#মেঘে_ঢাকা_চাঁদ
সায়লা সুলতানা লাকী
“আসসালামু আলাইকুম খালামনি। ওয়াও! হোয়াট এ টাইমিং। ইয়েস, পারফেক্ট টাইমিং । জলদি করে আমাকেও নাস্তা দাও। বড্ড ক্ষুধা লেগে গেছে, সকাল সকাল তোমার এখানে আসতে গিয়ে না খেয়েই বের হয়েছি। আর গেইটের কাছে আসতেই তোমার খিচুড়ির ঘ্রাণ আমার নাসারন্ধ্রকে এট্যাক করে বসল,তাই হয়তো ক্ষুধাটা একটু বেশিই মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। নচেৎ এখন এত ক্ষুধা লাগার কথা না আমার। বাসায় থাকতেতো একটুও ক্ষুধা টের পাইনি।” একদমে কথাগুলো শেষ করে খিল খিল করে হাসতে লাগল লাবন্য । যদিও জানে রেহেনা বেগম ওর কথা শুনে রাগে গজগজ করে উঠবেন, তবুও বেশ মজা নিয়ে একটু বেশিই বকবক করল। কেন জানি ওর বড় খালাকে ক্ষেপাতে ভালো লাগে। বেচারি যখন রেগে যান তখন লাল হয়ে যায় তার চেহারা, এমনিতেই সব দোষ নিয়ে ফেলেন রেশমা মানে লাবন্যের মায়ের উপর, তখন আরও বেশি জোর দেন সেখানেই । জ্ঞান হওয়ার পর থেকে দেখে আসছে বড় খালা ওর আম্মুকে দুইচোক্ষে দেখতে পারেন না। তার একটা বিশেষ কারনও অবশ্য ও জানে। কিন্তু সেই কারনটাকে মিটিয়ে মায়ের বড়বোনের মনকে নরম করার কোন মেডিসিন ওর জানা নাই। মাঝে মাঝে আম্মুর জন্য এই এক কারনে বড় মায়া হয় লাবন্যের।
“এ আর নতুন কি? তোর মা’তো হলেন একজন জমিদারনী, তার কি আর এসব দিকে খেয়াল আছে? এমন ঢিংগি মেয়ে যে সাত সকালে না খেয়ে বের হয়ে অন্যের ঘরে এসে প্লেট নিয়ে বসছে, আছে কি সেদিকে কোনো খেয়াল তার ? এত দিনে যার হুঁশ হয়নাই তার আর হবে কেবল মরলে!” শুরু হয়ে গেলেন রেহানা বেগম, রেগেমেগে একেবারে টমেটো হয়ে গেলেন মুহুর্তেই।
“আহ রেহেনা! কি শুরু করলা এই সকালে? একটু থামাতো?”
নাজমুল সাহেব রেহেনা বেগমের বর, ব্যবসায়ী মানুষ, কাজের কথা ছাড়া অকাজের কথা একদমই পছন্দ করেন না। নাস্তার টেবিলে এসে স্ত্রীর এমন ঝাঁঝালো ক্যাটক্যাটানী শুনে বিরক্ত হয়ে উঠলেন।
“আরে খালুজি, থামাচ্ছেন কেন? খিচুড়ির সাথে খালামনির এমন ঝাল ঝাল বাক্য বড় টেস্টি হয়। দুইটা একসাথে না হলে মজা পাবেন না!” খেতে খেতে লাবন্য নাজমুল সাহেবের দিকে তাকিয়ে বলে আবার একটু হাসল।
লাবন্যের কথা শুনে ওর খালুজি একটু মুচকি হাসি দিয়ে নাস্তা শুরু করলেন। কোন উত্তর যে দিবেন না তা লাবন্য ভালো করেই জানে।
“তা এই সাত সকালে কী মনে করে আসা হল এই বাসায় তাইতো এখনও বললি না ? বাসা থেকে নাস্তা করে ধীরে সুস্থে আসলে কি এমন ক্ষতি হতো তোর? ”
“সুযোগ দিয়েছো যে কারন বলব? এসেছি ভার্সিটি যাব বলে। প্রথম দিন যাব, তাই একা একা তেমন একটা সাহস পাচ্ছিলাম না। সকাল সকাল না আসলে যে তোমার ছেলের দেখা মিলবে না। ভাইয়াতো আর আমার মত এভারেজ স্টুডেন্ট না, তারতো আবার টাইম টেবিল আলাদা। সেতো আর আমার টাইম টেবিল মেনে চলবে না। তার সাথে চলতে হলে, তার টাইম টেবিল মেনে চলতে হবে। তাইতো সকালের এত প্রিয় ঘুম নষ্ট করে ছুটে আসতে হল এখানে।”
” এই এত বকবক করিস মুখ ব্যথা করে না? তোর মা কি শাসনটাও করতে জানে না ? আর তুই ভার্সিটি যাবি কেন? তুই কি ভার্সিটিতে পড়িস নাকি? তোর মায়ের কি কোন ধ্যান নাই তোদের উপর? মেয়ে ভার্সিটি কেন যাবে তা প্রশ্নও করেনি একবার?”
