#ভালোবাসি তোকে ❤
#লেখিকা: অনিমা কোতয়াল
#পর্ব- ২১
.
আমি বারবার বইয়ের পাতা উল্টাচ্ছি। আপি দুবার খাওয়ার জন্য নিচে ডেকেছে কিন্তু আমি যাই নি। যতোই পড়ছি আমার মনে হচ্ছে ততই ভুলে যাচ্ছি। কিছুতেই মনে শান্তি পাচ্ছি না।প্রচন্ড টেনশন হচ্ছে। সারারুম জুড়ে হাটছি আর বই দেখছি। চারপাশে কী হচ্ছে না হচ্ছে খেয়াল নেই আমার। হঠাৎ আমার মুখের সামনে কেউ খাবার ধরল। আমি মুখটা সরিয়ে বললাম,
— ” এখন খাবো না আমি। আমার এখনও পড়া হয়নি কিছুই।”
বলে আবারও এগিয়ে এলাম। কিন্তু আবারও আমার সামনে খাবার ধরতে আমি আবারও সরে এলাম। কিন্তু একটু পর আবারও আমার মুখের সামানে খাবার ধরল আমি আর না করলাম না চুপচাপ খেয়ে নিলাম। আমি টেনশনে হাটতে হাটতে পড়ছি আর বারবার আমার মুখের সামনে খাবার ধরছে আর আমি খেয়ে নিচ্ছি। কিন্তু হঠাৎই আমার মাথায় চারা দিয়ে উঠল যে কে খাইয়ে দিচ্ছে আমায়? পাশে তাকিয়ে তো আমি পুরো চমকে গেলাম। আদ্রিয়ান আমায় খাইয়ে দিচ্ছেন। আমি মুখে খাবার নিয়ে থম মেরে তাকিয়ে রইলাম ওনার দিকে। উনি ভ্রু কুচকে বললেন,
— ” কী হলো? মুখের টা শেষ করো?”
এরপর আবার নিচে তাকিয়ে পরোটা ছিড়তে ছিড়তে বললেন,
— ” তুমি এখনও বাচ্চাই রয়ে গেলে অনি। আমি নিজে কতবার রিভাইস করিয়েছি তোমায়। তবুও টেনশন করেই যাচ্ছো? তাড়াতাড়ি শেষ করো খাবারটা। আর একজায়গায় বসে নাও তোমার পেছনে হেটে হেটে খাওয়াতে খাওয়াতে আমি ক্লান্ত হয়ে গেছি।”
বলে আমার হাত ধরে বেডে বসিয়ে দিলেন উনি। আর আমায় খাইয়ে দিতে শুরু করলেন। আমি একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি ওনার দিকে। কজন স্ত্রীর এরকম স্বামীভাগ্য হয়? বেশিরভাগ স্ত্রীর জীবন তো স্বামীর সেবা করতেই কেটে যায়।অথচ আমার স্বামী শুধু আমার সেবা নেন তা কিন্তু না প্রয়োজনে নিজেও আমার সেবা করেন। আমার সব প্রয়োজন বোঝেন। খুব কী ক্ষতি হতো যদি এইসব কিছু শুধুমাত্র দায়িত্বের খাতিরে না করে মন থেকে আমাকে স্ত্রী হিসেবে মেনে নিয়ে করতেন। না না আমি আবার কেন এসব ভাবছি? আমি তো ঠিক করেই নিয়েছি উনি যখন আমাকে নিজের স্ত্রী হিসেবে মানবেনই না কোনোদিন তখন ওনাকে আর দায়িত্বের জালে আটকে রাখবোনা। সব ব্যবস্হাতো করেই ফেলেছি এবার আজই চলে যাবো আমি এখান থেকে। উনি আমার সামনে তুরি বাজাতেই নিজের ভাবনা থেকে বেড়িয়ে এলাম আমি। উনি ভ্রু কুচকে বলল,
— ” কী এতভাবছো? শেষ করো?”
