মেঘকন্যা☁️
Part_06
#Writer_NOVA
মেঘরাজ্য…….
সোনার পালঙ্কে বসে পান সাজাচ্ছেন মেঘরাজ্যের রাণী।মুখে তার হাজার চিন্তা এসে ভিড় করেছে। তার আশেপাশে ৭-৮ জন দাসী দাঁড়িয়ে আছে রাণীর আদেশ মানার জন্য।তখনি কক্ষে প্রবেশ করলো মেঘপুত্র।
মেঘপুত্রঃ আসালামু আলাইকুম আম্মিজান।
পুত্রের কণ্ঠ পেয়ে ধ্যান ভাঙলো রাণীর।ছুটে এসে পুত্রের মুখে অজস্র চুমুতে ভরিয়ে দিলেন।কতদিন পর ছেলেকে এক নজর দেখতে পেরেছে।
রাণীঃ কেমন আছিস বাবা?
মেঘপুত্রঃ আলহামদুলিল্লাহ ভালো আম্মিজান। তোমাদের দোয়ায়, আল্লাহর রহমতে ভালো আছি।
রাণীঃ এই দুঃখীনি আম্মিকে দেখগে বউয়ের আঁচল ছেড়ে আসতে মনে চেয়েছে।(মুখ গোমড়া করে)
মেঘপুত্রঃ আম্মিজান তুমিও পৃথিবীর মায়েদের মতো বলতে শুরু করলে।তুমি তো জানো তোমার পুত্রের প্রাণ ভোমরাই তার অর্ধাঙ্গিনী।তার কিছু হলে তোমার পুত্র শক্তিহীন মানব হয়ে কারাগারে বন্দী থাকবে।
রাণী মুচকি হেসে পুত্রকে জরিয়ে ধরলেন।মা-পুত্র দুজনে একসাথে উচ্চস্বরে হেসে উঠলো। রাণী ইশারায় কক্ষে থাকা দাসীদের চলে যেতে বললেন।কারণ তিনি এখন একান্তে নিজের পুত্রের সাথে সময় কাটাবে।বাইরের মানুষ তার মধ্যে থাকা সে পছন্দ করে না।
রাণীঃ আমিতো ঠাট্টা করছিলাম পুত্র। আমি জানি আমার পুত্রের পুরো অংশ জুড়ে মেঘকন্যা বিস্তার করছে।আমি অনেকটা চিন্তামুক্ত হয়েছি।বিয়েটা তো যেভাবে হোক হয়েছে। এতদিনের ভালোবাসাকে আমার পুত্র আপন করে পেয়েছে। শোনো পুত্র, কন্যাকে এক মুহুর্তের জন্য একা ছারবে না।আমাদের শত্রুরা যে কোন সময় তার ওপর আক্রমণ করবে।এবার আমি খুব শীঘ্রই দাদীজান হতে চাই।
মেঘপুত্রঃ সেটা বোধহয় এত জলদী পূরণ হবে না আম্মিজান।(মুখ গোমড়া করে)
রাণীঃ কেন পুত্র? (অবাক হয়ে)
মেঘপুত্রঃ সে অনেক লম্বা কাহিনি আম্মিজান।তোমার পুত্রবধূকে জরিয়ে ধরে ঘুমালেই সে আজগুবি ভাবনা দিয়ে মাথা ভরে ফেলে।তার কক্ষে নাকি জ্বীন এসেছে। ভয়ে গুটিয়ে যায়।বিয়ের দুই রাত ধরে আমাকে তার কক্ষের সোফায় ঘুমুতে হয়।সে আমার উপস্থিতি টের পেলেই ভয়ে কুঁকড়ে উঠে। আর তুমি চাইছো নাতি-নাতনীদের মুখ দেখতে।তার ত্রিসীমানায় আমি ভিড়তে পারি না।ভাগ্যিস আমি তার মনের কথা শুনতে পাই।সে শুনতে পায় না।তাই তার কাছে থেকে অদৃশ্য হতে পারি।যদি সে আমার মনের কথা শুনতে পারতো তাহলে আমি এতদিনে চিৎপটাং হয়ে কারাগারে পরে থাকতাম।এই বাচ্চা মেয়েটাকে পালতেই আমার দফা-রফা হয়ে যাচ্ছে। তার মধ্যে আরেক বাচ্চা। একদম না।
