লাল নীল সংসার পর্ব -২৪

#_লাল_নীল_সংসার_
#_মারিয়া_রশিদ_
#_পর্ব_২৪_

পুরো বাড়িটাহ কে সুন্দর করে লাইটিং করা হয়েছে। শুধু বাড়িকেই নাহ বাড়ির আশেপাশে সব জায়গায় সুন্দর করে লাইটিং করা হয়েছে,, সাথে বিভিন্ন প্রকার নেট,, ডিজাইনিং কাপড়,, ফুল দিয়েও ডেকোরেশন করা হয়েছে। বাড়ির ভেতর থেকে মিউজিক ভেসে আসছে। আশেপাশে মানুষের চলাচল রয়েছে,, মার্জিত ভাবে।

রাস্তা থেকে সোজা বাড়িটির দিকে তাকিয়ে আছে আদনান। আর বাড়িটাহ স্নেহাদের। আজ স্নেহা আর ইয়াশের এইংগেজমেন্ট। আজ স্নেহা ইয়াশের বাগদত্তা বলে পরিচয় পাবে। আর সেই সাথে আদনানের থেকে তার বার্বিডল হারিয়ে যাবে এক ধাপ। এক একটা দিন যাবে,, আর তার জীবন থেকে তার বার্বিডল হারিয়ে যাবে এক ধাপ করে করে।

আদনানের আসার একদমই ইচ্ছে ছিলো নাহ। কারই বা সহ্য হয় নিজের ভালোবাসার মানুষটাকে অন্য একজনের হতে দেখার। কিন্তু,, সে যে তার বার্বিডল কে কথা দিয়েছে। আর তাছাড়া স্নেহা আজও অনেকবার ফোন দিয়েছে তাকে। আদনান নাহ এসে কিভাবে পারবে? আর যাই হোক,, তার বার্বিডলকে কষ্ট দিতে পারবে নাহ।

আদনান আস্তে আস্তে হাঁটতে থাকে বাসার দিকে। গেটের ভেতরে আসতেই দেখে বেশির ভাগ মানুষ গার্ডেন এরিয়ায়। ওখানে স্টেজও করা হয়েছে আর আলোকসজ্জাও বেশি। তার মানেই এখানে তাদের এইংগেজমেন্টের অনুষ্ঠান করা হবে। আদনান সেইদিকে এগিয়ে যেতেই দেখে স্নেহা নেই,, কিন্তু ইয়াশ সবার সাথে হাসি মুখে কথা বলছে। ইয়াশ আজ পুরো ফর্মাল গেটাপে আছে। বেশ লাগছে ইয়াশকে।

এমন সময় সবাইকে তার দিকে তাকাতে দেখে কিছুটা হতভম্ব হয়ে যায় আদনান। তার দিকে সবাই কেন তাকাবে? তারপর কি যেন মনে করে তাড়াতাড়ি পেছন ঘুরে ইয়াশ। আর সেইদিকেই তাকিয়ে থাকে। স্নেহা একটা হোয়াইট লেহেঙ্গা পরে এগিয়ে আসছে। চোখে গাঢ় কাজল,, ঠোঁটে লাল লিপস্টিক,, হালকা মেকাপ,, ডায়মন্ডের নেকলেস,, চুল মাঝ সিথি করে হোয়াইট স্টোনের টিকলি পরে চুল ছেড়ে দেওয়া,, চুলের এক পাশে কানে দুইটা হোয়াইট রোজ গুজে দেওয়া আছে,, হাতে হোয়াইট স্টোনের চুড়ি,, অসম্ভব সুন্দর লাগছে স্নেহাকে। আদনান যেন স্নেহার এই রুপে ঝলসে যাচ্ছে।

সবাই স্নেহার দিকে মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছে। স্নেহা সামনে তাকাতেই দেখে আদনান দাড়িয়ে আছে। আর আদনানের পাশে একটু পেছনেই ইয়াশ মুচকি হাসি দিয়ে দাড়িয়ে আছে। সামনে দুইজন ব্যাক্তি স্নেহার,, একজন অনুভুতি,, অন্যজন ভবিষ্যৎ। স্নেহা চোখ বন্ধ করে নিজেকে একটু স্বাভাবিক করে নেয়।

