#মেঘে_ঢাকা_চাঁদ (পর্ব ৩)
সায়লা সুলতানা লাকী
প্রতিদিনকার মতো আজও রেশমা ওর বর বাড়ি ফেরার আগে আলমারি থেকে সুন্দর একটা শাড়ি বের করে পরে নিল। আয়নার সামনে বসে নিজেকে গোছগাছ করতে পাল্ফে হালকা একটু পাউডার নিয়ে গালে ছোঁয়াতেই লাবন্য মায়ের রুমে ঢুকল। সাধারণত এই সময়ে কেউ রুমে আসে না। আজ হঠাৎ করেই মেয়েকে দেখে রেশমা নিজের কাজ করতে করতেই মেয়েকে জিজ্ঞেস করল “কি কিছু বলবি? কোনো কিছুর দরকার বুঝি?”
মায়ের প্রশ্ন শুনে লাবন্য ঠোঁট বাঁকিয়ে উত্তর দিল “উঁহু”। কিন্তু ওর চোখ মায়ের উপর আটকে আছে। আর তা রেশমার চোখকে এড়াতে পারল না। চোখে একটু কাজল দিতে দিতে বলল “মিথ্যে বলছিস কেন? তোর চোখ বলছে তুই কিছু বলবি। আমার সাথে ঢং না করে বলে ফেল।”
“আচ্ছা আম্মু তুমি প্রতিদিন আব্বু আসার আগে নিজেকে সাঁজাতে বসো কেন? ”
“এটা কোন প্রশ্ন হল? আমার সাঁজতে ভালো লাগে তাই সাঁজি।”
“উঁহু, তুমি কখনও নিজের জন্য সাঁজো না। তুমি সবসময় আব্বুর জন্য সাঁজো। কিন্তু কেনো?”
“ধরে নিলাম তোর কথায় ঠিক, আমি নিজের জন্য না তোর আব্বুর জন্য সাঁজি, তাতে সমস্যা কি? তোর আব্বুর সামনে নিজেকে পরিপাটি করে প্রেজেন্ট করতে ভালো লাগে।”
“তোমার কখনও নিজের জন্য সাঁজতে ইচ্ছে করে না? ইচ্ছে করে না তুমি সারাদিন যেভাবে থাকো আব্বু অফিস থেকে এসে তোমাকে সেই রুপেই দেখুক? কেন সবসময় তার সামনে তোমাকে পটেরবিবি সেঁজে থাকতে হবে? কেন আব্বু তুমি যেমন তেমন রুপে দেখে না?”
“তোর আব্বু সারাদিন বাহিরে পরিশ্রম করে বাড়ি ফিরে একটু স্বস্তির আশায়, একটু ভালোবাসা পাওয়ার আশায়। বাসায় ফিরে যখন দেখে আমি শুধু তার জন্য সেঁজেগুজে বসে আছি, তখন তার মনে এক অন্যরকম আনন্দ খেলে যায়। রুমে ঢুকেই প্রান খুলে একটা হাসি দেয়। বলতে পারিস তোর আব্বুর সেই হাসিটাই আমার বেঁচে থাকার অক্সিজেন। ওই হাসিটা দেখার জন্য সাঁজি। সেটা কি নিজের জন্য হলো না?”
“তুমিওতো সারাদিন কত কত কাজ কর, তুমিওতো আশা করতে পারো আজ তোমার বর এসে তোমাকে নিয়ে ঘুরতে যাক, বাহিরে খাক। তোমাকে কোন কাজ করতে না দেক। তোমার ক্লান্ত পরিশ্রান্ত চেহারাটা দেখে বড় ভালোবেসে তোমার এলোমেলো অবস্থাকেই আপন করে নেক। তোমার পরিপাটি রুপ না তোমার সারাদিনের পরিশ্রান্ত রুপটাকে দেখে প্রান খোলা হাসিটা হাসুক।”
“তোর আব্বু বুঝি আমাকে নিয়ে বাহিরে গিয়ে বেড়ায় না? বাহিরে ডিনার করে না?”
