#বিষাক্তময়_আসক্তি (The Villain 😈)
#Sumaiya_Akter_Mim
#পর্ব_৪০………..🌼
“সবুজ হলুদ কমিনিকেশন লেহেঙ্গা পরেছে আয়ানা তাঁর সাথে লম্বা চুলগুলো কে খোঁপা করে এতে সাদা রঙের কাঠগোলাপ লাগিয়ে দিচ্ছে ইরফান।।।হাতে বেশ কিছু রেশমী চুড়ি পরিয়ে দিয়েছে কপালে টিকলি পরিয়ে দিয়ে সেখানে টুপ করে চুমু খেয়েছে।। কোমরে রুপোর চেইন বিছা পরিয়ে সেখানে ডিপ কিস করেছে , ইরফানের প্রত্যেক স্পর্শে আয়ানা কেঁপে কেঁপে উঠছে। শক্ত হাতে ইরফানের সবুজ রঙের পান্জাবির কাঁধের কাছ ধরে রেখেছে।। ইরফান সোজা হয়ে আয়ানার দুই গালে হাত রেখে নাকে নাক ঘষে আলতো করে চুমু খেয়ে বললো,,,
—-একদম পরীর মতো লাগছে,আমার পরী। কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে।।।
আয়ানা আড়ালে লাজুক হেসে আড় চোখে ইরফানের দিকে তাকিয়ে লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেলল।কী ভয়ংকর দৃষ্টি তাঁর।।সেই নেশায় বুঁদ হওয়া ইরফানের দৃষ্টি। নেশা ভরা কন্ঠ বারবার শিহরণ তুলে আয়ানার ছোট মনকে।।
ইরফানকে আজ অসাধারণ লাগছে। তাঁর রূপের কথা বলে বুঝানো যাবে না।।ছেলেরা এতো সুন্দর হয়!এই ছেলে বরাবরই বেশি সুন্দর এককথায় কিউটের দোকান । আয়ানা মনে মনে প্রাউড ফিল করলো,এতো সুন্দর সুদর্শন পুরুষ কিনা তাঁর স্বামী।যাকে পাওয়ার জন্য সকলে মরিয়া হয়ে উঠে সে শুধু তাকে ভালোবাসে। ভাবতে আয়ানার মনের কোনে খুশির ঝলক ফুটে উঠে।।।
“ঝিকিমিকি আলোয় আলোকিত হয়েছে চারিপাশ। রং বেরঙের ফেয়ারি লাইট গুলো অসাধারন সুন্দর লাগছে।। সন্ধ্যা হওয়ায় সাথে সাথে একটা রমরমা পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।মেহেন্দী অনুষ্ঠান ঘরোয়া ভাবে হলেও বেশ সুন্দর এবং বড় ভাবে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।।স্ট্রেইজে চুপটি করে বসে আছে তুতুল তাঁর সাথে বসে আছে তাঁর কাজিন আর ফ্রেন্ডরা।।তুতুল তখনের কথা ভাবছে, তখন ইরফান তাকে যা বললো তা তাঁর মাথায় ঢুকছে না কিছু।।
“কিছুক্ষণ আগে”🌸
—-তোমাকে আমি এতো দিন ও কিছু করিনি কেনো তা অবশ্যই ভেবেছো। বাঁকা হেসে বলল ইরফান।।
ইরফানের কথা শুনে তুতুল গলায় বেয়ে ঘাম গুলো নিচে পরার আগে আলতো হাতে মুছে নিলো, শুকনো ঢোক গিলে মাথা নাড়িয়ে না বুঝালো।। ইরফান সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে পকেটে হাত গুজে বাঁকা হেসে বলতে লাগলো,,,,
