#বৃষ্টিস্নাত_ভোর
#পর্বঃ৫
লিখাঃতাজরিয়ান খান তানভি
বিছানায় পা ছড়িয়ে হেডবোর্ড এর সাথে হেলান দিয়ে ল্যাপটপে কিছু একটা করছে আজরাহান।পাশেই আশফিক বসে একটা আর্টিকেল দেখছে।প্রহর সামনেই দাড়ানো।দুই বার ধমকানোর পরও স্থবির হয়ে দাড়িয়ে আছে সে।আজরাহান আবারো কর্কশ কন্ঠে বলল–
“তোকে না যেতে বলেছি!!দাড়িয়ে আছিস কেনো??
এখন কিন্তু ধাক্কা মেরে বের করবো।”
প্রহর ঠোঁট বাকিয়ে বলল–
“ইশশ!!
ধাক্কা মেরে বের করবে।আর আমি চুপ করে থাকবো মনে হয়।আসেন,আসেন না ধাক্কা দিতে!!!!
“তুই যাবি!!!!
প্রহর কথা বাড়ায় না।চলে যায়। এর শোধ সে পরে তুলবে।
আজরাহান এর ঘর থেকে বের হয়ে সিড়ি বেয়ে নামতেই ডোর বেল বেজে উঠে।প্রহর দৌড়ে এসে দরজা খুলে তাকায়।বিস্মিত কন্ঠে বলল—
“জান ভাইয়া!!!!
মারশিয়াদ অধরে স্মিত রেখা টেনে বলল—
“কেমন আছেন??
প্রহর উচ্ছলিত হয়ে বলল—
“ভালো,আপনি কেমন আছেন।”
“ভালো।
দরজায় দাড় করিয়ে রাখবেন,ভিতরে আসতে দিবেন না???
প্রহর জীভ কাটে।
“সরি,সরি।আসেন,ভিতরে আসেন।”
ওদের দেখে সানায়া এসে দাড়ায়।চিকচিক করছে তার চোখ।চোখের তৃষ্ণার সাথে তার মনের তৃষ্ণাও মিটে যাচ্ছে।হাস্যোজ্জ্বল চেহারায় এক গলা আবেগ নিয়ে বলল–
“কেমন আছেন,জান??
মারশিয়াদ হালকা অধর চওড়া করে বলল–
“ভালো।
তুমি কেমন আছো??
“একটু আগের কথা তো বলতে পারবো না।কিন্তু এখন মনে হচ্ছে আজ রাতে আমার না খেলেও চলবে।”
প্রহর চোখ বড় করে বলল—
“কিন্তু তুমি যে বললে তোমার খিদে পেয়েছে।”
সানায়া হালকা লজ্জা পেয়ে বলল–
“চুপ।”
মারশিয়াদ বার কয়েক পলক ফেলে দৃষ্টিনিপাত করে সানায়া দিকে।মেয়েটার চেহারায় অদ্ভুত উজ্জ্বলতা।উজ্জ্বল শ্যামবর্ণের চেহারার কাজলকালো চোখ।চোখগুলো একদম ভাসা ভাসা।পাপড়ি গুলো যেনো ময়ূয়ের পালক।পাতলা লালচে গোলাপী অধরের বামদিকে নিচের ঠোটের কোনায় কালো তিল যেনো ওর শ্যামবর্ণের সৌন্দর্য মারশিয়াদ এর চেতনার দুই ধাপ উপরে নিয়ে ছাড়ে।মেয়েটা যখনই ওকে দেখে কী এক অবাক করা নয়নযুগলে বেধে ফেলে ওকে।কিন্তু নারী ঘটিত যে কোনো ঘটনা থেকে নিজেকে সবসময় ক্রোশো দূর রাখে মারশিয়াদ।সে চায় না তার বিবর্ন অতীতের পূনরাবৃত্তি ঘটুক।কারণ—
“নারীতে স্বর্গসুখ
নারীতেই নরকদুখ।””
ওদের দুজনের চোখের পাতার স্বপ্ন ঘরে বিচ্ছেদের অনল লাগে প্রহর এর তীক্ষ্ম কন্ঠে—
“আমার গিফ্ট কোথায় জান ভাইয়া??
“সরি রেড চিলি।এইবার তো আপনার জন্য টেডি আনি নি।”
প্রহর মুখ গোমড়া করে।তার ফর্সা মুখে ধূসর রঙ ছেয়ে যায়।অভিমানভরা কন্ঠে বলল–
“কেনো??
