মনের_অন্দরমহলে পর্ব ১২

মনের_অন্দরমহলে পর্ব ১২
#আনিশা_সাবিহা

রাত হয়ে এসেছে। চারিদিকে ঝিঁঝি পোকার আওয়াজ বাড়ছে। বেলকনিতে একা দাঁড়িয়ে আছি। সঙ্গে পিহুর ডানা ঝাপটানোর আওয়াজও শুনতে পাচ্ছি। তবে আমার সেদিকে মন নেই। আমি তো ভাবছি ইনজেকশনগুলোর কথা। বিষয়টা ক্লিয়ার না হওয়া পর্যন্ত আমার মন থেকে সংশয় যাবে না। হঠাৎ করেই পেছনে কারো উপস্থিতি উপলব্ধি করলাম আমি। তৎক্ষনাৎ বলে উঠলাম…..
–“আয়াশ?”

–“না ম্যাম আমি। অনেক রাত হয়েছে। খাবেন না? আয়াশ স্যার ডাকলেন আপনাকে।”

ফুলকির কন্ঠে খানিকটা আশাহত হয়ে বললাম…..
–“উনি উঠেছেন ঘুম থেকে?”

–“আয়াশ স্যার ঘুমাচ্ছিলেন?”

–“হ্যাঁ। শেষবার যখন উনার ঘরে গিয়েছিলাম ঘুমোতেই দেখেছি। আচ্ছা ফুলকি একটা কথা বলো তো আমায়।”

–“কি কথা?”
উৎকন্ঠা হয়ে জিজ্ঞেস করে ফুলকি। আমি ওকে প্রশ্ন করি…..
–“আয়াশের কোনো রোগ আছে? আই মিন এমন কোনো রোগ যেটাতে শরীরে ইনজেকশন নিতে হয়?”

–“আমি তো এমন কিছু জানতাম না। তাছাড়া স্যারের কোনো রোগ থাকলে থাকতেও পারে। স্বাভাবিক মানুষ কি ওইরকম আচরণ করে নাকি? নিশ্চয় উনার মানসিক সমস্যা আছে।”

–“তাহলে উনাকে ডক্টর দেখানো হয়নি কেন?” (ভ্রু কুঁচকে)

–“আপনার কি মনে হয়? উনি ডক্টর দেখানোর মানুষ? একবার বড় মালিক ডক্টর দেখানোর প্রসঙ্গ তুলেছিলেন সেদিন যা ঝড় গেল বাড়িতে! আয়াশ স্যার একেবারে যা নয় তাই করেছে বাড়িতে। বড় মালকিন যেহেতু বড় মালিকের মাথায় ডক্টর দেখানোর কথা ঢুকিয়েছিলেন সেকারণে বড় মালকিনের মাথাও ফাটিয়ে দিয়েছিলেন।”

বড্ড উচ্ছ্বাসিত হয়ে বলে ফুলকি। মন থেকে প্রশ্ন গেল না। বরং আরো বেশ কয়েকটি প্রশ্ন তৈরি হলো। মানছি সৎমাকে কেউ মেনে নিতে পারে না। কিন্তু আয়াশ এতোটা ঘৃণা করবে সেটা ধারণার বাইরে। সবটাই কেমন গরমিলে রয়েছে এই বাড়িতে। আয়াশ এমন বাজে আচরণ করে, লইয়ার হয়ে বাজে মানুষের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করে শুধুমাত্র টাকার জন্য অথচ কেউ উনাকে বাঁধা তো দূর উনার সঙ্গে ঠিকঠাক কথাও বলে না যেন। বাড়ির ছেলের সঙ্গে কেউ এমন করে?

ফুলকি চলে গেল আমাকে খাওয়ার কথা বলে। আমি পা বাড়ালাম আয়াশের ঘরের দিকে। দরজা একটু ফাঁক করে কান পেতে দিতেই আয়াশ ব্যস্ত কন্ঠে বলে উঠল…..
–“উঁকিঝুঁকি মারার কোনো দরকার নেই। চলে এসো।”

হকচকিয়ে উঠলাম কন্ঠস্বর শুনে। ছোট ছোট পায়ের ধাপ ফেলে ঘরে প্রবেশ করলাম। ঘর তো নয় যেন একেবারে বরফের দেশ বানিয়ে রেখেছে আয়াশ। এসি মনে হয় ফুল টেম্পারেচারে চালিয়ে রেখে দিয়েছেন। দুইধাপ বাড়াতেই আমার হাত টানতেই ভয় পেয়ে গেলাম। ভাবলাম এই বুঝি পড়ে কোমড়টা ভেঙে গেল। কিন্তু বসে পড়লাম আয়াশের কোলের ওপরে। ভয়ের চোটে খামচে ধরলাম উনার ঘাড়।

–“খামচে মেরে ফেলার প্লান করছো? যাতে মুক্তি পাও?”

