#রূপকথা
#পর্ব_৯
DI YA
রূপের ফোনে একজনের কল আসে। কল রিসিভ করে সে বলতে লাগলো,
কি জানতে পারলি ? – রূপ
-অপাশের ব্যক্তি
ওহহ গ্রেট আমরা তাহলে অর্ধেক সমাধান পেয়ে গিয়েছি সমস্যার – রূপ
-অপাশের ব্যক্তি
আচ্ছা তুই তাহলে দেখ। আর ওকে সাবধানে রাখিস। শুধুমাত্র ও জানে কে আছে সবকিছুর পিছনে – রূপ
_অপাশের ব্যক্তি
আচ্ছা আমি আজকে রাতেই রওয়ানা দিব। আর হ্যা সাবধানে থাকিস কেউ যে কিছু না জানতে পারে। কারণ ওরা সর্বদা সব জায়গায় নজর রাখছে যা আমার মনে হচ্ছে। – রূপ
_অপাশের ব্যক্তি
হুম কালকেই জানা আছে এ সবকিছুর পিছনে আসল কালপিট কে। আমার দুজন মানুষের উপর সন্দেহ হচ্ছে ।- রূপ
_ অপাশের ব্যক্তি
হুম তুমই যা ভাল বুঝিস কর। আমি এখন ফোন রাখছি।- রূপ
রূপ কল কেটে চলে গেলো আবার ভিতরে। এতক্ষণে বাকি সকলে এসে পরেছে। আজকে বেশি মানুষ হয়নি। যারা কাছের আত্মীয় তারা আর ফ্রেন্ডরা। আজকে আবার রিয়া আর রায়ান ভাইয়া রিয়াদের বাসায় যাবে। অনুষ্ঠান শেষে তাদের যেতে যেতে ৭ টা বেজে গেলো। তারপর আমরা ও বাসার দিকে রওয়ানা দিলাম। বাসায় এসে রূপ ভাইয়া তার রুমে চলে গেলো। একটুপর আবার ড্রেস চেঞ্জ করে কই যেন চলে গেলো। সবাইকে বলে গেলো কাজ আছে। এসে সবাইকে জানাবে কাজের কথা।সবাই ভেবে নিল জরুরি কোনো কাজ তাই কেউ আর সে ব্যাপারে মাথা ঘামালো না। কিন্তু আমার প্রচুর টেনশন হচ্ছিল। বার বার মনে হচ্ছিল খারাপ কিছু হতে যাচ্ছে। এসব ভাবতে ভাবতে এসে শুয়ে পরলাম।কিছুক্ষণের মধ্যে ঘুমিয়ে গেলাম।ভোরবেলা বাজে একটা স্বপ্ন দেখে আমার ঘুম ভেঙে গেলো। উঠে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি চারটা বাজে। স্বপ্ন নিয়ে ভাবতে ভাবতে ফজরের নামাজ দিয়ে দিলো। উঠে অযু করে নামাজ পরে নিলাম। তারপর আবার বিছানায় শুয়ে শুয়ে ভাবতে লাগলাম রূপ ভাইয়ার কথা।বাজে স্বপ্ন টা আমি রূপ ভাইয়াকে নিয়েই দেখেছি। তাই চিন্তা আরো বেশি হচ্ছে। অনেক ভাবার ওর ঠিক করলাম ভাইয়াকে কল দিব।কিন্তু তখন ঘটলো আরেক বিপত্তি। রূপ ভাইয়ার আগের নম্বর আমার কাছে নেই। কারণ আমি ব্লক করে ডিলেট করে দিয়েছিলাম। আর দেশে আসার পর সে নতুন সিম নিয়েছে। কিন্তু সেই নম্বর আমার কাছে নেই। এখন আর কিছু করার নেই।তাই বসে বসে রূপ ভাইয়ার কথা ভাবতে লাগলাম আর মনে মনে আল্লাহকে বলতে লাগলাম যেন রূপ ভাইয়া ঠিক থাকে।সত্যি এখনো আমি জানিনা।কিন্তু আমার মন বলছে রূপ ভাইয়া মিথ্যা বলছে না।কবে যে এই সত্যি মিথ্যার বেড়াজাল থেকে বের হতে পারবো তা আমি জানিনা।