ইয়াশ এগিয়ে এসে স্নেহার দিকে হাত বাড়িয়ে দেয়। স্নেহা একপলক আদনানের দিকে তাকিয়ে ইয়াশের হাতের উপর হাত রাখে। আদনান চোখ নামিয়ে নিচের দিকে তাকায়। তারপর আবার মাথা উঠিয়ে স্নেহার দিকে তাকিয়ে দেখে স্নেহা তার দিকেই তাকিয়ে আছে। স্নেহার দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দেয় আদনান। আদনানের মুখে হাসি দেখে স্নেহার মুখেও অটোমেটিক হাসি ফুটে উঠে।

স্নেহা আর ইয়াশ স্টেজে পাশাপাশি দাড়িয়ে আছে। আদনান কিছুটাহ দুরে একটা চেয়ারে বসে ওদের দিকে দেখছে। কত সুন্দর লাগছে আজ স্নেহাকে। স্নেহা প্রায় আদনানের দিকে তাকাচ্ছে। স্নেহা নিজের কষ্ট টাহ নাহ পারছে কাউকে বলতে,, আর নাহ পারছে নিজে সহ্য করে থাকতে।

সবাই এগিয়ে আসে। সময় হয়ে গেছে আংটি বদলের। সবাই এগিয়ে আসছে মুখে হাসি নিয়ে। আদনানের চোখ ছলছল করে উঠছে। বার বার চোখের পলক ফেলে সামলাতে চেষ্টা করছে নিজের অশ্রু গুলোকে। স্নেহা করুন চোখে তাকিয়ে আছে আদনানের দিকে। ইয়াশের মা একটা ডায়মন্ড রিং ইয়াশের হাতে দিয়ে বলে ওঠে,
–” ইয়াশ এইটা স্নেহাকে পরিয়ে দাও।”

ইয়াশ আংটি টাহ হাতে নিয়ে মুচকি হেসে বলে ওঠে,
–” ওকে মম!”

ইয়াশ স্নেহার হাত নিজের হাতের উপর তুলে নেয়। স্নেহা করুন চোখে আদনানের দিকে তাকায়। আদনান ছলছল চোখে একটা মুচকি হাসি দেয়। স্নেহা মাথা নিচু করে ফেলে। ইয়াশ স্নেহাকে আংটি পরিয়েই দিলো। আদনান চোখ বন্ধ করে উল্টো দিকে ঘুরে যায়। চোখ থেকে এক ফোটা জল গড়িয়ে পড়ে আদনানের।


#_দুইদিন_পর_…….
শিশির নিজের রুমে বসে আছে। ল্যাপটপে কিছু কাজ করছে। ছোয়া রান্না সেরে এসেছে। খুব গরম লাগছে তার। তাই গোসল করবে ভাবছে। আলমারি থেকে শাড়ি বের করে নিয়ে বাথরুমে রেখে আসে। তারপর চুল গুলো একটু আচড়িয়ে নিলো। তারপর কি মনে করে শিশিরের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” ঐ শুনো!”

শিশির ল্যাপটপে চোখ রেখেই বলে ওঠে,
–” বলো!”

ছোয়া কিছুটাহ বিরক্ত হয়ে এগিয়ে এসে শিশিরের কাছের থেকে ল্যাপটপ নিয়ে নেয়। তারপর বলে ওঠে,
–” আমার দিকে তাকিয়ে কথা বলো।”

শিশির একটা মুচকি হাসি দিয়ে ছোয়াকে নিজের কোলে বসিয়ে নেয়। ছোয়ার কোমর জড়িয়ে নিজের কাছে টেনে নিয়ে বলে ওঠে,
–” বলেন,, ম্যাম!”

