#যেদিন_তুমি_এসেছিলে
#পর্ব_৯
#মুন্নি_আক্তার_প্রিয়া
___________
সকলকে অবাক করে দিয়ে জুঁই ভ্যা ভ্যা করে কান্না শুরু করে দেয়। স্যার থতমত খেয়ে যান ওর কান্না দেখে। জুঁইয়ের দেখাদেখি লামিয়া আর রেশমিও কান্না শুরু করে দেয়। এদিকে অর্ষার তো স্যারের ধমক খেয়ে আগে থেকেই কাঁদোকাঁদো ভাব। এবার সেও পুরোপুরি কান্না শুরু করে। উপস্থিত সকলের চক্ষু চড়কগাছ। সকলেই বিড়বিড় করছে,’ড্রামাবাজগুলা নতুন ড্রামা শুরু করেছে আবার!’
স্যার বিস্মিত হয়ে বললেন,’কী আশ্চর্য! তোমরা কাঁদছ কেন?’
তখন ছেলেদের মধ্যে থেকে একটা ছেলে উঠে আসে। ছেলেটি জুঁইয়ের প্রাক্তন। সে সুযোগটা হাতছাড়া করল না। কারণ জুঁইও সুযোগ পেলে কখনো তাকে হেনস্তা করতে ছাড়ে না। সে স্যারের কাছে এসে বলল,’স্যার, ফোন তো এটা জুঁইয়ের। অর্ষার নয়।’
জুঁইয়ের কান্না বাড়ে এবার। স্যার অবাক হয়ে বলেন,’এই সন্টুমন্টু জান তাহলে তোমার? এজন্যই ধরা পড়ে তুমি কাঁদছ?’
জুঁইয়ের কান্নার গতি বাড়ে। লামিয়া আর রেশমি থেমে যায়। লামিয়া বিরক্ত হয়ে বিড়বিড় করে বলে,’ধুর বাল! এই মাইয়ার দোষ! আমি আরো ভাবলাম জুঁইয়ের ফোন দিয়েই মনে হয় অর্ষা আহনাফকে জ্বালাচ্ছে। বেচারি বোকারানী বকা খাচ্ছে বলে কাঁদছিলাম। এখন দেখি আসল কালপ্রিট জুঁই!’
স্যার লামিয়াকে বিড়বিড় করতে দেখে জিজ্ঞেস করলেন,’অর্ষাকে ধমক দেওয়ায় অর্ষা কাঁদছে। জুঁই না হয় কাঁদছিল ভয়ে, যদি অর্ষা আমায় সব বলে দে তাই। কিন্তু তুমি কেন কাঁদছিলে?’
লামিয়া বিমর্ষতা প্রকাশ করে বলল,’আমি ভেবেছি জুঁই অর্ষার জন্য কাঁদছে। ভাবলাম, আমিও তো অর্ষার বান্ধবী। তাহলে আমি কেন কাঁদব না?’
স্যার অসহায় দৃষ্টিতে রেশমির দিকে তাকিয়ে বললেন,’আর তুমি?’
‘স্যার অর্ষা, লামিয়া, রেশমি তো আমারও ফ্রেন্ড। তাহলে আমি কেন কাঁদব না?’
‘তোমাদের গ্যাঞ্জাম পার্টির ছেলে সদস্যরা কোথায়? ওরা কেন চুপ?’ এটা বলে সে ছেলেদের বেঞ্চের সারির দিকে তাকিয়ে দেখে আহিল, আশিক আর দিদার গলা ধরাধরি করে কাঁদছে।
রেশমি নিচু গলায় লামিয়াকে বলে,’দেখ তিনটায় কুমিরের কান্না শুরু করছে! আমাদের চেয়েও বেশি ড্রামা জানে।’
এদিকে স্যার ওদের কাণ্ড দেখে হাসবে নাকি বকবে বুঝতে পারছে না। তিনি অন্য ছেলেদের বললেন,’আরে এই তিনটাকে থামা তোরা। আমি কোনো পানিশমেন্ট দেবো না।’
কাউকে কিছু বলতে হলো না। ওরা তিনজন নিজেরাই সোজা হয়ে বসে বলল,’থ্যাঙ্কিউ স্যার।’
ক্লাস শেষ হওয়ার ঘণ্টা বেজে যায়। স্যার জুঁইকে ফোনটা ফেরত দিয়ে বোর্ডের কাছে চলে যায়। নিজের ফোন আর নাম প্রেজেন্টের খাতা নিয়ে চলে যাওয়ার সময় মুচকি হেসে বলেন,’গ্যাঞ্জাম পার্টির পাশাপাশি তোদের আরো একটা নাম রাখা উচিত। বিনোদন পার্টি!’
