#ভালোবাসার_রঙ ‘১৩’
#Jerin_akter_nipa
সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে এসেছে রায়া। ইহফাজ ইদানিং আগের থেকেও রায়ার অনেক বেশি খেয়াল রাখছে দেখে মা খুশি হয়ে গেলেন। এর মধ্যে একবার ইভা আপু এসেছিল। বিকেলে টিয়াকে নিয়ে খেলছিল রায়া। আপু কথার ছলে বলেছিল।
-বাচ্চা তোমার খুব ভালো লাগে, তাই না রায়া?’
রায়া হাসি মুখে সোজা উত্তর দিয়েছিল।
-টিয়ার মত পুতুল পুতুল হলে ভালো লাগে আপু। ভ্যা ভ্যা করে কাঁদুনে বাবু একদম ভালো লাগে না।’
আপু হাসতে হাসতে রায়ার মাথায় হাত রেখে বলেছিল।
-এবার তোমারা নিজেদের একটা বাচ্চা নিয়ে নাও। আমি শিওর তোমার আর ইফুর ছেলেমেয়ে একদম কাঁদুনে হবে না। সে তো টিয়ার থেকেও বেশি সুন্দর হবে। আর পুতুল পুতুলও হবে। দেখে নিয়ো।’
সেদিন আপুর কথা শুনে লজ্জায় রায়ার মুখ লাল হয়ে গিয়েছিল। যেখানে ইহফাজের সাথে তার ঝগড়াই শেষ হয়না। আপু বলছে বাবু নাও। বাবু আকাশ থেকে পড়বে নাকি?
এরপর থেকে রায়া যতবার বসার ঘরে টাঙানো ইহফাজের ছোট বেলার মেয়ে সাজানো ছবিটা দেখে ঠিক ততবার আপুর বলা কথা মনে পড়ে যায়। এবার নিজেদের একটা বাচ্চা নাও।
পরের দিন ঘরের টুকটাক কাজ করছিল রায়া। বসার ঘরে এসে সোফা ঝাড় দিচ্ছিল। আজও ছবিটার দিকে চোখ চলে যায়। রায়া মা’কে ডাকে।
-মা, মা এই ছবিটা নিচে নামিয়ে পরিষ্কার করি? অনেক ধুলো জমেছে।’
-আমাকে জিজ্ঞেস করে তোর কাজ করতে হবে মা? নিজের ঘর। যেভাবে খুশি সেভাবে কাজ কর।’
মা’র কথা শুনে খুশি মনে টুলের উপর দাঁড়িয়ে সাবধানে ছবিটা নামিয়ে আনলো। খুব করে খেয়াল রাখল যেন হাত থেকে পড়ে গিয়ে ভেঙে না যায়। তাহলে ওর স্বামী নামের বদটা ওর ঘাড় মটকাবে। এক টুকরো কাপড় দিয়ে ছবিটা মুছতে মুছতে রায়ার মাথায় দুষ্টুমি বুদ্ধি চাপল। মুছা হয়ে গেলে ছবিটা আগের জায়গায় না রেখে নিজের ঘরে নিয়ে গেল। রাতে ইহফাজ বাড়ি ফিরেছে। রায়া তার খুলে রাখা শার্ট, ওয়ালেটে, ঘড়ি ঠিক করে রাখল। ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে এলে টিশার্ট এগিয়ে দিল। ইহফাজ রায়ার দিকে তাকিয়ে হেসে জিজ্ঞেস করল।
-আজ সারাদিন কী কী করেছ?’
-অনেক কাজ। মা’র সাথে রান্নায় সাহায্য করেছি। ঘর ঝাড় দিয়েছি। আপনার ফুলগাছের যত্ন নিয়েছি। সন্ধ্যায় ছাদ থেকে কাপড় এনেছি। ওগুলো ভাঁজ করে তুলে রেখেছি।’
টিশার্ট গায়ে দিতে দিতে ইহফাজ বলল,
-বাবাহ! অনেক কাজ করেছ দেখছি। ভালো কাজের মেয়ে হয়ে গেছ। আগের মত বেকার নেই।’
-শ্বশুড়বাড়িতে বেকার থাকা যায়? শুয়ে বসে খেলে লোকে বলবে এ কেমন বৌ বিয়ে করিয়েছে। শাশুড়িকে দিয়ে সব কাজ করায়।’
হেসে ফেলল ইহফাজ। তার ভাবা আগের সেই ফাজিল অসভ্য মেয়ে নেই রায়া। ওর মধ্যে অনেকটা পরিবর্তন এসেছে। রাতের খাওয়া শেষ করে ওরা দু’জন একসাথে রুমে এসেছে। ইহফাজ একটা বই হাতে নিয়ে বিছানায় বসে বালিশে হেলান দিয়ে পড়ছে। রায়া আড়চোখে ওকে দেখল। তারপর হঠাৎ যেন মনে পড়েছে এমন ভাবে বলে উঠল,
-এইরে!’
