#ভিলেন
#পার্টঃ৬৪
#লিখনীঃ Mona Hossain
আকাশ মেঘলাকে নিয়ে তার বাংলো তে গেল।
কিন্তু মেঘলা আকাশের সাথে যেতে রাজি না।
আকাশঃ তোর সমস্যা টা কোন জায়গায় বলবি একটু..??আমার ধর্য্যের পরিক্ষা নিচ্ছিস কেন?কি চাইছিস টা কি তুই..??
মেঘলাঃ মাথা ঠান্ডা কর ভাইয়া। দেখ এতদিন মুখে মুখে বলেছি কিন্তু আজ আমার সত্যিই বিয়ে হয়ে গিয়েছে। বিয়ে তো ছেলে খেলা না।
আকাশঃ ওহ তাই নাকি? আমার সাথে তোর বিয়ে হয় নি? তাহলে সেটাকে কি করে ছেলে খেলা ভেবে নিলি? আর কত মেঘলা?জীবন নিয়ে এই পুতুল খেলাটা কবে শেষ করবি তুই..??
আজ পানিতে ঝাঁপ কাল হাত কাটা পরশু বিয়ে করা তরশু অন্য একজনের সাথে বেড শেয়ার তারপর আবার অন্য আর একজন কে বিয়ে। আর কত খেলা দেখাবি তুই? তোর জীবন কাহিনীর কাছে ত উপন্যাসও ফেল। তোর মত মেয়ে আর নেই? নেহা মিলিও তোর মতই কই ওদের নিয়ে তো এত স্কেন্ডেল হয় না তোকে নিয়েই কেন হয় বলতে পারিস?
মেঘলাঃ তুই আমাকে খারাপ বলছিস?
আকাশঃ নিজের জায়গায় দাঁড়িয়ে কখনই অন্যজনের সমস্যা বুঝা যায় না তাই নিজের জায়গায় না আমার জায়গায় নিজেকে দাঁড় করিয়ে একটা বার চিন্তা করতো মেঘলা যাকে নিজের জীবনের চেয়েও বেশি ভালবাসিস সে যদি অন্য একজনের সাথে বিছানায় থাকত তুই কেমন রিয়েক্ট করতি? সেই মুহুর্তে ইচ্ছে হয়েছিল তোকে খুন করে নিজেও মারা যাই তবুও আমি নিজেকে কন্ট্রোল করেছিলাম কেন জানিস শুধু মাত্র তোকে ভালবাসি বলে।
মেঘলাঃ ভালবাসিস? তাহলে কেন ওই বাসায় রেখে এসেছিলি?
আকাশঃ ওই বাসায় রেখে এসেছিলাম এই আশায় যে ওখানে থাকলে বুঝতে পার
বি আকাশ তোকে কতটা কেয়ার করে আশায় ছিলাম তুই নিজের ভুল টা বুঝতে পারবি তারপর আমার কাছে এসে সবটা খোলে বলবি কিন্তু না করে তুই বিয়ে করে নিলি তাও যদি নিরব কে করতি আমার কিছু বলার ছিল। সেটা না করে বাবার বয়সি একজন কে বিয়ে করলি…কেন মেঘলা?
ধরে নিলাম আমি জেনির সাথে প্রেম করেছিলাম ভুল করেছিলাম তারপর তো তোর কাছে ক্ষমা চেয়েছিলাম তারপরেও ধরে নিলাম তুই আমাকে করতে পারিস নি তোর আমাকে শাস্তি দেয়ার ইচ্ছা হয়েছিল।
তারপর নিরবের সাথে ঘটনা টা ঘটিয়েও কি আমাকে শাস্তি দেয়া হয় নি? এত বড় শাস্তি দেয়ার আবার বিয়েটা কেন করলি জবাব দে…যদি তোর বাবা তোকে জোরও করে আমি ত এবার দেশে ছিলাম তোর উচিত ছিল না আমাকে জানানোর? আমি যদি নাও যেতাম তোর দায়িত্ব পালন করা দরকার ছিল না?
মেঘলাঃ কেন তোকে জানাব কেন আমি তো তোকে আর চাই না আমি তোর থেকে মুক্তি চাই।
আকাশ এবার মেঘলাকে ঠাস ঠাস করে কয়েকটা থাপ্পড় মারল।
মেঘলাঃ ম ম মা মার মারছিস কেন..??