রাণীঃ ২২ বছর বয়স হলে কি হবে পুত্র? সে এখনো আমাদের শক্তির ব্যাপারে পুরো অজ্ঞ।তাকে তো তোমাকেই সামলাতে হবে। নিজের জন্য হলেও তাকে নজরে রাখতে হবে।
রাণী পুত্রকে হাত ধরে পালঙ্কে বসালো।মেঘপুত্র এক লাফে মায়ের কোলে মাথা রেখে শুয়ে পরলো।কতদিন এরকম করে ছোট বাচ্চার মতো করে মায়ের কোলে মাথা রাখা হয় না।আজ যখন সুযোগ পেয়েছে ছারবে কেন?রাণী তার পুত্রের মাথার চুলে বিলি কেটে দিতে লাগলো।
রাণীঃ জানো পুত্র, যেদিন তোমাদের বিয়ে হলো সেদিন অঙ্গরাজ্যের রাজপুত্র যখন তোমাদের ওপর আক্রমণ করলো, আমরা অনেক ভয় পেয়ে গেলাম।প্রতি মুহুর্তে মনে হয়েছে আমাদের মেঘকন্যার কোন ক্ষতি হলো না তো।আমাদের পুত্র ঠিক আছে তো।আমাদের ছোট মেঘরাজ্য পুরো কালো অন্ধকারে ছেয়ে গিয়েছিল। সাথে প্রচন্ড বাতাস ও ধূলিঝড়। আমি ও তোমার আব্বিজান ওযু করে আল্লাহর দরবারে সিজদাহ্ করতে দাঁড়িয়ে গেলাম। আমি জানি একমাত্র স্বয়ং আল্লাহ আমাদের রক্ষা করতে পারে। আল্লাহর কাছে লাখো কোটি শুকুর।তিনি আমাদের দোয়া কবুল করে নিয়ে চাঁদের আলো মেঘকন্যার শরীরে ঢেলে দিলেন।আমাদের সবাইকে রক্ষা করলেন।সেই খুশিতে আমরা ১২ রাকাআত নফল নামাজ আদায় করেছি।
মেঘপুত্রঃ আমারো এক মুহুর্ত মনে হয়েছিলো আমি মেঘকন্যাকে হারিয়ে ফেলেছি। কিন্তু আমার আল্লাহর ওপর বিশ্বাস ছিলো।তাই তিনি আমার কাছে আমার মেঘকন্যাকে ফিরিয়ে দিয়েছেন।
রাজাঃ আসালামু আলাইকুম আমার একমাত্র পুত্র আবরার আওসাফ। কেমন আছো সাত রাজার ধন?তোমাকে দেখার জন্য আমরা কতটা অধীর হয়ে ছিলাম পুত্র?তুমি কি তা জানো?
🌨️🌨️🌨️
রাজার কন্ঠ পেয়ে মেঘপুত্র রাণীর কোল থেকে মাথা উঠিয়ে তাকালো।তারপর ঝট করে উঠে রাজার কাছে গিয়ে তাকে জরিয়ে ধরলো।
মেঘপুত্রঃ আসালামু আলাইকুম আব্বিজান।আপনার শরীর কেমন আছো?
রাজাঃ অলাইকুমস সালাম।আলহামদুলিল্লাহ ভালো। তোমার স্বাস্থ্যের কি খবর?
