মামাতো বোন পাঠ-১+২

#মামাতো_বোন
#লেখকঃ অভি আহমেদ রাজ
#পর্ব_১+২

সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেই মনের ভিতর খুশি খুশি লাগতেছে,কারন আজ অনেকদিন পর মামার বাসায় যাবো,তাই বিছানা থেকে উঠে ওয়াসরুমে গেলাম ফ্রেস হতে,

তারপর ফ্রেস হয়ে চলে গেলাম খেতে,খাবার টেবিলে দেখি আম্মু বসে আছে,মনে হয় আমার জন্যই বসে আছে,

আম্মু,কিরে তোর ঘুম ভাঙলো..? আজ না তুই তোর মামার বাসায় যাবি,

মাহফুজ, হা যাবো তো মামার বাসায়😊 আজ দুপুরেই রওনা দিবো,এখন খাবার দাও তো ক্ষুদা লাগছে,

আম্মু, ঠিক আছে সাবধানে যাবি,এখন টেবিলে বস আমি খাবার দিচ্ছি,

মাহফুজ,আমাকে খাইয়ে দাও তুমি,আমি তোমার হাত ছাড়া খাইনা তাতো জানোই,

আম্মু,আচ্ছা আয় আমি খাইয়ে দিচ্ছি,

তারপর আম্মুর হাতে খাবার খেয়ে রুমে চলে গেলাম,ধুররর আমার পরিচয় দিতেই গো ভুলে গেছি,
(বরাবরের মতো আমি আপনাদের মাহফুজ আছি,এবার অনার্স ২য় বর্ষে,বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান)
বাকি তথ্যগুলো আমার আইডিতে পেয়ে যাবেন,

তারপর মামাকে ফোন দিলাম,একবার বাজতেই ফোন ধরে ফেললো,

মামা, হা মাহফুজ বল তোর কি খবর,আর আজ না তোর আমার বাসায় আসার কথা..?

মাহফুজ,হা আসবো তো আজকেই আসবো,কিন্তু তোমার বাসা তো আমি চিনি না,সেই কতো দিন আগে ছোটবেলায় গিয়েছিলাম..?

মামা,হা তুই বাসে উঠে নিউ সিটির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পর,তারপর নিউ সিটিতে নেমে আমাকে ফোন দিবি,

মাহফুজ,আচ্ছা ঠিক আছে আমি আজ দুপুরেই রওনা দিবো,কিন্তু মামা তোমার মেয়েটার কি খবর হো..!😁

মামা,হা অনেক ভালো আছে,তোরা সেই ছোটবেলায় কতো খেলা করতি,আআ্ছা বাসায় আয় তারপর দুইজন মিলে গল্প করবি..?

মাহফুজ, ওকে মামা😊

তারপর কথা শেষ করে রেডি হয়ে গেলাম,ওহহ আমার মামাতো বোনের নাম জারা,এবার অনার্স ১ম বর্ষে পরে,সেই ছোট বেলায় দেখছি ওকে,এখন যে কেমন চেহারা হয়েছে আল্লাই জানে,মামার বাসায় গিয়ে দেখবো ওকে😊

তারপর আম্মু থেকে বিদায় নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে গেলাম মামার বাসায় উদ্দেশ্যে,
সোজা বাস স্টেশনে গিয়ে নিউ সিটির উদ্দেশ্যে টিকিট কাটলাম,

বাসের ভিতর বসে আছি,কিছুক্ষন পর বাস রওনা দিলো,বাসের ভিতর বসে ইয়ারফোনটা কানে দিয়ে গান শুনছি কারন যেতে যেতে ২ ঘন্টা লাগবে,গান শুনতে শুনতে কখন যে চোখটা লেগে গেছে বুঝতেই পারি নাই,

হঠাৎ হেলপারের ডাকে ঘুম ভাংলো,তারপর দেখি আমি নিউ সিটিতে পৌছে গেছি,তারপর বাস থেকে নেমে মামাকে ফোন দিলাম,

