বেমানান! পর্ব-১১

0
1666

বেমানান!
পর্ব – ১১) ফিরে পাওয়ার গান!

“দাঁড়া দিভাই! এক সেকেন্ড দাঁড়া! পুরো ব্যাপারটা কেমন গুলিয়ে যাচ্ছে!
প্রথমে স্নিগ্ধদার ফোনটা হারিয়ে যায়, তাই সেদিন তুই ফোন ট্রাই করেও পেলিনা! আবার ফোনও এলোনা, পরের দিন তোর রাগ হলো, তুই নম্বরটা ব্লক করলি,
স্নিগ্ধ দা তোকে চল্লিশটা মেসেজ করেছে, আর তোর কাছে একটাও মেসেজ আসেনি কারণ তুই স্নিগ্ধ দার নম্বরটা ব্লক করে রেখেছিলিস!
তারপর স্নিগ্ধ দা, নিজের বাড়ির বিয়ে ফেলে শুধু তোদের ঝগড়া মেটাতে বা তোর জন্যে ফেরে মিদনাপুরে, ঘরে ঢুকে দেখে তোর খুব জ্বর! তোকে একলা ফেলে যাবেনা বলে সারারাত থেকে যায় তোর কোয়াটারে!
সকালে উঠে এটা নিয়ে তুই একটা বিশাল সিন ক্রিয়েট করিস যেন বিশাল একটা কিছু ঘটে গিয়েছে! তুই শত অপমান করার পরও স্নিগ্ধদা আমার বিয়ে তে আসে, তোর ট্রান্সফার অর্ডার টা মায়ের হাতে দিয়ে যায়! আর এই ট্রান্সফারটা তুই apply করেছিলিস স্নিগ্ধ দার সাথে ঝগড়া হওয়ার দিন! মানে একটা ঝামেলাতে তুই মন বানিয়ে ফেললি সব ছেড়ে এখানে চলে আসার! সিরিয়াসলি দিদি! কেন? আরে একটা রাত যদি স্নিগ্ধ দা থেকেও থাকে তাতে ক্ষতিটা কি দিভাই?”

“তোর কি মনে হয় কৌশানি? স্নিগ্ধর অন্য কোনো ইনটেনশন ছিল আমার জ্বরের কারণটা ছাড়া, বা সেদিন রাতে কি হয়ে থাকতে পারে?”

“ওঃহহহ! দিভাই প্লিজ! প্লিজ চুপ কর! তুই কোনো বাচ্চা মেয়ে নয় যে তোর সাথে কিছু হলে তুই বুঝতে পারতিস না!”

“কিন্তু, সেই রাতের কথা আমার কিচ্ছু মনে নেই!”

“উফফফ! তো পরের দিন সকালের কথাতো মনে আছে! তোর সাথে কিছু করলে তুই পরের দিন বুঝতে পারতিস না! এরকম হয়না দিভাই! এতো সহজ নয়! আর শোন্ ওরম বাজে কোনো ইনটেনশন থাকলে সেই রাতে বাড়ির বিয়ে ছেড়ে তোর কাছে যাওয়ার কি খুব দরকার ছিল?”

“হমম..তুই হয়তো ঠিকই বলছিস!”

“এবারে কি করবি? এটা জেনেও যে স্নিগ্ধ দা তোকে ভালোবাসে চুপচাপ বসে থাকবি?”

“আর না তো কি করবো? তুই বল ওর পাশে আমাকে মানায়! দেখ কৌশানি যা হয়েছে ভালোর জন্যেই হয়েছে, ভালোলাগা, ভালোবাসা একটা জায়গায়, বিয়ে আর একটা জায়গায়! ভালোই হয়েছে যা হয়েছে! শুধু শুধু একটা ফর্মাল রিলেসন শুরু হয়ে গিয়ে তারপর ভেঙে গেলে….”

“তুই সব সময় ভাঙার কথা কেন বলিস বল তো?”

“কারণ অসমান সম্পর্কের কোনো পরিণতি নেই তাই!”

“পরিণতি মানে কি বোঝাচ্ছিস? বিয়ে?”

“হ্যাঁ…..”

“বেশ তাহলে তুই স্নিগ্ধদা কে সেটাই বলতিস যে তুই প্রেম ট্রেম করতে ইন্টারেস্টেড নয়, তুই ডাইরেক্ট বিয়ে করতে চাস…..”