—-তুমি আমার অনেক বড় উপকার করেছো তুতুল অনেক বড়! নিজের অজান্তেই। ইরফানের কথা কিছুই বুঝলো না তুতুল। ইরফান তুতুলের দিকে তাকিয়ে ডেবিল হাসি দিয়ে বললো,,,এই ইরফান খান যেমন চায় সকলে সেইভাবে চলে এর ব্যতিক্রম এখন পর্যন্ত হয়নি আর হবে ও না।আমার সাজানো খেলায় তুমি আমাকে আমার লক্ষ্য পৌঁছাতে সাহায্য করেছো,ধরে নাও খেলার মোহরা ছিলে।।যা তুমি করেছো তা তুমি করোনি তোমাকে করতে বাধ্য করেছি আমি বলে অদ্ভুত ভাবে হাসলো ইরফান আর ইরফানের কথা শুনে তুতুল জাটকার উপর জাটকা খাচ্ছে।সব মাথার দুই হাত উপর দিয়ে যাচ্ছে।।তুতুল আবাক হয়ে দাঁড়িয়ে যায়,
মনে মনে বুঝার চেষ্টা করছে কিন্তু বরাবরই ব্যার্থ হচ্ছে। ইরফান তুতুলের কানের কাছে এসে বললো,, তোমার শাস্তি অন্য কেউ পেয়ে ফেলেছে তাও আবার সবচেয়ে জঘন্য কঠিন ভাবে পেয়েছে এর থেকে কঠিন শাস্তি এখনো এই পৃথিবীতে তৈরি হয়নি ঠিক এইরকম শাস্তি পেয়েছে।।।ইরফান কথাটা বলে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বাঁকা হেসে বলল,ইনজয় ইউর লাইফ। বিয়েতে মনোযোগ দাও এসব কথা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেল বলে রুম থেকে বড় বড় পা ফেলে চলে যায় আর তুতুল সেখানেই বসে পরে আর ভাবতে লাগে কাকে শাস্তি দিয়েছে ইরফান আর কেমন শাস্তি দিয়েছে। লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম।।।
“সবাই আসার সাথে সাথে মেহেন্দী অনুষ্ঠান শুরু হয়ে যায়।।আয়ানা ইরফানের হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছে আর ইরফান মোবাইলে কথা বলছে।।আয়ানা ইরফানকে বলেছে তুতুলের পাশে গিয়ে বসবে কিন্তু ইরফান বলেছে একদম দৌড়াদৌড়ি করবে না আমার পাশে দাড়িয়ে থাকো যেখানে যেতে হবে আমি নিয়ে যাব।।আয়ানার আর কি মুখ ভেঙ্গিয়ে ইরফানের হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছে।।।বেশ কিছুক্ষণ পরে ইরফান কথা বলে আয়ানাকে নিয়ে তুতুলের কাছে যায়।।তুতুলের সাথে সবাই একএক করে কথা বলছে।ইরফানকে দেখে তুতুল তখনের কথা মনে পরলো কিছুই তাঁর মাথায় এখন পর্যন্ত আসছে না সে আর মাথা না ঘামিয়ে সবার সাথে হেসে হেসে কথা বলছে।।।আয়ানা আসলে তাকে পাশে বসতে বললে আয়ানা ইরফানের দিকে তাকায় ইরফান শান্ত ভাবে তাকিয়ে আছে তা দেখে আয়ানা ঠোঁট উল্টিয়ে তুতুলের দিকে তাকালো,তুতুল হেসে দিলো আয়ানার ফেইস দেখে।। ইরফান পুনরায় আয়ানার হাত ধরে নিয়ে যেতে নিলে আয়ানা ইরফানের হাত ধরে আটকে দেয়। ইরফান একবার আয়ানার ধরে রাখা হাতের দিকে তাকিয়ে আয়ানার মুখের দিকে তাকিয়ে ভ্রু নাচিয়ে জিজ্ঞাসা করে কি হয়েছে?