একটু জোরেই বলেছে রায়া। কি না কি হয়েছে ভেবে ইহফাজ বলল,
-কি হয়েছে?’
বিছানা ছেড়ে উঠে গেল রায়া। ইহফাজের সেই ছবিটা এনে বিছানার উপর রেখে বলল,
-এটা দুপুরে নামিয়ে এনেছিলাম। তুলে রাখতে তো ভুলেই গেছি।’
ছবিটার দিকে একবার দেখে আবার পড়ায় মন দিল ইহফাজ। বলল,
-সকালে রেখে দিয়ো। এখন ছাড়ো ওটাকে। শুয়ে পড়ো।’
ইহফাজ বললেই তো রায়া শুবে না। ওর মনে এখন অন্য কিছু ঘুরছে। কিছু একটা ভেবে রায়া বলল,
-আচ্ছা, ছবিতে এই মেয়ে দু’টা কে?’
ইহফাজ তার কথায় মন দিচ্ছে না দেখে রায়া গলার স্বর একধাপ উঁচু করে বলল,
-শুনছেন, এই মেয়ে দু’টা কে?’
ইহফাজ আগের মতই বইয়ের দিকে চোখ রেখে বলল,
-আপু। ‘
অবাক হবার ভান করল রায়া।
-হ্যাঁ! দুটোই আপনার আপু? একটা তো ইভা আপু। আরেকটা আপু কে? আর ওই আপু এখন কোথায়? আপনাদের সাথে থাকে না কেন? বলুন না দ্বিতীয় আপুটা কোথায়? ‘
ইহফাজ বেশ বুঝতে পারছে এই মেয়ে সব জেনেই তার পেছনে লেগেছে। মজা নিতে চাইছে তার সাথে। হাতের বইটা পাশে রেখে দিল ইহফাজ। সোজা রায়ার দিকে তাকাল। মিটিমিটি হাসছে রায়া। ইহফাজের ছবির উপর আঙুল রেখে বলল,
-এই আপুটার কি বিয়ে দিয়ে ফেলেছেন? শ্বশুড়বাড়িতে আছে ও। তাই আসছে না? কিন্তু শ্বশুড়বাড়িতে থাকলেও তো ভাইয়ের বিয়েতে আসত। আসত না বলুন?’
ইহফাজের দুষ্টুমি বুদ্ধিও রায়ার থেকে কিছু কম যায়না। মেয়েটাকে আজ শিক্ষা দিয়ে ছাড়বে সে। উঠে এসে ধীরে ধীরে রায়ার দিকে এগুচ্ছে সে। মুখে অদ্ভুত একটুকরো হাসি।
-ওই আপু টার কথা বলছো তুমি? দেখবে ও কোথায় আছে?’
হঠাৎ ইহফাজের চালচলন কিছু ঠিক লাগছে না রায়ার কাছে। লোকটা এভাবে হাসছে কেন? আর তার দিকে এগুচ্ছেই বা কোন দুঃখে?