“আপনি তো এখন বড় হয়ে গেছেন।এখন কী টেডি নিয়ে খেলার বয়স আছে আপনার??
“তাই বলে কিছুই আনবেন না!!!
“বুঝতে পারছিলাম কী আনবো।”
“যান।কথা বলবো না আমি আপনার সাথে।”
প্রহর অভিমান নিয়ে ঘুরে দাড়ায়।দু এক কদম পা বাড়াতেই মারশিয়াদ মিষ্টি কন্ঠে বলল–
“রেড চিলি!!!
প্রহর থমকে দাড়ায়।ঘাড় ঘুরায় পিছন দিকে।মারশিয়াদ ওর সামনে গিয়ে একটা বক্স দেয়।প্রহর উল্লাসিত হয়ে দ্রুত গতিতে বক্সটি খুলে।ভিতরে একটা প্যান্ডেন্ট ছিলো।প্রহর সেইটা হাতে নিয়ে নেড়েচেড়ে দেখে বলল–
“এইটা আমার জন্য???
“হুম। ”
“থ্যাংক ইউ।”
“মাই প্লেজার।
আপনার রাহান ভাইয়া কোথায়???
“রাহান ভাইয়া নিজের ঘরে সাথে আশফি ভাইয়াও আছে।আপনি যান।”
“হুম।”
,
,
দরজা কড়া নাড়তেই কর্কশ কন্ঠে আজরাহান বলল–
“তোকে না বলেছি আমার ঘরে আসতে না!!
“ভিতরে আসতে পারি??
আজরাহান পুরুষ কন্ঠ শুনে আশফিক এর দিকে তাকায়।তারপর বলল—
“ভিতরে আয়।”
মারশিয়াদ নরম পায়ে ভিতরে আসে।অধর প্রসারিত করে বলল–
“এতো হাইপার কেনো??
“তেমন কিছু না।বস।”
মারশিয়াদ কাউচে বসে।আজরাহান উঠে এসে ওর কাভার্ড এর ড্রয়ার থেকে একটা কাগজ এনে ওর হাতে দেয়।মারশিয়াদ প্রগঢ়ভাবে দেখতে থাকে।আজরাহান আবার গিয়ে ল্যাপটপ নিয়ে বসে।
দরজা হালকা ধাক্কা দিয়ে ভিতরে আসে প্রহর।সাথে কফি।
মারশিয়াদ আর আশফিক কে দিলেও আজরাহান এর জন্য আনে নি।
আশফিক কফি তে চুমুক লাগাতে গেলে প্রহর এর দিকে দৃষ্টি যায় আর বলল–
“আজরাহান এর জন্য আনলি না!!
প্রহর ঝামটা মেরে বলল–
“নাহ।আমি কী তার চাকরানী!!!
তাকে বলেন নিজের টা নিজে নিয়ে আসতে।হু।”
পুরো ব্যাপারটায় মারশিয়াদ এর চোখ তার হাতের কাগজে নিবদ্ধ ছিলো।মাথা তুলে দেখবার প্রয়োজন বোধ করে নি।কিন্তু হালকা বাকা না হেসে পারলো না।কথা শেষ করেই প্রহর চলে যায়।আজরাহান ভ্রু ক্রটি করে।এই মেয়ে বড় বাড় বেড়েছে।ব্যতিব্যস্ত হয়ে আজরাহান বলল–
“তোরা বস আমি আসছি।”
আজরাহান যেতেই অধঃপানে চেয়ে আরেকবার স্মিত হাসে মারশিয়াদ।
হনহনিয়ে রান্না ঘরে যায় আজরাহান।প্রহর একাই ছিলো।সানায়া,সামান আর ওর মা,বাবা নিজেদের ঘরে বসে বিয়ের ব্যাপারে কথা বলছে।আজরাহান ত্রস্ত পায়ে রান্না ঘরের ভিতরে ঢুকেই প্রহর এর হাত ধরে ওকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে।কঠিন কন্ঠে বলল–
“এই তোর সমস্যা কী রে??কী শুরু করেছিস???
প্রহর নিজেকে ছাড়াতে চায়।কিন্তু পারে না।বিরক্তিকর মুখভঙ্গী করে বলল–
“ছাড়েন আমাকে।একটু খানি কফির জন্য এমন করছেন কেনো??
