#ভিলেন
#পার্টঃ৬৯
#লেখনীঃ #mona_hossain
মাসখানিক কেটে গিয়েছে মেঘলা আকাশের কাছে এসেছে। এর মধ্যে আকাশ আর মেঘলার মাঝে বড় কোন ঝামেলা হয় নি।
তবে এই এক মাস আকাশ,মেঘলা এক ঘরে থাকলেও তাদের মাঝে স্বামী স্ত্রী সুলভ সম্পর্ক গড়ে উঠেনি কারন আকাশ যতবারেই মেঘলাকে টাচ করতে চেয়েছে মেঘলা ভয়ে কুকুড়ে উঠেছে।
মেঘলা নিজেও জানে না এর কারন কি তবে আকাশ কারন টা বুঝেতে পেরেছে তার অনুশোচনাও হয়েছে।
সে বুঝতে পেরেছে সেদিন মেঘলার সাথে জোর করে সম্পর্কে জড়ানো টা তার উচিত হয় নি। এত সহজে
কোন মেয়ের পক্ষেই এমন আপত্তিজনক ঘটনা ভুলে যাওয়া সম্ভব না। ধর্ষন ধর্ষনেই হয় সে যেই করুক না কেন
তাই আকাশ আর মেঘলাকে জোর করে নি।
আকাশ মেঘলাকে সময় দিচ্ছে যাতে মেঘলা ঘটনা টা ভুলতে পারে।আর আকাশ কে মন থেকে মেনে নিতে পারে।
সকাল ৮.০০ টা কাঁথামুড়ি দিয়ে ঘুমাচ্ছে মেঘলা হটাৎ সে অনুভব করল তার উপড় পানি পড়ছে..
মেঘলাঃ এমা এই বাসার ছাদ ফুটো জানতাম না তো তবে সে যাই হোক বৃষ্টি পড়ুক বা বন্যা হয়ে যাক চোখ মেলতে ইচ্ছে করছে না মোটেও।মেঘলা পানির ব্যাপারে চিন্তা করা বাদ দিয়ে কাঁথা টেনে মুখ ঢেকে নিল। পরক্ষনেই অনুভব করল সে কাঁপছে।কাঁপনের গতি সময়ের সাথে বাড়ছে।
মেঘলা চোখ বন্ধ করেই চিৎকার করে উঠল
মেঘলাঃ ভাইয়া…. ভাইয়া কোথায় তুই দেখ ভুমিকম্প হচ্ছে বলতে বলতে চোখ খুলে তাকিয়ে অবাক হল সে কারন আকাশ মগ হাতে মেঘলা দিকে ঝুঁকে বড় বড় চোখ করে দাঁড়িয়ে আছে।
আকাশঃ তোমার উপড় কি মাঝে মাঝে ভূতে ভর করে? কিসব আবল তাবল বকছো কিসের ভুমিকম্প আর কিসের ভাইয়া?
মেঘলাঃ ভুমিকম্প না তো আমি এত কাঁপছিলাম কেন?
আকাশঃ আমি কাঁথা ধরে টানছিলাম তাই।
মেঘলাঃ তো এত টানাটানির কি আছে?
আকাশঃ স্কুলে কি যেতে হবে না নাকি?
মেঘলাঃ সেত অনেক দেড়ি আছে যা তো এখান থেকে।
আকাশঃ আর একবার তুই করে বললে না মেরে পিঠের ছাল তুলে নিব।
মেঘলাঃ তোকে আমার পক্ষে আপনি ডাকা সম্ভব না।
আকাশঃ কেন সম্ভব না কেন?
মেঘলাঃ আকাশ আপনি এদিকে আসুন কেমন শুনায় বলেই হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খেল মেঘলা।
আকাশঃ এত হাসার কি হল?
মেঘলাঃ ভাইয়া এদিকে আয় বলতো কোনটা বেশি আপন লাগে? বলতো?
আকাশঃ তাই বলে নিজের বরকে ভাইয়া ডাকবি?
মেঘলাঃ ডাকলে সমস্যা কি?
আকাশঃ ভাই বোন একটা পবিত্র সম্পর্ক তাই বরকে ভাই বলা যায় না বুঝেছিস?
মেঘলাঃ তারমানে স্বামী স্ত্রী অপবিত্র সম্পর্ক..?? এতদিন জানতাম না তো। তাহলে এই সম্পর্কে মানুষ জড়ায় কেন?