মেঘপুত্রঃ আলহামদুলিল্লাহ ভালো।
রাজাঃ তোমার কি এসময়ে মেঘরাজ্য আসা ঠিক হয়েছে পুত্র? তুমি জানো না চারিদিকে ঘন বিপদ।কন্যাকে ফেলে এসে তুমি মোটেও ভালো করোনি।ইশাল যে কোন সময় ওর ওপর আক্রমণ করতে পারে। তুমি ভুলে যেও না মেঘকন্যা আমার ছোট ভাইয়ের একমাত্র শেষ স্মৃতি। আমার ছোট ভাই ও তার বিবির মৃত্যুর সময় আমি তাদের কথা দিয়েছিলাম সর্বক্ষণ তার খেয়াল রাখবো।তাদের শেষ ইচ্ছা রক্ষা করতেই আমি নিজে মেঘকন্যাকে মানুষের বসতিতে রেখে এসেছি। তাই বলে তুমি তার প্রতি অবহেলা করতে পারো না। এখন শরীয়ত মোতাবেক সে তোমার বিবাহ করা বিবি।
মেঘপুত্রঃ দুঃখীত আব্বিজান।আমার আপনাদের খুব দেখতে ইচ্ছে করেছিলো।তাই মনটাকে দমিয়ে রাখতে না পেরে চলে এসেছি দেখা করতে। আপনি যে আমার প্রতি এতটা মনক্ষুঃন্ন হয়ে যাবেন তা ভাবিনি।
রাজাঃ পুত্র, আবরার আওসাফ।তুমি এখন অবুঝ নও।এই সময়ে কন্যাকে একা রাখা অনেক বিপদজনক। ইশাল পৃথিবীর বুকে বিচরণ করছে। এতদিনে হয়তো সে কন্যাকে খুঁজেও পেয়ে যেত।যদি না তোমার সাথে বিয়ে হওয়ার পর সকল শক্তির মালিক হতো।তাছাড়া কন্যা আমাদের শক্তির বিষয় কিছু জানে না।সে এটা ব্যবহারও করতে পারবে না।তুমি যদি তার স্বামী হয়ে এসব বিষয়ে খেয়াল না রাখো তাহলে কে রাখবে।এই বিপদ কেটে গেলে তোমরা আমাদের সাথে বাকি জীবন কাটাতে পারবে পুত্র। কিন্তু মনে রেখো একবার যদি তুমি মেঘকন্যাকে হারিয়ে ফেলো তাহলে অনেক বড় সর্বনাশ হয়ে যাবে।
মেঘপুত্রঃ আপনার কথা আমি বুঝতে পেরেছি আব্বিজান।আমি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মেঘরাজ্য আগমণ করবো না।
রাণীঃ আজ পৃথিবীর বুকে ফিরে যাও পুত্র। সময় করে একদিন কন্যাকে নিয়ে আসো আমাদের রাজ্যে।কত বছর হলো ওকে দেখি না।খুব দেখতে ইচ্ছে করে।নিশ্চয়ই ওর মাঝে আমি ওর বাবা-মায়ের প্রতিচ্ছবি দেখতে পাবো।
মেঘপুত্রঃ ইনশাল্লাহ আম্মিজান।কোন একদিন তোমার পুত্রবধূকে নিয়ে আসবো। আমার আম্মিজানের আবদার কি আমি ফেলতে পারি। আল্লাহ হাফেজ আম্মিজান ও আব্বিজান।
রাণীঃ আল্লাহ হাফেজ পুত্র। নিজের ও কন্যার খেয়াল রেখো।আল্লাহ চাইলে আবার দেখা হবে।
রাজাঃ খোদা হাফেজ পুত্র। ভুলে যেও না তোমার উদ্দেশ্য হলো মেঘকন্যাকে রক্ষা করা। সর্বদা মনে রাখবে মেঘকন্যা সুরক্ষিত তো তুমি, আমরা এবং রাজ্য সুরক্ষিত।
রাজা,রাণীর থেকে বিদায় নিয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যে পৃথিবীতে ফিরে আসলো মেঘপুত্র। মেঘকন্যা এশারের নামাজ আদায়ের পর ঘুমিয়ে পরেছিলো।সেই সুযোগে মেঘপুত্র রাজ্য থেকে ঘুরে আসলো।কন্যার সামনে এসে মুচকি হেসে কপালে আলতো করে ঠোঁট ছোঁয়ালো।
🌨️🌨️🌨️
