বৃষ্টিশেষে প্রেমছন্দ পর্ব-১৩

0
1853

#বৃষ্টিশেষে_প্রেমছন্দ 💖
#মুমুর্ষিরা_শাহরীন

১৩.
রিমঝিম আবহাওয়া। নিঝুম দ্বীপের নামা বাজার এসে ওরা উঠলো নিঝুম রিসোর্টে। রিসোর্টের দেয়ালে পোস্টার টানিয়ে স্পষ্টঅক্ষরে লেখা,

নিঝুম রিসোর্ট
পরিচালনায়
অবকাশ পর্যটন লিঃ ও সাফারী প্লাস
নামা বাজার, নিঝুম দ্বীপ, হাতিয়া, নোয়াখালী
মোবাইলঃ ০১৮৬৬৯৮৯৮৫৮, ০১৮৬৬৯৮৯৮৫৫ ( নাম্বার দুটি কালেক্ট করা অনলাইনের নিঝুম দ্বীপ সম্পর্কিত বিস্তারিত আলোচনা থেকে)

অবকাশ পর্যটনের নিঝুম রিসোর্টের দুই বেডের রুম ভাড়া দুই হাজার টাকা। অফ সিজন অর্থাৎ ১৫ এপ্রিল – ৩০ সেপ্টেম্বর এর মধ্যে এলে ৫০% ডিসকাউন্ট পাওয়া যায়। আদর দুটো রুম ভাড়া করলো। ডিসকাউন্ট দিয়ে দুটো রুম ভাড়া একত্রে পরলো দুই হাজার টাকা। রুম ভাড়া করার সময় আদর টিকলিকে ইশারায় দেখিয়ে দিয়ে লোকটাকে বলল,

‘ওই যে উনাকে দেখছেন, উনার কাছ থেকে এডভান্স টাকাটা নিয়ে রাখেন।’

রিসেপশনিস্ট টিকলির কাছে গেলো। টিকলি টাকা দিয়ে লোককে আলবিদা জানিয়ে আদরের দিকে তাকিয়ে কোমড়ে হাত রেখে বলল, ‘এটা কি হলো?’

আদর চুলে হাত চালাতে চালাতে জবাব দেয়, ‘কোনটা?’

‘এই যে এটা। মানে টাকাটা তো আপনি দিতে পারতেন। পরে আমার কাছ থেকে নিয়ে নিতেন।’

টিকলিকে এড়িয়ে যেতে যেতে আদর বলল, ‘পরে দিলেও দিতে হতো আর এখনো দিতেই হচ্ছে। বাকির নাম ফাঁকি কথাটা মনে রাখবেন। আর মোটরসাইকেল ভাড়া পুরোটা আমি বহন করেছি। সো থাকা-খাওয়ার ভাড়া আপনার। ‘

টিকলি আদরের পেছন পেছন যেতে যেতে হাত নাড়িয়ে নাড়িয়ে বলল, ‘মোটরসাইকেল ভাড়া আপনার কত পরেছে শুনি? আমার তো রুম ভাড়া করতেই দু’হাজার চলে গেলো। খাওয়া দাওয়ার খরচ তো আছেই। বলতে গেলে মোট তিন-চার হাজার টাকা খরচ হবে আমার।’

আদর হাটা থামিয়ে পেছন ঘুরে ঠোঁট গোল করে বলল, ‘তো? আমারো ভাড়া গিয়েছে অলমোস্ট তিন হাজার টাকার মতো। আমি কি এই ব্যাপারে একটা টু শব্দ করেছি? তবে আপনি ফকিন্নির মতো আচরণ করছেন কেনো?’

