#যখন_দুজনে_একা
৬২ পর্ব
প্রায় দুই সপ্তাহ বাচ্চা রা এনআইসিইউ তে ছিল ! রুবার শরীর ও খারাপ ছিল প্রেসার কন্ট্রোল হচ্ছিল না! কেবিনে আসার পর শুধু কান্নাকাটি করতো ছেলেদের জন্য! মানসিক ভাবে এত দূর্বল হয়ে গিয়েছিল রুবা , মাহি অনেক কষ্ট করে ওকে ঐ অবস্থা থেকে বের করে এনেছে।
বাচ্চাদের নিয়ে যেদিন মাহি আর রুবা বাসায় এলো সাফিয়া বেগম পুরো বাসা লাইটিং করলেন ! মাহি হাসতে হাসতে শেষ হয়ে যাচ্ছে!
: মা তুমি এটা কি করেছো ?
: বিয়ে বাড়ি যদি আনন্দ প্রকাশ করতে আলোকিত করা যায় আমার তো দ্বিগুণ আনন্দ আজ ! আমার বংশধর রা আজ আমার বাড়িতে আসছে আমি লাইটিং করে আনন্দ প্রকাশ করতেই পারি মাহি!
: মা ব্যান্ড পার্টি ডাকব , আতশবাজি পুরাই ?
: মাহি চুপ করো তোমার কথা শোনার সময় নেই!
মাহি হাসছে ছেলে দের কোলে নিয়ে!
: দেখেছো বাবারা তোমাদের জন্য দাদি কি করেছে!
রুবা মা আমার আগে তুমি আমার কাছে আসো , রুবার কপালে চুমু দিয়ে সাফিয়া বেগম বললেন, এই পৃথিবীর সব সুখ একদিকে দাদী হওয়ার সুখ অন্যদিকে ! তুমি আমাকে অনেক কষ্ট পেয়ে নিজে ,সেই সুখ দিয়েছো রুবা !
এখন আমার নাতিদের আমার কোলে দাও !
সাফিয়া বেগম বাচ্চাদের কোলে তুলে নিয়ে ঘরে তুললেন!
সবচেয়ে বেশি লাফালাফি করছে দুই বুয়া ! বাচ্চাদের কোলে নেয়ার জন্য হাত ধুয়ে পরিষ্কার কাপড় পড়ে রেডি হয়ে আসছে তারা!
সাফিয়া বেগম নাতিদের নিয়ে নিজের ঘরে গেলেন আগে!
বাচ্চা রা দাদা দাদি র বিছানায় শুয়ে আছে দাদা দাদি তাদের চোখ জুড়িয়ে দেখছে !
রুবা নিজের ঘরে এসে ঢুকলো! অনেক দিন পর নিজের ঘরে এসে তার এত শান্তি লাগছে !
মাহি কিছুক্ষণ পর রুমে ঢুকে দেখে রুবা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আছে!
পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলো মাহি !
: কি দেখো আয়নায়?
: নিজেকে দেখি নতুন রূপে !
: নতুন লাগছে নিজেকে তাই না ? আমার ও নিজেকে নিয়ে কেমন যেন ফীল হচ্ছে রুবা!
: আমার তো নতুন জন্ম হয়েছে , মা হয়ে আমাদের ছেলেদের এক নতুন জন্ম আমার!
: তবে তোমার গলা এমন শোনা যাচ্ছে কেন রুবা , মনে হচ্ছে কোন প্রাণ নেই? কোন কারণে মন খারাপ তোমার?
: খুব টেনশন হচ্ছে !
: কি নিয়ে ? তাকাও আমার দিকে
: আমি পারবো তো ওদের যত্ন করতে , এত ছোট ওরা আমি তো কোলেই নিতে পারছি না ওদের খাওয়াতে পারছিনা ! কেমন মা আমি ! রুবা কেঁদে দিল!
মাহি ওকে বুকে জড়িয়ে ধরে বলল ,
: আরে কাঁদছো কেন সোনা , সব মা যেমন ধীরে ধীরে পারে ঠিক তেমনি তুমি ও পারবে! শোন মা হতে মেয়েদের কোন ট্রেনিং লাগে না! মেয়েদের ভেতরেই মা জিনিসটা থাকে । দেখবে সে জন্যই মেয়েরা ছোটবেলা থেকেই পুতুল নিয়ে খেলে ।
তুমি ও পারবে। আর মা আছে , আমি আছি তোমাকে হেল্প করার জন্য! এতদিন তুমি একা কষ্ট করেছো এখন আমরা সবাই মিলে বেবিদের টেককেয়ার করব!
: ওরা যখন কাঁদে কষ্টে আমার কলিজা টা ছিঁড়ে যায় !