মামা, হা কোথায় তুই,

মাহফুজ,মামা আমিতে নিউ সিটিতে পৌছে গেছি,এখন কোথায় যাবো..? কিছুই তো চিনি না,

মামা,চিন্তা করিস না তুই রিক্সাকে বলে এলিফ্যান্ট রোডে চলে আয়,আর আমি তোর ফোনে আমার বাসায় ঠিকানা দিয়ে দিচ্ছি,

মাহফুজ, ওকে মামা তুমি ঠিকানা পাঠিয়ে দাও,

তারপর একটা রিক্সা নিয়ে এলিফ্যান্ট রোডের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম,রিক্সায় বসে শহরের চারপাশ দেখতে লাগলাম,শহরটা বেশ সুন্দর সাজানো গোছানো..! আমার অনেক ভালো লাগলো এই পরিবেশটা😍

একটু পরে রিক্সা এসে এলিফ্যান্ট রোডে থামলো,তারপর রিক্সা থেকে নেমে ওয়ালেট টা বের করে ভাড়া দিলাম,
তারপর হাটতে লাগলাম মামার বাসার দিকে,

মামা আমার ফোনে তার বাসার ঠিকানা দিয়ে দিয়েছে,আমি চারপাশের পরিবেশ দেখতে দেখতে এগোতে লাগলাম,আমার হাটতে ভালো লাগছিলো কারন নতুন জায়গার সবকিছু দেখতে আমার অনেক ভালো লাগে..!

মামার দেওয়া ঠিকানা অনুযায়ী হাটতে লাগলাম,কিন্তু অনেক সময় হাটার পরেও ঠিকানাটা খুজে পাচ্ছিলাম না,এগিয়ে অনেক ক্লান্তও হয়ে গেছি,কিযে করি এখন..?

এসব ভাবতে ভাবতে হাটতেছিলামনিআের দিকে তাকিয়ে,কিন্তু হঠাৎ করে কিছু একটার সাথে বেশ জোড়েই ধাক্কা খেলাম,কিন্তু ধাক্কাটা খেলাম কিসের সাথে..?
আর তখন এই ঠাসসস করে ডান গালে একটা চড় মেরে দিলো,

তারপর ভালো করে তাকিয়ে একটা মেয়ে আমার সামনে দাড়িয়ে আছে,

মেয়েটি,ওই মিয়া দেখে চলতে পারেন না..? মেয়ে দেখলেই গায়ে পরতে ইচ্ছে করে নাকি..!

মাহফুজ,এমনিতেই ঠিকানা খুজতে খুজতে ক্লান্ত হয়ে গেছি,তার উপর মেয়েটা বিনা কারনে আমাকে চড় মারলো,আমি কি ইচ্ছা করে ধাক্কা দিয়েছি নাকি..?
আমারও রাগ উঠে গেলো😠
তারপর আমিও ঠাসসস ঠাসসসস করে মেয়েটির দুই গালে দুইটা চড় মেরে দিলাম,

মেয়েটি,ওই কুত্তা তুই আমাকে চড় মারলি কেন😡

মাহফুজ,ওই কুত্তী আগে বল তুই আমাকে চড় মারলি কেন..?

মেয়েটি,তুই আমাকে ধাক্কা মারলি কেন..? তাইতো চড় মেরেছি,

মাহফুজ,এহহহ..! তুই মনে হচ্ছে বিশ্ব সুন্দরী যে তোকে ধাক্কা মারতে যাবো, পেতনির মতো চেহারা তার আবার এতো দেমাগ😆

মেয়েটি,ওই কি বললি তুই আমি পেতনির মতো দেখতে..?

