#লুকোচুড়ি_ভালোবাসা💖
#লেখিকা: তানজিনা আক্তার মিষ্টি ( Tanjina Akter Misti)
#র্পব-১০
বারান্দায় বসে আকাশ পানে তাকিয়ে আছে মিষ্টি। ভয় তো ভালোই করছে তখন কিন্তু কাউকে বলা যাবে না মামুনি আমার মুখ গোমরা দেখে বারবার জিগ্গেস করছে কি হয়েছে? তার উপর রাত করে ফিরেছি। চিন্তা করেছে যে মুখ দেখেঈ বুঝা গেছে। তাকে চিন্তায় ফেলে কষ্ট দিতে চাইনা তাই রাজকে বলেছি কাউকে না জানানোই ভালো। নিজেকে এতো অসহায় লাগছিল যে নিজেকে রক্ষা করতে পারবো এটা ভুলেই গেছিলাম। তখন একটা কথায় মনে এসেছে কি করে কি করবো? যখন সব গুলো ছেলে আমার আশে এসে দাড়ায় আর একজন আমাকে টাচ করতে আসে কি ভাবে কি করবো মাথায় নষ্ট হয়ে আসছিল। হঠাৎ কাধের ব্যাগ চোখে পরে আর কিছু না ভেবে ব্যাগ সামনে এনে লোকটার হাতে কলম দিয়ে আচর দিয়ে বসলাম।
এমন ঘটনায় ছেলেটি হাত ধরে উহ্ করে হাত পিছিয়ে নিলো সামনে থেকে সরে হাত দেখতে লাগলো আর গুলো একটু দূরে ছিলো আমি দৌড়ে দিলাম আর সাথে হেল্প বলে চেচামেচি করতে লাগলাম।
সামনে একটা চায়ের দোকান ছিলো আমার চিৎকার শুনে তারা ছুটে এলো আমার দিকে আমি তাদের দেখে ভরসা খুজে পেলাম সাথে দুজন মহিলা ও আছে। এবার একটা দম নিয়ে তাদের কাছে গিয়ে হাপাতে লাগলাম। তারা আমার কাছে এসে বলে চলেছে……” কি হয়েছে তোমার এভাবে দৌড় পারছো কেন? ” আমি কিছু না বলে হাপাচ্ছি কথা গলায় আটকে আছে। ওইভাবে পেছনে তাকিয়ে দেখি ছেলে গুলো এদিকে আসতে গিয়ে ও পেছনে ফিরে দৌড়াচ্ছে মুখে তাদের ভয়। একজন পাশে থেকে বলে উঠলো…… “বুঝেছি ওই জানোয়ার গুলো পিছ ধরেছিল তাই না। তুমি এই নিরিবিলি রাস্তা একা আসছিল কেন? আবার সন্ধ্যায় পর সন্ধ্যায় পর কোথায় যাওয়া টা ঠিক না? ” তারা তো আর জানে না আমি কন এসেছি আর বলা ও হলো না এর মাঝেই কোথা থেকে জানি রাজ চলে এলো লোকগুলোর মাঝে দাড়িয়ে আছে। পেছনে গাড়ি ও আছে কখন এসেছে বুঝতে পারলাম না আমি কোন কথা বলছি না জানি না কি হলো কথা বের হচ্ছে না মুখ দিয়ে। সবাই নানা প্রশ্ন করে যাচ্ছে আমি কিছু বলছি না। রাজ দাড়িয়ে সব শুনলো সব শুনে বুঝতে পেরেছে কি হয়েছিল মনে হয় চোখ মুখ কেমন শক্ত হয়ে উঠে । আমার দিকে তাকিয়ে সবাইকে কি যেন বলল সবাই চলে গেল।
আমার কাছে এসে আমার হাত ধরে গাড়িতে নিয়ে উঠালো আমি শান্ত মেয়ের মতো উঠে সিটে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলল দৌড়ানোতে ক্লান্ত লাগছে অনেক হার্টবিট হাই বিট হচ্ছে অস্থির লাগছে। সারা শরীর কাপছে আমার…….