: ওরা তো অনেক ছোট এখন , কান্নাকাটি ই ওদের একমাত্র কাজ , তাই বলে কাদলেই তুমি অস্থির হয়ে যাবে তাহলে কিভাবে হবে রুবা ?
: আমি জানি না আমার খুব কষ্ট হয় !
: শোন আজ রাতে আমরা দুজন মিলে ওদের রাখব ঠিক আছে ।
: তুমি পারো ওদের কোলে নিতে ?
: খুব পারব আমি ওদের বাবা আমাকে তো পারতেই হবে !
জানো রুবা ওদের যখন দেখি আমার বুকের ভেতরে কি যে একটা ফিলিংস হয় তোমাকে বলে বোঝাতে পারবো না , বারবার মনে হয় ওরা আমার অংশ ! ওরা আমার রক্ত । কি যে এক অদ্ভুত মায়া আর টান কাউকে আমি এক্সপ্লেইন করতে পারছি না!
তুমি তো ওদের নিজের ভেতরে একটু একটু করে ধারণ করেছো তোমার অনেক দিনের ফিলিংস আমি গত চৌদ্দ দিনে ওদের যত দেখছি ততই বেশি মায়ায় পড়ে যাচ্ছি।
থেঙ্কস রুবা আমাকে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মূল্যবান উপহার, সবচেয়ে বড় সুখ টা দেয়ার জন্য ! সন্তানের চেয়ে বড় সুখ আর কিছুতে নেই ! মাহির চোখ ছলছল করছে!
: তুমি আমার কাছে কাছে থাকবে আমার খুব একা লাগে রুবা মন খারাপ করে বললো !
: একা লাগবে কেন তোমার দুই ছেলে আছে এখন তোমার পাশে! আমি আছি, মাহি হাসলো!
দরজার বাহিরে বুয়া চিৎকার করে বলে উঠলো ,
: ভাবি বাবুরা কান্দে তাড়াতাড়ি আসেন !
রুবা ভয় পেয়ে দৌড় দিল বাচ্চাদের দিকে !
: রুবা আস্তে যাও পড়বে , এত জোরে ছুটা তোমার নিষেধ মাহি চিৎকার দিয়ে বলছে ।
কে শোনে কার কথা রুবা ছুটতে ছুটতে শ্বাশুড়ি র ঘরে এসে ঢুকলো! বাচ্চাদের কাঁদতে দেখে নিজেও হাউমাউ করে কেঁদে দিল!
সাফিয়া বেগম রুবার কান্না দেখে অবাক হয়ে গেলেন !
: রুবা কি হয়েছে ?
রুবা কথা বলতে পারছে না শুধু বাচ্চাদের পাশে বসে কাঁদছে !
মাহি এসে পিছনের দাঁড়ালো !
: কি হয়েছে মাহি ওর?
: মা বেবিরা কাঁদছে শুনে দৌড়ে এলো ভয় পেয়ে গেছে !
রুবা এদিকে দেখো , তুমি কাঁদছো কেন ?
: ওদের কি হয়েছে কাঁদছে কেন মা ?
: ওদের কিছু হয়নি তুমি কান্নাকাটি বন্ধ করো প্লিজ!
সাফিয়া বেগম রুবার মাথায় হাত রাখলেন ,
: বোকা মেয়ে ওদের খিদে পেয়েছে তাই কাঁদছে । তুমি কাঁদবে নাকি খাওয়াবে এখন!
: খাওয়াব !
: তাহলে চোখের পানি মুছো আগে! আমি হেল্প করছি তোমাকে !
মাহি রুম থেকে বের হয়ে এলো ! মনে মনে ভাবছে , এক মানসিক চাপ থেকে উঠে রুবা এখন আরেক মানসিক কষ্টের ভেতর পড়েছে! তোমাকে নিয়ে কি করি বলোতো রুবা!
রাতে মাহি কিভাবে বাচ্চাদের নিয়ে ঘুমাবে সেই প্রস্তুতি নিচ্ছে! তার খুব এক্সাইটেড লাগছে আজ ওরা চারজন এক সঙ্গে থাকবে!
ছেলেরা ঘুমিয়ে গেলে রুবাকে কাছে নিয়ে বোঝাতে হবে এভাবে কান্নাকাটি করলে চলবে না ! অনেক শক্ত হতে হবে ওকে!
মাহি জানে রুবার সব সমস্যার ওষুধ সে ! ওর একটু আদর একটু পাশে থেকে সাহস দেয়া রুবার সবচেয়ে বড় শক্তি!
রাতে নিজে গিয়ে বাচ্চাদের নিয়ে এলো সে মায়ের ঘর থেকে!
রুবা একজনকে কোলে নিয়ে খুব সাবধানে আসছে আর মাহির কোলে একজন!
