#ভিলেন
#পার্টঃ৭২
#লিখনীঃ #মনা
নাবিল মেঘলাকে নিয়ে বেরিয়ে পড়ল আকাশ নিজের কাজে চলে গেল।
নাবিল মেঘলাকে নিয়ে বাসায় পৌঁছে দিয়ে বলল।
নাবিলঃ ভিতরে যা আমার একটু কাজ আছে বাইরে যাচ্ছি।
মেঘলা ভিতরে যেতেই নাবিলের মা ছুটে আসলেন।
ছোট মাঃ এই তোর আসার সময় হল কতদিন হয়ে গেল আমাদের কথা বুঝি একবারো মনে পড়ে না?
মেঘলাঃ পড়ে গো পড়ে কিন্তু ওই জল্লাদ টাই ত আসতে দেয় না।
ছোট মাঃ আকাশটা খুব বাড় বেড়েছে এবার আসুক একেবারে কান মূলে দিব। তোকে আগে আর যেতে দিব না এবার থেকে এখানেই থাকবি বুঝেছিস?
মেঘলাঃ আমিও তাই চাই।
ছোট মাঃ যা ফ্রেশ হয়ে আয় বাসায় অনেক মেহমান এসেছে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিব।
মেঘলাঃ পরিচয় কিসের?
ছোট মাঃ ওমা তুই ত এখন আর আগের মেঘলা নেই তুই এখন এই বাড়ির একমাত্র বউ।
মেঘলাঃ এই চুপ চুপ ছোট মা কি বলছো এসব। বড় মা শুনলে আমাকে মেরে ফেলবে।যতদিন না বড় মা বড় বাবা আমাদের সম্পর্ক মেনে নিচ্ছে ততদিন এসব কাউকে বলো না।
ছোট মাঃ কত যে ঢং তোরা পারিস বুঝি না বাপু যা যা ফ্রেশ হয়ে আয় খাবার দিচ্ছি।
মেঘলা নিজের ঘরে ভিয়ে ব্যাগ রেখেই নেহার ঘরে গেল।
নেহা মিলি আরো কিছু মেয়ে বসে আছে।
মেঘলাঃ আপু আসব…??
নেহাঃ এতক্ষনে আসার সময় হল তোর..?? এদিকে আয় তাড়াতাড়ি।
মেঘলা গিয়ে সবার সাথে বসল।
মেঘলাঃ কতদিন থেকে সম্পর্ক হুম..?? আমাদের তো কিছুই বললে না ব্যাপার কি?
নেহা লজ্জায় রাঙ্গা হয়ে বলল কি যে বলিস না এসব কি ছোট বোনদের বলা যায় নাকি।
মিলি মাঝখান থেকে বলে উঠল নেহার কথা ছাড় আগে তুই বল যার সাথে সারাজীবন ঝগড়া করলি তার সাথে বাসর করে ফেললি? ভাইয়া স্বামী হিসেবে কেমন রে..?? এখনো কি তোর সাথে আগের মতই ঝগড়া করে..??
মেঘলাঃ আর স্বামী ওর মত জল্লাদ পৃথিবীতে ২ টা আছে নাকি…?? আর কিসের বাসর আমরা এখনো আগের মতই আছি আমাকে শাস্তি দিবে তাই এই স্বামী স্ত্রীর সিল মোহর টা লাগিয়ে দিয়েছে আর কিছু না।
মিলিঃ যাই বলিস ভাইয়া কিন্তু তোকে ভালবাসে।
মেঘলাঃ আমার কথা বাদ দাও তো আপুকে কখন দেখতে আসবে তাই বলো।
নেহাঃ কাল আসবে…
মেঘলাঃ আমার তো ভেবেই খুশি খুশি লাগছে আপুর বিয়েতে অনেক মজা হবে।
মেঘলা কথা বলছে তখন পিছন থেকে আকাশ এসে হাজির হল।
আকাশঃ আসতে না আসতেই উশৃংখলতা শুরু হয়ে গিয়েছে…??
মেঘলা অবাক হয়ে আকাশের দিকে তাকাল।
আকাশঃ এখনী নিজের রুমে যা… এত লোকজনের ভীরে আর কখনো যেন না দেখি।
মেঘলাঃ এই যে শয়তানের নাম নিতে না নিতেই শয়তান এসে হাজির।
আকাশঃ কি বললি…??
