যখন দুজনে একা পর্ব-১৯

0
3324

#যখন_দুজনে_একা

১৯ পর্ব

নিঝুম আমরা আশেপাশে কোথাও বসি, কোথায় যাচ্ছিস এই দুপুর রোদের মধ্যে ?
কোথাও বসতে ইচ্ছা করছে না একটু অপেক্ষা কর, আর আমি জানি তুই রোদ সহ্য করতে পারিস না।
তাহলে ?
অপেক্ষা কর মাহি প্লিজ !
গাড়ি কুড়িল ফ্লাইওভারের নিচে চলে এসেছে।
তুই কি ঢাকার বাহিরে যাচ্ছিস নাকি, অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করল মাহি ?
এই তো সামনেই বেশিদূরে না !
এত দূর যাওয়ার তো দরকার নেই কি বলবি বল তাড়াতাড়ি নিঝুম!
সাজ্জাদ ভাইদের ফ্যামিলি আসবে আজ বিয়ের ডেট ঠিক করতে ! আপুর বিয়েটা হচ্ছে তাহলে!
মাহি বলল, শুনলাম মা বলল!
আমি আর তুই অনেক অপেক্ষা করেছিলাম আপুর বিয়ের জন্য !
মাহি কোন উত্তর দিল না ! সামনে তাকিয়ে আছে।
আজ যদি সব ঠিক থাকতো তাহলে আপুর বিয়ের পর ই তুই বাসায় বলতি আমার কথা তাই না রে মাহি ?
আমি অনেক আগেই বলতে চেয়েছিলাম নিঝুম, তোর ডিসিশন ছিল কাউকে না জানানোর !
হ্যাঁ আমার মনে আছে মাহি ।আর এর জন্য কারণ ও ছিল তুই জানিস সব।
বড়মামি একবার শিহাব ভাইয়ের জন্য আপুর কথা বলছিল তখন খালাম্মা বলল , তিনি এসব পছন্দ করেন না আত্মীয়-স্বজন এর ভেতরে বিয়ে। যদিও আপুর তখন সাজ্জাদ ভাইয়ের সঙ্গে রিলেশন ! তাই আগ বাড়িয়ে ঝামেলা না হয় যাতে তাই তোকে না করেছিলাম ।
আপুর বিয়ে এত দেরি হবে আর শিহাব ভাই ও চলে যাবে ওভাবে কে জানতো বল মাহি !
মাহি শুধু শুনছিল নিঝুম এর কথা !
গাড়ি ততক্ষণে তিনশ ফিট পার হয়ে পূর্বাচল এ চলে এসেছে !
নিঝুম রাস্তার পাশে দাঁড় করালো গাড়ি !
মাহি বিরক্ত নিয়ে বলল এখানে কোথায় আনলি এই রোদের ভেতরে কে নামবে ?
ঠিক আছে নামার দরকার নেই গাড়িতে ই বসে কথা বলি আমরা !
নিঝুম এভাবে গাড়ি রাস্তার পাশে দাঁড় করিয়ে ভর দুপুরে এখানে থাকাটা কিন্তু কেমন দেখায় ! গাড়িতে বসেই যখন কথা হবে তাহলে ঢাকার ভেতরেও বলা যেতো ?
তাহলে এক কাজ করি চল আজ পূর্ণিমা , রাতে আসি আমি আর তুই ! বাসায় বলব, আমার নাইট ডিউটি আছে !
মাহি নিঝুমের দিকে পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকালো !
ঠিক আছে ঠিক আছে মাহি এভাবে তাকাতে হবে না এমনি বললাম !
আমরা তো আর এভাবে এখন আসতে পারব না তোর ঘরে বিয়ে করা বউ আছে ! অনেক কিছু চিন্তা করতে হবে তোকে।
নিঝুম ,আগেও কি এভাবে আসতাম আমরা ?
না , তুই সব সময় গুড বয় তোর দ্বারা তো সব সম্ভব না !
তুই বড় জোর ছাদ পর্যন্ত যেতে পারিস, বলেই হেসে দিল নিঝুম!
আচ্ছা আমরা কি এসব হেয়ালি কথা বলার জন্য এত দূর এসেছি ?