“আহা! খালামনি তুমি শুধু শুধু আম্মুকে বকছো, আম্মু জানেতো! আম্মু যাওয়া আসার ভাড়াও দিয়ে দিয়েছে।”
” ওই টুকুতেই দায়িত্ব শেষ। এসব বলে আর কি হবে? কিন্তু তুই কেন যাবি? তুইতো মাত্র এইচ এস সি পাশ করলি!”
” ভার্সিটিতে না গেলে কি এডমিশনের কার্যক্রম চালানো যায় খালামনি? কোথায় এডমিশন টেস্টের সীট পড়বে? কোন পথে গেলে টাইম মতো গিয়ে পরীক্ষার দিন পৌছানো যাবে। ডীন অফিসে ——”
“ব্যস ব্যস ব্যস হয়েছে হয়েছে, আর ফর্দ শোনাতে হবে না। টেস্ট পরীক্ষা দিলেই কেউ চান্স পেয়ে যায় না। ভার্সিটিতে পড়া অত সহজ না। এর জন্য স্টুডেন্টের পাশাপাশি তাদের বাবা মায়েরও কন্ট্রিবিউশান থাকতে হয়। তোর বাবা মাতো নিজেদের নিয়েই ব্যস্ত তোদেরকে দিবে সে সময় তাদের কই? ধাড়ি মেয়েকে টাকা দিয়ে আমার ঘাড়ে ফেলে সে নিশ্চিন্তে প্রেম করে বেড়াচ্ছে। কী তার —–”
“রেহেনা এবার কিন্তু বাড়াবাড়ি হচ্ছে! বয়সে চুলে পাক ধরলেও মুখের লাগামের কোন পরিবর্তন হয়নি। ডিজগাস্টিং। ” নাজমুল সাহেব একটু উত্তেজিত হয়েই কথাটা বললেন। আর তাতে রেহানা বেগম কেমন চুপসে গেলেন।
ডাইনিংএ বাবা মায়ের উচ্চবাচ্য শুনে হিমেল রুম থেকে দৌড়ে বের হয়ে এল। মাথায় মনে হয় পানি দিয়েছিল তা চুল বেয়ে টপটপ করে পড়ছিল। ওর অবস্থা দেখে রেহানা বেগম এবার ছেলের দিকে নজর দিলেন
“কিরে বাবু, চুলটাও ভালোমতো মুছিস নাই? দেখো কি কান্ড! চুলের পানিতেতো শার্টটা ভিঁজে গেছে।”
“না মানে আম্মু তোমাদের—” আর বলতে পারল না লাবন্য খাবার রেখে লাফিয়ে উঠে বলতে শুরু করল
“খালামনি তুমি ভেবো না। আমি দেখছি। তুমি বরং ভাইয়াকে নাস্তা করাও, বাকিটা আমি দেখছি।” বলতে বলতে হিমেলের রুমে ঢুকে গেল।
“আব্বু ইনসুলিন নিয়েছিলে?”
“হুমম, আমাকে নিয়ে ভাবতে হবে না। তুই আগে নিজেকে নিয়ে চিন্তা কর। পরীক্ষা শেষে দেশে থাকবি নাকি হোমায়রার কাছে চলে যাবি?”