নিজের দিকে আঙ্গুল তুলে টিকলি মুখটাকে হা করে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলো। এরপর বিস্ময়কর কণ্ঠে বলল, ‘আ আ আমি ফকিন্নি? আর আপনার মোটরসাইকেল ভাড়া তিনহাজার টাকা গিয়েছে? ফাইজলামি? ‘

আদর আবারো হাটা শুরু করে তাচ্ছিল্য করে বলল,

‘আমি আপনার মতোন অভাবগ্রস্থ নই যে মিথ্যা কথা বলবো। আর একটা মোটরসাইকেলে দুজনের ভাড়া হলো ৩০০-৩৫০ টাকা। তো আমরা দুটো মোটরসাইকেল নিয়েছিলাম। এবং নিজ দায়িত্বে চালিয়ে এসেছি। এর জন্য ড্রাইভাররা এক্সট্রা টাকা নিয়েছে। দুটো মোটরসাইকেল মিলিয়ে ওরা দুই হাজার টাকা নিয়েছে। আর কমলার দিঘি দেখতে গেলে ৩০০-৩৫০ টাকা এক্সট্রা গুনতে হয়। তো এখানেও এক্সট্রা ৭০০-৮০০ টাকা দিতে হয়েছে। তারপর আপনাকে আমি মিরিন্ডা কিনে দিয়েছিলাম। কমলার দিঘি গিয়ে বাদাম, ঝাল মুড়ি খেয়েছেন দুই বোন। সব মিলিয়ে তিন হাজার টাকা খরচ হলো না?’

টিকলি আদরের দিকে তাকিয়ে বলল, ‘আরে ভাই আপনি আমাকে মিসকিন বললেন এদিকে তো আপনি সবচেয়ে বড় মিসকিন, অভাবগ্রস্থ, ফকির, অতিদরিদ্র, হতদরিদ্র একজন মানুষ। যে কিনা সামান্য একটা ত্রিশ টাকার মিরিন্ডা, বিশ টাকার বাদাম আর চল্লিশ টাকার ঝালমুড়িও হিসাব করে। আপনি নাকি আবার ডাক্তার?’

টিকলি বলল হাতের দু আঙ্গুলে ছোট করে পরিমাপ দেখিয়ে। আদর বলল, ‘যে যেমন তার সাথে তেমনই করা উচিত। ‘

,

এই রিসোর্টগুলো যে একদম আহামরি সুন্দর টাইপ তেমন না। একদম বিরাট জাকজমকপূর্ণ লাক্সারি রিসোর্ট তা না। রিসোর্ট মানেই বুঝা যায় অনেক এক্সপেন্সিভ, আড়ম্বরপূর্ণ কিন্তু এখানে তার বালাই নেই। নামেই রিসোর্ট। খুব স্বাভাবিক একটা আবাসিক হোটেলের মতো। দেয়ালে পেস্ট রং করা, স্টেনওয়ালা কমদামি খাট, ফুল তোলা লাল কমলা বিছানার চাদর, এটাচ বাথরুমের কালো রঙের দেয়াল। সমস্যা হলো, এখানে দিনে বিদ্যুৎ থাকে না। ১-২ ঘণ্টা পরপর ৩০ মিনিটের মতো বিদ্যুৎ আসে।

আর্দ্র টায়রা ঘরগুলো দেখতে চলে এসেছিলো আগেই। টায়রা পুরো ঘরটা দেখে নাক উঁচুতে তুলল। বিড়বিড় করে বলল, ‘নামেই রিসোর্ট।’

,

ওদের রুম দুটো পাশাপাশি। আর্দ্র খানিক চিন্তা করলো কোন ঘরে ঢুকবে। এরপর সে এই সিদ্ধান্তে আসলো যে বাম পাশের রুমটায় যাবে। আর্দ্র যখন বাম পাশের রুমে ঢুকতে গেলো দূর্ভাগ্যবশত টায়রাও সেই রুমে ঢুকতে গেলো। দুজন দুজনের সাথে হালকা ধাক্কা খেয়ে থেমে গেলো। এরপর টায়রা গেলো ডান পাশের ঘরে আর্দ্রও যেতে নিলো। এরপর দুজনেই আবার বাম পাশের রুমে ঢুকতে গেলো। পরিশেষে আর্দ্র বিরক্ত হয়ে বলল,

‘আরে দাড়ান তো। হয় নিজে যান নাহয় আমাকে যেতে দিন।’

টায়রা হাত ভাঁজ করে দাড়িয়ে বলল, ‘আপনার যাওয়ার দরকার আপনি যান। আমি পরে যাবো।’