“পাগল! হয়ে গিয়েছিস! Dr শুভঙ্কর ব্যানার্জী স্নিগ্ধর বাবা! নাম তো শুনেছিস তুই নিশ্চই! মা, দিদি, জামাইবাবু সবাই নাম করা কার্ডিওলজিস্ট! মা এপোলো তে কার্ডিও কনসালটেন্ট….Dr
শর্মিলা ব্যানার্জি! তারপর স্নিগ্ধ কে দেখেছিস তো, অয়েল এডুকেটেড, ডিসেন্ট, হ্যান্ডসাম, আমায় বড্ডো বেমানান লাগে কৌশানি ওর পাশে!”

“দিভাই….তুই বোধহয় সব চেয়ে বড়ো সত্যিটা কে ইগনোর করছিস যে স্নিগ্ধদা তোকে ভালোবাসে!”

“আমি সবটা বুঝেছি কৌশানি! কিন্তু তুই এই মুহূর্তে এটা বুঝছিসনা যে ওদের বাড়ি থেকে কখনো আমাকে মেনে নেবে না!”

“উউফ! এন্ড সেটা তুই নিজে নিজেই ভাবছিস!”

“কৌশানি প্লিজ, তুই আর কিচ্ছুটি বলবিনা এই ব্যাপারে!”

“আমি এক্ষুণি মা কে গিয়ে সবটা বলবো! দেখি মা কি বলে?”

“না! কৌশানি! তুই মা কে কিচ্ছু বলবিনা!”

কৌশানি কোনো কথাই শোনেনা! সোজা ছাদের সিঁড়ি বেয়ে নেমে আসে ঘরে, ঈশানি কৌশানির পেছন পেছন পৌঁছয় ওদের ফ্ল্যাটে!
দত্ত গিন্নি ঘরের দরজা খুলতেই কৌশানি বলে ওঠে –
“মা! দিদি একজন কে ভালোবাসে! আর সেও দিদিকে খুব ভালোবাসে!”

“না! মা সেরকম কিছু নয়! ও এমনি এসব বলছে মা!”

“না মা! আমি সত্যি বলছি, দিদি ভয় পাচ্ছে তোমাদের বলতে!”

দত্ত গিন্নি কিচ্ছু বলেনা, খানিকক্ষণ চেয়ে থাকে ঈশানির দিকে যেন ঈশানি অনেক বড়ো একটা অপরাধ করে ফেলেছে!
তারপর বলে – “ঘরে আয়, এটা নিয়ে আমরা পরে কথা বলবো!”

**************************************************

সন্ধ্যে থেকে আর কোনো কথা হলোনা সেদিন এই ব্যাপারে! রাত তখন প্রায় নটা!
কৌশানির ডাক পড়লো দত্ত বাবু ঘরে ফেরার পর!
কৌশানি ঘর থেকে বেরোতেই যাবে ঈশানি বললো – “শোন না কৌশানি! সবটা বলিসনা ওদের, মানে স্নিগ্ধর রাতে…..মানে ওরা আবার কি ভাববে! মানে টেনশন করবে!”

“আমার মাথায় বুদ্ধি আছে দিভাই…….
যথেষ্ট বড়ো আমি, আমি জানি কোনটা বলা দরকার! অপ্রয়োজনীয় কথা আমি বলবোনা”

ঈশানি একা একা ঘর থেকে ডাইনিং, ডাইনিং থেকে ঘর হাঁটতে শুরু করলো, মিনিট পনেরো পর কৌশানি ঘর থেকে বেরিয়ে গিয়ে ঈশানি কে বললো ও ঘরে যেতে, তারপর এক ধাক্কা দিয়ে দরজাটা ভীষণ জোরে বন্ধ করে লক করে দিলো!

কৌশানির অভিব্যক্তি দেখেই ঈশানি বুঝলো ঘরের ভেতরে আলোচনাটা কৌশানির মনের মতন হয়নি মোটেই….