“আব্বু আগে পরীক্ষাটা শেষ করি, পরে এই চিন্তা করা যাবে।”
” ঠিক আছে, এখন নাস্তা কর। আমি গাড়ি নিয়ে যাচ্ছি, তুই কিন্তু বাইক নিয়ে বের হবি না। রিকশা নিয়ে যাবি ভার্সিটিতে।”
” আব্বু তুমি কেন যে আমাকে ট্রাস্ট করো না তা বুঝি না। এতটা ভয় পুষো মনে? আবার আমেরিকাতেও পাঠাতে চাও। একবারেই মিলে না হিসাব।”
“এত হিসাব মিলাতে হবে না। আবেগের বশে তোকে দেশে রেখে তোর ভবিষ্যৎ নষ্ট করার মত নির্বোধ আমি না। সব কিছুর উর্ধ্বে সন্তানের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ। আচ্ছা এসব নিয়ে পরে কথা হবে এখন আমি যাই। ” কথা আর বাড়তে দিলেন না, নাজমুল সাহেব বের হয়ে গেলেন। হিমেল খাওয়া রেখে ওর আব্বুর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইল।
“সবাই শুধু নিজের স্বার্থ দেখে, কেউ আমার কথা ভাবে না। বড় মেয়ে আমেরিকা, ছোট মেয়ে মালয়েশিয়া এখন ছেলেকেও দূরে পাঠানোর পায়তারাতে আছে সবাই । আমার কথা শুনবে এমন কেউ কি এই পৃথিবীতে আছে? ” কথাটা শেষ করে রেহেনা বেগম ফ্যাঁচফ্যাঁচ করে কাঁদতে লাগলেন।
“আম্মু এখন আবার তুমিও শুরু করলা?”
“এই ভাইয়া তোমার খাওয়া শেষ হয়েছে। জলদি আসো, লেট হচ্ছেতো।” হিমেলের রুম থেকে চিৎকার করে কথাটা বলল লাবন্য।
“লাবন্য এত সকালে এ বাসায় আসছে কেন? ওদের বাসায় কি কোন সমস্যা হয়েছে নাকি?” হিমেল খাওয়া শেষে উঠতে উঠতে ওর মা’কে জিজ্ঞেস করল।
“সমস্যা আর কি? ও নাকি তোর সাথে ভার্সিটি যাবে, তাই আসছে।”
“আমার সাথে? কেন?”
“ও পথ চিনে না, তাই। মেয়েটা একেবারে মায়ের মতো হইছে ঢংয়ে ভরা ডিব্বা একটা।”
“হা হা হা, আম্মু তুমি সবসময় ওর কথায় রেগে যাও বলে ও তোমাকে আরও বেশি রাগায়। ছেড়ে দাও না!”
“কাকে ছাড়ব? আবার কখন কি অঘটন ঘটায় তার অপেক্ষায় থাক। এই মেয়ে যেই মায়ের পেটে হইছে তা কি আর কোনদিন ভালো হবে নাকি? এইটাও ওর মায়ের মতোই খারাপ হবে। দেখে নিস। তুই নিজে একটু সাবধানে থাকিস ওর থেকে , বুঝলি।”
“হুমম” বলতে বলতে ও রুমে ঢুকল, রেহানা বেগমও পেছন পেছন আসলেন। খালা যে আসবে তা লাবন্য জানতো। এমনটাই করে সবসময়, ওকে যে সন্দেহ করে তা ওর অজানা না। আজ যেহেতু হিমেলের সাথে বাহিরে যাবে তাই আর খালাকে ক্ষেপালো না। বেশ ভদ্র মতোই হিমেলের জন্য একটা শার্ট ইস্ত্রি করে সামনে এগিয়ে দিল।
“নাও ভাইয়া একটু জলদি চেঞ্জ করে নাও, ইস্ত্রির জন্য ধন্যবাদ বলার দরকার নাই। আজ আমার প্রয়োজন বেশি তাই তোমার জন্য এতটুকু কষ্ট করলাম।”
“কিন্তু আমি চেঞ্জ করব কেন?”