–“আপনারা আইনজীবী মানুষেরা এতো ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে বিষয়গুলো নেন কেন বলুন তো! আপনি যত জোরে হাত টান দিলেন ভাবলাম আমি শেষ। তাই অপ্রস্তুত হয়ে হাত দিয়েছি ঘাড়ে।”

–“কি করব? দুনিয়াতে ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে কথা বলার জন্যেও লোক দরকার। সবাই স্ট্রেটকাট কথাবার্তা বললে কি করে হবে? যাই হোক, তুমি যে বলেছিলে আমার হাতে ব্যান্ডেজ করিয়ে দেবে। কিন্তু করলে না কেন? যদি না করতে চাও ইটস ওকে। আমি আশা করেছিলাম তুমি অন্তত আমার একটু হলেও পরোয়া করো। বাট আমি আশাহত হলাম।”

মুখটা আপনাআপনি হা হয়ে গেল আমার। লোকটা কি সত্যি পাগল? না আমি পাগল? ব্যান্ডেজ করার চক্করে কত কান্ড করলেন উনি। যেটা আমার মনে ভীষণভাবে দাগ কেটেছে। আমার ঠোঁটে স্পর্শ পেতেই ধ্যান ভাঙল। আয়াশ আমার হা বন্ধ করে দিয়ে বললেন…..
–“এতো খিদে পেয়েছে যে হাওয়া খাচ্ছো হা করে?”

আমি হতবাক হয়ে বললাম…..
–“আ…আপনার কিছু মনে নেই? সত্যি মনে নেই?”

–“কি মনে থাকার কথা বলছো নিশাপাখি?”

আমার হাতে হাত রেখে বললেন উনি।
–“আমি আপনাকে ব্যান্ডেজ করিয়ে দিতে গিয়েছিলাম। মেডিসিন দিয়ে কাটা জায়গা পরিষ্কার করতেই আপনি বিনাকারণে রেগে গেলেন। আপনি বললেন আমি নাকি আপনাকে ব্যাথা দিয়েছি। খুব রুড বিহেব করলেন আপনি। তারপর এই ঘরে চলে এলেন। এসব কিছুই মনে নেই?”

–“আমি এসব করেছি?”
আমার চেয়ে দ্বিগুন বিস্ময় নিয়ে বললেন আয়াশ।

-হ্যাঁ আপনিই এসব করেছেন। এসবের মাঝে আমার দোষটা কোথায় ছিল বলুন তো? আপনার আবদার মানাই কি আমার দোষ ছিল? আমি কি এটারই প্রাপ্য ছিলাম? আপনার সব জেদ আর আবদার আমায় মানতে হয়েছে। তবুও আপনি সেই রুড বিহেব-ই পুরষ্কার হিসেবে আমায় দেন। কিন্তু কেন?”

আয়াশ চুপ করে রইলেন। আমি জানি উনার কাছে এর কোনো উত্তর নেই। থাকায় কথাও না। আমি উঠে চলে এলাম। লোকটা সত্যিই মনে আঘাত দিয়েই চলেছে। আঘাতপ্রাপ্ত মনটা নাকি উনাকে আবার ভালোবাসবে! এটা মজা ছাড়া কিছুই নয়। হঠাৎ করেই দৃঢ় ইচ্ছে জাগল একটুখানি খোলা বাতাসে শ্বাস নিতে। কিন্তু কি করে নেব? এখানে তো আর সেই সমুদ্র নেই। নেই কোনো গাছপালায় ঘেরা প্রকৃতি। আছে শুধু বিল্ডিং! এই বাড়িতে কোথায় কি তাও জানি না। শুধু চিনি নিজের ঘরটা আর আয়াশের ঘরটা। এতটুকুই যেন আমার সীমানা।

দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে দেয়াল ধরে হাঁটতেই অন্যহাতটা কেউ নিজের হাতে আবদ্ধ করে নিল। আবদ্ধ করা লোকটাকে চিনতে এক মূহুর্তও সময় লাগলো না আমার। আমি কিছু বলার আগেই আয়াশ থমথমে গলায় বলে উঠলেন…..
–“ছাঁদে যাবে? তোমার ভালো লাগবে।”

আমি নিরব হয়ে রইলাম। উনি আবারও বললেন….
–“তোমার তো আবার এমন দমবন্ধকর পরিস্থিতিতে থাকার অভ্যেস নেই। এখানে তেমন পরিবেশও নেই খোলামেলা। ছাঁদে গেলে তাও ঠান্ডা হাওয়া লাগবে।”

চমকে উঠলাম উনার প্রস্তাবে। যেন আমার মনের কথা শুনে নিয়েছেন উনি। আমি আলতো করে মাথা ঝাঁকাতেই আয়াশ আস্তে করে আমায় কোলে তুলে নিলেন। আমি এবার বিরক্ত হয়ে উঠলাম।
–“কথায় কথায় কোলে তোলার কি মানে? আমার দুটো পা আছে। আমি হাঁটতে জানি।”

–“আই নো। বাট আমার তোমার মতো শুঁটকি ওজনের মেয়েকে কোলে তুলতে বেশ লাগে। মনে হয় একটা বাচ্চা কোলে তুলছি।”

বলেই শব্দ করে হেসে উঠলেন উনি। মুখরিত হয়ে উঠল উনার হাসিতে আশেপাশের পরিবেশ। কি সুন্দর সেই শব্দ! এভাবে সারাদিন হাসিখুশি থাকলে কি খুব অন্যায় কিছু হয়ে যাবে? যার হাসির শব্দ এতোটা মুগ্ধকর তার হাসিটা দেখতে কত সুন্দর হতে পারে? আজ দ্বিতীয়বারের মতো বেশ গাঢ় ভাবে চোখের অনুপস্থিতি বেশি অনুভব করলাম। প্রথমবার চোখের অনুপস্থিতি ফিল করেছিলাম যখন মা-বাবা আর পরিবারকে চোখের দেখা দেখতে পারতাম না তখন আর আজ উনার হাসি দেখতে বড়ই ইচ্ছে করছে।

আয়াশ ছাঁদে প্রবেশ করতেই শিরশিরে বাতাস অনুভব করতে পারলাম। আয়াশ এক পর্যায়ে আমায় নামিয়ে দিলেন। তবে আমায় ছাড়লেন না। নিজের সঙ্গে ধরে রেখে বললেন…..
–“সামনে রেলিং এগিয়ো না আর।”

রেলিংটা চেপে ধরে বড় নিশ্বাস নিলাম আমি। আমার পেটে পেলাম আয়াশের ছোঁয়া। আমার কাঁধে রাখলেন উনি নিজের থুঁতনি। আমার কানে চুমু দিয়ে চুপ করে রইলেন আগের ন্যায়। আমার সর্বাঙ্গ কাঁপুনি দিয়ে উঠলেও তা বুঝতে দিলাম না। উনার ব্যবহারে আমি আজ সত্যিই হতাশ। কিছুটা রাগও মিশে রয়েছে। সব মিলিয়ে উনার সঙ্গে কথা বলার কোনোরকম ইচ্ছে কাজ করছে না।

–“রাগ করেছো আমার ওপর? আই এম সরি।”

আমি তখনও চুপ। আয়াশ আমার গালে গাল ঠেকাতেই গালে উনার খোঁচা দাঁড়ি লাগল আমার। নরম সুরে বললেন…..
–“দ্বিতীয় বারের মতো তোমায়ই সরি বলছি। তুমি পাত্তায় দিচ্ছো না। দেখো আমি…..”

–“আমি কবে কাকে লাস্ট সরি বলেছি তা আমার মনে নেই। তোমায় দ্বিতীয় বারের মতো সরি বলেছি মানে তুমি এক্সেপ্ট করতেই হবে। এটাই বলবেন তো আপনি?” (কঠোর গলায়)

–“তুমি কি করে জানলে আমি এসব বলব?”

