#ভিলেন
#পার্টঃঃ৭৭
#লেখনীঃ মনা হোসাইন
রাত প্রায় শেষের দিক সবাই গভীর ঘুমে আছন্ন মেঘলাও ঘুমাচ্ছিল হঠাৎ ঘুম ভেঙে যাওয়ায় চোখ খুলে তাকিয়ে অবাক হল মেঘলা কারন আকাশ তখনো মেঘলার পাশে।
আকাশ বালিশে মাথা ঠেকিয়ে চোখ বন্ধ করে আছে আকাশের মুখে ক্লান্তির ছাপ কিন্তু সে এখনো মেঘলার হাত ধরে আছে।
মেঘলা আস্তে কতে উঠে গেল…
মেঘলাঃ বোকা কোথাকার এখনকার মেহেদী শুকাতে যে সারারাত লাগে না সেটা কি তুই জানিস না? এভাবে ঘুমানোর কোনো মানে হয়? আরে বাবা আমি তো তোকে বাইরে যেতে দিবোনা জন্য বলেছিলাম ঘুমাতে তো নিষেধ করিনি মেহেদী শুকিয়ে গেলে ঘুমিয়ে গেলে পারতি তা না দেখো কিভাবে বসে বসে ঘুমাচ্ছে।
বিড়বিড় করতে করতে মেঘলা আকাশের বালিশ টা নিচু করে আকাশ কে শুয়িয়ে দিল।
মেঘলাঃ সকালে নিশ্চিত ঘাড় ব্যাথা করবে দেখিস।
আকাশ চোখ বন্ধ রেখেই বলে উঠল
– করবে না আমি এই মাত্রই চোখ বন্ধ করেছি বেশিক্ষন এভাবে ছিলাম না।
মেঘলা ভেবেছিল আকাশ ঘুমিয়ে গিয়েছে তাই আকাশ হটাৎ কথা বলায় ভয় পেয়ে কেঁপে উঠল।
সাথে সাথে আকাশ মেঘলাকে টেনে নিজের সাথে জড়িয়ে নিল।
মেঘলাঃ ত ত তুই ঘুমাস নি…??
আকাশঃ না তো মাথাটা ঝিমঝিম করছে তাই চোখটা বন্ধ করেছিম
মেঘলাঃ আমিত ভাবলাম তুই ঘুমিয়ে গিয়েছিস।
আকাশঃ তাই বুঝি..??
মেঘলাঃ নাতো কি? মেহেদী শুকাতে সর্বোচ্চ ২০ মিনিট লাগে জানিস না?
আকাশঃ জানি…
মেঘলাঃ তো ঘুমাস নি কেন..??
আকাশঃ ঘুমানোর পারমিশন ছিল না যে…
মেঘলাঃ মানছি আমি তোকে ঘুমাতে নিষেধ করেছিলাম।কিন্তু তুই ত আমার সব নাবলা কথাই বুঝিস তাহলে এটা বুঝলি না কেন? তুই ঘুমালে কি আমি কিছু বলতাম?
বোকার মত সারারাত জেগে থাকলি।
আকাশঃ ঘুমাতেই পারতাম কিন্তু কখনো কখনো বোকা হওয়াতেও যে বড্ড বেশি তৃপ্তি থাকে তাই আজ বোকা হওয়ার খুব লোভ হয়েছিল।
মেঘলাঃ এত ভালবাসিস কেন আমায়?
আকাশ শান্ত গলায় জবাব দিল এই প্রশ্ন টা নাহয় তুলা থাক অন্য কোনদিন উত্তর দিব কেমন?
মেঘলাঃ শুধু শুধু তোকে এত প্যারা দিলাম সকাল হতে না হতেই আবার কাজে যেতে হবে কেমন অস্বস্তি হচ্ছে।
আকাশঃ ভাবিস না আমার লস হয়েছে আজ রাত জেগেছিলাম বলেই না এত কাহিনি দেখতে পেলাম
মেঘলাঃ কিসের কাহিনী…??
আকাশঃ এই যে তুই ঘুমের মধ্যে হাসিস কাঁদিস আবার প্রেমও করিস।
মেঘলাঃ মানে কি…??