মাহফুজ,পেতনি মানে..! পেতনির থেকেও খারাপ চেহারা,যাই হোক এখন ঝগড়া বাদ দাও আর আমার এই ঠিকানাটা কোথায় একটু বলে দাও

মেয়েটি, আমি কি জন্য তোকে ঠিকানা বলতে যাবো হা😡তুই আমাকে পেতনি বললি কেন,
আমি এখন এক জায়গায় জরুরি কাজে যাচ্ছি তাই কিছুই বললাম না,না হলে এখানেই তোর অবস্থা খারাপ করে দিতাম বলেই আমার পাশ কাটিয়ে চলে গেলো,

মাহফুজ, হি হি হি মেয়েটাকে হেব্বি রাগিয়ে দিয়েছি,তবে হা মেয়েটি মোটেও পেতনির মতো দেখতে নয়,মেয়েটি একটা বোরকার উপর সুন্দর করে হিজাব পরছে,মুখটা খোলা আর চোখে কাজল দেওয়া, মেয়েটির চোখে অসম্ভব রকমের মায়া আছে,
যা যোকোনো ছেলেকেই আকর্ষনের জন্য যথেষ্ট,

যাই হোক আবার হাটতে শুরু করলাম,অনেক খুজার পর অবেশেষে মামার দেওয়া ঠিকানায় এসে পৌছালাম, কিন্তু অনেকগুলো বাসার মধ্যে কোনটা মামার বাসা সেটা খুজে পাচ্ছিলাম না,

তাই মামাকে ফোন দিলাম,একবারেই ফোনটা ধরলো,

মাহফুজ,মামা তোমার ঠিকানায় আসছি কিন্তু তোমার বাসাটা খুজে পাচ্ছি না,

মামা,তুই এক মিনিট দাড়া আমি বের হচ্ছি,

মাহফুজ,তারপর দাড়িয়ে ওয়েট করতে লাগলাম,একটু পর মামা একটা বাসা থেকে বের হয়ে আসলো,আমাকে দেখেই জড়িয়ে ধরলো,

মামা,কতো বড় গয়ে গেছিস তুই,অনেকদিন পর তোকে দেখলাম,

মাহফুজ,চমাকে কি এভাবে বাইরেরই দাড় করিয়ে রাখবে নাকি..?ভিতরে নিবে না নাকি..?

মামা,ওওও হা ভুলেই তে গিয়েছিলাম যে তুই বাইরে দাড়িয়ে আছিস,চল ভিতরে চল..!

মাহফুজ,হা চলো..!

তারপর বাসার ভিতরে গেলাম,মামার বাসাটা দোতলায়,সিড়ি দিয়ে উঠে গেলাম দোতলায়,তারপর কলিংবেল দিতেই মামি এসে দরহা খুলে দিলো,

আমাকে দেখে মামি জড়িয়ে ধরেও কেদে দিলো,

মামি, আমার কথা তো তুই ভুলেই গেছিস..! সেই কবে ছোটবেলায় তোকে দেখেছিলাম আর আজ দেখলাম,অনেক বড় হয়ে গেছিস তুই😊

মাহফুজ,তুমিও শুরু করলে মামি..? আমাকে কি দরজার বাইরেই দাড় করিয়ে রাখবে নাকি,ভিতরে নিয়ে যাবে না..?

মামি,সে কিরে তুই বাইরে দাড়িয়ে থাকবি মানে..? তুই হলো আমার ছেলে,তোকে কি বাইরে রাখবো নাকি,আয় ভিতরে আয়☺

মাহফুজ,হা চলো😄

তারপর মামা মামির সাথে ভিতরে গেলাম,বাহহহ ভিতরটা তো অনেক সুন্দর করে সাজানো🙂
মামি সোফায় বসতে বলে ফ্যানটা অন করে দিলো,তারপর আব্বু আম্মুর শরীর কেমন আছে জিজ্ঞাসা করলেন,
আরো কতো কিছু জিজ্ঞাসা করলেন অতো মনে নাই🤗

মামি, মাহফুজ যা ফ্রেস হয়ে আয়,তোর খাবার দিচ্ছি আমি,

মাহফুজ,আচ্ছা ঠিক আছে,কিন্তু তোমার মেয়েকে তো দেখছি না,কই তোমার মেয়ে..?

