💗 বান্ধবীর ভাই যখন বর 💗
Part – 38
_________________________________
38,,,,,
আর মাত্র কয়েক টা ঘন্টা,,,, তারপর ই প্রিয় মানুষটির সামনে এসে দাঁড়াবে নীল।
মাত্র ই ফ্লাইট লেন্ড করলো।
নীল একাই এসেছে ,,,,, অনিক সমস্ত টা গুছিয়ে দশ দিনের মাথায় পরিবার সমেত বিডি তে সেটেল হবে।
অনিকের বাবা মা অনিকের এক বার বলাতেই সমস্ত কিছু তে রাজি হয়ে গেছেন।
একমাত্র সন্তান অনিক,,, ছেলের খুশি ই সবার আগে।
নীলের মুখে বিশ্ব জয় করা হাসি ,,,, সব কিছু ঠিক ঠাক ভাবেই সম্পূর্ণ হয়েছে।
সব কিছু গুছিয়ে নিতে চার মাস এর জায়গায় সাড়ে পাঁচ মাস লেগেছে ।
তবু ও দিন শেষ এ যে সব কিছু ভালোই ভালোই মিটেছে এটাই অনেক।
অবশ্য এই কয়েক মাস খুব বেশি খারাপ কাটে নি নীলের।সারাদিন কাজ নিয়ে পড়ে থাকতো,,, আর সময় পেলেই পরির সাথে ফোনে কথা বলে রিল্যাক্স সময় পার করতো ।
রাত ভর ও আড্ডা,,, সব মিলিয়ে জমিয়ে প্রেম হয়েছে।
এখন শুধু ধর্ম মতে বিয়ে করে পরি কে সম্পূর্ণ রূপে নিজের করে নেওয়ার পালা।
নীল এয়ারপোর্ট এ আসতেই কয়েক জন লোক এসে নীলের ব্যাগ পত্র নিয়ে নিলো।
সবাই জানে নীল দশ দিন বাদে আসবে ,,,, কিন্ত নীল আজ কে এসে সবাই কে চমকে দিবে ।
এয়ারপোর্ট থেকে বেড়িয়ে নীল নিজের প্রিয় নীল রঙ্গা গাড়ি টিতে উঠে বসলো।
বরাবর ই নিজেই ড্রাইভ করতে পছন্দ করে নীল তাই ড্রাইভার কে গাড়ি রেখে অন্য গাড়ি নিয়ে চলে যেতে বলল।
রাত প্রায় দশ টা ছুই ছুই ,,,, গ্রামে এই সময় টা অনেক রাত হলে ও ঢাকার মতো ব্যস্ত শহরে এই সময় টা সন্ধ্যা হওয়ার মতোই।
চারিদিকে মানুষের ভীর,,,,, শীত চলে গিয়ে বসন্ত শেষ হতে চললো।
তাপমাত্রার পরিমান অত্যন্ত সন্তুষ্টজনক।
নীল গাড়ির জানালার কাঁচ খুলে দিলো,,,, ঢাকার দম ফাপর হওয়া আবহাওয়ার মাঝে ও কোথায় হতে যেন ফুরফুরে বাতাস নীল কে ছুইয়ে যাচ্ছিলো।
রাস্তার আলো গুলো বেশ মোহিনীয় লাগছে ,,, যদি ও লন্ডনের তারতম্যর কাছে অত্যন্ত সূক্ষ্ম।
নীলের ঠোঁটের কোনে লেগে আছে স্নিগ্ধ হাসি।
ইসসসস কতো শত দিন পরে প্রিয়তমার দেখা পাবে নীল।
পরি কখনো ই ভিডিও কলে আসতে চায় না ,,,, ওর নাকি লজ্জা লাগে।
আচ্ছা পরি কি আর ও শুকিয়ে গেছে নাকি গুলুমুলু হয়েছে।
সেই ছোট্ট মিষ্টি গুলুমুলু পরির কথা মনে পড়তেই নীলের ঠোঁটের কোনে লেগে থাকা স্নিগ্ধ হাসি টা শব্দ হাসি রূপে প্রচলিত হয়।
কি মায়াবি মেয়েটা,,,,,,