“আহ আম্মু! আমি কি বলছি তুমি তা বুঝেছো। তারপরও এড়িয়ে যাচ্ছো কেন? তুমি সবসময় দিয়েই যাও কেন, কিছু পাওয়ার আশা কেন রাখো না? তুমি এরপর থেকে আর সেঁজে অপেক্ষা করবে না। দেখব তখন আব্বুর রিয়াকশনটা কেমন হয়?”
“ভালোবাসার মানুষকে নিয়ে গেইম খেলতে হয় না। ভালোবাসায় হিসাব নিকাশ চলে না। তোর আব্বু খুশি হয় আমি গুছিয়ে থাকলে, যদি কখনও দেখে আমি অগোছালো যদি সেদিন আমাকে দেখে তার ভূবণ ভোলানো হাসিটা না হাসে তবে যে আমি সহ্য করতে পারব না। আমি যে অতটা স্ট্রং না।তোর আব্বুকে ভালোবেসে আমি ঘর ছেড়েছি। তার ভালোবাসা ছাড়া যে আমি বড় অচল।”
“হাসালে আম্মু, ভালোবাসা কি এত ঠুনকো! তুমি একদিন অগোছালো থাকলে আব্বু তোমাকে ভালোবাসতে ভুলে যাবে? তোমাকে তার হাসি উপহার দিতে ভুলে যাবে? কি অদ্ভুত কথা বলছো?”
“ভালোবাসা আসলেই বড় অদ্ভুত। যেখানে ভালোবাসা আছে সেখানে ভয় আছে। ভালোবাসার মানুষের ভালোবাসা হারানোর ভয়। আর এই ভয়, যে ভালোবাসে তার মনকে একেবারে দুর্বল করে দেয়।”
“কাম টু দা পয়েন্ট ম্যাডাম, আমার মাঝে মাঝে মনে হয় তুমি মনের দিক থেকে আব্বুর প্রতি এতটাই দুর্বল হয়ে গেছো যে আব্বু এখন তোমাকে দিয়ে তার স্বার্থ সিদ্ধি করে নিচ্ছে।”
“ছি! এসব কি চিন্তা করিস নিজের বাপকে নিয়ে?”
“এক্সকিউজ মি, আমি আমার বাপকে নিয়ে ভাবছি না। আমি এক অন্ধ প্রেমিকার প্রেমিক সম্পর্কে কথা বলছি।”
“কি আশ্চর্য! তুই কবে এত পেঁকে গেলি? আমিতো টেরই পেলাম না।”
“ম্যাডাম আপনি কিন্তু কথা ঘুরাতে চাচ্ছেন। প্লিজ এটা করবেন না। আপনি আমার প্রশ্নের উত্তর দেন। অনেকেই আপনার আর আপনার বরের প্রেমকে আদর্শ মনে করে। তাদের জ্ঞানের স্বার্থে আপনাকে এসব বিষয়টা ক্লিয়ার করা উচিত। ”
” মাই সুইট লাভ , কি হচ্ছে এগুলো বলতো?। যা নিজের পড়া পড়তে যা। একটু পরেই তোর আব্বু আসবে। সময় নষ্ট করিস না।”
“আম্মু শোনো আমি উত্তর না পেলে কোথাও যাবো না। কাবাব মে হাড্ডি হয়ে এখানেই থাকব।তোমার রোমান্স আজ এখানে শেষ হবে বলে দিলাম।”
“শোন ভালোবাসা যত্ন চায়। যত্ন ছাড়া ভালোবাসায় মরিচা পড়তে পড়তে একটা সময় নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। একবার ভালো বাসছি ব্যস কাজ শেষ বিষয়টা তেমন না। একে প্রতিনিয়ত ঘষামাঝা করতে হয় তবেই ভালেবাসা নতুনের মতো চকচক করে। আমি শুধু সেই যত্নটাই করে যাচ্ছি ভালোবাসাকে তাজা রাখতে।”
“প্রশ্নতো সেখানেই, তুমিই কেন করছো আব্বু কেন করছে না?”