রুবা গোসল শেষ করে বের হয়ে দেখে মাহি রুমে নেই! নির্ঘাত স্মোক করছে বারান্দায় দাঁড়িয়ে!
এই গরমে বারান্দায় দাঁড়িয়ে স্মোক করতে হবে কেন রুবা ভাবছে !
রুবা বারান্দায় তোয়ালে মেলে দিতে গিয়ে দেখে মাহি তো নেই বারান্দায় !
রুবা চুল চিরুনি করে ঘর থেকে বের হয়ে এলো । রুমের সামনে , পোর্চে মাহি নেই!
রুবা মায়ের ঘরের দিকে এগিয়ে গেল !
মা আসব ভেতরে ?
আসো রুবা !
সাফিয়া বেগম কোরআন তেলাওয়াত করছেন ! রুবা ঘরে ঢুকে বসলো চেয়ারে !
সাফিয়া বেগম ইশারায় কাছে ডাকলো রুবাকে!
রুবা কাছে গেলে ওর মাথায় ফুঁ দিয়ে দিলেন !
কিছু বলবে রুবা ?
মা আপনার ছেলে কোথাও গেছে দেখছি না যে ?
সাফিয়া বেগম বলল,আমাকে তো কিছু বলে যায় নি ! তোমার সঙ্গে তোমাদের রুমে গেল তারপর তো আর এদিকে আসেনি!
রুবা বলল,আমাকে বলল তুমি গোসল শেষ করে আসো তারপর আমি ঢুকব , আমি বের হয়ে দেখি ও রুমে নেই ভাবলাম আপনার রুমে এসেছে !
বাহিরে গেছে নাকি নিচে খবর নাও ?
এক কাজ করো আমার ফোন থেকে ফোন দাও ওকে !
আগে দেখি নিচে আছে নাকি , রুবা বলল?
রুবা রুম থেকে বের হয়ে ফরিদা বুয়া কে জিজ্ঞাসা করলো ।
বুয়া বলল, ভাইজানের গাড়ি তো নিচে দেখলাম !
লাইলি বুয়া বলল, সব গাড়ি তো বাসায় ভাইজান মনে হয় বাসার মধ্যে ই আছে !
রুবা বলল, না বুয়া আমি কোথাও দেখছি না ওকে !
ঐ যে কুদরত ভাই আসে, ফরিদা বলল!
আপনার ভাইজান কে দেখেছেন কুদরত ভাই , রুবা বলল ?
ভাবি ভাইজান তো অনেকক্ষণ হ‌ইব বাইরে গেছে কিন্তু গাড়ি নেয় নাই ! আশেপাশেই আছে কোথাও গেটের বাহিরে দেইখা আসব ?
রুবা বলল , লাগবে না আমি মোবাইল এ কল দিয়ে দেখি !
রুবা আবার শ্বাশুড়ি র রুমে ঢুকলো !
মা ও গাড়ি না নিয়ে বাহিরে গেছে , আশেপাশে কোথাও হয়তো!
এই দুপুর রোদে মাহি এভাবে বের হ‌ওয়ার তো কথা না , সাফিয়া বেগম অবাক হলেন !
রুবা তুমি আমার মোবাইল থেকে কল দাও !
থাক মা আরেকটু দেখি তারপর কল দেই।

