#ভালোবাসি_আমি_যে_তোমায়
#Sohani_Simu
পর্ব:২৮
আমি:শৈবাল এসব করেছে?(নির্ভীক ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে)
নির্ভীক:এটা শৈবাল নয়।(ল্যাপটপ কোলের উপর তুলে নিয়ে)
আমি:মানে?এটা তো শৈবালই আমি চিনি উনাকে।(ভ্রু কুচকে)
নির্ভীক:এটা প্রবাল। শৈবালের বড় ভাই। প্রবাল আর শৈবাল এরা দুইজন আমার খালাতো ভাই।
আমি:প্রবাল?(ভ্রু কুচকে)
নির্ভীক:হুম,এই যে দেখ।(ল্যাপটপ আমার দিকে ঘুরিয়ে দিয়ে)
আমি উনার পাশে বসে ল্যাপটপের স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখি দুটো শৈবাল।একটা শৈবাল হাসি মুখে আছে আর একটা শৈবাল মুখ গোমড়া করে আছে।একজন কালো কোট আরেকজন নীল শার্ট পরে আছে।একজন একটু শ্যামলা অন্যজন ফর্সা। একজনের চুল বড় আরেক জনের চুল ছোট। উচ্চতাতেও একটু তফাত আছে কিন্তু চেহারা একই।
নির্ভীক:কালো কোর্ট পরা ও প্রবাল ভাইয়া।
আমি:উনারা কি টুইনস?
নির্ভীক:না।ওদের বয়সের ডিফারেন্স ৪বছর।ওরা দেখতে অনেকটা একইরকম হয়েছে।কিন্তু ওদের আচরণে আকাশ পাতাল তফাৎ আছে।শৈবাল যতটা উশৃঙ্খল প্রবাল ততটাই শান্ত আর ভদ্র।
আমি:উনি কি হুডি পরা লোক?(ভ্রু কুচকে)
নির্ভীক:হুম হুডি পরা লোক আর লেটার টাও প্রবাল ভাইয়াই লিখেছে।শুধু ওই লেটার নয়, মোট ৩৪টি লেটার লিখেছে ও তোমাকে।সবগুলো লেটার পরে আমি ধরে নিয়েছি এসব প্রবাল ভাইয়াই করেছে। কিন্তু কোথাও একটা খটকা থেকেই যাচ্ছে।প্রবাল ভাইয়ার সাথে হুডি পরা লোকের কিছু কিছু মিল পাচ্ছি।বাকি গুলো আমাকে খুব ভাবাচ্ছে।
আমি:৩৪টি লেটার?কিন্তু..
নির্ভীক:তুমি একটায় পেয়েছো বাকি গুলো আমার কাছে আছে,তুমি ওগুলোর ব্যাপারে জানতেই পারোনি।
জারিফ:প্রবালকে আমি চিনি।খুব ভাল বিজনেসম্যান।কিন্তু ও এসব করবে আমি ভাবতেও পারছিনা।
নির্ভীক:লেটার গুলো প্রবাল ভাইয়া লিখেছে এব্যাপারে আমি হান্ডের্ড পারসেন্ট সিউর আমার কাছে প্রুফও আছে আর নাটোরে কিছু লোক পাঠিয়েছিল সেটারও প্রুফ আছে কিম্তু হুডি পরা লোকটার আচরণ প্রবাল ভাইয়ার সাথে মিলছেনা।তাও আমি ধরে নিচ্ছি এসব তারই কাজ কারন লেটারে ওই হুডি পরা লোকের কথার সাথে মিল আছে আর ওই ফাইল টা,কিছু তো একটা চলছে।(চিন্তিত হয়ে)
জারিফ:ওই ফাইল তো আমাদের কম্পানি রিলেটেড ওটা চুরি হওয়ার এতদিন পরও কোন প্রবলেম হলোনা?(ভ্রু কুচকে)
