বৃষ্টিশেষে প্রেমছন্দ পর্ব-২৫

0
1461

#বৃষ্টিশেষে_প্রেমছন্দ
#মুমুর্ষিরা_শাহরীন

২৫.
নিভা গিয়ে আর্দ্রর পাশে সোফায় বসে বলল, ‘তুমি অসুস্থ খালামনি কাল আম্মুকে ফোন দিয়ে বলল তাই আসলাম।’

মনোয়ারা খান খুশিতে গদগদ হয়ে বললেন, ‘বাহ! বেশ ভালো করেছিস। আয় দেখি খেতে বস তোর আদর ভাইয়ার সাথে।’

সোফা ছেড়ে উঠে গিয়ে টেবিলে বসতে বসতে আদরের দিকে প্রশ্ন ছুড়লো নিভা, ‘কেমন আছো বস?’

হালকা হেসে আদর উত্তর দিলো, ‘এইতো যাচ্ছে। তোমার কি খবর? পড়াশোনা কেমন চলছে?’

‘বেদনাদায়ক!’

‘ফাঁকিবাজ।’

নিভা হেসে দিলো। আদর টেবিল ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে বলল,

‘তবে থাকো। আমি যাই। আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে। মা গেলাম। খোদা হাফেজ। ‘

রান্নাঘর থেকে মনোয়ারা খান জবাব দিলেন, ‘সাবধানে যাস বাবা। গিয়ে মাকে ফোন করতে ভুলিস না।’

খাবারের প্লেট নিয়ে নিভা আর্দ্রর পাশে এসে আবার বসলো। টিভি দেখতে দেখতে একসময় খাওয়া শেষ হলো। নিভা বলল, ‘ছাদে যাই ভাইয়া?’

‘একা?’ আর্দ্র প্রশ্ন করলো ভ্রু কুচকে।

‘হুম। তা নয়তো কে যাবে? তুমি তো পা ভেঙে বসে আছো।’

‘দরকার নেই। তিনতলায় ব্যাচেলর ভাড়া দেওয়া হয়েছে।’

‘এমা! কবে?’

‘এইতো তিনমাস আগে। তুই তো প্রায় ছয় মাস থেকে আমাদের বাসায় আসিস না।’

‘তোমরা যাও?’

সোফায় হেলান দিয়ে বসে আর্দ্র হাই তুলে বলল, ‘না। আলসেমি লাগে।’

মুখ ভেঙিয়ে নিভা জবাব দিলো, ‘হুম সেটাই। গেলাম আমি। ব্যাচেলররা এতো সকালে ঘুম থেকে উঠে না। আর উঠলেও কি? একটু চান্স ফান্স পাওয়া যাবে। সিংগেল থেকে মিংগেল হওয়ার একটা সুযোগ অন্তত পাবো।’

অবহেলার গলায় আর্দ্র বলল,

‘লাভ নেই। দুজন বিবাহিত। একজন গেছে ফুফুর বাসায় আরেকজন বোধ হয় এখন টিউশনিতে আছে।’

‘ওহ….মাই বেড লাক।’

হতাশ নিঃশ্বাস ফেলে নিভা ছাদের উদ্দেশ্যে পা বাড়ালো। সেন্টার টেবিলে নিভার ফোন পরে থাকতে দেখে আর্দ্র গলা উঁচিয়ে চিৎকার করে বলল,

‘এই ফোন নিয়ে গেলি না?’

‘রেখে দেও ভাইয়া। ফোন দেওয়ার মতো কেউ নেই। কষ্টে জীবন ত্যানাত্যানা।’

‘মেয়েটা ভারী দুষ্টু হয়ে গেছে।’

বিড়বিড় করে আর্দ্র ফোনটা যথাস্থানে রাখলো। রাখার খানিক বাদেই বাজঁখাই গলায় ফোন চিল্লিয়ে উঠলো। আর্দ্র ভ্রু কুচকে তাকাতেই অবাক হয়ে গেলো। বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে থাকতে থাকতে মুখের কথা হারিয়ে ফেলল। কপালে কিছু সূক্ষ্ম ভাঁজ, মুখে অপ্রত্যাশিত ছায়া, চোখ জোড়া কুচকিত। আর্দ্র ফোন হাতে তুলে নিলো। ফোনের পুরো স্ক্রিন জুড়ে ভেসে উঠেছে টায়রার ঠোঁট চেপে অল্প জিব বের করা বাম চোখ টিপা দুষ্ট মুখচ্ছবি। নাম্বার সেভ করা ‘ময়নাপাখি ২’ দিয়ে। পাজি সেই ছবিটার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতেই ফোন কেটে গেলো। আর্দ্র হুশে ফিরে নিজের বাম হাতটার দিকে তাকালো। এইতো…কাল এই মেয়েটার সাথে দেখা হয়েছিলো। বেশি বুঝা মস্তিষ্ক ভেবেছিলো আর কোনোদিন হয়তো দেখা হবে না। ভাগ্যের ফেরে আজ আবার….?