নিঝুম বলল, না রে এই জন্য তোকে ডাকি নাই । আমি তো ভেবেছিলাম তুই হয়তো মেসেজ সীন ই করবি না আমার !
আজ মেসেজ সীন না করলে অবশ্য বাসায় যেতাম তোর !
মাহি আই এম সরি বলেই নিঝুম মাহির হাত টা ধরলো !
নিঝুম…
চুপ কর প্লিজ মাহি আগে আমাকে শেষ করতে দে ! নিঝুম মাহির কথার মাঝখানে মাহিকে থামিয়ে দিল।
আমি সেদিন তোর ঐ অবস্থা দেখে সত্যিই পাগল হয়ে গিয়েছিলাম রে ! আমি ভুল করেছি তুই মাফ করে দে !
আমি কোন ভাবেই তোকে আর রুবাকে একসঙ্গে মেনে নিতে পারছি না !
মাহি হাত ছাড়িয়ে নিল ঠিক তখনই তার ফোনে কল করল মা।
মাহি রিসিভ করার আগেই নিঝুম হাত থেকে কেড়ে নিয়ে পেছনের সীটে রেখে দিল মোবাইল টা।
এটা কি হলো নিঝুম , মাহি অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলো !
মা ফোন দিয়েছে !
আমার কথা আগে শেষ হোক তারপর কথা বলবি !
নিঝুম মা , রুবা চিন্তা করছে বাসায় ! আমি কাউকে কিছু বলে আসেনি !
তোর এস‌এম‌এস পেয়ে চলে আসলাম!
রুবা রুবা রুবা মাহি প্লিজ একটু সময় এই নাম টা থেকে বের হ !
আমি বলি যে আমি কোথায় আছি তারপর তোর কথা শুনি , মাহি বলল?
মাহি , কি বলবি তুই এই সময়ে আমার সঙ্গে এখানে ! খালাম্মা তখন সহজ ভাবে নিবে ব্যাপার টা ?
মাহি বলে উঠলো, আচ্ছা ঠিক আছে এখন বল কি বলবি তাড়াতাড়ি !
মাহির ফোনের ভাইব্রেশন সাউন্ড হচ্ছে !
মাহি তুই আমাকে বলে দে আমি তোকে ছাড়া কিভাবে থাকব ? আমি পারছি না রে সত্যি পারছি না !
নিঝুম , আমি তোর কাছে ক্ষমা চাচ্ছি তুই তোর জীবনটা আমার জন্য নষ্ট করিস না প্লিজ!
আমাকে ক্ষমা না কর নিজেকে ভালো রাখ তুই !
না রে তোকে ছাড়া মাহি আমি ভালো থাকতে পারব না মাহি!
এখন আর কি করতে পারি বল তুই নিঝুম আমার কি করার আছে ?
অনেক কিছুই করতে পারিস তুই , একটা কথা বল তোর আর রুবার সম্পর্ক তো আর নরমাল স্বামী স্ত্রীর মত হবে না কখনো ।আমি জানি তুই আমাকে ভুলে রুবাকে বুকে টেনে নিতে পারবি না সে তুই রাগের মাথায় আমাকে যত কথাই বলিস মাহি !
আমি জানি তুই রুবাকে আমার জায়গায় বসাতে পারবি না !
মাহি নিঝুমের দিকে তাকিয়ে আছে !
আমরা তো প্ল্যান করেছিলাম বাহিরে পড়তে যাব রুবা থাকুক খালাম্মা র কাছে আমরা আমাদের লাইফ টা সেট করি !
তারপর নিঝুম , মাহি উৎসুক হয়ে তাকিয়ে আছে রুবার দিকে।
কালকে সারারাত আমি চিন্তা করলাম ব্যাপার টা ! তোকে আমি যে পরিমাণ ভালো বাসি তোর জন্য আমি রুবাকে ও মেনে নিতে পারব !
মাহি হেসে দিল, মানে কি বলতে চাইছিস তুই ?
পরিস্কার করে বল আমি যা বুঝতে পারছি আমার মনে হয় ব্যাপার টা তা বলছিস না তুই নিঝুম?

ব্যাপার টা হলো ধর্ম মতে তো তুই একাধিক বিয়ে করতে পারিস মাহি ! আমি রুবাকে মেনে নিলাম !
ওর একটা আশ্রয় দরকার ছিল তোদের বাড়ির চেয়ে বড় আশ্রয় আর কি হতে পারে !
নিঝুম , আমি সত্যিই লজ্জিত, দুঃখিত যে আমার জন্য তোর মাথাটা সত্যিই খারাপ হয়ে গেছে! তুই বুঝতে পারছিস তুই কি বলছিস ?
তোর মত এত ব্রাইট একটা মেয়ে একজন ভালো ডাক্তার হ‌ওয়ার সব যোগ্যতা যার আছে সে কিনা বলছে কারো সেকেন্ড ওয়াইফ হবে যার স্ত্রী আছে ঠিকঠাক !
কিসের ঠিকঠাক স্ত্রী আছে মাহি? কবুল বললেই কি ব‌উ হয়ে যায় কেউ ! যাকে তুই মন থেকে কখনো মেনে নিতে পারবি না কখনো ?

