#ভিলেন
#পার্টঃ৩৬
#লেখনীঃ Gazi Snigdha Hossain Mona
আজ মেঘলাকে দেখতে আসার কথা। মেঘলা আকাশ কে একটু কষ্ট দিতে চায় তাই আকাশকে আগে থেকে কিছু জানায় নি। মেঘলা নাবিলকেও মানা করেছিল যেন আকাশ কে না জানায় ফলে এ ব্যাপারে কিছুই জানে না আকাশ সে নিজের কোম্পানি লঞ্জ করার জন্য খুবি ব্যস্ত হয়ে পড়েছে
আকাশ সকালেই কাজে চলে গেল ফিরতে ফিরতে দুপুর গড়িয়ে গিয়েছে…
আকাশ বাসায় ফিরে একটু অবাক হল কারন বাসাটা খুব ভাল ভাবে গোছানো হয়েছে সেই সাথে টেবিলে ভাল ভাল খাবার আর সবাই কোন না কোন কাজে ব্যাস্ত কেউ ঘর গুছাচ্ছে কেউ রান্না করছে…
আকাশ বিষয়টাকে গুরুত্ব না দিয়ে নিজের ঘরে যেতে যেতে বলল কোন ইম্পোর্টেন্ট গেস্ট আসছে নাকি ছোট মা..
নাবিলের মাঃ হ্যা…
আকাশের গেস্ট নিয়ে কোন মাথা ব্যাথা নেই এননিতেই বাসায় গেস্ট আসলে ও কারো সামনে যায় না নিজের ঘরেই থাকে তাই বরাবরের মত আজও কোন আগ্রহ দেখাল না নিজের ঘরে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে খাবার খাওয়ার জন্য মেঘলাকে ডাকতে লাগল।গেস্ট আসবে তাই নিচে গিয়ে খাবে না আর ছোট মা রান্নায় ব্যাস্ত তাই সে মেঘলাকে ডাকছে কিন্তু মেঘলার সাড়াশব্দ নেই
আকাশঃ উফফ কাজের সময় কখনো এই মেয়েটাকে পাওয়া যায় না দেখি গিয়ে মহারানী কোথায় গেলেন।
আকাশ হাঁটতে হাঁটতে মেঘলার ঘরের সামনে গেল আর নক না করেই ঢুকে গেল…ঢুকার সাথে সাথেই,
মেঘলাঃ আ আ আ….চিৎকার করে উঠল।
আকাশঃ সরি সরি আমি কিছু দেখি নি (চোখ বন্ধ করে)
মেঘলাঃ কারো বেড রুমে ঢুকার আগে নক করতে হয় জানিস না?
আকাশঃ ফাউল মেয়ে ড্রেস চেঞ্জ করার সময় দরজা লক করতে হয় জানিস না?
মেঘলাঃ আমি লক করে ছিলাম
আকাশঃ আমি কি সুপারম্যান নাকি যে উড়ে চলে এসেছি..??
আকাশ আর মেঘলা ঝগড়া করছে তখন নাবিলের মা উপড়ে আসলেন তিনি ব্যস্ত ছিলেন তাই আকাশকে লক্ষ্য করলেন না।
শায়রা বেগমঃ মেঘলা তোর হল কি..?? ওরা ত চলে এসেছে সাজগোজ করেছিস? আমি শাড়িটা পরিয়ে দিব চট করে আয় দেখি বলতে বলতে নাবিলের মা মেঘলার ঘরে ঢুকে দেখল আকাশ ও এখানে
শায়রা বেগমঃ আরে আকাশ তুই এখানে কি করছিস?গেস্ট এসেছে নিচে যা মেঘলা তুই এখনো রেডি হোস নি কেন দেড়ি হলে বড় বাবা রেগে যাবে কিন্তু..
আকাশঃ ওয়েট ওয়েট ছোট মা নিচে কে এসেছে..??