ওখানেই রাখা আপনার কফি।নিয়ে যান।”
আজরাহান এর চোখ যায় প্রহর এর গলায় ওই প্যান্ডেন্ট এর দিকে।ভারী কন্ঠে বলল–
“এটা কোথায় পেলি তুই??
প্রহর স্বাভাবিকভাবে বলল—
“জান ভাইয়া দিয়েছে।”
মারশিয়াদ এর কথা শুনতেই আজরাহান এর মস্তিষ্কের উপরিতল দিয়ে যেনো অগ্নিকুণ্ড জ্বলতে থাকে।ক্রমশ রাগে ওর শীতল চোখের মনি দুটো জ্বলজ্বল অগ্নিশিখায় পরিণত হতে লাগল।ক্ষীপ্রতা গলায় বদ্ধ করে দাঁতের সাথে দাঁত চেপে স্বাভাবিক কন্ঠে বলল—
“খোল এইটা।খোল বলছি।”
প্রহর এর মোড়ামোড়ি তে ওকে ছেড়ে দাড়ায় আজরাহান।প্রহর শক্ত কন্ঠে বলল—
“নাহ।খুলবো না।তাতে আপনার কী????
“তোকে আজ আমি,,,,,,
“ভাইয়া!!!!
সানায়ার গরম কন্ঠে শীতল হয় আজরাহান।প্রহর লম্বা পায়ে সানায়ার কাছে এসে দাড়িয়ে আর্দ্র কন্ঠে বলল–
“দেখোনা সানায়া আপু,রাহান ভাইয়া কেমন করছে???
সানায়া ফোস করে এক দম ছেড়ে বলল–
“তুই যা।মা ডাকছে তোকে।”
“হুম।”
প্রহর যেতেই সানায়া চাপা কন্ঠে বলল—
“কী সমস্যা তোমার!!কী শুরু করেছো!!
দেখো ভাইয়া সারারাত নিশাচর এর মতো না ঘুরে একটু ঘুমাও।তাহলে মাথাটা ঠান্ডা থাকবে।যত্তসব!!!
বেশ গম্ভীর ভাব নিয়ে নিজের ঘরে আসে আজরাহান।কাল বিলম্ব না করে ওয়াশরুমে যায়।দেয়ালে দু হাত ঠেকিয়ে ঝর্না ছেড়ে প্রায় আধা ঘন্টা দাড়িয়ে থাকে।ওর শরীরে সমস্ত উত্তপ্তা শীতল করার চেষ্টা করছে।
মারশিয়াদ এর সাথে পরিচয় আজরাহান এর কলেজ লাইফ থেকে।স্বল্প সময়ে ওদের বন্ধুত্ব অনেকটা গাঢ় রূপ নেয়।ওদের চার বন্ধুর মধ্যে বয়সে আজরাহান সবচেয়ে ছোট।কিন্তু ওর ব্রেইন চলে কম্পিউটার গতিতে।
আজরাহান এর বিপরীত চরিত্রের অধিকারী মারশিয়াদ।অনেকটা চাপা স্বভাবের।নিজেকে কখনো মেলে ধরে না সে।কিন্তু বন্ধুত্বের কোনো মর্যাদা সে ক্ষুন্ন করেনি কখনো।চার বন্ধুর শরীর চারটা হলেও প্রান একটাই।
প্রায় আধা ঘন্টা পর শাওয়ার নিয়ে বের হয় আজরাহান।নেত্রযুগলের শুভ্র অংশ রক্তিম রঙে রাঙানো।কন্ঠে আড়ষ্টতা।মাথার চুল ঘষতে থাকে তোয়ালে দিয়ে।
মারশিয়াদ উঠে দাড়ায়। শান্ত কন্ঠে বলল—
“এখন গোসল করলি যে???
“গরম লাগছে তাই।”
“শরীরের গরম না মনের।”
আজরাহান ম্লান দৃষ্টিতে তাকায়।আর বলল–
“উঠলি যে??
“আমার কাজ শেষ।বাকিটা পড়ে জানিয়ে দিচ্ছি।”
“খেয়ে যা।”
“নাহ।কাজ আছে আমার।”
মারশিয়াদ দরজায় গিয়ে ধমকে যায়।আবার ফিরে এসে বলল–
“ক্ষমতা দিয়ে কখনো ভালোবাসা অর্জন করা যায় না।ভালোবাসা কে ভালোবাসা দিয়ে অর্জন করতে হয়।ইউ আর ইন্টেলিজেন্ট।আই থিংক ইউ আন্ডারস্ট্যান্ড মাই ওয়ার্ড।সি ইউ লেটার।”
মারশিয়াদ এর কথা আজরাহান এর কর্ণকুহর হলেও কোনো প্রতিক্রিয়া করলো না।মারশিয়াদ কে ও ভালো করেই চিনে আর স্বভাবও জানে।কিন্তু তবুও প্রহর এর পাশে ও একদম সহ্য করতে পারে না মারশিয়াদ কে।কিন্তু কেনো!!!