তোকে এই কথা কে বলল যে আমি রুবাকে মেনে নিতে পারব না ?
আমি রুবাকে মেনে নিতে না পারলে কখনো বিয়েই করতাম না ! ওকে মাথার নিচে শুধু ছাদ দেয়ার জন্য এই বিয়ে করি নাই রে ! ওকে ভালো রাখার জন্য বিয়ে করেছি !
সে যাই হোক তুই এসব উল্টোপাল্টা চিন্তা বাদ দে !
মাহি আমি সিরিয়াসলি বলছি কিন্তু !
আমি ও সিরিয়াসলি বিয়েটা করেছি নিঝুম! এই একটা কথা বলতে বলতে আমি ক্লান্ত।
হয়তো এখন আমি আর রুবা প্রোপার স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক গড়ি নাই কিন্তু রুবা যখন আমার প্রতি আগ্রহী হবে আমি তাকে আমার সব অধিকার দিব ! আমি আমার কোন দ্বায়িত্ব থেকে দূরে যেতে চাই না , না বাবা মায়ের প্রতি , না রুবার প্রতি যখন সে আমার বিবাহিতা ব‌উ!
মাহি তুই ভেবে দেখ, আমাকে এখনি বলার কিছু নেই সময় নে ,নিঝুম বলল !
কিসের সময়, কি ভাববো ?
শোন নিঝুম তখন তোর আর আমার সম্পর্ক টার নাম হবে কি জানিস, পরকীয়া !
তুই আমার আর তোর প্রেমের সম্পর্ক টা কাউকে জানাতে দেস নাই । ফ্যামিলি তে এখন এই নামের সম্পর্ক টা গড়লে, তোর কথা ধরেই বলছি তখন কিভাবে ফেইস করবি ?
এতটা স্বার্থপর হতে যদি পারতাম তাহলে আজ এখানে বসে থাকতাম না তুই আর আমি !
মাহি আমি কতটা অসহায় হয়ে এসব কথা বলছি তুই জানিস ?
মাহি দীর্ঘ শ্বাস ফেলল !
নিঝুম আমরা সবাই খুব অসহায় রে ! আল্লাহ আমাদের সবার সঙ্গে এক আজব খেলা খেলছে !
নিঝুম কেঁদে দিলো !
তুই আমার কাছাকাছি আসিস না আমাকে ঘৃণা কর তাহলেই পারবি আমাকে ভুলে যেতে !
মাহি নিঝুমের মাথায় হাত রাখল , প্লিজ কোন পাগলামী করিস না চল দেরী হচ্ছে !
মাহি একটা কথা বল তো তুই কি রুবাকে ভালো বেসে ফেলেছিস ? ওকে কি খুব আদর দিস তুই ?
মাহি বলল , সত্যি টা জানতে চাস ?
অবশ্যই !
আমি রুবার অনেক যত্ন করি ওর সব কিছু আমার ফাস্ট প্রায়োরিটি !
কারণ ও ভালো থাকলে আমার মা আমার বাবা আমার বাসাটা ভালো থাকে !
নিঝুম বলল, কি ভাগ্য দেখ রুবার। একটা মেয়ে তার আপন বলতে কেউ নেই আবার সবাই আছে ! শিহাব ভাইয়ের বউ হয়ে যখন আসলো তখন থেকেই ফ্যামিলির প্রতিটি মানুষ কি এক অজানা কারণে রুবাকে খুব পছন্দ করে । রুবার সৌন্দর্য ই কি এর মেইন কারণ !
যে একবার ওকে দেখে ওর প্রতি আকর্ষণ বোধ করে , ওর প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে যায়!
রুবা এই রুবা সেই ! খালাম্মা ছেলের মৃত্যু তে যত কষ্ট পেয়েছে রুবার কষ্টে তার দ্বিগুণ কষ্ট পায় !
ইদানিং মনে হয় শিহাব ভাইয়ের বউ হিসেবে যত আদর করতো তোর ব‌উ হিসেবে দ্বিগুণ আদর করে । আমার রাগে গা জ্বলে মাহি !
মাহি চুপ করে বসে আছে !
জানিস একদিন ফারিয়া আর আমার সঙ্গে শিহাব ভাই আর রুবার আড়ং এ দেখা । ফারিয়া বলে নিঝুম তুই তো তোর হবু জা এর সৌন্দর্যের সঙ্গে কোন কম্পিটিশন ই দিতে পারবি না উনার লেভেল তো অনেক উপরে তোর থেকে ! আমি রাগে ওর সাথে কয়দিন কথাই বলি নাই !
আর আজ দেখ আমি কম্পিটিশন দিব কি আমার তো কোন অস্তিত্ব ই নেই ওর আশেপাশে!
তুই ওভাবে কেন চিন্তা করছিস নিঝুম?
করব না তুই সারাক্ষণ এমন সুন্দর একজন মানুষের পাশে থাকছিস ।
আগেও তো ছিলাম আমরা এক‌ই বাড়িতে !