শায়রা বেগম মেঘলাকে শাড়ি পরাতে পড়াতে উত্তর দিলেন তোর বাবার বন্ধু আর বন্ধুর পরিবার।
আকাশঃ বেশ ত ভাল কথা কিন্তু তাদের আসার সাথে মেঘলার সাজার কি সম্পর্ক…তাও আবার শাড়ি পরে..??
শায়রা বেগমঃ ওমা তুই জানিস না… ওরা ত মেঘলাকে দেখতে এসেছে..
আকাশঃ মেঘলাকে আবার দেখার কি আছে আজব তো… ও কি চিড়িয়াখানার জন্তু নাকি..??
শায়রা বেগমঃ উফফ আকাশ তুই ও না… আরে তোর বাবার বন্ধুর ছেলের সাথে মেঘলার বিয়ের কথা হচ্ছে..বুঝেছিস
আকাশঃ হোয়াট..?? কি বললে তুমি…??
শায়রা বেগমঃ বাসার সবাই জানে তুই জানিস না..?? কি আজব.
আকাশঃ বিয়ে মানে কি? ওর বিয়ে কেন..??
শায়রা বেগমঃ এতকিছু জানি না তোমার বাবা তার বন্ধুর ছেলের সাথে মেঘলার বিয়ে ঠিক করেছেন এটাই জানি।
আকাশঃ বাবার নিজের ছেলে থাকতে বন্ধুর ছেলের সাথে কেন?(ফিসফিস করে)
শায়রা বেগমঃ কিছু বললি..??
আকাশঃ না কিছু না।
শায়রা বেগম কথা বলতে বলতে মেঘলাকে রেডি করে নিয়ে বলল।চল এবার..
মেঘলাও শায়রা বেগমের সাথে যাচ্ছিল ঠিক তখনী
আকাশঃ এই দাঁড়া মেঘলা তুই কোথাও যাবি না।
শায়রা বেগমঃ আকাশ কোন উল্টাপাল্টা করবি না বলে দিলাম।বাসায় গেস্ট আছে সিনক্রিয়েট করবি না কোন।
আকাশঃ এটা কি মগের মুল্লক নাকি বাসায় ওর চেয়ে বড় ২ টা মেয়ে থাকাতে ওর বিয়ে মানে কি?
মানেটা তোর বুঝতে হবে না বলে মেঘলাকে নিয়ে হাঁটতে লাগলেন শায়রা বেগম মেঘলাও তার সাথে যাচ্ছে পিছন থেকে আকাশ চেঁচাচ্ছে
আকাশঃএই মেঘলা তুই যাবিনা বলছি না? এর ফক ভাল হবে না বলে দিলাম।
মেঘলা আকাশের কথার পাত্তা না দিয়ে চলে গেল…
আকাশঃ না এ বাসার সবাই দেখি সাপের পিছপা দেখেছে আরে সবার কি আমাকেই বাঁশদিতে ইচ্ছে করে নাকি..??এই মেঘলার যন্ত্রনায় আমি মনে হয় মরেও শান্তি পাব না কথা গুলি বলতে বলতে রাগে গজ গজ করতে লাগল আকাশ।
মেঘলা নিচে গিয়ে এক হাত ঘোমটা দিয়ে মেহমানের সামনে বসল।
আকাশ উপড় থেকে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখতে লাগল।
তখন নাবিল আসল।
নাবিলঃ এখন কেমন লাগে.. আগেই বলেছিলাম এমন ভিলেনগিরি বন্ধ কর আমার কথা ত শুনলি না…এখন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মজা দেখ।
নাবিল এতক্ষন কি বলল আকাশ যেন কিছুই শুনে নি।
আকাশ নিচের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দিয়ে বলল ছেলেটাকে কোথায় যেন দেখেছি…?? কামন অন আকাশ মনে কর কে ছেলেটা কোথায় দেখেছিস..??
নাবিলঃ পাগলের মত একা একা কি বলছিস?
