বৃষ্টিশেষে প্রেমছন্দ পর্ব-১

0
7230

‘দেখুন, আমি আপনাকে বিয়ে করতে পারবো না। আই এম প্রেগন্যান্ট।’

নিঃসংকোচে কথাগুলো বলার পর টিকলির বোধ হলো সে খুব বেহায়াপনা করে বলে ফেলেছে। তার উচিত ছিলো একটু থেমে থেমে, ইতস্ততবোধ করে, লজ্জায় কুকড়ে গিয়ে কথাটা বলা। ‘অভিনয়ে সে যে বড্ড কাঁচা’ এটা বুঝে এলেই তার ভেতরটা খানিক ক্ষুব্ধ অস্বস্তিতে জর্জরিত হয়ে উঠলো সাথে আরো একটু গুটিসুটি মেরে বসলো।

সম্মুখে বসে থাকা মাস্ক পরিহিতা এই মেয়ে আরেকটু হলেই তার হবু বউয়ের ট্যাগ লাভ করতো। আর সেই মেয়ে কিনা বলছে, সে প্রেগন্যান্ট। আদর রাজ্যের বিস্ময়তা নিয়ে তাকালো সাথে রাগ হলো নিজের আপন সম্মানিত ব্ল্যাকমেইলার পিতা-মাতার উপর। আদরকে তারা এক প্রকার ঠেলে ঠুলে অহেতুক জোরাজুরি করে পাঠিয়ে দিয়েছে মেয়ে দেখতে। আর এসে শুনে এই মেয়ে প্রেগন্যান্ট! গম্ভীর কন্ঠে আদর বলল,

‘আপনি যে প্রেগন্যান্ট আপনার ফ্যামিলিকে জানিয়েছেন? না জানিয়েই এসে পরেছেন একটা ছেলেকে হেনস্তা করতে? আপনার কোনো আইডিয়া আছে আপনি আমার কতটুকু টাইম ওয়েস্ট করেছেন? চেম্বার রেখে আপনার সাথে দেখা করতে এসেছি।’

টিকলির নিরব মন হঠাৎ একটু জ্বলে উঠলো। এতো ভাব! কড়া গলায় কিছু শুনিয়ে দিতে চেয়েও সে নিজেকে সামলে নিয়ে বলল, ‘দেখুন, আমার বাড়ির লোক কেউ কিছু জানে না। আমার বয়ফ্রেন্ড ছিলো। সে কথা দিয়েছিলো আমাকে বিয়ে করবে। কিন্তু এক মাস থেকে সে উদাও।’

আদর রেসটুরেন্টের দামী কাঠের চেয়ারটাতে হেলান দিয়ে বসলো। ধোঁয়া উঠা কফিটাতে চুমুক দিয়ে গরগরে কন্ঠে বলে উঠলো, ‘কয় মাস প্রেগন্যান্সির?’

টিকলি চঞ্চল চোখে এদিক ওদিক তাকাতে থাকলো। যেনো সে কথাটা শুনেও শুনেনি এমন ভান। আদর আবার জিজ্ঞেস করলো। টিকলি দাঁত দিয়ে নখ খুটছে। শরীর মৃদু কাঁপছে। অপরিচিত একটা ছেলের সামনে এমন বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতিতে পরে তার উপস্থিত বুদ্ধি যেনো লোপ পেয়েছে। সে নখ কামড়াচ্ছে অবলীলায়। এই কথা তো তাকে শিখিয়ে দেওয়া হয়নি। এখন কি বলবে সে? আদর ভ্রু কুচকে বলল,

‘আশ্চর্য তো!’