আকাশঃ আমি তো এখনো তোকে তালাক দেই নি তাহলে কোন সাহসে বিয়ে করলি জবাব দে….?? আমাকে মানুষ মনে হয় না? তোর জন্য করেনি এমন কোনো কাজ আছে?দেশ ছেড়েছি না খেয়ে থেকেছি… রাস্তায় ঘুমিয়েছি তোকে বাঁচাতে টাকার জন্য পাগলের মত ছুটে বেরিয়েছি মা,বাবা কেউ ছিল টাকা দেয়ার মত কিন্তু আকাশ ছিল হাতে এক টা টাকা না সত্ত্ব্বেও লাখ টাকার প্রেসার নিয়েছিল আকাশ আজ সব ভুলে গেলি মেঘলা?
সেই এতটুকু থেকে তোকে আগলে রাখছি যখন যা চেয়েছিস কখনো বলি নি দিতে পারব না তোর সব ভুল হাসি মুখে মেনে নিয়েছি। বুকে হাত দিয়ে বলতো মেঘলা যখন বিপদে পড়িস কার কথা সবার আগে মনে পড়ে..?? যে আকাশ তোর জন্য মরতে পর্যন্ত রাজি সেই আকাশের সামনে অন্য ছেলের কথা বলতে বুক কাঁপে না রে… মানুষ এতটাও বেইমান হতে পারে?
মেঘলাঃ পাগলের মত কিসব বলছিস আগে যা হয়েছে সেসব এখন অতীত। আর আমি তোকে বলি নি আমাকে বাঁচা যা করেছিস নিজের ইচ্ছেয় করেছিস তাই আমাকে দোষ দিবি না।
আকাশঃ চুপ কর…. (চিৎকার করে) আর সহ্য হচ্ছে না তুই সত্যিই ভাল কথার মেয়ে না অনেক খেলেছিস আমাকে নিয়ে আর না এবার আমার পালা তোর প্রেম আর বিয়ে সব করার সখ আজ আমি মিটাব।ভাল ভাবেই মিটাব। বলে আকাশ মেঘলার কাছে এগিয়ে আসল।
মেঘলাঃ কি করছিস এসব? ছাড় বলছি।
আকাশঃ তোকে ছোট থেকে বড় করেছে কে? আকাশ
তোকে নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়েছে কে? আকাশ
তোকে বিয়ে করেছে কে? সেটাও আকাশ
তাহলে তোকে ভোগ অধিকার কার? অবশ্যই আকাশের।
মেঘলাঃ কি বলছিস এসব…??ছাড় বলছি।
আকাশ মেঘলাকে বিছানায় ফেলে দিল
আকাশঃ সরি ডেয়ার আজকের পর আকাশ আর কখনো মেঘলার কোন অনুরোধ শুনবে না আর আজ তোর বাসর রাত তাই ছাড়ার প্রশ্নই উঠে না। আফটার অল তুই আমার বিয়ে করা বউ তোর সাথে সব কিছু করার রাইট আমার আছে বলে মেঘলাকে আবার ধরল আকাশ।
মেঘলাঃ ছাড় ভাইয়া প্লিজ এমন কিছু করিস না আমি কিন্তু চেঁচাব।
আকাশঃ মানা করেছি নাকি চেঁচা।
মেঘলাঃ যেকরেই হোক আকাশ কে আটকাতে হবে তানাহলে ও যদি কোন ভাবে বুঝে যায় নিরবের সাথে আমার কিছু ছিল না তাহলে ত ও আমাকে প্রশ্ন করনে কেন এমন করেছিলাম প্রশ্নের উত্তরে না হয় বলব রাগ করে করে ছিলস্ম কিন্তু তারপর তো আমাকে আর ছাড়তে চাইবে না কিন্তু আমার যে ওকে ছেড়ে যেতেই হবে।
আমি তোকে কি করে বলব আমি এত বাজে ভাবে ফেঁসে গিয়েছি।কি করে বলব তোর নিজের মাই তোর ভাল চায় না।তোকে আমার কাছ থেকে কেড়ে নিতে বড় মা আমার সাথে এত বাজে একটা গেম খেলতে পারবে কখনই ভাবি নি।আমি সবার সামনে তোর মাথা নিচু হতে দিব না তার চেয়ে তুই আমাকে ছাড়াই ভাল থাক।
আকাশের সাথে জোরাজোরিতে মেঘলা পেরে উঠছে না তাই মেঘলা বাঁচাও বাঁচাও বলে চেঁচাতে লাগল।
আকাশঃ ব্যাথা দেয়ার ইচ্ছে ছিল না কিন্তু বাধ্য হচ্ছি
মেঘলাঃ ভাইয়া আমার লাগছে….প্লিজ ছেড়ে দে..