–পানি খাও ভালো লাগবে!
আমি কিছু না বলে পানির বতলটা হাতে নিলাম সত্যি পানির পিপাসা পেয়েছিল। ঢকঢক করে অনেক খানি পানি খেয়ে নিলাম। এখন এখটু ভালো লাগছে রাজের দিকে তাকিয়ে দেখি আমার দিকে তাকিয়ে আছে একদৃষ্টি তে আমি পানির বতল দিয়ে আবার চোখ বন্ধ করে ফেললাম….. মনে মনে ভাবছি রাজ কি এখন জিগ্গেস করবে কি হয়েছে না বলবো না কিছু যা বুঝার বুঝেছে না বুঝলে নাই। আমাকে নিতেই বা এল কেন সে তো খুব বিজি মানুষ মামুনি নিশ্চয়ই জোর করে পাঠিয়েছে। অন্যের বাড়ি আছি নিজেকে নিজের জন্য তৈরি করে পথ চলতে হবে অন্যের দয়ায় কোন দরকার নেই আমার।
কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে কিছু জিগ্গেস করলো না উল্টো গান ছেরে দিলো হিন্দি গান চলছে রাগে আমার কি যে করতে মন চাইছে কিন্তু কি বললাম না। কিছু জিগ্গেস করলো না বাসার এসে গাড়ি থেকে নামতে যাবো রাজ আমার হাত টেনে ধরলো…. আমি আচমকা ঘটনায় অবাক হয়ে পেছনে ফিরতেই রাজ জোরে টান দিলো একদম কাছে চলে এলাম। এমন ঘটনায় আমার চোখ বেরিয়ে আসার উপক্রম হলো
কিছু বলবো রাজ বলে উঠলো……. বাড়িতে জানিয় না সবাই টেনশন করবে প্লিজ?
আমি অবাক চোখে তাকালাম আমাকে নিয়ে যে সে একটু ও চিন্তা না বুঝা গেল। একবার কিছু জিগ্গেস ও করলো না আবার সবাই কে বলা থেকে বিরত করলো আমি চাপা কষ্ট হলো কিন্তু বললাম না তাকে ছারিয়ে ভেতরে চলে এলাম।
মামুনি খেতে ডাকছে তাই বাস্তবৈ আসলাম।
পরদিন
কোচিং একাই এলাম কোয়েলের সাথে কথা বললাম না এই মেয়েটার জন্য আমায় বিপদে পরতে হয়েছে। কোয়েল এলো কাছে আর আমার সাথে কথা বলতে লাগলো আমি ধমক দিয়ে কাছে থেকে যেতে বললাম…..
-কি হয়েছে তোমার? আমার সাথে কি রাগ করেছো?
– তুমি আমার কাছে থেকে সরো তোমার সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করছে না !
-কি হয়েছে আমি কি করেছি প্লিজ বলো?
-তুমি যাবে…..
-না তোমাকে আমি ফ্রেন্ড ভাবি তুমি আমার ফ্রেন্ড আমার আর কোন ফ্রেন্ড নাই তোমাকে আমি কিছু তেই ছেড়ে দেব না।
-আমি তোমাকে ফ্রেন্ড ভাবি না তোমার জন্য কাল আমাকে কতো বড় বিপদ হয়েছে জানো আমি বলেছিলাম আমার রাত হলে প্রবলেম তুমি জোর করে।
সব কোয়েল কে বললাম সব শুনে কোয়েল আমার হাত ধরে কাদোকাদো মুখ করে সরি বলল অনেক ক্ষণ আমি কি আর করবো ক্ষমা করে দিলাম। ছুটির পর নিচে নেমেই দেখি রাজ দাড়িয়ে আছে মেরুন কালারের শার্ট চোখে সানগ্লাস দিয়ে গাড়িতে হেলান দিয়ে ফোন টিপছে। দেখতে হিরো লাগছে আমি হা করে তার দিকে তাকিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি মনেই ছিলো না হঠাৎ মনে হলো আমি তত কোচিং এ আছি রাজ এখানে কি করছে।
-ভাইয়া আপনি এখানে কি করছেন?