তার উত্তর সে পায়না।কিছুতেই না।
আশফিক এক গাল হেসে বলল–
“আমিও যাই।”
“মা তোকে খেয়ে যেতে বলেছে।”
“বড় মা কে বলিস তার ছেলের কর্মকান্ডেই আমার পেট ভরে গেছে।”
“কি বলতে চাস তুই???
“মারশিয়াদ ভুল কিছু বলে নি।সাবধান!!!
পরে তীরে এসে তরী না ডোবে তোর।”
“আমার ডিঙি নৌকা কে ডোবানোর ক্ষমতা কারো নেই।ও আমার আমারই থাকবে।ওকে নিয়ে গভীর সমুদ্রে ভেসে বেড়ানোর অধিকারও আমার।”
“আই হোপ সো।
গেলাম আমি।ঘুমা এখন।তোর এখন রেস্টের প্রয়োজন।”
আজরাহান নিরুত্তাপ।সত্যিই ওর ঘুমের প্রয়োজন।মাথাটা ঝিম ঝিম করছে।আড়ষ্ট হয়ে আছে শরীর এক অজানা পীড়নে।যা অদৃশ্য,অপ্রকাশ্য,অবাঞ্চনীয়।আজরাহান ধুপ করে শুয়ে পড়ে বিছানায়।
,
,
,
আজরাহান কে সিড়ি বেয়ে নামতে দেখে নিজের ঘরে গিয়ে চটজলদি ব্যাগ কাঁধে ঝুলিয়ে বাইরে আসে প্রহর।কিন্তু এসেই ওর মনটা বিষাদে ছেয়ে যায়।আজরাহান ওকে রেখেই চলে গেছে।ঘরের চৌকাঠে এসে দাড়ায় প্রহর।আঁধার ছেয়ে আছে ওর দুধে আলতা রঙের ওই চেহারায়।কুহলিকার দৃষ্টি এড়ালো না।বললেন—
“কী রে দাড়িয়ে আছিস কেনো??
স্কুলের দেরি হয়ে যাচ্ছে তো!!!
প্রহর ভাঙা ভাঙা কন্ঠে বলল–
“রাহান ভাইয়া আমাকে না নিয়েই চলে গেছে।”
কুহেলিকা রেগে উঠলেন।এই ছেলেটাকে সে কোনোমতেই শোধরাতে পারে না।সামনে বসা সানোয়ার আহমেদ এর দিকে কঠোর দৃষ্টি দিয়ে বললেন—
“আপনি এখনো বসে আছেন কেনো??
সানোয়ার আহমেদ নির্বিকার ভাবে চেয়ে আছেন।শান্তভাবে বললেন—
“আমি কী করবো??
“কী করবেন মানে!!!