আকাশঃ ইডিয়েট
মেঘলাঃ এই বাজে কথা বলবি না। আচ্ছা এটা ত বল সম্পর্ক অপবিত্র কেন হল ?
আকাশঃ তোর মত ইডিয়েটকে এসব বুঝানো সম্ভব না উঠ স্কুলের সময় হয়ে গিয়েছে।
মেঘলাঃ হি হি হি দেখেছিস এখন তুই ও আমাকে তুই করে বলছিস।
আকাশঃ অহ খোদা হয় এটাকে মানুষ করে দাও না হলে আমাকে নিয়ে যাও।
মেঘলা আকাশের বিরক্তময় চেহারা দেখে একমনে হেসে চলেছে।
আকাশ রাগী রাগী ভাব নিয়ে বলল,
এইজন্যেই হয়ত বলে অবুঝ বন্ধুর চেয়ে জ্ঞানী শত্রু ভাল।তোকে মানুষ করা একপ্রকার অসাধ্য কাজ।
মেঘলাঃ একদম অপমান করবি না আমি মোটেই অবুঝ না আমি চালাক।
আকাশঃ জ্বি ম্যাডাম আপনি খুব চালাক সেটা সবাই বুঝেছে তাই তো বর কে ভাইয়া বলেন। এসব ছেড়ে এবার প্লিজ রেডি হয়ে আসুন আমি খালা কে খাবার দিতে বলছি।
মেঘলাঃ যথা আজ্ঞা স্যার।
আকাশ নিচে চলে গেল কিছুক্ষন পর মেঘলাও এসে খেতে বসল।
মেঘলাঃ তবে এই একটা দিক তোর খুব ভাল আমাকে দিয়ে কোন কাজ করাস না।
আকাশঃ আজ থেকে করাব..
মেঘলাঃ মানে…??
আকাশঃ আজ থেকে আমাকে না খায়িয়ে দিয়ে তুই খেতে পারবি না। শুনেছি আগের দিনে স্ত্রীরা নাকি তার স্বামীর জন্য অপেক্ষা করত স্বামী না খেলে খেত না। আমারো খুব ইচ্ছা আমার বউ আমার জন্য অপেক্ষা করবে আর আমি সব ব্যাস্ততা ফেলে ৩ বেলা ছুটে আসব তার কাছে কারন বউকে না খায়িয়ে ত বেশিক্ষন রাখা যাবে না।
মেঘলাঃ কি কূটনীতিবিদ রে তুই।
আকাশঃ কিসের কূটনীতি?
মেঘলাঃ আমাকে না খায়িয়ে রাখার প্লেন করেছিস..
আকাশঃ না খায়িয়ে রাখার প্লেন করে নি, তুই যেন আমাকে রেখে কোথাও যেতে না পারিস তার প্লেন করেছি।
মেঘলাঃ কিভাবে?
আকাশঃ আমাকে না খায়িয়ে যদি না খাস তাহলে ত আমাকে রেখে কোথাও গেলে তোকেও না খেয়ে থাকতে হবে যখন ক্ষুধা পাবে নিজেই ছুটে আসবি।
মেঘলাঃ আইডিয়াটা মন্দ না আচ্ছা ডিল এখন থেকে আমি তোকে খায়িয়ে দিব নে এবার হা কর দেখি।
আকাশ হেসে মেঘলার হাতের খাবার টা খেয়ে নিল।
মেঘলা ২য় বার যখন খওয়াতে নিল আকাশ থামিয়ে দিয়ে বলল দরকার নেই একবার খাওয়ালেই হবে এখন তাড়াতাড়ি খাওয়া শেষ কর স্কুলের সময় হয়ে গিয়েছে সামনেই তোর পরিক্ষা।
মেঘলাও খেয়ে নিয়ে আকাশের সাথে বেরিয়ে পড়ল।
আকাশ মেঘলাকে স্কুলে নামিয়ে অফিসে চলে গেল।
আকাশ অফিসে কাজ করছে বেজায় ব্যাস্ত সে কারন নাবিল অফিসে আসছে না অনেকদিন।
নাবিল আকাশের মতই গম্ভির টাইপের ছেলে রাগ অভিমান সমস্যা কোনটাই প্রকাশ করতে রাজি না সে।তাই তার কি হয়েছে কেন অফিসে আসছে না সেটা জানা সম্ভব হয় নি। আকাশ অনেকবার বলার পরেই সে অফিসে আসে নি।
আকাশ কাজ করছিল তখন ফোন বেজে উঠল।
আকাশঃ হ্যালো মেঘলা…?? স্কুলে ফোন নিয়ে গিয়েছিস কেন?