ঘরে ঢুকেই মাহি ছেলেদের সঙ্গে কথা বলা শুরু করলো ,
: বাবারা এটা আমাদের ঘর , আগে ছিল তোমার বাবা আর মাম্মির ঘর এখন এটা আমাদের সবার! পছন্দ হয়েছে ?
রুবার মাহির ছেলেদের সঙ্গে কথা বলাটা দেখে ভালো লাগছে! কি আদর আদর গলায় কথা বলছে মাহি !
ওর শুনতে খুব মজা লাগছে!
বিছানার মাঝখানে ওদের দুজনকে শুয়ে দিল মাহি!
: রুবা বেড তো ছোট মনে হচ্ছে আমাদের চার জনের জন্য!
: হুম ।
: কালকেই বিশাল বেড কিনে আনতে হবে ! আমি তো আগে খেয়াল করিনি আজই আনার দরকার ছিল !
মাহি বাচ্চাদের সব জিনিস গুছিয়ে রাখছে ! রুবা জিজ্ঞাসা করলো,
: কি করো এসব ?
: সব গুছিয়ে কাছাকাছি রাখতে হবে রুবা যেন দরকারে সময় পাওয়া যায়!
: আমার এত ঘুম পাচ্ছে কেন ? বহুদিন পর এভাবে ঘুম পাচ্ছে!
: তাহলে ঘুমিয়ে যাও !
: কিন্তু বাচ্চাদের খিদে পেলে তখন?
: ওরা কাঁদলে আমি ডাকব তোমাকে! আমি দুধও বানিয়ে নিতে পারব!
আচ্ছা তুমি শুয়ে যাও ওদের পাশে আমি জেগে আছি রুবা !
: তুমি ঘুমাবে না কিন্তু ওরা উঠে কাঁদবে !
: চিন্তা করো না রুবা আমি আছি !
রুবা এদিকে তাকাও একটা ছবি তুলি আমাদের চার জনের একসঙ্গে প্রথম রাত টা ক্যাপচার করে রাখি!
মাহি সেলফি তুলল!
: রুবা তোমার ছেলেদের বলে দিও এই মাসটাই ওদের তোমার আমার মাঝখানে শুয়ে থাকতে দিব তারপর আর দিব না !
: তারপর ওরা কোথায় যাবে ?
: ওরা আমাদের পাশে ঘুমাবে আমি আর তুমি মাঝখানে, তোমাকে এত দূরে রেখে ঘুমাব কিভাবে বলো রুবা?
: তুমি কি পাগল না মাথা খারাপ ? আমার ছেলেরা বেডের কর্নারে ঘুমাবে আর তুমি আমার কোলের কাছে এসে ঘুমাবে ? তোমার ঘুম না আসলে নাই জেগে থাকো !
রুবার সিরিয়াস চেহারা দেখে মাহি হেসে দিল ! আমি দুষ্টামি করছিলাম রুবা !
দরজায় নক করলেন সাফিয়া বেগম !
: ভেতরে এসো মা !
: আস্তে কথা বলো উঠে যাবে ওরা !
সাফিয়া বেগম রুমে ঢুকলেন!
: মা বেড তো ছোট !
: কালকে সকালেই গিয়ে কিনে নিয়ে আসো । আমারই উচিত ছিল আমার নাতি দের জন্য সব রেডি করে রাখা , সব হাঙ্গামা তে খেয়াল ই নেই!
মাহি এখন যাও তুমি আমি এই ঘরে থাকব রুবার সঙ্গে, আর বাচ্চাদের সঙ্গে। যতদিন না ওরা একটু বড় না হয় !
: আমি কোথায় যাব মা ?
: যেখানে খুশি দাদির রুমে, পাশের গেস্ট রুমে যেতে পারো, তোমার ভাইয়ার রুমেও যেত পারো!
মায়ের কথা শুনে মাহির মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল! কি ভেবেছিল আর কি হলো !
মা যখন একবার ডিসিশন শুনিয়ে দিয়েছে তখন আর কথার নড়চড় হবে না মাহি জানে!
রুবা মাহির দিকে তাকিয়ে চোখ টিপ দিয়ে মিটমিট করে হাসছে!
মাহি উঠে গিয়ে সোফায় বসলো !
রুবা তোমার ওষুধ গুলো দিচ্ছি খেয়ে নাও!
রুবা ওষুধ খাওয়ার সময় মাহির পাশে গিয়ে বসলো, তারপর ফিসফিস করে বলল,
: আমার ছেলেদের বিছানার কর্নারে পাঠাতে চেয়েছিলে, এখন কেমন হলো অনির্দিষ্টকালের জন্য এই রুম থেকে তুমি ই আউট ডাক্তার সাহেব!
: রুবা আমি যাচ্ছি তুমি আসবে আমি যেখানে আছি সেখানে মনে থাকে যেন!
: অসম্ভব !