নেহাঃ আহ ভাইয়া বকা দিস না প্লিজ।কতদিন পর আসল।
মেঘলাঃ ছাড়ো তো ওর বকার ধার কে ধারে?ওর যা মন চায় বলতে থাকুক কান দিও না।
আকাশঃ তবে রে….
মেঘলাঃ কি হ্যাংলা ছেলেরে বাবা… এতগুলা মেয়ের মাঝে চলে এসেছে লজ্জা বলতে কিছু নেই।যা তো এখান থেকে।
আকাশঃ এভাবে তোর শিক্ষা হবে না দাঁড়া মজা দেখাচ্ছি বলেই আকাশ মেঘলাকে কোলে নিয়ে নিল।
মেঘলাঃ তুই একটা রামছাগল,গুইশাপের বাচ্চা ছাড় বলছি।সবসময় জোরাজোরি ভাল লাগে না কতদিন পর আসলাম একটু কথা বলতে দিচ্ছিস না।কি সমস্যা তোর..??
নেহাঃ এরা কোনদিন ও বদলাবে না… কি অদ্ভুত ভালবাসা ওদের সারাদিন ঝগড়া করেই কাটিয়ে দেয়।
আকাশ মেঘলাকে নিয়ে যেতে যেতে বলল এখন কি কথা বলার সময়? এখন ওষুধ খেয়ে সোজা ঘুমাবি রুটিনের একটু উলট পাল্টা হলে তোকে আমি টুকরা টুকরা করে কাটব।
মেঘলাঃ কিসের রুটিন হে? বিয়ে বাড়িতে এসেছি কি তোর এই বোরিং রুটিন মানার জন্য নাকি?
আকাশঃ তাহলে চল এখনী বাসায় ফিরে যাই…
মেঘলাঃ এই না না রুটিন মানব।
নাবিল ভাইয়া আসুক তারপর তোর রুটিনের গোষ্ঠীর ষষ্টি পূজা করব(মনে মনে)
আকাশঃ বিড়বিড় করে কি বলছিস?
মেঘলাঃ ক ক কই কিছু নাতো…
আকাশ মেঘলাকে কোল থেকে নামিয়ে বলল মা বাবার সাথে দেখা করেছিস?
মেঘলাঃ না…
আকাশঃ দেখা করবি চল।
মেঘলাঃ না যাব না আমাকে দেখলে হাজার টা কথা শুনাবে…
আকাশঃ সেটা আমি বুঝব চল।বলে মেঘলাকে নিয়ে আকাশ তার মায়ের ঘরে গেল।
আকাশঃ মা মা ও মা কোথায় গেলে..??
আকাশের মা মুখ কালো করে বলল যাক তোমার আসার সময় হল তাহলে…
আকাশ তার মায়ের গলা জরিয়ে বলল উফফ মা তুমি এমন রাগ করে থাকলে আমার খারাপ লাগে বুঝনা? প্লিজ রাগ করে থেকো না।যা হবার তাত হয়েই গিয়েছে এবার এই অধম ছেলেটাকে একটু ক্ষমা করে দাও প্লিজ প্লিজ প্লিজ..
আকাশের মাঃ হয়েছে আর ভাব করতে হবে না।ছাড়..
আকাশঃ আগে বলো মাফ করেছো…?? আমি জানি এভাবে বিয়ে করাটা আমার উচিত হয় নি কিন্তু সব কিছু হাতের বাইরে চলে গিয়েছিল তাই আর কি… প্লিজ একটু মানিয়ে নাও।
মেঘলা মা ছেলের ভাব দেখে মুখ গোমরা করে দূরে দাড়িয়ে আছে। আকাশের বাবাও ঘরে আছে…
আকাশঃ তুমি ক্ষমা না করলে এভাবেই জড়িয়ে ধরে থাকব তোমাকে।
আকাশের মাঃ আচ্ছা যা দিলাম এমন ভাবে কথা বলবে মাফ না করে কোন উপায় আছে নাকি..??
আকাশঃ আমার লক্ষি মা… you are thr great mother in the world.এখন এটাকেও একটু ক্ষমা করে দাও দেখি,বুঝই তো ছেলে এখন আর একা নেই ক্ষমা করলে ২ টাকেই করতে হবে শাস্তি দিলে ২ টাকেই দিতে হবে। বলে আকাশ মেঘলার দিকে তাকিয়ে বলল,
কিরে এভাবে দাঁড়িয়ে আছিস কেন? মা বাবাকে সালাম কর বিয়ের পর প্রথমবার শ্বশুরবাড়ি আসলি।
মেঘলা কিছু বলল না।
আকাশঃ কি হল কথা কানে যায় নি..??