– সরি আমি মেঘলা নই,আপনি কে সেটাও জানি না কি ফোনে আপনার নাম্বারটাই প্রথম ডায়েল করা ছিল তাই আপনাকে কল দিয়েছি।
আকাশঃ জ্বি বলুন কি বলবেন এটাত মেঘলার নাম্বার ফোন টা হারিয়ে ফেলেছে তাই না?উফফ মেয়েটা যে কবে মানুষ হবে।
– জ্বি না ব্যাপার টা ঠিক তা না আমি মেঘলাকে চিনি স্কুলে ও আমার জুনিয়র ছিল যদিও অনেকদিন যাবত দেখা হয় নি আজ আমি অফিসে যাচ্ছিলাম হটাৎ রাস্তায় ভীর দেখতে পেলাম এগিয়ে গিয়ে দেখি মেঘলা সেন্সলেস হয়ে পড়ে আছে।
আকাশঃ হোয়াট কি বলছেন? আমিত ত ওকে স্কুলে রেখে এসেছিলাম। রাস্তায় থাকবে কেন? কোথায় আছেন আপনারা মানে কোন রাস্তায় আছেন বলুন আমি এক্ষনী আসছি।
– আজব তো আমি যে বল্লাম আমি মেঘলাকে চিনি শুনতে পান নি? যাকে চিনি সে রাস্তায় পরে থাকবে আর আমি চেয়ে চেয়ে দেখব আজব সেন্স আপনার? যাই হোক আমরা সেন্ট্রাল হসপিটালে আছি আপনি চলে আসুন।
আকাশঃ আমি এখনী আসছি।বলে আকাশ বেরিয়ে পড়ল।
আকাশঃ তোকে আমি স্কুলে রেখে এসেছিলাম মেঘলা তাহলে রাস্তায় কি করছিলি তুই? আজ তোকে হাতের কাছে পাই তারপর মজা বুঝাব।
আকাশ হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারল মেঘলা ১০৩ নাম্বার কেবিনে আছে।১ মিনিট দেড়ি না করে আকাশ ছুটে গেল সেখানে। গিয়ে দেখল মেঘলার কপালে ব্যান্ডেজ আর হাতে স্যালাইন লাগানো কিন্তু এখনো জ্ঞান ফিরে নি।
আকাশ ডাক্তারকে জিজ্ঞাস করল মেঘলার কি হয়েছে?
ডাক্তারঃ টেস্ট না করে বলব কি করে? টেস্ট রিপোর্ট রাতে পাবেন তবে তেমন কিছু হয়েছে বলে মনে হচ্ছে না। প্রাথমিক ভাবে বলা যায় দুর্বলতা থেকে এমন হয়েছে আর রাস্তায় পড়ে গিয়ে মাথায় একটু আঘাত পেয়েছে। রিপোর্ট পেলে বুঝা যাবে ঠিক কি হয়েছে।
আকাশঃ জ্ঞান কখন ফিরবে?
– এই মাত্রই স্যালাইন দেয়া হয়েছে দুর্বলতা একটু কমলেই জ্ঞান ফিরে আসবে। আমি কিছু ভিটামিন লিখে দিয়েছি উনার সাথে একজন মেয়ে ছিলেন উনি মেডিসিন আনতে গিয়েছেন জ্ঞান ফিরলে খায়িয়ে দিবেন ঠিক হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ চিন্তা করবেন না
বলে ডাক্তার চলে গেলেন।
তেমন কিছু হয়নি শুনে আকাশের দেহে প্রাণ ফিরল আকাশ বেডের পাশে চেয়ার টেনে আলতো করে মেঘলার হাত ধরে মুখ নিচু করে বসল।
এরিমধ্যে মেয়েটি আসল।
– আরে আকাশ ভাই না কেমন আছেন?
আকাশ অবাক হয়ে তাকাল,
আকাশ- সামিরা…??? তোমার নাম সামিরা না?
(একটা পর্বে মোসুমী বলেছিলাম সেটা মোসুমি না সামিরা হবে)
সামিরাঃ আপনার আমার কথা মনে আছে..??