আকাশ ১ মিনিটের জন্য থেমে গিয়ে মেঘলার দিকে তাকাল তারপর বিষ্ময়কর দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল
আকাশঃ ভাইয়া মানে?
মেঘলাঃ হ্যা ঠিক তাই ভাই হয়ে তুই বোন কে ধর্ষন করতে চাইছিস?
আকাশঃ হা হা হা তোর কথা শুনে না হেসে থাকার উপায় আছে..?? ভুলে গিয়েছিস কিছুদিন আগেও বিয়ে না হওয়া সত্ত্বেও তুই আমার কাছে এসে বায়না করছিলি নাকি সেটাও ভুলে গিয়েছিস?
মেঘলাঃ না মনে নেই আমার কিচ্ছু মনে নেই আমি তোর কাছ থেকে পালাতে চাই আর কিছু জানি না।
আকাশঃ আমার ত এখন সন্দেহ হচ্ছে তুই আদো সুস্থ আছিস কিনা?
মেঘলাঃ সর আমাকে যেতে দে…
আকাশঃ সরি জান তুমি আমার একমাত্র বউ আজ তোমাকে নিজের না করে ছাড়ছি না বলে আকাশ মেঘলার গলায় মুখ ডুবিয়ে দিল।
মেঘলাঃ ভাইয়া প্লিজ ছেড়ে দে আর কোন দিন তোর কথার অবাধ্য হব না এটা ছাড়া যা চাইবি সব করব।
আকাশ মেঘলার গলা থেকে মুখ সরিয়ে নিয়ে বলল ঠিক তো..??
মেঘলাঃ হুম সত্যি…
আকাশঃ আর পাগলামি করবি না বল…
মেঘলাঃ কখনো করব না…
আকাশ মেঘলাকে ছেড়ে দিল।
আকাশঃ আচ্ছা দিলাম ছেড়ে এবার গিয়ে এসব কাপড় চোপড় বদলে আয় এসব যতবার দেখছি ততই রাগ উঠছে তুই অন্য কারো জন্য সেজেছিস মানতেই পারছি না। ফ্রেশ হয়ে আয় আমি দেখি খাবারের কোন ব্যবস্থা করা যায় কিনা…??বলে আকাশ মেঘলার উপড় থেকে উঠে গেল।
আকাশ উঠার সাথে সাথেই মেঘলাও উঠে গেল।
মেঘলাঃ আমাকে কি তোর খেলনা মনে হয়…?? যখন ইচ্ছা হবে ছুড়ে ফেলে দিবি যখন ইচ্ছা তুলে আনবি… না এসব হবে না একটা কথা কান খুলে শোন আমি তোর কাছে থাকব না এখনী চলে যাব…বলেই মেঘলা দৌড় দিল।
আকাশঃ সাহস দেখে অবাক না হয়ে পারছি না এত ভাল ভাবে বুঝানোর পরেও এমন করছিস..??ঠিক আছে এবার দেখ তোর সাথে ঠিক কি কি হয়??
মেঘলা দৌড়ে নিচে গেলেও গিয়ে দেখল দরজা লাগানো অনেক চেস্টা করেও খুলতে পারছে না।
আকাশ উঁকি দিয়ে বলল চেস্টা করা শেষ করা হলে উপড়ে আসেন।
মেঘলাঃ দরজাটা খুলে দে…
আকাশঃ দিচ্ছি একটু অপেক্ষা করুন।আকাশ নেমে মেঘলার কাছে গেল।তারপর মেঘলার হাত ধরে বলল তুই
বিশ্বাসের যোগ্য না জানতাম তবুও সুযোগ দিয়েছিলাম কিন্তু আবারও ভুল করলি বলে মেঘলাকে ঘরে নিয়ে আসল।
আকাশঃ অন্য কারো জন্যে গয়না পড়েছিস তাই না? বলেই মেঘলার গলার হার ধরে টানল। এতই জোরে টেনেছে যে হারের ফিতা ছেড়ার সাথে সাথে মেঘলার গলার কিছুটা অংশও ছিলে গিয়েছে।
মেঘলা আহ বলে গলায় চেপে ধরল।আকাশ এবার এসে মেঘলার মুক চেপে ধরে বলল লিপস্টিক পড়তে বারণ করেছিলাম না? তাও পড়েছিস কেন? জবাব দে…ছেলেদের আকৃষ্ট করার জন্য তাই না?
