বান্ধবীর ভাই যখন বর 💗পর্ব-৫

0
4821

💗 বান্ধবীর ভাই যখন বর 💗
Part – 5
________________________________
5,,,,,,,,,,,
বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার পর এক মুহূর্ত দেরি করে নি নীল। পরি কে নিয়ে সজ্ঞে সজ্ঞে গাড়িতে বসিয়ে দিলো।
পরি এখনো নিস্তব্ধ হয়েই আছে।
নীল ড্রাইভিং সিটে বসে ড্রাইভ করতে লাগলো।
গাড়ি তার আপন গতিতে চলতে লাগলো।
রাতের আকাশ দেখতে পরির খুব ভালো লাগে, কিন্তু আজ পরি আকাশ দেখছে না।
স্থির হয়ে বসে আছে , গাড়ির জানালা দিয়ে মৃদু ফুরফুরে বাতাস মাঝে মাঝে পরি কে ছুঁইয়ে যাচ্ছে।
আজ না হলে পরি এই মূহুর্ত টা কে খুব উপভোগ করতো।কিন্তু এখন বিন্দু মাত্র ইচ্ছে জাগছে না তার।
বাতাসে হালকা শীত ও লাগছে পরির , যার কারনে বার বার কেঁপে উঠছে।
নীল ড্রাইভিং করতে করতে আড় চোখে পরি কে দেখে নিচ্ছে।
কত শত দিন পর পরি কে দেখছে ওও।
পরি কে দেখার স্বাধ কখনোই মিটবে না ওরর।
পরির দিকে তাকাতেই নীলের বেশ হিংসে হচ্ছে, প্রকৃতি যে বার বার ওর পরি কে স্পর্শ করে যাচ্ছে।
কেন ওর পরি কে স্পর্শ করবে?
কিন্তু প্রকৃতির স্পর্শ তে যে কোনো কলঙ্ক নেই , আছে শুধু মুগ্ধতা তাই ওর রাগ হচ্ছে না।
বরং প্রকৃতির হাওয়া যখন পরি কে স্পর্শ করে যাচ্ছে তখন পরি কে বেশ স্নিগ্ধ নিষ্পাপ লাগছে।
নীল হঠাৎ লক্ষ্য করলো পরি বার বার কেঁপে উঠছে।
নীল ভ্রু কুঁচকে বোঝার চেষ্টা করলো কেন কাঁপছে।
কয়েক সেকেন্ড এর মাঝে বুঝে ও গেল শীত প্রকৃতিতে হানা দিচ্ছে যার কারনে বাতাস পরির শরীর কে স্পর্শ করলেই পরি কেঁপে উঠছে।
নীল গায়ে ব্লেজার পড়ে থাকায় ও শীতের অনুভূতি বুঝতে পারে নি।
নীল গাড়িটা সাইটে থামিয়ে গায়ের ব্লেজার খুলে নিলো।
পরির দিকে কিছুক্ষণ এক দৃষ্টি তে চেয়ে রইলো।
কি স্নিগ্ধ এই মুখ, এতো মায়াবি মেয়েটা, যার কারনে নীল বারং বার মেয়ে টার প্রেমে পড়ে।

মৃদু বাতাসে পরির সামনের ছোট চুল গুলো কপালে আকরে পড়ছে।
যার কারনে পরির বিরক্ত না লাগলে ও নীলের বিরক্ত লাগছে।
নীল পরির কপাল থেকে চুল গুলো অতি যত্নে সরিয়ে কানের পিঠে গুঁজে দিলো।
নীলের স্পর্শে পরি হালকা নড়ে চড়ে বসলো।
নীল মৃদু হাসলো তারপর ব্লেজার টা পরির গাঁয়ে জড়িয়ে দিলো।
পরি উষ্ণতা পেয়ে ব্লেজার আঁকড়ে নিলো।
নীল পরির কপালে চুমু দেওয়ার জন্য এগিয়ে আসলো, কিন্তু কিছু একটা ভেবে চুমু খেলো না।
মৃদু হেসে ড্রাইভিং এ মনোযোগ দিলো। আর পরির কোনো দিকে ধ্যান ই নেই ,,,, সে তার ভাবনাতে মজে আছে।
নিজের নিশ্বাস টা পাশে বসে আছে এতেই যেন নীল সব সুখ পেয়ে গেছে।
কতোশত দিনের অপেক্ষার খানিকটা অবসান ঘটলো আজ।
যে ভালোবাসার কোনো রূপ ছিলো না , ছিলো না পরিচয়, ছিলো না প্রকাশ আজ থেকে সেই ভালোবাসা একটি সম্পর্কের নাম পেয়ে গেল।
বউ ,,,,,,,,,,,,

