ভিলেন পর্বঃ০৮

0
5707

#ভিলেন
#পর্বঃ০৮
#writer: Gazi Snigda Hossain (মনা)

প্রথম দিন বাইরে থেকে খাবার নিয়ে আসায় তেমন কোন ঝামেলা হয় নি বেশ ভালোমতই কেটে গেছে দিন টা।

রাতে,
আকাশঃ তুই এখানে শুয়ে পর আমি নিচে শুব…

মেঘলাঃ নিচে কেন..?? বিছানায় কি জায়গার কম আছে?

আকাশঃ না তা নেই তবে তোর মাথায় সমস্যা আছে…

মেঘলাঃ আজব আমার মাথায় একটুও সমস্যা নেই যা বলছি ভেবেই বলছি আয় তো শুবি আয়…বলে আকাশের হাত ধরে টানতে লাগল মেঘলা।

আকাশঃ আরে মেঘলা কিসব পাগলামি করছিস?

মেঘলাঃ শোন মনে পাপ না থাকলে কোন কিছুতেই সমস্যা হয় না।তুই সবসময় আমাকে ইগনোর করিস অপমান করিস এটা ঠিক না আমি একটা মেয়ে হয়ে তোকে ঘুমাতে বলছি আর তুই মানা করছিস তারমানে কি বুঝাতে চাইছিস আমার চরিত্র খারাপ আর তুই ভাল তাই তো…

আকাশঃ আমি সেটা বলি নি…
মেঘলাঃ তাহলে…আজ তো আমি তোর কোন কথাই শুনব না আমি আর তুই এখানে একসাথেই ঘুমাব… তুই বরং একটা গল্প বলে আমাকে ঘুম পাড়িয়ে দে…

আকাশ অনেক নিষেধ করার পরেও মেঘলা শুনল না মেঘলার মুখে এক কথা সে আকাশের সাথেই ঘুমাবে।
মেঘলা আকাশের কথাকে পাত্তা না দিয়ে আকাশের হাতে গল্পের বই ধরিয়ে দিয়ে পাশেই শুয়ে পড়ল..

আকাশেরও মেঘলাকে সরিয়ে দিতে ইচ্ছা করছে না কিন্তু মেঘলাকে এভাবে কাছে পেয়ে আকাশের হার্টবিট বেড়ে গেল।

কিছুক্ষন পর আকাশ খেয়াল করল মেঘলা ঘুমিয়ে পড়েছে…
কিন্তু আকাশের চোখে ঘুম নেই।
মুলত মেঘলাও ঘুমায় নি ঘুমের অভিনয় করছে কেবল।

আকাশঃ তোকে কাছে পেতে কি আমার ইচ্ছা করে না?পাগলি তুই কবে যে বুঝবি সবসময় নিজের ইচ্ছামত সব করা যায় না (মনে মনে)

মেঘলাঃ তুই আমার জন্য নিচে ঘুমাবি এটা আমি কি করে মেনে নিব তোর কষ্ট যে আমি সহ্য করতে পারি না বুঝিস না সেটা (মনে মনে)





সকালে ঘুম থেকে উঠে আকাশ বাজারে চলে গেল..
কিন্তু ফিরে এসে দেখল মেঘলা বসে বসে কাঁদছে…

আকাশ মেঘলাকে কাঁদতে দেখে ভয় পেয়ে গেল..
তাড়াতাড়ি মেঘলার কাছে এসে বলল,

আকাশঃ কি হয়েছে হাতে লেগেছে নাকি একটু সাবধানে থাকবি না?
আকাশ কাছে আসতেই মেঘলা তাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগল,

মেঘলাঃ আমাকে রেখে কোথায় চলে গিয়েছিলি জানিস না আমি তোকে ছাড়া থাকতে পারি না।

আকাশঃ সেসব পরে দেখছি আগে বল কাঁদছিস কেন?কোথায় লেগেছে দেখা দেখি

মেঘলাঃ লাগে নি,ভেবিছিলাম তুই আমাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিস তাই মন খারাপ হয়েছিল।

আকাশ রেগে গিয়ে বলল ফাযলামির একটা লিমিট থাকে মেঘলা আমি ভাবলাম কি না কি হয়েছে..
আর আমি তোকে ফেলে চলে যাব কেন?আমি কি তোর বিএফ নাকি যে কোন মায়া দয়া থাকবে না। তোর সাথে আমার রক্তের সম্পর্ক আছে বুঝেছিস?
জীবনে কোনদিন তোকে বিপদে ফেলে আমি কোথাও যাই নি তুই সব সময় আমাকে ফাঁসিয়ে দিস।

মেঘলাঃ কোথায় ছিলি তাহলে..?? ঘুম থেকে উঠে দেখি তুই নেই একা নির্জন একটা বাড়ি কত ভয় পেয়েছিলাম জানিস?

আকাশঃ ন্যাকারানী তাছাড়া আর কি করবে?আরে সকালে খাবি কি? সেটাই আনতে গিয়েছিলাম।জানতাম তুই উঠলে যেতে দিবি না তাই আগেই চলে গিয়েছিলাম।
আচ্ছা যাই হোক ওখানে তোর জন্য চকলেট চিপস রাখা আছে তুই কিছু একটা খা আমি এখনী রান্না করে আসছি।

মেঘলাঃ তুই রান্না করবি?

