বান্ধবীর ভাই যখন বর 💗পর্ব-২৯

0
2738

💗 বান্ধবীর ভাই যখন বর 💗
Extra part – 29
________________________________
মুখে পানির ঝাপটা পড়তেই পরির জ্ঞান ফিরে এলো।
চোখ তুলে তাকিয়েই নীল কে খুঁজতে লাগলো পরি।
নীল পরির মাথার কাছে বসে আছে কিন্তু পরি পাগলের মতো আশে পাশে খুঁজছে ।
পরি কে ডেসপারেট হয়ে যেতে দেখে নীল এক হাতে পরি কে পেছন থেকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।
কিন্তু পরি শান্ত হচ্ছে না,,, পরি নীল কে খুঁজে চলছে।
নীল অবস্থা খারাপ দেখে পরির মুখ এক হাতে চেপে ধরে ধমকের সুরে বলল
– পরি ক্ল্যাম ডাউন।
এমন করছো কেন ?
আমার দিকে তাকাও

নীলের কন্ঠে পরি পেছন ঘুরে তাকালো।
নীল কে দেখে পরির চোখ দিয়ে অনড়গল পানি ঝরতে লাগলো।
কতোটা প্রশান্তি হচ্ছে মনে তা বলে বোঝানো সম্ভব নয়।
পরি কাঁদো কাঁদো কন্ঠে উচ্চারণ করলো
– নীল।

নীল মুচকি হেসে বুঝালো হুমম আমি ই তোমার নীল।

পরি নীলের হাতের দিকে তাকিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লো।
নীলের ডান হাতে বড় ব্যান্ডেজ করা।
পরি নীলের হাত ধরে হিচকি টেনে কাঁদতে লাগলো।
নীল পরির দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে যাচ্ছে।
নীল জানতো এমন ই কিছু হবে কিন্তু পরি এতো টা ডেসপারেট হবে তা বুঝে নি।
তাহলে এভাবে বাসায় আসতো নাহহ।

পরি কে শান্ত করার চেষ্টা করছে কিন্তু নীলের কথা পরি মানতে নারাজ।
পরি বার বার এক বুলি আওড়াচ্ছে কিভাবে হলো ,,, কতোটা ব্যাথা পেয়েছে , খুব কষ্ট হচ্ছে নাকি।
এবার আর নীল নিজের হাসি থামাতে পারলো না।
নীল ফিক করে হেসে দিলো,,,, পরি কি করছে পরির কোনো ধারনা ই নেই।
আশে পাশে সবাই আছে পরি যেন তাহ ভুলেই গেছে।
পরি নীলের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে নীলের হাসি কে পাত্তা দিলো না।
পরি আবার ব্যস্ত হয়ে পড়লো।
পরির এমন কান্ডে সবাই মিটিমিটি হাসছে।
কতোটা ভালোবাসলে এমন পাগল হওয়া যায় তা বলা মুশকিল।

হানিফ আহমেদ নীল কে চোখ দিয়ে ইশারা করলেন পরি কে ঘরে নিয়ে যেতে।
নীল মাথা ঝাকিয়ে পরির দিকে এক পলক চেয়ে নিলো।
এতো ভালোবাসে মেয়েটা ?
ইসসস এই মেয়েটা যদি তার হাতে হাত রেখে সারাজীবন থাকে তাহলে তো নীল পরি কে পৃথিবীর সমস্ত সুখ এনে দিবে।
মেয়েটাকে নীল ও যে খুব ভালোবাসে।
নীল মলিন হেসে বলল
– পরি রুমে চলো তারপর তোমার সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিবো।
পরি এক মুহূর্ত দেরি না করে উঠে দাঁড়ালো।
নীলের ডান হাতে ব্যান্ডেজ তাই বা হাত দিয়ে পরি কে আকড়ে ধরলো।
তারপর পরি কে নিয়ে নিজের রুমে চলে গেল ।
রুমে আসতেই পরি নীলের যত্ন শুরু করে দিয়েছে।
পরি বলেছে আগে আপনি ফ্রেস হন তারপর সমস্ত টা শুনবো।

নীলের ফ্রেস হতে বেশ অসুবিধা হচ্ছিলো।
মানুষের ডান হাত অতি ব গুরুত্বপূর্ণ।

পরি নীল কে ধরে ওয়াসরুমে নিয়ে গেল।
তারপর হাত মুখ ধুইয়ে ভালো করে ফ্রেস করিয়ে দিলো।
নীল কে বেডে আধসোয়া করে ডান হাত টা বালিশের উপর রাখলো।
নীল পরির কান্ডে মুচকি মুচকি হাসছে।
পরির কাজ শেষ হলে নীল বলল
– এবার তো একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলো।