বোকা মস্তিষ্কের কথা ভাবতে ভাবতেই ফোন তার নিজস্ব ক্ষমতায় আবারো আন্দোলন করে উঠলো। এবারো ফোন কেটে গেলো। আকস্মিক এই ব্যক্তির ফোনকলে বুদ্ধিভ্রষ্ট হয়েছে আর্দ্র। তৃতীয় বার ফোন বাজতে বাজতে কেটে যাওয়ার আগ মুহুর্তে আর্দ্র রিসিভ করলে ও পাশ থেকে কেউ চড়া গলায় বলল,

‘ওই শালী, ফোন দিয়ে আমি শহিদ হয়ে যাইতাছি আর তুই কি করতাছোস হ্যাঁ? ঘুম পারতাছোস এখনো? এদিকে আমি তোমারে ফোন দিয়ে মরি ওদিকে তুমি অবলীলায় ঘুমাও?’

টায়রার ভাষা দেখে আবেগে আপ্লুত হয়ে পরলো আর্দ্র। ভীষণমাত্রায় অবাক হয়ে মাত্রাতিরিক্ত গম্ভীর গলায় বলে উঠলো,

‘হ্যালো।’

টায়রার ভ্রু জোড়া কুচকে গেলো। এক মুহুর্ত চুপ থেকে আবারো তার ডাইনির ন্যায় গলায় চিল্লিয়ে বলে উঠলো,

‘এই… আপনি কে? আমার বান্ধবীর ফোন আপনার কাছে কেনো? কি করছেন আমার বান্ধবীর সাথে? আমি যতদূর জানি ওর তো কোনো বয়ফ্রেন্ড নেই। অবিয়াত্তা। তাহলে আপনি কে? কিডনাপ করছেন….? আমি তাহলে এই মুহুর্তে একজন কিডনাপার এর সাথে কথা বলছি?’

শেষের লাইন টায়রা বিস্ফোরিত গলায় বলল। আর্দ্র হতবিহ্বল, হতবাক চোখে শূন্যে চেয়ে রইল। এই মেয়েটা এতো বেশি বুঝে যে কিডনাপার এর উপাধিটাও লাভ করে ফেলল আর্দ্র। এই মুহুর্তে তার কেদে বুক ভাসাতে ইচ্ছে করলো হঠাৎ। ভাঙাচোরা হৃদয় নিয়ে বলে উঠলো,

‘টায়রা….’

আর্দ্রের কথার মাঝপথে থামিয়ে দিয়ে টায়রা টেনে টেনে বলল,

‘ওহ…মাই…গড, আমার নামও জানেন? কে আপনি তাড়াতাড়ি বলুন। তা নাহলে পিছে এমন ডান্ডা দেবোনা দাড়ালে বসতে পারবেন না আর বসলে শুতে পারবেন না।’

আর্দ্র ধমকে বলল এবার,

‘কি আবোলতাবোল বকছেন? বলছি তো আমি…’

টায়রা বিরবির করে বলল, ‘কণ্ঠটা কেমন চেনা চেনা লাগলো।’ পরমুহূর্তেই আবারো গগনবিদারী গলায় বলল,

‘কে আপনি? পরিচিত? পরিচিত হয়ে এভাবে বাঁশ দিলেন? আমার বান্ধবীকে কিডনাপ করলেন? এখন নিশ্চয়ই মুক্তিপণ চাইবেন। দেখুন ভাই, ওতোসব টাকা-পয়সার মালিক আমি না। আর আমার বান্ধবীর বাবা হার্টের পেসেন্ট মা হাই-প্রেসার এর পেসেন্ট। তাই ওদের তো কোনোমতেই বলা যাবে না। যদি বাই চান্স মেয়ের শোকে মরে টরে যায় তাহলে ফোন দেওয়ার অপরাধে আমার দোষ হবে। তার চেয়ে এক কাজ করুন, আমার বান্ধবীকে বিয়ে করে ফেলুন। এখন যা টাকা মুক্তিপণ হিসেবে চাইতেন বিয়ের যৌতুক হিসেবে তা সুদে-আসলে তুলে নিবেন। যদিও যৌতুক হারাম। তবুও কিডনাপার রা তো মায়া-দয়াহীন হয়। খুন টুন ও করে ফেলে নাকি। থাক ভাই আমার বান্ধবীকে বাচিঁয়ে রেখে বিয়ে করে ফেলেন। আমাকে দাওয়াত দিয়েন। এত্তোবড় গিফট নিয়ে যাবোনি। আইডিয়া টা কেমন দিলাম বলুন…? রাজ্যের মহর সাথে রাজকন্যা ফ্রি। ভাবতেই ভিষণ অবাক লাগছে জানেন, যে আমি একজন কিডনাপারের সাথে কথা বলছি। হাউ ব্রেভ আই এম! আই এম প্রাউড অফ মি।’