নির্ভীক:প্রবলেম হয়েছিল তো কিন্তু আমার মনে হয়না সেটা ফাইলের জন্য।কারন ওই ফাইল কেউ ওপেনই করতে পারবেনা।কেউ আমার ল্যাপটপ চুরি করেছে আর ওটাতে ওই ফাইল আছে।কেউ বড়জোড় ফাইলের নাম দেখতে পাবে ওপেন করতে পারবেনা, ওপেন করলেও কিছু বুঝতে পারবেনা শুধু কোড আসবে আমি ইচ্ছে করলে এখানে বসে সব ফ্লপ করতে পারবো বাট নো নিড।হুডি পরা লোকই আমার ল্যাপটপ চুরি করেছে আর ওখানে অজ্ঞাত০.১ ফাইল দেখে ভেবেছে আমি ওটা ওর জন্য ক্রিয়েট করেছি সেজন্য ও অন্তকে ফোনে বলছিল আমার কাছে ও অজ্ঞাত০.১।ফাইলটি কেন ক্রিয়েট করা হয়েছিল জানো তুমি?(জারিফ ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে)
জারিফ:হুম।
নির্ভীক:প্রবাল ভাইয়ার হাতে ফাইলটা গেলে ওদের প্রচুর লাভ আছে।প্রবাল ভাইয়া চেয়েছিল বাবার ওই ডিল টা তোমারদের সাথে না হয়ে প্রবাল ভাইয়ার সাথে হোক কিন্তু সেটা হয়নি।তারপর আমি খেয়াল করেছি প্রবাল ভাইয়া আমাদের সাথে অন্যরকম হয়ে গেল।কিছুদিন পর ফাইলও চুরি হলো তখন থেকেই আমার সন্দেহ হতে লাগলো।লেটার গুলোর প্রুফ পেয়ে আমার সন্দেহ বিশ্বাসে পরিনত হলো।কিন্তু প্রবাল ভাইয়ার দিকে দেখলে এসব হুডি পরা লোকের সাথে মিলছেনা।আবার ফাইলের দিকে দেখলে মিলছে।
জারিফ:এখন কি করবি?প্রবাল কে কিভাবে হ্যান্ডেল করবো বল?(সোফায় পায়ের উপর পা তুলে বসে)
আমি:ভাইয়া তুমি কিন্তু উনাকে জোড়ে করে দুটো চড় মারবে।(জারিফ ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে)
নির্ভীক:চড় থাপ্পড়ের যুগ আর আছে নাকি?(হেসে)
জারিফ:আমার ছোটপাখিকে বিরক্ত করেছে আমি তো ওকে মেরে গুম করে দিবো।(রেগে)
আমি:না,না মেরে ফেলবে কেন?(আতঙ্কিত হয়ে) তোমার হাতের চড় খেলেই ঠিক হয়ে যাবে।(ভাইয়ার পাশে বসে)
জারিফ:আচ্ছা সেসব তোকে ভাবতে হবেনা।চাঁদ শোন, আমি আজই প্রবালের সাথে কথা বলবো।
নির্ভীক:না এখন নয়।এখন ওকে কিছু জানানো যাবেনা।আমার কাছে হুডি পরা লোকের কোন স্ট্রং প্রুফ নেই।প্রুফ হাতে পাই আগে তারপর যা করার করবো।
জারিফ:আর কি প্রুফ লাগবে তুই তো সিউর প্রবালই এসব করছে।
নির্ভীক:সিউর হলে হবেনা আমার স্ট্রং প্রুফ দরকার। আমাকে একটু সময় দাও।(বেড থেকে উঠে ড্রেসিং টেবিলের আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে)
জারিফ:ওকে।(ফোন হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে)
ভাইয়ার ফোনে কল আসলো তাই ভাইয়া বেলকুনিতে গেল।নির্ভীক ভাইয়া আয়নার দিকে তাকিয়ে চুল ঠিক করতে করতে বললেন,
নির্ভীক:এত কি ভাবছো?পিচ্চি মানুষদের এত কিসের ভাবনা, হুম?
আমি:ভাববো না?ওই লোকটা….