বিয়ের সাজে বসে আছি আমি।আমার সামনে আফিয়ার বাবা,চাচা,চাচী,ফুপু,ভাবী, দিহানের পরিবারের সকল মানুষ বসে আছে। আমি ঘোমটার ভেতর থেকে তাদের দেখতে পাচ্ছি। কাজী বিয়ে শুরু করলো।আমার হাত-পা কাঁপছে। হঠাৎ আমার হাতে কারো শীতল স্পর্শ পেলাম।সেই হাতের স্পর্শ আর কারো ছিলো না।বরের বেশে থাকার ছেলেটির ছিলো। চারিদিকে আবছা আকাশি কালার ধোঁয়ার মতো উড়ছে।আমি ধীরে ধীরে নিজের মধ্যে থেকে একটা ঘোরে চলে যাচ্ছি।আমি দেখতে পাচ্ছি সবার চোখ হালকা আকাশি হয়ে যাচ্ছে। কেউ আমার মতো নিজের মধ্যে নেই। কাজী বিয়ে পরছে।
কাজীঃ গুলশান নির্বাসী মোহাম্মদ আবিদ ইসলামের পালক কন্যা ও মেঘরাজ্যের ছোট রাজা ফাইয়াজ রায়হানের একমাত্র কন্যা সাওদা বিনতে মেঘার সাথে মেঘরাজ্যের বড় রাজা নিইয়াজ রায়হানের একমাত্র পুত্র আবরার আওসাফ সাথে ১০০১ দেরহাম দেনমোহরের বিনিময়ে শুভ বিবাহ ধার্য করা হয়েছে। কন্যা তুমি যদি এই বিয়েতে সম্মত থাকো তাহলো বলো মা আলহামদুলিল্লাহ কবুল।তিনবার বলো কবুল।
আমিঃ আলহামদুলিল্লাহ কবুল কবুল কবুল।
কাজীঃ এবার পুত্র তোমার যদি বিয়েতে সম্মতি থাকে তাহলে বলো আলহামদুলিল্লাহ কবুল। তিনবার বলবে।
শওয়ানঃ আলহামদুলিল্লাহ কবুল কবুল কবুল।
কাজীঃ নাও মেঘকন্যা তুমি এই রেজিষ্ট্রী পেপারে তোমার নামটা স্বাক্ষর করে দেও।
আমিঃ আমার নিজের নাম?
কাজীঃ হ্যাঁ,কন্যা।
আমিঃ কোথায় করবো দেখিয়ে দিন?
কাজীঃ আমিতো দেখিয়ে দিলাম।
আমিঃ জলদী দেখান।আমার তর সইছে না।আমি তো কতদিন ধরে এই দিনটার জন্য অপেক্ষা করছি।অবশেষে সে আমার হলো।(ঘোরের মাঝে)
কাজীঃ আমি টিক চিহ্ন দিয়ে দিয়েছি।
আমি চুপচাপ রেজিস্ট্রি পেপারে সই করে দিলাম।এবার কাজী সাহেব আমার কাছে থেকে পেপারটা নিয়ে বরের দিকে এগিয়ে দিলেন।বর নিজের মুখের সামনের ফুলের মালাগুলো না সরিয়ে নিজের নামটা রেজিস্টী পেপারে সই করে দিলো।নামটাও আমি স্পষ্ট দেখতে পেলাম।আমি পুরো রেজিস্ট্রী পেপার তন্নতন্ন করে খুঁজেও সেখানে আফিয়া, দিহান এবং তাদের বাবা-মায়ের নাম খুঁজে পেলাম না।বরং স্পষ্ট বড় বড় করে আমার ও আবরার নাম দেখতে পেলাম।তারপর একে একে স্বাক্ষীরা সই করলো।আমি শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে তাকিয়ে সব দেখছি।
কাজীঃ আমরা এখন নতুন বিবাহিত পুত্র ও কন্যার জন্য সবাই আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে প্রাণ ভরে দোয়া করবো।আল্লাহ যাতে তাদের বৈবাহিক জীবনে সুখ ও শান্তির করে দেয়।আর এই বিয়েটা কবুল করে নেয়।তারা যে পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে তা মৃত্যুর আগের ও পরের জীবনেও অটুট থাকে।