আকাশঃ অহ গট ইট এটা সিয়াম… নাবিল ছেলেটা সিয়াম না আমাদের স্কুলের সামনে বাসা?
নাবিলঃ হ্যা তাই তো…কিন্তু কেন..??
আকাশঃ কেন সেটা পরে বুঝাচ্ছি…বলেই আকাশ নিচে গেল…
এদিকে,
সবাই বসে আছে।
ছেলের মাঃ মেঘলা মা ঘোমটা একটু উঠাও তো তোমার মুখটা একটু দেখি।
নাবিলের মা ঘোমটা তুলে দিল।
সিয়াম অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে মেঘলার দিকে কারন মেঘলাকে খুব সুন্দর লাগছে দেখতে।
সিয়ামের মাঃ মাসআল্লাহ খুব সুন্দর দেখতে মেয়ে আচ্ছা মা এবার তোমার চুল টা একটু দেখাও তো.
শায়রা বেগম যখন মাথার ঘোমটা টা তুলতে যাবে তার আগেই আকাশ এসে নাবিলের মার হাত ধরে ফেলল।
আকাশঃ থামো ছোট মা…
নাবিলের মাঃ কি করছিস আকাশ?
আকাশঃ এ বিয়ে হবে না..
নাবিলঃ কি করছিস আকাশ বড় রা সবাই আছে যা বলার পরে বলিস এখন এখান থেকে চল।
আকাশঃ কেম যেতে হবে কেন আর মেঘলা কি আমার প্রেমিকা নাকি সে আমি কিছু বললে সেটা সিনক্রিয়েট হয়ে যাবে আকাশ ইগলিগ্যাল কথা বলে না বুঝেছিস.. আমাদের বাসার মেয়ে কোন পন্য নয় যে এভাবে ওভাবে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখাতে হবে…যারা মেয়েদেরকে পন্য ভাবে সে বাড়িতে মেঘলার কেন কোন মেয়েরেই বিয়ে দেয়া ঠিক না।
সিয়ামঃ আকাশ তুমি কিন্তু আমাদের অপমান করছো..
আকাশ রেগে গিয়ে সিয়ামের কলার টেনে ধরে বলতে লাগল,এখনো যে গায়ে হাত তুলি নি এটাই যথেষ্ট নয় কি? আমার বাসায় মেয়ে দেখতে এসেছো আর আমাকেই জানালে না, পারমিশন নেয়ার প্রয়োজন মনে করলে না..??এত সাহস হয় কি করে?
আজাদ সাহেবঃ কি হচ্ছে টা কি আকাশ..?? ওদের আমি আসতে বলেছি আর মেঘলার বিয়ে সিয়ামের সাথেই দিব।তুমি একটা কথাও বলবে না..
আকাশঃ সরি বাবা তুমি যান আমি বড়দের মুখে মুখে কথা বলি না কিন্তু এ ব্যাপারে না বলে পারছি না… মেঘলাকে ছোট থেকে আমি বড় করে তুলেছি তাই মা বাবার পরে ওর উপড় যদি কারো অধিকার থাকে সেটা শুধু আমার অতএব ওর বিয়ে কার সাথে হবে আর কার সাথে হবে না সেটা আমি ঠিক করব অন্য কেউ না।
আকাশ এবার রাগি লুক নিয়ে মেঘলার দিকে তাকিয়ে বলল মেঘলা উপড়ে যা…
মেঘলা যাচ্ছে না দেখে আকাশ চেঁচিয়ে উঠল মেঘলা ভয়ে সেখান থাকে চলে গেল।
মেঘলাঃ ভাইয়া আসলে চায় টা কি? একবার বলছে আমি নাকি ওর প্রেমিকা নই আবার আমার বিয়েও অন্য জায়গায় হতে দিবে না এসবের মানে কি?
।
।
।
।
চলবে…!!!
(জানি পর্ব ছোট হয়েছে আগামীকাল ২ পার্ট দিব ইনশাল্লাহ)