আকাশঃ তুই আজ মোট ৩৩৬ বার আমাকে জড়িয়ে ধরেছিস..আবার বিড়বিড় করে কি যেন বলছিলিও…
তা কি বলছিলিরে মেঘলা।
মেঘলাঃ উম্ ভাইয়া ভাল হচ্ছে না কিন্তু…
আকাশঃ এই উদ্ভট সম্মোধন করাটা কবে যে ছাড়বি তুই।
মেঘলা আকাশকে ছড়িয়ে ধরে বলল কখনো না তুই আমার কিউট ভাইয়া…
আকাশঃ হয়েছে হয়েছে বুঝেছি এবার তো একটু ঘুমাতে দে একটু বাদেই উঠে যেতে হবে…
মেঘলাঃ হুম ঘুমা আমি এবার নিজের রুমে যাই তানহলে সকালে সবাই আমাদের এক ঘরে দেখলে খারাপ ভাব্বে যতই হোক আমাদের বিয়ে সবাইকে জানিয়ে হয় নি।
আকাশ মেঘলাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলল রাখতো তোর বাজে কথা কে কি বলল তাতে আমার বয়ে গেছে।
মেঘলার কোনো কথাই আকাশ শুনল না সে মেঘলাকে জড়িয়ে ঘুমিয়ে গেল।
সকাল হতে না হতেই নাবিলের আগমন ঘটল রুমে।
মেঘলা ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে।
নাবিলঃ তাই তো বলি ভাই আমার আসছি বলে রুমে এসে আর ফিরল না কেন? কি বেহায়া তোরা দরজা খুলেই ঘুমিয়ে পড়েছিস আমি ত ভাবলাম আকাশ একা ঘুমেয়েছে তাই নক না করেই চলে এসেছি।
মেঘলাঃ আমি মরি আমার জ্বালায় আর ইনি এসেছেন কৃর্তন গাইতে…শোন তোর বন্ধুকে আমি আটকাই নি বুঝেছিস?বরং এটাই আমাকে আটকে রেখেছে।
নাবিলঃ ওই আকাশের বাচ্চা উঠ। ইফিয়েট বউয়ের আঁচলে মুখ লুকাতে চলে এসেছিস।
আকাশ ঘুম ঘুম নিয়েই বলে উঠল
এখানে হচ্ছে টা কি বাসায় কি ডাকাত পড়েছে এতো চেঁচামেচি কিসের..??
নাবিলঃইফিয়েট বউয়ের আঁচলে মুখ লুকিয়ে রাখলে বুঝবি কি করে কি হচ্ছে…
আকাশঃ তোরেই বা এত বোঝার কি দরকার যা না সামিরার আঁচলে মুখ লুকা গিয়ে।
নাবিলঃ কি বললি…?? তোর সাহস হয় কি করে আমাকে এসব বলার।
আকাশঃ আমার বউ কে দেখে তোর হিংসা হচ্ছে তাই বল্লাম আরকি..
নাবিলঃ তো সামিরা না আমিরা ওর সাথে আমার কি? ওকে তো তুই বিয়ে করবি…
আকাশঃখেয়ে ত কাজ নেই একটাই সামলাতে পারি না আরো একটা সামিরাকে তোর সাথে নিয়ে দিতেই এনেছিলাম ভেবেছিলাম আমার পাশে দেখে যদি তোর একটু শিক্ষা হয়।
নাবিলঃ তোর এখানে আসাটাই ভুল হয়েছে আমার।
আকাশঃ সে আপনি যেখানেই যান বিয়ে ওই সামিরাকেই করতে হবে।
নাবিলঃ ইফিয়েট মুখ বন্ধ করে আমার সাথে আসুন ছেলের বাড়িতে হলুদ পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
মেঘলা তুই ও উঠে নিচে যা হলুদের গিফট সব ঠিক আছে কিনা দেখ গিয়ে আর তোদের জন্য শপিং ও করা আছে।
মেঘলাঃ তাই নাকি আমি এখনী যাচ্ছি…
আকাশঃ হয়ে গেল আরে আস্তে বাবা তোর শপিং কেউ নিয়ে যাবে সাবধানে যা…
কে শুনে কার কার কথা মেঘলা ত এতক্ষনে নীচ তলায় চলে গিয়েছে।
আকাশ ও উঠে ফ্রেশ হয়ে নিচে নামল হালকা মিষ্টি কালার পাঞ্জাবি পড়েছে সে। ভেজা চুল থেকে ২,১ ফোটা পানি ঝড়ছে চুল ঝাঁকাতে ঝাঁকাতে নিচে নামল আকাশ।
নিচে নামতে না নামতেই মেঘলা এসে হাজির হল। আকাশ মেঘলাকে দেখেও না দেখার ভান করে চলে যাচ্ছিল কিন্তু মেঘলা আকাশকে আটকে দিল।
আকাশঃ আবার কি চাই..??