ঈশানি যখন দত্ত বাবু ও দত্ত গিন্নির ঘরে ঢুকলো দেখলো ওরা দুজনেই বেশ শান্ত একটা হাসি মুখে তাকালো ঈশানির দিকে! তারপর বললো –

“তুই জানিস ঈশানি তোকে নিয়ে এই জন্যে আমাদের এতো গর্ব হয়! তুই মন দিয়ে নয়, ব্যাপারটা মাথা দিয়ে ভাবিস! আর এটা একদম ঠিক! কেন নয় বল ? এটা তো সহজ সরল মানুষের যুগ নয়রে মা! ওই ছেলেটা কি নাম বললো – স্নিগ্ধজিৎ ব্যানার্জি, ওকি সত্যি তোকে বিয়ে করবে, আরে ও রাজি থাকলেও ওর বাড়ির লোক কোনোদিনই রাজি হবেনা! দুদিন ভেবেছিলো তোর সাথে ঘুরবে ফিরবে তারপর ছেড়ে চলে যাবে, তাই হয়তো তোকে বোঝানোর চেষ্টা করেছে, কিন্তু তুই যে সেই ফাঁদে পা দিসনি এটা ভাবতে খুব গর্ব হচ্ছে জানিস!”

ঈশানি মুখ নীচু করে বসে থাকে চুপচাপ! তারপর গলাটা পরিষ্কার করে বলে –
“বাবা! আমার একটা কথা বলার ছিল……..”

“হ্যাঁ বলনা!”

“এখন আপাতত কিছুদিন তুমি আমার জন্যে ছেলে দেখোনা! কিছুদিন!”

“বেশ! তুই যেমন চাইবি তাই হবে!”

*****************************************************

মাস তিনেক পরের কথা…….
ব্যস্ত ওয়ার্কিং আওয়ার্স………

কাউন্টারে উপচে পড়েছে লাইন, ঈশানি যতটা দ্রুত সম্ভব কাজ করে যাচ্ছে কাউন্টারে বসে…..
ঘড়ির কাঁটাতে ঠিক দুটো! আর দুটো মানেই লাঞ্চ ব্রেক!
পাশের কাউন্টারের মনীষা দি, কাউন্টার ক্লোস বলে ফিরিয়ে দিচ্ছে অনেক মানুষ কে, ঈশানি কে অনেকবার বলেছে ওরা এরকম আধঘন্টার লাঞ্চ টাইম টা তে কাউকে এন্টারটেইন না করতে!
কিন্তু কে কার কথা শোনে, প্রায় দুটো কুড়ি অবধি ঈশানি ফ্রন্ট অফিস খুলে রাখে, তারপর দশ মিনিটে লাঞ্চ সেরে আবার বসে যায় কাজে! রুবির ব্রাঞ্চ টা তে অপেক্ষাকৃত ভিড় অনেকটাই বেশি!

“ঈশানি দুটো কুড়ি! ……..
এই শুনুন আপনারা প্লিজ এখন একটু অপেক্ষা করুননা! মেয়েটা কিছু খায়নি!”

ঈশানি দেখলো মনীষা দির কথাটা শেষ হতে না হতে কাউন্টার ফাঁকা হয়ে গেলো এক নিমেষে! তবুও একজন ভদ্র মহিলা এগিয়ে এলেন ঈশানির কাউন্টারের দিকে…..

মনীষা দি আবার গলা চড়িয়ে ভদ্র মহিলাকে বললেন – “কি হলো ম্যাডাম! আপনাকে বললাম তো আর দশ মিনিট আছে, একটু খেয়ে নিতে দিন মেয়েটাকে!”

এই তিনমাসে মনীষা দির সাথে বেশ একটা বন্ধুক্তর সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল ঈশানির!

অদ্ভুত ভাবে কাউন্টারে দাঁড়িয়ে থাকা ভদ্রমহিলা চেয়ে থাকে ঈশানির দিকে!

মনীষা দি আবার বলে – “কি হলো ম্যাডাম, আপনাকে বললাম তো..”

“মনীষা দি! এক মিনিট, ওনার হয়তো সত্যি খুব দরকার আছে কিছু!”
তারপর ঈশানি ভদ্রমহিলার দিকে তাকিয়ে বলে –
“ম্যাডাম! আপনার সেরকম দরকার না থাকলে কি আপনি জাস্ট পাঁচ সাত মিনিট অপেক্ষা করতে পারবেন!”

“পারবো ঈশানি! তবে কি জানতো ওদিকে আবার আমার জন্যে অনেকে অপেক্ষা করছে, আমি তোমার কাছে দুটো মিনিট সময় চাইছি, কেবল দুটো মিনিট, একবার বাইরে আসবে!”

ঈশানি অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো ভদ্রমহিলার দিকে! ভদ্রমহিলা ঈশানির নাম জানলো কি করে?