আমতা আমতা করে রায়া বলল,
-না মানে… আসলে…
রায়ার অনেকটা কাছে এসে গেছে ইহফাজ।
-না মানে আসলে কি? তুমিই তো জানতে চাইছিলে আপুটা কোথায়? তাহলে কাছে এসো দেখাই আপুটা কোথায়? ‘
চোখ বড় বড় করে রায়া বলল,
-অ্যাঁ! কাছে? ‘
-হুম। এসো না। তোমাকে বলব আপুটার বিয়ে কার সাথে দিয়েছি।’
ইহফাজ রায়ার হাত ধরতে গেলে রায়া লাফিয়ে দু’পা পিছিয়ে গিয়ে বলল,
-না বাবা না। আমার অত কিছু জানা লাগবে না। ভীষণ ঘুম পেয়েছে আমার। আমি শুতে যাচ্ছি। ঘুমাব এখন।’
শব্দ করে হেসে ফেলল ইহফাজ। কাজ হয়েছে। একে চুপ করানোর জন্য এর থেকে ভালো আইডিয়া আর হতো না। ফাজিল মেয়ে। জেনে জেনে তার পেছনে লাগছিল। নাকে মুখে চাদর টেনে নিল রায়া। মনে মনে বলল,
-কি বদ লোকরে বাবা! বেশরম, বেহায়া লোক। কেমন করে হাসছে আবার। বদের হাড্ডি। ‘
যতই দিন যাচ্ছে রায়া আর ইহফাজ কাছাকাছি চলে আসছে। তারা বুঝতে পারছে দু’জনই দু’জনকে ভালোবাসে। কিন্তু কেউ কাউকে বলে উঠতে পারছে না। নীরবে ভালোবেসে যেতে যেতে আজ ওদের বিয়ের ছয় মাস পেরিয়ে গেল। ইহফাজ ভেবে নিয়েছে। যা কিছুই হয়ে যাক, আজ তো রায়াকে তার মনের কথা বলবেই বলবে। রায়াও নিশ্চয়ই তাকে ভালোবাসে। আর না বাসলেও সমস্যা নেই। যেভাবে ওরা এতদিন একসাথে ছিল। সেভাবে সারাজীবন থাকতে পারবে। টিয়ার জন্মদিন আজ। ইহফাজদের বাড়িতে জন্মদিন পালন করা হবে। বিকেল থেকে রায়া একা হাতে ঘর সাজাচ্ছে। ইহফাজ বাড়ি ফিরলে রাতে কেক কাটা হবে। সন্ধ্যার পরে হালকা গোলাপি রঙের নতুন একটা শাড়ি পরেছে রায়া। চুলগুলো খোঁপা করেছে। চোখে গাঢ় কাগজ। হাত ভর্তি চুড়ি। ইহফাজের জন্য অপেক্ষা করছে সে। আজকাল তার সবকিছুই ইহফাজকে ঘিরে। লোকটা আশেপাশে থাকলে সব কিছু কেমন রঙিন লাগে। রায়া জানে সে মনে মনে ইহফাজকে ভালোবাসে। কিন্তু এই কথাটা সে কীভাবে মুখে বলবে? ইভা রায়ার ঘরে এসে বলল,
-তুমি রেডি? টিয়া কেক কাটার জন্য কান্নাকাটি শুরু করে দিয়েছে। এই ইফুটা কোথায় রইল? ওকে একটু কল করে দেখো না, কোথায় আছে।’
-দেখছি। তুমি গিয়ে শাড়িটা পাল্টে নাও।’
-তাড়াতাড়ি করো বোন। আমার মেয়ে আমাকে জ্বালিয়ে খাচ্ছে।’
ইভা চলে গেলে রায়া ইহফাজকে কল করে।
-কোথায় আপনি? ‘
-এইতো আসছি। রাস্তায় আছি।’
-কতক্ষণ লাগবে আসতে? টিয়া কেক কাটবে বলে আপনার জন্য অপেক্ষা করছে।’
-হ্যাঁ, হ্যাঁ। আসছি তো বাবা। আর বিশ মিনিট লাগবে।’
কল কেটে আয়নায় আরেক বার নিজেকে দেখে লজ্জা পেল রায়া। একা একাই হেসে ফেলল।
ইহফাজ এসে গেছে। রায়া দরজা খুলতে ওকে দেখে দুমিনিট হাঁ করে তাকিয়ে রইল ইহফাজ। কোন কথা বলতে পারল না। মেয়েটাকে শাড়ি পরলে এত সুন্দর লাগে। তবুও কেন যে শাড়ি পরে না।
-কি হলো? হাঁ করে দাঁড়িয়ে আছেন কেন?’
