♥ বিধবা ♠
Writer : Nabila Ishq
Part : 8
ইছমি দেখলো গাড়ি বাসার দিক যাচ্ছে না।ইছমি বলল…
” বাসা তো ওইদিক দিয়ে।
” আমরা শপিং করতে যাচ্ছি।
” আমার শপিং লাগবে না তো।
” আমি কি তোমায় জিজ্ঞাস করেছি?
ইছমি মাথা নিচু করে বসে আছে….
কিছুক্ষন পর বসুন্ধরা মল এ আয়ান তার গাড়িটা থামায়। নিজে নেমে ইছমিকে ও নামায়।
ভিতরে প্রবেশ করে ইছমি চারপাশ দেখছে।হাযার মানুষ চারোপাশে। ইম্রেত ইছমির এক হাত ধরে নানান ড্রেস দেখাচ্ছে বাট ইছমি চারপাশের মানূষদের দেখতে ব্যাস্ত।
ইছমি কিছু না বলায় সেই সব চয়েছ করে কিনে নিলো।
আর বলল…
” এইটা নিচ্ছি তোমার জন্য পারফেক্ট মানাবে।
” জি
ইম্রেত শপিং সেশ করে বেড়িয়ে পরলো।
গাড়িতে ইম্রেত দেখলো ইছমি চুপচাপ বসে আছে কোনো কারনে হয় তো আপ্সেট।
ইম্রেত বলল..
” কিছু হয়েছে সুইটি?
মাথা নাড়িয়ে না জানালো।
ইম্রেত বলল…
” তাহলে আপসেট কেনো দেখাচ্ছে??
এবার ইছমির চোখের পানি গড়িয়ে পরছে।সে আর তার চোখের পানি ধরে রাখতে পারছেনা। তার যে সব সপ্ন মনে হচ্ছে। ১৮ বছরের জিবনে আজ প্রজন্ত সুখ কি সে দেখে নি। নিজের বিবাহিতা হাসবেন্ড কে ও সে কখনো সামনাসামনি দেখে নি। মা _ বাবা কেও কখনো মনের মাঝে রাখতে পারে নি। এতো ছোটো তে তাকে ফেলে আকাশের তারা হয়ে গেছে।
তাহলে ইম্রেত কেনো তাকে এতো কেয়ার, রেস্পেক্ট, লাভ করছে।
ইম্রেত ইছমির চোখের পানি দেখে থতমত খেয়ে গাড়ি কশিয়ে ব্রেক মেরে সাইডে রাখে। ইম্রেত তাড়াতাড়ি একটু চেপে ইছমির দিক তাকিয়ে বলল….
” কি হয়েছে সুইটি কেউ কি কিছু বলেছে তুমি কাদছো কেন জান।
এই যে এদিক তাকাও কি হয়েছে। আমি কি কোনো ভুল করেছি।
ইছমি তাও মাথা নিচু করে কেদেই চলেছে। আর ইম্রেতের বুকে অসয্য যন্ত্রনা হচ্ছে।
ইম্রেত ইছমির কমড় ধরে নিজের দিক টেনে এনে আবারো বলে…
” কাদছো কেন জান, কি হয়েছে সুইটি আমায় বলো।
ইছমি এবার ফুপিয়ে কেদে উঠে। সে যে তার কস্ট গুলি ধরে রাখতে পারছে না।ইম্রেত এবার ইছমির কমড় চেপে দু হাত দিয়ে তুলে নিজের কোলে বসায়। ইছমি তাও কেদেই যাচ্ছে। ইম্রেত ইছমিকে কোলে বসিয়ে নিজের দু হাত দিয়ে ইছমির চোখের পানি পুছিয়ে দিয়ে বলল…
” কি হয়েছে আমার জান কাদছে কেন?
আমি কি কোনো ভুল করেছি।
ইছমি মাথা নাড়িয়ে না জনালো।
” তাহলে কেন কাদছো?
ইছমি আবারো কেদেই দেয়। 😭
ইম্রেত এবার একটু চিল্লিয়ে বলে…
” কি হয়েছে কাদছো কেন??