টিফিন পিরিয়ডে সকলে মিলে চেপে ধরেছে জুঁইকে। জুঁইয়ের কান্না দেখে আশিক বলে,’জুঁই এত অসভ্য কেন তুই? খবরদার! এখন করবি না একদম গাঁইগুঁই।’
দিদার আশিকের মাথায় চাটি দিয়ে বলে,’ব্যাটা তোর আজাইরা কবিতা এখানেও শুরু করা লাগবে?’
আহিল একটু গম্ভীর হয়েই জিজ্ঞেস করল,’তুই ভাইয়ার নাম্বার কোথায় পেলি?’
জুঁই কাঁদোকাঁদো হয়ে বলে,’তোর ফোন থেকে চুরি করেছি দোস্ত!’
লামিয়া অবাক হয়ে বলে,’কিহ! ফ্রেন্ড হয়ে ফ্রেন্ডের ফোন থেকে তার বড়ো ভাইয়ের নাম্বার চুরি? তাও আবার আহনাফের নাম্বারটাই নিতে হলো?’
জুঁই ঝাঁঝের সাথে বলে,’তাতে তোর কীরে? তোর তো এখন হবু বর আছে। তোর কেন জ্বলছে?’
লামিয়া আমতা আমতা করে বলল,’জ্বলছে নাকি? কই না তো! বিশ্বাস হচ্ছে না? দাঁড়া ফোন থেকে আইডি বের করে দেখাচ্ছি। তাকে যে রিকোয়েস্ট দিয়েছিলাম সেটাও ক্যানসেল করে দিয়েছি।’
‘খুব উদ্ধার করেছিস। এখন থাম তুই।’ লামিয়াকে থামিয়ে রেশমি জুঁইকে বলল,’লামিয়ার জ্বলুক বা না জ্বলুক তুই আমাদের অগোচরে কাজটা কীভাবে করলি?’
অর্ষা বিরসমুখে বলল,’সবসময় উলটা-পালটা কাজ করিস তোরা আর বকা খাই আমি। উনিও বকল আর স্যারও!’
লামিয়া অর্ষাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলল,’মন খারাপ করে না বোকারানী। সে তো আর জানত না যে এটা তুই!’
‘ভাইয়া জানে, মেয়েটা যে তুই?’ জুঁইকে জিজ্ঞেস করল আহিল।
জুঁই নতমুখে বলল,’না।’
‘আর ডিস্টার্ব করিস না ভাইয়াকে।’
‘ডিস্টার্ব করি না তো দোস্ত! শুধু একটু মজা করছিলাম।’
‘তাও করিস না। এমনিতে আমাদের সামনে ভাইয়াকে নিয়ে মজা করিস তোরা তাতে সমস্যা নেই। তবে ভাইয়ার সাথে ডিরেক্ট এমন কোনো মজা আর কেউ করিস না। একবার ভাব তো, ভাইয়া যদি জানতে পারে তখন কী ভাববে?’
জুঁই অনুনয় করে বলল,’স্যরি দোস্ত। আর এমন হবে না। সত্যি বলছি।’
আহিল মুচকি হাসল। জুঁই অর্ষাকে জড়িয়ে ধরে বলল,’তোকেও স্যরি জান।’
অর্ষাও মুচকি হেসে বলল,’স্যরি বলতে হবে না পাগলী।’
______
আফরিন বাড়িতে এসেছে ঘণ্টাখানেক হবে। এসেই সে আহনাফের রুমে বসে আছে। মায়া মায়া দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আহনাফের দিকে। তার মাঝে মাঝে মনে প্রশ্ন জাগে, তার ভাই এত সুদর্শন কেন? আসলেই এত সুদর্শন? নাকি তার ভাই বলে, এত সুদর্শন লাগে? কী জানি বাবা!
আফরিনকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে আহনাফ জিজ্ঞেস করে,’কী দেখিস?’
আহনাফ আধশোয়া অবস্থায় কোলের ওপর বালিশ রেখে আর বালিশের ওপর ল্যাপটপ রেখে অফিসের মেইল দেখছিল। আফরিন নিজের জায়গা থেকে উঠে ভাইয়ের কাছে যায়। গা ঘেঁষে বসে আদুরেকণ্ঠে বলে,’তোমাকে।’
আহনাফ মৃদু হাসে। ল্যাপটপের দিকেই দৃষ্টি রেখে বলে,’তুই আর বড়ো হবি না?’
‘না। আমি ছোটোই থাকব। বড়ো হতে মন চায় না।’
‘কেন? ছোটো থাকলে সবাই অনেক আদর করে। অনেক ভালোবাসে।’
‘তুই আজীবন ছোটোই থাকবি। আহিলের থেকেও তোকে ছোটো লাগে। আর আহিলও তো তোকে ছোটো বোনের মতোই ট্রিট করে।’
আফরিন শব্দ করে হেসে বলে,’ও তো সবসময়ই আমায় আগলে রাখত ভাইয়া। তোমার অবর্তমানে ওই আমাকে বড়ো ভাইয়ের মতো টেক কেয়ার করত।’
‘এজন্য তোর প্রতি ওর আর ওর প্রতি তোর ভালোবাসা অনেক বেশি।’
আফরিন এবার সোজা হয়ে বসে। চোখ পাকিয়ে বলে,’এর মানে কী? আমরা তোমায় ভালোবাসি না?’
‘বাসিস। কিন্তু কম।’
‘একদম না। আমরা সবাই তোমাকে অনেক ভালোবাসি। অনেক অনেক মিস করি। কিন্তু তুমি তো স্বার্থপর। সুইজারল্যান্ডে পড়তে গিয়ে ঐ দেশের প্রেমে পড়ে গেলে। পড়া শেষ করে ওখানেই জব নিলে। এমনকি ওখানেই স্যাটেল হয়ে গেলে। তাহলে এতসব কিছুর মানে কী দাঁড়ায় বলো তো? আমরা তোমাকে ভালোবাসলেও তুমি আমাদের একটুও ভালোবাসো না।’
‘তাই?’
‘আমি এতগুলো কথা বললাম, আর তুমি শুধু ‘তাই’ বললে?’
‘আর কী বলব বল তো? তুই যে ঝগড়ুটে! আমি ভাই শান্তিপ্রিয় মানুষ। ঝগড়ার আগে-পিছে নেই।’
‘আমি ঝগড়ুটে না? তোমার বউ হবে ঝগড়ুটে দেখিও।’
‘তাহলে বউকে তোদের কাছে রেখে যাব।’
‘ইশ! আমাদের থেকে দূরে থাকলেও, বউকে দূরে রাখবে না। জানা আছে আমার সব।’
‘ওরে বাবা! তুই তো দেখি সব জানিস।’
‘হু জানবই তো। আমি অবুঝ নাকি?’
আহনাফ হাসে। ওর গালে হাত বুলিয়ে বলে,’না। তুই আমার বুঝদার বোন।’
আফরিনও হাসে। এরপর আহনাফের দিকে তাকিয়ে বলে,’তোমার অনেক কষ্ট হয় তাই না ভাইয়া?’
‘কেন?’
‘আবার বলে কেন! এক্সিডেন্ট করেছ। ব্যথা করছে না?’
‘তা তো করবেই।’
‘আচ্ছা বলো কী খাবে। আজ আমি তোমার জন্য রান্না করব।’
‘রান্না? তাও আবার তুই?’