: আজ রাতেই আসবে কথা আছে তোমার সাথে!
: আমার ঘুম পাচ্ছে !
: প্লিজ মা কে বুঝিয়ে বলো আমিও এই রুমে সোফায় থাকি আমার সমস্যা হবে না প্লিজ রুবা !
: তুমি বলো আমি এই কথা বললে মা কি ভাববে ?
: ঠিক আছে আমি গেলাম , নিষ্ঠুর মেয়ে কোথাকার !
: রুবা হাসছে!
মাহি উঠে গিয়ে ছেলেদের চুমু খেলো ! মনে মনে বলল, বাবারা কয়দিন ঘুমা দাদির সাথে তারপর আমরা তিনজন খুব মাস্তি করব ! আর তোদের মা কে জ্বালাব !
: গেলাম মা কিছু লাগলে মোবাইল এ ফোন দিও !
ফরিদা বুয়া তার তোশক নিয়ে রুমে ঢুকলো সেই মুহূর্তে !
মাহি অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলো ,
: বুয়াও থাকবে এখানে !
: হুম , রাতে দুজন একসঙ্গে কান্নাকাটি করলে আমি একা ধরব কিভাবে ? রুবার ঘুম সব সময় ভাঙ্গানো ঠিক হবে না ওর প্রেসার এখনো ঠিক হয়নি । তুমিই না বললে ঘুম দরকার ওর !
: আমি থাকি মা , মাহি বলেই ফেলল?
: তুমি পারবে বাচ্চা রাখতে আর তোমার সকালে হসপিটালে যেতে হবে ঘুম দরকার আছে তোমার মাহি!
মাহি বিড়বিড় করে বলল, সমস্যা হবে না মা !
: যাও মাহি ঘুমিয়ে পড়ো !
মাহি করুন মুখে রুম থেকে বের হয়ে যাচ্ছে ! মনে মনে বলছে,
বুয়াও থাকছে আমার ছেলেদের সঙ্গে আমিই খালি বাদ !
বের হওয়ার সময় মাহি রুবাকে মোবাইল দেখিয়ে ইশারা করলো , মোবাইল কাছে রাখার জন্য!
রুবা হাসছে!
রুবাও কম যায় না, সে দুই আঙ্গুল দিয়ে গুলি করার ভঙ্গি করলো!
মাহিও বুকে গুলি খাওয়ার ভঙ্গি করে বের হয়ে গেল !
সাফিয়া বেগম নাতিদের দিকে তাকিয়ে আছে !
: রুবা তোমাকে অনেক অনেক থেঙ্কস বলার আছে আমার !
: কেন মা ?
: তুমি আমাকে এত সুন্দর দুটো উপহার দিলে । জানো খুব দোয়া করছিলাম যেন তোমাদের একটা বাবু হোক। বাড়িটা ভরে উঠুক ,খুব একা লাগত !
: আপনার দোয়া কবুল করেছে আল্লাহ । কারণ আপনার ছেলে তো চাইছিল না এখন বেবি হোক!
: ওর কি, ও সারাদিন বাহিরে বাহিরে থাকে , বাসায় থাকলে বাপের মত বই নয়তো মোবাইল মুখের সামনে ধরে রাখে। ও কি জানে এই বাসার নিঃশব্দতা টা কতটা কষ্ট দেয় আমাদের, যারা সারাক্ষণ বাসায় থাকি!
সাফিয়া বেগম রুবার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন!
তুমি দেখো রুবা আমি ওদের খুব যত্ন করে বড় করব!
সাফিয়া বেগম নাতিদের হাতে চুমু খেলো ! ওদের কি নাম ঠিক করেছো রুবা তোমরা ?
: আমি কিছু ঠিক করিনি মা , আপনি চিন্তা করেছেন কিছু ?
: এই কাজ তোমাদের , আমি আর তোমার বাবা ওদের দুই ভাইয়ের নাম রেখেছি তোমরা তোমাদের ছেলেদের নাম রাখবে ।
এটা বাবা মায়ের সাধ আমি এখানে হস্তক্ষেপ করা পছন্দ করি না!
: আপনার ছেলে কে জিজ্ঞাসা করতে হবে ওর মনে কিছু আছে কিনা !
: ঠিক আছে এখন ঘুমাও রুবা !
রুবার মোবাইল এ মেসেজ আসছে!
” নিষ্ঠুর মেয়ে তুমি আসবে না তাই না ? ”
রুবা রিপ্লাই দিল,
” আজকে তো অবশ্যই না কালকে চিন্তা করে দেখব , গুড নাইট”
রুবার খুব মজা পাচ্ছে মাহির করুন দশা দেখে!
