ভালোবাসি তোকে ❤ #লেখিকা: অনিমা কোতয়াল #পর্ব: ৪২ .

#ভালোবাসি তোকে ❤
#লেখিকা: অনিমা কোতয়াল
#পর্ব: ৪২
.
স্তব্ধ ভোরে চারপাশটা একদম নিশ্চুপ হয়ে আছে, সে এক অদ্ভুত নিরবতা, হৃদয়গ্রাসী নিস্তব্ধতা। তারমধ্যে হঠাৎ হঠাৎ পাখি কিচিরমিচির আওয়াজ করে উঠছে। বাইরে হালকা কুয়াশায় সবকিছুই ঝাপসা হয়ে আছে। সবকিছুই জেনো ভার ভার লাগছে এই মুহূর্তে। আদ্রিয়ান এক দৃষ্টিতে গভীরভাবে এই কুয়াশা পর্যবেক্ষণ করছে ও। দুটো হাত রেলিং এর ওপর। একটু পর পর ধোঁয়া ওঠা কফির মগটা হাতে নিয়ে একটা করে চুমুক দিয়ে আবার রেলিং এর ওপর রেখে দিচ্ছে। এই ঠান্ডাতেও গায়ে শুধু একটা চিকন স্লিভস এর গেঞ্জি পরে আছে। ওর কী ঠান্ডা লাগছে না? নাকি সকল অনুভূতির উর্ধ্বে চলে গেছে ছেলেটা? আদ্রিয়ানের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে সে কথাই ভাবছি আমি। কিন্তু ওকে কিছু বলতেও পারছিনা। চুপচাপ বসে আছি ব্যালকনিতে রেখে দেওয়া ওই চেয়ারটাতে। বেশ অনেকক্ষণ পর আদ্রিয়ান আমার দিকে তাকাতেই আমি ইশারা করে বললাম গায়ে কিছু পরতে। কিন্তু আদ্রিয়ান মলিন একটা হাসি দিয়ে আমার সামনে এসে বসল। তারপর নরম গলায় বলল,

— ” ভোর দেখা হয়ে গেছে না? এবার ভেতরে যাই?”

আমি মাথা নাড়লাম। ও আমাকে কোলে তুলে রুমে নিয়ে সাবধানে বেডে হেলান দিয়ে শুইয়ে দিলো। তারপর কপালের চুলগুলো সরিয়ে দিয়ে বলল

— ” এতো সকালে না উঠলে হতোনা? আরেকটু ঘুমোতে পারতেতো।”

আমি ইশারাতে বোঝালাম যে ঘুম আসছিল না। আদ্রিয়ান একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে আমার কপালে চুমু দিয়ে বলল,

— ” আচ্ছা বসো আমি একটু ওয়াসরুম থেকে আসছি।”

আমি মাথা নাড়লাম। ও ওয়াসরুমে চলে গেল। আর আমি ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে একটা ছোট্ট শ্বাস ফেললাম। মূত্যু! প্রকৃতির একটা চিরন্তন ও অতি স্বাভাবিক ব্যাপার। “মানুষ মরনশীল” “Man is mortal” ছোটবেলা থেকেই এই চিরন্তন সত্যিটা জেনে বড় হই আমরা। মৃত্যু এমন একটা জিনিস যেটার সাধ সবাইকেই গ্রহণ করতে হয়। আর সবাই সেটা জানেও। কিন্তু মজার ব্যপার হলো সবটা জেনেও মৃত্যুকে ভয় পায় এড়িয়ে চলে। আবেগের বসে, রেগে বা অহংকার করে মানুষ যতই বলুকনা কেন যে ‘ আমি মরতে চাই বা মরতে ভয় পাইনা।’ সত্যি তো এটাই শেষমেষ কেউই মরতে চায়না, মৃত্যু সবার কাছেই ভয়ের। আবেগে ভেসে গিয়ে সুইসাইড করে ফেলা মানুষটাও যখন বুঝতে পারে সে সত্যিই মারা যাচ্ছে তখন সেও বাঁচতে চায়, বাঁচার জন্যে কাতরাতে থাকে। বীর সৈনিক দেশের জন্যে যখন বন্দুকের সামনে বুক পেতে দিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে পরে থাকে তখন তারমনেও মরার জন্যে আফসোস হয়তো থাকেনা কিন্তু বাঁচার একটা ইচ্ছা ঠিকই থাকে। বাঁচার আকাঙ্ক্ষা আর মৃত্যুভয় সকল মানুষের মধ্যেই থাকে। আর আমিও প্রায় মৃত্যুর সাথে সাক্ষাৎ করেই এসছিলাম বলতে গেলে। সেই ভয়ংকর যন্ত্রণার কিছুটা উপলদ্ধি করতে পেরেছিলাম। সেদিন যন্ত্রণায় মিনিটের মতো কাতরানোর পর জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলাম। আমিতো ভেবেছিলাম মরেই যাচ্ছি কিন্তু না সেটা আর হয়নি। এযাত্রায় আদ্রিয়ানের আর আমার সকল কাছের মানুষের ভালোবাসার জোরে বেঁচে ফিরে এসছি আমি। এসব ভাবতে ভাবতে হসপিটালের দিনগুলোর স্মৃতিতে ডুব দিলাম-