ভাল করেছিস লাল ঠোঁট দেখে আমার না খুব লোভ হচ্ছেরে বলেই মেঘলার ঠোঁটে জোরে কামড় বসিয়ে দিল।
মেঘলাঃ ক ক কি করছিস?
আকাশঃ যেগুলি আমার আরও আগে করা উচিত ছিল তাই করছি।
মেঘলা অনেক অনেক অনুরোধ করল কিন্তু
এবার মেঘলার কোন আকুতি আকাশের কানে ঢুকল না।
বেশ অনেক্ষন জোরাজোরি করে মেঘলা হাল ছেড়ে দিয়ে ডুকরে কেঁদে উঠল।
আকাশ তবুও মেঘলাকে ছাড়ল না।
।
।
।
মেঘলাঃ তুই আমার সাথে এমন করতে পারলি…??
আকাশঃ বউ যদি বউ এর মত না হয় তাহলে তাহলে এমনেই করতে হয়। আমি এভাবে তোকে আপন করতে চাইনি আমাকে হিংস্র হতে তুই বাধ্য করেছিস।
মেঘলাঃ দেখ কি অবস্থা করেছিস?
আকাশ তাকিয়ে দেখল সত্যিই জোরাজোরিতে মেঘলা হাতে গকায় ছিলে গিয়েছে কাপড় ছিড়ে গিয়েছে।
আকাশঃ সরি রে তোকে কষ্ট দিতে আমি চাই নি কত স্বপ্ন ছিল এই রাত টা নিয়ে তুই সব নস্ট করে দিলি(মনে মনে)
দেখলাম তো কি এমন হয়েছে একটু ছিলে গিয়েছে এসব কোন ব্যাপার না ২,১ দিন পর ঠিক হয়ে যাবে। তুই ত বাচ্চা না যে এইটুকু সহ্য করতে পারবি না তাছাড়া এটা আমার না তোর দোষ তুই বাধা না দিলে ব্যাথা পেতি না।তাই ন্যাকামি বাদ দিয়ে যা ফ্রেশ হয়ে আয়…
মেঘলা একমনে কেঁদে চলেছে…
আকাশঃ আজ থেকে তুই শুধু আমার মেঘলা…তুই চাইলেও আমায় আর ছেড়ে যেতে পারবি না।(মনে মনে) কি রে বসে আছিস কেন যা…. সাজগোজ মুছে আয়।
মেঘলা যাচ্ছে না দেখে আকাশ নিজেই মেঘলাকে টেনে তুলল।
মেঘলার শরীর চলছে না। যদিও মেঘলার বাবা জোর করে নি কিন্তু বিয়েটা সে ইচ্ছা করে করতে চায় নি কোন একটা কারনে বাধ্য হয়ে করছিল তাই নিজের উপড় রাগ করে সে সারাদিন ধরে কিছু খায় নি তার উপড় আকাশের সাথে জোরাজোরি করে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। মেঘলা কোন রকম উঠে দাঁড়াল। আকাশ মেঘলাকে ধরে রেখেছে
কিন্ত দাড়িয়েই মেঘলা চিৎকার করে উঠল,
আকাশঃ আবার কি হল?
মেঘলা বিছানার দিকে তাকিয়ে বলল এখানে এত ব্লাড কেন
আকাশ বিছানার দিকে তাকিয়ে কিছু বলল না একটু হেসে বাইরে চলে গেল।
বাইরে থেকে আকাশ বলল ফিরে এসে যেন দেখি ফ্রেশ হয়েছিস…
।
।
।
।
চলবে
(গল্পের নাম যেহেতু ভিলেন আকাশ একটু খারাপ কিছু করবেই এতে কইলাম আমার কোন হাত নাই আমারে কেউ বকা দিয়ো না হুম 😔)