সাফিয়া বেগম এর নির্দেশে মাহি নিজের ঘর থেকে বিতাড়িত! বড় বেড কিনেছে মাহি কিন্তু ছেলেদের সঙ্গে সেই বেডে থাকা তো দূরের কথা রুমেই থাকতে পারছে না!
প্রতিদিন বিকেলে হসপিটাল থেকে আসার পর মাহিকে বাচ্চাদের কাছে গোসল না করে ঘেঁসতে দেন না সাফিয়া বেগম । মাহির ড্রেস বাহিরে দেয়া হয় মাহি গেস্ট রুমে গোসল দিয়ে হ্যান্ড রাব হাতে দিয়ে তারপর বাচ্চাদের কোলে নেয়!
রুবাও কম যায় না শ্বাশুড়ি র সঙ্গে তাল মিলিয়ে !
মাহি ছেলেদের চুমু খেতে গেল বাঁধা দিল,
: সিগারেট খেয়ে আসোনি তো?
মাহি কটমট করে তাকালো রুবার দিকে,
: কাছে এসে দেখো রুবা !
: না থাক ঠিক আছে !
: না দেখতে হবে রুবা !
: বুঝেছি খাও নি !
: না আমি দেখাচ্ছি তোমাকে
মাহি রুবার হাত টেনে ধরে রুবার দুই ঠোঁটের কাছে ঠোঁট নিয়ে গেল রুবা চোখ বন্ধ করে আছে । জানে সে এখন কি করবে মাহি!
: থাক ছেড়ে দিলাম যাও !
তোমাকে রুবা কঠিন পানিশমেন্ট দিতে হবে তোমার শ্বাশুড়ি র সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমার উপর শুধু ফতোয়া বাজি করছো !
আমি কি সারাদিন ডাস্টবিনে গড়াগড়ি করি , তাহলে আমার সাথে তোমাদের কি সমস্যা ! আমার ছেলেদের কাছে আসলে এত ইন্টারভিউ নিতে থাকো তোমারা ?
: রুবা হাসছে!
: হাসবে না রুবা !
মাহি মন খারাপ করে ফেলল ! রুবা এসে ওর হাত ধরলো ,
: সরি !
: না বাদ দাও থাকো তোমরা এই ঘরে আমি গেলাম!
মাহি সত্যি সত্যি ঘর থেকে বের হয়ে গেল !
বাচ্চারা একা ঘরে তাই রুবা পিছনে পিছনে আসতে পারলো না ! ওর খুব খারাপ লাগছে মাহি নিশ্চয়ই খুব মন খারাপ করেছে!
মন খারাপ করার ই কথা , আজ এতদিন হলো বাচ্চারা বাসায় এসেছে কিন্তু সে ছেলেদের সঙ্গে এক রাতও থাকতে পারেনি! রুবাও একটু সময় দিতে পারে না মাহিকে। মাহি ওর দিকে তাকিয়ে কত ইশারা করে রুবা বুঝেও না বোঝার ভান করে । শ্বাশুড়ি কে রেখে মাহির রুমে গিয়ে ওর সঙ্গে গল্প করার কথা সে চিন্তা করতেও পারে না!
একটু পর সাফিয়া বেগম রুমে এসে ঢুকলো ! রুবা ছেলেদের শ্বাশুড়ি র কাছে রেখে মাহির খোঁজে দাদির ঘরে এসে দেখে মাহি সেখানে নেই!
পুরো দোতলায় মাহি নেই!
: বুয়া তোমার ভাইজান কোথায় ?
: নিচে নামতে দেখলাম !
: বাবার স্টাডি রুমে ?
: না মনে হয় , ভাইজান নামার সঙ্গে সঙ্গে গাড়ির আওয়াজ পাইলাম মনে হয় বাইরে গেছে!
: আচ্ছা ঠিক আছে যাও , শোন বাসায় আসলে আমাকে খবর দিও!
রুবার মনটা খচখচ করছে । সিগারেট এর কথাটা না বললেও পারতাম।
এভাবে কখনো অভিমান করে না মাহি !
রুবা নিজের ঘরের দিকে চলে এলো!
ওর কিছুই ভালো লাগছে না !
রুবার খাওয়া দাওয়া সব তার বেড রুমে অন্য দিন মাহি আর সে এক সঙ্গে ডিনার করে । আজ এত রাত হলো মাহি আসেনি ! শ্বাশুড়ি ও জোর করে বললেন, তুমি খাও ওর খাওয়া ও পরে খেতে পারবে!
রুবা কয়বার ফোন দিল কেটে দিসে ধরে নাই ! রুবার আরো অস্বস্তি লাগছে!
রাত পৌনে এগারোটা যখন বাজে ফরিদা বুয়া এসে বলল ভাইজান আসছে!
: ডিনার দিয়েছো ?
: না খাওয়া দাওয়া করে আসছে !
:মা কোথায় ?
: আব্বার সঙ্গে কথা বলে !