অন্য দিকে,
রূপ সকাল ৫ টায় চট্টগ্রাম এসেছে। এখানে এসে সে সোজা চলে যায় তার ফ্রেন্ড আদ্রর বাসায়।আদ্র পেশায় একজন পুলিশ অফিসার। কলিং বেল বাজাতেই আদ্র দরজা খুলে দেয়।রূপ আদ্রকে দেখে জড়িয়ে ধরে আদ্রও রূপকে জড়িয়ে ধরে। আদ্র বলতে শুরু করে,
কেমন আছিস ইয়ার ?? – আদ্র
এই তো ভালই আছি। তুই বল তোর কি খবর ? – রূপ
এই যে চলছে দিনকাল। এটাই অনেক। কেমন আছি সেটা নিজেও জানিনা – আদ্র
এখনো ভালোবাসিস তাই না – রূপ
হুম প্রচুর। কিন্তু আমি ভুল করেছিলাম। তার সাথে।তাকে একটি ছেলেকে জড়িয়ে ধরতে দেখেই আমি ভুল বুঝে নিলাম।সত্যি মিথ্যা যাচাই না করেই সেই দিন মুখে যা এসেছিলো। তাই বলেছিলাম অরুকে। আজকে সে দূরে। আজকে আর আফসোস ছাড়া কিছু করার নেই। কষ্ট লাগে এটা ভেবেই যে মানুষ টা আমাকে এতো বিশ্বাস করতো। তার বিশ্বাসের মূল্য আমি দিতে পারলাম না। পারলাম না তাকে বিশ্বাস করে তার মুখ থেকে সবকিছু শুনতে। এই যে ভুল করেছি এখন তার ফল ভোগ করছি – আদ্র
আমার বোন কিন্তু এখনো তোকে ভালোবাসে। – রূপ
না রে ও আর আমাকে ভালোবাসে না। আচ্ছা বাদ দে। এখন ভিতরে আয় ফ্রেশ হয়ে কিছু খেয়ে নে তারপর যাই আমরা – আদ্র
আচ্ছা – রূপ
প্রায় ঘন্টাখানেক পর আদ্র আর রূপ বাসা থেকে বের হয়ে গেলো। গাড়িতে রূপ ড্রাইভিং করছে আর আদ্র তার পাশের সিটে বসে আছে। আদ্র বলে উঠলো,
যাই বলিস রূপ আমি বলবো তুই অনেক লাকি – আদ্র
কিভাবে ? – রূপ
এই যে দেখ যে ছেলেটা তোকে সবসময় ওইসব বাজে পিক পাঠাতো সে চট্রগ্রামেই থাকে।তাই তো এত তারাতাড়ি তাকে খুঁজে পেলাম।আমি তো ভেবে রেখেছিলাম দুইদিন অত্যন্ত লাগবে তাকে খুজতে। কিন্তু এত জলদি যে পেয়ে যাব ভাবিনি – আদ্র
আচ্ছা আদ্র ছেলেটাকে কি তোর চেনা পরিচিত মনে হচ্ছে – রূপ
না ছেলেটা আমাদের পরিচিত নয়। কিন্তু – আদ্র
কিন্তু কি ? – রূপ
আমার যতটুকু মনে আছে ছেলেটা আমাদের সাথে একসাথেই কলেজে পড়তো – আদ্র
নাম কি ? – রূপ
মনে নাই ভাই আর ওই ছেলেকে এত মারার পর ও কিছু বলেনি।আমি যা বললাম সবটুকুই আন্দাজে বললাম – আদ্র
ছেলেটার পরিবার সম্পর্কে কিছুু জানিস ? – রূপ
আমি ছেলেটার বাবা মা নেই।দুনিয়াতে আপন বলতে শুধু একটা ছোট বোন আছে। এগুলো আমার ভাড়া করা লোকরা বলেছে – আদ্র