ওকে স্কুলে দিয়ে আসেন।”
“ও আচ্ছা।”
সানোয়ার আহমেদ যেনো অন্যজগতে ছিলেন।মাত্রই ফিরলেন ধরায়।
,
,
সম্পূর্ন ক্লাস জুড়ে পায়চারী করছে আজরাহান।কিছুতেই পড়ায় মন বসাতে পারছে না।ওর মনটা ইতিবিতি করছে।প্রহর আদৌ স্কুলে এসেছি কি না জানে না সে।কাল থেকে একবারও ওর সাথে ভালো করে কথা বলেনি আজরাহান।নিজেকে কেমন শূন্য মনে হচ্ছে ওর।এই মেয়েকে ছাড়া ও নিজেকে এক মূহুর্তও কল্পনা করতে পারে না।ক্লাসের এমাথা থেকে ওমাথা বার বার হেটে চলছে।টাই এর নবটা হালকা ঢিল করে নেয় যেনো নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে ওর।হাতা উঠিয়ে ঘড়ি দেখছে বারবার।কখন শেষ হবে ক্লাস।ক্লাস এর মেয়েদের অবশ্য সমস্যা নেই।তারা বইয়ের বদলে আজরাহান কেই দেখে চলছে।কিন্তু এ সবকিছু দৃষ্টিগোচর হয় নুরাইসার।আজরাহান কে এতোটা বিচলিত সে আগে কখনো দেখেনি।অসহ্যকর হলেও আজরাহান এর প্রতিটি পদক্ষেপ নিগূঢ়ভাবে পর্যবেক্ষন করে নুরাইসা।ঘন্টা পড়তেই তটস্থ পায়ে ডেস্কের উপর কোনোমতে বইটা রেখে বেরিয়ে আসে আজরাহান।সিড়ি দিয়ে লম্বা লম্বা পা ফেলে নিচে আসে।এগিয়ে যায় বিপরীত পাশের ভবনে যেখানে ক্লাস হয় মাধ্যমিক শাখার।প্রহর এর ক্লাসের সামনে এসে উকিঝুকি মারতেই দেখে প্রহর একদম সামনের বেঞ্চিতে বসা।এতোক্ষনে ওর বুকের হৃদযন্ত্রের রক্ত সঞ্চালন তার গতি ফিরে পেয়েছে।স্বস্তির নিঃশ্বাস নিলো আজরাহান।পেছন ফিরতেই দেখে নুরাইসা দাড়িয়ে।মুখে একদলা হাসি মাখিয়ে বলল—
“ডালিম কুমার,এখানেও বুঝি নজর পড়েছে আপনার??
আজরাহান এর ইচ্ছে হচ্ছিল কষিয়ে একটা চড় লাগিয়ে দেয় নুরাইসার টসটসে গালে।কিন্তু তা সে করলো না।নিজেকে শান্ত রাখলো সে।মনের সমস্ত ঝড় সেখানেই বন্দি করে অধর বাকিয়ে হাসলো সে।আর বলল–
“আজ দেখি মেঘ না চাইতেই জল!!!
মারমেইড,আজ নিজেই আমার এতো কাছে চলে এলেন!!!
নুরাইসা ঠোঁট বাকায়।তাচ্ছিল্যের সাথে বলল—
“ছেলে বুড়ো কেউ ছাড় পায় না আপনার কাছ থেকে।
আপনার তো আকাশের মতো বিশাল হৃদয়।তাই কাউকে ফেরান না।”
“ভুল বললেন মারমেইড।আমার হৃদয়টা আকশের মতো বিশাল হতে পারে কিন্তু সেখানে আমি সবাইকে জায়গা দেই না।”
নুরাইসা বিদ্রুপপূর্ণভাবে হাসে।আর বলল—
“বেচারী প্রহর!!!
ও জানেই না ওর ডিঙি কোথায় গিয়ে ভিড়েছে।”
“আপনাকে তা নিয়ে ভাবতে হবে না মারমেইড।আপনি আপনাকে নিয়ে ভাবেন।
খেয়ে এসেছেন??
নুরাইসা ভ্রু কুঞ্চি করে।কপট রাগ দেখিয়ে গাল ফুলায়।অধর কামড়ে তীক্ষ্ম দৃষ্টপাত করে আজরাহান এর চোখে।
আজরাহান একটু ঝুকে ওর কানের কাছে বলল—
“চলেন,আপনাকে পিংক কালারের হাওয়াই মিঠাই খাওয়াবো।”
পিংক কালার শুনতেই আগুন জ্বলে উঠে নুরাইসার সারা অঙ্গে।ইচ্ছে করছে এই লোকটাকে এখনই চিবিয়ে খেতে।নুরাইসা দ্রুত গতিতে পা বাড়ায়।আজরাহান পৈশাচিক হাসি হাসে আর বলল–
“ওই পিঙ্কি!!!!!!
আজরাহান আনমনেই বলে,,,,,,,তোমাকে যদি আমি নাকের জল আর চোখের জলে এক করে না কাঁদিয়েছি তাহলে আমার নামও আজরাহান কারীম নয়।
,
,
,
ক্লাস শেষে মোড়ে বাইক পার্ক করে দাড়িয়ে থাকে আজরাহান।স্কুল ছুটি হয়েছে প্রায় পনেরো বিশ মিনিট।কিন্তু প্রহর এখনো আসে নি।আজরাহান বিচলিত হয়।ও আবার ফিরে আসে কলেজে।গ্রাউন্ডসহ পুরো কলেজ খালি।কোথাও কেউ নেই।তাহলে ডিঙি নৌকা??????
চলবে,,,
(বিঃদ্রঃ
আজরাহান নট অ্যা লিচু বাগান😒😒😒)