ইম্রেতের ধমকে ইছমি একটু কেপে এবার আওয়াজ করেই ফুপয়ি কেদে উঠে 😭
ইম্রেত ইছমির দু গাল ধরে নিজের মুখের কাছাকাছি এনে জিজ্ঞাস করে…
” কি হয়েছে জান আমায় বলো প্লিজ।
ইছমি ফুপিয়ে ফুপিয়ে কেদে বলল…
” আ…আপনি আ…আ..আমায় কেনো এতো কেয়ার নিচ্ছেন।
আমি এতো কিছু ডিজার্ভ করি না।
আমি যে বিধ….
ইম্রেত আর বলতে দেয় না। নিজের হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরে। চোখের পানি মুছিয়ে বলল…
” আমার কেয়ার ভালোবাসা কি তোমার পছন্দ হচ্ছে না।
ইছমি ইম্রেতের দিক তাকিয়ে বলল…
” তেমন না তো [ কেদে কেদে ]
” আচ্ছা স্টোপ ক্রাইং ওকে।
নাউ স্টোপ।
গুড গার্ল।
ইম্রেত ইছমির কমড় ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে জড়িয়ে ধরে। অনেক্ষন জড়িয়ে ধরে তারপর ইছমির মাথাটা নিজের বুকের পাশে রেখে বলল…
” এই দিগুন বেগে বিট করা ধুক ধুক শব্দটার মালিক হচ্ছ তুমি।
তুমি ই আসলেই এটা ক্রমোশো বেরে যায়।
আমার ঘুমের,সুখের,হাসার, রাগার কারন তুমি।
ইছমি পরম যত্নে ইম্রেতের বুকের ধুক ধুক আওয়াজ শুনছে।
ইম্রেত ইছমির মাথা তুলে হাত দিয়ে ইছমির গাল দুটি ধরে বলল…
” আজ থেকে তোমার একটি পরিচয় তা হলো Mrs. এমোরেততি লিনোর।
আজ থেকে তোমার সুখ, কান্না এবং দুক্ষ সব আমার জন্য। অন্য কারো জন্য কাদবে না তুমি। তুমি কি কে? আগে কি ছিলে I don’t care. এখন তুমি শুধু আমার আর তাই আগের কিছুই মনে করে কস্ট পাবে না।
ইছমি অবাক চোখে তাকিয়ে আছে ইম্রেতের দিক তার যে Mrs. Emoretti linor শুনে এক আলাদা অনুভুতি সারা শরীরে ছেয়ে গেলো। কেমন সপ্নের মতো শুনতে লাগলো। বারবার কানে বাড়ি খাচ্ছে ইম্রেতের বলা কথাটা Mrs. Emoretti linor.
ইছমি ইম্রেতের লাল চোখ গুলি দেখে বুঝতে পেরে যায় তার কান্না যে সজ্জ করতে পারে না তা বঝা হয়ে গেছে ইছমির।
ইম্রেত আবারো বলল…
” আজ থেকে আমি যা বলবো যেভাবে বলবো সেভাবে চলবে। তুমি এক্সাম দাও অনার্স এ উঠো দেন আমি বিয়ের প্রস্তাব পাঠাবো। এখন তুমি যথেস্ট ছোট।
বুঝলা সুইটি।
ইছমি কান্না করে দিলো। আর সাথে মুচকি হাসি। ইছমি ইম্রেত কে জড়িয়ে ধরে ইম্রেত ও। অনেক্ষন যাবত ইছমি ইম্রেত কে জড়িয়ে কাদছে তার যে অনেক খুশি লাগছে। তার জিবনে এমন কেউ এসেছে যে তার চোখের পানি দেখলে নিজেই কেদে ফেলে। ইছমির কস্ট অনুভব করার জীবন সংগি এসেছে।
ইছমি কখন থেকে জড়িয়ে আছে ইম্রেত কে। ইম্রেত বলল….
” বাসায় কি যাবেন না? Mrs. লিনর.
