্য অপেক্ষা করছে তাড়াতাড়ি আয়..(অভ্র)”
অভ্রের কথায় আদ্র চুপচাপ উঠে চলে যায়,, অভ্র চলে যতে চাইলে প্রেমা দেয়।
–“শুনেন??”(প্রেমা)
প্রেমার দিকে ফিরতেই প্রেমা দাঁড়িয়ে অভ্রের সামনে গিয়ে দাঁড়াল,বেশ লম্বা অভ্র তাই প্রেমার নিজের হাইট টাও মেপে নিচ্ছিলো দাঁড়িয়ে…
–“আপনাদের এখানে এক্সট্রা কোনো বই পাওয়া যাবে পড়ার জন্য,বা আপনার কাছে আছে গল্পের বই??
–“স্টাডি রুমে সবধরনের বই আছে, আমার সাথে আসুন।’
বলেই হাঁটা দেয় অভ্র।প্রেমাও হাঁটতে লাগলো অভ্রের পেঁছন পেঁছন বুঝতে পেরেছে অভ্রের সাথে এমনি বহ্যিক কথা বলা যাবে না প্রয়োজনীয় বাদে,,তাই তো বইয়ের কথাটা আগে বলল।
🌺(চলবে)🌺
Tarin Jannat