“কে বলে তোর আব্বু করে না? আমি যেদিন বাড়ি থেকে পালিয়ে আসছি। তোর আব্বু আমাকে শক্ত করে আঁকড়ে ধরেছেন। একটু সময়ের জন্যও কখনও নিজেকে একা ভাবতে দেয়নি। প্রচন্ড পরিশ্রম করেছে আমার চাহিদা মেটানোর জন্য। এই পরিবারের কাউকে কোন দিন একটা কটু কথা বলতে দেয়নি আমাকে তোর আব্বু। এখনও সেই প্রথম দিনকার মতোই আমার মুখটা দেখে প্রান খুলে হাসে। এখনও দিনশেষে দেহমনের সকল ক্লান্তি আমার কোলে মাথা রেখে ভুলে।”
“যদি বলি এসবই আব্বু তার স্বার্থের জন্য করেছেন। তার পুরোপরিবারের দায়িত্ব তোমার কাঁধে চড়িয়ে নিজে সবার চোখে মহান সেঁজেছেন। তার মায়ের সেবাযত্ন করানোর জন্য একজন সার্বক্ষণিক —–”
আর বলতে পারল না লাবন্য। রেশমা মেয়ের মুখ চেপে ধরল। কারন তখনই ডোরবেলটা বেজে উঠল।
“একদম চুপ। আর কোনো প্রশ্ন। না। এখন চুপ করে নিজের রুমে যা। আর নিজের বাপকে নিয়ে এত নেগেটিভ চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে দে। বুঝলি!”
“হুমম বুঝলাম। ও কে বাই। গুড নাইট লাভ বার্ড উম্মা”। বলে লাবন্য দৌড়ে মায়ের রুম থেকে বের হয়ে এল। নিজের রুমে এসে দরজাটা আটকিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়ল। মনটা শান্ত হয়নি। এত অস্থির মন নিয়ে পড়তে বসার নামে ঢং করতে ইচ্ছে করল না। সাইড টেবিল থেকে মোবাইলটা হাতে নিয়ে একবার ভাবলো হিমেলকে একটা কল দিতে। মনটাকে থামানো যাচ্ছে না, বারবার ইচ্ছে হচ্ছে ওকে জিজ্ঞেস করতে হিমেল লাবন্যের অগোছালো অবস্থাকে কিভাবে নিবে? যদি কোনদিন ওর গুছিয়ে থাকতে ইচ্ছে না হয় সেদিন কি ওর প্রতি ভালোবাসা কমে যাবে? কেন সবসময় ভালোবাসা পাওয়ার জন্য ওকেই ছটফটাতে হবে কেন হিমেল নিজ থেকে ভালোবাসা দিয়ে ওকে ভরিয়ে দিবে না? ওর মায়ের মতো কি সব স্ত্রীই স্বামীর ভালোবাসার জন্য কিছু না কিছু করে? খালামনি খালুজির মন ভালো করার জন্য প্রতিদিন নানান পদের রান্না করেন। কেন এমন হবে? কোন দিন হয়তো রান্না করতে ইচ্ছে নাই হতে পারে, তাতে কি খালামনির সাথে কথা বন্ধ করে স্টাডিরুমে গিয়ে থাকতে হবে খালুজিকে। এমন কেন করেন খালুজি? এগুলির উত্তরটা হিমেলের কাছে আছে কি না তা জানা দরকার। ভাবতে ভাবতে একটা কল দিল কিন্তু হিমেল রিসিভ করল না। পরক্ষণেই মনে পড়ল ও কথা দিয়েছে পরীক্ষার আগে আর ডিস্টার্ব করবে না। তাই হয়ত হিমেল কল রিসিভ করল না। আবোল তাবোল ভাবতে ভাবতেই শুনতে পেল ডাইনিংএ আব্বু আম্মুর মিষ্টি মধুর ফিসফিস গল্প আর মায়ের রিনরিনে হাসির আওয়াজ। ছোটবেলা থেকে এই পরিচিত শব্দ শুনে শুনেই ঘুমিয়েছে। আজও সেই শব্দ শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়ল লাবন্য।