“কি সাংঘাতিক! তুমি বুঝি ভেজা শার্ট পরে ভার্সিটি যাবা?ঠান্ডা লেগে যাবে না! দুদিন পর পরীক্ষা, এতটা রিস্কে যাওয়ার কি দরকার, চেঞ্জ করে আসো।” বলে ইচ্ছে করেই রুম থেকে বের হয়ে গেল। রেহানা বেগমও লাবন্যের সাথে সাথে বের হয়ে এলেন, ভাগ্নির কথায় যুক্তি আছে তাই আর কথা বাড়ালেন না ওখানে।
“শোন এসব ক্ষেত্রে এর ওর থেকে সাহায্য না নিয়ে নিজের মা বাবাকে সাথে নিবি। এতে তোর জন্যই ভালো হবে। দিনকাল ভালো না, কখন কি অঘটন ঘটে তাতো আর বলা যায় না। তোর মা’কে বুঝিয়ে বলে এরপর থেকে সঙ্গে নিয়ে বের হবি।” রেহানা বেগম বেশ শান্ত গলায় কথাটা বুঝিয়ে বললেন।
“কই চল!” ব্যাগ কাঁধে নিয়ে হিমেল বের হয়ে এল। আর তাই রেহেনা বেগমের কথার কোন উত্তর না দিয়ে মাথা দুলিয়ে সম্মতি জানিয়ে হিমেলের পেছনে পেছনে বের হয়ে এল লাবন্য ।
“কি ব্যাপার তুমি বাইক বের করছো না যে”?
“আব্বুর বারন আছে।”
“কি আশ্চর্য তুমি এমন কেন? সবসময় খালামনি আর খালুজির কথা মতো চলো কেন? মাঝে মাঝে নিজের ইচ্ছে মতো চলে দেখো কেমন মজা লাগে।”
“আমি এমনই। তুই কি খালামনির কথা শুনিস না?”
“মাঝে মাঝে শুনি না, যেমন আজ শুনি নাই। আজ আমার কথা ছিল রৌশনকে রেডি করিয়ে দেওয়া, দাদিকে গোসল করিয়ে দেওয়া। অথচ আমি দায়িত্ব রেখে পালালাম।” বলেই ফিক করে হেসে উঠল।
“মানে?”
” মানে পরে বলছি আগে বলো আমরা কি হেঁটে হেঁটে যাব?”
“না রিকশায় যাব।”
“ওয়াও! এটাও দারুণ হবে। ও আল্লাহ শুকরিয়া শুকরিয়া। ” বলে খুশিতে গদগদ করতে লাগল। হিমেলের সেদিকে কোনো খেয়াল নেই, ও একটা রিকশা ডেকে তাতে উঠে বসল সাথে সাথে লাবন্যও উঠে বসল।
“এখন বল কোথায় যাবি, কি কি কাজ করতে হবে ? ”
“কার্জনহলে যাব, ঘাটে বসে পানিতে পা ভেঁজাবো, আমার এই নীল ওড়নাটা মেলে দাঁড়াবো আর তুমি বকুল গাছটার ডাল নাড়িয়ে ফুল ফেলবে,অনেক ফুল যাতে আমার ওড়না ভরে যায় ফুলে।”
“কি বলছিস এগুলো? তোর মাথা ঠিক আছে? তুই আর্টসের স্টুডেন্ট, তুই কার্জন হলে যাবি কেন?”
“কি আশ্চর্য এখানে সায়েন্স আর্টস আসছে কোত্থেকে? আমি যেমনটা স্বপ্নে দেখেছি তেমনটাইতো করবো!”
“স্বপ্ন মানে?”
“হুমম, ভোর রাতের দিকে স্বপ্ন দেখলাম ঠিক এমনটাই, তুমি এই শার্টটা পড়ে বকুল গাছটার ডাল ধরে ঝাঁকি দিচ্ছো আর ঝুরঝুর করে ফুল পড়ে আমার আঁচল ভরে যাচ্ছে। আমি ঘাটে বসে পা ভেজাচ্ছি আর তুমি পাশে বসে বাদাম ছিলে ছিলে আমার মুখে তুলে দিচ্ছো। ” কথাটা বলেই হিহিহি করে হেসে উঠল লাবন্য।
“তোর মাথা ঠিক আছেতো!”