মাস্ক পরা ওই শ্যামলা মুখশ্রীর ছোট ছোট চোখের কুচকুচে কালো চিকন ভ্রু জোড়া কুচকাতে দেখে টিকলির ভীতু মন ভয়ে থেমে গিয়ে আবারো তুমুল গতিতে লাফাতে লাগলো। সে আমতা আমতা গলায় বলল, ‘১৫ দিন।’

আদর চোখ কপালে তুলে তাকালো। টিকলি নিজেও হা হয়ে গেলো নিজের এহেন বোকামিঠাসা বুদ্ধিরসের ছটায়। আদর আপনমনে বলল, ‘আনবিলিভেবল।’

টিকলি ঠিক ঠাক হয়ে বসলো। বার কয়েক জোরে শ্বাস টেনে নিজেকে এবনরমাল থেকে নরমাল মানুষে পরিণত করার প্রচেষ্টা চালানো হলো। কিন্তু বিশেষ কোনো লাভ হচ্ছে বলে মনে হলো না। মাস্কের আড়ালে টিকলির ভাবভঙ্গি ধরতে না পেরে আদরের মন বিরক্তিতে কাটা হয়ে রইল। টিকলি ঠকঠক করে কাঁপা দুটো হাতে এগিয়ে দিলো একটা ফাইল। একের পর এক ঢোক গিলে তুতলিয়ে বলল, ‘এতে রিপোর্ট আছে চাইলে দেখে নিতে পারেন।’

আদর ফাইলটা নিতে গিয়েও নিলো না। নিজের মাস্কটাকে ঠিক করে চঞ্চুশ গলায় বলল, ‘লাগবে না।’

আরেকটু হলেই উড়ে চলে যাচ্ছিলো টিকলির প্রাণপাখি। হৃদপিন্ডের প্রদীপ টা ধপ করে নিভে গিয়েও আবার ঝপাৎ করে জ্বলে উঠলো। আদর কিছু একটা বলছিলো। টিকলি ধুরুধুরু বুকে চোরা চোখে তাকিয়ে শুনলো।

সি ব্লু রঙের সানগ্লাসটা চোখে পরতে পরতে আদর ঠেস মারা গলায় বলল, ‘ভাগ্যিস পনেরো দিনের প্রেগন্যান্সিতে এসেছেন। ডেলিভারি পেইন নিয়ে আসলে আমি কি করতাম বলুন তো?’

টিকলির ভিতু মনটা এবার বিক্ষোভে বিক্ষিপ্তভাবে চলতে শুরু করলো। ভোঁতা মস্তিষ্কে ধপ করে জ্বলে উঠলো আগুন। সেই আগুনের ছটা বেরিয়ে আসতে লাগলো চোখ থেকে। লোকটাকে সে নিতান্তই নম্র ভদ্র এবং সুশীল ভেবেছিলো। কিন্তু শেষ মুহুর্তে এসে ঠিক একটা গা জ্বালানি কথা বলে নিজের আসল পরিচয়টা দিয়েই দিলো। টিকলি আঙ্গুল উঁচিয়ে বলল, ‘দেখুন, মিস্টার মজা করবেন না।’

আদর শার্টের হাতা ফোল্ড করায় ব্যস্ত ছিলো। টিকলির কথায় সে মাথা উঁচিয়ে তাকালো। এরপর সন্দিহান গলায় বলল, ‘সরি?’

টিকলি আবারো ক্ষুব্ধ গলায় বলল, ‘দেখুন, একদম ন্যাকা সাজবেন না। এখন কিচ্ছু বুঝেন না তাই না? একটু আগে কি বললেন?’

আদর চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো কিন্তু এই বুদ্ধিমানের রাগের ছটা দেখে সে টেবিলে ঠেস দিয়ে দাড়ালো। মজা লুফে নেওয়ার মতো করে বলল, ‘বারবার বলছেন দেখুন দেখুন। কিন্তু কিছু দেখাচ্ছেন ই না।’

টিকলি চোখ দুটো বিস্ফোরিত করে তাকালো। ঠোঁট দুটো নিজ দায়িত্বে একটা থেকে আরেকটা আলাদা হয়ে কিঞ্চিৎ ফাঁক হয়ে গেলো। এতোক্ষণের মিনমিনে গলা চড়ে গেলো খানিক উঁচুতে।

‘আপনি তো ভারী অসভ্য।’

আদর কিছুটা অবাক হওয়ার ভান করে বলল, ‘আমি অসভ্য?’