মাথা নেড়ে ভেতরে চলে এল সে। রায়া ওর হাত থেকে ব্যাগটা নিয়ে নিল।
-ঘরে আপনার শার্ট প্যান্ট বের করা আছে। দুমিনিটে গিয়ে চেঞ্জ করে আসুন। এমনিতেই অনেক দেরি করে ফেলেছেন। টিয়া বেচারি ঘুমিয়ে যাবে আবার।’
রায়ার সামনে ইহফাজ আজ কিছু বলতে পারছে না। মুখ দিয়ে কথা বেরুচ্ছেই না। রুমে গিয়ে নিজেকে গালি দিল ইহফাজ।
-গাধা! বউয়ের সামনে মুখ দিয়ে কথা বের হয়না। এমন করলে ভালোবাসি বলবি কী করে? এই জীবনে আর ভালোবাসি বলতে হবে না। যেভাবে আছিস সেভাবেই থাক, গরু।’
চেঞ্জ করে নিয়েছে ইহফাজ। রায়া রুমে এসেই তাড়া দিতে লাগল।
-এখনও রুমে কি করছেন আপনি? বাইরে চলুন না।’
-রায়া!’
-হুম। ‘ বলতে বলতে ইহফাজের খুলে রাখা শার্ট বিছানার উপর থেকে নিয়ে ভাঁজ করে রাখছে। মনে মনে ইহফাজ বলল,
-এই মেয়েটা আমার সামনে দুমিনিট ঠিক করে দাঁড়ায় না কেন? ‘
ইহফাজের সামনে এসে দাঁড়াল রায়া।
-কিছু বলছিলেন? ‘
-হুম। তোমাকে কিছু বলার আছে।’
-যা বলার কেক কাটার পরে বলবেন। এখন না।’
রায়া যেতে নিলে পেছন থেকে ইহফাজ ওর হাত ধরে ফেলল। আজ ইহফাজের আচরণ কেমন অদ্ভুত ঠেকছে রায়ার কাছে। কি হলো ব্যাটার? অন্য দিন তো এরকম করে না। ইহফাজ তাকে হাত থেকে টেনে নিজের কাছে নিয়ে এলো। অনেকটা সাহস করে কানের কাছে মুখ নিয়ে বলল,
-সবার সব কথাই তো শোনো। আমার দু’টা কথা শোনার সময় তোমার হয়না। আমার সামনে এলেই তাড়ায় থাকো। দু’টা মিনিট দিবে তো আমায়!’
-অ্যাঁ!’
-হ্যাঁ। তুমি জানো আমাদের বিয়ের আজ ছয়মাস হয়েছে? ‘
-জানি তো।’
-জানো! আমি তো ভেবেছিলাম এসব নিয়ে কোন মাথা ব্যথা নেই তোমার।’
একটু চুপ করে থাকল ইহফাজ। রায়ার কানের লতিতে হালকা করে চুমু খেয়ে বলল,
-আর কতদিন এভাবে থাকব আমরা? একসাথে থেকেও সাথে নেই। কাছাকাছি আছি তবুও দূরে। এভাবে আর কতদিন চলবে রায়া? আমরা কি কখনও অনান্য কাপলদের মত স্বাভাবিক ভাবে সংসার করব না?’
হালকা কাঁপছে রায়া। সে কোন কিছু বলার আগেই নিউজ দরজায় উঁকি দিয়ে বলল,
-ইভা আপু তোমাদের ডাকছে। আমি গিয়ে বলি তোমাদের আসতে একটু দেরি হবে।’
নিউজকে দেখে তাড়াহুড়ো করে রায়াকে ছেড়ে দূরে সরে দাঁড়াল ইহফাজ। রায়া শাড়ি ঠিক করতে করতে নিউজকে পাশ কাটিয়ে বেরিয়ে গেল। ইহফাজ নিউজে দৌড়ানি দিল।
-শালা,নিউজের বাচ্চা। আসার আর সময় পেলি না। আর দুমিনিট পরে এলে কী হতো?’
-আমি জানতাম নাকি তোমরা রোমান্স করছো। জানলে আসতাম নাকি?’