—-আমার ক্ষুধা লেগেছে!ঘার বাঁকিয়ে।।
আয়ানার এইরকম কিউট ফেইস দেখে ইরফান মুচকি হেসে আয়ানার গালে হাত রেখে বলল,,
—-কি খাবে মেরি জান আমি গার্ডদের দিয়ে আনিয়ে দিচ্ছি।।
—-আপাজত পায়েস খেতে চাই মৃদু হেসে।।।
—-ওকে! একজন গার্ডকে ডেকে পায়েস আর জুস নিয়ে আসতে বলে।।।গার্ড খাবার নিয়ে আসলে ইরফান আয়ানাকে একটা সোফায় বসিয়ে নিজে আয়ানার পাশে বসে পরে তারপর খুব সাবধনতার সাথে আয়ানাকে খাইয়ে দিতে লাগল।আয়ানাও ধীরে ধীরে খাচ্ছে যাতে ড্রেসে না পরে যায়।। ইরফান আয়ানাকে খাইয়ে দিয়ে মুখ মুছে দিলো।।
—-এবার ঠিক আছে!
—-হুম☺️
ইরফান আয়ানার দিকে তাকিয়ে হেসে আয়ানার হাত ধরে ছাদে নিয়ে গেলো।।।।
——————————————————————
“দুই হাত ভর্তি মেহেদী দিয়ে বসে আছে তুতুল বারবার হাত উল্টিয়ে মেহেদী দেখছে আর আনমনে হাসছে।। কালকের পর থেকে সে সম্পূর্ণ ভাবে আকাশের হয়ে যাবে ভাবতেই মনে আলাদা শিহরণ বয়ে যাচ্ছে। কিছুক্ষণ আগে ভিডিও কলে কথা হয়েছে আকাশের সাথে তা নিয়ে সবাই অনেক মজা করেছে তাই বাধ্য হয়ে তাড়াতাড়ি করে কল কেটে দিয়েছে সে তাঁর সাথে তো আকাশের লাগামহীন কথা আছেই লজ্জায় লাল হয়ে গিয়েছে সে।।।চারিপাশে চোখ বুলিয়ে আয়ানাকে খুঁজে তুতুল কিন্তু না নেই আয়ানা তা দেখে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে সবার দিকে তাকিয়ে দেখে সবাই হাসি মজা করে মেহেদী দিচ্ছে।।এরি মাঝে শীতল এসে নিজের হাতে মেয়েকে পায়েস আর হালকা খাবার খাইয়ে দিয়ে যায়।। কালকের পর থেকে তুতুলও শশুর বাড়ি চলে যাবে আয়ানা তো আগেই চলে গিয়েছে এখন তুতুল চলে গেলে সম্পূর্ণ বাড়িতে তিনি আর জায়েদ আহাম্মেদ একাই থাকবেন কয়েকজন র্সাভেন্ট নিয়ে।।। মেয়েদের ছেড়ে একা কি করে থাকবেন তাঁরা ভেবেই বুক চিরে দীর্ঘ নিঃশ্বাস আসে।।তুতুলতো যাই আসতে পারবে আকাশ বলেছে তুতুলের যখন ইচ্ছে করবে তাঁর বাবা মার কাছে চলে আসতে পারে আর তুতুলের শশুর বাড়ি বেশি দূর নয় যখন ইচ্ছে মেয়েকে দেখতে পারবে কিন্তু আয়ানা!আয়ানাকে তো আর যখন ইচ্ছে দেখতে পারবে না কারণ এতো দূরে বারবার যাওয়া সম্ভব না।।।।।লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম।।
“ছাদের রেলিংয়ের সাথে ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে আয়ানা আর পেছনে তাঁর চুলে মুখ গুজে আছে ইরফান।।বেশ কিছুক্ষণ এইভাবে দাঁড়িয়ে থাকার পর আয়ানা ধিরে গলায় বললো,,,,
—-আমরা এখানে কেনো এসেছি! নিচে সবাই আছে আ,,,,,,,
—-হুসসসস।আয়ানাকে সামনের দিকে ঘুরিয়ে আয়ানার কোমরে হাত রেখে নিজের সাথে মিশিয়ে বললো,আমি আমার পরীকে দেখতে চাই এই চাঁদের আলোয়ে আয়ানার গালে হাত রেখে নেশা ভরা কন্ঠে বলল।।।