টায়রার অনবরত বিরামহীন কথা শুনতে শুনতেই যেনো আর্দ্রর পায়ে ব্যথা বেড়ে গেলো। টায়রার কথার ইতি ঘটতেই ক্লান্ত গলা ঠেসে দিয়ে আর্দ্র বলল,

‘শেষ মিস. ফুটা টায়ার? মানে সিরিয়াসলি? একটা মানুষ এতোটা বিরক্তিকর বাঁচাল কীভাবে হতে পারে? বুদ্ধিহীনতারও তো একটা সীমা আছে নাকি?’

‘আপনি আমাকে ইনসাল্ট করছেন? কে আপনি? নাম বলুন। থানায় ফোন দিবো। কেস করবো। মামলা ঠুকবো। আপনাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাবো। জেলে ডুকাবো। আপনাকে ফাসিতে…’

টায়রার কথা শেষ করতে না দিয়েই আর্দ্র উচ্চস্বরে চিল্লিয়ে উঠলো,

‘সাট আপ। আমি আর্দ্র। ‘

আর্দ্রের উচ্চবাক্যে কেঁপে গেলো ফোন, ফোনের ওপাশের টায়রা। কান থেকে ফোন সরিয়ে চোখের সামনে ধরে নাম্বার দেখে ভ্রু কুচকে সচেতন দৃষ্টিতে তাকালো। এরপর বিস্ময়তা নিয়ে বলল,

‘আপনি কেনো? আমার বান্ধবীর ফোনে আপনি কি করছেন? ও কোথায়…’

‘চুপ করবেন?’ আর্দ্র ধমকে উঠলো আবারো।

টায়রা ঠোঁট উল্টে বলল, ‘আপনি আমাকে ধমক দিলেন?’

আর্দ্র চোখ বন্ধ করে দীর্ঘশ্বাস ফেলল। এই মেয়ের পকপকানিতে রীতিমতো মাথা ব্যথা ধরে গেছে। শান্ত গলায় আর্দ্র জবাব দিলো,

‘আমি ওর খালাতো ভাই। ও আমার খালাতো বোন।’

টায়রা একদম কিছুই হয়নি এমন স্বাভাবিক গলায় বলল, ‘ওহ। নিভা কই?’

‘ছাদে গেছে। বাই দা ওয়ে আপনি ওর কি হন? ফ্রেন্ড?’

‘নট জাস্ট আ ফ্রেন্ড উই আর বেস্ট ফ্রেন্ড।’

‘মাশাল্লাহ! আমার বোন ভাগ্য করে একটা বেস্ট ফ্রেন্ড জুটাইছিলো। এমন বাঁশমার্কা বান্ধবী পাওয়ার সৌভাগ্য আর কতজনের হতে পারে?’

‘কি বললেন আপনি?’

ছোট করে আর্দ্র বলল, ‘কিছুনা। টিকলি কেমন আছে?’

‘আলহামদুলিল্লাহ, ভালো আছে।’

এরপর কিছুক্ষণ নিরবতা। কথা আদান-প্রদান করার জড়তা, এতোক্ষন আজেবাজে কথা বলার জন্য লজ্জা, এই প্রথম ফোনে কথা বলায় অস্বস্থি। নিরব থাকতে থাকতে প্রথম প্রশ্ন টায়রা করলো,

‘পায়ের অবস্থা কেমন এখন?’

‘যেমন দেখেছিলেন তেমনি।’

‘যত্ন নিবেন। হেলাফেলা করবেন না। রাখছি। নিভা এলে ফোন দিতে বলবেন।’

‘আচ্ছা।’

‘আল্লাহ হাফেজ।’

‘আল্লাহ হাফেজ।’

,

ফুফু বাড়ির আমেজ শেষ করে নিজের ব্যাচেলর বাসাটায় ফিরে আসলো রাহুল। তখন শেষ অপরাহ্ন। রোদ মাথায় নিয়ে বাসায় ঢুকতে গেলেই পাশাপাশি পার হলো আরেক রমণী অথচ কেউ কাউকে তাকিয়ে দেখলো না। চিনলো না। যার যার নিজস্ব গতিতে নিজ নিজ জায়গার উদ্দেশ্যে ছুটলো। রাহুল ছুটলো গরম থেকে একটু রেহাই পেতে ঘরের ফ্যানের উদ্দেশ্যে। নিভা ছুটলো তাড়াতাড়ি বান্ধবী নামক শাকচুন্নির সাথে দেখা করতে। এতোটাই ব্যস্ত পথ পার হলো যে আড়াআড়ি চলে গেলো দুজন অথচ কেউ কাউকে বুঝলো না, খুঁজলো না, অনুভব করলো না, চোখের চাহনিতে আবদ্ধ করলো না। দুটো পরিচিত ব্যক্তি একই সময় একই কালে একই স্থান পার করলো অথচ কেউ কাউকে দেখেও দেখলো না। নিজস্ব উল্লাসের তল্লাসে চলে গেলো ফুরুৎ করে।