ঘুম থেকে উঠে নাস্তার টেবিলে বসতেই দেখল রৌশন আর ওর আব্বু বাসায় ঢুকল। দেখেই বুঝতে পারল তারা দুজন ভোর সকালে মাঠে গিয়েছিলেন খেলতে। ঘেমে টেমে একাকার হয়ে এসেছে দুজনই। ছুটির দিনগুলোতে লাবন্যের আব্বু লিখন তার একমাত্র ছেলে রৌশনকে নিয়ে বের হয় ছেলের প্র্যাকটিসে হেল্প করতে। রৌশন যথেষ্ট ছোট কিন্তু তার ক্রিকেটের উপর প্রচন্ড ভালোবাসা। বাসায় সারাক্ষণই ব্যাট বল নিয়ে ঠুসঠাস করতেই থাকে আর মা রেশমার বকা হজম করতে থাকে। রেশমার টেনশন কখন বল লেগে তার সাজানো ঘরের কোনো কিছু ভেঙে যায়। তাই ছেলেটা বাসার ভেতর তেমন একটা আরামে খেলতে পারে না। প্রায় সময় মায়ের বকুনি খেয়ে গাল ফুলিয়ে বসে থাকে। ছেলের মন খারাপ দেখে তখন আবার রেশমারও মনটা খারাপ হয়ে যায়। তাই বহু বলে কয়ে লিখনকে রাজি করিয়েছে প্রতি শুক্রবার সকালে ছেলেকে নিয়ে বড় মাঠে গিয়ে ক্রিকেট খেলতে। রেশমার আবদার রাখতে লিখনও ছেলের সাথে গিয়ে খেলে। প্রথম প্রথম বিরক্ত লাগলেও এখন বেশ মজা পায়। ছেলের আনন্দ তার বাবাকেও এখন আন্দোলিত করে ফেলেছে।
“আপি এখনই খাওয়া শুরু করো না, আমরা আসি তারপরও একসাথে খাবো”। বলতে বলতে রৌশন নিজের রুমে ঢুকে গেল। লাবন্যের উত্তরটা শোনার অপেক্ষা করল না। এদিকে ওর আব্বুও নিজের রুমে চলে গেল আর তার পিছে পিছে রেশমাও সুরসুর করে চলে গেল। লাবন্য টেবিলে বসে চুপচাপ সব দেখছিলো হঠাৎ করেই ওর দাদির দিকে তাকিয়ে বলল
“আচ্ছা দাদি তোমার কি মনে হয় না আম্মু একটু বেশিই আব্বুর প্রতি গলে গেছে! আম্মুর আরেকটু স্ট্রং হওয়া উচিত ছিল?”
“কি যা তা বলিস? রেশমা ঠিকই আছে, তোদের এসব স্বাধীনচেতা মন-মানসিকতার ছোঁয়া ওর পাওয়ার দরকার নেই। ও যেমন আছে তেমনই ভালো।”
“সুবিধাবাদী সিনিয়ার সিটিজেন তুমি, আম্মুর ভিতর যদি স্বাধীনচেতা ভাবটা ফুটে উঠে তবে তুমি অনেক বিপদে পড়বে তাই আম্মুর ভেতর কোন পরিবর্তন চাও না। একবার কি ভাবো না তোমাকে মরতে হবে, কারউ কাছে গিয়ে তোমার কৃতকর্মের জন্য জবাবদিহিতা করতে হবে। উত্তর কি সব গোছানো হয়েগেছে তোমার ? না থাকলে গুছিয়ে নাও সময় কিন্তু অতি সন্নিকটে।” বলে খিল খিল করে হেসে উঠল। কথা আর বাড়তে পারল না। রৌশন এসে যোগদিল ডাইনিং টেবিলে। সাথে সাথে লাবন্যের ধ্যান চলে গেল ভাইয়ের দিকে
“এই রুশ, তুই এমন করলি কেন? আমার সাথে ব্রেকফাস্ট করতে তোর ইচ্ছে থাকতে পারে তা দোষের না৷ কিন্তু আমার ইচ্ছেটা আছে কি না তা একবার জানতে চাইলি না কেন? নিজের ইচ্ছেটা আমার উপর চাপিয়ে দিলি কেন?”