আয়ানা আর কিছু বললো না মাথা নিচু করে রাখল। ইরফান একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তাঁর পরীর দিকে।যতো দেখে ততই দেখার ইচ্ছে জাগে , নেশা বারিয়ে দেয়।। টুং করে আওয়াজ হতে ইরফান আয়ানার গাল থেকে হাত নামিয়ে মোবাইলের দিকে তাকালো।।।। মোবাইলটা রেখে আয়ানার দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে আয়ানাকে উল্টো দিকে ঘুরিয়ে আয়ানার চোখ দুটো হালকা ভাবে চেপে ধরল।।আয়ানা কিছু বলতে যাবে তাঁর আগেই ইরফান আয়ানাকে থামিয়ে দিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে গেল।। ছাদের একদম শেষ কর্নারে এসে দাঁড়ালো দু’জনে।
“বাতাসের সাথে দুল খাচ্ছে আয়ানার অবাধ্য চুল গুলো, খোঁপা করা চুল গুলো থেকে বাতাসের ঝাপটানিতে বেশ কিছু চুল বের হয়ে ইরফানের চোখে মুখে লাগছে।ইরফান মুগ্ধ নয়নে তাঁর প্রেয়সীর দিকে তাকিয়ে আছে।।।
আয়ানা বড় বড় চোখ করে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।।।অবাক দৃষ্টিতে একবার নিচে তো একবার ইরফানের দিকে তাকাচ্ছে।। নিচে তাদের বাড়ির পেছন সাইটের ছোট সুইমিং পুলটায় হাজারো প্রদিপ আর লাল গোলাপের পাপড়ি দিয়ে ভরপুর হয়ে আছে।। বাতাসের সাথে তাল মিলিয়ে ঢেউ তুলছে পানিতে আর তাঁর সাথে তাল মিলিয়ে প্রদিপ আর ফুলের পাপড়ি গুলো নড়ে উঠছে।। ফুলের মাতাল করা গন্ধে মৌ মৌ করছে চারিপাশ।। লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম।।
আয়ানা আবাক নয়নে ইরফানের দিকে তাকাতে ইরফান মুচকি হেসে আয়ানার মুখটা ঘুরিয়ে সামনের দিকে ঘুরিয়ে আকাশের দিকে তাকাতে বললো।।
আকাশের দিকে তাকিয়ে আয়ানার মুখে একচিলতে হাসি ফুটে উঠে।।
“লাল হলুদ সাদা রঙের ফানুস উড়চ্ছে আকাশের বুকে।।অল্প সময়ের মাঝেই অসংখ্য ফানুসে পূর্ণ হয় চারিপাশ।।আয়ানা অবাক হয়ে দেখছে ফানুস গুলোকে কতো সুন্দর লাগছে। ফানুস গুলো উরতে উরতে অনেক দূরে চলে যায় তখন খালি আকাশের বুকে ভেসে ওঠে আই লাভ ইউ মেরি জান!লিখাটা দিকে তাকিয়ে থমকে যায় আয়ানা।অবাক চোখে তাকিয়ে আছে লিখাটার দিকে তখন পেছন থেকে ইরফান আয়ানাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ফিসফিস করে বলে উঠলো,,,
—-আই লাভ ইউ মেরি জান! খুব ভালোবাসি আমার পিচ্চি পরীকে, আমার #বিষাক্তময়_আসক্তিকে ।।দিবে কি তোমার ছোট্ট মনে একটু জায়গায়। নেশা ভরা কন্ঠে বললো ইরফান।। এইবারও কোনো উত্তর পাবে না জানে তবুও প্রতিদিন নিয়ম করে নিজের এই অসীম ভালোবাসার কথাটা বলে।। উত্তর না পেলে কি হবে থাক না তাঁর একার ভালোবাসাই তাদের জন্য যথেষ্ট।। তাঁর নিজের জানকে প্রতিদিন নতুন ভাবে নিজের ভালোবাসার কথাগুলো বলতে অন্যরকম ভালো লাগে।।। কিন্তু কিছুক্ষণ পর আয়ানার মুখের জবাব শুনে ইরফান থমকে যায় অবাক চোখে আয়ানার দিকে তাকিয়ে বলল,,,
—-কী বললে জান? আবার বলো।।
—-না মানে আমার আরো কিছুদিন সময় চাই মাথা নিচু করে।।