‘অবশ্যই।’

‘আপনি তাহলে মহা অসভ্য। বিয়ে করতে এসে বলছেন আপনি প্রেগন্যান্ট। কেনো বাসায় জানাতে কি হয়েছিলো? এখন বিয়েটা তো ভাঙতে হবে আমার। সব দোষ তো এসে পরবে এবার আমার কাধে তাই না?’ আদর বলল দাঁতে দাঁত কিড়িমিড়ি করে।

টিকলি আবারো ফুসে উঠে বলল, ‘এই আপনি আমার সাথে পায়ে পা লাগিয়ে ঝগড়া করছেন কেনো হ্যাঁ?’

বড় বড় দুটো চোখে চেয়ে নিজের দিকে আঙ্গুল দেখিয়ে আদর বলল, ‘আমি ঝগড়া করছি?’

‘অবশ্যই।’

‘ওকে ফাইন। আমি বিয়েতে হ্যা বলছি। বাসায় গিয়ে বলবো মেয়ে পছন্দ হয়েছে।’

টিকলির অবাকতার চোখে তাকালো। রাগচটা আগুনটা ধপ করে নিভে গিয়ে ভস করে জ্বলে উঠলো।

‘আপনি ভুলে যাচ্ছেন আমি প্রেগন্যান্ট।’ দাঁত পিষে টিকলি বলল।

‘পনেরো দিনের প্রেগন্যান্ট মেয়েকে বিয়ে করতে আমার কোনো আপত্তি নেই। ডেলিভারি পেইনের মেয়ে হলে না একটা কথা ছিলো।’ আদরের নিরুক্তর ঠোঁটের কোণে দুষ্টু হাসির বাণী।

পরিকল্পিত কর্মসূচি বাস্তবায়ন বিঘ্ন হওয়ার পথে আর সামনে দাঁড়িয়ে থাকা নিতান্তই অভদ্র একটা পুরুষের গা জ্বালানো এহেন কথায় টিকলি রাগী গলায় বলে উঠলো, ‘আপনি কিন্তু বেশি বেশি করছেন। বারবার এক কথা বলছেন কেনো?’

‘এবার যখন আমি বিয়েতে রাজি হবো তখন বুঝবেন বেশি বেশি কাকে বলে।’

চোখ বন্ধ করে রাগ নিয়ন্ত্রিত করলো টিকলি। কিছুক্ষণ পর হঠাৎ মিস্টি গলায় বলল, ‘দেখুন…সরি শুনুন ভাইয়া, আমি তো প্রেগন্যান্ট আর আমি আমার বয়ফ্রেন্ডকে প্রচুর ভালোবাসি। প্রচুর..’

‘একি! একেবারে ভাইয়া? বলি, চোখ বন্ধ করলে বুঝি রাগ কন্ট্রোলে আসে?’

আদর যে ইচ্ছেকৃত ভাবে এমন মজা নিচ্ছে তা টিকলি ভালোই বুঝতে পারছে। অচেনা একটা ছেলের কাছে এরকমভাবে হেনস্তা হওয়ায় অপমানে ভেতরে কাটা হয়ে রইল তার। দাঁত কিড়িমিড়ি করে সে বলল,

‘অসহ্য! আপনি কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত ফাজিল। এর জন্যেও আমি বিয়েটা বাতিল করতে পারি আপনি জানেন?’

আদর ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে কাধ ঝাকিয়ে বলল, ‘তো বাতিল করুন। আপনি কি ভাবছেন আপনাকে বিয়ে করার জন্য আমিও ছ্যাকা পেইন নিয়ে পাগল হয়ে ঘুরছি?’

‘করবোই তো। আজ ই গিয়ে বাসায় বলছি, আপনাকে আমি বিয়ে করবো না।’

‘আপনার পরিবার মানবে?’