আমি কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ খেয়ে নিলাম। উনি আমায় খাইয়ে দিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে বললেন,
— ” তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নাও। সময় নেই। আর টেনশন করোনা যা হবে ভালো হবে।”
নিজের অজান্তেই আমি মাথা নিচু করে ধীরে বলে উঠল,
— ” আমার খুব ভয় করছে।”
এটা শুনে উনি যেতে নিয়েও থেমে গেলেন। প্লেট টা টি-টেবিলে রেখে এসে আমার সামনে বসে আমার দুই বাহু ধরে বললেন,
— “তোমার প্রিপারেশন যথেষ্ট ভালো। আমি নিজে পড়িয়েছি তোমায়, তাই জানি। আর মেডিকেলের প্রশ্ন অতোটাও কঠিন হয়না। আর তোমার তো দুইশ মার্ক এমনিতেই হাতে আছে। এখন শুধু হান্ড্রেটে যদি তুমি মোটামুটি এইটিফাইভ এর মতো তুলতে পারো। দেন তোমার মেডিকেলে তো চান্স হবেই, ঢাকা মেডিকেল অলমোস্ট কনফার্ম। আর এইটি ফাইভ তোলার মতো প্রিপারেশন তোমার আছে। আমি বলছি।”
আমি ওনার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি। এই ছেলেটা দুদিন আগেও আমায় ধমকাচ্ছিল। আমি নাকি মন দিয়ে পড়াশোনা করছি না। এভাবে পড়লে লাস্ট দিকের কোনো মেডিকেলেও চান্স হবেনা। সেই ছেলেটা আজ এসব বলছে? তাহলে এতোদিন এভাবে বলছিল কেন? সত্যিই ওনাকে বোঝা আমার পক্ষে অসম্ভব। তবে ওনার কথায় অজান্তেই মনে অনেক সাহস পেয়েছি। এখন কেন জানিনা নিজেকে খুব কনফিডেন্ট লাগছে। উনি আমায় রেডি হতে বলে চলে গেলেন। আমি তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে বেড়িয়ে এলাম। দেখলাম উনিও রেডি হয়ে গেছেন। একটা এস কালার ফুল হাতা গেঞ্জি, ব্লাক জিন্স, কপালে পরে থাকা সিল্কি চুল, গালে হালকা খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি সব মিলিয়ে অসাধারন লাগছে ওনাকে। এই তিনমাসে প্রতিদিন নতুন নতুনভাবে ক্রাশ খেয়েছি ওনার ওপর। কখনও ওনার আফটার শাওয়ার লুকে, আবার কখনও এলোমেলো ঘুমন্ত মুখ দেখে। হুটহাট করেই ক্রাশ খেয়ে যাই একেকসময় ওনার একেক লুক দেখে। উনিই প্রথম ব্যক্তি যাকে দেখে আমি ক্রাশ খেয়েছি। কিন্তু বলা বাহুল্য এটা কিন্তু শুধুই ক্রাশ এর চেয়ে বেশি কিছু না। রেডি হয়ে আমরা দুজনেই একসাথে নিচে চলে এলাম। সবার কাছ থেকে দোয়া নিয়ে চলে গেলাম। গাড়িতে আর কেউ কারও সাথে কথা বলিনি। পরীক্ষাকেন্দ্রে উনি নিজেই নিয়ে গেলো আমাকে। সিট খুজে দিয়ে নিজে হলে পৌঁছে দিয়েছে। আমার আর ইশুর সিট এক হলেই পরেছে। কিন্তু অরু আর ঐশির সিট আলাদা আলাদা হলে। এরপর যখন পরীক্ষার্থী ছাড়া বাকি সবাইকে থেকে সবাইকে বেড়িয়ে যেতে বলল তখন উনি আমার কাছে এসে বললেন,