আজ থেকে পরি নীলের বউ।
মনের সমস্ত অনুভূতি যেখানে অদৃশ্য দেয়ালের মাঝে বাঁধা ছিলো , আজ বুক ফুলিয়ে সারা পৃথিবীকে বলতে পারবে।
আমার বউ ,,,,,,,,,,,,, হ্যাঁ আমার বউ।
__________________

দশ মিনিটের মাথায় ই নীল তাদের বাসার সামনে চলে আসলো।
বাসার সামনে গাড়ি থামাতে ই পরি চমকে উঠে।
এটা যে নীলের বাড়ি তা পরি জানতো না।
কারন তিন বছর ধরে নীলের সাথে কখনো দেখা তো দূরে থাক কথা ও হয় নি।
নীল গাড়ি থেকে নেমে পরির হাত ধরে নামিয়ে নিয়ে আসে।
পরির কাছে সব কিছুই ছাপসা মনে হচ্ছে।
পরি যেন বুঝে উঠতে পারছে না কি হচ্ছে।
নীল পরির হাত ধরে এক পা আগাতেই পরি আবার জ্ঞান শূন্য হয়ে ঢোলে পড়ে নীলের বুকে।
নীল পরি কে দুহাতে আঁকড়ে ধরে।
সকাল থেকে কিছুই খায় নি পরি তার উপর এতো চাপ নিতে গিয়ে বার বার সেন্সলেজ হয়ে যাচ্ছে।
নীলের বন্ধুরা , ভাইরা সবাই বাসার সামনেই দাড়িয়ে আছে।
সবাই এক প্রকার হৈ হুল্লর শুরু করে দিয়েছে।
ওরা ও যেতে চেয়েছিল কিন্তু নীল বারন করেছে।
যার কারনে এখানেই সবাই বাইক নিয়ে দাড়িয়ে আছে।
যদি কোনো সমস্যা হয় তো চটজলদি যেন যেতে পারে।
কিন্তু নীল ওদের সাহায্য ছাড়াই পরি কে আনতে পেরেছে।
সবাই হৈ হুল্লর করছে আর নীল কে বাহবা দিচ্ছে।
নীল মৃদু হেসে পরি কে কোলে তুলে নেয়।
তারপর বাড়ির ভেতরে যাওয়ার জন্য পরি কে কোলে নিয়েই পা বাড়ায়।
বাড়ির ভেতরে ঢুকতেই নীলের মা হন্তদন্ত হয়ে আসে।
ব্যস্ত কন্ঠে বললেন
– নীল পরির কি হয়েছে ওও ঠিক আছে তো ?

নীল শান্ত স্বরে বলল
– আম্মু আপাতত ও সেন্সলেজ হয়ে গেছে।
কিছু খায় নি বোধহয় আর কেমন পাথরের মতো ও হয়ে গেছে,,,, অনেক চাপ গেছে কি না।
এখন ওর একটু রেস্ট প্রয়োজন।
নীলের মা ও ছেলের কথায় সায় দিলেন।
নীল সিঁড়ি বেয়ে উঠে পরি কে নিয়ে সোজা নিজের রুমে চলে আসে। তারপর যত্ন সহকারে পরি কে বেডে শুইয়ে দেয়।
কিছুক্ষণ পরির হাত ধরে রেখে তারপর মৃদু হেসে উঠে দাঁড়ালো।
নীলের বোন হাফসা রুমে ঢুকতেই নীল বলল
– ওর একটু খেয়াল রাখ।

হাফসা মাথা ঝাঁকিয়ে সম্মতি জানালো।
তারপর বলল
– ভাইয়া তুই ফ্রেস হয়ে নেয়।
এয়ারপোর্ট থেকে সোজা চলে গিয়েছিস।
ফ্লাইট থেকে নেমে এক মুহূর্ত রেস্ট ও নিস নি।
অসুস্থ হয়ে যাবি আমি পরি কে দেখে রাখছি তুই যা।

বোনের কথায় নীল হাসলো।
তারপর ফ্রেস হতে চলে গেল।
আর যাই হোক নীল পাগল প্রেমিক তো বটেই ।
তা না হলে কি এভাবে ছুটে আসতো।

( আসসালামুআলাই রির্ডাস । গল্প কেমন হচ্ছে জানাবেন প্লিজ ।কোনো কিছু বুঝতে সমস্যা হলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন কিংবা পেজ এ ম্যাসেজ দিয়ে জানাবেন ।
আমি আমার সাধ্য মতো বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবো ইনশআল্লাহ । আমার লেখা গল্প পেতে পেজ এ লাইক ফলো আর বন্ধুদের ইনভাইট দিয়ে পাশে থাকুন )

বি : দ্র : ভুল ত্রুটি মাপ করবেন ।

💙 হ্যাপি রিডিং 💙

চলবে
ফাতেমা তুজ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here