নির্ভীক:না ভাববে না।(আমাকে পুরোটা বলতে না দিয়ে আমার দিকে ঘুরে তাকিয়ে )
আমি কিছু বলবো তখনই ভাইয়া ঘরে ঢুকে বললো,
জারিফ:চাঁদ আমার অফিস যেতে হবে,তুই থাক।
নির্ভীক:আমিও যাবো তোমার সাথে চলো।
জারিফ:ওকে আয়।
ভাইয়া আগে আগে রুম থেকে বেরিয়ে গেল।নির্ভীক ভাইয়া আমার কাছে এসে আমার গাল টেনে বললেন,
নির্ভীক:সি ইউ পিচ্চি।
বলেই দ্রুত হেঁটে চলে গেলেন।আমি গালে হাত দিয়ে উনার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকলাম।এই লোকটা গাল টেনে টেনেই আমার গাল কবে জানি নাই করে দিবেন।
রাতে আমি আর ইচ্ছে পড়ছি।পড়ছি বললে ভুল হবে পরার থেকে গল্পই বেশি করছি।গল্প গুলো এমন,
ইচ্ছে:আচ্ছা শৈবাল কোথায় রে?
আমি:আমি কেমনে জানবো?
ইচ্ছে:সেদিনের পর তো শৈবালকে আর দেখলামইনা দুইমাস কেটে গেল।(ভ্রু কুচকে)
আমি;তুই কি ওর সাথে দেখা করতে চাইছিস?(বই বন্ধ করে)
ইচ্ছে:একদমই না। তবে এই প্রবাল কে দেখতে চাইছি।কত্ত বড় সাহস তোর সাথে এমন করে।(ভ্রু কুচকে)
আমি:একদম শৈবালের মতোই দেখতে।আমি তো শৈবালই ভেবেছিলাম।(টেবিল থেকে উঠে বেডে বসতে বসতে)
ইচ্ছে:প্রবাল বা শৈবাল যাই হোক আমার একটা বড় টেনশন দূর হয়েছে এটা ভেবে যে আরাফ ভাইয়া এসব করেনি।(বই বন্ধ করে)
আমি:হুম।আমি ভেবেছিলাম আরাফ ভাইয়াই হয়তো এসব করছে।
ইচ্ছে:ভাইয়া যদি আবার এসব করতো আমি ওর সাথে আর কোন সম্পর্কই রাখতাম না।(হালকা রেগে)
আমি:আচ্ছা বাদ দে। চল ঘুমাই ১২টা বাজতে চললো।
ইচ্ছে:হুম।
.
ভার্সিটিতে ক্যান্টিনে বসে ফ্রেন্ডরা সবাই আড্ডা দিচ্ছি।স্টাডি ট্যুর নিয়েই কথা হচ্ছে।সবাই অনেক ইনজয় করেছে ওখানে।
কিয়াম:দোস্ত যাই বলিস ওখানে যেয়ে নিজেকে কেমন রাজা রাজা লাগছিল।রাজার মতো পোস দিয়ে কতগুলো পিক তুলেছি। ফেবুতে আপলোড করেছি দেখিস নি তোরা?(সবার দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে)
তামান্না:হুম দেখেছি।রাজা না ছাই রাজার সিংহাসনের পাশে পাখা বাতাস করেনা?ওই লোকটার মতো লাগছিল তোকে।(হেসে হেসে)
তামান্নার কথা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাসির রোল পরে গেল।কিয়াম সবাইকে ভেংচি কেটে বলল,
কিয়াম:ওয়ান কে প্লাস লাইক একশো প্লাস কমেন্ট হু,আর তোরা হাসছিস?তোরা ফ্রেন্ড নামের হারামি সব গুলা আমার পিকে হাহা দিয়েছিস।
সূচি:ওই আমি কিন্তু লাভ দিয়েছি।(চোখ গরম করে)
কিয়াম:কিন্তু কমেন্টে কি দিয়েছিস?ওই কুত্তার স্টিকার দিয়েছিস, বালডা খালি আমার দিকে তাকিয়ে হাহা করে হাসতেছিল।
ইচ্ছে:আমি কিন্তু চুম্মা দিয়েছি আর লাভ ও দিয়েছি।
কিয়াম:হুম তোরেও এত গুলা চুম্মা।(ফ্লাইং কিস করে)
