#ভিলেন
#পার্টঃ৭০
#লেখনীঃ Mona hossain
খালাঃ না আম্মা আমি পারুম না বাবায় বকা দিব তারচেয়ে আমি এখন যাই। আপনার জন্য খাবার বানাই গিয়ে।
মেঘলাঃ যেমন আকাশ তেমনি তার লোকজন। জীবনটা একেবারে তেজপাতা বানিয়ে দিল। একবার বাসায় আসুক তারপর বুঝাব।
।
।
।
।
বেশ অনেক্ষন পর আকাশ ফিরল। এসেই রুমে গেল। রুমে যেতে না যেতেই,
মেঘলাঃআসার কি দরকার ছিল থেকে গেলেই পারতি আর এসেছিস যখন একা আসলি কেন ওকে নিয়ে আসতি….
আকাশ কপাল ভাঁজ করে বলল মেঘলা জ্বালাস না তো,ফাযলামি সবসময় ভাল লাগেনা।
মেঘলাঃ কতক্ষন ধরে আটকে রেখেছিস খেয়াল আছে?গেছিস তো গেছিস গিয়ে একেবারে হাওয়া হয়ে গিয়েছিস আচ্ছা যা হবার হয়েছে কই রিপোর্ট দেখা,ডাক্তার কি বলেছে দেখি।
আকাশঃ কিছু হয় নি
মেঘলাঃ রিপোর্ট টা দে
আকাশ ধমক দিয়ে বলে উঠল,
আকাশঃ কিছু হয়নি তো রিপোর্ট দিয়ে কি করবি?
মেঘলাঃ তাই বলে রিপোর্ট দিবে না?
আকাশঃ দিয়েছিল আমি আনি নি ফেলে দিয়েছি।
মেঘলাঃ ওমা এটা কেমন কথা ফেললি কেন?আজব টাকা দিয়ে ডাক্তার দেখিয়েছি না?
আকাশঃ টাকা আমার তোর সমস্যা হচ্ছে কেন? ইচ্ছে হয়েছে তাই ফেলে দিয়েছি।যা তো এখান থেকে আমার ভাল লাগছে না আমি একটু একা থাকতে চাই।
মেঘলাঃ আসলে তুই রিপোর্ট আনতে যাসই নি সামিরার কাছে গিয়েছিলি তাই না?
আকাশ বিরক্ত হয়ে জবাব দিল হ্যা তাই গিয়েছিলাম হয়েছে? এবার খুশি? চোখের সামনে থেকে বিদায় হ এখন।
মেঘলা আর কিছু না বলে বাইরে চলে গেল।
কিছুক্ষন পর আকাশ এসে মেঘলার পাশে বসল।
আকাশকে দেখে মেঘলা একটু সরে গেল
আকাশ গিয়ে মেঘলার কোল ঘেঁষে বসল
মেঘলাঃ আবার কি হল? তুই না একা থাকতে চাস তাহলে এখন আমাকে জ্বালাতে এসেছিস কেন?
আকাশঃ খেয়েছো?
মেঘলাঃ যখন ইচ্ছে হবে তখন খাব যখন ইচ্ছে হবে না খাব না তাতে তোর কি?
আকাশ ধমক দিয়ে বলল সব কথাতেই পেঁচাতে হউ কি অদ্ভুত মেয়ে আর কিসের তুই হ্যা?আপনি করে বলো।
মেঘলাঃ ওমা গো এত জোরে কেউ ধমক দেয় আর একটু হলে হার্ট ফেল করতাম।
আকাশঃ আর কখনো যেন তুই শব্দটা না শুনি। এখন চলো খাবে চলো।
মেঘলাঃ খেতে ইচ্ছে করছে না
আকাশঃ তবুও খেতে হবে…
মেঘলা যেতে চাইল না কিন্তু আকাশ জোর করে টেবিলে বসিয়ে দিল।
আকাশঃ দেখি হা করো..
মেঘলা বিরক্ত হয়ে বলল সকালে না বলা হয়েছিল আমি যেন কারো আগে না খাই তাহলে এখন খাব কি করে?
আকাশ হেসে বলল তাহলে খায়িয়ে দাও
মেঘলা আকাশ কে খায়িয়ে দিল তারপর আকাশও মেঘলাকে খায়িয়ে দিল।
মেঘলার খাওয়া শেষ হলে আকাশ একগাদা ওষুধ এনে দিল।
মেঘলাঃ তখন যে বললি কিছু হয় নি তাহলে এত ওষুধ কিসের?