: তোমার ভাইজান কোন রুমে ?
: এই পাশের গেস্ট রুমে থাকব আজকে , রুমে ঢুকছে!
আচ্ছা ঠিক আছে তুমি আসো থাকবে না এই ঘরে ?
: আসতেছি!
ফরিদা বুয়া যাওয়ার পর রুবা বাচ্চাদের পাশে গিয়ে শুয়ে পড়ল ! তার বিশ্বাস মাহি ছেলেদের দেখতে একবার হলেও আসবে!
অবিশ্বাস্য ব্যাপার মাহি আসলোই না ঘুমাতে যাওয়ার আগে ছেলেদের দেখতে!
রুবার নিজের উপর অভিমান তো হচ্ছেই মাহির উপর রাগ হচ্ছে এখন!
অন্য দিন বাচ্চা রা রাত দুটো বাজলে তারপর ঘুমায় আজ দুজনই বারটা র পরই ঘুমিয়ে গেল !
শ্বাশুড়ি , ফরিদা বুয়া সবাই ঘুমাচ্ছে !
রুবা চুপিচুপি উঠে গেল বিছানা থেকে !
দরজা খুব সাবধানে খুলল, ছোট ছেলের ঘুম খুব পাতলা বাবার মত ! দেখতেও ওর বাবার মত লাগে রুবার কাছে ! রাগ ও বাবার মত নাকের ডগায় ! এক সেকেন্ড দেরিতে খাওয়া দিলেই রাগ উঠে যায় ,চিৎকার শুরু।
রুবা গেস্ট রুমের দরজার হ্যান্ডেল মোচড় দিতেই খুলে গেল !
ডাক্তার সাহেব ঘুমাচ্ছে!
রুবা মাহির পাশে গিয়ে বসলো ! কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইল চুপচাপ মাহির দিকে!
মাহির গায়ে হাত রাখলো!
: এতটা রাগ আমার উপর মানলাম করতেই পারো আমি উল্টোপাল্টা কথা বলে তোমাকে আঘাত করছি তাই বলে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ছেলেদের দেখতে পর্যন্ত আসলে না তুমি !
তুমি তো এরকম মানুষ না মাহি ! তাহলে আজ কি হলো তোমার ?
মাহি চোখ বন্ধ করে ই শুয়ে আছে, কিছু বলছে না!
ঠিক আছে আমি সরি বললাম আবার, সম্ভব হলে মাফ করে দিও!
রুবা উঠে যাচ্ছে মাহি হাত ধরে আটকালো !
: তোমাকে কে বলল আমি তোমার উপর রাগ করে বাচ্চাদের না দেখে ঘুমাতে এসেছি ?
মাহি রুবাকে টান দিয়ে বেডে বসালো !
আমার জান বাচ্চাদের দেখে এসেছি আদর করেও দিয়ে এসেছি । তুমি তখন ওয়াস রুমে ছিলে! মাহি উঠে রুবার কাছে বসলো।
ওদের মা অনেক দুষ্ট কিন্তু ওরা আমার মত ভালো !
: ওদের ভালো বাবাটা সামান্য কথায় রাগ করে বাসার বাহিরে চলে গেল কিভাবে আজকে?
: গেল হঠাৎ হঠাৎ একটু মান অভিমান তো হয় ই ! মাহি রুবার পিঠের উপর থেকে চুল সরিয়ে ঘাড়ে, গলায় চুমু খেল !
: কি হচ্ছে এসব ?
: একটু অপেক্ষা করো তারপর দেখো কি হয় !
রুবার গলায় মাহি একটা পার্লের সেট পড়িয়ে দিল !
রুবা অবাক হয়ে তাকালো , কি এটা ?
: তোমার পছন্দের তাহিতিয়ান পার্পেল পার্ল !
: কোথায় পেলে?
: এটাই আনতে গিয়েছিলাম । আমার এক ফ্রেন্ড কে দিয়ে লন্ডন থেকে এটা আনিয়েছি ! আর এই যে হাত বাড়াও মেয়েদের প্রিয় তাইয়্যেবা না কি বলে সেটার চুড়ি তোমার জন্য !
: খুব সুন্দর হয়েছে ! হঠাৎ ?
: হঠাৎ মানে তুমি আমাকে দুটো অমূল্য উপহার দিলে তার কাছে এগুলো কিছুই না রুবা ! আমার তো খুব ইচ্ছে ছিল হ্যারি উইনস্টন এর একটা সলিটারি রিং দিতে কিন্তু আমার কিডনি বিক্রি করতে হতো তাহলে মাহি হাসছে!
: রাগ দেখিয়ে আমার কাছে গেলে না এখন গিফট দেয়া হচ্ছে !
: এই জন্যই যাই নাই আজ, আমি জানতাম আমি রুমে না গেলেই তুমি আসবে আমার কাছে!
