মানলাম তুমি ভালোবাসোনি
কলমে-মম সাহা
শেষ পর্ব-৫
জীবনে উত্থান পতন থাকবেই। এটা একবার মেনে নিলে, মানিয়ে নিলেই জীবনটা বোধহয় সুন্দর হয়ে উঠে, স্বাভাবিক হয়ে উঠে। কিন্তু আমি বোধহয় পারি নি সেই মেনে নেওয়া কিংবা মানিয়ে নেওয়ার গীতিকাব্য লিখতে। পামেলা মেডামের হাত ধরে খুব আশা নিয়েই ঘর ছেড়ে বেরিয়ে ছিলাম। ভেবেছিলাম কিছু তো গতি হবেই। পামেলা মেডাম আমাকে নিয়ে তার ছোটোখাটো, সুন্দর গাড়িটায় চড়লেন। ড্রাইভারকে বোধহয় আগে থেকেই গন্তব্যের ঠিকানা জানিয়ে ছিলো তাই আমরা উঠতেই মধ্য বয়স্ক সেই ড্রাইভার গাড়ি চালানো শুরু করে দেন। আমার মনে তখন রাজ্যের তোলপাড়। যে জিনিসটা আমার না, সেটাই হারিয়ে ফেলার ভয়ে আমি প্রায় দিশেহারা।
আমি বোধহয় তখন গভীর ধ্যানে মগ্ন। পামেলা মেডাম সচারাচরের মতন গম্ভীর তবে মিষ্টি করে ডাকলেন,
“রজনীগন্ধ্যা।”
আমার ধ্যান ভাঙলো। নিজের নামটাই নিজের কানে ভীষণ শ্রুতিমধুর লাগলো। সবসময় তো কেউ আমার পুরো নামটা এতো আদুরে স্বরে ডাকে না তাই প্রায় ভুলেই বসেছিলাম যে আমারও এত সুন্দর একটা নাম আছে। আমি কিছুটা সময় দিয়ে ডাকের বিপরীতে উত্তর দিলাম,
“হু মেডাম!”
“তুমি তো আমাকে চেনো এক বছরের বেশি হলো। প্রায় অনেকটা দিন তাই না?”
আমি তার প্রশ্নে মাথা নাড়ালাম। নরম কণ্ঠেই জবাব দিলাম,
“হ্যাঁ।”
“আমাকে চেনো অনেক দিন হলো। আমাকে ঠিক কতটুকু জানো?”
ঠিক সেই মুহূর্তে মেডামের প্রশ্নটা আমি বুঝে উঠতে পারলাম না। কপাল কুঁচকে এসেছিল আপনা-আপনি। আমি খানিক ভড়কে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম,
“জি? বুঝিনি।”
মেডাম তখন আমার হাত দু’টো টেনে ধরলেন। মিষ্টি হেসে শুধালেন,
“বলো তো আমার পরিবারে কে কে আছে? আমি কোথায় থাকি?”