মামি,দেখবি কেমন করে..?একটু আগেই কলেজে গেছে,কি একটা কাজ আছে বললো,তবে একটু পরেই চলে আসবে,

মাহফুজ,হুমমম

তারপর মামি ওয়াসরুমটা দেখিয়ে দিলো,আমিও ফ্রেস হতে চলে গেলাম,
ফ্রেস হয়ে বাইরে এসে বাড়িটার চারপাশ ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলাম,মামার বাসায় চারটা রুম,

সবগুলোই অনেক সুন্দর করে গোছানো,তবে একটা রুম সবথেকে বেশি সুন্দর করে গোছানো,আমি সেই রুমেই গেলাম,

তারপর রুমের দরজা আটকে দিয়ে রুমটা দেখতে লাগলাম,রুমের দেয়াল বরাবর একটা খাট রাখা,বিছানাটা খুব সুন্দর করে সাজানো,বিছানা দেখেই ঘুম চলে আসছে আমার😁রুমের একপাশে একটা পড়ার টেবিল,তাতে অনেক গুলো বই সুন্দর করে সাজানো,

এগুলো দেখে বেশ ভালোভাবেই নিশ্চিত হয়ে গেলাম যে এটা মামার মেয়ের রুম,তাতে আমার কি..! আমি এখন বিছানায় বসে বিশ্রাম করি,

তারপর বিছানায় হেলান দিয়ে বসে ফেসবুকিং করতে লাগলাম,এমন সময় দরজায় কে যেন নক করলো,ধুররর এমন সময় আবার কে আসবে..!

অনেক বিরক্তি ভাব নিয়ে বিছানা থেকে উঠে দরজার কাছে গেলাম,তারপর দরজা খুলতেই তো আমার চোখ কপালে উঠে গেলো….!

#পর্ব_২

অনেক বিরক্তি ভাব নিয়ে বিছানা থেকে উঠে দরজার কাছে গেলাম,তারপর দরজা খুলতেই তো আমার চোখ কপালে উঠে গেলো….!

বাইরে তাকিয়ে দেখি রাস্তায় যে মেয়েটার সাথে ঝগড়া করে আসছি সে দাড়িয়ে আছে,মেয়েটতো আমাকে দেখে বহুগুনে অবাক হইছে,
আমিও তো কিছুই বুঝতে পারছি না, আমিও অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি মেয়েটির দিকে😯

মেয়েটা, ওই ছেলে তুই এখানে আমার বাড়িতে কি করছিস..?

মাহফুজ, তোর বাড়ি মানে টা কি..! এইটা আমার নিজের মামার বাড়ি,কই থেকে উড়ে এসে জুড়ে বসছে এখানে..!🧐

মেয়েটি, আমি উড়ে এসে জুড়ে বসছি..?আম্মু এই আম্মু..! এই ছেলেটা এইখানে কি করছে..?

মামি, এই জারা কি শুরু করলি তুই বলতো,এতো চিল্লাচ্ছিস কেন..?

জারা, আম্মু এই বাজে ছেলেটা এখানে আমার রুমে কি করছে..? আর ও এই বাড়িতে কেন😡

মামি,খারাপ ছেলে মানে..? ওতো তোর জাহিদ ফুপার ছেলে মাহফুজ,আজ এতো দিন পরে আমাদের বাড়িতে এসেছে আর তুই কি শুরু করলি..?