ঈশানি ব্যাংকের বাইরে একটা গাছের তলায় নিয়ে গিয়ে দাঁড় করলো ভদ্রমহিলা কে, তারপর জিজ্ঞেস করলো
“বলুন ম্যাডাম! কি দরকার? আর আপনি আমার নাম জানলেন কি করে?”
বেশ ঠান্ডা গলায় জিজ্ঞেস করলো ঈশানি….

“আমি শর্মিলা ব্যানার্জি, স্নিগ্ধর মা!”

ঈশানি কিছু বলতে পারেনা, কথাগুলো সব জড়িয়ে আসে, হৃদপিন্ডটা দ্বিগুন গতিতে কাজ করতে শুরু করে! কোনোমতে কিছুনা বলতে পেরে একটু নীচে ঝুঁকে পায়ে হাত দিতে যায় ভদ্রমহিলার!
“ঈশানি! আরে এসব প্রণাম রাস্তাতেই সারবে! হমমম?”

“ম্যাডাম! আপনি……..
…… এ…. ভাবে… এখানে ….রোদে……আপনি প্লিজ ভেতরে এসে বসুন! আমরা ভেতরে গিয়েও ,….”

“না শোনো, ঈশানি, আমি আসলে অনেকক্ষন এসেছি, আমি তো জানতামনা এতো কাজ থাকে তোমাদের….”

“আপনি এতক্ষণ দাঁড়ালে কেন ম্যাডাম? প্লিজ ম্যাডাম! আপনি ভেতরে চলুন!”

“আমার কথাটা তুই একটু শোন! পরে একদিন আসবো রে! আজ দুটো থেকে পেশেন্ট ওয়েট করছে! আর তোরও তো লাঞ্চ হয়নি এখনো!হমম……! তাই আজ আমি আর ভেতরে যাবোনা!
কিন্তু আমি এখন যেটা বলছি সেটা মন দিয়ে শোন কেমন?”

ঈশানি কিছু বলে না, একমনে শুনতে থাকে Dr
ব্যানার্জির বলা কথা গুলো! Dr ব্যানার্জি একটু থেমে আবার বলতে শুরু করে –
“ঈশানি আমি চাই, তোরা তোদের সম্পর্কটা কে একটা সুযোগ দে! কেমন! বাকি তারপর তোরা যা ঠিক করবি সেটাই হবে! জোর করে তোদের একসাথে থাকতেও বলছিনা আবার আলাদা হয়ে যেতেও বলছিনা! কিন্তু তুই স্নিগ্ধর সাথে একদিন দেখা কর, কথা বল, তারপরেও যদি তোর মনে হয়ে তোরা একসাথে থাকতে চাসনা…..তাহলে..”

কথাটা শেষ করার আগেই একটা ফোন এলো Dr ব্যানার্জির ফোনে…..
ফোনে একটু দুটো কথা বলেই রেখে দিলেন ফোনটা…..

ফোনটা রেখে Dr ব্যানার্জি আবার ঈশানির দিকে চেয়ে বললেন –
“তাহলে! আমি আসি…..এই যে আমার কার্ড! তুই আমাকে জানাস কি ঠিক করলি না করলি, আর যদি দেখা করতে চাস, তাহলে কবে দেখা করতে চাস ……একটু জানাস…..কেমন? এখন আমি আসি!”
ঈশানির সাথে কথা শেষ হতেনা হতেই, আবার আরো একটা ফোন এলো Dr ব্যানার্জির নম্বরে! ফোনে কথা বলতে বলতে উনি একটা লাল গাড়িতে গিয়ে উঠে বসলেন, ঈশানি দেখলো একটা বিলাসবহুল ঠান্ডা গাড়িতে উঠে উনি ফোনে কথা বলতে বলতেও ঈশানিকে হাত দেখিয়ে ইশারা করলেন খেয়ে নিতে…..

****************************************************

আজ ব্যাংক থেকে বেরিয়েই ঈশানি আর তাড়াহুড়ো করে বাস ধরলো না! বাসস্ট্যান্ডে ব্যাগ টা সাইডে রেখে ফোন করে সবটা খুলে বললো কৌশানি কে…..

“দিভাই! তুই এখনো ভাবছিস! দেখ দিভাই জীবন বারবার সুযোগ দেয়না, বাকি যা করবি তোর ইচ্ছে!”

“কিন্তু! বাড়িতে?”

“উউউফ! দিভাই তু্ই কি স্কুলে পড়িস? বলবি আমার সাথে বেরোবি! এতো বোকাবোকা কথা বলিসনা তুই! সিরিয়াসলি দিভাই!”