ইছমি শরম পেয়ে ছেড়ে দিয়ে ইম্রেতের দিক তাকায়। ইম্রেত মুচকি হেসে ইছমির দু গালে কিস করে। তারপর আবার ইছমির সিট এ ইছমিকে বসিয়ে দেয়।
ইছমি মুচকি হেসে ইম্রেতের দিক তাকিয়ে আছে। ইম্রেত আরচোখে ইছমিকে দেখে বলল…
” গাড়ি চালানো কি ওফ করে দেবো।
যেভাবে তাকিয়ে আছো এক্সিডেন্ট হতে টাইম লাগবে না।
ইছমি শরম পেয়ে অন্যদিক ফিরে তাকায়।
বাসার একটু দূরে গাড়ি পার্ক করতে বলল ইছমি। ইম্রেত ও ইছমির কথা মতই গাড়িটা বাড়ির থেকে বেশ দুরেই পার্ক করলো।
ইম্রেত নেমে ইছমিকে ও নামিয়ে দেয়। শপিং বেগ গুলি ইছমির কলেজ বেগে ভরে দেয়।
আর বলল….
” গিয়ে ট্রায় করে দেখবে ফিট হলো কিনা।
” জি
” আমি গাড়ি পার্ক করতে যাচ্ছি। বাসায় গিয়ে সাওয়ার নিয়ে রেস্ট নাও টিউশানি আর পড়াতে হবে না। তাদের বলে দেবে তুমি আর পড়াতে পারবে না।
” কিন্তু
” স্টোপ এন্ড গো
ইম্রেত দাঁড়িয়ে ইশারা করলো ভিতরে যেতে। ইছমিও একবার ইম্রেত কে দেখে ভিতরে ঢুকলো।
ইম্রেত গাড়ি বাড়িতে ঢুকিয়ে সাইডে পার্ক করে। নিজেও ঢুকলো। ভিতরে গিয়ে দেখে ইছমি লিফট এর ওখানে এখনো দাঁড়িয়ে।
তাই গিয়ে বলল…
” দাঁড়িয়ে আছো যে?
“………
” [ মুচকি হেসে ] আচ্ছা চলো।
ইম্রেত ইছমিকে নিয়ে লিফট এ উঠে ৫ বাটান এ ক্লিক করলো। ৫ তালায় পৌছিয়ে ইছমি বাড়িতে ঢুকার জন্য পা বাড়িয়ে আবার ফিরে তাকিয়ে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে। ইছমির এক আলাদা অনুভুতি হচ্ছে। শুধু ইম্রেতের সাথেই থাকতে মন চাচ্ছে তার।
ইম্রেত মুচকি হেসে বলল…
” কি বলবা বলো?
” আসোলে…
” হুম তারপর?
” আপনি অনেক…. ভা…ভালো।
ইম্রেত মুচকি হেসে লিফট থেকে নেমে ইছমির সামনে দাঁড়িয়ে দু হাতে নিজের বুকে জড়িয়ে নিয়ে বলল…
” আমার বায়োডাটা জানলে তুমি আমার থেকে একশ হাত দূরে থাকতে জান।
আচ্ছা যাও গিয়ে ফ্রেস হয়ে রেস্ট নাও।
ইছমি ও লক্ষি মেয়ের মতো যাচ্ছিলো আবার ফিরে তাকালো। ইম্রেত বুঝতে পেরে নিজের কাছে আসতে বলল।
ইছমি ও ইম্রেতের সামনে দাঁড়ায় আর ইম্রেত ইছমির কপালে একটা চুমু খেয়ে বলে….
” বিকালে তো দেখা হচ্ছে তাই না।যাও গিয়ে রেস্ট নাও।
ইছমি বাড়িতে ঢুকতেই ইম্রেত ও চলে যায় নিজের ফ্লাট এ।
ইছমি বাড়িতে ঢুকে দেখে মা আর বাকি সবাই লাঞ্চ করছে। ইছমিকে দেখে মহিনি বলল….
” কোথায় ছিলে ভাবি? কলেজ তো অনেক্ষন হলো ছুটি হয়েছে।
” আসোলে ফ্রেন্ডের সাথে ছিলাম কিছুক্ষন।
” আচ্ছা লাঞ্চ করে নাও। তুমি আমি কিমরান আর বড় ভাইয়া ঘুরতে যাবো কেমন?