পরি কোন ভনিতা না করে বলল
– আমি আপনার জন্য সুপ আনতে যাচ্ছি।

এইটুকু বলেই পরি রুম থেকে চলে গেল।
নীল কে বিন্দুমাত্র কিছু বলের সুযোগ ও দিলো না।।নীল পরির যাওয়ার দিকে অবাক দৃষ্টি নিক্ষেপ করে তাকিয়ে আছে ।
এই মেয়েটার মাঝে মুগ্ধ হতে হতে নীল পাগল হয়ে গেছে।
পাগল এর পর আর কি কোনো উপাধি আছে ?
নীল কি তবে পাগলের থেকে ও পাগল হয়ে যাচ্ছে।
কিছুক্ষণ পর পরি সুপ হাতে রুমে ঢুকলো।
পরি রুমে এসেই বলল
– ওহুমম কোনো কথাই বলবেন না।
আগে সুপ টা শেষ করতে হবে।

পরি এক চামচ সুপ তুলে নিলো।হালকা করে ফু দিয়ে নীলের মুখের দিকে বাড়িয়ে দিলো।
নীল নিজেকে বাচ্চা বাচ্চা ভাবছে।
ছোট সময়ে আম্মু যেমন করে এটা সেটা বলে খাইয়ে দিতো।
ঠিক তেমন ভাবেই পরি নীল কে খাওয়াতে লাগলো।
নীল মুচকি হেসে আয়েসে খাবার খেয়ে নিলো।

খাবার শেষ হতেই পরি সিনেমার মতো করে ওড়না দিয়ে নীলের মুখ মুছিয়ে দিলো।
পরির এমন কান্ডে হতবাক নীল।
আসলে কেউ মানুক আর না মানুক পরি আর নীলের জীবনটা খানিকটা ছায়াছবি ই হয়ে গেছে।
নীল কে হাসতে দেখে পরির বেশ অভিমান হলো ,,, পরি অভিমানি কন্ঠে বলল
– দেখুন অপনি কিন্তু বেশি করছেন।
আমি এখন,,, এই কথা টুকু বলতেই নীল আহহ করে উঠলো।পরি হুড়মুড়িয়ে নীলের হাত ধরলো ।
সেই সময়ের মতো পাগলামি শুর করেছে।
নীল পরির কানের কাছে মুখ নিয়ে বলল
– বউ এতো ভালোবাসো কেন আমায়?

পরি প্রতিউত্তরে মুচকি হাসলো ।
নীল পরির এক হাত ধরে বলল
– আমি মরে গেলে খুব কি কষ্ট পাবে তুমি ?
নীলের মুখে মরার কথা শুনতেই পরির চোখ দিয়ে বর্ষন নেমে এলো।

পরির চোখের পানি নীলের বুকে তীরের মতো বিধলো।
পরি কে এভাবে কাঁদতে দেখে নীলের ইচ্ছে করছে নিজের গালে নিজেই দুটো চর বসিয়ে দিতে।
মরার কথা টা না বললে কি হতো না?

নীল পরি কে এক হাতে জড়িয়ে ধরে বলল
– এই বোকা মেয়ে ।
এভাবে কাঁদছো কেন ?
আমে কোথাও যাবো না।
তোমাকে ছাড়া আমি কি ভালো থাকবো ?
উহহুমভভ মোটে ও না।
কাঁদে না পরি ,,,,,,

পরির কান্নার গতি কমার বদলে বেড়ে গেলো।
পরি নীলের শার্ট খামচে ধরলো।
মনে হচ্ছে একটু নড়চড় হলেই নীল পালিয়ে যাবে।
নীল মলিন হেসে পরির মাথায় চুমু দিয়ে দিলো।

( আসসালামুআলাই রির্ডাস। গল্প ছোট দেওয়ার জন্য আর দেরি করে দেওয়ার জন্য আমি দুঃখিত।
ছোট বোন কে নিয়ে সকাল থেকে দুপুর অব্দি হসপিটালে ছিলাম। তারপর শপিং করতে গিয়েছিলাম।
বাসায় আসতে আসতে আসরের আযান দিয়ে দিয়েছে।
গোসল করেই ফোন হাতে বসেছি।
আজকে আমার ইচ্ছে ছিলো না গল্প দেওয়ার জন্য ।
কিন্তু অনেক এ হয়তো অপেক্ষায় থাকবেন তাই কাল রাতে যতটুকু লিখেছিলাম ততটুকু দিয়ে দিলাম।
আমার লেখা গল্প পেতে পেজ এ লাইক ফলো আর বন্ধুদের ইনভাইট দিয়ে পাশে থাকুন )

বি : দ্র : ভুল ত্রুটি মাপ করবেন ।

💙 হ্যাপি রিডিং 💙

চলবে
ফাতেমা তুজ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here