আকাশঃ তুমাকে কি করে ভুলব? যে পরিমান জ্বালিয়েছো আমাদের স্কুলে কোচিং এ সব জায়গায়…
সামিরা মুচকি হেসে বলল অনেক বছর হল দেখা হয় না তাই না?
আকাশঃ হ্যা কি রাগ ছিল তোমার নাবিল যেদিন তোমার সাথে খারাপ ব্যবহার তারপরের দিনি তুমি টিসি নিয়ে চলে গেল তারপর আর দেখা হয় নি।
সামিরাঃ আমি আজও বুঝে উঠতে পারিনি সেদিন নাবিল ভাই কেন এমন করেছিল সে যাই হোক খুব অপমান বোধ করেছিলাম সেদিন তাই মুখ লুকিয়ে চলে গিয়েছিলাম বলতে পারেন পালিয়ে গিয়েছিলাম। একমাস আগে এখানে এসেছি। আসলে কপাল খারাপ হলে যা হয় আর কি আসলে একটা মাল্টিলন্যাশানাল কোম্পানি তে চাকরি করি সেটারেই পোস্টিং হয়েছে এখানে। তানাহলে এখানে ফিরার ইচ্ছে ছিল না।
আকাশ একটু হাসল কিছু বলল না কারন তার কিছু বলার নেই সামিরা আকাশদের ২ ব্যাচ জুনিয়র ছিল সামিরা সত্যিই নাবিল কে অনেক ভালবাসত কিন্তু নাবিল তাকে কোনদিন পাত্তা দেয় নি বরং একদিন সবার সামনে সামিরাকে অপমান করেছিল তখন সামিরা এই শহর ছেড়ে চলে যায়।নাবিল কেন এমম করেছিল সেটা আকাশেরো অজানা।
সামিরাঃ কত কিছুই না করেছি উনাকে পাওয়ার জন্য কিন্তু কোনদিন ফিরেও তাকালেন না। জানেন এখানে আসার পর সেদিও দেখা হয়েছিল নাবিল ভাইয়ের সাথে কিন্তু বরাবরের মতই মুখ ঘুরিয়ে চলে গেলেন।
আমাকে তিনি এত অপছন্দ করেন ভাবলেই লজ্জা লাগে।
আকাশঃ মন খারাপ করোনা সবাই তো এক রকম হয় না।
সামিরাঃ আমার কথা বাদ দিন আপনার কথা বলুন এখনো সেই আগের মতই আছেন দেখছি এখনো আগের মতই আগলে রাখেন মেঘলাকে এতবছরে আপনাদের সম্পর্কটা একটুও বদলায় নি।
আপনি বরাবরের মতই কেয়ারিং আর মেঘলা অবুঝ কি মিস্টি সম্পর্ক আপনাদের।কিন্তু মেঘলা আর বড় হল না সেই আগের মতই অবুঝই রয়ে গেল।
আকাশঃ মেঘলা এখনো অবুঝ বুঝলে কি করে?
সামিরা হেসে বলল ফোনে আপনার নাম মিস্টার হনুমান দিয়ে সেইভ করে রেখেছে তাই ত তখন চিনি নি আকাশ লিখা থাকলে ত তখনী চিনতাম।
আকাশঃ i wish ও যেন কখনো না বদলায় মুখে যতই বলি ও ম্যাচিউর হোক আমার মন বলে ও যেন সারাজীবন এমন বাচ্চামি করে।
সামিরাঃ এত যে উল্টা পাল্টা কাজ করে রাগ হয় না কখনো?
আকাশঃ হয় খুব হয় কিন্তু যখন রাগ হয় তখনী মনে হয় অবুঝ তো না বুঝেই ভুল করেছে তাই হয়ত ওর করা সব অন্যায় সহজেই মেনে নিতে পারি। ওর করা মারাত্মক ভুল গুলিও আমার মনে দাগ কাটতে পারে না।
সামিরাঃ কত লাকি মেঘলা।
আকাশঃ মোটেও না আমার রাগ সহ্য করে থাকাটাও কিন্তু সহজ কথা না কতবার ওকে ফিরিয়ে দিয়েছি অপমান করেছি এমন কি মেরেওছি ও কিন্তু তোমার মত পালিয়ে যায় নি।
সামিরাঃ রাগ অভিমান সবকিছুর পিছনে যদি অধিকার বোধ থাকে তাহলে অপমান বোধ হয় না অন্যথায় কিছু ভালবাসা না বলাই থেকে যায়।
আকাশঃ আর একবার চেষ্টা করে দেখতে পারতে..