ইরফান আয়ানার এমন অপ্রত্যাশিত কথা শুনে খুশিতে আয়ানাকে ঝাপটে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নেয়।।আয়ানা তাদের সম্পর্কটা নিয়ে ভাবছে, কিছু ফিল করছে এটাই অনেক। ইরফান ভেবেছিল আয়ানার মনে জায়গা করতে তাকে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হবে,এখন অবশ্য কম পুড়াতে হয়নি তাকে।।।
“নিচে এসে আয়ানা ঘুরে ঘুরে সবার হাত দেখতে লাগলো,সবার মেহেদী পরা শেষ অনেকেই আবার এখনো দিচ্ছে।।। ইরফানকে তখন সম্পর্কটা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আর কিছু সময় চাওয়াতে ইরফান তাকে সেই যে বুকে নিয়েছে আর ছেড়েছে গনে গনে এক ঘন্টা পর।। তাকে বুকে নিয়ে কি কি যেনো বিরবির করেছে তা কিছুই আয়ানা বুঝতে পারেনি।।সবার হাতে সুন্দর সুন্দর মেহেদী দেওয়া দেখে তাঁর মন খারাপ হয়ে যায়।। তাঁর নিজের মেহেন্দী অনুষ্ঠানে মেহেদী নিয়ে যা সিনক্রেট হলো ইরফান কখনো আর জীবনে তাকে মেহেদী পরতে দিবেনা।।। আয়ানা তুতুলের হাতের মেহেদী টার দিকে ঠোঁট ফুলিয়ে তাকিয়ে রইল আয়ানাকে তুতুল কিছু বলতে যাবে তখন তাঁর আয়নার মেহেন্দী রাতের কথা মনে পড়ে যায় তারপর আর সাহস জুগিয়ে কিছু বলে না শুধু অসহায় ভাবে বোনের দিকে তাকিয়ে থাকে।।।আয়ানা সবার হাত দেখে ইরফানের কাছে যায়। ইরফানের ইম্প্রটেন্ট কল আসায় সে নিচে নেমে আয়ানাকে তুতুলের পাশে বসিয়ে দিয়ে যায় আর একদম এখান থেকে নড়াচড়া না করতে বলে যায় ইরফান তাদের থেকে কিছুটা সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছে আর বারবার আয়ানার দিকে তাকাচ্ছে।আয়ানা নিজের লেহেঙ্গার নিচের পার্ট দুই হাত দিয়ে উঁচু করে ইরফান যেদিকেন সেদিকে পা বাড়ালো।।।।।
লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম।।
“আয়ানাকে এগিয়ে আসতে দেখে ইরফান কথা শেষ করে মোবাইলটা রেখে আয়ানার দিকে তাকিয়ে ভ্রু নাচিয়ে জিজ্ঞাসা করে কি হয়েছে?
—-আমিও মেহেদী দিতে চাই। সবাই কতো সুন্দর করে মেহেদী দিয়েছে। আমি দিবো না মেহেদী ঠোঁট ফুলিয়ে।।
—-না তুমি মেহেদী দিবে না। তোমার হাতে যদি গতবারের মতো আবার ইফেক্ট করে ! না একদম না তুমি মেহেদী দিবে না।চোখ মুখ শক্ত করে।।
—-দেই না প্লিজ। আমার মেহেদী দিতে খুব ভালো লাগে।। সবাই তো দিয়েছে কিছু হবে না মাথা নিচু করে।।
—-আমি বলেছি যখন না তাঁর মানে না।। আমার পছন্দ না আমার কথার বাহিরে কথা বলা আমি তোমার কষ্ট হবে এমন ছোট বড় কোনো রকম রিস্ক নিতে চাই না বুঝতে পেরেছে কিছুটা চিৎকার করে।।
ইরফানের চিৎকার শুনে আয়ানা ভয়ে কিছুটা পিছিয়ে যায়।।আয়ানার ভয়ে শরীর কেঁপে উঠে নাকটা সেকেন্ডের মাঝেই লাল হয়ে গিয়েছে ঠোঁট দুটো কাঁপছে এই বুঝি কেঁদে দিবে দিবে অবস্থা।।।