আমার কথা শুনে আশেপাশে তাকিয়ে বলল….. ভাইয়া কাকে বলছো মিষ্টি নতুন ভাই পেয়েছো নাকি কিন্তু আশেপাশে কাউকে দেখছি না তো?
-আপনাকে বলছি নতুন ভাই আবার কই পাবো আপনাকে কিছু বলি না তাই কাল মামুনি বলে দিলো ভাই বলতে?
-হুয়াট তুমি আমাকে ভাই বলছো?
-হুম
-ও গড প্লিজ ভাই বলো না আর যাই বলো না কেন ভাই বল না?
-মানে কি ভাই বলবো না কেন? এতে সমস্যা বা কোথায় আর অন্য কিছু মানে কি বলতে বলছেন চাচা খালু মামা এইসব?
-মামা চাচা খালু ওহ নো এসব কেন বলতে বলবো আমি পাগল নাকি?
-তাহলে আর আছে টা কি যে বলবো? আপনি এখানে কি করছেন বললেন না কিন্তু?
-এই তো তোমাকে নিতে এলাম কাল যা হয়েছিল আর রিক্ম নেওয়া যাবে না তাই চলে এলাম। আর কিছু পাচ্ছে না মানে কতো কিছু আছে তুমি চাইলে বলতেই পারো।
-মানে
-বাদ দাও না ধরে ডেকো কেমন চলো এখন?
-নাম ধ….
রাজ গাড়িতে উঠে বসে গেছে আমার কথা না শুনেই।
-কি হলো উঠে এসো?
-নাহ আমি আপনার সাথে যাব না।
-বেশি কথা বল তুমি সন্ধ্যায় হয়ে আসছে তারাতারি উঠে আসো।
-বললাম না যাবো না আপনার সাথে আমি একাই
– হয়েছে একা যেতে পারবে না কালকের মতো আজকে ও কিন্তু কিছু হতে পারে।
মিষ্টি কথা বারালো না সত্যি তো হতেই পারে না জেদ করে নিজের বিপদ না বাড়ানোই ভালো।
💙
ক্লাসে বসে আছি কোয়েল এখন ও আসে নি। একাই বসে আছি বই নিয়ে পরছি সামনে রেখে হঠাৎ কেউ পাশে থেকে কথা বলে উঠলো তাকিয়ে দেখি একটা ছেলে গায়ের রঙ দবদবে সাদা লাল রঙের শার্ট, কালো পান্ট, কানে একটা দুল হাতে ব্যাসলেট, ঠোট লাল টকটকে যেন লিপস্টিক দিয়েছেকে এই ধলা লোকটা কে জানে আমার দিকে তাকিয়ে হাই বলছে। আমি হা করে তাকিয়ে আছি।
-হেই কিউটি, হোয়াটস ইউর নেম?
আমি কথা কি বলবো এমন সাদা এতো সুন্দর ছেলে দেখে আমি কথা বলার ভাষা হারিয়ে তাকিয়ে আছি। ছেলেটার ধাক্কায় সজ্ঞানে এলাম।
-হে তুমি কথা বলছো না কেন? তোমার নাম কি?
ছেলেটাকে নাম বলতে চাইছি না তবুও অনেক বলায় বললাম নাম শুনে সে কিহাসি তারপর হাসি থামিয়ে নিজের ডিটেল্স বলতে লাগলো আমি শুনতে চাইছি নাকি কি একাই বলে যাচ্ছে। ছেলেটির নাম সুজয় বাসা এখানেই। বাবা এখানকার এমপি ধনী ঘরে ছেলে তা আমি দেখেই বুঝেছি। একটা বড় বোন আছে আর ও। আমি কথা না বললে ও নিজে থেকেই ফ্রেন্ড হবার অফার করলো। মুখের উপর না করে দিলাম আমি আমার ফ্রেন্ড চাই না বিশেষ করে ছেলে তো নাই।
চলবে❤
[ সরি দেরি করার জন্য আর আজকে আরেকটা পার্ট দেবো]