সামিরাঃ আপনি কত কেয়ারিং। কত যন্ত করে ভালবাসতে পারেন সত্যি বলছি আপনার মত ছেলে হয় না আপনার মগ যদি কাউকে পেতাম জীবটা সার্থক হয়ে যেত।
সামিরা কথাগুলি শেষ করার আগেই মেঘলা ভ্রু কুচকে বলে উঠল
মেঘলাঃ আকাশের মত কেন জলজ্যান্ত আকাশই ত আছে নিয়ে যাও না মানা করেছে কে?
আচমকা হটাৎ মেঘলার এমন কথায় আকাশ সামিরা অবাক হল।
আকাশঃ তোর জ্ঞান ফিরল কখন..??
মেঘলাঃ আমার জ্ঞান ফিরায় তোদের বের ২ জনের খুব অসুবিধে হয়ে গেল তাই না? প্রেম আলাপে বাধা দিয়ে দিলাম।আচ্ছা তোরা প্রেম কর আমি যাই বলে স্যালাইন খুলে ফেলল মেঘলা।
আকাশঃ এসবের মানে কি একটা চড় মারব ফাযিল কোথাকার চুপচাপ শুয়ে থাক।
মেঘলাঃ চুপ একদম চুপ…
আর এই যে তুমি সামিরা আপু না?স্কুলে আমার সিনিয়র ছিলে তা এতবছর পর কোথা থেকে উদয় হলে? সেই ছোট থেকে দেখছি আকাশ আর নাবিল ভাইয়ের পিছনে পড়ে আছো এখনো পড়েই আছো তাই না? এই তুমি মেয়ে নাকি চরকি গো?
আকাশঃ মেঘলা বাড়াবাড়ি করছিস কিন্তু চুপচাপ শু বলছি। সামিরা তুমি একটু নার্সকে ডেকে দাও না প্লিজ।
সামিরা কিছু না বলে বাইরে গেল।
আকাশঃ কিছু না শুনে ওকে হার্ট করলি কেন?
মেঘলাঃ কি শুনি নি..?? সব শুনেছি ও বলছিল তোর মত কাউকে পেতে চায় আর তুই ও হাসছিলি। ও ত স্কুল লাইফ থেকেই তোদের পিছনে ঘুরত।
আকাশঃ আমার পিছনে না ও নাবিলের পিছনে ঘুরত আমরা একসাথে থাকতাম তাই হয়ত ভাবছিস আমার পিছনে ঘুরত।
মেঘলাঃ কিচ্ছু ভুল বুঝিনি আর এখন ত নিজের কানেই শুনলাম।
আকাশঃ শুধু এই টুকু শুনেই এত কিছু আর আমি যে কত কিছু সহ্য করেছি তার বেলা? পুরোনো কাসন্দি ঘাঁটতে চাই না শুয়ে পর স্যালাইন লাগিয়ে দিচ্ছি।
মেঘলাঃ নিকুচি করেছে তোর স্যালাইনের আমি চলে যাচ্ছি বলে মেঘলা সীট থেকে নেমে গেল।
আকাশ মেঘলার হাত ধরে বলল বহুত ঢং হয়েছে
মেঘলা স্বজোরে আকাশের হাতে কামড় বসিয়ে দৌড়।
আকাশঃ মেঘলা কি করছিস দাঁড়া তোর শরীর ভাল নেই।
আকাশ মেঘলার পিছনে যেতে যাবে তখন সামিরা আর নার্স আসল।
আকাশঃ সামিরা আই এম এক্সট্রিমলি সরি তুমি ওর জন্য এত কিছু করলে আর ও তোমার সাথে মিসবিহেভ করল।
সামিরাঃ ব্যাপার না ভাইয়া ওকে ত আমি চিনি আপনি মন খারাপ করবেন না যান নাহলে হয়ত আবার রাস্তায় পড়ে যাবে
আকাশ সামিরার হাতে তার একটা ভিজিটিং কার্ড ধরিয়ে দিয়ে মেঘলার পিছনে ছুটল।
আকাশ গাড়ি নিয়ে আসল মেঘলা দাঁড়িয়ে রিক্সা খুঁজছে।
আকাশঃ ফাযলামি ছেড়ে গাড়ী তে উঠ
মেঘলাঃ উঠতে পারি যদি হাসপাতালে না নিয়ে যাস।
আকাশঃ আচ্ছা আয়।
মেঘলা গাড়িতে উঠল
আকাশঃ সামিরা তোকে হাসপাতালে নিয়ে আসল আর তুই ওর সাথে এমন করতে পারলি?