— ” একদম টেনশন করবেনা। কিছু কিছু কোয়েশচন থাকবে যেগুলো এন্সার তুমি পারবেনা। কিন্তু জানো মজার ব্যাপার কী? সেগুলো অলমোস্ট কেউই পারবেনা। তাই ঘাবড়ানোর কিচ্ছু নেই। একঘন্টা অনেক সময়। যেগুলো পুরোপুরি শিউর থাকবে শুধু সেগুলোই আগে এন্সার করবে। যেটা একেবারেই মনে নেই সেটা ছেড়ে দেবে। নেগেটিভ মার্কিং যেনো ভুলেও বেশি না হয়। হাইপার হবেনা একদম মাথা ঠান্ডা রেখে এক্সাম দেবে। আমি বাইরে ওয়েট করছি। ওল দা বেস্ট।”
বলে আমার মাথায় আলতো করে হাত বুলিয়ে, ইশুর দিকে তাকিয়ে বললেন,
— ” এডভাইসগুলো কিন্তু তোমার জন্যেও ছিল।”
ইশু মুচকি হাসলো। আদ্রিয়ানও একটু হেসে চলে গেলেন। আমি ওনার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললাম। আজকের পর ওনার এইসব কেয়ারিং এতো যত্ন আর পাবোনা। খুব মিস করবো এসব। স্পেশিয়ালি ওনার ধমকগুলোকে।
একঘন্টা কর পরীক্ষা শেষ হলো। ইশু আর আমার দুজনের পরীক্ষাই বেশ ভালো হয়েছে। বেড়িয়ে দেখি অরু আর ঐশি দাঁড়িয়ে আছে। আমি ওদের কাছে গিয়ে বললাম,
— ” কীরে এক্সাম কেমন হলো?”
অরু হেসে বলল,
— ” বেশ ভালোই হয়েছে এখন বাকিটা আল্লাহর হাতে। ”
ঐশিও একই কথা বলল। আমরা চারজন মিলে বেড়িয়ে পাকিং এড়িয়াতে গিয়ে দেখি উনি গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। আমাকে দেখেই উনি সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে দ্রুতপদে আমার কাছে এসে বললেন,
— “পরীক্ষা কেমন হয়েছে? সব ঠিক আছে কোনো প্রবলেম হয়নি তো? কোয়েশচন কেমন ছিলো?”
আমি ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছি ওনার দিকে। ভেতরে আমাকে এতো এতো সাহস দিয়ে এলেন কিন্তু এখন এমন মনে হচ্ছে যেনো আমার চেয়ে বেশি টেনশন উনি এখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে করছিলেন। উনি আমাকে চুপ থাকতে দেখে উত্তেজিত কন্ঠে বললেন,
— ” কী হলো বলো? ভালো হয়নি?”
আমি হালকা হেসে বললাম,
— ” কুল। বেশ ভালো হয়েছে এক্সাম।”
— ” শিউর?”
— ” হ্যাঁ একদম।”
উনি একটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেললেন। অরু একটু পিঞ্চ করে বলল,
— ” এটা কিন্তু ঠিক না জিজু পরীক্ষা কিন্তু আমরা চারজনেই দিয়েছি। মানছি ও আপনার বউ তাই বলে শালিকাদের একটু জিজ্ঞেস করবেন না?”
আদ্রিয়ান হেসে বললেন,
— ” আমি তো জানি তোমাদের সবারই হবে। এমনিতেই তোমাদের দুহান্ড্রেট এমনিতেই আছে। অার তোমরা তো ওর মতো ফাঁকিবাজও নও।”
ফাঁকিবাজ কথাটা শুনে আমার বেশ রাগ হলো। উনি আমাকে ফাঁকিবাজি করতে দিয়েছেন নাকি? তবুও কিছু বললাম না মুখ ফলিয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম।
— ” আচ্ছা তোমরা কিছু খাবে?”