আমি:দোস্তস্ আমার ওখানে যেয়ে মনে হয়েছিল এখনই মনে হয় প্রসাদের ভেতর থেকে রাজা রানী বের হয়ে আসবে।(সবাইকে উদ্দেশ্য করে)
রিপন:রাজারানির দেখা না পেলেও আমি একটা রাজকুমার আর রাজকুমারী কে দেখেছি।হাত ধরে ঘুরছিল।(আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে)
আইরিন:তাই নাকি?আমাদের দেখাসনি কেন?(এক্সাইটেড হয়ে)
রিপন:তোরাও দেখেছিস।
সূচি:আমি ডার্ক প্রিন্স দেখেছি(মুচকি হেসে)
রিপন:ওই প্রিন্সের সাথেই ছিল একটা রোজ প্রিন্সেস।
সূচি:অন্ত?(ভ্রু কুচকে)
রিপন:হা হা হা।নাম বলা যাবেনা,তাহলে গরদান যেতে পারে।(হেসে হেসে)
আদনান:তোরা যাই বলিস ইয়ার পিংক কালার ড্রেস পরে সবাইকে পেত্নি লাগছিল আর একজনকে হুরপরী লাগছিল,ইচ্ছে করছিল ওকে নিয়ে পালিয়ে যাই।(আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে)
আমি:নানু ভাই তুই..
আদনান:আরে আরে রাগ করছিস কেন?আমি তোকে কিছু বলেছি?আমি তো আমার হুরপরীর কথা বলছিলাম।বাই এনি চান্স,তুই কি তাকে নিয়ে জেলাস হচ্ছিস?(চোখ টিপ দিয়ে)
আমি:দাঁড়া আমি এখনই ভাইয়াকে বলে দিবো।(রেগে ফোন হাতে নিয়ে)
আইরিন:নানু ভাই কেন জ্বালাচ্ছিস?(বিরক্ত হয়ে)
আদনান:জ্বালালাম কোথায়? আজব!(ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে)
সাফি:এই চল ক্লাসের সময় হয়ে গেছে।(ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্ট, ক্লাস আর স্টাডি ছাড়া কিছু বুঝেনা)
ফারিয়া:আবার ক্লাস?কোন কুক্ষণে যে কেমিস্ট্রি সাবজেক্ট চয়েস দিয়েছিলাম।লাইফটা সোডিয়াম ক্লোরাইডের মতো লবণাক্ত হয়ে যাচ্ছে।(বিরক্ত হয়ে)
সবাই ক্লাসে চলে আসলাম।ক্লাস শেষ করতেই নির্ভীক ভাইয়া ফোন দিলেন,
নির্ভীক:অন্ত,আমার যেতে একটু দেরি হবে তোমরা ভার্সিটিতেই ওয়েট করো।
আমি:আমরা একা যেতে পারবো।আপনি..
নির্ভীক:শাট আপ যা বলেছি তাই করো।একা একা রাস্তায় উঠবানা আর ফ্রেন্ডদের সাথে থাকো একা কোথাও যাবানা।
আমি:ওকে।
নির্ভীক:ওকে বাই।
বলেই কল কাটলেন।আমি আর ইচ্ছে লাইব্রেরিতে আসলাম।কিন্তু এখানে এসে আমরা অবাক। টোয়া আপু খুব মনোযোগ দিয়ে বই পরছে,সাথে ওর সাঙ্গ পাঙ্গরাও আছে।
ইচ্ছে:এদেরকি সামনে এক্সাম নাকি?জীবনেও তো বই হাতে দেখিনি।
আমি:চল,এখানে না থাকায় ভাল।আজাইরা ঝামেলা ক্রিয়েট করবে।
আমরা ওদের দেখেই বাহিরে চলে আসলাম।এই মেয়ের থেকে যতদূরে থাকা যায় ততই মঙ্গল।লাইব্রেরি থেকে বেরিয়ে এসে উদ্দেশ্য হীন ভাবে ঘুরছি, ভালই লাগছে।ঘুরতে ঘুরতে সেই জায়গাই চলে আসলাম যেখানে নির্ভীক ভাইয়াকে প্রথম দেখেছিলাম।আজও এখানে কিছু ছেলেমেয়ে বসে আড্ডা দিচ্ছে।আমি সেইদিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে ইচ্ছে কে বললাম,
আমি:জায়গা টা দারুণ না?