“আপি, প্লিজ তুমি এখন আমার সাথে ঝগড়া লাগাইও না। অনেক ক্ষুধা লেগেছে আগে নাস্তা করতে দাও।”
“না এখন আমি তোকে নাস্তা করতে দিব না। তুইও এখন অপেক্ষা কর। যেমনটা আমি ক্ষুধা নিয়ে তোর জন্য অপেক্ষা করেছি।”
“আপি প্লিজ—”
“কি হল তোদের আবার?” বলতে বলতে লাবন্যের আব্বু আম্মু এসে যোগ দিলেন নাস্তায়। রেশমা সবার প্লেটে খাবার তুলে দিয়ে নিজেও বসলেন চেয়ার টেনে।
“কিরে লাবু তোর প্রিপারেশন কেমন চলছে? এডমিশন টেস্ট কবে?” খেতে খেতেই লিখন জিজ্ঞেস করল
“প্রিপারেশন দিয়ে কি হবে, আমিতো ঢাকা ভার্সিটিতে ভর্তি হব না।”
“কেন ?”
“কারন চান্স পাব না।”
“আগেতো পরীক্ষাটা দে, দেখ রেজাল্ট কি আসে? চান্সতো পেয়ে যেতে পারিস।”
“সরি আব্বু, আমার ক্ষমতা নিয়ে কোন রিস্কে যাওয়ার মতো সৎসাহস নাই। বলতে পারো আমি খুব ভীতু। যদি চান্স না পাই তবে নিজের আত্মবিশ্বাস হারাবো। বুঝবো আমি কোন কাজের না। এত বড় গেইম খেলা আমার দ্বারা সম্ভব না।”
“আশ্চর্য, লাবন্য সব কিছু গুছিয়ে এনে এখন বলছিস পরীক্ষা দিবি না।এটা কোন কথা হল? নিজের উপর কনফিডেন্স নাই তোর?”
“ঠিক ধরেছো আম্মু, একেবারেই নাই।নিজের বিশ্বাস হারাতে চাই না। তুমিতো আমার বিষয়টা অন্তত ঠিকঠাক বুঝো! ”
লাবন্যের কথায় রেশমা দমে গেল কিছু একটা বলতে গিয়েও থেমে গেল। মেয়েটা ইদানীং কেমন জানি হয়ে যাচ্ছে, আগেতো এমন করতো না। চুপ হয়ে মেয়েকে নিয়ে ভাবনায় পড়ে গেল।
“তাহলে কোথায় পড়তে চাস?”
“প্রাইভেট ভার্সিটি গুলোর যে কোন একটাতে হলেই হল।”
“ওখানে বুঝি এডমিশন টেস্টের ঝামেলা নেই?”
“আছে, তবে পারব।ওটা নিয়ে ভেবো না। তবে ওখানে খরচটা একটু বেশি হয়।”
“তুই তোর পড়া পড়, খরচ নিয়ে তোকে ভাবতে বলছে কে? ”
“ব্যস, আর কোন ঝামেলা নেই। থ্যাংক ইউ আব্বু, ইউ আর সোওওওওওও সুইট।” বলে লাবন্য আর বসলো না, খাবার শেষ করে উঠে গেল নিজের রুমে।মেয়ের কথায় একটু হেসে লিখনও খেতে খেতে ছেলেটার সাথে ক্রিকেট নিয়ে গল্প শুরু করল।
রেশমা কেন জানি খাওয়ায় মনযোগ দিতে পারছিল না। খাবার নাড়াচাড়া করতে লাগল হঠাৎ শাশুড়ির কথায় ধ্যান ফিরল, তিনি ফিসফিস করে বলতে লাগলেন
“ছোটবৌ এখনও সময় আছে, একটু সাবধান হও, মেয়েকে একটু শক্ত করে শাসন কর। এইসব সিরিয়াল ফিরিয়াল দেখে দেখে বয়সের তুলনায় একটু বেশিই পেঁকে গেছে মেয়ে। কেমন জানি খালি চটাং চটাং কথা বলে। একটু খেয়াল করো, বুঝলা?”
রেশমা শাশুড়ির কথারও কোন উত্তর দিলো না। চুপ করে বসে খাবার নাড়াচাড়াই করতে লাগল।
চলবে।
https://www.facebook.com/groups/Anyaprokash/permalink/1293071254541232/