‘সবসময় শুধু ঘাইড়ামি।’ বলেই আর্দ্র ডান পাশের ঘরে ঢুকে পরলো। বাইরে থেকে টায়রা গলা উঁচিয়ে বলল,

‘দোয়া করি, আপনার কপালে একটা মহা ঘাইড়া জুটুক। যাতে আপনার জীবনটা ত্যানা ত্যানা করে দেয়। আমিন।’

‘দূর হন এক্ষুনি।’ ভেতর থেকে চেঁচিয়ে জবাব দিলো আর্দ্র।

,

খাওয়ার পর্ব শেষ করে ক্লান্ত শরীরটা বিছানায় এলিয়ে দিতেই ঘুমের দেশে পাড়ি জমালো দুই বোন। যার কারণে তাদের আজ আর কোথাও ঘুরতে যাওয়া হলো না। প্রায় যখন সন্ধ্যা তখন অন্ধকার হয়ে আসা ঘরটাতে মশার কামড় খেয়ে জেগে উঠলো টিকলি। কারেন্ট নেই। বাইরের দিনের আলো হালকা হয়ে আসছে দেখেই টিকলি একটা হতাশ নিঃশ্বাস ফেলল। টায়রাকে দু-একবার ডাক দিলো। টায়রা বিরক্তির ঘুম ঘুম কর্কশ কন্ঠে বলে উঠলো,

‘কি হইছে বা*?’

টিকলি রাগীস্বরে বলল, ‘এক চটকানা খাবি। এতো খারাপ হইতাছিস কেনো দিন দিন?’

মুখের উপর থেকে হাত সরিয়ে আধো আধো চোখ মেলে টায়রা বলল, ‘এই কথা বলার জন্য আমার এতো সুন্দর ঘুমটা ভাঙাইলি? ‘

‘নাহ, বাইরে দেখ। তোর ঘুমের জন্য বারোটা বেজে গেছে।’

টায়রা নিজের স্মার্টফোনটা হাতড়িয়ে বালিশের আশেপাশে খুঁজলো। ফোন খুলতেই দেখা গেলো সাড়ে ছয়টা বাজে আর কয়েক মিনিট পর মাগরিবের আজান দিবে। টায়রা লাফিয়ে বিছানায় উঠে বসলো। মুখে হাত দিয়ে বিড়বিড় করে বলল, ‘ও মাই গড। এতো ঘুমিয়েছি?’ এরপর টিকলির দিকে কটমট দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল,

‘আমার ঘুমের জন্য বারোটা বাজছে তাই না? আর তুই কি করতাছিলি?’

‘আমি তো তোর দেখাদেখি ঘুমাচ্ছিলাম।’

‘সর তো আবাল। চোখের সামনে থেকে সর। তোর জন্য আজকে ঘুরতে যাওয়া হলো না। আবার কাল সকাল অবধি ওয়েট করতে হবে।’

‘যত দোষ নন্দ ঘোষ।’

টায়রা ওয়াশরুমের দিকে পা বাড়াতে বাড়াতে আস্তে আস্তে বলল, ‘ওরা তো একবার ডাকতে পারতো। আর আদর ভাইয়ার কাছে তো তোর নাম্বারও আছে।’

টায়রার আস্তে বাচ্য গুলো কর্ণপাত হলো টিকলির। শুধু কর্ণধার ই হয়নি একদম বুকের গভীরে ঢুকে গিয়ে তারা বিক্ষুব্ধ যুদ্ধ ঘোষণা করছে। আর এই বিক্ষিপ্ত যুদ্ধের কারন হলো টিকলির অবচেতন মন। যেই মনকে টিকলি নিজে বুঝে উঠতে পারছে না। যেই মন অভিমান করে বলছে, ‘সত্যি তো, আদর সাহেব কেনো একটা ফোন দিলেন না? তার কাছে তো আমার নাম্বার ছিলো।’