আয়ানাকে পিছিয়ে যেতে দেখে ইরফানে হুঁশ আসে সে কি করছিলো।।সে আবার তাঁর জানের সাথে রুড বিহেভ করেছে আবার জান তাকে ভয় পাচ্ছে ভেবে হাত শক্ত করে নিজের রাগ কমানোর চেষ্টা করে।এই রাগ তাকে বারবার তাঁর জানের কাছে ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।। নিজের ডান হাত দিয়ে চুল গুলো শক্ত করে ধরে টেনে নিজেকে শান্ত করে আয়ানার দিকে এগিয়ে গিয়ে আয়ানাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।। ইরফান আয়ানাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরতে আয়ানার অবাধ্য চোখের জল গুলো বেরিয়ে আসতে লাগলো।। হেঁচকি তুলে কাঁদছে। কাঁদছে বললে ভুল হবে আয়ানা পণ করেছে আজকে কাঁদতে কাঁদতে সাগর বানিয়ে ফেলবে আর সেই সাগরে ইরফানকে চুবিয়ে মারবে।যেই কথা সেই কাজ ধীরে ধীরে কান্নার পরিমাণ কমার পরিবর্তে বেরেই যাচ্ছে।। ইরফান অনেক কিছু বলে আয়ানার কান্না থামানোর চেষ্টা করছে কিন্তু আয়ানা থামছিই না।। ইরফান আয়ানার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে আর বলছে,,
—হুস মেরি জান আই এম স্যরি তো।আর কতো কাঁদবে তুমি তো জানো তোমার চোখের পানি আমার সহ্য হয় না রাগ উঠে যায় চোখের পানি দেখলে এখন তুমি কান্না থামাবে নাকি আমি আমার ভাষায় কান্না থামাবো বলে বাঁকা হাসলো।।ইরফানের কথা শুনে আয়ানা ইরফানের বুকে মাথা রাখা অবস্থায় মাথা নাড়িয়ে না বুঝালো যার মানে সে কান্না থামাবে না।তা দেখে ইরফান আরেকটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললো,, তাহলে আমি আমার ভাষায় চুপ করাবো দুষ্টু হেসে।আয়ানা এবার ও আগের মতো জোরে জোরে মাথা নাড়িয়ে না জানালো।। ইরফান আয়ানার কান্ড দেখে হেসে দিল আয়ানার কপালে ঠিপ কিস করে আয়ানাকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরল।।।বেশ কিছুক্ষণ পর আয়ানার কান্না বন্ধ হয়ে যায় এখন শুধু হেঁচকি তুলছে। ইরফান আয়ানার মাথা উঁচু করে আয়ানার চোখের পানি মুছে দিয়ে চোখের পাতায় চুমু খেয়ে দুই গালে চুমু খেয়ে জড়িয়ে ধরে মোবাইল বের করে গার্ডকে কল করে ন্যাচারেল মেহেদী নিয়ে আসতে বলে যাতে কোন প্রকার ক্যামিকেল দেওয়া নেই।।।।
“কিছুক্ষণের মাঝেই গার্ড গাছের পাতা মেহেদী পেস্ট করা কোনো ক্যামিকেল বিহীন চারটা টিউবে করে নিয়ে আসে।। মেহেদী নিয়ে আসতে ইরফান আয়ানাকে নিয়ে সোফায় বসে পরে।।দুজন মেহেদী আর্টিস্ট কে বললে তাঁরা আয়ানার দুই হাতে মেহেদি পড়াতে শুরু করে।ইরফান আয়ানার পাশে বসে আছে।। কিছুক্ষণ আগের আয়ানার কান্না মাখা মুখ জেনো নিমিষেই উধাও হয়ে গেল।।।আয়ানাকে দুই হাত ভর্তি মেহেদী লাগিয়ে দিয়ে মেহেদী আর্টিস উঠে যেতে নিলে শতীল আহাম্মেদ মেহেদী আর্টিস্ট কে ডেকে বলে হাতে ইরফানের নাম লিখে দিতে। লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম।। মেহেদী আর্টিস্ট দুই হাতে সুন্দর করে ইরফানের নাম লিখে দেয়।।