নানা ভাবনার মাঝেই ছন্দপতন ঘটলো এক বিশাল মাপের জ্যামের মাঝে।
মনের খুশি টা খানিকটা উবে গেল নীলের।
ইসসস পরি কে দেখার এই সময় টুকু ব্যর্থ হচ্ছে।
নীল বিরক্তি নিয়ে গাড়ি তে বসে রইলো।
দীর্ঘ ঘন্টা খানেক গাড়ি তে বসে রইলো নীল।
ফাকে কয়েক রকমের গান ও শুনে নিলো।
কিন্তু জ্যাম খুলছেই নাহহহ ,,,,
নীল গাড়ি থেকে নেমে পড়লো।
সামনে তাকিয়ে বিশাল মাপের জ্যাম দেখে নীলের কপালে সূক্ষ্ম ভাঁজ ফুটে উঠলো।
কি ভয়ংকর জ্যাম,,,,,,
নীল খানিকটা আগিয়ে জানতে পারলো মন্ত্রীর ছেলে আর তার বন্ধুরা মদ খেয়ে উলোট পালোট ভাবে গাড়ি চালাচ্ছিল,,,,, রাস্তার ধারে এক চা বিক্রেতার ভ্যানের সাথে গাড়ি লাগিয়ে দেয়।
লোকটার এতো পরিমান লস হওয়ার পর ও মন্ত্রীর ছেলে গাড়ি থেকে নেমে লোক টাকে মার ধোর করতে আসে আর তখনি পাশে থাকা পাবলিক বাঁধা দেয়।
তারপর ই বিশাল বড় ঝামেলার সৃষ্টি হয়।
পাশেই টিভি চ্যানেল অফিস ছিলো তাই সাংবাদিক রা ও চলে আসে।
আর এই নিয়েই বিরাট ঝট পেকে গেছে ,,,, গত তিন ঘন্টা ধরে নাকি এসব চলছে।
রাস্তা ব্লক হয়ে আছে ,,,, নীলের ইচ্ছে করছে ঐ মন্ত্রীর ছেলের মাথা টাই ফাটিয়ে দিতে।
নীল দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে জ্যাম ছাড়ার অপেক্ষা করতে লাগলো।
আর ও আধ ঘন্টা চলে যাওয়ার পর ও যখন জ্যাম গেল না তখন নীল পকেট থেকে ফোন বের করে কাউ কে ফোন দিলো।
রাগি কন্ঠে বলল
– চল্লিশ মিনিট ,,, চল্লিশ মিনিটের মধ্যে জ্যাম ফাঁকা চাই।
এ সুন এস ,,,,,,
ফোন কেটে দিয়েই গাড়ি তে পিঠ ঠেকিয়ে লম্বা শ্বাস নিলো নীল।
নীলের ক্ষমতা নীল সব সময় ই আড়ালে রাখতে চায়।
কিন্তু বার বার পরিস্থিতির স্বীকার হতে হয়।
অবশ্য লাইফ রিস্কস এর থেকে নিজের ক্ষমতা আড়ালে ব্যবহার করা টাই উত্তম।
নীল গাড়ি লক করে আশে পাশে ঘুরতে লাগলো ।
জ্যামের মাঝ খানে থেকে অবস্থা খারাপ হয়ে যাচ্ছিলো ।
নীল খানিকটা আগাতেই দেখতে পেল একটা বারো তেরো বছর বয়সী ছেলে ফুল হাতে বসে আছে।
মনে হচ্ছে সন্ধ্যার পর ফুল গুলো বিক্রি ই হয় নি।
খুব বেশি ফুল নয় বিশ কি পঁচিশ টা গোলাপ হবে।
কিন্তু ফুল গুলোর রঙ যেমন টকটকে ঠিক তেমনি তরতাজা।
ফুল গুলো দেখতেই পরির কথা মনে পড়ে গেল নীলের।
এতোক্ষনের বিরক্তিকর পরিস্থিতি কাঁটিয়ে নীল স্নিগ্ধ হাসি হাসলো।
ছেলেটার কাছে এগিয়ে যেতেই ছেলেটা উঠে দাড়ালো।
যত্সামান্য হেসে বলল
– স্যার ফুল লাগবো ?
একদম তরতাজা ,,,,
নীল মুচকি হেসে বলল
– হুমম তা তো দেখছি।
আচ্ছা এখন তো বারোটা ছুঁই ছুঁই বাসায় যাস নি কেন ?
ছেলেটা করুন হেসে বলল
– মা অসুস্থ স্যার আর বাপে রিক্সা চালায় এখনো আহে নাই।
একটু পর আইসা আমারে সাথে করে নিয়া বাড়ি ফিরবো।
নীল মুচকি হেসে বলল
– আজ কয়টা ফুল বিক্রি করেছো?
– ছয় টা স্যার।
– কতো টাকা লাভ হয়েছে?
– ত্রিশ টাকা।
নীল মুচকি হেসে বলল
– কয়টা ফুল আছে তোমার কাছে?
ছেলে টা গুনে বলল
– পঁচিশ টা স্যার।
নীল ভ্রু কুঁচকে বলল
– ফুল তো লেবেল করে বিক্রি করা হয়।
তাহলে মোট একত্রিশ টা ফুল আনলে কি করে ?
ছেলেটা দীর্ঘ হাসি দিয়ে বলল
– স্যার আমার ছোট বইন ডার গোলাপ অনেক পছন্দ।
তাই মহাজনের থেকে একটা ফুল চাইয়া আনছি।
নীল সমস্তটা বুঝতে পারলো।
ভেতর থেকে শুধু একটা দীর্ঘশ্বাস আসলো ।
এই বয়সে এদের পড়াশোনার সময় আর এরা কি করছে ফুল বিক্রি।
ছেলেটার ডাকে নীলের
ঘোর কাটলো।
নীল মুচকি হেসে বলল
– হুমমম নিবো তো।
আচ্ছা বল তোর এই সব গুলো ফুলের দাম কতো।
ছেলেটার মুখে বিশাল এক হাসি ফুটে উঠলো।
ছেলেটা অংক কষে বলল
– একটা পনের টাকা কইরা তাইলে মোট হইলো 375 টাকা।
নীল মুচকি হেসে বলল
– বাহহহ খুব ভালো হিসেব করতে পারিস দেখছি।
পড়াশুনা করিস ?
নীলের মুখে প্রশংসা শুনে ছেলেটা খানিকটা লজ্জা পেল।
লজ্জা মিশ্রিত কন্ঠে বলল
– স্যার আগে পড়তাম এহন পরি নাহহ।
ক্লাস 5 পর্যন্ত পরছি ,,,,,
নীল ভেতর থেকে দীর্ঘশ্বাস ফেলল।
এই রকম কতো হাজার হাজার বাঁচ্চা রা পড়াশুনার সুযোগ পাচ্ছে নাহহহ।
কতো রকমের স্বপ্ন থাকে এদের মনে কিন্তু কিছুই পূরন হয় নাহহ।
নীল মৃদু হেসে ফুলের গুচ্ছ হাতে তুলে নিলো।
তারপর পকেট থেকে হাজার টাকার নোট বের করে দিলো।
ছেলেটার মুখে সঙ্গে সঙ্গে কালো আভায় ছেয়ে গেল।
নীল মুচকি হেসে বলল
– খুচরো চাই নি আমি।
এই টাকা টা তোর ফুলের দাম ই।
ছেলেটা মিষ্টি হেসে বলল
– কিন্তু স্যার আমার ফুলের তো এতো দাম নয়।
নীল কাঁধের ব্যাগ থেকে চকলেট বক্স বের করতে করতে বলল
– এই ফুল গুলো যার জন্য নিচ্ছি সে আমার কাছে অনেক বেশি দামী।
তার জন্য নেওয়া সব কিছুই দামী,,,,,,
এই অসময়ে তোর কাছে এমন তরতাজা ফুল পেয়েছি এটা আমার কাছে অনেক বড় বিষয়।