,

বিকেলবেলা আদর আর্দ্র ও রেস্ট নিতে নিতে ঘন্টাখানেকের জন্য ঘুমিয়ে গিয়েছিলো। ঘুম থেকে উঠে দেখে বিকাল পাঁচটা বাজে। এই সময়ে ফ্রেস হয়ে রেডি হয়ে ঘুরতে যেতে যেতেই সন্ধ্যা হয়ে যাবে। তাই আর যাওয়া হয়নি। আদরও টিকলি টায়রাকে ডাক দেয়নি। শুধু ওরা দুই ভাই মিলে বিকাল দিকে নামা বাজারটা ঘুরে ঘুরে দেখেছে।

রাত তখন বাজে আটটা। এখানে সন্ধ্যার পর থেকে রাত সাড়ে দশটা পর্যন্ত জেনারেটর দিয়ে বিদ্যুৎ পাওয়া যায়। এছাড়া সারারাত লাইট ইউজ করা যায় সোলার প্যানেল থেকে। আদর রিসোর্টের পেছনে অল্প খালি জায়গাটাতে দাঁড়িয়ে ছিলো। মোবাইল হাতে নিয়ে গেলো কন্ট্রাক্টস লিস্টে। উদ্দেশ্যে ওর এসিস্ট্যান্ট তমালকে ফোন দেওয়া। ‘T’ দিয়ে সার্চ দিতেই সবার সামনে ভেসে উঠলো টিকটিকি নামে সেভ করা একটি নাম্বার। আদর কয়েক সেকেন্ড গভীর মনোযোগে নাম্বারটার দিকে তাকিয়ে থেকে পরমুহূর্তে কল লাগালো তমালকে। তমালের সাথে কিছু জরুরি কথাবার্তা শেষ করে ফোন রাখতেই আবারো চোখ গেলো টিকটিকি নামের সেই নাম্বারটিতে। আদর ডায়াল করলো পরমুহূর্তে আবার কেটেও দিলো। ফোনটা পকেটে রাখতে গিয়েও পকেট থেকে আবার বের করে টিকলির নাম্বারটা ফোন থেকে ডিলিট করে দিলো।

মিনিট পাঁচেক পূর্ণিমাচন্দ্র আকাশের দিকে তাকিয়ে থেকে আদর চলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে পা বাড়ালো। ঘুরতেই দেখা হলো টিকলির সাথে। অনাকাঙ্ক্ষিত বশত টিকলিও হকচকিয়ে গেলো। আদর প্রশ্ন করলো আগে, ‘আপনি?’

‘হুম। ভেতরে নেট পাচ্ছিলো না তাই আর কি..’

‘কি সিম ইউজ করেন?’

‘বাংলালিংক।’

‘ওহ সম্ভবত এখানে শুধু গ্রামীণফোন আর রবির নেট পায়। নট সিউর। ‘

‘ওহ আচ্ছা।’ টিকলি মন খারাপ করে চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো সাথে সাথে পেছন থেকে ডেকে উঠলো গম্ভীর ব্যক্তিটি। টিকলি হালকা ভ্রু কুচকে তাকিয়ে নরম সুরে বলল,

‘জি বলুন।’

ব্যস, সেখানেই থমকে গেলো সে। টিকলি যখন এতো সুন্দর করে কথা বলে আদরের তখন সব অভিমান দুমড়ে মুচড়ে যায়। কিন্তু হঠাৎ করেই আবার যখন আদরকে এভোয়েড বা রিজেক্ট করে তখন আবার মস্তিষ্কে রক্ত উঠে যায়। কেনো এমন হয়? যেমন, এখন আদরের মনে হচ্ছে একটু আগে সে একটা ভুল করে ফেলেছে। নাম্বারটা ডিলিট করে সে ঠিক করেনি। আবার হয়তো কিছুক্ষণ পর টিকলির কোনো ব্যবহার তার ভালো না লাগলে সে আবার ভাববে, ডিলিট করেছে বেশ করেছে।

আদর গলা খাকারি দিয়ে প্রশ্ন করে, ‘ চোখের ব্যাথা কমেছে?’