জারা,ওওও তাহলে এই সেই জাহিদ ফুপার বান্দর পোলা..? জানো আম্মু আজকে রাস্তায় ও আমাকে চড় মারছে আর পেতনি বলছে😠

মাহফুজ, মামি তাহলে এইটায় আমার মামার পেতনি মেয়ে..? হি হি হি তবে পেতনি হলেও চেহারাটা ভালো হয়েছে😊

মামি,অনেক ঝগড়া হইছে তোদের😪 এখন খেতে আয় দুজনেই, আমি খাবার দিচ্ছি তোদের,আর মাহফুজ তো তোকে চিনতো না বলেই হয়তো ওইরকম করছে..? এখন দুজনেই খেতে আয়..! আর মাহফুজ পাশের রুমে তোর বিছানা তৈরি করা আছে,তুই ওইখানে থাকবি,

তারপর আমি জারার দিকে তাকালাম,আমাকে মুখ ভেংচি কেটে রুমে চলে গেলো😅 তারপর আমিও খাবার খেতে টেবিলে চলে গেলাম,

টেবিলের কাছে গিয়েই তো অবাক হয়ে গেলাম,পুরো টেবিল জুড়ে সব আমার পছন্দের খাবারগুলো সাজিয়ে রাখা,তবে সবথেকে বেশি পছন্দ করি মুরগির মাংস আর পোলাও,

আমার তো এসব খাবার দেখে প্রচন্ড ক্ষুদা লেগে যায়,তখনই মামি আসলো,

মাহফুজ,মামি এতো কিছু কার জন্য রান্না করছো তুমি..?

মামি,কেন রে সব তো তোর জন্যই রান্না করছি,তোর পছন্দ হয়নি..?

মাহফুজ,কিযে বলো মামি সবগুলোই আমার প্রিয় খাবার,অনেক পছন্দ হইছে আমার😋

মামি,হুমম এখন খেতে বস,

তারপর খেতে বসলাম আর তখনই জারা আসলো,সাথে মামাও আসলো, সবাই মিলে খেতে লাগলাম,ওহহ খাবার টাও অনেক ভালো রান্না হইছে,মুখে লেগে থাকার মতো😋

সবাই মিলে খেতে খেতে অনেক গল্প করলাম,মামা আমার পড়াশোনার বিষয় সহ আরো অনেক কিছু জানলো,তারপর খাবার খাওয়া শেষ করে নিজের রুমে চলে গেলাম,

তারপর বিছানায় শরীরটা এলিয়ে দিলাম,ক্লান্ত থাকার কারনে চোখের উপর ঘুম এসে নাড়া দিলো,তারপর ঘুমিয়ে গেলাম,

ঘুম ভাংলো বিকাল বেলায়,বিছানা থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে নিলাম,তারপর রুম থেকে বাইরে বের হলাম,দেখি মামা মামি সোফায় বসে গল্প করতেছে,

মাহফুজ, মামি জারা কোথায় গো..?

মামি,জারা ওর নিজের রুমেই আছে,যা গিয়ে কথা বল,

তারপর আমি জারার রুমের সামনে গেলাম,গিয়ে দেখি জারা বই পরতেছে,আমি দরজায় নক করলাম,

মাহফুজ,আসতে পারি জারা ম্যাম..?

জারা, বাব্বাহ..! তুই আবার আমার রুমে আসার জন্য অনুমতি নিচ্ছিস..? আগেতো হুটহাট করে ঢুকে পরতি,

মাহফুজ,ধুররর পাগলি তখন তো ছোট ছিলাম তাই বুঝতাম না,এখন তো তুই বড় হয়ে গেছিস,

জারা,হা হইছে এখন রুমে আসেন😊

তারপর আমি জারার রুমে ঢুকলাম,গিয়ে জারার পাশে বসলাম,

মাহফুজ, ওই জারা আমার সাথে এখন ঘুরতে চলতো,তোদের শহরটা ঘুরে দেখে আসি একটু,

জারা, ওকে চল,

তারপর জারার সাথে ঘুরতে বের হলাম,একটা রিকসা নিয়ে দুজনে একটা পার্কে গেলাম,ওখানে অনেক সময় কাটালাম,
তারপর জারা ফুসকা খেতে চাইলো,তখন ওকে ফুসকার দোকানে নিয়ে ফুসকা খাওয়ালাম,

জারার ফুসকা খাওয়া দেখে তো আমি অনেক বেশিই অবাক হয়ে গেলাম,যেখানে আমি ৩ টা ফুসকা শেষ করতে পারলাম না,সেখানে ও পুরো একবাটি ফুসকা শেষ করে ফেললো,

মাহফুজ,জারা আইসক্রিম খাবি..?