মেঘলা গিয়ে আকাশের বাবাকে সালাম করল।
আকাশের বাবা মুখ ঘুরিয়ে বলল থাক থাক লাগবে না..
আকাশ এবার তার বাবার কাছে গেল,
আকাশঃ তোর কপালটাই খারাপ রে মেঘলা বিয়ের পর সবাই বাবা মা পায় তোর কপালে তা হল না।
অকালে মা কে হারালি বাবাটা তো আস্ত একটা জল্লাদ জোর করে মেয়ের বিয়ে দিয়ে দেয়। আমি না থাকলে এতদিনে তো তোর কিডনী চোখ সব বিক্রি হয়ে যেত। তোর বাবার জন্যই মনি কে এত তাড়াতাড়ি চলে যেতে হল
আজ যদি মনি বেঁচে থাকত একাই সব সামলে নিত তোর বিয়ে আমি ছাড়া অন্য কারো সাথে হতেই দিত না তাহলে আর বাবাও আজ তোর দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিত না।
তোর হারামি বাবা সব কিছুর জন্য দায়ী তোর বাবার জন্য মনিকে সবাই ভুল বুঝল এখন তোকেও বুঝছে সবাই ভাবছে তুই ইচ্ছে করে বিয়ে করেছিলি।
আকাশের বাবাঃ কি বলছিস ওর বাবা মেঘলাকে জোর করে বিয়ে দিয়েছিল..??
আকাশঃতাহলে আর কি বলছি, বিয়ে দিয়েছে তাও ওর সৎ মার ভাইয়ের সাথে আসলে অস্ট্রেলিয়ায় নিয়ে মেঘলাকে বেঁচে দিতে চেয়েছিল ।
তুমি যানো ওর বাবা মনিকে ভয় দেখিয়ে আমাদের কাছ থেকে সম্পত্তির ভাগ নিয়ে নিয়েছিল। কি জঘন্য লোক ভাবো তাহলে নিজের মেয়েকে বেঁচে দেয়..
মেঘলাঃ এই আকাশ টা কিসব উল্টা পাল্টা বলছে আমি নিজেই তো বিয়ে করেছিলাম মিথ্যা কেন বলছে
(মনে মনে)
আকাশঃ যানো বাবা মেঘলাটাকে কি মার টাই না মেরেছে যানো..?? ও ত শুধু আকাশ আকাশ করছিল। বিয়ের পরেও পিছু ছাড়ে নি এখনো মেঘলাকে নিয়ে যেতে চায়।বুঝই ত যুবতী মেয়ে বেঁচে দিলে ভাল টাকা পাবে
আকাশের বাবাঃ কি ওই হারামজাদার এত সাহস বোনটাকে শেষ করে শান্তি হয় নি এখন আমার ছেলের বউ এর দিকে নজর দিয়েছে?আমি তো ওকে মেরেই ফেলব।
আকাশঃ তা নাহয় পরে মেরো আগে নিজের দায়িত্ব পালন করো।
আকাশের বাবাঃ কিসের দায়িত্ব?
আকাশঃ প্রথমবার বউ এর মুখ দেখছো তাও খালি হাতে..?? তাত হবে না জলদি জলদি বকশিস বের করো…
মেঘলাঃ আহ কি হচ্ছে টা কি একটু চুপ করবি? কখন থেকে বকবক করেই যাচ্ছিস…
আকাশের বাবাঃ ভুল ত কিছু বলে নি। আয় দেখি এদিকে আয়। বউ মাকে ত গিফট দিয়েই দেখতে হয় বলে নিজের গলার চেইন খুলে মেঘলার গলায় পড়িয়ে দিল।
মেঘলা অবাক হল..
আকাশের মাঃ কি করছো..?? তুমি ওকে মেনে নিচ্ছো?