মেডামের প্রশ্ন গুলো খুব সহজ সরলই ছিলো তাই না? কিন্তু আমার কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে জটিল প্রশ্ন মনে হয়েছিল। কারণ আমি কখনো আগ বাড়িয়ে পামেলা মেডাম সম্পর্কে জানতেই চাই নি। উত্তর টা দিবো কীভাবে! লজ্জায় তখন আমার মাথাটা কিঞ্চিৎ ঝুঁকে গেলো। তা দেখে অমলিন হাসলেন মানুষটা। আমার মাথায় আদুরে হাত বুলিয়ে দিয়ে বলেছিলেন নিজের জীবনের করুণ গল্প খানা। পামেলা মেডাম গাড়ির কাঁচ ভেদ করে দৃষ্টি জোড়া রাখলেন ছুটন্ত রাস্তার পানে, মলিন কণ্ঠে বললেন,
“তোমাকে একটু গল্প শোনাই চলো। আমি বরাবরই গম্ভীর তবে মানুষ ভেদে তুমুল চঞ্চলও। তোমার মতন আমিও অল্প বয়সে ভীষণ গুরুতর একটা প্রেমে পড়ি। কিন্তু তোমার আর আমার মাঝে একটা পার্থক্য ছিলো। তুমি ভালোবেসেছো এমন মানুষকে, যে জানেও না তুমি তাকে ভালোবাসো আর আমি যাকে ভালোবাসতাম সেও কিন্তু আমায় প্রচন্ড পরিমাণে ভালোবাসতো। আমরা সেকালে ছিলাম সম্ভ্রান্ত ঘরের মেয়ে আর আমার প্রেমিক ছিলো গরীব ঘরের বখাটে। বখাটে বললাম বলে খারাপ ভেবো না। আমার বাবা ডাকতেন আরকি বখাটে বলে। বড়োলোকদের ব্যাপার স্যাপারই একটু অন্যরকম। তাদের কাছে ধনী বাদে বাকি সবাই চোর, ডা কা ত, বখাটে আরও অন্যান্য খেতাব পায়। আমার প্রেমিক কিন্তু বেশ মেধাবী ছাত্র ছিলো। গুছানো তার স্বভাব। কথা বললে মানুষ মুগ্ধ হতে বাধ্য। এমন একটা ছেলেকে আমার বাবা বখাটে ডেকে অজুহাত তৈরী করেছিল কেবল। বখাটেদের কাছে আর যাই হোক, কোনো বাবা তার মেয়ে দিবে না নিশ্চয়! সেজন্যই এ অজুহাত। বাবার তুমুল বারণ অথচ আমি তো উড়ে ছুটে দারুণ প্রেম করেছি। বাবার বারণ মানার মতন লক্ষী মেয়ে আমি কোনো কালেই ছিলাম না। একবার হলো কী জানো? আমি রোড এক্সিডেন্ট করলাম। পেটে এত বাজে ভাবে চোট পেলাম যে সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষমতা হারালাম। আমার ভদ্র বাবার আদর্শ পাত্র’রা তখন আমাকে তো আর বিয়ে করবে না। বাবার মাথায় হাত। আমার মতন দশটা মেয়ে পালার ক্ষমতা আমার বাবার ছিলো কিন্তু বিয়েটাও তো তখন মানুষ জীবনের একটা অপরিহার্য অংশ ভাবতো তাই না? সেই অপরিহার্য অংশে আমি অংশগ্রহণই করতে পারবো না, তা কী মানতে পারে কোনো বাবা-মা? এরপর হাজার লড়াইয়ের পর আমার বাবা পথ না পেয়ে আমার প্রেমিক নামক বখাটের কাছেই মেয়ে দিতে রাজি হলেন। বাবার আর্দশ পাত্ররা খুঁতে ভরা মেয়ে নিবে না কিন্তু বখাটে ছেলেটা শেষ নিঃশ্বাস অব্দি তার প্রেমিকার সাথে থাকবে। আর সেই জন্যই আমার সেই প্রেমিক পুরুষ আমার সাথে ছিলো কিন্তু আমি তখন বেঁকে বসি। বিয়ে আমি করবো না। না, না, না। কখনোই না। নিজের এমন কলঙ্কিত জীবনে কেই-বা চায় ভালো মানুষকে আনতে! অত স্বার্থপর আমি হতে চাচ্ছিলাম না। কিন্তু প্রেমিকরা নাছোড়বান্দা তাদের জাত অনুযায়ী তা-ই আরকি, রাজি হলাম বিয়ের জন্য। ঘরোয়া আয়োজনে ঠিক হলো আমার বিয়েখানা। সব ভালোই ছিলে বুঝলে। আমি ট্রমা থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করলাম। মানুষটা অনেক সাহায্য করলো জানো? এরপর বিয়েটাও হলো সুখী সুখী। ঘরোয়া ভাবে আমার বাড়িতেই বিয়ে হলো। জীবনটা বড্ড সুখের ভাবছো তাই না বলো?”