‘এভাবে বলছ কেন? আমি এখন মোটামুটি রান্না জানি।’
‘ঐ মোটামুটি রান্না খেয়ে আমাকে আবার ওয়াশরুমে দৌঁড়াতে হবে না তো?’
‘মজা নিচ্ছ না? খেয়ে তো দেখো আগে।’
আহনাফ মৃদু হেসে বলল,’আচ্ছা তোর যা ইচ্ছে রান্না কর।’
‘না, তুমি বলো।’
‘তাহলে হালিম রান্না কর। হঠাৎ করে খেতে ইচ্ছে করল।’
‘ওকে। তুমি অপেক্ষা করো। আমি ঝটপট রান্না করে নিয়ে আসছি।’ বলে দৌঁড়ে ঘর থেকে বের হয়ে আফরিন।
আহনাফ পেছন থেকে একটু জোরেই বলে,’সাবধানে। হাত যেন না পুড়ে।’
.
.
আফরিনের রান্না শেষ হতে হতে আহিল আর অর্ষা কলেজ থেকে চলে আসে। রেণু গেছে দরজা খুলতে। ওরা দুজনে যখন বাড়ির ভেতর ঢুকছিল তখন আফরিন হালিম নিয়ে রান্নাঘর থেকে বের হচ্ছিল।
আফরিনকে দেখে আহিল চিৎকার করে ওঠে। দৌঁড়ে এসে জড়িয়ে ধরে। এদিকে হাতের বাটি পড়ে যাবে যাবে অবস্থা। অর্ষা এসে আফরিনের হাত থেকে বাটিটা নিয়ে নেয়।
আফরিনও এবার ছোটো ভাইকে জড়িয়ে ধরে পিঠে হাত বুলিয়ে দেয়। আহিল খুশিতে আত্মহারা হয়ে বলে,’সারপ্রাইজড হয়ে গেছি আপু। তুই বলিসনি কেন যে এসেছিস?’
‘তাহলে কি আর সারপ্রাইজ পেতি?’
আফরিনকে ছেড়ে সোজা হয়ে দাঁড়ায় আহিল। মাথা দুলিয়ে বলে,’তাও ঠিক।’
‘কেমন আছো অর্ষা?’ অর্ষার দিকে মিষ্টি হেসে জিজ্ঞেস করল আফরিন।
অর্ষাও প্রত্যুত্তরে হেসে বলল,’আলহামদুলিল্লাহ্ আপু। তুমি কেমন আছো?’
‘আমিও আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছি। ঐ দেখো, এখনো বাটিটা তোমার হাতে। আমায় দাও।’
‘সমস্যা নেই আপু।’
আহিল আফরিনকে টেনে নিজের ঘরে নিতে নিতে বলল,’হালিম পরে খাবি। আগে আমার ঘরে আয়। কত গল্প জমে আছে।’
সে আফরিনের কোনো কথাই শুনল না। এদিকে হালিমের বাটি হাতে বোকার মতো দাঁড়িয়ে আছে অর্ষা। সে এখন কী করবে? বাটি ধরে এভাবে দাঁড়িয়েই থাকবে? নাকি গিয়ে দিয়ে আসবে? ভাই-বোনের মধ্যে গিয়ে থার্ড পার্সন হওয়া কি ঠিক হবে? ওর সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে রেণু রান্নাঘর থেকে বের হয়।
রেণুর চোখে বিস্ময় ঠিকরে পড়ছে। সে বলল,’ওমা! আপনে এমনে বাটি নিয়া দাঁড়ায় আছেন ক্যান আফা?’
অর্ষা যেন একটু হাঁফ ছেড়ে বাঁচল। বলল,’আপা, হালিমের বাটি আফরিন আপুকে দিয়ে আসবেন?’
রেণু দু’হাতে মাছের পলি দেখিয়ে বলল,’আমার হাতে মাছ আফা। কেবল কাটলাম। ফিরিজে (ফ্রিজে) রাখতে আইছিলাম। এই হাত দিয়া খাওন নিয়া গেলে আমারে দৌঁড়ানি দিব বড়ো ভাইজানে।’
‘খাবার আফরিন আপুর না?’