আমি হুট করেই বলে উঠলাম,
— ” ফুচকা খাবো। অনেকদিন খাইনা। প্লিজ।”
উনি হেসে দিলেন। কিন্তু ওনার হাসির কারণটা বুঝলাম না। আমি এভাবে ফুচকা চাইলাম বলে হাসলেন নাকি? উনি হাসি থামিয়ে বললেন,
— ” আচ্ছা চলো সবাই।”
এরপর ফুচকার দোকানে গিয়ে উনি বললেন,
— ” মামা চার প্লেট ফুচকা দিন। একটা কম্প্লিটলি ঝাল ছাড়া।”
আমি বেশ অবাক হয়ে তাকালাম। আমি যে একদমি ঝাল খেতে পারিনা এটা ওনার মনে আছে? আপির বিয়ের শপিং করতে গিয়ে একদিন প্রচন্ড ফুচকাতে ঝাল খেয়ে ফেলেছিলাম। সামান্য ঝালেই চোখ মুখ লাল হয়ে গেছিল আমার। আমার গায়ের রং শ্যামলা। শ্যামলা আর উজ্জল শ্যামলার মাঝামাঝি টাইপ আরকি। তাতেই মুখ এতো লাল দেখাচ্ছিল। যদি ওনার মতো ফর্সা হতাম তাহলে তো কথাই থাকতোনা। সেদিন উনি খুব বকেছিলেন আমায়। যে কেয়ারফুল থাকিনা কেন? আমি বেশ অবাক হয়েছিলাম ওনার এতোটা রেগে যাওয়ার কী ছিল সেটাই জানিনা আমি। ওনার ডাকে ভাবনা থেকে বেড়িয়ে এলাম। উনি আমার হাতে ফুচকার প্লেট টা ধরিয়ে দিয়ে বললেন,
— ” কোথায় এতো হারিয়ে যাও বলোতো?”
ইশু হেসে দিয়ে বলল,
— ” আরে এটাও বোঝেন না জিজু? সারাদিন তো আপনার চিন্তাতেই মগ্ন থাকে।”
আদ্রিয়ান কিছু না বলে শুধু একটু হাসলেন। ঐশি বলল,
— ” আপনি খাবেনা জিজু?”
ফোন স্ক্রল করতে করতে বললেন,
— ” তোমরা খাও আমি খাইনা এসব।”
হুহ। খাইনা এসব। এসব ভালো জিনিস কেনো খাবে? খাবেতো ঐ ব্লাক কফি, ফ্রুটস এর মতো উদ্ভট খাবার। ফুচকা খেয়ে বাড়ি চলে এলাম। বাড়ির সামনে গাড়ি থামিয়ে উনি সিটবেল্ট খুলে দিয়ে বললেন,
— ” আমি একেবারে রাতে আসবো। কিছু খেয়ে রেস্ট করো।”
আমি মাথা নেড়ে নেমে এলাম। উনিও গাড়ি স্টার্ট করে চলে গেলেন। রাতে এসে আমায় আর দেখতে পাবেন না উনি। এখন বাড়ি চলে যাবো তারপর বিকেলে সোজা গ্রামে মামা বাড়িতে। ওনাকে আর আমার দায়িত্বের বোঝা বইতে হবেনা। রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে বেড়িয়ে আমি ব্যাগ গোছাচ্ছি আর আপি রুম জুরে হাটছে। আপি আমার কাছে এসে বলল,
— ” অনি আমার কথা শোন। আর কটা দিন থেকে দেখ?”
আমি জামা ভাজ করতে করতে বললাম,
— ” তিনমাস তো দেখলাম আপি আর কতো? আর তোমাকে তো আমি আগেই বলে দিয়েছি সব। আমার পক্ষে অার সম্ভব নয়।”
আপি কিছু বলল না মুখ গোমড়া করে আমায় হেল্প করতে লাগল। কারণ জানে কোনো লাভ হবেনা। তিনচারদিন যাবতই বুঝিয়েছে আমায়। কিন্তু আমিতো ঠিক করেই নিয়েছি। সব গুছিয়ে রেডি হয়ে নিচে চলে গেলাম। মামনী আমায় জরিয়ে ধরে কেঁদে দিলো। বাবাও অনেকবার বলল থেকে যেতে। কিন্তু আমি আমার সিদ্ধান্তে অটল। ওনাদের সবাইকে ম্যানেজ করে সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে এলাম।
___________________
আমি সোফায় মাথা নিচু করে বসে আছে। কিছুক্ষণ নিরবতার পর আম্মু রাগী কন্ঠে বললেন,
— ” সবকিছুই ছেলেখেলা তোমার কাছে? চলে এসছো মান কী? ও তোমার স্বামী ওটা তোমার শশুর বাড়ি ভুলে গেছো?”