আকাশের বাবা মেঘলাকে জড়িয়ে ধরে বলল আজ তোর মা বেঁচে থাকলে কত খুশিই না হত। তোর বিয়ে নিয়ে কত স্বপ্ন দেখেছিল বেচারি।
বেঁচে থাকতে বুঝি নি বোনটা আমার কত কষ্টে ছিল। তোর বাবার চাপে পড়েই ও আমাদের সাথে এমন করেছিল এখন মনে হলে বুকটা ফেটে যায়।
মা রে তুই অনেক পাগলামি করেছিস আর এমন করিস না কেমন? তুই এখন এ বাড়ির বউ কথাটা মাথায় রাখিস।আমরা তোকে আগলে রাখব।
মেঘলাঃ বড় বাবা…!!
আকাশের বাবাঃ কাঁদিস না মা এই দেখ নতুন করে বাবা মা পেয়েছিস আর কি চাই কাঁদিস না। যা বড় মাকে সালাম কর।
মেঘলা গিয়ে আকাশের মাকে সালাম করল।
সালাম করা শেষ হতেই আকাশ বলল,
আকাশঃ চল চল এখন অনেক কাজ বাকি বলেই মেঘলাকে নিয়ে বেরিয়ে গেল।
আকাশের মাঃ কি করলে এটা তুমি মেঘলাকে মেনে নিলে..??
আকাশের বাবাঃ মেনে না নেয়ার কি আছে? মা মরা মেয়েটাকে বিক্রি করে দিতে দিব নাকি?আমার মরা বোনের শেষ আমানত রক্ষা করা আমার দায়িত্ব আজ আকাশ আমার চোখ খুলে দিয়েছে এতদিন ত মেঘলার মা কেই দোষারোপ করে যাচ্ছিলাম।
।
।
।
মেঘলাঃ এই তুই এসব কি বললি ওখানে?
আকাশঃ তো কি করতাম সারাজীবন মাবাবা আর তুই প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে থাকতি আর আমি ২ দলের টানাটানিতে শেষ হয়ে যেতাম? আমি জানতাম বাবাকে মনির কথা বললেই সব রাগ ভুলে যাবে আফটার অল মনিকে বাবা অনেক ভালবাসে।
মেঘলাঃ কি বুদ্ধি বাবা….আচ্চগা বড় বাবা নাহয় মার জন্য মেনে নিল কিন্তু তোর কি মনে হয় বড় মা আমাকে মেনে নিবে?
আকাশঃ সহজে না নিলে তোর মার মন জয় করতে হবে…
মেঘলাঃ মানে…??
আকাশঃ আমার পরিবারের সবার মন জয় করে চলা তোর প্রথম দায়িত্ব। মা রাগ করে এমন কোনো কাজ তুই করবি না।মা যা যা চায় সব করবি মানুষ পারে না এমন কিছু আছে নাকি? তোকে ভালবাসি জন্য বাবা মাকে ভুলে তোর আঁচলে মুখ লুকাব সেই ধরনের ছেলে আমি নই।আমি আমার মা বাবাকে খুশি দেখতে চাই বুঝেছিস? আর আমি এটাও জানি আজ হোক বা কাল মা তোকে মেনে নিবে।
মেঘলাঃ নিবে না…
আকাশঃ সে পড়ে দেখা যাবে এখন এসব ছাড় চল ঘরে চল ওষুধ খাবার সময় হয়ে গিয়েছে। আচ্ছা নাবিল কে দেখতে পাচ্ছি না কোথায় ও..??
মেঘলাঃ বাইরে গিয়েছে বলল কাজ আছে…??কেন?
আকাশঃ এমনি চল।ঘরে চল বলে আকাশ মেঘলার ঘরে চলে গেল।
এদিকে নাবিল ফিরে আসল।
নাবিল বাসায় এসেই তার মাকে প্রশ্ন করল
নাবিলঃ মা আকাশ এসেছে..??
নাবিলের মাঃ হ্যা এসেছে তো ঘরে গেল।
নাবিলঃ আচ্ছা আসলে একা আর সামলে উঠতে পারছি না এত তাড়াতাড়ি সব ম্যানেজ করা কষ্টকর। পাত্র পক্ষ ফোন করেছিল বলল কাল দুপুরে ওরা আসবে…
এনগেইজমেন্ট এর সব ব্যাবস্থা যেন করে রাখি। আর সন্ধ্যার দিকে এনগেইজমেন্টের জন্য শপিং করতে যাবে আমরাও যেন যাই।নেহাকে নিতে গাড়ি পাঠাবে।
নাবিলের মাঃ এ আবার কেমন কথা বউ নিজে যাবে শপিং করতে…??