ছোয়া একটা মুচকি হাসি দেয়। তারপর আবার গম্ভীর হয়ে বলে ওঠে,
–” শিশির! আদনানের কি যেন হয়েছে। রুম থেকে বের হয় নাহ। ওর ঐযে ওর বান্ধবীর বিয়ে হচ্ছে,, ওখানে যাওয়ার জন্যই শুধু বের হয়। টিউশনি করতে যায়,, আর চুপচাপ থাকে। আদনান তো এমন ছিলো নাহ,, অনেক হাসি খুশি ছিলো। কিন্তু,, ওর মাঝে এখন সেই হাসি খুশি টাহ পাই নাহ। কি হয়েছে জিজ্ঞেস করেছিলাম,, বললো কিছু নাহ। কিন্তু,, আমার মনে হচ্ছে,, ওর কিছু হয়েছে।”

ছোয়ার কথা শুনে শিশির কিছুটাহ গম্ভীর হয়ে যায়। আদনানের ব্যাপার টাহ সেও খেয়াল করেছে। কিন্তু,, ছোয়ার মতো করে এতোটাহ বুঝে নি। একটা নিশ্বাস নিয়ে শিশির বলে ওঠে,
–” হয়তো,, বাইরে কোনো প্রবলেম হয়েছে। বড় হয়েছে তো,, এখন সব বলতে চায় নাহ। আর কয়েকটাহ দিন যাক,, আর একটু সময় দেই। দেখি কি হয়।”

–” আচ্ছা!”

ছোয়া উঠে যেতে গেলে শিশির আরও জোড়ে জড়িয়ে ধরে। ছোয়া কিছুটাহ কেঁপে উঠে হালকা কম্পিত কণ্ঠে বলে ওঠে,
–” আরে কি করছো? ছাড়ো!”

শিশির ছোয়ার কপালের সাথে কপাল ঠেকিয়ে বলে ওঠে,
–” বাড়ির প্রতিটা মানুষের কত খেয়াল রাখেন ম্যাডাম। কিন্তু,, এইদিকে যে একটা মাসুম বর আছে,, তার খেয়াল কি থাকে আপনার?”

ছোয়া হালকা হাসে। লজ্জিত কন্ঠে বলে ওঠে,
–” যাহ!”

শিশির হালকা হেসে ছোয়ার ওষ্ঠ স্পর্শ করে। ছোয়া শিশিরকে সরিয়ে দিয়ে বাথরুমে চলে যায়। শিশিরও আটকায় নাহ ছোয়াকে। মুচকি হাসি দিয়ে ল্যাপটপ নিয়ে কাজ করতে থাকে।


আদনান একভাবে তাকিয়ে আছে স্নেহার দিকে। আজ স্নেহার সঙ্গীত মেহেন্দি অনুষ্ঠান। স্নেহার হাতে পার্লার থেকে আসা দুইজন মেয়ে মেহেন্দি দিয়ে দিচ্ছে আর এক পাশে কয়েকজন ছেলে মেয়ে নাচ করছে। সবাই নাচ দেখছে। কিন্তু,, আদনানের চোখ যে স্নেহাতেই সীমাবদ্ধ।

স্নেহাকে আজ বড্ড সুন্দর দেখাচ্ছে। পুরো বার্বিডলের মতো লাগছে। একটা ফুলানো সবুজ ঘাগরার সাথে লাল টপ,, কচিপাতা রং এর দোপাট্টা,, আর্টিফিশিয়াল ফুলের গহনার সাথে সামনে হালকা পাফ করে চুল ছেড়ে দেওয়া,, হালকা সাজ,, পরিপূর্ণ লাগছে স্নেহাকে।

স্নেহাও আদনানকে আড় চোখে দেখছে। ছেলেটার চোখের নিচে দিয়ে কালি পড়ে আছে। কি হয়েছে তার? সারা রাত কি ঘুমায় নি সে? আদনান স্নেহাকে যেন প্রান ভরে দেখে নিচ্ছে। কারন,, পরে দেখার সুযোগ যে আর সে পাবে নাহ। স্নেহার পাশে বসা একটি মেয়ে স্নেহার দিকে তাকিয়ে হালকা হেসে বলে ওঠে,
–” জানিস,, আপু! আজ তোর মেহেনদির রং যতো গাঢ় হবে তোর বর তোকে ততো ভালোবাসবে।”

কথাটাহ আদনানের কানেও আসে। স্নেহা একপলক আদনানের দিকে তাকিয়ে আবার মেয়েটার দিকে তাকিয়ে হালকা হাসে। আদনান ওখান থেকে উঠে ছাদের দিকে চলে যায়। বিষয়টি স্নেহা খেয়াল করে।