আকাশ রাগি রাগি ভাব নিয়ে মেঘলার দিকে তাকাল।
মেঘলাঃ ব ব বললেন…
আকাশঃ গুড আর যেন ভুল না হয় আর কিছু হয়নি দুর্বলতার জন্য ওষুধ দিয়েছে খেয়ে নাও।
মেঘলাঃ খাবনা
আকাশঃ কি..??
মেঘলাঃমানে আমি ট্যাবলেট খেতে পারি না বমি পায়
আকাশঃ কিন্তু খেতে হবে।খাও বলছি না হলে মার খেতে হবে।
মেঘলা নাচর বান্দা খাবে না। তাই আকাশ মেঘলার মুখ চেপে ধরল।
মেঘলাঃ উ উ উ..
আকাশ বুঝতে পারল মেঘলা কিছু বলতে চায় কিন্তু মুখ ধরে রাখায় বলতে পারছে না।তাই ছেড়ে দিল।
মেঘলাঃ এগুলী চেঞ্জ করে সিরাপ আনা যায় না প্লিজ?
আকাশ এবার আর কিছু না বলে মেঘলার মুখে টেবলেট দিয়ে পানি দিয়ে চেপে ধরল।
মেঘলাও বাধ্য হয়ে গিলল।
মেঘলা রাগী রাগী ভাব নিয়ে আকাশের দিকে তাকাল।
আকাশঃ উপড়ে গিয়ে শুয়ে পড়ো আমি আসছি ঘুম পাড়িয়ে দিব।
মেঘলাঃ এও ভর দুপুরে ঘুম কিসের..?
আকাশঃ বল্লাম না তুমি দুর্বল হয়ে গিয়েছো বিশ্রাম নিতে হবে..
মেঘলাঃ যতসব আজাইরা কথাবার্তা
আকাশঃ উপড়ে যাও
মেঘলা চলে গেল আকাশ এক গ্লাস দুধ নিয়ে মেঘলার কাছে গেল।
আকাশঃ খাও…
মেঘলাঃ দুধ…?? তুই সরি আপনি আমাকে দুধ খেতে বলছেন? আমি দুধ খাই না জানেন না…??
আকাশঃ মানুষ অভ্যাসের দাস এখন থেকে খেয়ে অভ্যাস করো।
মেঘলাঃ পাগল হয়ে গিয়েছিস তুই…
আকাশ কিছু না বলে দুধ টা নিজেই খেয়ে নিতে শুরু করল
মেঘলাঃ গুড বয়…খাও খাও
আকাশ আচমকা মেঘলার ঠোঁটে ঠোঁট মিশয়ে দিয়ে মেঘলাকে নিজের সাথে চেপে ধরল তারপর নিজের মুখে নিয়ে দুধটুকু মেঘলার মুখে চালান করে দিল।
মেঘলা এমব কান্ডের জন্য প্রস্তুত ছিল না। দুধটুকু খাওয়ার আগ পর্যন্ত মেঘলাকে আকাশ একটু নড়তেও দেয় নি।
মেঘলার দুধ খাওয়া হলে আকাশ মেঘলা কে ছাড়ল।
মেঘলাঃ কি করলি এটা…??
আকাশঃ আবার তুই..??