‘কেনো মানবে না?’ চোরা চোখে তাকিয়ে বলল টিকলি।

‘না, তাহলে কষ্ট করে আপনার আর পনেরো দিনের প্রেগন্যান্সির ভর বয়ে বেড়াতে হতো না।’ কেটে কেটে কথাগুলো বলল আদর।

টিকলি আড়ালে চোখ মুখ কুচকে জিহবা কাটলো। ছেলেটা কি বুঝে গেলো কোনোমতে যে টিকলি মিথ্যা বলছে? বুঝলেও কীভাবে বুঝলো? টিকলি কি পনেরো দিন অনেক বেশি বলে ফেলেছে? ধ্যাত, এসব কি বোকা বোকা ভাবনা ভাবছে সে। ভাবনার সুতো কাটলো আদরের আরো একটি ঠেস মারা কথায়।

‘আফটার অল পনেরো দিনের প্রেগন্যান্সি! কত কষ্ট! একদম ডেলিভারি টাইমে ব্যথা উঠছে উঠছে কিন্তু উঠছে না তেমন আতংকিত এক কষ্ট! বেচারা আপনার জন্য আমার খারাপ লাগছে।’ আদর বলল দুঃখে কেদে ভাসানোর মতো মুখ করে।

‘ইউ আর জাস্ট ইম্পসিবল।’ অসহযোগ গলায় বলল টিকলি। আদর হাসলো ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে।

‘হোপার (Hoper)’ বলেই খয়েরি রঙের ব্যাগটা কাধে নিয়ে টিকলি চটপট জায়গা ছাড়লো। টিকলি চলে যাওয়ার কিছুক্ষন পর ওয়ার্ড টা ধরতে পেরে আদর চোখ বড় বড় করে তাকালো সাথে বিরবির করে বলল,

‘আমাকে ফালতু বলল?’

______________________

খাবার টেবিলে এখন টুংটাং শব্দ। ডাইনিং রুমের সাইডের বড় থাই গ্লাসটা খুলে দেওয়া হয়েছে অনেক্ক্ষণ আগে। হুরমুড় করে ডুকছে ঘরে ঠান্ডা বায়ু। বায়ুতে মিশে আছে পোড়া মাটির গন্ধ। আজিম খান বড় ছেলের মুখপানে একবার তাকালেন। ছেলে তার মাশাল্লাহ নম্র ভদ্র এবং সুপুরুষ একজন ডাক্তার। ছেলেকে আজ ধরে বেধে পাঠিয়েছিলেন মেয়ে দেখতে। কিন্তু কি হলো কে জানে?

আজিম খান মুখ উপরে তুলে স্ত্রী মনোয়ারা খানের দিকে তাকিয়ে ইশারা করলেন। মনোয়ারা খান তার পক্ষ থেকে উল্টে স্বামীকে আরো একটি ইশারা পাঠিয়ে দিলেন। আজিম খান রাগান্বিত চোখে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলেন স্ত্রীর পানে। মনোয়ারা খান সেদিকে তোয়াক্কা না করে ছেলেদের খাতির যত্নে ব্যস্ত। প্লেটে আবারো টুংটাং চামচের শব্দ তুলে ব্যারিস্টার আজিম খান গমগমে গলায় বললেন,

‘মেয়ে দেখতে গিয়েছিলে?’

আদর মুখ তুলে তাকালো। এরপর আবার চোখ নিচে নামিয়ে ছোট্ট করে বলল, ‘হুম’

‘কেমন লাগলো না লাগলো কিছুই তো বললে না?’

‘বলার মতো কিছু নেই। পছন্দ হয়নি আমার।’

আজিম খান অবাক চোখে তাকালেন। ক্ষন সময় পর শক্ত কন্ঠে বললেন, ‘কিহহ? মেয়ে তো মাশাল্লাহ ভালোই সুন্দর। কথাবার্তাও কি নম্র ভদ্র। তোমার পছন্দ কেনো হলোনা? ‘

খাবার শেষ করে টিস্যু দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে আদর বলল, ‘মেয়ে সুন্দর হলেই তো আর হলো না। প্রেগন্যান্ট মেয়েকে তো আর আমি বিয়ে করতে পারিনা তাই না?’