______________________________

সেদিনের পর আজ কেটে গেছে তিন দিন। এর মাঝে আদরের কোনো ফোন বা মেসেজ আসেনি। অভিমানে টিকলিও আর ফোন দেইনি। ফোন হাতে নিয়ে কৃত্রিম সবুজ গাসের বারান্দাটাতে বসে টিকলি উদাস চোখে বাইরে তাকিয়ে ছিলো। সন্ধ্যা হওয়ার পূর্বসূচি। পাখিদের নীড়ে ফিরে যাওয়ার তাড়না। দিনের আলো মিলে গিয়ে রাতের অন্ধকারে রূপান্তরিত হওয়ার সূচনা। আদরের নাম্বারটার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতেই অবচেতন মনে ফোন লাগালো। এক দুবার রিং হওয়ার পরই ওপাশে ফোন ধরে গম্ভীর গলায় বলা হলো, ‘হ্যালো।’

টিকলি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে তাকিয়ে রইল ফোনের পানে। মিনিট দুয়েক গড়ালো। আদর বার দশের মতো হ্যালো হ্যালো করে চুপ করে গেলো। টিকলি ফোন কানে ধরলো। বুকের মাঝে উথলে উঠা কান্নারা ঘাপটি মেরে বসে থাকলো সময়ের অপেক্ষায়। ভারী নিঃশ্বাসের সুগভীর কষ্ট প্রকাশযোগ্য হলেই আদর ছন্নছাড়া গলায় বলল,

‘এতো দেরি করে ফেললেন টিকলি? তিনটে দিন..।’

টিকলি তখন ভাবছিলো সে বুঝি বেশি দুর্বল। আদর বোধ হয় এমনি কথা বলে তার সাথে। আদর বোধহয় বিরক্ত। আদরের থেকে তো কোনো রেসপন্স আসেনি এখনো। তারপরও কেনো এই লোকের মুখের বুলিগুলো এতোটা গভীর? টিকলির ভাবনার সুতো ছিড়লো আদরের বাণীতে। সব ভুলে গিয়ে মেয়েলী অহং, দর্প, দম্ভ, বড়াই সব একপাশে ফেলে রেখে সে মোহবিষ্ট গলায় বলল,

‘আপনিও তো ফোন দেননি ডাক্তার। প্রতিবার কেনো আমিই প্রথম?’

আদর চুপ থাকলো। ক্ষণসময় চুপ থেকে বলল, ‘যদি বিরক্ত হন।’

‘তার মানে আমি যে ফোন দিলাম আপনি বিরক্তবোধ করছেন?’

আদর তড়িঘড়ি করে ব্যস্ত কণ্ঠে বলল, ‘না না না টিকলি৷ একদমি না। আপনি ভুল ভাবছেন।’

‘তাহলে সঠিকটা কি ডাক্তার?’

‘সঠিকটা এই যে অসীম ব্যস্ততার মাঝেও বারংবার ফোন হাতে নিয়ে আপনার নাম্বার ডায়াল করেও ফিরে আসা।’

টিকলি চোখ বন্ধ করলো। বন্ধ চোখের কোলে খুশির জোয়ার চিকচিক করলো। টিকলি প্রফুল্লতার হাসি হাসলো। কিছুক্ষণ দু’পক্ষের মাঝে নিবিড় নিস্তব্ধতা চলার পর আদর বলল প্রথম হঠাৎ,

‘দেখা করবেন টিকলি?’

টিকলি চমকে উঠলো। এতোটাই চমকালো যে আকস্মিক কোনো কথা খুঁজে পেলো না। আদর আবার বলল, ‘আপনাকে দেখতে ইচ্ছে করছে।’

মন্ত্রমুগ্ধ গলায় টিকলি বলল, ‘কবে?’

‘ইদানীং তো ব্যস্ত থাকি। সময় হবেনা। ব্যস্ততা কাটুক তারপর সময় নিয়ে নাহয়….।’

আদরের কথার মাঝেই প্রফুল্লচিত্তে টিকলি বলল,

‘সত্যি?’

‘তিন সত্যি।’

চলবে❤️

আজকে গল্প দিতে না চেয়েও দিয়েছি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here