মেঘলাঃ এখানে বোস…
আকাশঃ সময় নেই বাগানে যাচ্ছি লাইট ফিটিং করতে হবে।
মেঘলাঃ সাথে এটাও দেখাতে হবে আমার চুল কত সিল্কি তাই না?
আকাশঃ মানে কি
মেঘলাঃচুল থেকে পানি পড়ছে দেখতে পাচ্ছিস না? বলেই নিজের ওড়না দিয়ে আকাশের মাথা মুচতে শুরু করল।
ড্রয়িং রুমে বসে থাকা সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে আকাশ নিজেও অবাক হল।
সবাই দেখছে বলে আকাশ বেশ লজ্জা পেল তাই তাড়াতাড়ি করে চলে যেতে চাইল।
নাবিলের মাঃ আকাশ কোথায় যাচ্ছিস খেয়ে যা…
আকাশঃ খিদে নেই ছোট মা পরে খাব বলে চলে গেল।
আকাশ তার কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে বাগানে লাইটিং করছে তারমধ্যে আবারো মেঘলার আগমন ঘটল।
আকাশঃ উফফ মেঘলা এত ছুটাছুটি করছিস কেন এক জায়গায় স্থীর হয়ে থাকতে পারিস না।
মেঘলাঃ চল খেয়ে নিবি চল সবাই খেয়ে নিয়েছে।
আকাশঃ কাজ করছি মেঘলা আমি পরে খাব তুই খেয়ে ওষুধ গুলো খা গিয়ে যা।।
আকাশের বন্ধুঃ আকাশ আমরা সবাই খেয়ে এসেছি যা তুই ও খেয়ে আয়।
আকাশঃ এখন গিয়ে হাত পা ধুয়ে কে খাবে বল তো হাতের কাজ টা শেষ করে গিয়ে খাব।
মেঘলাঃ না তোর এখনী যেতে হবে।
আকাশঃ আহ মেঘলা জ্বালাস ন ত।
মেঘলাঃ বুজেছি নে হা কর আমি খায়িয়ে দিচ্ছি বলে গিয়ে পাশে ব্যাঞ্চ থেকে প্লেট এনে আকাশের মুখে খাবার তুলে দিতে লাগল।
আকাশঃ ঘটনা কি বলতো আজ হটাৎ এত আদর কাহিনী কি…??
মেঘলাঃ ওই যে বলেছিলাম না মনে রাখার জন্যে কিছু ভাল স্মৃতিও তো দরকার…
আকাশঃ ম মানে…
মেঘলাঃ কিছু না তাড়াতাড়ি খা ত আমার অনেক কাজ বাকি বলে আকাশের হাতে পানির গ্লাস ধরিয়ে দিয়ে চলে আসল।
আকাশঃ এক দৃষ্টিতে মেঘলার চলে যাওয়াএ দিকে তাকিয়ে আছে…
আকাশঃ ওর যদি কিছু হয়ে যায় আমি কি নিয়ে বাঁচব..??
।
।
।
চলবে…!!
সকাল ১১ টায় এই পার্ট টা ইডিট করে আর একটু বাড়ানো হবে সবাইকে ২য় বার পড়ার অনুরোধ রইল