শরীর প্রচন্ড ভার লাগছে। অনেক চেষ্টা করেও চোখ খুলে তাকাতে পারছিনা। প্রচন্ড ক্লান্ত লাগছে। এতোটাই দুর্বল লাগছে যে মনে হচ্ছে একটা আঙ্গুল নাড়াতেও আমার অনেক শক্তির প্রয়োজন। মুখের ওপর কিছু একটার উপস্হিতি অনুভব করছি। অনেকটা সময় নিজের শরীরের সাথে যুদ্ধ করে আস্তে আস্তে চোখ খুলে তাকালাম। সবকিছুই ঝাপসা লাগল কিছুক্ষণ। এরপর আস্তে আস্তে সবটা পরিষ্কার হয়ে গেল। চোখ খুলেই একজনকে দেখার ইচ্ছেই সবার আগে জাগলো মনে। সেটা হলো আদ্রিয়ান, কিন্তু চারপাশে অজস্র যন্ত্রপাতি চোখে পড়ল শুধু। এইমুহূর্তে অবাক হওয়ার মনোস্হিতি নেই আমার। সবটাই কেমন ঘোলাটে লাগছে। অক্সিজেন মাস্ক লাগানো আছে মুখে। পাশে তাকিয়ে দেখি একজন মহিলা ঝিমছে আমার পাশে বসে। নার্সেদের মতো পোশাক। তাহলে কী এটা হসপিটাল? আমি কী হাসপাতালে আছি। ওপর পাশে তাকিয়ে চমকে উঠলাম আদ্রিয়ান আমার হাত শক্ত করে ধরে ফ্লোরে হাটু ভেঙ্গে বসে বেডে মাথা দিয়ে শুয়ে আছে। আমি আরেকহাত ওঠানোর চেষ্টা করতেই টান লাগল। ব্যাথায় ‘আহ’ করে উঠলাম। বুঝতে পারলাম যে হাতে স্যালাইনের ক্যানেল লাগানো। আমার শব্দে আদ্রিয়ান আর নার্স দুজনের ঘুম ভেঙ্গে গেল। আদ্রিয়ান চোখ ঝাপটে আমার দিকে তাকিয়ে বেডে উঠে বসে আমার গালে হাত রেখে বলল,

— ” জানপাখি। তুমি উঠেছো? এই তাকাও আমার দিকে একটু কথা বলো?”

নার্স হেসে দিয়ে বললেন,

— ” স্যার এবার তো শান্ত হন। ম্যামের জ্ঞান ফিরে এসছে দেখুন? আমি ডক্টর ডাকছি।”

বলে উনি চলে গেলেন। আমি একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি আদ্রিয়ানের দিকে। কী অবস্থা করেছে ও নিজের? চোখের নিচে হালকা কালি পরেছে, চোখ লালচে হয়ে আছে, চুলগুলো উস্কোখুস্কো হয়ে আছে। সারা গালে খোঁচা খোঁচা দাড়ি ভর্তি হয়ে আছে। যদিও এভাবেও খুব কিউট লাগছে ওকে কিন্তু এরকম চেহারা করেছে কেন নিজের? ও আমার হাত নিজের দুটো হাতের মুঠোয় শক্ত করে ধরে নিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে দিলো। আমি চেয়েও কিছু বলতে পারছিনা, শ্বাস জোরে জোরে নিতে হচ্ছে, শরীর অনেকবেশিই দুর্বল লাগছে, মনে হচ্ছে অনেকদিন পর চোখ খুলেছি আমি। ওকে কিছু বলতে নেবো তার আগেই ডক্টর চলে এলো। ডক্টর এসে মুখে হাসি রেখেই বললেন,

— ” মিস্টার জুহায়ের এবার তো একটু সরুন ওনাকে একটু চেক করতে দিন প্লিজ।”

আদ্রিয়ান আমার হাত শক্ত করে ধরে বলল,

— ” ন্ না আমি ছাড়বোনা ওকে।”

ডক্টর মুচকি হেসে বলল,

— ” ডোন্ট ওয়ারি মিস্টার জুহায়ের আই হোপ উনি ঠিক আছেন উনি। চেক না করলে তো আমি কিছু বুঝতে পারবোনা।”