ইচ্ছে:হুম।
আমি:আমরা একদিন ওখানে বসে আড্ডা দিবো ওকে?
ইচ্ছে:আমরা ওখানে এন্ট্রি পাবো না।ওটা বড় ভাইয়া আপুদের এলাকা ছোটদের ওখানে যাওয়া নিষেধ।
আমি:কবে যে সিনিয়র হবো।(হতাশ হয়ে)
ইচ্ছে:হ রে বইন।জুনিয়র হয়েছি বলে আমরা সবকিছু থেকে বঞ্চিত।ওই যে গাছে ডাশা ডাশা আম ঝুলছে ওগুলোতে আমাদের কোন অধিকার নেই।(ঠোঁট উল্টিয়ে)
আমি:বৈশাখ পেরিয়ে জৈষ্ঠ্য আসলো বৈশাখি ঝড় হলো নাতো?ঝড় হলে আম কুড়ানো হতো।
ইচ্ছা:না হওয়ায় ভাল ঝড়টর আমার ভয় করে।
আমি:আমারও।আচ্ছা শোন,আজকে বিকেলে রিংকুদের বাসায় যাবো ওদের কাঁচা মিঠা গাছের আম পেরে খাবো।ওকে?
ইচ্ছে:ওদের গাছে আর কয়েকটা আমই আছে।রিংকুর মা দিলেও ব্যাটা রিংকু দিবেনা ও ওগুলো পাকা মিঠা করে খাবে।(হাঁটতে হাঁটতে)
আমি:দিবে দিবে, না দিলে ওর সিক্রেট ওর মাকে বলে দিবো।(ইচ্ছের পাশে হাঁটতে হাঁটতে)
ইচ্ছে:ব্ল্যাকমেল করবি?বেচারা রিংকু তো তাহলে পুরো গাছটায় আমাদের দিয়ে দিবে।(হাসতে হাসতে)
দুজনই জোড়ে জোড়ে হাসছি।আশেপাশের ছেলে মেয়েরা যে দেখছে এসব আমাদের মাথায় নেই।ব্যাগের মধ্যে ফোন ভাইব্রেট হচ্ছে।বের করে দেখি নির্ভীক ভাইয়া।কল রিসিভ করতেই উনি বললেন,
নির্ভীক:কোথায় তোমরা? আমি চলে এসেছি?
আমি:অহ আমরা যাচ্ছি।
গাড়িতে উঠেই এসির বাতাসে মন প্রাণ জুড়িয়ে গেল।
আমি:আহ্! কি শান্তি।(চোখ বন্ধ করে)
নির্ভীক:খুব গরম লাগছিল?
আমি:হুম,রাজশাহী তে এত গরম কেন?