………………ছাদ টাহ খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে৷ টুরি বাল্ব,, বিভিন্ন রঙের কাপড়,, নেট দিয়ে সাজানো হয়েছে। আকাশে বেশ সুন্দর চাঁদও উঠেছে। অনেক মনোরম লাগছে চারিদিকে। আদনান রেলিং ধরে চারিদিকে দেখছে।

আর একটা দিন! তারপরেই স্নেহার বিয়ে হয়ে যাবে অন্য জায়গায়। অন্য একজনের অধিকারের হয়ে যাবে। হারিয়ে ফেলবে তার বার্বিডল কে। ইশশ! যদি আর একটু ভালো হতো নিজের অবস্থান,, তাহলে আর নিজের বার্বিডলকে এভাবে হারাতে হতো নাহ।

–” আদনান!”

কারোর ডাক শুনে পেছনে তাকায় আদনান৷ দেখে স্নেহা দাড়িয়ে আছে তার দিকে তাকিয়ে। মাশাআল্লাহ! এই চাঁদের আলো আর টুরি বাল্বের আলো স্নেহার মুখে খেলা করছে। দেখতে আরও মায়াবী লাগছে স্নেহাকে। আদনানের আফসোস হচ্ছে,, এই মায়া ভরা মুখ সে হারিয়ে ফেলবে। কি করে থাকবে সে? স্নেহা আদনানের দিকে এগিয়ে এসে মলিন কন্ঠে বলে ওঠে,
–” আদনান!”

আদনানের ধ্যান ভাঙে স্নেহার কথা। একটা ঢুক গিলে নিজেকে সামলিয়ে নেয় আদনান। আদনান স্নেহার দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” তুই এখানে কেন? মেহেনদি দেওয়া শেষ?”

স্নেহা বলে ওঠে,
–” হুম! শেষ! নিচে নাচ গান হচ্ছে,, ভালো লাগছে নাহ। তাই চলে আসলাম।”

–” কেন? ভালো লাগছে নাহ কেন?”

–” এমনি! তুই এখানে কেন চলে এলি?”

–” আসলে,, নিচে সাউন্ডে মাথা ব্যাথা করছে। তাই চলে এলাম।”

–” ওহ!”

–” হুম!”

আদনান কিছু সময় চুপ করে থেকে আবার বলে ওঠে,
–” স্নেহা!”

–” হুম!”

–” বিয়ের পর তুই তো কানাডায় চলে যাবি। মনে রাখবি আমাকে? নাকি ভুলে যাবি?”

স্নেহা ছলছল চোখে আদনানের দিকে তাকায়। আলো আধারিতে আদনান বুঝতে পারে নাহ স্নেহার চোখ ছলছল করছে। বার বার পলক ফেলে নিজেকে স্বাভাবিক করে নেয় স্নেহা। হালকা হেসে বলে ওঠে,
–” ভুলে কেন যাবো? তুই কি আমার কাছে ভুলে যাওয়ার মতো?”

আদনানের কেমন যেন কান্না পাচ্ছে। কিন্তু,, কান্না যে তার দ্বারা সম্ভব নাহ। বার বার ঢুক গিলে সামলিয়ে নিচ্ছে নিজেকে। আদনানকে চুপ থাকতে দেখে স্নেহা বলে ওঠে,
–” আদনান!”

–” হুম!”

স্নেহা হালকা হেসে বলে ওঠে,
–” আমার তো বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। তুই বিয়ে করবি কবে?”

আদনান তাচ্ছিল্যে হাসি দেয়। তারপর বলে ওঠে,
–” করবো একদিন। এখনো তো বেকার,, তার উপর ছাত্র। তোর বিয়ের হয়ে গেলে,, মাস্টার্সে ভর্তি হবো। স্টাডি শেষ করে,, একটা জব করবো। তারপর বিয়ে সাধী। ফ্যামিলির উপর ছেড়ে দিলাম। ওরা যা করবে তাই হবে।”

স্নেহা একটু হাসে। তারপর বলে ওঠে,
–” আদনান তোর মনে আছে,, আমি কেমন ফুচকা খেতাম আর তুই নাক শিটকোতি।”

–” এইগুলা কি ভুলা যায় কখনো?”