নাবিলঃ হ্যা অবশ্যই বিয়েটা ওর তাই ওর পছন্দেই সব কিনা উচিত আমি পারমিশন দিয়ে দিয়েছি।
নাবিলের মাঃ তোরা বেশি আধুনিক হয়ে গিয়েছিস এ আবার কেমন কথা লোকে কি বলবে? বিয়ের আগেই জামাইয়ের সাথে মেয়েকে পাঠিয়ে দিয়েছি।
নাবিলঃ উফফ মা ছেলে একা আসবে না তার ভাই বোনদের নিয়ে আসবে নেহার সাথেও মিলি মেঘলা সহ আরো যারা আছে যাবে সবাই যাবে।
নাবিলের মাঃ না বাবা না আমি বাড়ির মেয়েদের এভাবে পাঠাব না।
নাবিল যখন কথা বলছে তখন আকাশ আর মেঘলা সেখানে আসল।এসেই আকাশ বলল,
আকাশঃ বেশ ত পাঠিও না… যেতে হবে না ওদের
নাবিলের মাঃ এই তো আকাশ বুঝাত নাবিলকে কিসব বলছে নেহাকে নাকি শপিং এ পাঠাবে।
আকাশঃ আরে না না বিয়ের আগে এসব একদম হবে না নাবিল বল্লেই হবে নাকি? নেহা যাচ্ছে না এটাই ফাইনাল।
কথাটা শুনে নেহার মন খারাপ হয়ে গেল…
নাবিলঃ কিন্তু আমি ত কথা দিয়ে দিয়েছি…
আকাশঃ মানা করে দিবি হয়ে গেল।
নাবিলঃ তুই ও কি এখন বেকডেটেড হয়ে গেলি নাকি কোথায় মাকে বুঝাবি তা না…
নাবিলের মাঃ আকাশ ত তোর মত পাগল না।
আকাশঃ ছোট মা কিছু খাবার দাও ত মেঘলার ক্ষুধা পেয়েছে বলছিল।
নাবিলের মাঃ আমি নিয়ে আসছি।
নাবিলের মা চলে গেলেন…
নাবিলঃ কি করলি এটা .?
আকাশঃ তুই যে কবে থেকে বোকা হলি বুঝলাম না নাবিল।
শালা বাড়ি ভর্তি লোকজনের সামনে বলছিস নেহা এনগেইজমেন্ট এর আগে ছেলের সাথে ঘুরতে যাবে। কেন রে সন্ধ্যায় আমি আর তুই যদি বলি নেহার জন্য শপিং করতে যাব। কেউ আপত্তি করবে?তখন গিয়ে ওদের সাথে মিট করে নিব সমস্যা কোথায়? বেশ ছোট মারো আপত্তি থাকল না নেহারো কাজ হয়ে গেল।
নাবিলঃ এটাত আগে ভাবি নি
আকাশঃ হুম মায়ের সাথে তর্ক করা ভদ্র ছেলেদের কাজ না বুঝেছিস মা যা করে সন্তানের ভালর জন্যই করে।
আকাশের কথা শুনে মনে মনে ভাবছে,
মেঘলাঃ তারমামে বড় মার কথা আমি যাই বলি না কেন আকাশ বিশ্বাস করবে না।বড় মা
আকাশঃ কিরে কি ভাবছিস যা খেয়ে নে…
নাবিলঃ তুই ও খেয়ে নে আমি যাই ফ্রেশ হয়ে আসি।
আকাশঃ হুম হুম তাড়াতাড়ি যা…
নাবিল শার্ট খুলতে খুলতে নিজের ঘরে ঢুকল।
ঘরে ঢুকেই,
নাবিলঃ আমি কি ভুল করে ঢুকে পড়লাম…?? আজব কই না তো এটা তো আমার বিছানাই জামা কাপড়ো আমারেই কিন্তু এটা কে…?? চুল দেখে তো মনে হচ্ছে কোন মেয়ে জাতীয় প্রাণী কিন্তু আমার রুমে কেন?তাও আমার বিছানায়,?
নাবিলঃ এই যে শুনছেন..?? কে আপনি এখানে কি করছেন গেষ্টদের জন্য আলাদা রুম আছে এটা আমার রুম প্লিজ এখান থেকে যান…
–উফফ একসাথে এত কথা কোন সুস্হ মানুষ বলে নাকি বলতে বলতে মেয়েটি নাবিলের দিকে ঘুরে তাকিয়েই চিৎকার দিল
সাথে সাথে নাবিলো চিৎকার করলো
নাবিলঃ আ আ আ….