“তাহলে কবে যাবো?”

“যত তাড়াতাড়ি সম্ভব! এই শনিবার দেখা কর! ফোর্থ স্যাটারডে!”

“আচ্ছা!”

ঈশানি, কৌশানির ফোনটা রেখে, ব্যাগ থেকে বের করে Dr শর্মিলা ব্যানার্জির কার্ডটা! তারপর ডায়াল করে কার্ডে লেখা নম্বর…..

“হ্যালো ম্যাডাম! ঈশানি বলছিলাম! সরি একটু বিরক্ত…..”

“উউফ! স্নিগ্ধ দেখছি ঠিকই বলে একদম, ভীষণ ফর্মালিটি করিস তো! ছেলে মেয়েরা ফোন করলে মা রা বিরক্ত হয়না! আর ম্যাডাম বলবিনা! আপাতত কাকিমা বলে ডাকতে পারিস…..”

ঈশানি এক মিনিটের জন্যে মনে হলো যেন কতদিন থেকে চেনে Dr শর্মিলা ব্যানার্জি কে!

“হ্যালো!”

“হ্যাঁ ম্যাডাম, মানে কাকিমা ……বলছিলাম যে যদি স্নিগ্ধ স্যারের সমস্যা না থাকে তাহলে এই শনিবার……”

“ভগবান!”

“কি হলো ম্যাডাম?”

“আবার ম্যাডাম!”

“ওঃ! সরি ….কিন্তু আমি কি কিছু ভুল বললাম!”

“আর কতদিন স্নিগ্ধ স্যার বলে ডাকবি তুই! এই স্নিগ্ধ কে স্যার বলে ডাকা টা একটা বড়ো কারণ তোদের ঝামেলার পেছনে জানিস তো!”

“ওঃ!”

“বেশ! আমি স্নিগ্ধ কে বলে দিচ্ছি এই শনিবার ……. কিন্তু কোথায় মিট করবি?”

“ভাবিনি এখনো ম্যাডাম! ওহ সরি …..”

“পাগল তুই একদম! ….আচ্ছা বাইপাস ধাবা নামে একটা রেস্টুরেন্ট আছে, ওখানে লাঞ্চ করতে করতে কথা বলে নে…..ঠিক আছে?”

“হমমম! ওকে!”

“বেশ আমি স্নিগ্ধ কে জানিয়ে দিচ্ছি….আগামী শনিবার…..দুপুর দেড়টা…..বাইপাস ধাবা!”

“ওকে ম্যাডাম!”

“আচ্ছা আমি এখন রাখি! পরে কথা হবে….ও ভালো কথা স্নিগ্ধর নম্বরটা আনব্লক করে দিস….”

“ওঃ! হ্যাঁ….ঠিক আছে!”

বিকেলে বাসে যেতে যেতেই আনব্লক করে দিলো ঈশানি স্নিগ্ধর নম্বরটা! অনেকদিন পর ট্র্যাক লিস্টটা পাল্টে মন ভাঙার গান ছেড়ে ঈশানি চালিয়ে দিলো প্রেমের গান!
ফিরে পাওয়ার গান শুনতে শুনতে বারবার চোখ দুটো ভোরে আসছিলো ঈশানির!
আগামী শনিবার!
কথাটা মনে মনে ভাবতে ভাবতে এক অদ্ভুত শিহরণ খেলে গেল ঈশানির শরীর ও মন জুড়ে!
এতো কিছুর পরও স্নিগ্ধ বাড়িতে বলেছে ঈশানির কথা! নয়তো Dr ব্যানার্জি কি ভাবে…………….
আর কিছু ভাবলোনা ঈশানি,,
চোখ দুটো বন্ধ করে,
গানের ছন্দে হারিয়ে গেল স্নিগ্ধর সাথে, সেই প্রথম ট্রেনে দেখা, হাসপাতালের বাইরে প্রথম বিকেলের চা, তারপর মর্নিং ওয়াক, সব স্মৃতিগুলো উল্টে পাল্টে পড়তে থাকলো মনে মনেই!
বিকেলের ঠান্ডা হাওয়া ঈশানির সব ক্লান্ততা এক নিমেষেই উড়িয়ে নিয়ে গেলো!

হেডফোনে তখন বেজে চলেছে একের পর এক প্রেমের গান ………………………………………..
………………………………………………………….
****ঠিক এমন এভাবে…তুই থেকে যে স্বভাবে….*****

(চলবে……..)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here