এই কথা টুকু শেষ করেই নীল হাজার টাকার নোট টা আর চকলেট বক্স দিয়ে বলল
– টাকা টা রাখ।
আর এই চকলেট গুলো তোর বোনের আর তোর জন্য।
ছেলেটা মৃদু হেসে জিনিস গুলো গ্রহন করলো।
নীল কিছু দূর এসে আবার ছেলেটার কাছে ফিরে গেল।
ছেলেটার চোখে কৌতুহল,,,
নীল মুচকি হেসে ফুলের গুচ্ছ থেকে একটা গোলাপ বের করে বলল
– এই টা তোর বোনের জন্য।
খুব পছন্দ তাই নাহহ,,,, আর ওর জন্য ই তো একটা বেশি এনেছিলি,,,
বলিস একটা ভাইয়া দিয়েছে।
নীলের হাত থেকে গোলাপ নিতে নিতে ছেলেটার চোখ টুইটুম্বর হয়ে যাচ্ছিলো।
চোখে মুখে উপচে পড়া কৃতজ্ঞতা,,,,
নীল ছেলেটার মাথায় বার কয়েক হাত বুলিয়ে দিয়ে চলে আসলো।
_______________________
নীল কে সেই সন্ধ্যা থেকে ফোন করে যাচ্ছে পরি।
এখন রাত একটা বাজতে চললো নীল ফোন ধরছে না।
অবশ্য বিকেলে যখন ফোনে কথা বলেছিলো তখন নীল বলেছে আজ রাতে মিটিং আছে তাই কথা হবে না।
পরি মন খারাপ করে ব্যালকনি তে চলে আসলো,,,, একদম ই ভালো লাগছে না পরির।
নীলের সাথে কথা বলে কিংবা কথা বলতে বলতে ঘুমানো পরির অসভ্য এ দাড়িয়ে গিয়েছে।
আকাশে বিশাল বড় চাঁদ উঠেছে ,,,,, পূর্ণিমার রাত।
চারদিকে সন্ধ্যার আলোর মতো লাল কালো আভা বিরাজ করছে।
মানুষ জন কম থাকলে ও জনমানবশূন্য বলা যায় না।
আজকাল পরি,, প্রকৃতি কে দেখে একটু বেশি ই মুগ্ধ হচ্ছে,,,,,,
মেডিকেলে ভর্তির পর মানব শরীর ,, আর প্রকৃতির কিছু বিষয় নিয়েই সারাক্ষণ পড়ে থাকতে হয়।
বৃষ্টি হবে বোধহয়,,,, আকাশ টা থেকে থেকে ঝলকানি দিচ্ছে।
কি অপূর্ব সে দৃশ্য,,, পরি লম্বা একটা শ্বাস নিলো।
মনের ভেতর উতাল পাথাল ঝড় হাওয়া বইছে।
হঠাৎ ই সব কেমন জানি ভালো লাগছে।
মনে হচ্ছে প্রকৃতি কাউ কি বরন করে নেওয়ার চেষ্টায় আছে।
কিন্তু কাকে ?
ঠিক তখনি পরি কে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে নীল।
পরি প্রথম দিকে বেশ ভয় পেয়ে যায়,,,
কিন্তু প্রিয় মানুষটার স্পর্শ চিন্তে বিন্দু মাত্র অসুবিধা হয় নি পরির।
কিন্তু নীল কি করে আসতে পারে?
পরি পেছন ঘুরে তাকিয়ে নীল কে দেখতে পেয়ে অবাক এর উপর অবাক হয়।
নীল তার সামনে দাড়িয়ে আছে এই কথা টা যেন পরি মানতেই পারছে না।
পরি কি আজকাল জেগে জেগে স্বপ্ন দেখছে ?