: এতটা নাটক ডাক্তার সাহেব!
: নাটক শুধু আপনি করবেন রুবা ম্যাডাম এই ডাক্তার ও নাটক জানে !
: রুবা মাহির ঠোঁটে হাত ছুঁয়ে দিল তারপর বুকে মাথা রাখলো!
রুবা তুমি এরকম টেনশন ছাড়া , আনন্দ নিয়ে কত দিন পর আমার বুকে আসলে জানো , নয় মাসের উপর হবে!
প্রেগন্যান্সি পজেটিভ জানার পর কোন দিন তোমাকে এতটা রিল্যাক্স দেখিনি!
: অনেক ভয়ের দিন পার করেছি তোমার চেয়ে বেশি কে জানে এই কথা!
: হুম ! তোমার জদু মধু তোমার অর্ধেক জীবন বের করে নিয়েছে রুবা!
: জদু মধু মানে ? এসব কি নামে ডাকছো তুমি !
: আদর করে ডাকলাম!
: কখনোই না । সুন্দর নাম রাখব আমরা।
নাম কিছু চিন্তা করেছো তুমি?
মা বলল তোমাকে আমাকে রাখতে !
: তুমি কিছু চিন্তা করেছো রুবা ? আমি একটা আগেই ভেবেছিলাম!
: কি সেটা বলো ?
: রাহিল , মানে ট্র্যা্ভলার !
: তাহলে আরেকজনের নাম রাখো সাহিল মানে শৈকত !
: সুন্দর তো রুবা সাহিল, রাহিল !
মাহি রুবাকে একটু কাছে টানতেই রুবা লাফ দিয়ে উঠে দাঁড়ালো !
: কি হয়েছে রুবা, মাহি অবাক হয়ে গেল ?
: ছোটজন উঠে কাঁদছে শিওর, রুবা দিল রুমের দিকে দৌড় !
মাহি পিছনে পিছনে এসে দেখে সত্যিই ছোট পুত্র উঠে কাঁদছে!
সাফিয়া বেগম ফিডার মুখে ধরলো , না সে কাঁদছে কোন ভাবেই মানানো যাচ্ছে না !
রুবা কোলে নিল তাতেও থামে না !
মাহি বলল, আমার কাছে দাও ! মাহি কোলে নিয়ে হাঁটছে একটু থেমে আবার কাঁদছে !
এবার বড় জন উঠে কাঁদছে !
ওদের কান্না দেখে রুবাও কাঁদছে !
এটা ইদানিং নিত্যদিনের ঘটনা ছেলেরা যতটুকু কাঁদে রুবা তার তিন গুণ কাঁদে!
বড় ছেলে ঘুমিয়ে গেছে কিন্তু ছোট ছেলে কাঁদছে ই ।
: তুমি না ডাক্তার দেখো না এত কাঁদছে কেন আমার ছেলে!
: আরে বাবা দেখছি একটু ধৈর্য ধরো!
সাফিয়া বেগম দোয়া পড়ে নাতিকে ফুঁ দিচ্ছেন!
মাহি পেটে হাত দিয়ে দেখলো কোন সমস্যা কিনা !
: সেরকম কিছু তো মনে হচ্ছে না তারপরও ফ্লাকোল খাইয়ে দিল !
মাহি কোলে নিয়ে হাঁটছে একটু ঘুমিয়ে যায় একটু পর জেগে উঠে আবার কাঁদে!
অনেকক্ষণ মাহি হাঁটার পর ছেলে ঘুমালো ! সাফিয়া বেগম বললেন ,
আমার কাছে দাও আমি ওকে কোলে নিয়ে বসে থাকব আজ !
: আমি থাকি মা ?
: না তুমি ঘুমাও মাহি যাও লাগলে ডাকব সারাদিন অনেক ব্যস্ত থাকো তুমি , রুবা তুমি ও ঘুমাও!
মাহি রুবার মাথায় হাত রেখে বলল,
: এটা কেমন কথা ছেলেদের সঙ্গে সঙ্গে তুমিও কান্নাকাটি করো! ওদের সামলাব নাকি তখন তোমাকে সামলাব ?
মাহি তুমি বুঝবে না মায়ের মন , তোমরা যখন ছোট ছিলে আমিও এরকম কাদতাম তোমাদের কান্না দেখে!
তাহলে আর কি বলব মা , তোমরা সবাই এক! মাহি হাসলো!