পামেলা মেডামের কথা আমি বেদবাক্যের মতন শুনলাম কেমন ঘোরে যেন। অতঃপর তার প্রশ্নে ধ্যান ভাঙলো। উপর-নীচ মাথা নাড়িয়ে বললাম,
“সুখই তো। ভালোবাসার মানুষটাকে পেয়েছেন, দুঃখ আর রইলো কই?”
সেদিন আমি খুব বোকার মতন কথা যে বলেছিলাম তা মেডামের অপ্রত্যাশিত হাসি ই বুঝিয়ে দিয়ে ছিলেন। আমি যে হাসি দেখে ভীষণ রকমের ভড়কে গিয়ে জিজ্ঞেস করেই বসেছিলাম,
“হাসছেন যে? ভুল বলেছি?”
পামেলা মেডাম হাসতে হাসতে মাথা নাড়িয়ে বললেন,
“ভুল বলো নি। ভালোবাসার মানুষকে পেলে সবাই ই সুখী হয়। আমিও হয়েছিলাম। কিন্তু আমার সুখ কেবল কয়েকঘন্টার অতিথি ছিলো। আমাদের বিয়ে হওয়ার পরই আমার স্বামী আমাকে নিয়ে ঘুরতে বের হয়। নতুন বাইকও কিনে বিয়ে উপলক্ষে। নতুন বউকে দেওয়া প্রথম উপহার। সে-ই বাইকে চড়েই অপরিপক্ক হাতে ঘুরতে লাগলাম। কিন্ত ঐ যে ভাগ্য, ভাগ্য খারাপ হলে যা হয়। ঘটে গেলো বিশাল দুর্ঘটনা। বাইক দুর্ঘটনায় সাথে সাথে মৃত্যু হয় আমার ভালোবাসার। মৃত্যু হয় আমার শখ, আহ্লাদ সবকিছুর। আমি ফ্যালফ্যাল করে দু চোখ ভরে কেবল সেই মৃত্যুর কাফন দেখলাম। এরপরের আমার জীবন আরও দুর্বিষহ হয়। মেন্টাল হসপিটাল হয় আমার ঠিকানা। দিন দুনিয়া আমার তখন মিছে মরিচীকা হয়ে উঠেছিল।”
পামেলা মেডামের কথা থামলো। কিন্তু আমার জানার উত্তেজনা তখন আকাশচুম্বী। যে মানুষটা আমার সামনে তখন বসেছিল সে নাকি একসময় মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে ছিলেন! কীভাবে সম্ভব! কীভাবে? পুরো গাড়ি পিনপতন নীরবতায় ছেয়ে গিয়েছে। গাড়ির তাপমাত্রা শীতল। নীরবতা ভেঙে আমিই জিজ্ঞেস করলাম,
“তারপর সুস্থ হলেন কীভাবে, মেডাম?”
“আমার ভাগ্য মেনে নিয়ে। আমি মেনে নিয়ে ছিলাম যা হয়েছে সেটা। প্রথমে মানতে পারি নি বলে পাগল হয়ে গিয়েছিলাম কিন্তু মানতে পারার পর এই যে দেখো, তোমার সামনে সুস্থ স্বাভাবিক হয়ে বসে আছি। যাকে আমি এত ভালোবাসতাম তার অনুপস্থিতিতেও আমি ভালো আছি কেবল মেনে নিতে পারার সক্ষমতার জন্য। অথচ তুমি যাকে ভালোবাসো সে তোমাকে চেনেও না। আর তার জন্য তুমি জীবন থামিয়ে দিচ্ছো! মেনে নেওয়ার ক্ষমতা তোমার বড্ড কম। এমন হলে জীবন যে চলবে না।”
এতক্ষণের গল্পটার সারসংক্ষেপ টা হয়তো আমি মুহূর্তেই ধরতে পারলাম। তাই তো সময় ব্যয় না করেই জিজ্ঞেস করে ফেললাম,
“আমরা কোথায় যাচ্ছি?”