টিকলির কুঞ্চিত ভ্রুযুগল সোজা হয়ে তাকালো। নরম হয়ে গেলো চোখের চাহনি। শীতল বৃষ্টি বৃষ্টি গন্ধ বাতাসে শরীর তপ্ত হয়ে যায়। স্রোতস্বিনীতে ভেসে যায় মন। ভিজে যায় হৃদয়পাটাতন। কিন্তু এই স্রোতস্বিনীতে ভাসতে ভাসতেই হঠাৎ স্রোতশূন্য হয়ে পরে সে। তখন নিজেকে বড্ড নিষ্প্রয়োজন বলে মনে হয়। অভিমান জমে যায় বুকের গহীনে। হিম শীতল হাওয়া ক্রমেই উষ্ণ গরমে পরিণত হয়। ভালো লাগে না তখন টিকলির। আদরের তার প্রতি উদাসীনতা এবং ছন্নছাড়া ভাব তার একদম ভালো লাগেনা। এই যে এখন কি সুন্দর ভাবে খোঁজ নিচ্ছে কিন্তু একটুপর ঠিক আবার টিকলিকে ইগনোর করবে যেমনটা করে আসছে সেই কমলার দিঘি থেকে। টিকলি বুঝে পায়না একটা মানুষের দুটো রূপ কি করে থাকতে পারে? এই কেয়ারিং তো এই ইগনোরিং।

টিকলি কানের পাশে চুলগুলো গুঁজে দিয়ে হালকা গলায় বলল, ‘জি কমেছে।’

আদর টিকলির থেকে চোখ সরিয়ে আবারো আকাশের পানে তাকালো। বলল, ‘ওহ। মলমটা ঠিকমতো লাগালে আস্তে আস্তে দাগও মিশে যাবে।’

টিকলি মাথা নাড়িয়ে ‘হুম’ বলল। এরপর কৌতুহল নিয়ে প্রশ্ন করলো, ‘আকাশে কি দেখেন?’

আদর টিকলির দিকে তাকিয়ে ঠোঁটের কোণঠাসায় হাসি টেনে বলল, ‘তাঁরা দেখি।’

‘তাঁরা? প্রতিদিন দেখেন?’

‘হুম। জানেন, আমি না শুকতারা জমিয়েছি।’

‘যাহ, শুকতারা আবার জমানো যায় নাকি?’

আদর হাসে। বলে, ‘যায় তো। এই যে আমার এই বুকের ডানপাশে শুকতারা রেখেছি।’

‘কেনো রেখেছেন?’

‘যাতে অসময়ে হঠাৎ করে কাঙ্ক্ষিত মানুষটা এলে আর কিছু না দিতে পারলেও এই শুকতারা যেনো দিতে পারি।’

‘কাঙ্ক্ষিত মানুষ?’ টিকলি অবাক গলায় প্রশ্ন করে।

‘হুম, কাঙ্ক্ষিত মানুষ। এমন মানুষ যে আমার শুকতারা কিনতে চাইবে।’

‘কিনতে চাইবে? শুকতারা বেঁচা-কেনাও যায় বুঝি?’

‘নাহ, শুধু জমানো যায় আর কেনা যায়। বেঁচা যায় না।’

‘তাই? আচ্ছা, কেনো কিনতে চাইবে?’

টিকলির বাচ্চামো প্রশ্ন শুনে আদর মুচকি হেসে উত্তর দিলো, ‘কারণ সে যে কাঙ্ক্ষিত মানুষ তাই।’

আদর আবার বলল আত্মমগ্ন গলায়, ‘শুকতারা যত্ন করে নিজের বুকের ডানপাশ টায় রাখার জন্য আমার বুকের ডানপাশ থেকে কেড়ে নিবে। কারণ সে ভাববে শুকতারা আমার কাছে ভালো নেই। একাকিত্ব বোধ করছে। তার একটা সঙ্গী দরকার। আর সেই সঙ্গিনী হবে সে।’

‘কেনো সঙ্গ দিবে?’

“কারন সে যে হবে এক বিরলতম রঙিন প্রজাপতি। যার পাখায় থাকবে শুকতারার রং। ভালোবাসার রংমহলের ওয়াচ টাওয়ার। যার কাছে গেলেই আমি দেখতে পারবো আমার পুরো ভালোবাসাময় শুকতারার বাগান। শুকতারা জ্বলজ্বল করতে করতে জানান দিবে সেই কাঙ্ক্ষিত মানুষটির নাম।”

চলবে❤️

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here