আচ্ছা ঠিক আছে। দেখ তোর বলা এড্রেসে আমরা চলে এসেছি। এখন কি নামবো – রূপ
হুম – আদ্র
জায়গাটা শহর থেকে একটু দূরে। পুরো নিরিবিলি পরিবোশ।রাস্তায় একজন মানুষ ও নেই।আদ্র তাকে নিয়ে আসলো একটি পরিত্যক্ত বাসায়।ভিতরে ঢুকে দেখলো তিনজন লোক বসে আছে। আর একটি ছেলেকে মাঝখানে চেয়ারের সাথে বেধে রাখা হয়েছে। রূপকে দেখেই ছেলেটার মুখে ভয়ের ভাব ফুটে উঠলো। রূপ ও ছেলেটাকে চেনার চেষ্টা করলো। রূপ বললো,
সিয়াম তুমি ? তুমি এসব কিছু করেছো। – রূপ
না ভাই বিশ্বাস কর আমি ইচ্ছে করে এসব করিনি।বাধ্য হয়েছিলাম এসব করতে – সেই ছেলেটি অথাৎ সিয়াম।
মানে কি বলতে চাচ্ছো তুমি ? – আদ্র
আমি বাধ্য হয়েছিলাম এরকম একটা জঘন্য কাজ করতে – সিয়াম
কে তোমাকে বাধ্য করেছিল সিয়ান ? – রূপ
আমি বলতে পারবনা এসব কিছু – সিয়াম
সিয়াম ভালো ভাবে বলো৷ আমাদের খারাপ হতে বাধ্য করো না – আদ্র
আমি পারবনা – সিয়াম
বাসায় যে তোমার ছোট বোন সিয়াম।সে কিন্তু সম্পূর্ণ একা এখন বাসায়।খারাপ কিছু হয়ে যেতে কিন্তু সময় লাগবেনা – আদ্র
না ওর কিছু করবা না।আমি বলছি সবকিছু। কিন্তু ওর যেন কিছু নাহয় তাহলে আমি বাঁচতে পারবোনা মরে যাব আমি।- সিয়াম
তোমার বোনের কোনো ক্ষতি হবে না।তুমি আমার উপর ভরসা করতে পারো। এখন বলো আমাকে সবকিছু – রূপ
~~~~~~~~~
সকাল ৯ টা মা ডেকে গিয়েছে ব্রেকফাস্টের জন্য। আমি না বলেছি। কিছু ভাল লাগছে না। কেমন অস্থির অস্হির লাগছে। এমন সময় ফোনে একটা মেসেজের নোটিফিকেশন আসলো।মেসেজ ওপেন করে দেখতে পেলাম।সেখানে লেখা,,
কথা আমি রূপ বলছি। জলদি এই এড্রেস চলে আয় তুই। সময় খুব কম।অনেক বড় একটা সমস্যা হয়ে গিয়েছে। এইটুকুই লেখা ছিলো।
এই মেসেজটা দেখে আমি জলদি রেডি হয়ে বাসা থেকে বের হয়ে গেলাম।যাবার আগে অরুকে বলে এসেছি রূপ ভাইয়ার কাছে যাচ্ছি । ও যেনো বাসায় সবাইকে সামলে নেয়।ভাইয়ার দেওয়া ঠিকানায় আসতেই কে জানি পিছনে থেকে আমার মুখে একটা রুমাল চেপে ধরলো। আমি অজ্ঞান হয়ে পরে গেলাম সাথে সাথে।
জ্ঞান ফেরার পর নিজেকে একটি সাজানো গোছানো ঘরে আবিষ্কার করলাম। ধীরে ধীরে সবকিছু চিন্তা করতে লাগলাম।ঘড়ির দিকে তাকাতেই দেখি ১ টা বাজে। এমন সময় ঘরের দরজা খুলে ভিতরে প্রবেশ করলো একজন মেয়ে আর একজন ছেলে
চলবে , 🥰