আদ্রিয়ান একটু চেঁচিয়ে বলল,

— ” বললাম তো না? ওকে আর ছাড়বোনা আমি। যেতে দেবোনা আমি ওকে আর কোথাও। কাউকে আসতে দেবোনা ওর কাছে।”

আমি নিরব দর্শকের মত দেখছি সবটা। জ্ঞান ফিরে এলেও কিছু বলার বা করার মত ক্ষমতা নেই আমার। তখনই ইফাজ ভাইয়া এলেন এসে বললেন,

— ” আদ্রিয়ান? আমাকে একটু দেখতে দে? আর কেউ যাবেনা ওর কাছে। শুধু আমি যাবো।”

ইফাজ ভাইয়ার কথায় হয়তো আদ্রিয়ান স্বস্তি পেলো হয়তো ও বাধ্য ছেলের মত সরে দাঁড়ালো। ইফাজ ভাইয়া আমাকে চেক করে বললেন,

— ” থ্যাংক গড ও এখন টোটালি আউট অফ ডেঞ্জার। কেবিনে শিফট করা যাবে তবে কাল সকালে।”

আমি আবার চোখ বন্ধ করে রাখলাম। খোলা রাখার শক্তি পাচ্ছিনা এখন। এরপর আর কিছু মনে নেই আমার।

হসপিটালের কেবিনে চুপচাপ শুয়ে আছি আমি হাতে, পায়ে, মাথায় শরীরের বিভান্ন জায়গায় ব্যান্ডেজ নিয়ে শুয়ে আছি। কালকের মতো অতোটা দুর্বল লাগছেনা যদিও। তবুও যথেষ্ট ক্লান্ত। সবচেয়ে বেশি অবাক হয়েছি এটা জেনে যে আজসহ আমি চারদিন হল হসপিটালে আছি। মানে প্রায় দুদিন অজ্ঞান ছিলাম আমি? ডক্টর নার্সরাও কীভাবে তাকাচ্ছে আমার দিকে। যেনো আমি খুব বড় কিছু জয় করে ফেলেছি কিন্তু করেছিটা কি? বাড়ির সবাই, আমার বাড়ির সবাই এসেছে। আম্মু, মামনী দুজনেই কান্নাকাটি করলো। কিন্তু আমি ওদের শান্তনা দিয়ে কিছু বলতে পারছিনা। আমাকে সবাই অনেক কিছুই জিজ্ঞেস করতে যাচ্ছিল কিন্তু আমি কারো কথার উত্তর দিতে পারিনি। কারণ কথা বলতে নিলেই গলায় ব্যাথা পাচ্ছি। ইফাজ ভাইয়াকে ইশারায় সেটা বলতেই ভাইয়া বললেন যে আমি প্রচন্ড জোরে চিৎকার দেওয়ার ফলে ভোকাল কর্ডে আঘাত লেগেছে। যার জন্যে কিছুদিন কথা বলতে পরবোনা আমি। তাই কেউ আর আমার সাথে কথা বলল না। তবে ওদের চোখে মুখে আমার জন্য চিন্তার ছাপ স্পষ্ট ছিলো।সকালে চোখ খুলে আদ্রিয়ানকে দেখতে পাইনি এখনও। সকালে গড়িয়ে দুপুর চলে এলো আদ্রিয়ান এখনও আসেনি। আপি আর ইফাজ ভাইয়া থেকে বাকি সবাই বাড়ি চলে গেল। এরপর আমাকে খাওয়ানোর জন্যে আপি সুপ নিয়ে এলো। আমি আপির দিকে তাকিয়ে হাতের ইশারায় জিজ্ঞেস করলাম ও কোথায়? আপি মুচকি হেসে আমার মুখে সুপ দিয়ে বলল,

— ” ছোট আব্বু আর বাবা অনেক কষ্টে ধরে বাড়িতে নিয়ে গেছে আজ। গোসল করিয়ে খাইয়ে তারপর পাঠাবে এখানে। কিন্তু এতোসময় লাগছে কেন? হয়তো ঘুমিয়ে পরেছে। তুই জানিস এই তিনদিন কী কী করেছে ও? পুরো পাগলই হয়ে গেছিল। বাড়িতো যায়ই নি। জোর করে মুখে একটুকরো পাউরুটি আর এক গ্লাস পানি খাইয়েছি কাল। আর একটা দানাও কাটেনি। সারাদিন রাত হসপিটালে পরে ছিলো। নাওয়া,খাওয়া,ঘুম সব বাদ দিয়ে।”

আমি অবাক হয়ে শুনছি আপির কথা। ইফাজ ভাইয়াও এসে একটা চেয়ারে বসে ছোট্ট শ্বাস ফেলে আবার বলল,