“না নাই, জানো? এই স্বপ্নটা দেখার পর তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমি আম্মুর পারমিশন ছাড়াই সক্কাল বেলা সক্কালে মিথ্যা বলে বাসা থেকে বের হয়ে গেছি। নিজের ডিউটি ভুলে গেছি। খালামনির সব ধরনের দৃষ্টি উপেক্ষা করেছি, আলমারি ঘেটে এই শার্টটা বের করে ইস্ত্রি করেছি। সব ধরনের ভয় সহ্য করে এখন স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে নেমেছি। বলোতো আমার সাহস কেমন? দারুন না?” এবারও লাবন্য কথা শেষ করে হাসতে লাগল।
হিমেল চুপ হয়ে ওর কথাগুলো শুনছিলো কোন উত্তর দিচ্ছিলো না দেখে লাবন্য আবারও বলল
“কি খুব অবাক হচ্ছো আমার সাহস দেখে? আজ আব্বুর পকেটও মেরেছি, পুরো তিন হাজার টাকা। কারন আজ দুপুর পর্যন্ত ঘুরবো। এরপর তোমাকে নিয়ে কাচ্চিভাইতে হানা দিব পেটকে শান্ত রাখতে। এক কথায় বলতে পারো আমার স্বপ্ন বাস্তবায়নে তোমার কন্ট্রিবিউশানের জন্য ট্রিট দিব। বল দারুন আয়োজন করছি না? সাহসটা কেমন? ভয় পাইছো?”
“নাহ, তুইতো এমনই। তুই কি আর বদলাবি কখনও?”
“জীবনও বদলাবো না। যতদিন এই দেহে আছে প্রান ততদিন আমি এভাবেই থাকতে চাই।”
“আম্মুকে রাগানোটা অন্তত ছাড়! তোর মুরুব্বি হয়, তাকে এভাবে সবসময় ক্ষেপাস কেন?”
“ভালো লাগে, খালামনি যে সবসময় আম্মুর উপর রেগে থাকে, তা আমি আর আম্মু খুব উপভোগ করি। প্রথম প্রথম কষ্ট পেতাম। কিন্তু আম্মু একদিন বললেন আমরা মানুষ যাকে বেশি ভালোবাসি তার প্রতি বেশি জন্মে অধিকার, রাগ, ক্রোধ। আম্মুকে খালামনি অনেক বেশি ভালোবাসে আর তাই আম্মুর প্রতি তার এত বেশি রাগ,এত বেশি ক্ষোভ। ”
“খালামনির সেদিনের সেই ডিসিশন আম্মু মন থেকে মানতে পারেনি এখনও। বিশ্বাস একবার ভেঙে গেলে তা আর জোড়া লাগে না। স্নেহের বিশ্বাসটা আম্মুর এখন জিরোর কোটায়। আপুদেরকেও তাই বিশ্বাস করতে চায়নি।”
“বাদ দাও আজ তুমি শুধু আমার স্বপ্ন পূরণ করে দাও।
কয়দিন পর আমার পরীক্ষা, আর তুই এখনই এমন স্বপ্ন দেখলি? আমার টাইম লস হচ্ছে। আমি ফিরব।”
“প্লিজ না, তুমি এমনটা করবে না। তাহলে আমি প্রতিদিন তোমাদের বাসায় এসে তোমাকে বিরক্ত করব।তখন আরও বেশি টাইম কিল হবে। প্রমিজ করছি, আজ আমার স্বপ্নটা পূরণ করে দাও আগামী সাতদিনে আমার ছায়াও তুমি দেখবে না।”
“প্রমিজ রাখতে পারবি?”
“পারবো, জানোতো আমি সব পারি।”
“না পারিস না, ভালো হতে পারিস না। নিয়ম করে আমাকে জ্বালানো ভুলতে পারিস না।”
হিমেল কথাটা বলে ঘাড়টা ঘুরিয়ে লাবন্যের দিকে তাকালো আর তখনই লাবন্য কিছু একটা উত্তর দিতে হিমেলের দিকে ফিরতেই চোখাচোখি হল দুজনের আর তখন একসাথে হা হা হা করে হেসে উঠল দুজন।
চলবে।