পরি কাঁপা কাঁপা হাতে নীলের দু গাল স্পর্শ করলো।
নাহহ এটা তো নীল তার নীল ,,,,,,
পরির চোখ দুটো পানিতে ঘোলাটে হয়ে যায়।
এই বুঝি চোখ দিয়ে অশ্রু বর্ষন নেমে যাবে।
পরি অস্ফুট স্বরে বলল
– নীল,,,,,,
নীল মুচকি হেসে পরি কে দু হাতে বুকের সাথে জড়িয়ে নিলো।
প্রিয়তমার সপর্শ আহহ কি শান্তি।
দীর্ঘ সাড়ে পাঁচ টা মাসের পর প্রিয়তমার ছোঁয়া, প্রিয়তমার দেখা পাওয়া সত্যিই স্বর্গীয় সুখ ই বটে।
হঠাৎ ই নীল নিজের বুকে পানি অনুভব করলো।
নীল ভ্রু কুঁচকে নিলো,,,, মেয়েটা কথায় কথায় কাঁদে।
এতো কান্না কোথায় থেকে যে আসে নীল তা ভেবে পায় না।
নীল পরির মাথায় চুমু খেয়ে বলল
– সব সময় কাঁদো কেন পরি।
তুমি জানো কাঁদলে তোমায় আবেদন ময়ী লাগে।
তখন মনে হয় এই বুঝি কিছু একটা করে ফেলবো।
এমন করলে কিন্তু সত্যি সত্যি,,,ই
পরি নীলের বুকে হালকা হাতে কয়েকটা কিল ঘুষি দিয়ে বলল
– একদম মজা করবেন না আমার সাথে।
আপনি কেন বলেন নি আজ কেই আসবেন?
আপনার সাথে কথা বলতে না পেরে বুকের ভেতর তীব্র যন্ত্রণা হচ্ছিলো।
আর আপনি আমার সাথে ফাজলামি করছেন।
নীল মুচকি হেসে পরি কে ছাড়িয়ে বলল
– বোকা মেয়ে ,,,,, আমি তো সারপ্রাইজ দিতে চেয়েছিলাম।
পরি অভিমানি স্বরে বলল
– আমার চাই না,,, কোনো দিন ও সারপ্রাইজ চাই না।
আমার শুধু আপনাকে চাই,,,,
এই টুকু বলেই নীল কে দু হাতে খামচে ধরে পরি।
নীল মুচকি হেসে পরি কে জড়িয়ে নেয় ,,,, মেয়েটা পারে ও বটে।
পরি নাক টেনে বলল
– একদম দূরে যাবেন না আমার থেকে,,,,
নীল মিটিমিটি হেসে একটু ঝুঁকে পরির কানের কাছে মুখ নিয়ে বলল
– আচ্ছা যাবো না ,,,, তাহলে তো নিজের করে এখনি নিতে হয়।
যদি ও পরি তো শুধু মাত্র আমার ই,,,,
নীলের কথাতে পরি থতমত খেয়ে যায়।
এই ছেলে ঠিক হবার নয় ,,,, পুরো অশ্লীল।
পরি নীল কে ছাড়িয়ে বলল
– যত্তসব বাজে কথা ,,,,,
একদম কাছাকাছি আসবেন না।
পরির কথাতে নীলের হাসতে হাসতে যায় যায় অবস্থা।
এই বলে দূরে যাবেন না তো এই বলে কাছাকাছি আসবেন নাহ।
পরি ভ্রু কুঁচকাতেই নীল বলল
– ওকে ওকে আর হাসবো না।
নীল আবার পরির কোমর জড়িয়ে ধরে কাঁধে থুতনি ঠেকিয়ে বলল
– আমি যে আসবো এটা কিন্তু কেউ ই জানতো না।
আমার শশুর আর শাশুড়ি আম্মু ও জানে না।
পরি ভ্রু কুচকে জিজ্ঞাসা করল
– মানে?
তাহলে আপনি আসলেই কি করে?
নীল পরির ঘাড়ে চুমু দিয়ে বলল
– আমার শ্যালক শ্যালিকার সাহায্য নিয়ে।
নীলের কথা শুনে পরির চোখ দুটো রসগোল্লা হয়ে গেলো।
পরি শুকনো ঢোক গিলে বলল
– ওদের কে বলে এসেছেন ?