স্নেহা হালকা হাসে। আদনানের চোখ আবার ছলছল করে উঠে। তাড়াতাড়ি অন্যদিকে ঘুরে যায়। স্নেহা আদনানের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” ঐদিকে কি দেখিস?”

আদনান নিজেকে সামলিয়ে নিয়ে আবার স্নেহার দিকে ঘুরে বলে ওঠে,
–” কিছু নাহ!”

–” ওহ!”

আদনান কিছু সময় চুপ করে থেকে বলে ওঠে,
–” স্নেহা!”

–” হুম!”

–” তোকে আজ খুব সুন্দর দেখাচ্ছে। মনে হচ্ছে,, আকাশ থেকে স্বর্গীয় পরি নেমে এসেছে। আমি কখনো,, জলপরি,, আকাশ থেকে নেমে আসা পরি দেখিনি। কিন্তু,, আজ মনে হচ্ছে,, এই ককটেল সুন্দরী কে দেখে সেই পরীর রুপের থেকে বেশি কিছু দেখে ফেলেছি।”

স্নেহা লজ্জা পায় আদনানের কথায়। কিন্তু,, স্নেহার অসম্ভব ভালো লাগছে আদনানের মুখে এইসব শুনে। এইগুলোয় তো তার সম্বল হয়ে থাকছে এখন। আদনান আরও কিছু সময় চুপ করে থেকে বলে ওঠে,
–” স্নেহা! এখন আমি বাসায় যাই?”

স্নেহা বলে ওঠে,
–” হ্যা! রাত হয়ে যাচ্ছে। চল তোকে একটু এগিয়ে দিয়ে আসি।”

–” না না তোকে এগিয়ে দিতে হবে নাহ। তোকে বরং অনুষ্ঠানের জায়গায় রেখে আমি চলে যাবো।”

–” আচ্ছা! চল!”

দুইজনে একসাথে নেমে আসে ছাদ থেকে। আদনান স্নেহাকে অনুষ্ঠানের জায়গায় রেখে চলে যায়।

……………সবাই ঘুমিয়ে গেছে। শুধু আদনানের চোখে ঘুম নেই। ঘুম আসবে কিভাবে? এক একটা সময় যাচ্ছে,, তার বার্বিডল তার কাছের থেকে দুরে সরে যাচ্ছে। চোখের সামনে বার্বিডল কে অন্য একজনের হতে দেখার যন্ত্রণা সহ্য করতে হচ্ছে তাকে।

আদনান তাড়াতাড়ি উঠে বসে পড়ে। দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে যেন তার। সবার সামনে হাসি খুশি থাকার নাটক আর ভেতরে ভেতরে গুমড়ে গুমড়ে মরতে হচ্ছে তাকে। উঠে বারান্দায় চলে যায় আদনান। বারান্দার গিরিল ঘেসে ফ্লোরে বসে পড়ে সে। হাটুকে মুখের কাছে এনে ফুপিয়ে কান্না করে উঠে আদনান।

আর সহ্য হচ্ছে নাহ তার। একটু নাহ কান্না করলে মরেই যাবে হয়তো। নিজেকে হালকা তো করতে হবে। ছেলে বলে কান্না করতে পারবে নাহ,, তাই কি হয়? তাই রাতের আধারে সবার আড়ালে একা একা গুমড়ে কান্না করছে আদনান।

এইদিকে……
বালিশে মুখ চেপে কান্না করে যাচ্ছে স্নেহা। এরপর আর এইভাবে কান্না করে নিজেকে হালকা করতে পারবে নাহ হয়তো। তাই এখন যতোটা পারছে কান্না করে হালকা হচ্ছে।

নিজের ভালোবাসার মানুষকে হারিয়ে ফেলার তীব্র যন্ত্রণা হচ্ছে। আত্নহত্যা যদি হারাম নাহ হতো,, তাহলে হয়তো এইংগেজমেন্টের আগের দিনই হতো তার শেষ দিন। চোখের জলে বালিশ ভিজে যাচ্ছে স্নেহার। শব্দ করেও কান্না করতে পারছে নাহ স্নেহা। পাশে এক বোন ঘুমিয়ে আছে। তাই নিঃশব্দে চোখের জল ফেলছে স্নেহা!!!!

#_চলবে…………🌹

{{ হ্যাপি রিডিং!! 💕 }}

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here