মেঘলাঃ কি করলেন
আকাশঃ বলেছিলাম না মানুষ চেষ্টা করলে সব পারে দেখো কত সুন্দর খেয়ে নিলে কই বমি ত করছো না।
মেঘলাঃ তাই বলে এভাবে
আকাশঃ কি করব বলো ভালভাবে বললে তুমি ত কথা শুনো না। গ্লাসের দুধ টা লক্ষি মেয়ের মত খেয়ে শুয়ে পড়ো না হলে সবটা দুধ এভসবেই খাওয়াব তারপর সেদিন যা করেছিলাম আবার সেসব করে ঘুম পাড়াব।
মেঘলাঃ ছি কি অসভ্য আপনি
আকাশ আচ্ছা তুমি যখন চাচ্ছ কি আর করা থাকো দরজাটা লক করে আসি।
আকাশ দরজার দিকে পা বাড়াতেই মেঘলস ডকডক করে দুধ খেয়ে শুয়ে চোখ বন্ধ করে নিল
আকাশঃ পাগলি একটা…
আকাশ জানলার পর্দা ভেজিয়ে দিয়ে মেঘলার পাশে শুয়ে মেঘলার মাথায় হাত বুলাতে শুরু করল। কিছুক্ষনের মধ্যেই মেঘলা ঘুমিয়ে গেল।
সন্ধ্যা ৭ টা মেঘলার ঘুম ভাঙল।উঠে দেখল আকাশ বেলকনিতে বসে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে।
মেঘলা কৌতুহল নিয়ে এগিয়ে গেল।
মেঘলাঃ ওয়াও আকাশে কি সুন্দর চাঁদ উঠেছে আকাশ কি সেটাই দেখছে? কিন্তু ওর তো চাঁদ কখনই ভাল লাগত না সবসময় বলত ওর মেঘ ভাল লাগে চাঁদ না তাহলে আজ হঠাৎ কি হল..?? মেঘকা সমীকরন মিলাতে না পেরে আকাশের পাশে গিয়ে বসল।
মেঘলাঃ বাহ কি সুন্দর চাঁদ উঠেছে…
আকাশ মেঘলার কথা শুনে একটু চমকে উঠল যেনো তার ধ্যান ভাঙলো।
আকাশ শান্ত গলায় বলল, উঠে পড়েছো..?? এখন কেমন লাগছে?
মেঘলাঃ আমি ভাল আছি আপনি কি করছেন চাঁদ দেখছেন বুঝি?
আকাশঃ না….
মেঘলাঃ তাহলে…??
আকাশঃ ভাবছিলাম আকাশের বুকে চাঁদের প্রয়োজনীয়তা বেশি নাকি মেঘের?
মেঘলাঃ মানে.. কিছু কি হয়েছে? আপনার কি মন খারাপ ?
আকাশঃ জানি না আচ্ছা তোমার কি মনে হয়? ওই আকাশটার চাঁদকে পেয়ে মন ভাল নাকি খারাপ?
মেঘলাঃ অবশ্যই ভাল… দেখুন চাঁদ আকাশের সব অন্ধকার মুছে দিয়ে পৃথিবীকেও আলকিত করেছে তারপরেও কি মন খারাপ থাকতে পারে?
আকাশঃ আমিও সেটাই ভাবছি কিন্তু আকাশে কখনো মনে হচ্ছে তাকে মেঘে ঢাকা থাকতেই বেশি মানায় আবার কখনো চাঁদকে কাছে পাওয়ার খুব লোভ হচ্ছে তার।
এখন তার কি করা উচিত? আচ্ছা তুমি কি বলতে পারো নিয়ম টা এমন কেন? চাঁদ আর মেঘ কেন একসাথে
আকাশের বুকে থাকতে পারে না?
মেঘলাঃ কিসব উদ্ভট কথা বলছিস বুঝতেই পারছি না।
আকাশঃ কিছু না বাদ দাও চলো নিচে যাই আজ আমি রান্না করব।
মেঘলাঃ হটাৎ রান্না করবেন কেন?
আকাশঃ তোমাকে নিজের হাতে খাওয়াব।
মেঘলা একটু হেসে বলল আপনি যান আমি আসছি।
আকাশ চলে গেল মেঘলা যেতে গিয়েও আকাশের চাঁদের দিকে ফিরে তাকাল।
মেঘলাঃ আকাশের কথাগুলি শুনে আমার এত খারাপ লাগছে কেন? কেন মনে হচ্ছে ও আমাকেই কথাগুলি বলেছে…?? আকাশ কি বুঝাল?
তারমানে কি ওর জীবনে কেউ এসেছে যাকে পেতে আমাকে হারাতে হবে? কিন্তু কে সে…?? সামিরা নাকি অন্য কেউ?সামিরার সাথে কি ওর এমন কোন ঘটনা আছে যা সামনে আসলে আমি ওকে ছেড়ে দিব? বা সামিরা কি ওকে কোনোভাবে ব্লেকমেইল করছে? যেমন টা বড় মা আমাকে করেছিল?
না না এ হতে পারে না আমি তোকে ছাড়তে পারব না ভাইয়া, তুই শুধুই আমার আর কারো না । জীবন দিয়ে হলেও আমি তোকে আগলে রাখব…
।
।
।
চলবে..!!