আল্লাহ কাল কে আমার মান সম্মানের প্লাস্টিক করে ছাড়বে ।
নীল মুচকি হেসে বলল
– উহুমমম।
ওদের কে ঘুষ দিয়েই আসছি,,,,,,
পরি চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে বলল
– কি দিয়েছেন ওদের ?
নীল মেকি হাসি দিয়ে বলল
– ফ্লাইং ক্যামেরা।
পরি চোখ রাঙিয়ে বলল
– উফফফ কি করেছেন কি,,,
এবার এরা ও ক্যামেরার মতো উড়বে।
দুজনে দুটো ক্যামেরা ভেঙেছে তাই আবার আব্বুর কাছে চাওয়ার সাহস ই পায় নি।
আর আপনি এদের কে এনে দিলেন।
নীল পরি কে শক্ত করে জড়িয়ে বলল
– উহুমমম এটা অনেক ভালো ক্যামেরা পরি।
এটার সিস্টেম ও ভালো আর ভাঙ্গবে ও না।
আমার শ্যালক শ্যালিকা একটু আবদার করেছে আমি ওদের আবদার রাখবো না বলো।
পরি নীল কে ছাড়িয়ে বলল
– এবার আমাকে ছাড়ুন প্লিজ।
নীল পরি কে ছাড়ার বদলে আরো কাছে নিয়ে আসে।
এক হাতে জড়িয়ে,,,, অন্য হাত দিয়ে এক গুচ্ছ গোলাপ পরির সামনে নিয়ে আসে।
ফুল গুলো দেখেই পরির মন প্রজাপতির মতো উড়তে লাগে।
পরি যখন ফুল গুলো নিতে যাবে ,,, ঠিক তখনি নীল ফুল গুলো সরিয়ে ফেলে।
পরি মুখ গোমড়া করে বলল
– এটা কি হলো।
নীল একটু ভাব নিয়ে বলল
– কিছুই না।
এই ফুল নিতে হলে ঘুষ দিতে হবে।
পরি চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে বলল
– কিহহহহ
নীল দুষ্ট হেসে বলল
– জাস্ট একটা হামি।
পরি ভেঙ্চি কেটে বলল
– পারবো না।
নীল দীর্ঘশ্বাস টেনে বলল
– ওকে লাগবে না।
আমি এখনি বাসার সবাই কে জাগিয়ে দিচ্ছি,,,,,
পরি ব্যস্ত কন্ঠে বলল
– এইই কেন জাগাবেন,,,?
নীল মুচকি হেসে বলল
– বলবো পরি আমাকে এই ভাবে মাঝরাতে ফুল নিয়ে আসতে বলেছিল।
পরি বেচারি অসহায়ের মতো করে নীলের দিকে তাকিয়ে রইলো।
নীল ভাবলেশহীন ভাবে বলল
– তোমার কাছে অপশন তো আছেই নই হামি দাও।
আর না হয় আমি সবাইকে,,,
পরি কাচু মাচু হয়ে বলল
– আমি রাজি,,,
নীল মুচকি হেসে খানিকটা ঝুঁকে নিলো ।
পরি ধীরে ধীরে ঠোঁট এগিয়ে এনে নীলের গালে ছুঁইয়ে দেয়।
নীল পরির দিকে তাকাতেই পরি সঙ্গে সঙ্গে চোখ খিচে বন্ধ করে নেয়।
আর নীল পরি কে জড়িয়ে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নেয়।
_____________________
( আসসালামুআলাই রির্ডাস । গল্প কেমন হচ্ছে জানাবেন প্লিজ।
বেশি কিছু বলবো নাহহ,, গল্প প্রায় শেষ হলো বলে।
তাই সবাই গঠন মূলক মন্তব্য করুন।
আমার লেখা গল্প পেতে পেজ এ লাইক ফলো আর বন্ধুদের ইনভাইট দিয়ে পাশে থাকুন )
বি : দ্র : ভুল ত্রুটি মাপ করবেন ।
💙 হ্যাপি রিডিং💙
চলবে
ফাতেমা তুজ