#ভালোবাসি_আমি_যে_তোমায়
#Sohani_Simu
পর্ব:৪৮
ঘুম ভাঙ্গলে তাকিয়ে দেখি আমি নির্ভীক ভাইয়ার ঘরে শুয়ে আছি।উনি বেডে আমার পাশে আধ শোয়া হয়ে বসে ল্যাপটপ চালাচ্ছিলেন।আমাকে উঠতে দেখেই ল্যাপটপ রেখে ব্যস্ত হয়ে আমাকে ধরে বসিয়ে দিতে দিতে বললেন,
নির্ভীক:ঠিক আছো তুমি?কষ্ট হচ্ছে?মাথা ঘুরছে?হাত ব্যাথা করছে?
একসাথে এতগুলো প্রশ্ন শুনে কোনটা রেখে কোনটার উত্তর দিবো বুঝতে পারলাম না।মাথা ধরে ক্লান্ত ভয়েসে উনাকে বললাম,
আমি:আমি তো হসপিটালে ছিলাম।আরাফ ভাইয়া কোথায়?(উনার দিকে তাকিয়ে)
নির্ভীক:আরাফ ভাইয়া বাসায়,তুমি ফ্রেশ হও।খেতে হবে তোমার।সকালে কিছু খাওনি এখন বিকেল হতে চলল।চলো আমি হেল্প করছি।(আমাকে কোলে তুলে নিয়ে)
আমি:আমি একা পারবো,নামান আমাকে।(উনার কাঁধে হাত রেখে)
উনি আমাকে ওয়াশরুমের ভেতরে এনে নামিয়ে দিয়ে বাহিরে গেলেন।আমি ফ্রেশ হয়ে দরজার বাহিরে আসতেই চোখ মুখ অন্ধকার হয়ে এলো।সেন্স না হারালেও আমি ফ্লোরে পরে যেতে লাগলাম কিন্তু নির্ভীক ভাইয়া মনে হয় এখানেই দাঁড়িয়ে ছিলেন তাই আমাকে ধরে ফেললেন।আমাকে বেডে হেলান দিয়ে বসিয়ে দিয়ে পুষ্টি কর খাবার খাওয়াতে লাগলেন।আমার মাথা ঘুরছে,হাত ব্যাথা করছে তাই খেতে পারলাম না।কোনরকম একটু খেয়ে নির্ভীক ভাইয়াকে বললাম,
আমি:আরাফ ভাইয়া বার বার এমন করে।(মন খারাপ করে)
নির্ভীক:ভালোবাসে তো তাই এমন পাগলামি করে।স্বাভাবিক বুদ্ধি হারিয়ে পাগল হয়ে যাওয়ার নামই তো ভালোবাসা।আরাফ ভাইয়ার জায়গায় আমি থাকলে সব শেষ করে দিতাম।(আমাকে এক পাশ থেকে জড়িয়ে ধরে)
আমি:আমার কি হয়েছে?মাথা ঘুরছে।(চোখ বন্ধ করে)
নির্ভীক:সবাই একটা পিচ্চি মেয়েকে কষ্ট দেওয়ার জন্য ওত পেতে বসে থাকে।আমার জাস্ট অসহ্য হয়ে গেছে।চলে যাবো এখান থেকে অনেক দূরে।(আমার হাত নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে রেগে)
আমি:আরাফ ভাইয়া আমাকে হসপিটালে নিয়ে গিয়েছিল কেন?(উনার দিকে তাকিয়ে)
নির্ভীক:হসপিটালে যেয়ে দেখি আরাফ ভাইয়া ড্রাগসের মতো করে তোমার ব্লাড নিচ্ছে।ওত গুলো ব্লাড এত অল্প সময়ের মধ্যে বের করে নিল, এজন্যই তো তোমার এত খারাপ লাগছে।এমনি তেই কয়েকদিন ধরে একটার পর একটা সমস্যা হচ্ছে,শরীর দুর্বল,বয়স কম তারপর এত গুলো ব্লাড নিয়ে নিল।উফ্ সব ভেঙ্গে ফেলতে ইচ্ছে করছে।(খাবারের ট্রে ফ্লোরে ফেলে দিয়ে)
আমি:কিছু হয়নি আমার।(উনার দিকে তাকিয়ে)
নির্ভীক:আমি না গেলে কি হতো ভাবতে পারছো?সব ব্লাড বের করে নিতো তোমার।আরাফ ভাইয়া আর নিজের মধ্যে নেই, আসক্ত হয়ে হয়ে গেছে তোমার উপর(রেগে) ।আর তুমি?কোন সাহসে আমাকে না জানিয়ে বাসার বাহিরে পা রেখেছো বলো?এত সাহস কোথায় পেয়েছো তুমি?(আমার দুই বাহু ধরে রেগে)
আমি:উফ্।(চোখ খিচে বন্ধ করে)
উনি আমার ইন্জেকশন দেওয়া হাতে ধরেছেন তাই ব্যাথা পেলাম।সঙ্গে সঙ্গে উনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে উঠে দাঁড়ালেন।ফ্লোরে ট্রে পরে ছিল ওটাতে একটা শট মেরে দিয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলেন।আমি বুঝলাম উনি খুব রেগে গিয়েছেন।আরাফ ভাইয়ার মাথায় যে কখন কি চলে বুঝা মুশকিল।আরাফ ভাইয়ার কি রক্ত শূন্যতা দেখা দিয়েছে নাকি যার জন্য আমার রক্ত নিতে হলো।জারিফ ভাইয়ার রক্তও তো নিতে পারতো।লোকটা নাকি আমাকে ভালোবাসে,ভালোবাসলে এসব করা যায় নাকি?আমি কষ্ট পেলে আরাফ ভাইয়ার মনে হয় ভাল লাগে তাই বার বার কিছু না কিছু করে আমাকে কষ্ট দেই।
খালা এসে ফ্লোরে পরে থাকা খাবার গুলো পরিষ্কার করে দিয়ে গেল।আর যাওয়ার আগে বলে গেল নির্ভীক ভাইয়া নিচে যেয়ে টিভি ভেঙ্গে বাসা থেকে বেড়িয়ে গেছে।রাগ উঠলে উনি কি করেন উনি নিজেও জানেন না।উনাকে ফোন করে বাসায় আসতে বলি,রাগের সময় বাহিরে থাকা ঠিক হবেনা।আশেপাশে তাকিয়ে আমি আমার ফোন খুঁজে পেলাম না।পরে মনে পরলো, ফোন তো আরাফ ভাইয়ার গাড়িতে ছিল।
সন্ধ্যার দিকে আপুর রুমে আসলাম,আপুরা এখন সাজেকের উদ্দেশ্যে রওনা দিবে।আপুর সাথে নিচে এসে আপুকে গাড়িতে বসিয়ে আমরা বিদায় দিচ্ছি তখন নির্ভীক ভাইয়া আর প্রান্ত ভাইয়া বাসায় আসলেন।আপু আর রাযীন ভাইয়াকে বিদায় দিয়ে আমরা সবাই বাসার ভেতরে আসলাম।দুই ডগি একা হয়ে গেল,রাযীন ভাইয়া ওদের বাসায় রেখে গেছে।নির্ভীক ভাইয়াকে দেখেই ডগি দুটো নির্ভীক ভাইয়ার কাছে গেল।উনি ওদের ডগ ফুড খেতে দিলেন।আমি সিঁড়ি দিয়ে উপরে আসবো তখনই নির্ভীক ভাইয়া বললেন,
নির্ভীক:পিচ্চি দাঁড়াও আমরাও যাবো,প্রান্ত চল।(আমার দিকে আসতে আসতে)
আমার কাছে এসেই আমাকে কোলে তুলে নিয়ে বললেন,
নির্ভীক:এখনও মাথা ঘুরছে?(আমার দিকে তাকিয়ে)
আমি:না,নামিয়ে দিন আমি একা যেতে পারবো।(মলিন মুখে উনার দিকে তাকিয়ে)
প্রান্ত:তোমাকে খুব ফ্যাকাশে দেখাচ্ছে বোনু,ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া কর।(সিঁড়ি দিয়ে উঠতে উঠতে)
আমি:হুম।
নির্ভীক:কি হুম?আমি যাওয়ার পর খেয়েছো কিছু আর?(ভ্রু কুচকে)
আমি:না।(মাথা নিচু করে)
নির্ভীক ভাইয়া কিছু বললেন না আমাকে রুমে এনে বেডে বসিয়ে দিয়ে দ্রুত পায়ে নিচে চলে গেলেন।প্রান্ত ভাইয়া টেবিলে বসে নির্ভীক ভাইয়ার ল্যাপটপ অন করলেন।কিছুক্ষণ পরই নির্ভীক ভাইয়া দুই হাতে দুটো বেদানা নিয়ে আমার পাশে এসে বসলেন।বেদানা ফাটিয়ে দানা গুলো বাটিতে জমা করতে লাগলেন।
প্রান্ত:সব তো ঠিকই আছে।(ল্যাপটপের দিকে তাকিয়ে)
নির্ভীক:জানি সব ঠিক আছে,তুই তাও ভাল করে চেক করে দেখ।(বেদানার দানা খুলতে খুলতে)
প্রান্ত:এসব করে কি লাভ,তোকে তো ছাড়বে না।শুধু শুধু সবাইকে টেনশন দিসনা(নির্ভীক ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে)
নির্ভীক:থাকবোনা আমি।কে ছাড়বেনা সেটা পরে দেখা যাবে।নাও খাও।(আমার দিকে তাকিয়ে বাটি এগিয়ে দিয়ে)
আমি:এত গুলো?(নাক ছিটকে)
নির্ভীক:খেতে হবে।কোন বাহানা করবা না,তাড়াতাড়ি শেষ কর।(চোখ গরম করে)
আমি:নিন আপনিও খান,প্রান্ত ভাইয়াকে দিন।(বাটি এগিয়ে দিয়ে)
নির্ভীক:এগুলো তুমি খাও আমরা এগুলো খাবো।(গোটা বেদানা হাতে নিয়ে)
আমি একটা একটা করে খেতে লাগলাম।নির্ভীক ভাইয়া আরেকটা বেদানা ফাটিয়ে প্রান্ত ভাইয়াকে দিলেন আর উনি খেতে খেতে কথা বলতে থাকলেন।কিছুক্ষণ পর নির্ভীক ভাইয়া বললেন,
নির্ভীক:কাল প্রিয়ার বিয়ে।(মন খারাপ করে)
প্রান্ত:হুম শুনলাম তো,কি করবি?যা করার তোকেই করতে হবে।(চিন্তিত হয়ে)
নির্ভীক:কি আর করবো,তুলে নিয়ে এসে ডিরেক্ট বিয়ে করি……
আমি:কি?আপনি বিয়ে করবেন?(হকচকিয়ে লাফিয়ে উঠে উনাকে পুরোটা বলতে না দিয়ে)
প্রান্ত:হ্যা ওতো বিয়ে করবে,কালই করবে। (হাসতে হাসতে)
নির্ভীক:শাট আপ।(রেগে)
আমি:সেদিন মিষ্টির সাথে বিয়ে দিতে চাইলাম আপনি আমাকে কত বকলেন আর আজ?আপনি একটা খারাপ লোক।যান করুন মিষ্টিকে বিয়ে।(কান্না মুখ করে)
নির্ভীক:আবার?আচ্ছা যাও নিয়ে আসো মিষ্টি, এখনই বিয়ে করবো।(রেগে)
আমি:আমি কোথায় থেকে নিয়ে আসবো?আপনি ফোন করে আসতে বলুন।(রেগে)
নির্ভীক:উফ্ পাগল করে দিবে এই পিচ্চি আমাকে।আরে কি করে ফোন করবো?এই প্রান্ত শোন তুই,মিষ্টি নাকি ফোন ইউজ করে।আর করলেও ফ্রিজের মধ্যে নেটওয়ার্ক আছে নাকি?(প্রান্ত ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে)
প্রান্ত ভাইয়া অট্টোহাসলেন।আমি বুঝলাম উনি ফ্রিজের মধ্যে খাওয়ার মিষ্টির কথা বলছেন।কত সুন্দর করে কথা ঘুরাচ্ছেন!বজ্জাত লোক একটা!
আমি:আমি মানুষ মিষ্টির কথা বলছি,আপনার গার্লফ্রেন্ড মিষ্টি যার সাথে ফোনে কথা বলেন।(রেগে অন্যদিকে তাকিয়ে)
আমার কথা শুনে নির্ভীক ভাইয়া বসা থেকে দাঁড়ালেন।প্রান্ত ভাইয়া হাসছেন তো হাসছেনই।নির্ভীক ভাইয়া অবাক হয়ে বললেন,
নির্ভীক:সুইট মিষ্টি? তুমি ওই সুইটকে আমার গার্লফ্রেন্ড বানিয়ে দিলা!!
প্রান্ত ভাইয়া তো হাসতে হাসতে কুটি কুটি হয়ে যাচ্ছেন।আমি রেগে কান্না করে দিয়ে বললাম,
আমি:মিষ্টি মিষ্টু প্রিয়া এখন আবার সুইট?চমৎকার!করুন বিয়ে আমি এখনই বাসায় চলে যাবো।
বলেই হাঁটা দিলাম।নির্ভীক ভাইয়া দ্রুত এসে আমাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বললেন,
নির্ভীক:ওর নাম মিষ্টি নয় সুইট আমরা বাংলায় ওকে মিষ্টি বলে ডাকি ও আমাদের ফ্রেন্ড।(একদমে)
আমি তো আকাশ থেকে পরলাম।সুইট তো ছেলেদের নাম।আমি কি এতদিন তাহলে উল্টা বুঝলাম।যদি সত্যি এমনটা হয় তাহলে তো নির্ভীক ভাইয়া আমাকে উচিত শিক্ষা দিয়ে ছেড়ে দিবেন।(মনে মনে)
আমি:যেটায় হোক আপনি তো বিয়ে করতে চেয়েছেন,তাহলে যান বিয়ে করুন।(রেগে উনার থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে)
নির্ভীক:কি বলছো বলো তো এসব?আসো এখানে বসো (আমাকে বেডে বসিয়ে দিয়ে)
নির্ভীক:এই হাসি থামা নাহলে কিন্তু কেঁদে কুল পাবিনা।(প্রান্ত ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে)
প্রান্ত:থামছেনা,দাঁড়া মিষ্টিকে বলি।(হাসতে হাসতে ফোন হাতে নিয়ে)
নির্ভীক:খবরদার যদি কাউকে বলেছিস, মেরে নদীতে ভাসিয়ে দিব।(প্রান্ত ভাইয়াকে শাসিয়ে)
প্রান্ত:হা হা হা বোনু তুমি শুনলে?প্রিয়াকে কাল বিয়ে করবে ও।(আমার দিকে তাকিয়ে)
নির্ভীক:ওর কথায় কান দিও না।প্রিয়া তো সুইট কে বিয়ে করবে,ওরা দুজন দুজনকে ভালোবাসে।আমি শুধু তোমাকে ভালোবাসি তুমি আমার গার্লফ্রেন্ড তুমিই আমার বউ আমার বিয়ে করার ইচ্ছে হলে আবার তোমাকেই বিয়ে করবো।(আমার দিকে ঝুকে আমার দুই গালে হাত দিয়ে একদমে)
আমি:মিষ্টি তাহলে আপনার গার্লফ্রেন্ড নয়?(ভ্রু কুচকে)
নির্ভীক:নারে বাবা,ও তো ছেলে।ও কি করে গার্লফ্রেন্ড হবে?(আমার পাশে বসে)
আমি:সত্যি তো?(ভ্রু কুচকে)
নির্ভীক:হান্ড্রেড পারসেন্ট সত্যি।(মুচকি হেসে)
আমি:তাহলে আপনি প্রিয়াকে বিয়ে করবেন?(ভ্রু কুচকে)
নির্ভীক:থাপ্পড় চিনো?আর একবার এসব বললে থাপ্পড় দিয়ে এসব কথা বলা ভুলিয়ে দিবো।(রাগী ভয়েসে)
আমি দুই গাল হাত দিয়ে ধরে ভয়ে ভয়ে উনাকে বললাম,
আমি:আপনি যে বললেন প্রিয়াকে তুলে নিয়ে এসে বিয়ে কিরবেন?
নির্ভীক ভাইয়া আমার দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে থাকলেন।প্রান্ত ভাইয়া হাসতে হাসতে বললেন,
প্রান্ত:কি আর করবো,তুলে নিয়ে এসে ডিরেক্ট বিয়ে করিয়ে দিবো মিষ্টির সাথে।তুমি তো পুরো কথা শুনলায় না বোনু।(হাসতে হাসতে চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়িয়ে)
আমি ইনোসেন্ট ফেস করে দুজনার দিকে তাকালাম।এখনও দুই গালে হাত দিয়ে আছি।নির্ভীক ভাইয়া যা রেগে আছেন, যেকোন সময় থাপ্পর দিয়ে দিতে পারেন।
প্রান্ত:আমি নিচে ওয়েট করছি, তোরা তাড়াতাড়ি আয়।
বলেই প্রান্ত ভাইয়া চলে গেলেন। আমি নির্ভীক ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়ালাম। উনি ভ্রু কুচকে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন।আমি চলে আসবো তখনই আমার হাত ধরে বললেন,
নির্ভীক:রেডি হও বাহিরে যাবো আমরা।
আমি:ককোথায় যাবো?(ভয়ে ভয়ে)
নির্ভীক ভাইয়া আলমিরা থেকে নীল আর সাদার সংমিশ্রনে একটা সেমি গাউন ড্রেস বের করে আমার হাতে দিয়ে বললেন,
নির্ভীক:এটা পরো,যাও ফাস্ট।
আমি ঠোঁট উল্টে চলে গেলাম।ড্রেস পরে বাহিরে এসে দেখি উনি নীল শার্ট পরে শার্টের হাতা ফোল্ড করছেন।আমাকে দেখেই উনি আমার কাছে এসে আমাকে নিয়ে ড্রেসিং টেবিলের সামনে গেলেন।তারপর চিরুনি দিয়ে আমার চুল ঠিক করে দিতে লাগলেন।
আমি:আমাকে দিন।(চিরুনির দিকে হাত এগিয়ে দিয়ে)
নির্ভীক:চুপচাপ বসো এখানে।(আমাকে টুলে বসিয়ে দিয়ে)
আমাকে বসিয়ে দিয়ে উনি আমার চুল ঠিক করে দিলেন।লিপস্টিক দিয়ে দিলেন।আমি চুল বাধতে চাইলাম কিন্তু উনি ছেড়ে দিয়ে রাখলেন।ফ্লোরে হাটুতে ভর দিয়ে দাড়িয়ে একটা কালো ছোট টিপ নিয়ে আঠা না খুলেই আমার কপালে দিলেন কিন্তু পরে যাচ্ছে দেখে আমাকে বললেন,
নির্ভীক:এটা কিভাবে দেই?(ভ্রু কুচকে)
আমি:আমাকে দিন।(উনার থেকে নিয়ে)
আমি টিপ পরতেই উনি আমাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিয়ে দেখতে লাগলেন।কিছুক্ষণ একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে আমার কপাল থেকে টিপ খুলে নিলেন,লিপস্টিক ও টিস্যু দিয়ে মুছে দিয়ে বললেন,
নির্ভীক:এগুলো পরে বাহিরে যাওয়ার দরকার নেই। এমনিই চলো।
আমি মন খারাপ করে আয়নার দিকে তাকালাম।কোন সাজই দেওয়া হলো না।উনি আমাকে নিয়ে দাঁড়িয়ে আমার দুইগালে হাত দিয়ে হাসি মুখ করে আমার দিকে তাকিয়ে থাকলেন।কিছুক্ষণ এভাবে থাকার পর আমি উনার হাতের উপর হাত রেখে ভ্রু কুচকে বললাম,
আমি:কি তখন থেকে দেখছেন?আমরা যাবো না?
নির্ভীক ভাইয়া যেন বাস্তবে ফিরে আসলেন।আমার গাল থেকে হাত নামিয়ে মুচকি হেসে আমাকে জড়িয়ে ধরে গান গেয়ে বললেন,
“চল গেয়া দিল তেরে পিছে পিছে
দেখতা ম্যা রেহগ্যায়া,
কুছতো হে তেরে মেরে দিলমে আজো
আন কাহাছা রেহগ্যায়া
ম্যা জো কাভি ক্যাহনা সাকা……
আজ ক্যাহতাহু পেহলি দাফা………..
দিলমে হো….তুম
আখোমে……তুম
পেহলি নাজোর ছে ইয়ারা….!”
গান শেষ করে উনি আমাকে আর শক্ত করে জড়িয়ে ধরে মাথায় কিস করে বললেন,
নির্ভীক:আই লাভ ইউ মায়াপরী।বাই দ্যা ওয়ে,তুমি হিন্দি বুঝো তো?(আমাকে ছেড়ে দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে)
আমি:একটু একটু।(মুচকি হেসে)
নির্ভীক:আমি কি বলেছি বুঝেছো তো?(আমার গাল ধরে)
আমি:হুম।(নিচের দিকে তাকিয়ে)
নির্ভীক:ওকে চলো।(কপালে কিস করে)
নিচে এসে প্রান্ত ভাইয়াকে নিয়ে আমরা ঘুরতে বের হলাম।কোথায় যাবো আমরা কেউ জানিনা।অজানার উদ্দেশ্যে বের হলাম।
চলবে………..!