–“আমি এই কয়দিনে আপনাকে চিনে গেছি। তবে শুধু আপনার এই পার্সোনালিটি কেই চিনে নিয়েছি। আপনার মধ্যে যে আরেকটা আপনি লুকিয়ে রাখেন না? সেটাকে এখনো আমি চিনতেও পারিনি। কিন্তু সবকিছু কি এতোটাই সোজা? প্রথমে তো আপনি আমার থেকে এই বয়সে মা-বাবা আমার ফ্যামিলি সকলের থেকে দূরে করে দিয়েছেন। আর দূরে থেকে আপনার এসব ব্যবহার সইতে সইতে হাঁপিয়ে উঠেছি আমি।”

–“আমি সত্যিই অনুতপ্ত। ফরগিভ মি নিশাপাখি প্লিজ! সত্যি বলছি আমার মনে নেই তোমার সঙ্গে কখন এসব ব্যবহার করেছি। হয়ত আমার মাথাব্যাথা করছিল। আমার মনে নেই। আমি ইচ্ছে করে তোমায় কষ্ট দিতে পারি বলো? আমি প্রমিস করছি, এরপর থেকে তোমার সঙ্গে এমন করব না। এমন করার সুযোগই আসবে না। আমি টাইমলি ইনজেকশন নেব। তাহলেই সব ঠিকঠাক থাকবে।”

–“ইনজেকশন??”

তপ্ত কন্ঠে বলে উঠলাম আমি। ইনজেকশনের ব্যাপারটা ভুলেই বসেছিলাম। বেশ আগ্রহ নিয়ে প্রশ্ন করলাম…..
–“কিসের ইনজেকশন নেন আপনি? নিজে নিজে কি করে ইনজেকশন নেন?”

আয়াশ যেন আমার কথায় খানিকটা অসন্তুষ্ট হলেন। ভারি গলায় বললেন…..
–“ওসব বুঝবে না। ব্যাস এটা জেনে রাখো ওটা টাইমলি না নিলে আমার মাথাব্যাথা করে খুব। শান্তি পাই না। ডক্টর ওটা আমাকে দিয়েছে।”

–“কোন ডক্টর দিয়েছে? তাও নিজে নিজে পুস করার জন্য?”

–“ওসব জেনে তোমার লাভ নেই। দেখো আকাশে কত সুন্দর চাঁদ উঠেছে। তাঁরা ঝলমল করছে।”

মনটা ভার হয়ে এলো আমার।
–“আমি কি করে দেখব?”

আয়াশ হয়ত নিজের কথায় নিজেই বোকা বনে গেলেন। আমাকে জড়িয়ে ধরে বললেন….
–“তুমি নিজেকে অনুভব করো। তাহলে চাঁদকে অনুভব করতে পারবে। কারণ আমার আকাশের চাঁদ তুমি। ওই চাঁদে তো কলঙ্ক রয়েছে। তোমার মাঝে সেটা নেই। তুমি নিখুঁত।”

–“এসব বলে বুঝি আমার চোখে দেখার প্রসঙ্গ কাটাতে চাইছেন?”

–“চাইছি না কাটাতে। আমি খুব দ্রুত তোমার চোখের অপারেশন নিয়ে কথা বলব ডক্টরের সাথে। একটু কথা বলে রেখেছি অলরেডি। তোমার ওই চোখ রাঙানি আমি ভীষণ মিস করি। যেটা দেখে আমি প্রথমবার ক্ষত-বিক্ষত হয়েছিলাম। যা দেখে মনে দোলা দিয়েছিল।”

আমার কপাল কুঁচকে গেল। চিন্তায় ফেলে দিলেন আয়াশ। উনার সঙ্গে আমার প্রথম দেখা অন্ধ হবার পরেই। এইতো কয়েকদিন হলো আমাদের সাক্ষাৎ। আমার চোখ রাঙানির বিষয়টা মিলাতে পারলাম না।
–“আপনার কথার কিছুই আমি বুঝতে পারছি না।”

–“তা অন্য কোনোদিন জানবে। যেদিন তুমি দৃষ্টি ফিরে পাবে সেদিন। নাউ ইটস টাইম টু সামথিং স্পেশাল।”

আমি কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমার কানের লতিতে ছোট্ট করে চুমু বসিয়ে গলায় মুখ ডুবালেন উনি। আমি অপ্রস্তুত হয়ে পড়লাম। কি পাগলামি করছে লোকটা? আমি সরতে চাইতেই আমার দুই হাত জোরে চেপে ধরলেন উনি।
–“এসব কে….কেমন অসভ্যতা? আ…আমি নিচে যাব।”