সবাই মিলে মোনাজাতে আমাদের জন্য আল্লাহর কাছে আমাদের জন্য প্রাণভরে দোয়া করলো।কাজী সাহেব ও স্বাক্ষীর জন্য আনা তিনজন পুরুষ লোক আমাদের পৃথিবীর নয়।কারণ তাদের শরীরের রংটা শুভ্র মেঘের মতো। সবার মোনাজাত শেষ হলো।
কাজীঃ আলহামদুলিল্লাহ বিবাহ সম্পন্ন হয়েছে। এখন থেকে আপনারা স্বামী-স্ত্রী।
(আমি প্রোফেশনাল কাজী নই।বিয়ের মধ্যে কাজী কি বলে,কিভাবে বিয়ে পরায়, কি কি করে?তা আমার কোন ধারণা নেই। কাজীর বিয়ে পরানোটা আমি নিজের মন থেকে লিখেছি। ভূল-ত্রুটি হলে দয়া করে মাফ করে দিবেন। আমি এসব বিষয় কিছু জানি না। আমি আবরো বলছি আমার কাজীর বিয়ে পরানোর ব্যাপারে কোন ধারণা নেই। কোন ভুল হলে আমাকে ছোট বাচ্চা ভেবে মাফ করে দিয়েন।আমি সবার কাছে তার জন্য ক্ষমাপার্থী।)
🌨️🌨️🌨️
ঠিক তখনি বাইরে অঙ্গরাজ্যের রাজপুত্র ইশাল রেগে বাড়ির বাইরে থাকা মাটির বিশাল মোটকা তুলে সোজোরে সিমেন্টের ফ্লোরে আছাড় মারলো।সাধারণত গ্রামের অনেক পুরনো বাড়িতে এসব মাটির মোটকা আছে।তেমনি আফিয়াদের বাড়িতে ছিলো।সেই শব্দে সবার ঘোর কেটে যায়।মেঘপুত্রের অদৃশ্য শক্তি সবার ওপর বিস্তার করেছিলো।তাই কেও কাজীর কোন কথা শুনতে পারেনি।
যখন সবার ওপর থেকে আবছা আকাশি কালার শক্তি উঠে যায়।তখন মায়া কেটে যাওয়ার পর তারা বাইরে ছুটে।কিসের শব্দ হলো তা দেখার জন্য। মেঘারর হাত ধরেও তাকে বশ করে নিয়েছিলো আবরার।তাই বিয়ের সময় কিছুই শুনেনি সে।তাছাড়া ঘোরের মধ্যে থেকে বিয়ে করে নিয়েছি আবরারকে।সবাইকে বিয়ের সকল কিছু ভুলিয়ে দেয় মেঘপুত্র। আর মেঘাতো কিছু বলতে বা মনে করতে পারে না। তারপরের ঘটনা সবাই জানেন।বর-কনে দুজনি পালিয়েছে। মেঘপুত্র পালাতে চায়নি।সোফা উঠে সে গিয়ে ছিলো ইশালের সাথে মোকাবেলা করতে।কিন্তু সেই ফাঁকে মেঘা পালিয়ে যাই।তাই মেঘাকে ইশালের হাত থেকে বাঁচাতে সেও সেখান থেকে পালিয়ে যায়।আর পুরো গ্রামবাসী ওদের খুঁজতে বের হয়ে যায়।
__________
লাফ দিয়ে ঘুম থেকে উঠে যাই আমি।সারা শরীর গরমে ঘামছে।?আমি উপরোক্ত পুরো ঘটনাটা স্বপ্নে দেখলাম।জোরে জোরে নিশ্বাস নিচ্ছি ও ছারছি।হৃৎপিণ্ডটা ইচ্ছে মতো লাফাচ্ছে। থামার কোন নামও নিচ্ছে না।
আমিঃ কি দেখলাম আমি এতক্ষণ? কিন্তু কেন? দেখলাম এমনটা।এটাই তো আমার বিয়ের দিনের রহস্য। আমি মাথা খাটিয়েও বের করতে পারিনি।আল্লাহ আমাকে স্বপ্নে পুরো ঘটনা দেখিয়ে দিলেন।কিন্তু আফসোস!! আমার পুরো স্বপ্ন মনে পরছে না কেন?আমি মাঝখান থেকে অনেক কিছু ভুলে কেন গিয়েছি।আমি তো সব দেখলাম।তারপরেও কেন এমনটা হলো।আমার মাথা ঘুরছে।আমি কিছু স্পষ্ট করে মনে করতে পারছি না কেন?ধীরে ধীরে স্বপ্নটা ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে আমার স্মৃতি শক্তি থেকে।কিন্তু কেন?