‘না। বড়ো ভাইজানে খাইব। একটু কষ্ট কইরা দিয়া আহেন।’
‘আচ্ছা।’ বলেও অর্ষা সেখানে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে। এই মানুষটার সামনে গেলেই দুনিয়ার সকল জড়তা তার মাঝে কাজ করে। সকালের ঝাড়িগুলোর কথাও মনে পড়ে যায় তার। হোক না জেনে দিয়েছে, তবুও তো ঝাড়িগুলো সে-ই খেয়েছে!
রেণু মাছ ফ্রিজে রেখে ফিরে এসে বলল,’এহনো খাড়াই আছেন? আমিই দিয়া আসমু?’
অর্ষা ইতস্তত করে বলল,’না, সমস্যা নেই। আমিই দিয়ে আসছি।’
ব্যাগটা সোফার ওপর রেখে গুটিগুটি পায়ে সে আহনাফের রুমের দিকে যায়। দরজা ভেতর থেকে চাপানো। সে বাইরে দাঁড়িয়ে দু’বার নক করে।
আহনাফ ভেতর থেকে জিজ্ঞেস করে,’কে? আফরিন?’
‘না। অর্ষা।’ চাপাস্বরে বলল অর্ষা। গলা থেকে যেন শব্দও বের হচ্ছে না।
অর্ষার কথা আহনাফ শুনতে পেল না। তাই কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলল,’দরজা খোলাই আছে।’
অর্ষা এবার ভেতরে যায়। সাথে সাথে দু’জোড়া চোখ এক হয়ে যায়। দৃষ্টি নামিয়ে নেয় অর্ষা। নতমুখে বলে,’আপনার খাবার।’
‘তুমি এনেছ কেন? আফরিন কোথায়?’
‘আহিল আপুকে টেনে নিয়ে গেল।’
অর্ষার কথার ধরণে আহনাফের হাসি পেলেও হাসল না। হাসি চেপে গিয়ে বলল,’ওহ। আচ্ছা এখানে রাখো।’
পাশের টি-টেবিল দেখিয়ে বলল আহনাফ।
টি-টেবিলের ওপর অনেকগুলো কাগজ এলোমেলো করে রাখা। অর্ষা কী করবে বুঝতে পারছে না। সে না বুঝলেও আহনাফ ঠিকই বুঝে ফেলে। সে হাত বাড়িয়ে কাগজগুলো নিয়ে বিছানায় রেখে বলল,’এখন রাখো।’
টেবিলের ওপর হালিমের বাটি রাখার সময়ে আহনাফ জিজ্ঞেস করে,’পরীক্ষা কবে থেকে?’
‘আগামী সপ্তাহ্ থেকে।’
‘প্রিপারেশন কেমন?’
‘ভালো।’
আহনাফের মনে অনেকক্ষণ যাবৎ একটা প্রশ্ন ঘুরঘুর করছিল। অন্যদিনের তুলনায় অর্ষার আজকের আচরণ অনেকটা অন্যরকম লাগছে। তাই সে প্রশ্ন করেই বসল,’তুমি এমন চোরের মতো করছ কেন?’
অর্ষা থতমত খেয়ে তাকায়। আমতা আমতা করে বলে,’কই? না তো! আমি কী চুরি করব?’
‘চুরি করেছ বলিনি। চোরের তো করছ বলেছি।’
‘আমি ঠিক আছি।’
‘আচ্ছা ঘরে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নাও।’
অর্ষা যেন এতক্ষণ এ কথাটিই শোনার জন্য অপেক্ষা করে ছিল। আহনাফ বলা মাত্রই সে একছুটে দৌঁড়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। ওর এই কাণ্ডে হকচকিয়ে যায় আহনাফ। বিষয়টা কী হলো?
পরক্ষণে সে নিজেকে ধাতস্থ করে সগতোক্তি করে বলল,’মেয়েটা একটু বেশিই যেন সহজ-সরল আর অদ্ভুত!’
চলবে…
[কার্টেসী ছাড়া কপি করা নিষেধ।]