আকাশঃ তা ছাড়া উপায় কি…অনেক খোঁজলাম কোন হোটেল পেলাম না বাধ্য হয়েই বাজার করে নিয়ে এসেছি।




আকাশ রান্না ঘরে চলে গেল মেঘলা ইতিমধ্যে সারা ঘর এলোমেলো করে ফেলেছে আর চিপস খেতে খেতেই ঘুমিয়ে পড়েছে…

আকাশ এসে দেখে একটু হাসলো তারপর নিজেই সারাঘর পরিষ্কার করে নিল।

সব পরিষ্কার করে মেঘলাকে ডাকল।
মেঘলা উঠে ফ্রেশ হয়ে ২ জনেই খেতে বসল…

মেঘলাঃ খায়িয়ে দে…

আকাশঃ কেন তোর ত এক হার ভেঙেছে আর একটা তো ভালই আছে ওটা দিয়ে খা।

মেঘলাঃ তাহলে কি এটাও ভেঙে ফেলব..??

আকাশঃ থাপ্পড় মারব একটা আর কত জ্বালাবি বল তো রান্না থেকে শুরু করে ঘর গোছানো সবি তো করালি…

মেঘলাঃ এই শোন এটা তোর পাপের ফল তুই ভুল করেছিস তাই শাস্তি পাচ্ছিস।এতে আমার কোন হাত নেই।
দে খায়িয়ে দে…

আকাশঃ আচ্ছা নে খা…

আকাশ মেঘলাকে খায়িয়ে দিয়ে সব গোছিয়ে নিল…

আকাশঃ মেঘলা আমি এবার একটু ঘুমাই?

মেঘলাঃ না তুই ঘুমিয়ে গেলে আমি একা একা কি করব?

আকাশঃ একটু ঘুমাতে দে প্লিজ আমি এত সকালে উঠি না তুই তো জানিস..

মেঘলাঃ আচ্ছা তোর ফোনটা দে আমি গেম খেলি…

আকাশঃ আচ্ছা নে উল্টা পাল্টা কিছু করিস না কেমন…

মেঘলাঃ আচ্ছা…

আকাশ ঘুমিয়ে পড়ল…
মেঘলা এর মধ্যে আর কোন গন্ডগোল করে নি… অনেক্ষন পর মেঘলা এসে আকাশকে ডাকতে লাগল…

মেঘলাঃ ভাইয়া ভাইয়া উঠ একটা বড় ঝামেলা করে ফেলেছি…

আকাশ চোখ বন্ধ রেখেই বলল, এ আর নতুন কি?ঝামেলা তুই করবি এটাই স্বাভাবিক কিন্তু যেহেতু হাত ভেঙে গিয়েছে আর বাইরেও যাস নি তাই বড় কোন গন্ডগোল হয় নি যা হয়েছে ছোট খাট কিছুই হয়েছে এখন বিরক্ত করিস না ঘুম থেকে উঠে ঝামেল মিটাব…

মেঘলাঃ বড় ঝামেলাই হয়েছে..উঠ বলছি।

আকাশঃ কি হয়েছে?

মেঘলাঃআমি শাওয়ার নিয়েছি…

আকাশঃতো ভালই করেছিস সমস্যা কি?
কথা টা বলেই আকাশের মনে পড়ল মেঘলার হাত ভাংগা তাই তাড়াতাড়ি উঠে বলল দেখি দেখি বেন্ডেজ ভিজাস নি তো..??
আকাশ বেন্ডেজ টা দেখে বলল যাক বাবা বেন্ডেজ ভিজে নি তাহলে আর কি সমস্যা?

মেঘলাঃ তুই কি সত্যিই বুঝতে পারছিস না কি সমস্যা…?

আকাশঃ আমি তো কোন সমস্যা দেখতে পাচ্ছি না।

মেঘলাঃ আমি গত ৩০ মিনিট ধরে ভিজা কাপড় চেঞ্জ করার চেষ্টা করছি কিন্তু কিছুতেই পেরে উঠছি না।
তোকে ড্রেস টা চেঞ্জ করে দিতে হবে…

কথাটা শুনে আকাশের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল…
আকাশঃ ম ম মা মানে কি..??

মেঘলাঃআমার একহাত ভেঙে গিয়েছে ডান হাতেও ভালই ব্যাথা পেয়েছি সারা শরীরেই ব্যাথা, জায়গায় জায়গায় ছিলেও গিয়েছে..ড্রেস চেঞ্জ করা আমার পক্ষে সম্ভব না আর আমার ঠান্ডা লাগতে শুরু করেছে এভাবে আর একটু থাকলে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যাবে….

আকাশঃ ওহ খোদা রহম করো এর মাথায় তুমি একটু বুদ্ধি দান করো প্লিজ আমি আর পারছি না।আমাকে তুই একেবারেই মেরে ফেল মেঘলা আমি আর নিতে পারছি না এত গন্ডোগোল কি করে করতে পারিস তুই? রান্না করা,বাসন মাজা,ঘর গোছানো সব করিয়েছিস…
করানোর মত আর কিছু পাস নি?এটাই বাকি ছিল?
এই বাংলো শহর থেকে অনেক দুরে আশেপাশেও কোন বাড়িঘর নেই যে কাউকে ডেকে আনব…আমি একটা ছেলে হয়ে কি করে ড্রেস চেঞ্জ করে দিব বলতে পারিস? চোখ বন্ধ করে চেঞ্জ করলে হয়ত তোর লেগে যাবে আর চোখ খোলে কিভাবে সম্ভব?তুই ত ছোট বাচ্চা নোস মেঘলা।আমিও ছোট নই। আমরা কি করে…

মেঘলাঃ আমি এটা ইচ্ছা করে নি রে সত্যি বলছি আমি বুঝতে পারি নি…সরি।

মেঘলার ইতিমধ্যে কাঁপতে শুরু করেছে
আর আকাশ মাথায় হাত দিয়ে চিন্তা করছে কি করা যায়….




চলবে…!!!
(সবাই স্বল্প পরিসরে আকাশ কে একটা করে টিপস দিয়ে যান তার এখন কি করা উচিত😁😁)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here