তখন তো রুবা তোর ব‌উ ছিল না ,তোরা এক ঘরে থাকতি না ! ওর উপর তোর কোন অধিকার ছিল না ! আচ্ছা তোদের মধ্যে কি শারিরিক ব্যাপার গুলোও হয়ে গেছে মাহি?
মাহি কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছে। কি বলবে সে নিঝুমের প্রশ্নের বুঝতে পারছে না।
কি উত্তর দিচ্ছিস না কেন মাহি? নিঝুম ঝাঁঝালো কন্ঠে বলল।
কি উত্তর দিব তোকে ? কি শুনলে খুশি হবি? এসব কোন প্রশ্ন হলো? তোর কি মাথা নষ্ট হয়ে গেছে নিঝুম! মাহি চিৎকার করে উঠল।
মাহির ফোনে বারবার ফোন আসছে !
আমি ফোন টা ধরি দে নিঝুম !
না আমার কথা শেষ হয়নি এখনও!
আর কি কথা , মাহি বলল?
তুই আমার কথা গুলো সিরিয়াসলি নে প্লিজ মাহি?
নিঝুম পাগলের মত কথা বলিস না !
মাহি আমি সত্যিই পাগল হয়ে গেছি তুই প্লিজ আমাকে বাঁচা !
যে আমি কখনো কোন জিনিস চেয়ে পাইনি এমন হয় নি কখনো, আজ আমার ভালোবাসার মানুষ কে একটা বিবাহিত অসহায় মেয়ে আমার কাছ থেকে কেড়ে নিলো !
যার ব‌উ হ‌ওয়ার স্বপ্ন দেখতাম, সেই ছোট থেকে যাকে চিন্তা করে আমার রাত দিন গুলো কেটেছে আজ তার ব‌উ হয়ে আমার সামনে দিয়ে আর একটা মেয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে কিভাবে দেখি বল মাহি ?
নিঝুম প্লিজ এসব কথা বন্ধ কর!
নিঝুমের ফোন বাজছে !
খালাম্মা ফোন দিচ্ছে !
নিঝুম ফোন রিসিভ করলো, হ্যালো আসসালামুয়ালাইকুম খালাম্মা !
কেমন আছেন ?
মাহি কি হসপিটালে নিঝুম? ফোন দিচ্ছি ধরছে না !
হ্যাঁ খালাম্মা একটা ইমার্জেন্সি এসেছে মাহি ওটি তে ! চিন্তা করবেন না বের হলে কল দিতে বলব !
ফোন রাখার সঙ্গে সঙ্গে মাহি বলল,এটা কি হলো ?
তোর ঝামেলা কমিয়ে দিলাম!
কাজটা ভালো করিস নাই ! এখন চল বাসায় যাব ! মা অনেক চিন্তা করছে!
আর তোর রুবা ?
হ্যাঁ রুবা ও চিন্তা করছে , এটাই শুনতে চাইছিস তো ?
প্লিজ চল আমরা বাহিরে চলে যাই মাহি ! সব দায় দায়িত্ব থাক একটু বাঁচি নিজেদের মত !
একটা দূর্ঘটনা না হয় ঘটেছে তোর জীবনে এটা ভুলে যা !
তাই নিঝুম , আমার অসহায় বাবা মা ,রুবাকে ফেলে চলে যাই তাই তো ?
কিভাবে চিন্তা করিস এসব ! আমাকে তোর এতটা স্বার্থপর মনে হয় ?
তুই পাগল হয়ে গেছিস নিঝুম ! এখন গাড়ি ঘুরিয়ে তুই বাসায় নিয়ে যাবি নাকি আমি নেমে যাব ?
আমি সত্যিই পাগল হয়ে গেছি মাহি !
মাহি গাড়ি থেকে বের হয়ে পিছনের সিট থেকে মোবাইল টা নিলো । পকেট থেকে সিগারেট এর প্যাকেট বের করে সিগারেট ধরালো ! বাহিরে কাঠ ফাঁটা রোদ। এই রোদের দিকে তাকিয়ে থাকলেই ওর মাইগ্রেন শুরু হয়ে যাবে।‌সানগ্লাসটাও নেই সঙ্গে। নিঝুমের উপর খুব রাগ হচ্ছে ওর। এসব কথা বলার জন্য এখানে আসার কোন মানে ছিল না। অবান্তর যত কথাবার্তা!
নিঝুম গাড়ি স্টার্ট দিয়ে গাড়ি ঘুরাচ্ছে। মাহি রাস্তা থেকে সাইড হয়ে দাঁড়ালো। কাছে এসে মাহি গাড়ির দরজা খোলার আগেই নিঝুম গাড়ি টান দিয়ে নিয়ে বের হয়ে গেল সোজা ঢাকার দিকে !

( চলব)

দুটো কথা বলতে খুব ইচ্ছে করছে। পাঠকদের কাছে অনুরোধ শুধু নেক্সট/N/F না লিখে দুইটা শব্দ লিখলে পড়তে , লিখতে আগ্রহ আরো বাড়ে আমাদের। ভালো না লাগলে দুটো গালি দেন তাও দুটো শব্দ লিখে লেখক/লেখিকাকে উৎসাহ দিন। ধন্যবাদ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here