গলায় ঝাল আটকে কাশি উঠে গেলো পাশে বসে থাকা ছোট ভাই আর্দ্র এর। সে ল’ নিয়ে পড়াশোনা করছে। দু’ভাইয়ের মেধাই আল্লাহর রহমতে মারাত্মক ভালো। যদিও আর্দ্র বাড়াবাড়ি রকমের দুষ্ট। আজিম খানের মুখটা হয়ে গেছে হা। মনোয়ারা খান ছোট ছেলেকে পানি খাওয়াতে খাওয়াতে বললেন, ‘কি বলছিস এসব? পাগল হলি নাকি?’

টেবিল ছেড়ে উঠে দাড়াতে দাড়াতে আদর বলল, ‘মেয়েটা নিজের মুখেই বলেছে সে পনেরো দিনের প্রেগন্যান্ট।’

আজিম খান এবং মনোয়ারা খান বিস্ময়ের সাগরে হাবুডুবু খেতে লাগলেন। পনেরো দিনের প্রেগন্যান্ট?মনোয়ারা খান স্বামীর দিকে রাগী চোখে তাকালেন। যার অর্থ খোঁজ খবর না নিয়েই এতো আগ বাড়ানোর কি দরকার ছিলো? আদর নিজের ঘরে চলে গেলো। পরিবেশে এখন আগাম ঝড়ের পূর্বাভাস। তাই আস্তে করে কেটে পরলো আর্দ্রও।

‘ক্লিনিক্যাল নিউরোলজি’ বইটা নিয়ে উল্টে পাল্টে দেখছে আদর। সে পেশায় একজন নিউরোলজিস্ট সাথে সরকারি হাসপাতালের লেকচারার।

ঘরের দক্ষিণা জানালাটা খোলা। হাওয়ায় হাওয়ায় ঘর এখন শীতল। আর্দ্র অনেক্ক্ষণ থেকে ভাইয়ের পাশে বসে ফোন গুতাচ্ছে। আদর একবার আড়চোখে ছোট ভাইয়ের দিকে তাকালো। ছেলেটা বড় হলেও তার মধ্যে নিতান্তই একটা বাচ্চা বাচ্চা ভাব এখনো রয়ে গেছে। ছোটোবেলার মতোই সবসময় ভাইয়ের পেছন পেছন ঘুরা শুধু তার। আদর গলা খাকারি দিয়ে বলল, ‘এতো ফোনে কি করিস সারাদিন ?’

ফোনে মগ্ন আর্দ্র জবাব দিলো, ‘গার্লফ্রেন্ডের সাথে চ্যাট করি।’

আদর চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে বলে, ‘আমি তোর তিন বছরের বড়! লজ্জা করে না তোর? বড় ভাইকে এসব বলিস?’

টাউজারের পকেটে ফোন ঢুকিয়ে বিরক্তিতে আর্দ্র চু শব্দ করলো। এরপর বলল, ‘আচ্ছা ভাইয়া আজকের মেয়েটা দেখতে কেমন ছিলো?’

বইয়ের পাতায় চোখ বুলাতে বুলাতে আদর উত্তর দিলো, ‘মাস্ক পরা ছিলো।’

‘ওওও…আচ্ছা মেয়েটার নাম কি?’ চোখ ছোট ছোট করে গোয়েন্দার মতো প্রশ্ন আর্দ্রর।

‘জানি না। বাবা শুধু রেস্টুরেন্টের নাম বলেছে আমি দেখা করতে গিয়েছি এর বেশি কিছুই জানি না।’

আর্দ্র বড় বড় চোখে চেয়ে রইল ভাইয়ের দ্বারপানে। আজকাল এমন মানুষও হয় বুঝি? যাকে বিয়ে করতে যাবে তার নামটাও জানে না?
আদর একবার আড়চোখে ছোট ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে উঠে চলে গেলো বেলকনিতে। বিছানায় পড়ে রইল বই। হিম শীতল বাতাসে উড়তে লাগলো বইয়ের একটার পর একটা পাতা। বাতাসে মিশে গেলো নতুন বইয়ের গন্ধ, ছন্দ, মন্দ আবেগ।

চলবে

#বৃষ্টিশেষে_প্রেমছন্দ
#মুমুর্ষিরা_শাহরীন

০১.

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here