জারা,হুমম চকলেট আইসক্রিম আমার অনেক পছন্দ😋

তারপর জারার জন্য চকলেট আইসক্রিম কিনলাম,জারা আইসক্রিম পেয়ে অনেক খুশি হলো,এভাবে দুইজন অনেক মজা করলাম সারা বিকাল জুড়ে,

তারপর একটা রেষ্টুরেন্টে নিয়ে গেলাম জারাকে,তারপর ওর পছন্দ মতো সব খাবার অর্ডার করতে বললাম,

জারা, কিরে আজ এতো খাওয়াচ্ছিস ব্যাপারটা কি..?

মাহফুজ, আরে কিছু না এমনি,আজ এতো দিন পর আসলাম তো তাই ট্রিট দিলাম আরকি😇

তারপর দুজনে খাওয়া শেষ করে রেষ্টুরেন্টে থেকে বের হলাম,তারপর একটা রিকসা ডাক দিলাম,

রিকসা, মামা কই যাবেন..?

মাহফুজ,আমি মামার বাসার ঠিকানা দিলাম,তারপর দুজনে রিকসায় উঠে বসলাম,রিকসা তার আপন গতীতে চলতে শুরু করলো,

কিছুক্ষন পর বাসায় সামনে এসে রিকসা দাড়ালো,আমি নেমে রিকসাওয়ালা কে ১০০০ টাকার একটা নোট দিলাম,তারপর জারাও নেমে গেলো,

রিকসাওয়ালা,মামা ভাড়া তো এতো টাকা হয় নাই,

মাহফুজ,আরে মামা রেখে দেন তো,

তারপর বাসার ভিতরে চলে গেলাম,দরজার সামনে গিয়ে কলিংবেল দিলাম,মামি এসে দরজা খুলে দিলো,

তারপর সোজা আমার রুমে চলে গেলাম,বিছানায় বসে ফেসবুকিং করতে লাগলাম,এভাবে অনেকটা সময় পার হয়ে গেলো,

মামি এসে রাতের খাবার খাওয়ার জন্য ডেকে গেলো,তারপর আমি রুম থেকে বেড়িয়ে খাবার খেতে গেলাম,গিয়ে দেখি সবাই আমার জন্য অপেক্ষা করছে,তারপর সবাই মিলে খাওয়া শুরু করলাম,

মামি,কিরে তোদের ঝগড়া মিটমাট হইছে..?

মাহফুজ,হা মামি হইছে😁

মামা,ওদের তো সারাক্ষন ঝগড়া লেগেই থাকে সেই ছোটবেলা থেকে😐

খাওয়ার পর্ব শেষ করে রুমে চলে গেলাম,তারপর বিছানায় বসে মোবাইল টিপতেছি,এমন সময় জারা পেতনির আগমন😂

মাহফুজ,কিরে পেতনি কিছু বলবি..?

জারা,হা বলতেই তো আসছি😒 তোর ফোন নাম্বার আর ফেসবুক আইডি দে..!

তারপর জারার কাছে ফোন নাম্বার আর ফেসবুক আইডি দুইটায় দিলাম,তখনই আমার ফোন বেজে উঠলো,তাকিয়ে দেখি আননোন নাম্নার,

জারা,ওইটা আমার নাম্বার সেইভ করে রাখ,

মাহফুজ,ওকে

তারপর জারা রুম থেকে চলে গেলো,আমিও ফ্রেন্ডের সাথে চ্যাট করতে লাগলাম,একটু পর মিষ্টি মেয়ে নামে একটা আইডি থেকে ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট আসলো,

আমি একসেপ্ট করার সাথে সাথে মেসেজ আসলো,ওই আমি জারা..!