— ” আমরা যখন হসপিটালে আসি তখন তুই ইমার্জেন্সিতে ছিলি। আদ্রিয়ানও ভেতরে ছিল। যদিও কেউ এলাউড নয় কিন্তু আদ্রিয়ানের জেদতো জানিস। তারওপর আমিও ডক্টরদের মানিয়েছে। কিন্তু ইমার্জেন্সিতে ওকে ধরে রাখতে হয়েছে কারণ বারবার ও তোর কাছে যাচ্ছিল, তোকে ডাকছিল। বার বার বলছিল, ” এই জানপাখি কথা বলো আমার সাথে, দেখো ওরা কীসব বলছে, তুমিতো বলেছিলে না আমায় ছেড়ে যাবেনা? প্লিজ তাকাও।” এরপর যখন তোকে ওটিতে নেওয়া হল। আদ্রিয়ানও যেতে চেয়েছিল কিন্তু ওকে যেতে দেয়নি। ছেলেতো শুনবেই না চারপাঁচজন ওয়ার্ডবয় মিলে ওকে ধরে রেখেছিল। এমনিতেই তোর অবস্থা এতো খারাপ ছিল তারওপর আদ্রিয়ানের পাগলামো। ওটির দরজা বন্ধ হবার পরেও ও থামেনি দৌড়ে ভেতরে যেতে চাইছিল কিন্তু আদিব অর্ণব আর সজীব মিলে ওকে ধরে আটকে নিয়েছে ওকে। কিন্তু এতো মানুষ মিলেও ওর সাথে পেড়ে উঠতে বারোটা বাজছিল। একটা কথাই বলছিল, ” ছাড়ো আমাকে। যেতে দাও ওর কাছে। আমার জানপাখির কিচ্ছু হবেনা, কিচ্ছু হয়নি ওর, কোথায় নিয়ে যাচ্ছো ওকে, ওর যদি কিছু হয় তো হসপিটাল জ্বালিয়ে দেবো আমি, সব শেষ করে দেব, সবাইকে খুন করে ফেলবো আমি। জাস্ট লিভ মি ড্যাম ইট।” শেষমেশ বাধ্য হয়ে ডক্টরকে বলে ওকে ঘুমের ইঞ্জেকশন দিয়ে একটা কেবিনে ঘুম পাড়িয়ে রেখেছিল নাকি ওকে। আমি ওটিতে ছিলাম তাই জানিনা হিয়াই বলল। ”

আপি আমার মুখে আরেক চামচ সুপ দিয়ে বলল,

— “ওটির ভেতরে কী হচ্ছে সেটা নিয়ে টেনশনে ছিলাম। এরপর ইফাজ বলল অপারেশন সাকসেসফুল হলেও এখনও তুই সেফ নস। জ্ঞান ফেরার আগে কিছু বলতে পারবেনা। এরপর তোকে আইসিইউ তে নেওয়া হল। আটচল্লিশ ঘন্টা বলেছিল ডক্টর। আদ্রিয়ান ঘুম থেকে উঠে আবার পাগলামো শুরু করলো। আইসিইউতে কারো থাকাই নিষেধ কিন্তু বাধ্য হয়েই আদ্রিয়ানকে রাখতে হয়েছে। ওখানে গিয়ে চুপচাপ তোর হাত ধরে বসে থাকত আর হঠাৎ করেই একবার ডেসপারেট হয়ে তোকে ঝাকিয়ে জোরে জোরে চিৎকার করে ডাকতে শুরু করল। আদ্রিয়ানকে ওভাবে কাঁদতে এর আগে দেখিনি আমি । তখন ডক্টর আবারও ওকে ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পারিয়ে রেখেছিল। কিন্তু পাগলটা উঠে আবারও তোর কাছেই গেছে। অনেক জোর করে তোর দোহাই দিয়ে এক পিস পাউরুটি আর পানি খাইয়েছিলাম। একদিন পুরো সেন্সলেস থাকার পর পরের দিন রাতে আল্লাহর রহমতে তোর জ্ঞান ফিরল। শুধু আমরা না গোটা হসপিটাল তোর প্রতি আদ্রিয়ানের ভালোবাসা দেখে মুগ্ধ হয়েছিল।”

আমি পুরো স্তব্ধ হয়ে আছি। আমার প্রতি ওর ভালোবাসা যে অনেক গভীর সেটা জানতাম আমি। কিন্তু আমার জন্যে ও এতোটা ডেসপারেট হতে পারে, পাগলামো করতে পারে না শুনলে অনুমানও করতে পারতাম না। এতো ভালোবাসে কীকরে কেউ? আদোও সম্ভব? ওর এই সীমাহীন ভালোবাসার সীমাহীনতা ধারণ করার ক্ষমতা আছে তো আমার মধ্যে?

#চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here