আয়ানা হাতের দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসলো।।শীতল আয়ানার মাথায় হাত বুলিয়ে মুচকি হেসে সেখান থেকে চলে যায়।। তিনি পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় মেয়ের প্রতি মেয়ে জামাইয়ের ভালোবাসা দেখে থেমে যায় মেয়ের মুখের হাসি মায়ের কাছে অনেক মূল্যবান এর থেকে বেশী কোনো মা কিছুই চায় না।।আয়ানা মৃদু হেসে ইরফানের দিকে হাত বাড়িয়ে দেয় ইরফান আয়ানার হাতের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে দুই হাতের তালুতে হাল্কা ঠোঁট ছুঁইয়ে দেয়।।।।
“সবার হাতের মেহেদীর রং অসম্ভব সুন্দর হয়েছে।।আয়ানা ঘুরে ঘুরে সবার হাত দেখছে। সবাই এই দিয়েছে তো এই ধুয়ে ফেলছে সবার মেহেদীর রং লাল টুকটুকে হয়েছে।।আয়ানা হাত ধুতে চাইলে ইরফান নিষেধ করে পাতা মেহেদী হওয়ায় রং হতে সময় নিবে তাই হাত না ধুয়ে সবার হাতের মেহেদীর রং দেখছে।।।
শীতল এসে সবার উদ্দেশ্যে করে বলে উঠে,,
—-সবার হাতে তো ভালো রং হয়েছে কিন্তু আমার আয়ানার হাত থেকে কারোর হাতে ভালো রং হবে না।। সবাইকে কতো বললাম প্রকৃতির তৈরি মেহেদী দিতে কেউ শুনো নি সবাই রং মেখেছো কালকে সকালে খাবারের সাথে রংও খেয়ে ফেলবে সবাই দেখো।।যার হাতে বেশি রং হবে এবং বেশি দিন থাকবে তাঁর স্বামী তাকে বেশি ভালোবাসবে বুঝেসো এটা আমার দাদি জান বলতেন।।আর তুতুল, তুতুলকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলো তোমাকে আমি বললাম তুমি আমার কথা শুনোনি তো এখন সাবধানে হাত রাখবে যাতে এক সপ্তাহ হাতের রং না যায় বুঝেসো।।।
শীতলের কথায় তুতুল মাথা নাড়ালো।।।আয়ানার একটা কাজিন বলে উঠলো,,,
—-আয়ানার হাতের রং তো ভালো হবে এবং সবচেয়ে বেশি রং হবে কারন জিজু আয়ানাকে অনেক ভালোবাসে যার তুলনা হয় না। বলে সবাই একসাথে হেসে উঠলো।।।
তাদের কথা শুনে আয়ানা লজ্জা মাথা নিচু করে ফেলে আড়চোখে ইরফানের দিকে তাকিয়ে দেখলো ইরফান পকেটে হাত ঢুকিয়ে বাঁকা হেসে তাঁর দিকে তাকিয়ে আছে।।।।আয়ানা তাড়াতাড়ি মাথা নিচু করে ফেলল তাঁর ভিষন লজ্জা লাগছে লজ্জার কারনে গাল দুটো লাল টকটকে হয়ে গিয়েছে।। ইরফান আয়ানার দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে আয়ানার হাতে হালকাভাবে ধরে উপরে নিজেদের রুমে নিয়ে গেল সবাই তাদের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মুখ চেপে হাসছে।।।।
(কালকে রাতে গল্প লিখতে লিখতে ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম তাই গল্প পোস্ট করতে পারিনি।। যতোটুকু লিখেছিলাম সবটুকু ডিলেট হয়ে গিয়েছে তা নাহলে আরো আগে গল্প পোস্ট করতাম।। আজকের পর্বটা কেমন হয়েছে সবাই গঠন মূলক মন্তব্য করবেন ধন্যবাদ ❤️)
#To_be_continued……🌼
#Happy_Reading
লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম।