ভালোবাসি আমি যে তোমায় পর্ব:৫৬

0
2036

#ভালোবাসি_আমি_যে_তোমায়
#Sohani_Simu
পর্ব:৫৬

একটা লম্বা কালো ছায়া সিক্রেট রুমের দরজা খুলে পেইন্টিংটা তার লম্বা কালো নখ দিয়ে ছিড়ে ফেলে আমার দিকে এগিয়ে আসছে। মাথা ভর্তি লম্বা লম্বা কোকড়া চুল,হাতের নোখগুলো এত লম্বা যে কুকড়ে আছে,বড় বড় লাল চোখ, সাদা রাক্ষসদের মতো দাঁত আর পা পাখির মতো।এটা কোন মেয়ে ডাইনি হবে নিশ্চয়।আমার কাছে এসে আমার হাত পা ওর হাত পা দিয়ে চেপে ধরলো আর সাথে সাথে আমার হাত থেকে রক্ত পরতে লাগলো,রক্তে আমি ভিজে যাচ্ছি।নির্ভীক ভাইয়াকে ডাকছি কখন থেকে কিন্তু উনি শুনতে পাচ্ছেন না।কি করে শুনতে পাবেন উনি তো রুমে নেই,পুরো রুমে আমি একা আছি।ডাইনিটা আমার বুকের উপর বসে দাঁত বের করে হেসে আমার গলায় ওর লম্বা দাঁত গুলো বসিয়ে দিল।ব্যাথায় আমি চোখমুখ খিঁচে সর্বশক্তি দিয়ে চিৎকার দিলাম।ভয়ে কাঁপছিলাম তখনই নির্ভীক ভাইয়ার কন্ঠ পেয়ে চোখ খুললাম।উনি আমার গালে হাত দিয়ে ব্যস্ত হয়ে বলছেন,

নির্ভীক:অন্ত?অন্ত?কি হয়েছে?এমন করছো কেন?ভয় পেয়েছো?স্বপ্ন দেখেছো?

ডিম লাইটের হালকা আলোই আমি উনাকে দেখতে পেয়েই উঠে বসে উনাকে জড়িয়ে ধরে বললাম,
আমি:কোথায় গিয়েছিলেন?একটা রাক্ষস এসেছিল আমার রক্ত খাচ্ছিল লাল চোখ বড় বড় নখ ভয়ঙ্কর দেখতে।(উনার কাঁধে থুতনি রেখে কাঁপতে কাঁপতে একদমে)

নির্ভীক:রিল্যাক্স রিল্যাক্স কেউ নেই এখানে।স্বপ্ন দেখেছো তুমি।(আমার মাথা আর পিঠে হাত বুলিয়ে)

আমি:ওই পেইন্টিং ছিড়ে বের হয়ে এসেছিল।আমি থাকবোনা এখানে আমাকে বাসায় নিয়ে চলুন,আম্মুর কাছে যাবো।(কাঁদতে কাঁদতে)

নির্ভীক ভাইয়া আমাকে উনার থেকে ছাড়াতে চাইছেন কিন্তু আমি উনার কোলের উপর উঠে উনাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছি।উনি আমাকে নিয়েই উঠে লাইট অন করে বললেন,

নির্ভীক:দেখ কিছু নেই এখানে।আমি এখানেই ছিলাম,কেউ আসেনি।তুমি তো ঘুমোচ্ছিলে তাই খারাপ স্বপ্ন দেখেছো।(বেডের উপর বসে)

আমি পুরো রুমে তাকিয়ে দেখি সব ঠিক ঠাক আছে।পেইন্টিং ও ছিড়ে নেই।হাতের দিকে তাকিয়ে দেখি কোন রক্ত নেই,গলায়ও কোন ব্যাথা নেই।ঘামে আমার মাথা আর ড্রেস ভিজে একাকার হয়ে গিয়েছে।উনি আমার দুই গালে হাত রেখে বললেন,
নির্ভীক:ভয়ের স্বপ্ন দেখেছো তুমি।এটা শুধুমাত্র একটা স্বপ্ন,ভয় পেওনা।

আমি:না ওটা সত্যি এসেছিল।আমি তো ঘুৃমাইনি, তাকিয়ে ছিলাম।একটু আগে আপনি কোথায় গিয়েছিলেন?ওই রুমে কি আছে?ওখান থেকেই পেইন্টিং ছিড়ে এসেছে।আমার হাত দিয়ে তো রক্ত বের হচ্ছিল। উফ্ অনেক রক্ত, আমি ভিজে গিয়েছি রক্তে।আম্মুর কাছে নিয়ে চলুন।আম্মুর কাছে যাবো।(উনাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে)

নির্ভীক:আরে কোথায় রক্ত।তুমি তো ঘেমে ভিজে গিয়েছো আর আমি কোথাও যায়নি,এখানেই ছিলাম। পেইন্টিং এর পেছনে দরজা দেখেছো?ওটা এমনি দরজা কিছুনেই ওখানো।আচ্ছা চলো দেখাচ্ছি তোমাকে।(আমার হাত ধরে)

আমি:নাআআআ।(চিৎকার করে)
নির্ভীক:ওকে ওকে রিল্যাক্স।পানি খাও।(আমার মুখে পানির গ্লাস এগিয়ে ধরে)

আমি একটু পানি খেয়ে উনার হাত ধরে রেখে পেইন্টিং এর দিকে তাকিয়ে থাকলাম।উনি আমার সামনে থেকে উঠে এসে আমার পাশে বসে বললেন,
নির্ভীক:এখনও ভয় করছে?ওখানে কিছু নেই।চলো ফ্রেশ হয়ে আসো।এই ড্রেসটা চেন্জ করে নাও,একদম ভিজে গেছে এটা।চলো আমি ড্রেস বের করে দিচ্ছি।

আমি:নাআ।আমি ওখানে যাবোনা।আপনিও কোথাও যাবেন না।(উনার হাত শক্ত করে ধরে)

নির্ভীক:ওকে ওকে আমি এখানেই আছি কিন্তু তুমি চেন্জ করো নাহলে ঠান্ডা লাগবে তো।

নরম কন্ঠে কথা গুলো বলেই উনি আমার হাত ছাড়িয়ে নিয়ে আলমারির কাছে গেলেন।আমিও এক লাফে বেড থেকে নেমে উনার পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম।উনি আমার হাতে একটা সাদা টপস আর গোলাপি প্লাজু দিয়ে বললেন,
নির্ভীক:চলো আমি ওয়াশরুমের বাহিরে দাঁড়িয়ে আছি। (আমার হাত ধরে)

ওয়াশরুমের দরজা একদম পেইন্টিং এর কাছে।আমি কিছুতেই ওখানে যেতে পারবোনা।তাই বললাম,
আমি:না না ছাড়ুন।আমি যাবো না ওখানে।(ভয় পেয়ে)
নির্ভীক:আচ্ছা তাহলে এখানেই করো।আমি লাইট অফ করে দিচ্ছি।
আমি:না..এ্যা এ্যা এ্যা।(কান্না করে)
নির্ভীক:তাহলে আমি চোখ বন্ধ করলাম।আচ্ছা উল্টো দিকে ঘুড়ে দাঁড়ালাম।(উল্টো দিক ঘুরে)

আমি:না।
নির্ভীক:আচ্ছা আমি তোমার দিকেই তাকিয়ে আছি এবার চেন্জ করো।(আমার দিকে তাকিয়ে)
আমি:নাাা।(চোখ বড় বড় করে)

উনি এবার রাগি ফেইস করে আমার হাত থেকে ড্রেস নিয়ে ড্রেসিং টেবিলের উপর রেখে দিয়ে আমার পরে থাকা ড্রেস খুলতে লাগলেন।আমি হকচকিয়ে উঠে উনার হাত সরিয়ে দিয়ে ফ্লোরে আলমারির সাথে লেগে বসে বললাম,

আমি:আমি করছি আমি করছি।আপনি চোখবন্ধ করুন, উল্টো দিকে ঘুরে দাঁড়ান।

আমার কথা শুনে উনি হালকা হাসলেন তারপর বললেন,
নির্ভীক:ওকে তুমিই করো কিন্তু ওই তিলটা একটু দেখাবা?সেই ছোটবেলায় দেখেছিলাম আর সেদিন রাতে।আজও দেখতে ইচ্ছে করছে তোমার বুকের ওই কালো তিলটা।তুমি বড় হলেও ওটা একটুও বড় হয়নি পিচ্চিই আছে।(ইনোসেন্ট ফেইস করে)

উনার কথা শুনে আমার কান গরম হয়ে গেল।কি বলছেন কি উনি?আমার বুকের তিল উনি কিভাবে দেখলেন তারমানে উনিই সেদিন আমার ড্রেস চেন্জ করে দিয়েছেন।সব দেখেছেন উনি।ভাবতেই আমি রেগে উনাকে বললাম,
আমি:তারমানে সেদিন রাতে আপনিই আমার ড্রেস চেন্জ করেছেন?আপনি একটা মিথ্যুক,অসভ্য,বাজে লোক,সবচেয়ে খারাপ আপনি।

বলেই কান্না শুরু করে দিলাম।উনি নিচে আমার সামনা সামনি বসে বললেন,

নির্ভীক:আরে আমি চেন্জ করিনি। তুমি তো আমার শার্ট পড়ে সব গুলো বাটন খুলে রেখেছিলা।আমি পরে সব বাটন লাগিয়ে দিয়েছি।আমি কিছু দেখিনি।বিলিভ মি কিছু দেখিনি আমি,শুধু ওই তিলটা দেখেছি।আচ্ছা আর দেখবোনা কান্না থামাও।(আমার চোখ মুছে দিয়ে)

কিছুক্ষণ পরেও যখন কান্না থামালাম না উনি বিরক্ত হয়ে বললেন,
নির্ভীক:আমিই তো দেখেছি,অন্যকেউ তো দেখেনি।এভাবে কান্না করার কি আছে?কান্না থামাও নাহলে কিন্তু এখনই সব দেখবো।উঠো এখান থেকে আর চেন্জ করো।ঘুম পাচ্ছে আমার।তিনটা বাজে তুমিও ঘুমাবা চলো।(আমার এক হাতের কনুই ধরে)

আমি তাও উঠলাম না উনি আমাকে জোড় করে টেনে তুললেন আর আমাকে দিয়ে চেন্জও করিয়ে নিলেন।তারপর লাইট অফ করে আমাকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পরলেন আর আমি চোখ বড় বড় করে পেইন্টিং এর দিকে তাকিয়ে থাকলাম।কিছুতেই চোখ বন্ধ করতে পারছিনা,চোখ বন্ধ করলেই চোখের সামনে ওসব ভেসে উঠছে।

দুঘন্টা ধরে শুয়ে থেকে একটা জিনিস আবিষ্কার করলাম এই নির্ভীক ভাইয়া ঘুমের মধ্যেও আমাকে ছেড়ে দেন না।যখন যেইপাশ হয়ে শুয়ে থাকেন আমাকেও সেইপাশে রাখেন আর আমি এমনই মরা ঘুম ঘুমাই এসব কিছু টেরই পাইনা।ফজরের আজান হয়ে যাওয়ায় ভয় অনেকটা কেটে গিয়েছে।শুনেছি আজান শুনলে জ্বীন ভূত পালিয়ে যায়।ক্লান্ত চোখ জোড়া বন্ধকরে আজান শুনতে শুনতেই ঘুমিয়ে গেলাম নামাজ পরা আর হলোনা, অন্যান্য দিন নির্ভীক ভাইয়া ফজরের সময় আমাকে টেনে তুলেন কিন্তু আজ উনিও উঠলেন না।

সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি রুমে আমি একা আছি।স্বপ্নের কথা মনে হতেই এক লাফে বেড থেকে নেমে নিচে দৌঁড়।বাসায় কাউকে না দেখে খেয়াল হলো আজ তো সবাই ঘুরতে গিয়েছে কিন্তু নির্ভীক ভাইয়া কোথায় গেলেন।কিচেনের দিক থেকে কথার শব্দ আর পোড়া গন্ধ পেয়ে ওদিকে এগিয়ে গিয়ে দেখি নির্ভীক ভাইয়া উল্টো দিকে ঘুড়ে সিংকের কাছে যেয়ে ফোনে কথা বলছেন আর প্যানে ডিম পোস পুরে ছাই হওয়ার উপক্রম।আমি চুলা অফ করতেই উনি ফোন কেটে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,
নির্ভীক:উঠেছো?দেখ না এরা আমাদের জন্য কিছু রান্না করে রেখে যায়নি।আমরা এখন কি খাবো?আমি তো শুধু ডিম ভাজতে পারি।অহ শীট!!আমার ডিম!!

বলেই উনি চুলার কাছে আসলেন।ডিমের অবস্থা দেখে উনি চোখমুখ কুচকে ফেললেন।আমি মন খারাপ করে উনাকে বললাম,

আমি:সবার সাথে গেলে আর এই দিন দেখতে হতো না।নিজে তো যাবেন না আমাকেও যেতে দিলেন না।সবাই কত মজা করবে ওখানে যেয়ে!

নির্ভীক:আমি তোমাকে ওর থেকে ভাল জায়গায় নিয়ে যাবো কিন্তু এখন তো আমার এক্সাম তাই কোথাও যেতে পারবোনা আর আমি তোমাকে ওদের সাথে পাঠাতে পারিনি কারন ওখানে প্রবাল শৈবাল টোয়া থাকবে এছাড়াও বাহিরের লোকজন তো থাকবেই।প্রান্তও এক্সামের জন্য যায়নি, এক্সাম শেষ হোক আবার ট্যুর হবে তখন আমরাও যাবো আই প্রমিজ।(আমার হাত ধরে)

আমি:এসব তো কাল সবাইকে বুঝিয়ে বলতে পারতেন।শুধু শুধু সবার সাথে খারাপ ব্যবহার করলেন।(ভ্রু কুচকে)

নির্ভীক:আমি এইরকমই ওরা আমার কথা শুনছিল না তাই রাগ হচ্ছিল।আমার কথা কেউ বিনাবাক্যে না শুনলে আমি সেটা মানতে পারিনা।আমি জানি আমি ভাল নই।(মন খারাপ করে)

সবাইকে বিনাবাক্যে উনার কথা শুনতে হবে, হুহ্ আইছে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের প্রেসিডেন্ট।অভদ্র লোক একটা!(মনে মনে)

আমি:উপরে চলুন ব্রাশ করবো আমি।(মেজাজ দেখিয়ে)

নির্ভীক:ব্রাশ করোনি?অহ এখনও ভয় পাচ্ছো?আচ্ছা চলো আমি তোমার সাথে যাচ্ছি।(মুচকি হেসে)

উনি আমাকে নিয়ে উপরে আসলেন।ওয়াশরুমে ঢুকে ভাবছি কাল রাতে উনি কি বলছিলেন? সব দেখেও বলছিলেন কিছু দেখেন নি।বদ লোক একটা!আপনাকে আজ উচিত শিক্ষা দিবো।আমি সব প্ল্যান করে ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে উনার সাথে নিচে আসলাম।উনি টেবিলে বসে পাউরুটিতে জ্যাম লাগাতে লাগাতে বললেন,
নির্ভীক:দুপুরের খাবার অর্ডার করে দিয়েছি এখন এগুলো খাও। (আমার দিকে তাকিয়ে)

আমি:আমি কিন্তু বাহিরের খাবার খাবোনা আর এসব ব্রেড জেলি জ্যাম খাইনা,রান্না করে নিয়ে আসুন কিছু।(বিরক্ত হয়ে)

নির্ভীক:খাও না?খেতা তো।(ভ্রু কুচকে)
আমি:খেতাম এখন খাইনা।খিচুরি নিয়ে আসুন,খিচুড়ি খাবো।(মুখ ফুলিয়ে টেবিলের উপর দুই হাত রেখে)

নির্ভীক:কিন্তু আমি তো খিচুড়ি রান্না করতে পারিনা?ভাত আর ডিম পোস করি?(আমার দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে)

আমি:না খিচুড়িই করুন আর দুপুরে ফ্রাইড রাইস,চিলি চিকেন আর রোস্ট করবেন।(ভাব নিয়ে)

নির্ভীক:এত কিছু?আচ্ছা আমি ট্রাই করছি।তুমি ততক্ষণ বিস্কিট খাও।(বিস্কিট এগিয়ে দিয়ে)

আমি বিস্কিট খেতে লাগলাম উনি ইউটিউব থেকে রেসিপি দেখে রান্না করতে লাগলেন। উনার খিচুড়ি হতে হতে দুপুর বারোটা বেজে গিয়েছে। অর্ডার করা খাবার গুলোও চলে এসেছে। উনি বাহিরের খাবার রেখে দিয়ে প্লেটে খিচুড়ি নিয়ে আমার মুখে তুলে দিলেন।দেখতে ভাল লাগায় আমিও বোকার মতো মুখে নিলাম। মুখে নিয়েই আমি শকড!!

নির্ভীক:ভাল হয়েছে না?ভাল তো হতেই হবে।স্পেশাল খিচুড়ি ফর দ্যা স্পেশাল গার্ল।(হাসি খুশি মুখ করে)

উনার আনন্দ দেখে আমি আর কিছু বলতে পারলাম না।খাবার খাওয়ার অনুপোযোগী হয়েছে জানলে উনার এই হাসি টা মুহূর্তেই উবে যাবে আর উনি কষ্ট পাবেন যেটা আমি কখনও চাইনা।খুব ভালোবাসি উনার এই হাসিমাখা মুখকে।উনি আমাকে খাবার দিচ্ছেন আর আমি সেগুলো পানি দিয়ে গিলছি।কয়েকবার নেওয়ার পর বললাম,
আমি:আর খেতে পারবোনা পেট ভরে গিয়েছে। এগুলো রেখে দিন দুপুরে খাবো আর আপনি বাহিরের গুলো খান।(উনার হাত থেকে প্লেট নিয়ে)

নির্ভীক:না না আমিও খিচুড়ি খাবো,দেখি প্লেট দাও আমাকে।(আমার হাত থেকে প্লেট নিয়ে)
আমি:না আমি খাবো এগুলো…

ততক্ষণে উনি মুখে দিয়ে ফেলেছেন।সঙ্গে সঙ্গে উনি মুখ থেকে খাবার ফেলে দিয়ে পানি খেয়ে বললেন,
নির্ভীক:তুমি এটা কিভাবে খেয়েছো?এত সল্ট দিয়েছি!!

আমি:আমার তো খুবই ভাল লেগেছে। (মুচকি হেসে)
নির্ভীক:শাট আপ।(রেগে ধমক দিয়ে)

সেই যে উনি আমার উপর রেগে গেলেন রাত বারোটা বেজে গেল তাও উনার রাগ কমলো না।উনি বুঝে গিয়েছিলেন আমি উনাকে কষ্ট দিতে চাইনি তাই খারাপ খাবারই খেয়েছি।এদিকে আমি এত খারাপ খাবার চুপচাপ খেয়েছি জন্য উনি কষ্ট পেয়েছেন।তারপর থেকে উনি আর দরকার ছাড়া আমার সাথে কোন কথা বলেননি।সবাই সন্ধ্যার মধ্যেই ফিরে এসেছে।সবাই ফিরে আসার পর আমি গল্প শুনে আপুর ফোনে ছবি দেখে একবারে উপরে ঘুমোতে এসেছি। রুমে এসে দেখি নির্ভীক ভাইয়ার খাবার এখনও টেবিলেই পরে আছে আর উনি পড়াশুনো নিয়ে ব্যস্ত।আমি উনার কাছে গিয়ে বললাম,

আমি:এখনো খাননি কেন?আর বারোটা বেজে গিয়েছে, বিকেল থেকে এখানে বসে আছেন ঘুমোবেন না।(উনার দিকে তাকিয়ে)

নির্ভীক:তুমি ঘুমাও আমার লেট হবে,দুদিন পর থেকে এক্সাম আমার। (বই এর দিকে তাকিয়ে)

আমি:এগুলো গরম করে নিয়ে আসি। আপনি খেয়ে পড়ুন।(খাবারের ট্রে হাতে নিয়ে)

উনি আমার হাত থেকে ট্রে কেড়ে নিয়ে আমাকে ঘুমোতে পাঠিয়ে দিলেন।আমি মন খারাপ করে শুয়ে থাকলাম।আজকে সবকিছু নিয়মের বাহিরে হয়ে যাচ্ছে। উনি আমার সাথে ভাল করে কথা বলছেন না আর দুষ্টুমিও করছেন না আবার একা একা ঘুমোতে পাঠিয়ে দিলেন।এসব আমার একটুও ভাল লাগছেনা।একদিনেই ক্লাইমেট কেমন চেন্জ হয়ে গেল!

চলবে……..!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here