দুই হাতে শক্ত করে মাথা ধরে বসে আছে মেঘা।তার স্মৃতি থেকে ধীরে ধীরে স্বপ্নটা ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে। এটা স্বপ্ন হলেও ওর বিয়ের বাস্তব ঘটনা।আল্লাহ ওকে বিয়ের সবকিছু স্বপ্ন আকারে দেখিয়ে দিয়েছে।মেঘপুত্র, আবরার আওসাফ দুই হাত গুঁজে বারান্দার দরজায় হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। নিজের মনে বলে উঠলো।
মেঘপুত্রঃ আমি দুঃখীত বউ।তোমার স্মৃতি থেকে আমাদের বিয়ের পুরো বিষয়টা আমি মুছে দিয়েছি, আমার শক্তি দিয়ে। তুমি এখন এসব নিয়ে ভাবলে অসুস্থ হয়ে পরবে।আল্লাহ তোমাকে কেন এই স্বপ্ন দেখালো তা আমি জানি না। তবে আমি তোমার স্মৃতি থেকে এই স্বপ্নটা আমার শক্তি দিয়ে মুছে দিতে বাধ্য হলাম।কিন্তু তোমার যে বিয়ে হয়েছে সেটা তুমি ভুলবে না। আমি ভুলতে দিবো না তোমাকে।রোজ অনেকবার মনে করিয়ে দিবো, তুমি বিবাহিত।তুমি আমার স্ত্রী।
আমি মাথা ধরে সবকিছু মেলানোর ব্যর্থ চেষ্টা করতে লাগলাম।এশারের নামাজ পড়ে ঘুমিয়ে পরেছিলাম।তারপর এই স্বপ্ন দেখলাম।
গতকাল আয়িশের বাসা থেকে আসার পর নিজেদের বাসার ড্রয়িং রুমে ঘটক মহাশয়কে বসে থাকতে দেখেছে। সেটা দেখে মাথাটা আমার হাই লেভেলের গরম হয়ে গিয়েছিলো।রাতে বাবা-মায়ের ওপর খাবার না খেয়ে ঘুমিয়ে পরেছিলাম।কিন্তু রাতে আমার মনে হলো কেউ আমাকে ঘুমের মধ্যে উঠিয়ে বসালো।তারপর আমাকে ঘুমের মধ্যে খাবার খাইয়ে দিলো।সে আমার মুখে খাবার পুরে দিচ্ছে আর আমি ঘুমের ঘোরে তা খেয়ে নিচ্ছি।সবকিছু আমার কাছে ধোঁয়াসা লাগছে।কিছু বুঝতে পারছি না। আজ রাতে আবার এই স্বপ্ন।
কিন্তু পরের দিন কলেজে যা হলো তার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। পরেরদিন____
#চলবে
আবরার আওসাফ ও আয়িশ কে এক নাকি ভিন্ন 🤔?তা এখন ভাবার বিষয়। আমি এখন কিছু বলবো না🙃।পুরোটা গল্পের মধ্যেই জানতে পারবেন।