ইচ্ছে:তাও ঢাকার থেকে শত গুণ ভাল আছে।যানজট নেই,নর্দমার গন্ধ নেই।একদম পরিষ্কার,চারপাশটা কত সুন্দর।
আমি:হুম।
নির্ভীক:ইচ্ছেমতি,তুমি তো দেখি রাজশাহী কে ভালোবেসে ফেলেছো।(ড্রাইভ করতে করতে)
ইচ্ছে:হুম,খুব।(মুচকি হেসে)
আমি:আমিও।(ইচ্ছের দিকে ঘাড় ঘুড়িয়ে তাকিয়ে)
নির্ভীক:রিয়েলি?তুমি ভালোবাসতে জানো?(আমার দিকে তাকিয়ে)
আমি:অবশ্যই জানি।(কনফিডেন্সের সাথে)
নির্ভীক:ওকে লেট মি টেস্ট।(মুচকি হেসে)
ইচ্ছে:ভাইয়া ছেড়ে দিন,ও ফেইল মারবে।
আমি:তুই এই কথা বলছিস?আমি তোকে কত ভালোবাসি আর তুই?(রাগি চোখে)
ইচ্ছে:কচু ভালবাসিস।
আমি:ভাবি তুই কিন্তু আমাকে রাগিয়ে দিচ্ছিস।(চোখ গরম করে তাকিয়ে)
ইচ্ছে:হাহ্ তোর আবার রাগ আছে নাকি?(হেসে)
আমি:ভাবি??(রেগে)
নির্ভীক:এই তুমি ওকে ভাবি ডাকছো কেন?সেদিন বাসে ঘুমের মধ্যেও ডেকেছো।জারিফ ভাইয়ার সাথে ওর বিয়ে…
ইচ্ছে:নাআআআআআআআ,কি বলছেন এসব।(হকচকিয়ে লাফিয়ে উঠে)
নির্ভীক:সরি বাট..ও যে তোমাকে ভাবি ডাকছে।(আমার দিকে তাকিয়ে)
ইচ্ছে:বেয়াদব মহিলা, চল বাসায় তোকে তো আমি।(আমার দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে)
আমি:আমাকে বেয়াদব মহিলা বলছিস?বলবো নাকি নির্ভীক ভাইয়াকে সব?(ভ্রু নাচিয়ে)
ইচ্ছে রাগি চোখে আমার দিকে তাকিয়ে মাথা নাড়িয়ে না সূচক জবাব দিল।
নির্ভীক:কি বলবে??(ভ্রু কুচকে)
আমি:অনেক কিছু কিন্তু এখন নয় পারমিশন পেলে।
নির্ভীক:মানে?
আমি:মানে কিছুনা।ও আমার ভাবি আমি ওর বোনু, তাইনা ভাবি?(ইচ্ছের দিকে তাকিয়ে)
ইচ্ছে:চুপ যা নাহলে কিন্তু..(রেগে)
আমি:ওকে।(ঠোঁট টিপে হেসে)
বাসায় এসে সোফায় গা এলিয়ে দিলাম।নির্ভীক ভাইয়া ডাইনিং এ বসে খেতে লাগলেন,
আম্মু:ধীরে খা খাবার গুলো বেশি গরম। (খাবার বেড়ে দিতে দিতে)
নির্ভীক:টাইম নেই অ্যান্টি দুটোই ক্লাস আছে।(খেতে খেতে)
আমি ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ১:৩৫বাজে।উনার দিকে তাকিয়ে দেখি গপাগপ খাচ্ছেন।খেতে খেতে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,
নির্ভীক:বসে আছো কেন?যাও ফ্রেশ হয়ে এসে খেয়ে নাউ।
আম্মু:হুম যা,আমি প্লেটে ভাত বারছি।(আমার দিকে তাকিয়ে)
আমি:ভাইয়া এসেছে?
আম্মু:না,অফিসেই খাবে।
আমি:অহ।
বলেই ব্যাগ নিয়ে রুমে চলে আসলাম।রুমে আসতেই একটা আননোন নাম্বার থেকে মেসেজ আসলো,
“জানপাখি,খুব মিস করছি তোমাকে,আসবে আমার কাছে?অনেক ভালোবাসা দিবো,যা চাইবে তাই দিবো…বলোনা আসবে?..তুমি আসবেনা জানি,ওকে আমিই তোমাকে নিয়ে আসবো।”
এমনিতেই গরমে অসস্তি হচ্ছিল তার উপর এই অসস্তিকর মেসেজ,আমার একটুও ভয় করলোনা।আমি লোকটাকে ডিরেক্ট ফোন দিলাম কিন্তু নট রিচেবল বলছে।ব্যাগ টেবিলে রেখে ভাবলাম নির্ভীক ভাইয়াকে জানাই।নিচে এসে দেখি উনি চলে গিয়েছেন।ভাইয়া আসুক বাসায় আজ এই প্রবালের একটা ব্যবস্থা করতেই হবে।(মনে মনে)
চলবে……..