মেয়েটি তাড়া এসে নাবিলের মুখ চেপে ধরল।
– তাড়াতাড়ি শার্ট পড়ুন না হলে সবাই এসে খারাপ ভাব্বে..
নাবিল মেয়েটিকে ছাড়িয়ে দিল বলল
– রাখো তোমার খারাপ ভাবা আগে বলো তুমি এখানে কিভাবে আসলে..??
নাবিলের চিৎকার শুনে বাসার সবাই ছুটে আসল এসে দেখল নাবিল খালি গায়ে নিচে দাঁড়িয়ে আছে আর একটি মেয়ে বিছানায় দাঁড়িয়ে নাবিল কে ধরে রেখেছে।
আকাশ/মেঘলা/নেহা/মিলিঃ😳😳😳😳
মিলিঃ কি আশ্চর্য এই মেয়েটা কে ভাইয়া?আর তোরা এসব কি করছিস..??
নাবিলঃ এই মেয়ে ছাড়ো বলছি… আজব আমি কি করে বলব কে এটা
– ওমা এসব আপনি কি বলছেন আপনি আমাকে চিনতে পারছেন না? আমি সামিরা সেই যে স্কুলে মনে নেই..??
নাবিলঃ তুমাকে আবার ভুলা যায় (মনে মনে)
সামিরাঃ কি হলো বলুন চিনতে পারছেন না? বলে নাবিল কে ঝাঁকি দিল।
নাবিলঃ হ্যা হ্যা চিনেছি এই মেয়ে তুমি কিভাবে এখানে আসলে হ্যা আর এমন হুটহাট গায়ে হাত দিবে না বল্লাম।
আকাশঃ আহ গেষ্টের সাথে কেউ এমন আচারন করে ওকে আমি নিয়ে এসেছি… তোর হবু ভাবী ও…
মেঘলা/নাবিলঃ মানে…??
আকাশঃ সব মানে কি বলে বুঝানো যায় নাকি?
মেঘলা আকাশের কলার টেনে বলল কি বললি তুই?
আকাশঃ বল্লাম ওকে আমি বিয়ে করব তুই ত বলেছিলি যেন ওর কাছে চলে যাই…
মেঘলাঃ আমি এখন কেঁদে দিব..
আকাশঃ কেনো গো বেবি তুমি কি তোমার সাথে আমাকে স্বামী সলুভ কোনো আচারন করতে দাও? আমি কি এভাবে সারাজীবন কাটাব?
মেঘলাঃ আমি তোকে দেখে নিব।
বলে চলে গেল।
নাবিলঃ আচ্ছা বিয়ে করবি বুঝলাম কিন্তু আমার ঘরে কেন?
সামিরাঃ আমার ইচ্ছে হয়েছে তাই আমি এই ঘরে থাকব তাই না আকাশ বেবি…??
আকাশঃ হুম একদম ১০০ বার থাকবে পুরো বাসাটাই তো তোমার।
নাবিলঃ জ্বি না এসব এখানে চলবে না তুমি এখনী ব্যাগ পেট্টা নিয়ে এখান থেকে বের হবে।
আকাশঃ না ও কোথাও যাবে না এই ঘরেই থাকবে…
নাবিলঃ আকাশ আমার মাথা কিন্তু গরম হয়ে যাচ্ছে।
সামিরাঃ দেখি কতটা গরম হয়েছে বলে হাত বাড়াল
নাবিলঃ এই এই না… আবার গায়ে হাত দিচ্ছো কি আজব মেয়ে রে বাবা এত বছরে এক ফোঁটাও বদলায় নি।
সামিরাঃ আমি কি গিরগিটি নাকি যে বদলাব?
নাবিলঃ এই আকাশের বাচ্চা তোর বউ না কি যাই হোক এটাকে নিয়ে এখনী বিদায় হ।
সামিরাঃ বল্লাম না আমি যাব না।
আকাশঃ ঠিক ও যাবে না…
নাবিলঃ তো আমি কোথায় থাকব।
সামিরাঃ এখানেই থাকতে পারেন আমি কিছু মনে করব না আকাশও মনে করবে না তাই না বেবি?