“নীলের কাছে। তোমার ভালোবাসার নীল, তোমার বেদনার নীল আর তোমার বিষাদের নীলের কাছে। তুমি নাহয় আজ তাকে তোমার মনের কথা জানিয়ে দিলে। যদিও জানি কোনো লাভ হবে না, তবুও জানালে।”
পামেলা মেডাম যে এমন উত্তর দিবে তা আমি ততক্ষণে টের পেয়ে গিয়েছিলাম। তাই যতটুকু চমকানোর কথা ছিলো ততটুকু চমকে গেলাম না। বরং স্বাভাবিক কণ্ঠে বললাম,
“আমাকে বাসায় ফিরিয়ে দিয়ে আসুন মেডাম। আমি আর কোথাও যাবো না। আমি বোধহয় বুঝতে পেরেছি আমি কী চাই এখন।”
আমি ভেবেছিলাম আমার কথার বিপরীতে পামেলা মেডামের প্রশ্নের ঝুড়ি থাকবে অথচ আমাকে অবাক করে দিয়ে মেডাম প্রশ্ন করলেন না। বরং মিনিট পাঁচ পেরুতেই আমরা বাসার সামনে চলে এলাম। আমি গাড়ি থেকে নামতেই পামেলা মেডাম মুখ খুললেন,
“তোমার নতুন জীবনের জন্য শুভেচ্ছা।”
এবার আমি সত্যিই চমকালাম। আমার মনের কথা কীভাবে মানুষটা বুঝে ফেললেন ভেবেই থ বনে রইলাম। মেডাম অপেক্ষা করলেন না আর। খুব দ্রুতই সে গাড়ি খানা নিয়ে আমার দৃষ্টি সীমানার বাহিরে চলে গেলো। সেদিনই পামেলা মেডামের সাথে আমার শেষ দেখা ছিলো।
আমি বাড়ি ফিরে ভীষণ গুরুতর একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলাম। নিজেকে বাঁচানোর সিদ্ধান্ত। আর বাঁচতে হলে আমাকে প্রথমে দেশ ছাড়তে হবে। তাই বাবা-মায়ের পায়ের কাছে তুলে দিলাম আবদার। চেঁচিয়ে বললাম, ‘আমাকে বাঁচাও তোমরা, আমাকে বাঁচাও, আমাকে সুস্থ একটা পৃথিবী দেও। আমি বাঁচতে চাই।’
বাবা-মাও এরপর অধৈর্য হয়ে উঠলেন আমাকে বাঁচানোর জন্য। এদিকে আমার পরীক্ষা চলা শুরু করলো অন্যদিকে দেশ ছাড়ার বন্দোবস্ত। বয়স পরিপূর্ণ ছিলো না বিধায় পরীক্ষার পর আমাকে পর্যটন ভিসায় পাঠানো হলো ভিনদেশ। বাবা-মা আমাকে প্রতি পারদে পারদে বাঁচার জন্য উৎসাহিত করে ছিলেন। অতঃপর চেনা মাটি, চেনা দেশ, প্রিয় কত মুখ ছেড়ে আমি চলে এলাম অপরিচিত একটা দেশে। দীর্ঘ একটা শ্বাস ফেললাম। উপরওয়ালার কাছে প্রার্থনা করলাম, ভালোবাসা নামক শব্দ পৃথিবী থেকে উঠে যাক।
_
আমি এখন পৃথিবীর উন্নত একটা দেশে থাকি। সেখানের বেশ খ্যাতিনামা একজন সাহিত্যিক। আমাকে ফাঁকি দিয়ে কেটে গেছে অনেকটা বছর। সময়ের স্রোতে ভেসে গেছে আমার সকল কিছু। চিরতরে ঘুমিয়েছে আমার বাবা-মা। বিশাল এই ভিনদেশে আমি বড্ড একা। হুটহাট হাড় কাঁপানো শীত এসে আমাকে ছুঁয়ে দিয়ে রিক্ততা দান করে। কোথাও আমি মানতে গিয়েও মানতে পারি নি সে আমাকে ভালোবাসে নি। জানিনা পামেলা মেডাম কেমন আছেন তবে তার প্রতি আমার আকাশ সমান কৃতজ্ঞতা। হয়তো তার জন্যই বেঁচে আছি আজ। তবে আমি একটা জিনিস আবিষ্কার করেছি, সেদিন পামেলা মেডাম আমাকে নীলের কাছে নিচ্ছিলেন না কারণ সে আগে থেকেই আমার সিদ্ধান্ত আন্দাজ করে রেখেছিলেন। মনস্তাত্ত্বিক চিন্তাধারার মানুষ তো, আমার মন বোধহয় খুব গোপনে ভালো করেই পড়ে ছিলেন।