মাহফুজ,ওহহ পেতনি তাহলে এইটা তোর আইডি🤗

জারা,ওই হারামি তুই আমাকে কি বললি😡

মাহফুজ, কই কিছু বলি নাই তো,আমি এখন ঘুমিয়ে গেলাম হা😅

জারা,ওকে গুড নাইট

মাহফুজ,হুমম গুড নাইট🙃

তারপর ফোনটা রেখে ঘুমিয়ে পরলাম,হঠাৎ দেখি একটা মেয়ে আমার সামনে হাটু গেড়ে ফুল নিয়ে আমাকে প্রপোজ করছে😍 মেয়েটাকে দেখতে অসাধারন,
আমিও মেয়েটার প্রেমে পরে গেছি,

তারপর আমি মেয়েটাকে জরিয়ে ধরলাম,মেয়েটাও আমাকে জরিয়ে ধরলো,আহহ তখন কিযে একটা অনুভূতি হচ্ছিলো😍
তখনই আমার পুরো শরীর পানিতে ভিজে গেলো,

আরে এখানে আবার পানি আসলো কই থেকে🤔 তখনই আমার ঘুম ভেঙে গেলো,চোখ খুলে দেখি জারা বালতি হাতে নিয়ে পাশে দাড়িয়ে আছে,

তার মানে এতোক্ষন সবকিছু সপ্ন ছিলো😭 কতো সুন্দর একটা সপ্ন দেখতেছিলাম ওই পেতনি এসে সবকিছু শেষ করে দিলো😢

মাহফুজ,ওই পেতনি তুই আমার গায়ে পানি দিলি কেন..? কতো সুন্দর একটা মেয়েকে জড়িয়ে ধরেছিলাম,তুই এসে সব ভেস্তে দিলি😠

জারা, তোকে কতোক্ষন ধরে ডাকতেছি উঠোস না কেন,তাই তো পানি মারলাম,আম্মু খেতে ডাকতেছে খেতে আয় বলে জারা চলে গেলো..!

মাহফুজ,সারা শরীর পানিতে ভিজে গেছে,তাই উঠে ওয়াসরুমে গেলাম ফ্রেস হতে,তারপর ফ্রেস হয়ে খেতে চলে গেলাম,সবাই আমার জন্য টেবিলে বসে ওয়েট করতেছে,

তারপর সবার সাথে খেতে বসলাম,আজকেও মামি আমার সব পছন্দের খাবার রান্না করছে,অনেক মজা করে খেলাম,

খাওয়ার পর সবাই মিলে আড্ডা দিতে বসলাম,গতকাল আসার পর থেকে সবার সাথে বসা হয়নি,সবাই আড্ডা দিতে লাগলাম,
জারার খারাপ লাগছে বললো,তাই ও নিজের রুমে চলে গেলো,

তখন আমি মামা আর মামি কথা বলতে লাগলাম,আমার মামা বড়ই মিশুক মানুষ, সবার সাথেই অতি সহজে মিশে যেতে পারে,আমাকে দুইজনেই অনেক ভালোবাসে, তাই তাদের কথায় যেন শেষ হতে চাইছে না,

মামা,মাহফুজ জারার ব্যবহারে কিছু মনে করিস না,মেয়েটা একটু রাগি হলেও মনটা অনেক ভালো,

মাহফুজ,হা মনটা তো অনেক ভালোই,আর চেহারাটাও তো মাশাল্লাহ..! একদম মামির মতোই সুন্দরী হইছে😋

মামা,তাহলে জারাকে তোর পছন্দ হইছে..?

মাহফুজ,মানে কি বলতে চাইছো তুমি..?

তারপর মামা যা বললো তা শুনে তো আমার মনের ভিতর লাড্ডু ফুটতে লাগলো😍

চলবে…..
ভুলত্রুটি গুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here