আমি কিছু বলছিনা। আব্বু এবার আমার পাশে বসে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,
— ” আচ্ছা মামনী ও বাড়িতে কেউ কী খারাপ ব্যবহার করেছে তোমার সাথে? বা আদ্রিয়ান কিছু বলেছে তোমায়? কোনোভাবে হার্ট করেছে?”
আমি মাথা নেড়ে না করলাম। আম্মু বলল,
— ” তাহলে সমস্যা কী? যে একেবারে সব ছেড়ে চলে এলে?”
আমি অসহায় দৃষ্টিতে আম্মুর দিকে তাকিয়ে বললাম,
— ” আমি বোঝাতে পারবোনা আপনাদের। কিন্তু আমি আর ঐ বাড়িতে যাবোনা। প্লিজ আপনারা জোর করবেন না আমায়।”
আম্মু কিছু বলবে তার আগেই আব্বু আম্মুকে থামিয়ে দিয়ে বললেন,
— ” আচ্ছা ঠিকাছে। তুমি এখন নানু বাড়ি যেতে চাও তো? যাও গিয়ে কদিন ঘুরে এসো। পরের টা পরে দেখা যাবে।”
সজীব ভাইয়া বলল,
— ” আমরাই নিয়ে যাই ওকে। আমাদেরও অনেকদিন বাড়ি যাওয়া হয়না। এখন আমার অফিসও বন্ধ আর অর্ণবের ভার্সিটিও। গিয়ে ঘুরে আসি। আব্বু আম্মুও খুশি হবে। বুড়ি যা রেডি হয়ে আয়।”
অর্ণব ভাইয়া বলল,
— ” হ্যাঁ আমিও ব্যাগ গোছাচ্ছি।”
আম্মু বলল,
— ” মানে কী তোমরাও ওর মতো বাচ্চা হয়ে গেলে?”
আব্বু বলল,
— ” আরে যাচ্ছে যাক। কটাদিন ঘুরে আসতে সমস্যা কী? তুমি রুমে এসো কথা আছে তোমার সাথে।”
আমি চুপচাপ রেডি হতে চলে গেলাম। রাত নটার পর গিয়ে পৌছালাম নানু বাড়িতে আমায় দেখে মামারা মামী নানু সবাই খুব খুশি হয়েছে। বিশেষ করে নানু। কিন্তু সবার একটাই প্রশ্ন জামাই কই? জামাই কেনো আসেনি? নানু তো জামাই কই জামাই কই করতে করতে অস্হির। একন ওনাদের কীকরে বলি ওনাদের জামাইর কাছে যাবোনা বলেই তো এখান আশা। কথা কোনোভাবে এড়িয়ে গেছি। আমরা টায়ার্ড হয়ে এসছি তাই ওনারা বেশি প্রশ্ন করেননি। রাতে খেয়ে রুমে গিয়ে শুয়ে পরলাম। রাত বেশ অনেক হয়েছে। শুয়ে শুয়ে ভাবছি আচ্ছা আদ্রিয়ান তো এতোক্ষণে চলে এসছে বাড়িতে তাইনা? আমায় না পেয়ে কী করছেন? খুজছেন আমায়? নাকি বাঁচা গেছে ভেবে শান্তির ঘুম দিচ্ছেন? ফোনটাতো সেই বিকেলেই সুইচড অফ করে রেখে দিয়েছি। আমি থাকা বা না থাকায় সত্যিই কী ওপার কিছু যায় আসছে? উনার কাছে তো শুধু দায়িত্ব আমি, দায়িত্ব থেকে মুক্তি পেলে সবার ভালো লাগে ওনারও লাগছে নিশ্চয়ই? না লাগারতো কারণ নেই। আমি শুধু শুধু ভাবছি ওনায় নিয়ে। এসব ভাবতে ভাবতে একরাশ মন খারাপ নিয়ে আস্তে আস্তে ঘুমিয়ে পরলাম।
#চলবে…