আকাশঃ ভাবী দেবরের সাথে থাকবে আমি কেন মাইন্ড করব? ভাবী মানেই সবার আগে দেবরের দাবী।
নাবিলঃ মাফ চাই এমন ভাবি আমি চাই না…
আকাশঃ তাহলে কি এমন বউ চাস?
নাবিলঃ কি….??
আকাশঃ আমি ত কিছু বলি নি তুই বললি
নেহাঃ এসব কি হচ্ছে কিছুই ত বুঝতে পারছি না. মেঘলা থাকতে তুমি আবার বিয়ে করবে? তাও আবার তোমার হবু বউ ভাইয়ার সাথে থাকবে?
আকাশঃ আজব তো বড়দের কথার মধ্যে তোরা কি করছিস যা এখান থেকে।
নাবিলঃ আকাশ আমি খুব রেগে যাওয়ার আগে এসব বন্ধ কর।
আকাশঃ এখানে কি সিনেমা হচ্ছে নাকি বন্ধ করব?
যা হচ্ছে লাইভ। হয় ভাবীর সাথে থাকো না হয় নিজের বাসায় রোহিঙ্গার মত ঘুরতে থাকো।
নাবিলঃ দরকার হলে বনবাসে যাব তাও এই মেয়ের সাথে এক ঘরে ত দূর এক বাসাতেও থাকব না।
মা ও বড়মা কোথায় তুমরা দেখে যাও তোমাদের আদরের আকাশ কি শুরু করেছে…
নাবিল তার মাকে ডাকতে ডাকতে নিচে গেল।
সেখানে মেঘলা গাল ফুলিয়ে বসে আছে।
নাবিলঃ মা তুমি এখনো এখানে দাঁড়িয়ে আছো..?? উপড়ে চলো দেখো আকাশ কি করছে কোথা থেকে একটা মেয়ে নিয়ে এসেছে বলছে নাকি বিয়ে করবে…
নাবিলের মাঃ একটা মেয়ে আবার কেমন কথা ভাবী বলো আমি চিনিতো মেয়েটাকে সামিরা নাম। আমার পছন্দ হয়েছে।
নাবিলঃ এসবের মানে কি..??
ও আবার বিয়ে করবে..?? তাহলে মেঘলার কি হবে..??
আকাশঃ কি আর হবে মেঘলাও থাকবে সামিরাও থাকবে ও ২ টা বিয়ে করতে পারলে আমি পারব না কেন?
মেঘলাঃ এ্যা এ্যা এ্যা…..
নাবিলঃ আরে গাধার বাচ্চা তুই কাঁদছিস কেন গিয়ে চুল ধরে বের করে দে মেয়েটাকে…
নাবিলের মাঃ আহ এসব কেমন কথা…?? মিলি সামিরাকে খাবারটা দিয়ে আয় তো…
নাবিলঃ মা….??
আকাশ আমাকে দাও ছোট মা আমি নিয়ে যাচ্ছি….একসাথে খাব বলে
আকাশ খাবার টা নিয়ে উপড়ে যেতে লাগল
মেঘলা বসে বসে কাঁদছে।
নাবিলঃ দাঁড়া খাওয়াচ্ছি তোদের বলে সেও আকাশের পিছনে ছুটল।
নাবিলের মা মেঘলার কাছে আসলেন।
এসে মেঘলার মাথায় হাত রাখলেন।
মেঘলাঃ লাগবে না ছাড়ো আর সোহাগ দেখাতে হবে না।
নাবিলের মাঃ আমার সাথে রাগ করে কি লাভ আর কেঁদেই বা কি লাভ তারচেয়ে ঠান্ডা মাথায় চিন্তা কর কিভাবে সমস্যার সমাধান করা যায়?
মেঘলাঃ কিভাবে যায়..??
নাবিলের মাঃ মেয়েটার সাথে যদি নাবিলের প্রেম করিয়ে দেয়া যায়….??
মেঘলা সাথে সাথে চোখ মুছে বলল ঠিক বলেছো…এটাত ভাবি নি দাঁড়া আকাশের বাচ্চা তোর বিয়ে শখ আমি মিটাচ্ছি এই মেয়েকে যদি আমি নাবিল ভাইয়ার প্রেমিকা না বানাতে পারি আমার নামও মেঘলা না…
।
।
।
চলবে…!!