-তবে রে এতটা পেকে গেছিস তুই! ‘
ইহফাজকে তেড়ে আসতে দেখে নিউজ বাবারে বলে দৌঁড়ে পালাল।
কেক কাটার পুরোটা সময় রায়া একবারও ইহফাজের দিকে তাকাতে পারেনি। চোখে চোখ পড়ে গেলেই লজ্জা পেয়ে চোখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
ইহফাজ আর তাকে বেশি লজ্জায় ফেলতে চাই না বলে দূরে দূরেই থেকেছে।
অনেক রাতে নিজের ঘরে ফিরে এসেছে রায়া। ইহফাজ এখানও ফিরেনি। ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসে হাত থেকে চুড়ি গুলো খুলতে খুলতে রায়া বলছে,
-খাওয়া দাওয়া তো সেই কখন শেষ হয়েছে। এখনও উনি কোথায় রয়ে গেলেন?’
দরজায় শব্দ হলো। ইহফাজ ঘরে এসে দরজা বন্ধ করে দিয়েছে। রায়া ওর দিকে তাকাল না। ইহফাজ এসে ওর পেছনে দাঁড়াল। হাত থেকে ফুলগুলো ড্রেসিংটেবিলের উপরে রাখল। চোখ বড় বড় করে তাকাল রায়া।
-এসব কি?’
-আমার গাছের ফুল। মনে আছে সেদিন তুমি আমার উপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য আমার গাছ থেকে সবগুলো ফুল তুলে নিয়েছিলে। আমি তোমাদের ওখানে গিয়ে দেখেছিলাম তুমি ফুল দিয়ে সেজে আছো।’
-হুম।’
রায়ার খোঁপায় ফুল গেধে দিতে দিতে ইহফাজ বলল,
-সত্যি বলতে কী জানো? প্রথমবারের মত সেদিনই তোমাকে আমার ভালো লেগে গেছিল।’
পেছন ফিরে ইহফাজকে দেখল রায়া। অবিশ্বাসের সুরে বলল,
-হ্যাঁ?’
-হুম। কিন্তু সেটা শুধুই ভালো লাগা ছিল। ভালোবাসার নাম দেয়া যেত না সেটাকে।’
চুপ করে রইল রায়া। ইহফাজ বলে যাচ্ছে।
-সেই এতটুকু ভালো লাগা থেকে কবে যে তোমাকে ভালোবাসতে শুরু করেছি তা আমি নিজেও জানি না রায়া।’
রায়ার মুখ লজ্জায় লাল হয়ে গেছে। নিচের দিকে চোখ নামিয়ে নিল সে। ইহফাজ হঠাৎ করে রায়াকে কোলে তুলে নিয়ে বলল,
-তুমি তোমাকে ভালোবাসো না রায়া?’
লজ্জা,খুশি, ভয় সবকিছু মিলিয়ে রায়ার মনে এক অন্য রকম অনুভূতি কাজ করছে। কিছু বলতে পারছে না সে।
-কি হলো? বাসো না?’
আস্তে আস্তে ইহফাজের দিকে চোখ তুলল রায়া। গলার পেছন দিয়ে হাত পেঁচিয়ে বলল,
-ভালোবাসি কি-না তা বলতে হবে? আপনি বুঝতে পারেন না?’
-না। আমি তোমার মুখ থেকে শুনতে চাই।’
-বাসি, বাসি,বাসি। অনেক ভালোবাসি। কিন্তু আপনি বদের হাড্ডি কখনও বুঝতেই চাননি। সারাক্ষণ শুধু আমাকে ধমক দিয়েছেন। একটু কিছু করলেই শাস্তি দিয়েছেন। এমন বদ লোককে আমি কেন বলব ‘আপনাকে আমি ভালবাসি’।
রায়ার দিকে চোখ পাকিয়ে তাকাল ইহফাজ।
-আমি বদ? বদের হাড্ডি আমি?’
-তা নয়তো কি? এখনও তো আপনি আমাকে ধমকাচ্ছেন।’
ইহফাজ হেসে ফেলল। বলল,
-ওরে আমার পাগলী বৌরে! আচ্ছা ঠিক আছে। আর ধমকাবো না। বকাও দিব না। শাস্তিও না। আজ থেকে শুধু ভালোবাসবো।’
রায়াকে কোলে নিয়ে বিছানার দিকে এগিয়ে গেল ইহফাজ। আজ থেকে ওদের মধ্যে ভালোবাসার নতুন অধ্যায় শুরু হতে যাচ্ছে।
সমাপ্ত।
শেষ পর্ব। এতদিন ধরে পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ। কমেন্ট করতে কিপ্টামি করবেন না।