রুবাকে দেখে মাহি অবাক হয় ওর মাঝে কিভাবে মাতৃত্ব জিনিস টা আস্তে আস্তে প্রকট হচ্ছে। যে রুবা মাহি বাসায় থাকলে সারাক্ষণ মাহির সঙ্গে সঙ্গে থাকতো , বাসায় এই ঘর ওর ছুটে বেড়াতো এখন সারাক্ষণ তার ছেলেদের নিয়ে ব্যস্ত মাহির পাশে এসে দুই মিনিট বসার সময় নেই তার । নিজের ঘর থেকে বের হয় না খুব একটা ! তার সবকিছুই এখন তার ছেলেরা! আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল টাও ঠিক করে না হয়তো কতদিন !
মাহি গেস্ট রুমে শুয়ে চিন্তা করছে সব মেয়েরাই মা হলে বুঝি এমন হয়ে যায় !
মাহির মন খারাপ লাগছে খুব এতদিন হয়ে আসছে ছেলেরা বাসায় আসছে তাও ওদের সঙ্গে একান্তে একটু সময় কাটাতে পারছে না । রুবাও হয়েছে আরেক জন, মা কে যদি একবার বলে তাহলেই মা ওকে সোফায় থাকতে ঠিকই দিবে কিন্তু না রুবার লজ্জা সে বলতে পারবে না!
ছেলেরা যখন হাসে মাহির খুব ইচ্ছে করে দুটোকে ধরে কচলাতে! সারাক্ষণ কোলে নিয়ে বসে থাকতে পারলে কি ভালো লাগতো!
কালকে ছুটির দিন রুবা তুমি আর তোমার শ্বাশুড়ি যাই বলো আমি সারাক্ষন আমার ছেলেদের সঙ্গে থাকব!
মাহি পাশ ফিরে শুয়ে যখন চোখ বন্ধ করলো হঠাত রুবা আবার এসে ওর পাশে বসলো ! মাহি পুরো অবাক হয়ে তাকালো, ছেলে উঠে গেছে আবার রুবা ?
: না উঠেনি আমি ফিডার ধোয়ার জন্য রান্না ঘরে গিয়েছিলাম ! তুমি এত সুন্দর এত এক্সপেনসিভ গিফট গুলো দিলে তোমাকে থেঙ্কস টুকুও বলতে পারিনি তখন , ভাবলাম দিয়ে যাই!
: ও থেঙ্কস দিতে এসেছো , তাহলে দাও!
: অনেক সুন্দর গিফট এত টাকা খরচ না করলেও পারতে !
: এরকম থেঙ্কস তো নিব না রুবা!
: তাহলে কি রকম থেঙ্কস লাগবে ?
মাহি রুবাকে জড়িয়ে ধরে বলল,
: মা কে বলে আমাকে রুমে থাকতে দাও তুমি, তাহলেই হবে আমার! আমি ছেলেদের সঙ্গে থাকতে চাই !
: আমি বললে মা রাজী হবে ?
: তুমি বললেই হবে !
: আচ্ছা ঠিক আছে দেখি কি বলা যায় মাকে!
:থেঙ্কস রুবা ! এখন এখানে থাকো কিছুক্ষণ প্লিজ ! খুব মিস করছি তোমাকে সোনা !
: মা কি ভাববে ?
: প্লিজ রুবা!
: মাথা নষ্ট ,তোমার ছোটছেলে তোমার মত হয়েছে !
: তোমাকে ছাড়া ঘুমায় না ?
: না রাগ বেশি! একবার উঠে গেলেই বাসা মাথায় তুলবে!
: ও আচ্ছা ! বড় জন তোমার মত হলেই হবে রুবা !
রুবা উঠে যাচ্ছে , যাওয়ার সময় আচমকাই মাহির ঠোঁটে ঠোঁট ছুঁয়ে দৌড় দিল!
মাহি হেসে দিল!
মনে মনে বলল, বাহ্ লজ্জার খোলস ছেড়ে বেড়িয়েছে রুবা তাহলে! তোমার এই পাগলামো গুলো তে জং ধরতে দিও না রুবা !
জীবন আমাদের যতই বিভিন্ন সম্পর্কে বেঁধে ফেলুক। যত ব্যস্তই করে দিক না কেন তুমি আর আমি আমাদের নিজেদের ভেতরের পাগলামী টা, বোঝাপড়া টা কখনো হারাব না । তোমাকে কাছে পাওয়ার জন্য আমার ব্যাকুলতা টা যেন আজীবন থাকে।
জীবনের প্রত্যেক টা ধাপে তুমি নতুন থেকে নতুন হয়ে আমার কাছে ধরা দিবে রুবা !
মাহি মোবাইল টা হাতে নিল তারপর রুবাকে সুন্দর করে অনেক দিন পর একটা গান পাঠিয়ে দিল,
” একলা হলেই বুঝতে পারি ভালোবাসি কত
একটা তুমি আছো বলেই ভালো আছি এত
এই জীবনে কেউ তো আর হয়না তোমার মত!
খুব ভালোবাসি রুবা তোমাকে ……
( চলবে)