” ভালো লাগছে না তোমরা করে নাও।
ইছমি নিজের রমে গিয়ে দরজা নক করে দিলো। সেলফোন বের করে দেখলো একবার না নো কল নো মেসেজ 🤐
ইছমি সাওয়ার নিয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দিলো। আর আজকের ইম্রেতের প্রত্তেকটি কথা তার কানে বাড়ি খাচ্ছে। সে যে ইম্রেতের মায়া জড়িয়ে যাচ্ছে। ইম্রেতের হাসি, তার প্রতি কেয়ার, ভালোবাসা, পজিটিভিটি, সব অনেক ভালো লাগে।
মুচকি হেসে ইম্রেতকে নিয়ে ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পরে ইছমি।
ইম্রেত বাসায় গিয়ে লেপ্টপ নিয়ে কাজে বসে পরে। লেপটপ এ কারো সাথে ইম্পরট্যান্ট ডিল সাইন করলো। দেন বেড়িয়ে পরে অফিসে। ওখানে টুকটাক কাজ করে বাসায় ফিরে দেখে ৪ টা বাজতে ১৫ মিনিট বাকি। তখনি কিমরান এসে বলল….
” ভাই রেডি হো তাড়াতাড়ি প্লিজ।
” ওয়েট হচ্ছি।
ইম্রেত কালো জিন্স, হোয়াইট সার্ট, হোয়াইট শু, হাতে কালো ওয়াচ, চুল গুলি জেল দিয়ে খাড়া করিয়ে রেডি হয়ে নিলো।
দেন ইছমিকে কল করলো বাট ইছমি ধরছে না।আবার কল দিতেই ইছমি রিছিভ করলো।
ইম্রেত বলে উঠলো…
” সুইটি?
ইছমি তখনো ঘুমিয়ে আছে। ঘুমু ঘুমু কন্ঠে বলল…
” হুম
” তুমি ঘুমাচ্ছ?
” হুম
” আচ্ছা আমার সুইটির ঘুম পেয়েছে?
তাহলে ঘুমাও অন্য একদিন যাবো ঘুরতে ওকে!
ইছমি লাফ দিয়ে উঠলো ঘড়িতে তাকিয়ে দেখলো ৪ টা ৩ বাজছে। আর দরজায় মহিনি নক করছে। ইছমি বলল…
” ৫ মিনিট আমি রেডি হয়ে আসছি।
” তাই আমার সাথে ঘুরতে যাওয়ার এতো ইচ্ছে বুঝি?
ইছমি মুচকি হেসে ফেলল…
” আচ্ছা আস্তে ধিরে রেডি হয়ে নাও।
ইছমি দরজা খুলতেই মহিনি বলল…
” রেডি হয়ে নাও তাড়াতাড়ি ভাবি। আমি নিচে যাচ্ছি? তুমি আসো
মহিনি ও নিচে গিয়ে দেখে ইম্রেত আর কিমরান দাঁড়িয়ে আছে। সবার চোখ আগেই ইম্রেত এর দিক যাবে। কিমরান এর বড় ভাই হলে কি হবে যেমন সুন্দর তেমনি সেই লেভেল স্টাইল করে।
কিমরান কে ও অসম্ভব সুন্দর দেখাচ্ছে।
মহিনি গিয়ে কিমরান এর পাশে গিয়ে দাড়ালো।
আর বলল…
” বড় ভাইয়া কেমন আছো?
” ওয়েল তুমি?
” ভালো।
অনেক্ষন ধরে কিমরান আর মহিনি ভালোবাসার গল্প করছে। আর ইম্রেত গাড়িতে হেলান দিয়ে গেমস খেলছে। আর আশেপাশের মেয়ে গুলি তাকে গিলে খাচ্ছে। বেপারটা এখনো ইম্রেত খেয়াল করে নি।
তখনি ইম্রেত চোখ তুলে সামনে তাকিয়ে 😨😨হা হয়ে রয়েছে। তার সামনে যে আজ অন্য ইছমি।
চলবে………