মেঘলাঃ দরদ একদম উতলে পড়ছে তাই না?
আকাশঃ হ্যা পড়ছে খুশি..?? এবার ওর সাথেই প্রেম করব।
মেঘলাঃ ওর গিয়ে আমার তাতে কি..
আকাশঃ সে দেখা যাবে কার তাতে কি আসে যায়।
এসব ছাড় এবার বল তোকে ত আমি স্কুলে দিয়ে এসেছিলাম কার সাথে প্রেম করতে বাইরে বেরিয়ে ছিলি? রাস্তায় পড়েছিলি কেন হারামজাদি?
মেঘলাঃ মুখ সামলে কথা বল
আকাশঃ বাসায় যাই তারপর বুঝাব তোকে।
বাসায় এসে ঢুকতেই আকাশের ফোনে ফোন আসল।
– হ্যালো কে বলছেন?
সামিরাঃ আমি সামিরা বলছিলাম ভাইয়া মেঘলার ওষুধ আর রিপোর্ট গুলি ত রয়ে গিয়েছে।ভাগ্যিস কার্ড টা দিয়ে গিয়েছিলেন।
আকাশঃ ওহ তাই তো আচ্ছা তুমি দাঁড়াও আমি তোমাকে পিক করতে আসছি।
আকাশ ফোন রাখতেই দেখল মেঘলা ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে।
আকাশঃ ঘরে যা আমি আসছি
মেঘলাঃ এই দাঁড়া কি ভেবেছিস আমি বুঝি না? আমার কিছিই হয় নি এসব হল বাহানা কোন ওষুধের দরকার নেই তোর যাওয়া হবে না।
আকাশঃ আমি এখন তোর কথায় চলব নাকি…
মেঘলাঃ আমি তোকে যেতে দিব না।
আকাশঃ দেখি তুই আমায় কি করে আটকাস
মেঘলাঃ তুই এখন ওর কাছে গেলে আমিও বাসা ছেড়ে চলে যাব
আকাশঃ থ্যাংক্স গড বললি তানাহলে তো তোকে এভাবেই রেখে চলে যেতাম। চল রুমে চল তালা লাগিয়ে যাব তোকে দেখি তারপর কিভাবে যাস…
মেঘলাঃ ছাড় বলছি অন্য মেয়ের সাথে ফস্টিনস্টি করতে যাবি আর আমাকে বন্দি করে যাবি কোন হিসেবে শুনি।
আকাশঃ মেঘলা তুই আমার জেদ তুলিস না সামলাতে পারবি না।
মেঘলাঃ ওই মেয়েকে আমি খুন করব বুঝেছিস
আকাশ আর কিছু না বলে মেঘলাকে ঘরে বন্দি করে তালা লাগিয়ে দিল।
কাজের মহিলাঃ আরে বাবা কি করছো এসব ওকে এভাবে বন্দি করলে কেন আর ওর মাথায় কি হয়েছে?
আকাশঃ সব পরে বলব আন্টি এখন মেঘলার জন্য একটু মুরগীর ঝোল বানাও আর এই নাও চাবি কিন্তু সাবধান দেখো কোনভাবেই যেন বাইরে যেতে না পারে।
মেঘলা ঘরের ভিতর থেকে চেঁচাচ্ছে আকাশ সেদিকে মন না দিয়ে চলে গেল।
মেঘলাঃ খালা এদিকে এসো দেখো ও আমাকে ঠকিয়ে অন্য মেয়ের কাছে যাচ্ছে তুমি কি চাও আমার কপাল পুড়োক? প্লিজ দরজা টা খুলে দাও
খালাঃ কিন্তু আম্মা বাবায় যে কইল দরজা না খুলতে…
মেঘলাঃ রাখো তো তোমার বাবা খুলে দাও প্লিজ প্লিজ প্লিজ আজ ত আমি ওই মেয়েকে খুন করেই ছাড়ব ছোট থেকে আমাকে জ্বালাচ্ছে।
।
।
।
চলবে…!!!