–“এই একই কথা না তুতলিয়ে যদি স্ট্রেটকাট বলো আমি সরে যাব।”

অসহায় ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে থাকলাম আমি। নিজেকে শক্ত করে বলার চেষ্টা করলাম…..
–“এসব কেমন অ….অসভ্যতা? আমি নিচে যা….যাব।”
আয়াশ হু হা করে হেসে উঠলেন আমার তোতলানো বলা কথায়। আস্তে আস্তে গভীরতর হতে লাগল উনার স্পর্শ। এক পর্যায়ে নিজ থেকে সরে গিয়ে ক্রুদ্ধ হয়ে বললেন…..
–“হোয়াট দ্যা হেল! কে ওখানে?”

আমিও ছিটকে সরে আসি।
–“কোথায়?”

–“নিচে। কেউ যেন মনে হলো গাছের আড়াল থেকে সরে গেল। যদিও এটা বাড়ির পেছনদিক। তবুও মনে হচ্ছিল যে ছিল আমাদের কেই দেখছিল।”

ঢক গিললাম আমি। কান দিয়ে যেন গরম ধোঁয়া বের হচ্ছে। প্রচন্ড লজ্জা পাচ্ছি। আয়াশ দেখতে যেতে চেয়েও পারলেন না। দেখতে গিয়েও বা কি লাভ। রাতে তো কত মানুষই আনাগোনা করে। তাই আর গেলেন না। আয়াশের সঙ্গে নিচে নেমে এলাম আমি।

পরেরদিন……
আশেপাশে মিডিয়ার লোকজন ছড়িয়ে পড়েছে। এতোটাই ভীড় করে রেখেছে তারা। সেই ভীড় সরিয়ে ঠেলে একগাদা পুলিশ হ্যান্ডকাপ পড়িয়ে ধরে নিয়ে যাচ্ছে দ্যা গ্রেট বিজনেসম্যান রক্তিম বাহাদুরকে। উনার চোখজোড়া রেগে লাল হয়ে গিয়েছে। মানসম্মান আজ ধুলোয় মিশে গিয়েছে।

–“আপনারা দেখতে পাচ্ছেন, বিজনেসম্যান রক্তিম বাহাদুর যে কিনা দয়ালু একজন মানুষ হিসেবে পরিচিত ছিলেন তাকে আজ কোর্টে একজন নারী পাচারকারীর হেড হিসেবে প্রমাণসহ ধরা হয়েছে। আর এই তিক্ত সত্যিটা সবার সামনে এনেছেন দ্যা গ্রেট লইয়ার আয়াশ রায়হান।”

এসব কথাগুলো একাধারে প্রত্যেকটা নিউজ চ্যানেলে ছড়িয়ে পড়ছে দাবানলের মতো। আয়াশ নিজের কালো কোট হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে থেকে সমস্তটা ইনজয় করছে। একসময় আয়াশের কাছে এসে থামে পুলিশের লোকজন। রক্তিম বাহাদুর তাকে দেখে ক্ষেপে ওঠে।
–“আজ তুমি যেটা করলে আয়াশ রায়হান। আমি সারাজীবনেও ভুলব না। আমি তোমায় হায়ার করেছিলাম বিপরীত পক্ষের সঙ্গে জেতার জন্য। কিন্তু তুমি ঠকিয়ে বিপরীত পক্ষের সঙ্গে হাত মিলিয়ে আমার সব ফাঁস করে দিয়ে ঠিক করলে না।”

–“আয়াশ রায়হান খুব ভালো জানে সে ঠিক না ভুল করছে। সে আপনার এডভাইস নেবে না।”

এটিটিউড নিয়ে বলল আয়াশ। রক্তিম বাহাদুর হিসহিসিয়ে বলল…..
–“এর চরম মূল্য তোমায় একদিন দিতেই। তোমায় সর্বহারা করে দেব। মাইন্ড ইট।”

–“অফিসার, আপনার সামনে এই লোক হুমকি দিচ্ছে। আর আপনি দাঁড়িয়ে আছেন?”
রাগ নিয়ে বলল আয়াশ। অফিসার সঙ্গে সঙ্গে রক্তিম বাহাদুরকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যেতে লাগল। বাঁকা হাসি দিল আয়াশ।

চলবে…….

[বি.দ্র. ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here