লন্ডনের ছোটো একটা রাস্তা দিয়ে হাঁটছি আর ভাবছি। মানুষের অতীত কতো সুন্দর হয়, আমার বেলাই এমন ভয়াবহ কেন! যে অতীত রচনা করেছে দেশ ছাড়ার গল্প। এমন অতীত কারো না হোক। কারো না। আমার ভাবনার মাঝেই অনুভব করলাম শরীরে ঝিরিঝিরি বৃষ্টির ফোঁটা। কত গুলো বছর পর বৃষ্টি ছুঁয়ে দিলো আমায়! আমি আরেকটু পাশ ফিরে তাকাতেই দেখা পেলাম মাথার উপর সেই হলুদ ছাতার, সেই অতীতের হলুদ ছাতা আজ আমার বিশাল মাথা জুড়ে। আমার শ্বাস আটকে আসতে লাগলো। পুরুষালী একটা সুগন্ধ আমার নাকে এসে লাগলো। অপ্রত্যাশিত এই জিনিসটা আমি নিতে পারছিলাম না। এত গুলো বছর পর সেই পরিচিত প্রিয় দৃশ্য আমাকে বাধ্য করলো জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে পড়ে যেতে।
লেখিকার কথাঃ
________
আপনারা ভাবছেন রজনীর মাথার উপর এত বছর পর ছাতাটা কে ধরেছে তাইতো? নীল কী তবে এত বছর পর ওর মনের খোঁজ নিয়ে এসেছে এই দূরদেশে? সকল প্রশ্নের উত্তর হলো–“না”। নীল আসেনি। কারণ নীল আদৌও জানতেই পারে নি তাকে ভালোবেসে রজনী ধূলায় লুটিয়েছে। এটা রজনীর মানসিক সমস্যা। সে অতিরিক্ত কল্পনা প্রবণ হয়ে গিয়েছে। অন্যান্য সময় স্বাভাবিক থাকলেও হুটহাট, মাঝে মধ্যে সে জেগে জেগেই কল্পনা করে বৃষ্টি হচ্ছে, নীল এসে এগিয়ে দিয়েছে হলুদ ছাতাখানি। অতঃপর রজনী লুটিয়ে যায় রাজপথে। হয়তো এমনে করে লুটিয়ে পড়বে আর কখনো উঠে দাঁড়াবে না। এই রজনী কোনো গল্প না। আপনি, আমি, আমরা সবাই একটা বয়সে আসার পর রজনী হয়ে উঠি। আবেগের স্রোত সামলে নিতে না পেরে এমন করেই গড়াগড়ি খাই অবহেলার রাজপথে। সেই সকল রজনীর জন্যই এই গল্প। হুট করে তোমাদের মাথার ছাতা হয় নীলেরা আসবে অতঃপর চিরতরে বেদনার নীল হয়ে রয়ে যাবে। ছেলে মেয়ে সবার ক্ষেত্রেই বেদনার নীল আসতে পারে। তবে তুমি যদি সামলে নিতে পারো নিজেকে তবে রাজপথে লুটাবে না বরং রাজপথ গল্প লিখবে তোমার সফলতার। জীবনে যাই হোক, সেটা মেনে নেওয়া উত্তম সিদ্ধান্ত। কেউ আমাদের ভালো না বাসলেও সেটা মেনে নিয়ে বলতে হবে ‘মানলাম তুমি ভালোবাসোনি’। যদি এই একটা বাক্য পাঠ করতে পারো তবেই জীবন সুন্দর। আর না পারলে তুমিও হবে রজনী। রজনী পারে নি বলেই আজ সে বিশাল পৃথিবীতে বড্ড একা।
#সমাপ্ত